#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
পর্ব-২৫
“আই নিড মানি”
“হাও মাচ?”
“হাজার পঞ্চাশ।”
“আর ইউ শিওর!” বিষ্মিত স্বরে জানতে চাইলেন আবরার খন্দকার। শেষ কবে ময়ূখ তাঁর কাছে কিছু চেয়েছে ঠিক মনে পড়ছে না উনার। পড়াশোনা, থাকা খাওয়া সব তো তার ফুপা নিজেই চালিয়েছেন। আবরার সাহেব প্রায়ই যেসব টাকা পাঠিয়েছেন তা যে ব্যাংক একাউন্ট করে ফখরুল সাহেব ময়ূখের জন্যই জমিয়ে রেখেছেন তা অজানা নয় কারো। কিন্তু হুট করে এতগুলো টাকা চাইছে ছেলেটা তাই তার প্রয়োজনটা একটু জানার আগ্রহ হলো আবরার খন্দকারের। ময়ূখ সোজা কথায় জবাব দিলো, “শিওর হয়েই তো চাইছি৷ থাকলে দিন আর না হয়… ”
“না হয় কি?”
“আই ওয়ান্ট সেল মাই কার।”
অবাকের শেষ পর্যায়ে এবার আবরার খন্দকার৷ ময়ূখের গাড়ি মানে তার মায়ের গাড়িটা। নব্বই দশকের সেই প্রাইভেট কার প্রায় বাইশ বছর হলো গ্যারেজে পরে আছে। জং ধরা, ভেতরের যন্ত্রপাতি সবই প্রায়ই নষ্ট- হয়ে এসেছে। সেটার ইঞ্জিন এখন আর চালু হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই ময়ূখ সেটাকে বলছে বিক্রি করবে! অথচ গত সাত আট বছরে তিনি ছেলেকে কতবার বলেছেনে গাড়ি নাও একটা। যেমন চাও ঠিক তেমন দেব নিয়ে যাও, ড্রাইভিং শিখো আর কত কি বলেছেন অথচ মুখের ওপর বলে দিয়েছে তার লাগবে না৷ ইরশাদদের পারিবারিক গাড়িতে কত ক-ষ্ট হয়েছে চলতে তবুও নেয়নি। আর আজ টাকার জন্য তার মায়ের পড়ে থাকা একটা স্মৃতি সেটা বিক্রি করতে চাইছে!
“ওই গাড়িটা বিক্রি করলে কত পাবে?”
“আমি সকালেই চেক করে এসেছি, ওটার এখন যা অবস্থা তাতে হয়তো বেশি আসবে না তবে বিভিন্ন পার্টস এখনো মোটামুটি চালিয়ে নেওয়ার মত। ভাঙারির দোকানে দিলেও অনায়েসে বিশ নেওয়া যাবে।”
দুপুরে আজ খাবার খেতে বাড়ি এসেছিলেন আবরার৷ মূলত স্ত্রী অ-সু-স্থ, মেয়েটাও মানসিকভাবে বিপ-র্যস্ত টের পেয়েছেন সেকারণেই বাড়িতে আসা। ময়ূখও রাতে তাদের ঘন্টা দুই পরই এসে উপস্থিত হয়েছিল বাড়িতে৷ কিন্তু এ বেলায় বাড়িতে এসে ছেলেকে সজাগ পাবেন ধারণায় ছিলো না। খেতে বসেই টেবিলে ছেলের আগমন হয়েছে তাও কিনা টাকা চাইতে। কিন্তু কথার ছ-লে এত কথা উঠবে বুঝতে পারেননি৷ খাওয়া থেমে গেছে আগেই এবার তিনি ময়ূখকে গভীর দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করলেন। কোথাও কিছু পরিবর্তন অবশ্যই হয়েছে কিন্তু পরিবর্তনটা ঠিক কোথায় বুঝতে পারছেন না। ময়ূখের মুখটা কি খুব শুকনো লাগছে? ইরিন কেন কাল অত রাতে ফোন করে কান্না করছিলো! ইরিন বলল ময়ূখ কিছু লুকাচ্ছে তার কাছে কিন্তু কি? প্রায় তেইশ বছর পর আজ তিনি পঁচিশ বছরের ছেলের মাঝে দুি বছরের মুখটিকে খুঁজছেন যেন। বড় ভুল সময়ে এই মুখে তিনি নজর দিয়েছেন। বা – হাতে পকেট থেকে ফোন বের করে অফিসে কল দিলেন। ততক্ষণে আরেকবার প্রশ্ন করলেন ময়ূখকে, ” কি হয়েছে তা কি জানতে পারি?”
“গিটার কিনব। আমি মেবি, এ সপ্তাহে ইন্ডিয়া যাব ট্যুর প্লাস কনসার্ট। কলেজ ফ্রেন্ডসরা অরগানাইজ করছে। চট্টগ্রামেও যাব নেক্সট মান্থ ডোনেশন কালেক্ট করবে বলে একটা শিশু সংস্থার হয়ে।”
এত ডিটেইলে ময়ূখ তার বাবাকে কখনো কিছু বলে না। তারওপর এত লং প্ল্যান যা ইরিন জানে না! আবরার খন্দকার এবার যেন সন্দেহি হলেন ছেলের প্রতি। তারমানে ইরিন ঠিকই বুঝেছে তবে ময়ূখ ভালো কিছু করছে এতেও খুশি হলেন। ম্যানেজারের সাথে কথা বলে ময়ূখকে বিকেলে অফিসে যেতে বললেন। আজ শনিবার ব্যাংক খোলা পাবে না তাই অফিসে যা আছে তাই দিবেন বলে জানালেন। মনে মনে ঠিক করলেন কাল, পরশুর মধ্যে তিনিও ডোনেশন দিবেন লাখ খানেক৷ ময়ূখ আর না দাঁড়িয়ে চলে গেছে মেহেরকে আনতে। আজ অনেকদিন পর মেহের স্কুলে গিয়েছিল কিন্তু ময়ূখ তো জানে মেয়েটা ভেতরে ভেতরে কতোটা অসু-স্থ আর বি-ক্ষি-প্ত। তাই বোনকে নিয়ে কোথাও একটু বেরুবে বলেই ঠিক করল।
বৌ ভাতের জমজমাট অনুষ্ঠানটা বড্ড ফিকে লাগছে ইরিনের। এমনটা লাগছে ইরশাদ, নোরা আর ফখরুল সাহেবেরও। ইরশাদের বিয়ে অথচ আনন্দ করার জন্য ময়ূখটা নেই, সব কিছুতে ছটফ-ট করে সবাইকে জ্বা-লা-নোর জন্য মেহেরটা নেই এদিকে বোনকে প্রতি মুহূর্তে চিন্তামু-ক্ত থাকার আশ্বাস দেওয়ার জন্য বড় ভাইটা পাশে নেই৷ আছে শুধু ছোট ভাই আর ভাতিজি৷ ইরিনের বারবার মনে হচ্ছে কোথাও একটা ভুল হয়েছে তার, কিছু একটা তার নজর এড়িয়ে গেছে যা তার বড় ভাইয়ের পরিবারকে সুক্ষ্মভাবে বি-চ্ছি-ন্ন করে দিয়েছে। সকালের নাশতার পরপরই মৈত্রী আর ইরশাদকে পার্লারে পাঠানো হয়েছে। নোরাও আজ লেহেঙ্গা পরে সাজবে ভেবেছে তাই মৈত্রীর সাথেই সাজতে চলে গেছে। ইরশাদ অবশ্য আজ হেয়ার কাট আর ফেসিয়ালের জন্যই গিয়েছে। কাল তার সাজে ছিল শেরোয়ানি, খোঁচা দাঁড়ি পায়ে নাগরা জুতো। আজ আবার গেটআপ সম্পূর্ণই ভিন্ন সেজন্যই আজ ক্লিন শেভ এর প্রয়োজন মনে হলো ইরশাদের৷ সে হয়তো মন থেকে ভা-ঙা-চো-রা। বিয়ে নিয়ে তার অত বিশেষ কোন ভাবনা ছিলো না কিন্তু মৈত্রী! সে নিশ্চয়ই দারুণ চায় সবটা অন্তত তার খুশির কথা ভেবেই ইরশাদ সবটা স্বপ্নময় করে দিতে চায় তাতে নিজের পরিচ্ছদ তো সাধারণ কিছু। ইরশাদ এমন ভেবেই সব ভেবে ভেবে গুছিয়ে করছে কিন্তু ময়ূখটার জন্য মন খারাপ লাগছে খুব। সকাল থেকে প্রায় দশ -বারো বার কল দিয়েছে সে কল রিসিভ করেনি। দুপুরে ইরশাদ যখন একদম তৈরি হয়ে মৈত্রীকে পার্লার থেকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিলো তখন কলটা এলো৷ বড় চাচুর গাড়িটাই কাল থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে ইরশাদের আজও তাতে। ড্রাইভ নিজেই করছিলো তাই মৈত্রীকে বলল, “রিসিভ করে লাউডে দাও।”
মৈত্রী তাই করলো। ময়ূখ কিছু বলার আগেই ইরশাদ বলে উঠলো, “খুব বড় হয়ে গেছিস তাইনা! এখন আর আম্মা, ভাই কারো দরকার নেই কাউকে কিছু বলা, জানানোর এমনকি কারো কিছুতে অনুমতির দরকার নেই!”
“ভাই, আমি নিজে কনফার্ম ছিলাম না তাই…”
“কি কনফার্ম ছিলি না বন্ধুর বাপ মা-রা যাবে সেটা নাকি তুই কোলকাতা যাচ্ছিস সেটা!”
ইরশাদের কথায় রা-গ স্পষ্ট কিন্তু সে যে ময়ূখের জন্য কতোটা চি-ন্তি-ত তা যে এমন কথাতে অস্পষ্ট। ময়ূখ রাগ টের পেয়ে বলল, “ভাই আসলে আম্মাকে শুধু কনসার্টের কথা বললে কিছুতেই রাজী হতো না তারওপর তোমার বৌভাত! ”
“আসলেই তো আমার সামান্য বৌভাতের কনসার্ট মিস করা খুবই হাস্যকর।”
“ভাই তুমি অন্তত বোঝো, এই কনসার্টটা আউট অফ কান্ট্রি তার ওপর হিউজ ডোনেশন… ”
“ডোনেশন!” ইরশাদ এবার কৌতূহলী হলো।
“হ্যাঁ ভাই আমার ফ্রেন্ড জয়ের কথা মনে আছে ওই যে এমপির ভাতিজা! তাদের শিশু সংস্থা আছে মানে এতিম আর প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সেটা। তারা নিজেদের অর্থেই চালায় সেটা কিন্তু প্রতিবছর কোন একটা কালচারাল ফাংশন কিংবা বিভিন্ন ফেয়ার ফাংশনের মাধ্যমে এক্সট্রা আয় করে। সেচ্ছাসেবকরা করে এসব তো এবার আমাদের যে ভার্সিটির ব্যান্ড গ্রুপ আছে তারা নিজ উদ্যোগে কিছু দিতে চায়। আমাকেও জানিয়েছিলো আর হাতের মুঠোয় এমন একটা সুযোগ ন-ষ্ট করতে ইচ্ছে হলো না।”
“বুঝলাম, কিন্তু তাই বলে আমাদের জানালে অন্তত আমাকে বললে কি আমি করতাম না ব্যবস্থা? চো-রের মত চোখের আড়াল হয়ে কেন করছিস তুই এসব!”
“ভাই…”
“ময়ূখ ভাইয়া!” দু ভাইয়ের কথার মাঝে এবার মৈত্রী ডেকে উঠলো ময়ূখকে। এই ডাকটাই তার নিঃশ্বাস আটকে দিলো। এটাই কি প্রথমবার মৈত্রী তাকে ডাকলো! আসলেই তার সাথে নিজ থেকে এই প্রথম কথা বলল মৈত্রী। কিন্তু এ ডাক তাকে তো অসু-স্থ করে দিচ্ছে ভেতরে ভেতরে। ময়ূখের কোন জবাব না পেয়ে মৈত্রী আবার ডাকলো, ময়ূখ ভাইয়া, এটা একদমই ঠিক করেননি আপনি। আজ রাতে চলে যেতেন আন্টিকে আমরা বলে বোঝাতাম।”
আশ্বাস দেওয়ার সুরে বলল মৈত্তী কিন্তু ওপাশ থেকে জবাব আসার আগেই কল কে-টে গেছে। ইরশাদ বলল ব্যালেন্স চেক করো তো! মৈত্রী দেখলো টাকা আছে তবুও কল কাটলো কেন! পুনরায় কল দিতেই দেখলো ফোন বন্ধ। বাড়ি পৌঁছে ইরশাদ মাকে বলল, ময়ূখ একটা এতিমখানার জন্য সাহায্য করতেই বন্ধুদের সাথে যোগ দিয়েছে। এ কথা শুনে ইরিনের স্বস্তির জায়গায় সন্দেহ আরও বাড়লো। কিন্তু এই মুহুর্তে মেহমান ভর্তি বাড়িতে এ নিয়ে কথা বললেন না আর। দুপুরের প্রায় শেষে মৈত্রীদের আত্মীয়রা এলো৷ বড় জাঁকজমকপূর্ণ হলো বৌভাত কিন্তু তাতে সব লোকজন ছিল ইরশাদদেরই আত্মীয় মৈত্রীদের আত্মীয় বলতে খুব বেশি মানুষ আসেনি৷ ফটোগ্রাফি চলল বর কনেকে নিয়ে অনেকটা সময়। কম কথা বলা, মুখচোরা মৈত্রী আজ কিছুতেই চুপচাপ থাকতে পারেনি শতশত মেহমানের ভীড়ে। জা, ননদ কত শত নতুন আত্মীয় এসে একের পর এক কথা বলেই চলেছে। মৈত্রীর খারাপ লাগেনি। কিন্তু সে কাল এ বাড়ি আসার পর থেকেই একটি মানুষের নাম শুনেছে বহুবার কিন্তু মানুষটির সাথে কিছুতেই দেখা হয়নি। যতটুকু আন্দাজ করতে পেরেছে মানুষটি সম্পর্কে তার জা ইরশাদের ভাবী হবে কিন্তু সে চোখের সামনে একটিবার কেন এলো না! তবে ভাসুর মহাশয় এবং তার ছেলেকেও দেখেছে শুধু সেই জা’টিই আসেনি সামনে। এই নিয়ে এক অবাধ কৌতূহল কুয়াশার মত জমতে থাকলো মনের ভেতর।
শীতের বিকেল দ্রুতই সন্ধ্যায় মিলিয়ে যায় বলে মৈত্রী, ইরশাদকে নিয়ে ফিরতে রাতই হলো মুজিব সাহেবদের। ইরিনও তাদের যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন যেন। তারা বেরিয়ে যেতেই তিনি বর্তমান বড় ভাবীকে কল দিলেন মানে মেহেরের মাকে৷ যতটুকু কথা হল তাতে স্বস্তি পাওয়ার মত কোন সংবাদ নেই বাধ্য হয়ে এবার আবরার খন্দকারকে কল দিলেন। কিন্তু তিনি ফোন তোলেননি। ইরিনের মনে হলো এবার তাকে যে করেই হোক ঢাকায় গিয়ে ময়ূখের সাথে আলাদা কথা বলতেই হবে।
চলবে
#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
পর্ব-২৬
বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি যাওয়া মানে যে পেটের যন্ত্রাংশ ঢিলে করে দেওয়া তা জানতে পারলো ইরশাদ মধ্যরাতে। ঘুমের মাঝেই ন্যাচার কলিং সেই সাথে পেটের ভেতর ঘুটঘুট আওয়াজ বড্ড বি-শ্রী অবস্থায় ফেলল তাকে। চোখ মেলে নিজের বা-দিকে ঘুমন্ত মৈত্রীর দিকে তাকালো সে। মাথাব্যথায় কা-ত-র হয়ে নয়টার দিকেই ঘুমিয়ে পড়েছিল সে এদিকে রাত দশটায় ডাইনিংয়ে বসে এগারোটার পর ছাড়া পেয়েছে ইরশাদ। একটু একটু বলে রোকসানা বেগম আর মৈত্রীর নানী মিলে একের পর এক খাবার খাইয়েছে তাকে। এক ঘন্টায় প্রায় দশ মিনিট পর পর ইরশাদ কথার বাহানায় খাবার ছেড়ে ওঠার পায়তারা করছিলো কিন্তু কিছুই হয়নি। উল্টো এক ঘন্টায় রেস্ট আর খাওয়ার একটা কা-টা-কা-টি ব্যাপার হয়েছে। ঝাল, টক এবং শেষে মিষ্টি তিন খাবারই একসঙ্গে পেটে ঢুকে আর নিজের জায়গায় থাকতে পারেনি। সবে মিলে গোঁজামিল কারবার আর তার ফল এই মধ্যরাতের ওয়াশরুমের চ-ক্ক-র। ঘরের মৃদু আলো জ্বালানো বলেই ইরশাদ দ্রুত বাথরুমে ঢুকলো। মিনিট দশেক সময় নিয়ে তারপর ফিরে আবারও কম্বলে ঢুকে গেল। পাশ ফিরে মৈত্রীকে একবার দেখে নিয়ে চোখ বুঁজলো। গতরাতে দুজনের দেহ একে অপরে মিশে গিয়েছিলো কিন্তু আজ কিছুটা দূরত্ব রেখেছে ইরশাদ। সত্যি বলতে আজ মৈত্রী আগেই ঘুমিয়ে পরেছে বলে সংকোচে সে চেয়েও জড়িয়ে নিতে পারেনি নিজের সাথে। যেদিন সে মৈত্রীকে নিজের করবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো সেদিন একেবারে না ভেবেই আগায়নি। পরিপক্ব মানসিকতার মানুষ সে আবেগ দিয়ে ভাবেনি। মৈত্রীর চোখে তার প্রতি যে আবেদন ছিলো শুধু তার ভিত্তিতেই সে এ সম্পর্ক গড়েনি। মৈত্রীর কা-ন্না-তে সে দূর্বল হয়নি, হয়েছিলো তার ভালোবাসার মানুষটিকে না পেলে দুঃসহ য-ন্ত্র-ণা ভু-গবে ভেবে। আর তাই ওভাবে বিয়ের প্রস্তাব রেখেছিলো যেন আরও একটি প্রাণের স্পন্দন ছ-ন্দ-হীন না হয়। সে তো ক-ঠো-র স্বভাবের হওয়ায় সামলে নিয়েছে বাহির থেকে কিন্তু এই মেয়েটি পারতো না তেমন। যতোই সে মুখচোরা, প্রতিক্রিয়াহীন হোক না কেন মেয়েটি নিশ্চিত নিজেকে ভে-ঙে গুঁড়িয়ে নিতো। সত্যিই তাই হচ্ছে তাকে না পেলে যেমন গুঁড়িয়ে যেতো তেমনই তাকে পেয়ে উজ্জ্বল হচ্ছে । মাত্র তো কয়েকটা দিন হলো তাতেই মৈত্রীর পরিবর্তন অবর্ণনীয়৷ চোখ বুঁজে এসবই ভাবছিলো ইরশাদ মিনিট দশেক ধরে। কিন্তু পেটে আবারও শুরু হলো গুড়গুড় আওয়াজ। বিছানা ছেড়ে দ্রুত পায়ে বাথরুমে ঢুকলো। যখন মনে হলো এবার একটু স্বস্তি তখনই বের হলো। তারপর চোখে যখন ঘুম জেঁকে ধরলো ঠিক তখনি আবার সেই গুড়গুড়৷
“আহ্ এ কি যন্ত্রণা!” ঈষৎ আর্তনাদ করে উঠলো ইরশাদ৷ মৈত্রীর ঘুম হালকা হলো তা শুনে। আধবোজা চোখে ইরশাদের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো, “কি হয়েছে?”
“যা হওয়ার! জামাই আদরের মাত্রা বেশি হওয়ায় এ ঘর ও ঘর করছি।”
রাতটা কোনমতে পার হতেই ভোরে নোরা আর আফছার খন্দকার রওনা হলেন ঢাকায়। ইরিনকে রাতেই জানিয়ে রাখা হয়েছিলো তারা আজ ঢাকায় যাবেন। আফছার খন্দকার তো নিজের কিছু কাজে যাচ্ছেন কিন্তু নোরা মিথ্যে বলে যাচ্ছে। সে তার পাসপোর্ট সংক্রান্ত কোন জ*টি*ল*তা হয়েছে বলে এমবাসিতে যেতে হবে কল এসেছে জানিয়েছে। বিভিন্ন টেনশনে ইরিন ব্যাপারটা খুব একটা ঘেঁটে দেখেননি৷ নোরা তার বাবার সাথেই যাচ্ছে তারমানে সত্যিই কোন প্রয়োজন হবে হয়ত! ইরিন আবার মনে করে ময়ূখের দু তিনটে গরম কাপড়চোপড় ব্যাগে করে দিয়ে দিলেন৷ নোরা যখন বলল, এগুলো কেন? তিনি বললেন, “ময়ূখ তো হুট করে গেল সাথে কিছু নিয়ে যায়নি। পরনে শুধু একটা ব্লেজার ছিল সেদিন আর ও বাড়িতে তার খুব একটা কাপড়চোপড়ও নেই তাই এগুলো নিয়ে যা মা।”
নোরা বড় হয়েছে বাবা -মা দুজনের সাথে থেকেই৷ আঠারোর আগ পর্যন্ত সে পরিবার পেয়েছে কিন্তু সেখানে এই চিন্তা ধারার মা পায়নি৷ তার মম বরাবরই উদাসীন ছিলেন তার প্রতি। ন্যানির কাছেই তার সময় কে-টে-ছে। ড্যাড এশিয়ান হওয়ার সুবাদেই কিনা কে জানে কিছুটা ফ্যামিলি ম্যান ছিলো মানে ইউরোপিয়ান মানসিকতা আছে তবে কম। সে হিসেবে ছুটির দিন গুলো বাবার সান্নিধ্য পেয়েছে কিন্তু তাতে কি মায়ের স্নেহ ছিল! অথচ ময়ূখের জীবনে মা না থেকেও কেমন মায়ের ছায়া রয়ে গেল আজীবন৷ ইরিনের কাছ থেকে ময়ূখের জিনিসপত্রের ব্যাগটা নিয়ে মনে মনে আফসোস করলো সে কেন ফুপির কোলটা ছোট বেলাতেই পায়নি। পিছুটান না থাকলে সে থেকে যেত এখানেই , চেয়ে বসতো ফুপির কোল, আদরমাখা পরশ আর তাঁর আজন্মকালের সান্নিধ্য। নোরা মন খা-রা-প করেই রওনা হয়েছিলো ঢাকার পথে। ভোরের আলো ফুটতেই তারা বাবা মেয়ে পৌঁছে গেল আবরার খন্দকার এর বাড়িতে। তখনও ঘুম থেকে উঠেনি ময়ূখ৷ বাড়ি এসে নোরা প্রথমেই ঢুকলো মেহেরের ঘরে। মেহের স্কুলের জন্য প্রায় তৈরি হয়েই গেছে শুধু চুল বাঁধা বাকি৷ তাই আয়নার সামনে বসে চুলে বিনুনি করছিলো৷ নোরাকে দেখে তার চোখে মুখে কোনরূপ পরিবর্তন না দেখে সে প্রশ্ন করলো, “খুশি হওনি আমি আসায়?”
“অখুশি হওয়ার কারণ নেই।”
“মানে খুশি হওয়ারও কারণ নেই তাইতো!”
“বিয়ের অনুষ্ঠান তো শেষ হয়নি চলে এলে কেন?”
“প্রায় শেষই। বাট আই হ্যাভ সাম ইম্পরট্যান্ট ওয়ার্ক হেয়ার।”
“ওহ”
“ইউ লুক সো প্রিটি বাট ভেরি লিটল।”
মেহের শুনলো আর মনে মনে রেগে গেল। সে ছোট লাগছে! কোন দিক থেকে ছোট? এস এস সি দিয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই কলেজে যাবে। শারীরিক দিক থেকেও সে ঠিকঠাক আর মানসিক! বিয়ে, প্রেম, সে-ক্স, পরিবার, সংসার কোনটাই তার জানার বাইরে নেই তবুও কেন কেউ তাকে ছোট বলবে! কেন বলবে সে এখনও ছোট, তার আবেগকে ক্ষণিকের মোহ কেন বলবে কেউ! ভেতরে ভেতরে ফুঁ-সে উঠলো মেহের। মনে পড়ে গেছে তার ইরশাদের কথা আর এটাই তাকে উ-ত্তে-জি-ত করে তুলল। সে ছোট বলেই তো তাকে সেদিন অত বকলো ইরশাদ ভাই৷ যদি সে মৈত্রীর বয়সী হতো তবে নিশ্চয়ই আজ ইরশাদ ভাইয়ের বউ সেই হতো! আজ ইরশাদ ভাইয়ের ঘরে মৈত্রীর জায়গায় নিশ্চয়ই সে থাকতো জো-র করে হলেও সেই থাকতো। মনের আবেগী ভাবনায় মেহের শুধু উ-ত্তেজিত নয় রেগেও গেল। নোরার দিকে তাকিয়ে তাকে ঘর থেকে চলে যেতে বলে মেহের ব্যাগ কাঁধে নিজেই বেরিয়ে গেল। সারা সকাল বাড়ির এদিক সেদিকে ঘুরে কা-টি-য়ে বারোটার দিকে ময়ূখকে ডেকে তুলল। জরিনা টেবিলে ময়ূখের নাশতা রেখে যেতেই নোরা সে খাবার নিয়ে ময়ূখের ঘরে ঢুকলো৷ প্রথমে অবাক হলেও পরে ময়ূখের মনে হলো নোরা ঠিক করছে না৷ এভাবে তার পেছনে পড়ার মানে কি! সে নাশতার দিকে তাকিয়ে জানতে চাইলো, “এসব কি!”
“নাশতা”
“আমিও দেখছি নাশতা কিন্তু এখানে কেন?”
“ফর ইউ”
“আমি নাশতা নিচে গিয়ে করি এখানে কেন এনেছো?”
“কথা আছে”
ময়ূখ এবার বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে ঢুকে গেল। ফ্রেশ হয়ে যখন বের হলো তখনও নোরা আগের মতই বসে আছে তা দেখে বি-র-ক্ত হলো সে। কপাল কুঁচকে বলেই বসলো, ” রুম থেকে যাওনি কেন?”
“যাওয়ার জন্য তো বসিনি।”
” ওকে যা বলার আছে বলো”
“ইন্ডিয়া যাচ্ছ কেন?”
“কনসার্ট আছে আর ঘুরার প্ল্যান আছে।”
“তুমি তো অফিসিয়াল কোন ব্যান্ডে গাও না তবে কনসার্ট কিসের!”
“আমি গাই না কিন্তু আমার গ্রুপ আছে৷ তুমি কি বলতে এসেছো তা বলো আমার কনসার্ট নিয়ে কেন ঘাঁটছো?”
কিছুটা কঠিন শোনালো ময়ূখের কণ্ঠস্বর কিন্তু নোরা থেমে নেই৷
“আমার কথা এগুলোই৷ তা তুমি বলতে চাইছো তুমি কনসার্ট করতেই দেশ ছাড়ছো?”
“দেশ ছাড়বো কেন৷ ফর আ ফিউ ডে’স এর পর আবার এখানেই তো ফিরব৷”
“বাস্তবতাকে মেনে না নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছো কেন ময়ূখ আর ক’দিন পালাবে! ঘুরে ফিরে তো তার সামনে আসবেই তবে এখন কেন পালানো? তোমার ইম্যাচিউর বিহেভিয়ার শাদ ব্রোকে সন্দেহে ফেলছে, ফুপিকে চিন্তায় অসুস্থ করছে আর ফুপা যাকে তুমি বাবা বলে ডাকো সে মানুষটা তোমার এভাবে চলে আসায় কতোটা যে অস্থির হয়ে আছেন তুমি ভাবতেই পারছো না।”
“কি বলছো এসব আমি কার কাছ থেকে পালাচ্ছি? ফালতু কথা বন্ধ করো নোরা আমি বাবাকে সময়ের জন্য কল করতে পারিনি কিন্তু আম্মা আর ভাইকে আমার স-ম-স্যা জানিয়েছি।”
“আর তারা মেনে নিয়েছে তুমি যা বলছো তাই ঠিক!”
“কি বলতে চাইছো তুমি?”
“মৈত্রীর সাথে তোমার কোন সম্পর্ক ছিলো না৷ এমনকি তুমি তোমার অনুভূতি কোন শো করোনি তার সামনে। তবে কেন এমন লুকোচুরি করে ব্রো’র মনে ক-ষ্ট দিচ্ছো! নাকি চাইছো ব্রো জেনে যাক তার ভাই তার স্ত্রীকে ভালোবেসে ফেলেছে আর এখন তাই চোখের সামনে ব্রো’র সুখের সংসার সে দেখতে পারবে না!”
“মুখ সামলে কথা বলো নোরা৷ তখন থেকে যা মুখে আসছে তাই বলছো।”
“ওহ রিয়্যালি! দ্যান হোয়াট ইজ দিস ময়ূখ ?” কথাটা বলেই নোরা তার পরনের জ্যাকেট পকেট থেকে কিছু কাগজ বের করে ধরিয়ে দিলো ময়ূখের হাতে৷ মুহূর্তেই মাথায় যেন আসমান ভে-ঙে পড়লো ময়ূখের মাথায়। কাগজগুলো দেখতেই বুকটা মো-চ-ড় দিয়ে উঠলো৷ এগুলো তো তার গানের ডায়েরির পেইজ৷ এই পেজগুলোতে গত কয়েক মাসের জমানোর তার সকল অনুভূতির টুকরো কালির অক্ষরে জমা আছে৷ বড় যত্নে লুকিয়ে রেখেছিল সে এগুলো কোন একদিন মৈত্রীকে দেখাবে বলে৷ মনে মনে তো ঠিক করেই রেখেছিল, বিসিএসটা হয়ে গেলে সে আম্মাকে বলবে মৈত্রীর কথা। সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে দিতে বলবে আম্মাকে পরে ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হলে একসাথে দু ভাই বিয়ে করে বউ আনবে বাড়িতে। আম্মারও তো তেমনই ইচ্ছে ছিল৷ কিন্তু উপরওয়ালার ইচ্ছে তো অন্যকিছু তা এখন টের পাচ্ছে৷ ময়ূখ প্রত্যেকটা পৃষ্ঠা একসাথে করে বালিশের তলা থেকে লাইটার বের করে আগুন জ্বালিয়ে দিলো৷ আজকাল সিগারেট বেশিই খাওয়া হচ্ছে বলেই লাইটার, সিগারেট হাতের কাছেই থাকে৷ নোরা দেখলো তারপরই তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল, “এগুলো না হয় জ্বালিয়ে দিলে কিন্তু যে সন্দেহ ব্রো আর ফুপির মনে সেগুলোর কি করবে?”
“তোমাকে ভাবতে হবে না।”
“ফিরে চলো ফুপির কাছে।”
“যাও তুমি এখন সামনে থেকে।”
“মৈত্রীকে নিয়ে ভাবনা বন্ধ করে দাও ময়ূখ নইলে ব্রো এবার নিজেকেই শে-ষ করে দেবে।”
“আমি মৈত্রীকে ভাবছি না।”
“ভাবছো”
“না”
“হ্যা।”
“না”
“হ্যা”
“বললাম তো আমি তাকে নিয়ে আর ভাবছি না”
“তুমি তাকেই ভাবছো ময়ূখ”
“হ্যাঁ আমি তাকেই ভাবছি তাই পালিয়ে এসেছি৷ চোখের সামনে আমি তাকে অন্য পুরুষের সাথে দেখতে পারবো না”
“অন্য পুরুষ তোমার ভাই হয় ময়ূখ”
“হ্যাঁ আমার ভাই হয় আর এটাই আমার জন্য মৃত্যু য-ন্ত্র-ণা। আমার ম-রে যেতে ইচ্ছে করে যখন মনে পড়ে আমি ভাইয়ের ভালোবাসার মানুষটিকে ভালো বেসেছি।”
“ভুলে যাও”
“বললেই সম্ভব নয়”
“চেষ্টা তো করো ”
“কিভাবে!”
“নিজেকে জড়িয়ে নাও অন্য কারো বাঁধনে।”
“হুট করেই কি সম্ভব! নিজেকে বাঁচাতে অন্যকাউকে মে-রে ফেলা হবে কাউকে নিজের সাথে জড়ানোতে।”
“হবে না চেষ্টা তো করো”
নোরা কথাটা বলেই অসহায় চোখে তাকালো ময়ূখের দিকে৷ তার চোখের ভাষায় যে আকুতি স্পষ্ট তা যে ময়ূখ আগেও দেখেছিল৷ আজ আবারও সেই আকুতি দেখে নিজেকে আড়াল করতে চাইলো। নোরা দিলো না তাকে আড়ালে যেতে৷ হঠাৎই যেন সে কোন ঐশ্বরিক শক্তি নিয়ে ময়ূখের ভেতরটাকে নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। কি হলো সেই এক মুহূর্তে ময়ূখ জানে না শুধু জানলো হ-ঠ-কা-রি-তা করতে তার হৃদয় তৎপর হয়ে উঠেছিল।
ঘটনা ঘটতে যতোটা সময় লাগে অ-ঘ-টন ঘটতে ততোটা লাগে না। ময়ূখ আর নোরা যে অ-ঘ-ট-ন ঘটিয়েছে তা ঘটেছিলো অল্প সময়ের মাঝেই। কিন্তু এই মুহুর্তে ময়ূখের অনুপস্থিতিতে কেউ কোন বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারলো না। হ-তা-শায় ভেঙে পড়েছে ইরিন৷ কথা ছিলো বিকেলে কিছু আত্মীয়স্বজন মিলে যাবে ইরশাদ মৈত্রীকে আনতে কিন্তু ইরিনের মন মানসিকতা এত বেশিই খারাপ যে সে আর ছেলের বিয়ের এই শেষমেশ আনুষ্ঠানিকতা র-ক্ষা করতে পারলেন না। অনেকটা স-ম-স্যায় পড়েই শুধু বাড়ির তিন ছেলে আর তাদের বউকে পাঠিয়ে দিলো ইরশাদ মৈত্রীকে আনতে৷ সায়রা যাবে না যাবে না করছিলো কিন্তু জুয়েনা আর নিপার জোরাজুরিতে ইমরান নিজেই বলে বসলো, “তৈরি হও জলদি আমরা ইরশাদের শ্বশুরবাড়ি যাব।”
সায়রা কথাটা শুনে একবার ভীত চোখে তাকিয়েছিল ইমরানের দিকে কিন্তু তার চোখমুখ দেখে সায়রা কিছুই আন্দাজ করতে পারলো না। তারপর অনেকটা ভয়ে ভয়েই তৈরি হলো। তারা যখন মৈত্রীদের বাড়ি পৌঁছুল তখন ইরশাদ মৈত্রীর মামাতো ভাইকে নিয়ে ডাক্তারের কাছ থেকে সবে ফিরেছে। কাল রাত থেকে সে এতোবার বাথরুমের চ-ক্ক-র কাটিয়েছে তার শরীর তাতে ফ্যাকাশে হয়ে পড়েছিল। মুজিব সাহেব সকালেই ঔষধ এনে স্যালাইন খাইয়েছে। সকাল থেকেই মৈত্রী তার খুব যত্ন নিচ্ছে তবুও মুজিব সাহেব আর রোকসানার জোরাজুরিতে ক্লিনিকে গেল। রাতে মৈত্রীর যখন ঘুম ভে-ঙে-ছিল সে ইরশাদকে প্রশ্ন করেছিলো কি হয়েছে। ইরশাদ যখন বলল তার সমস্যা মৈত্রী তখনই উঠে রান্নাঘর, ডাইনিং টেবিল সব জায়গায় খুঁজেও কোন স্যালাইন পায়নি। শেষে নিজেই স্যালাইন তৈরি করলো ছোট বেলায় টিভিতে দেখে শেখা পদ্ধতিতে৷ এরপর ইরশাদ আরও কয়েকবার বাথরুমে ছুটেছে সেসবে মৈত্রী আর ঘুমায়নি। ভোর হতেই বাবাকে জানিয়ে স্যালাইন জোগাড় করেছে৷ সকালের নাশতাতেও সতর্কতার সাথে চিড়া গুড় মাখিয়ে দিয়েছে। দুপুরেও সাদা ভাত আলু, পেপের ভর্তা করে দিয়েছে৷ এখন মেহমান এসেছে সবাই রিচ ফুড খাবে কিন্তু এ বেলাতেও মৈত্রী তার জন্য ভর্তা ভাজি করেছে নিজেই৷
চলবে