#কাছের_মানুষ_দূরে_থুইয়া
#পর্ব২
#Raiha_Zubair_Ripti
রাজশাহী এক্সপ্রেসে ট্রেনে রাত ৮:১৫ তে উঠে রাত ১০ টায় এসে পৌঁছায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে । স্টেশন থেকে ভোলাহাট যেতে আরো দু ঘন্টা লাগবে। কিন্তু স্টেশনে বেঞ্চে বসে আছে তটিনী।
ট্রেন থেকে নামতেই আকাশের বুক চিঁড়ে আবির্ভাব হয়েছিল ঝুম বৃষ্টির। যার থামার নাম নেই। যার জন্য বসে অপেক্ষা করছে বৃষ্টি বন্ধ হবার। স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা কিছু সংখ্যক লোক দৌড়ে স্টেশনের ভেতর দিকটায় আসলো। এক বৃদ্ধ মহিলা লাঠি ঠক্ ঠক্ করে তটিনীর পাশে বেঞ্চ টাতে বসলো। তটিনীর সেদিকে খেয়াল নেই। সে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে বাহিরে পড়া ঝুম বৃষ্টির দিকে। কোনো বর্জপাতের শব্দ নেই। কল ছাড়লে যেমন একাধারে পানি পড়ে তেমনি মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। তটিনী বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। হেঁটে সামনের দিক টায় এসে দাঁড়ালো। শরীরে মেজেন্টা কালারের সেলোয়ার-কামিজ,চুল গুলো হাত খোঁপা করা। স্টেশনের ছাওনি থেকে বা হাত টা বাড়িয়ে দিলো। সাথে সাথে বৃষ্টির পানি তটিণী-র হাত ভিজিয়ে দিলো। পানির ছিটায় পড়নের জামাকাপড় ভিজে গেলো কিছুটা। সেই সাথে মুখেও আসলো পানির ছিটা। দূর থেকে বৃদ্ধ মহিলা গলা ছেড়ে ডাক দিলো তটিনী কে-“ এই মাইয়া বৃষ্টি তে ভিজো ক্যান,জ্বর আইবো তো।
তটিণী পেছন ফিরে। সত্তরে পা দেওয়া বৃদ্ধ মহিলা হয়তো উনি। তটিনীর মুখে হাসি ফুটলো বৃদ্ধ মহিলা কে দেখে । এতক্ষণ খেয়াল করে নি এই বৃদ্ধ মহিলা কে সে। দৌড়ে কাছে গেলো বৃদ্ধ মহিলার। পাশে বসে বলল-“ দাদি আপনি এখানে যে? কোথাও গিয়েছিলেন?
বৃদ্ধ মহিলা তটিনী কে পর্যবেক্ষণ করলেন। পাশে ল্যাগেজ দেখতে পেয়ে বলে উঠে -“ কই আর যামু,,তোমারেই লইতে আইছি। বিয়ের আগের দিন কেউ এমনে পালায় বাসায় থিকা?
তটিনী চুপসে গেলো। খেয়ালেই ছিলো না এই প্রশ্নের যে সম্মুখীন সে হবে। চুপ রইলো,বিপরীতে কোনো উত্তর দিলো না। সামনে তাকাতেই দেখতে পেলো মাথার চুল হাত দিয়ে ঝাড়তে ঝাড়তে এগিয়ে আসছে তাসফি। মুখে লেগে আছে বিরক্ত। আচ্ছা লোকটা কে নিশ্চয়ই আপু খবর দিয়ে পাঠিয়েছে তাই না? হ্যাঁ বেশ কিছুক্ষণ আগে তো আপুর সাথেই কথা হলো তটিনীর। আপুকেই তো বলেছে তটিনী সে স্টেশনে বসে আছে ট্রেনের জন্য। লোকটা এগিয়ে এলো তটিনী আর বৃদ্ধ মহিলার দিকে। তাসফি বাসা থেকে বের হতেই তাসফির দাদি জাহানারা বেগম নাতি কে পেছন থেকে ডেকে উঠেছিলেন। কারন সে ড্রয়িং রুমেই বসে ছিলেন,টিভি দেখছিলেন। নিত্যকার অভ্যাস রাত অব্দি টিভি দেখা। তাসফি দাদির ডাক শুনে পেছনে তাকায়।
-“ কই যাইতাছোস এতো রাতে তাসফি?
-“ তোমাদের বাড়ির হবু বউ কে তাদের বাসায় দিয়ে আসতে যাচ্ছি।
তাসফির সোজাসাপটা কথায় ভ্রু কুঁচকে আসে জাহানারা বেগমের। লাঠিতে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ বাড়ির হবু বউ রে তাদের বাসায় দিয়া আসতে যাইতাছোস মানে কি?
তাসফি হাত ঘড়ি টায় সময় দেখে বলে-
-“ স্টেশনে বসে আছে তটিনী।
-“ এতো রাইতে স্টেশনে ক্যান হেই মাইয়া?
-“ বাসা থেকে পালিয়েছে।
-“ কিহ! কিছুটা জোরে বিস্ময়ের সাথে কথাটা বলেন জাহানারা বেগম। তাসফি এগিয়ে গেলো।
-“ আস্তে কথা বলো দাদি। আর ঘুমাও নি কেনো। রাত অনেক হয়েছে ঘুমাও গিয়ে। আমি যাচ্ছি।
-“ আমিও যামু তর লগে। তাসফি যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই জাহানারা বেগম কথাটা ফট করে বলে বসেন। তাসফি তপ্ত শ্বাস ফেলে।
-“ বাহিরের আবহাওয়া ভালো না দাদি। যেকোনো সময় বৃষ্টি নামবে।
-“ নামুক তাতে তর আমার কি? আমরা তো গাড়ির মধ্যে থাকমু। আমারও নাইট লং ডেরাইভ হইবো তর লগে।
-“ ডেরাইভ না দাদি ড্রাইভ ওটা।
জাহানারা বিরক্ত হয়ে ধমক দিয়ে বলল- ঐ হইলো একটা। খালি ভুল ধরস ক্যা আমার। আমারে লইয়া যা,মাইয়ার সাহস কত আমার নাতি রে বিয়ে না কইরা পালাইয়া যায়।
-“ আচ্ছা চলো।
তারপর দাদিকে নিয়েই স্টেশনে রওনা হয় তাসফি।
-“ দাদি তটিনী কে নিয়ে গাড়িতে বসো। বৃষ্টির মাত্রা কিছুটা কমেছে। ট্রেন আসতে আরো লেট হবে।
জাহানারা বেগম তটিনীর হাত ধরে বলে- চলো গাড়িতে। মাইয়া মানুষ বিয়ের কথা উঠলেই বাসা থিকা পালাইবার চাও ক্যান? আমার নাতি কি সুন্দর না নাকি? এই তাসফি তটিনীর দিকে তাকাতো। এই মাইয়া আমার নাতির দিকে তাকাও। দেহো তো কোনো খুঁত পাও কি না।
তটিনী তাকালো তাসফির দিকে। তাসফি অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। লোকটার মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। শরীরে ব্লাক হুডি। গায়ের রং ফর্সা। আদিলের থেকেও কম সুন্দর না এই লোক।।
-“ পাইছো কোনো খুঁত?
তটিনী দু দিকে মাথা নাড়ালো।
-“ তাইলে পালাইছো ক্যান? সুখে থাকতে ভূতে কিলায়?
তটিনী অসহায় হয়ে রইলো। আসলেই সুখে থাকতে মনে হয় তাকে ভূতে কিলাচ্ছিলো। এই একটা ভুলের জন্য যে তাকে কত কথা শুনতে হবে তার হিসেব নেই। আল্লাহ আল্লাহ করে বিয়ে টা ভেঙে যাক।
-“ দাদি গাড়িতে উঠতে বলছি আমি।
তাসফির শক্ত মুখের কথায় জাহানারা বেগম তটিনী কে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। মুহূর্তে পকেটে আবার ফোন বেজে উঠে। তাসফি ফোন কল টা রিসিভ করে।
-“ ভাই পাইছেন তটিনী কে?
-“ হুমম পেয়েছি।
-“ আপনার জন্য চড় খেতে হয়েছে।
-“ ভুল করছো চড় খেয়েছো,,এখন ফুলশয্যা এনজয় করো। বেস্ট অফ লাক।
কথাটা বলে তাসফি ফোন কে’টে দেয়। বড় বড় পা ফেলে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। পেছনের সিটে তটিনী আর জাহানারা বেগম বসেছে। তাসফি ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
প্রায় দু’ঘন্টা পর এসে পৌঁছায় তটিনীর গন্তব্যে। গাড়িতে থাকাকালীন কেউ টু শব্দ টাও করে নি। গাড়ি টা বাসার সামনে এসে থামতেই তটিনীর বুক টা ধক করে উঠে। না জানি বাসায় কি অপেক্ষা করছে তার জন্য। জাহানারা বেগম গাড়ি থেকে নেমে তটিনী কে গাড়ি থেকে নামতে বলে। তাসফি লুকিং গ্লাসের আয়না দিয়ে পেছনে আড়ষ্ট হয়ে বসে থাকা রমণীর দিকে দৃষ্টি রেখে বলে-
-“ দাদি তুমি যাও৷ তটিনী আসতেছে। চুপ থাকবা ভেতরে গিয়ে।
জাহানারা বেগম চলে গেলেন। তাসফি গাড়ি থেকে নেমে সোজা পেছনের সিটের দরজা খুলে তটিনীর পাশে বসে গাড়ির দরজা টা বন্ধ করে দেয়। ঠোঁট কামড়ে কিয়ৎ ক্ষণ চুপ থাকে রাগ নিবারন করার জন্য।
-“ বয়ফ্রেন্ড গ্রহণ করে নি?
দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা টা বলে। তটিনী মাথা নিচু করে বসে থাকে। লোকটার শরীর থেকে কড়া পারফিউমের ঘ্রাণ ভেসে আসতেছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। তটিনী কে চুপ থাকতে দেখে তাসফি বিরক্তি নিয়ে বলে-
-“ অ্যান্সার মি। বয়ফ্রেন্ড গ্রহন করে নি?
-“ ওর বিয়ে হয়ে গেছে। মিনমিনে সুরে কথাটা বলে উঠে তটিনী।
-“ বেশ করেছে। বিরবির করে কথাট বলে তাসফি। তটিনীর কর্ণকুহরে গিয়ে পৌঁছায় না কথাটা৷
-“ গাড়ি থেকে নামো।
-“ চড় থাপ্পড় খাওয়ার জন্য?
তাসফি ভ্রু কুঁচকালো। -“ চড় থাপ্পড় খাওয়ার জন্য মানে?
-“ আমি পালিয়ে গিয়েছিলাম। আবার বাসায় ফিরছি। সবাই আমাকে চড় থাপ্পড় না মেরে খ্যান্ত হবে নাকি? কয়েক টা থাপ্পড় চড় পরবে আমার গালে তার ধারনা নেই আপনার।
-“ আচ্ছা তোমাকে কেউ মারবে না। চলো। তপ্ত শ্বাস ফেলে কথাটা বলে তাসফি।
-“ সত্যি?
-“ হুমম।
তটিনী খুশি মনে গাড়ি থেকে নামলো ল্যাগেজ নিয়ে। তাসফি নিজেও গাড়ি থেকে নামলো।
-“ আপনি আগে আগে হাঁটা ধরুন। তাসফি তাই করলো। তাসফির পেছন পেছন হাঁটা ধরলো তটিনী।
পুরো বাড়ি থমথমে। বসার ঘরে বসে আছে তটিনীর বাবা তারেক,মা লায়লা,আর বোন তানু,জাহানারা বেগম। পুরো বাড়ি রংবেরঙের আলোয় সজ্জিত। কোথায় আজ বিয়ে উপলক্ষে গান বাজনা বাজার কথা ছিল তা না হয়ে তটিনীর চিন্তায় সবাই কপোকাত। তটিনী এক বুক ভয় নিয়ে আল্লাহর নাম জপতে জপতে ভেতরে ঢুকে। তটিনী কে দেখামাত্রই তানু দৌড়ে আসে। তটিনী দু হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে। তানু ভ্রু কুঁচকায়। তটিনী গালে এখনও চড় পড়তে না দেখে আঙুলের ফাঁকা দিয়ে দেখে তানু দাঁড়িয়ে আছে।
-“ রাগ করে চলে গিয়েছিলি কেনো? তোকে কি আমরা জোর করে বিয়ে দিচ্ছিলাম? রাজি না সেটাই বললেই পারতি।
তাসফি তানুর দিকে তাকালো। তানু এক ঢোক গিলল।
-“ কি হলো কথা বলছিস না কেনো? বিয়ে না করার জন্য ই তো বাড়ি থেকে পালালি তাহলে আবার চলে আসলি কেনো? মত বদলেছে? বিয়েতে রাজি তুই?
তাসফি প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে বলে-
-“ রাজি না হলে নিশ্চয়ই বাসায় ব্যাক করতো না ভাবি আপনার বোন।
-“ সেটাও ঠিক। বাবা দেখছো তোমার ছোট মেয়ের কারসাজি?
তরিকুল ইসলাম বসা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। শক্ত মুখে বলল- “ যেই মেয়ে বাবা মায়ের কথার অবাধ্য হয়ে পালিয়ে যায়৷ সেই মেয়ে কখনই ভালো হতে পারে না। তারপর লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে গেলো রুমে। তটিনী এসব কথা শোনার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলো।
লায়লা বেগম তাসফির দিকে তাকিয়ে বলে-
-“ ওকে নিয়ে আসলে কেনো। পড়ে থাকতো রাজশাহীর মাটিতে। ওর কি পড়াশোনা বন্ধ করে দিব এসব বলেছি? চিঠিতে এসব লিখে যাওয়ার মানে কি?
তাসফি তার দাদি কে উঠে দাঁড়াতে ইশারা করলো। -“ সন্তান একটা ভুল করতেই পারে আন্টি সেজন্য আপনারা তাকে কটাক্ষ না করে বুঝিয়ে বলবেন। তাহলে আর এমন ভুল করবে না। তটিনী ভুল করেছে আপনারা সুন্দর করে বুঝিয়ে বলবেন। তটিনী অবুঝ নয় বুঝবে আপনাদের বুঝ।
লায়লা বেগম ভস্ম চাহনি নিয়ে একবার তটিনীর দিকে তাকায়। তটিনী তাদের কথার কোনো আগামাথা বুঝতে পারছে না। ও তো চিঠিতে এসব লিখে নি। তটিনীর মনে আছে সে চিঠিতে লিখেছিল সে পালিয়ে যাচ্ছে তার ছাতার ভালেবাসার জন্য। তাহলে এসব বলছে?
-“ তোমাদের বাসায় হয়তো এতক্ষণে সবার কানে চলে গেছে বাবা তটিণী-র পালিয়ে যাওয়ার কথাটা। তোমরা নিশ্চয়ই এবার বিয়ে টা ভেঙে দিবে। তটিনীর জন্য কি তানুর সংসারেও এর রেশ পড়বে?
তাসফি লায়লা বেগমের দিকে তাকালো।
-“ আন্টি আমার বাসার কেউ জানে না এখনও। আর আপনি চিন্তা করবেন না বিয়ে টা হবে। আর ভাবির সংসারে এসবের রেশ পড়বে না। আপনি তটিনী কে ভেতরে নিয়ে যান।
লায়লা বেগম স্বস্তি পেলো। তটিনীর দিকে তাকিয়ে বলল- রুমে চল।
তটিনী বাধ্য মেয়ের মতো মায়ের পেছন পেছন রুমে গেলো।
-“ ওর গায়ে যেনো হাত না তুলা হয় ভাবি। বিষয় টা খেয়ালে রাখবেন।
তানু মাথা নাড়িয়ে জানায় খেয়াল রাখবে।
তাসফি জাহানারা বেগম কে নিয়ে চলে যায়।
লায়লা বেগম রুমে ঢুকেই মেয়ে কে ইচ্ছে মত বকা শুরু করে। তটিনী বিছানায় অপরাধীর ন্যায় হয়ে সব হজম করে। এ ছাড়া উপায় নেই। লায়লা বেগম মেয়েকে চুপ থাকতে দেখে রাগী কন্ঠে বলে-
-“চলে গিয়েছিলি আসলিই বা কেনো? তাসফি না থাকলে আজ তোর গাল চড়িয়ে লাল করে দিতাম ফাজিল মেয়ে। পরশু তার বিয়ে আর আজ সে সিনেমার মত চিঠি লিখে পালিয়েছে। জীবন টা কি সিনেমা?
তটিনী মাথা তুলে তাকালো। -“ চিঠি টা কোথায়?
লায়লা বেগম বিরক্তি নিয়ে বলে- তোর বাবার কাছে। চিঠি দিয়ে কি করবি? হুবহু কি সেটা লিখে আবার বাসা থেকে পালাবি? শুনে রাখ বিয়ের আগ অব্দি তোর বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ পড়াশোনা শ্বশুর বাড়ি গিয়ে করবি।
তটিনী বিরক্ত হলো। সেই কখন থেকে এই এক প্যাচাল করে যাচ্ছে একটু তো জিজ্ঞেস করতে পারে আসতে সমস্যা হয়েছে কি না। বা আদরে বুকে জড়িয়ে ধরে বলতে যে মা তুই এসেছিস৷ কেনো চলে গেছিলি তুই। মা বাবা তোর সব কথা শুনবে। দিবে না বিয়ে। তা না করে এই ছাতার প্যাচাল।
আজকের দিন টা স্মরনীয় করে রাখবে তটিনী যতদিন বেঁচে রবে। সব খারাপ ঘটনা আজই হচ্ছে। একটাও মনের মত ভালো সুন্দর হচ্ছে না।
লায়লা বেগম ল্যাগেজের জামাকাপড় গুলো আলমারি তে রেখে বলে- “ এ্যাহ আবার আলমারির সব নতুন নতুন জামাকাপড় গুলো নিয়েই পালিয়েছে। আর এত কাপড় কেনো নিয়েছিল? বছর চারেকের মধ্যে কি বাসায় না আসার প্ল্যান করেছিলি?
তটিনী চোখ ছোটো ছোট করে বলে- কোথায় সব কাপড় নিয়েছি। মাত্র তো দশ সেটই নিয়েছি।
-“ এটা মাত্র?
কথাটা বলে ঝাটা নিয়ে আগাতে আসলে তানু আঁটকে দেয়।
-“ উফ মা কি শুরু করলা। মেয়েটা বাসায় এসেছে এটাই তো অনেক। কাল থেকে মেহমান আসবে। কি হতো ও না ফিরলে ভেবে দেখেছো?
লায়লা বেগম ঝাটা টা ফেলে দিয়ে বলে-
-“ না ভাবি নি সেজন্য ই এখনও চলা ভাঙি নি ওর পিঠে।
তানু তপ্ত শ্বাস ফেলে। লায়লা বেগম রাগতে রাগতে রুম থেকে চলে যায়। তানু এগিয়ে এসে তটিনীর সামনে দাঁড়িয়ে বলে-
-“ তুই কি গাধা? ভালোমন্দ কিছু বুঝিস না? বয়ফ্রেন্ডের সাথে পালিয়ে যাবি সেটা চিঠিতে লিখে চলে গেলি! বাবা ঐ চিঠিটা দেখলে কি ধারনা পেত তোকে নিয়ে আন্দাজ করেছিস কখন? ভাগ্যিস চিঠিটা সরিয়ে ফেলেছিলাম বাবার হাতে পড়ার আগেই।
#চলবে?