#ওয়ারদূন_আসরার
#লাবিবা_ওয়াহিদ
“০৮”
———————————-
– যীনাত উঠো! তুমি যা যা সংকেত পাচ্ছো সবটাই তোমার অতীতের সাথে মিশে আছে। নিজের অতীত ঘেটে দেখো তাহলেই সকল প্রশ্নের উত্তর তুমি পেয়ে যাবা।
যীনাত লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে। আজকের টা আবার কেমন স্বপ্ন? যীনাত উঠে আশেপাশের কি ধ্যান দিতেই শুনতে পায় আযানের ধ্বনি দূর থেকে ভেসে আসছে। যীনাত তাড়াতাড়ি গিয়ে অযু করে নামাজ আদায় করে নেয় এবং খুব ভোরেই জাইফের ঘরে নক করে। জাইফ তখনো ঘুমোচ্ছে। দরজার করাঘাতে জাইফের ঘুম ভেঙে যায় এবং কিছুটা বিরক্তি নিয়ে উঠে দরজা খুলতে যায়। দরজায় যীনাতকে দেখে জাইফের ঘুম উড়ে যায়।
– কি হলো যীনাত আপনি এই ভোরে আমার রুমে কোনো সমস্যা হয়নি তো?
– না তেমন কিছু না আপনি একটু আমায় হুজুরের নাম্বার টা দিন! হুজুরের নাম্বার টা যোগার করেছেন?
– হ্যাঁ আমি তো তোমায় সকালে দিবো ভেবে ঠিক করেছিলাম।
– আমাকে এখনই এই মুহূর্তে দিতে পারবেন প্লিজ!
– কেন যীনাত কোনো সমস্যা? থাকলে আমায় বলুন আমার দুশ্চিন্তা হচ্ছে।
– চিন্তার কোনো কারণ নেই। হুজুরের কথা অনেক মনে পড়ছে তাই চাইছি।
– সত্যিই কি তাই?(ভ্রু কুচকে)
– হুম হুজুরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি তো তাই তর সইছে না।
– ওহ ওকে ওয়েট।
বলেই জাইফ ফোন থেকে নাম্বার টা দিয়ে দিলো। যীনাত নাম্বার পেতেই ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে চলে যায়। জাইফ সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দরজা লক করে আবার বেডে এসে শুয়ে পড়ে।
যীনাত ভোর ৬টা বাজেই হুজুরকে কল দিলো। হুজুর কল দিতেই যীনাত সালাম দেয় হুজুর সালামের উত্তর দিয়ে বলে,”কে?”
– হুজুর আমি যীনাত।
– আরে যীনাত মা কেমন আছো তুমি?
– আলহামদুলিল্লাহ হুজুর আল্লাহ যেরকম রেখেছেন।
– ওহ যাক আলহামদুলিল্লাহ! কিন্তু এই ভোরে কেন কল করেছো? ওখানে কি কোনোরকম সমস্যা হচ্ছে?
– না হুজুর তেমন কিছু না আমি শুধু কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতেই কল করেছি।
– কিসের উত্তর কিসের প্রশ্ন?
যীনাত সেই রাতের স্বপ্ন এবং গত রাতের স্বপ্নসহ সবটা খুলে বললো হুজুরের কাছে। যীনাতের কথা শুনে হুজুরও বেশ চিন্তায় পড়ে যায়। পরে সে কিছুক্ষণ ভেবে বলে,”যীনাত জানো তো সব প্রশ্নের সবসময় পাওয়া যায় না। কিছু উত্তর সঠিক সময় আসলে পাওয়া যায়। তাই ধৈর্য ধরো সময় আসলে সব সত্যি তোমার চোখের সামনেই প্রকাশ পাবে।”
– সত্যি?? কিসের সত্যি হুজুর! আর ওই “গোলাপ রহস্য” কি হুজুর? এটার সাথে আমার জীবনের কিসের গুরুত্ব? কোন গোলাপের কথা হচ্ছে এখানে?
– সময় আসুক সব জানতে পারবে।
বলেই হুজুর কল কেটে দেয়। এপাশ থেকে যীনাত “হ্যালো, হ্যালো” করেই যাচ্ছে। তারপর কান থেকে ফোন নামিয়ে ভাবে,”এটা আবার কিসের রহস্য?”
★
– আরে ওই বেয়াদব গুলা! পাক্কা ৪দিন বাইন্দা রাখসোস আরে আই কি মানুষ না? আই কি হনুমান আরে ওইইইইই আমারে ছাড় বাপ ছাড়!! আর কতো আরে বাইন্দা রাখবি!! ঠাকুর এইডির উপ্রে গজব ফেলাও দেহো তুমি দেহো আর মতো বুড়িরে সব মিল্লা কিরাম অত্যাচার করতাসে।
রিকেশ দরজা কিছুটা ফাঁক করে শুধু মাথাটা বের করে বলে,”ওগো কমলা বুড়ী নিজে যেদিন শুধরাইবা ওইদিনই তুমি ছাড়া পাইবা!”
– রাখ তোর শোধরানি আরে ছাড় তারপর দেখ তোর পিঠের ছাল কেমনে উঠাই শা**** হারামী!!
– সে তুমি যাই কও খাও দাও ঘুমাও আমি গেলাম।
বলেই রিকেশ চলে গেলো আর কমলা নিজের মতো চেঁচাচ্ছে। আজ প্রায় ৪দিন হলো কমলা দেবীকে বেধে নিজের রুমে ঘর বন্দি করে রেখেছে। এদিকে রিকেশের এক বিজনেস পার্টনারের মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে। মেয়েটার নাম আনুস্কা। দেখতে বেশ মিষ্টি এবং ভদ্রও। বিয়ের ডেট সামনের ২৪ ফাল্গুণের দিকে ফেলা হয়েছে। আনুস্কা নাকি আগে থেকেই রিকেশকে পছন্দ করতো কিন্তু কখনোই বলতে পারতো না। শেষে যখন শুনলো রিকেশের বিয়ের জন্য মেয়ে খোঁজা হচ্ছে তখন লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে নিজের বাবাকে বলে দেয়। শেষে আনুস্কার বাবা-ই তাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। মল্লিকা দেবী আনুস্কার ছবি দেখে বেশ পছন্দ করে এবং রিকেশ মায়ের সাথে সহমত হয়। তবে রিকেশ বলেছে মিট করবে আলাদা দুই পরিবারই সম্মতি দেয় কারণ লাইফ টা ওদের! সারাজীবন কাটানোর আগে দুইজন দুইজনকে চেনা-জানা জরুরি। পরেরদিনই যাবে রিকেশ দেখা করতে।
রাতে,
খাওয়া দাওয়া শেষে যীনাত জামা-কাপড় ভাজ করছিলো ওমন সময় রিকেশ আর জাইফ এসে বলে,”আসবো?”
যীনাত মাথায় ওড়না দিয়ে বলে,”আরে দাভাই আসুন!”
রিকেশ মুচকি হেসে রুমে প্রবেশ করে আর তার পিছে জাইফ। যীনাত দুইজনকে বসতে দিয়ে নিজে দূরের এক সোফায় বসে বলে,”হঠাৎ বোনের ঘরে কি মনে করে?”
রইকেশ মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে,”কিছু বলবো তাই আর কি!”
যীনাত মুচকি হেসে বলে,”বলুন কি বলবেন!”
– তুমি তো জানোই আমার বিয়ে ‘আনুস্কা’ নামের এক মেয়ের সাথে ঠিক করা হয়েছে। কাল আমরা দেঝা করবো সো ভাবছি জাইফ আর তোমাকেও সাথে নিয়ে যাবো। একদিক দিয়ে তোমার ঘুরাঘুরিও হবে আবার আনুস্কার সাথে দেখাও করতে পারবে!
যীনাত আড়চোখে জাইফের দিকে তাকালো জাইফ তখনো তার দিকে তাকিয়ে। জাইফের দিকে ভালোভাবে তাকাতেই জাইফ চোখ দিয়ে ইশারা করে যেনো রাজি হয়৷ যীনাত জাইফের ইশারা বুঝে বলে,”ঠিক আছে যাবো।”
রিকেশ মুচকি হেসে আরও কিছুক্ষণ কথা বলে চলে গেলো৷ জাইফ রিকেশের পিছে গেলো না সে চুপচাপ যীনাতের পাশে এসে বসে এবং বলে,”অনেকদিন ধরে বাসায় আছো তাই ভাবলাম একটা সুযোগ যেহেতু এসেছে সেহেতু তোমাকে কোথাও নিয়ে যাই। এতে মন ফ্রেশ লাগবে।”
যীনাত চোখ দুটো চিকচিক করে বলে,”তাহলে ভাইয়াকে আপনিই বলেছেন?”
জাইফ যীনাতের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে মাথা নাড়ায়। যার অর্থ “হুম”।
জাইফ কালকে বের হওয়ার সময়সূচি বলে দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো আর যীনাত সেখানে বসেই আল্লাহ-র দরবারে লাখো শুকুরিয়া আদায় করলো এতো বিপদের পরেও এমন উত্তম স্বামী তাকে দেওয়ার জন্য যে কিনা স্বামী হয়ে নয় বন্ধুর মতো পাশে থাকে, তাকে বোঝার চেষ্টা করে।
পরেরদিন,,
যীনাত পুরো পর্দা করে বেরিয়েছে কারণ জাইফের হুকুম। জাইফের বডিগার্ড ড্রাইভ করছে, তার পাশে রিকেশ আর পিছে জাইফ, যীনাত। যীনাত আনন্দের সাথে জানালা দিয়ে বাহির টা দেখছে আর জাইফ একবার ফোন টিপছে এবং কিছুক্ষণ পরপর যীনাতের দিকে তাকাচ্ছে। প্রায় ঘন্টাখানেক এর মাঝে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে এসে গাড়ি থামলো। রেস্টুরেন্ট বললে ভুল হবে এটা একটা ফাইভ স্টার হোটেল। যীনাত ভেতরে গিয়ে একদম হা হয়ে গেলো। এতো বড় এবং এতো সুন্দর হোটেলে যীনাত কখনো যায়নি। এই হোটেল টা সেদিন যীনাত ম্যাগাজিনে দেখেছিলো। সত্যি-ই ধনীদের তেজই আলাদা। রিকেশ সামনে সামনে হাটছে আর জাইফ এবং যীনাতের সামনে কয়েকটা বডিগার্ড। যীনাতের বেশ লজ্জা লাগছে এই ভেবে জাইফ যীনাতের হাত ধরে হাটছে। এই প্রথম জাইফ যীনাতের হাত ধরেছে তাই যীনাতের অনুভূতিটা বলা মতো নয়। জাইফকে যতো দেখে যীনাত ততোটাই অবাক হয়ে যায় এটা ভেবে এই ছেলে এতোটা পারফেক্ট কি করে হয়? যেমন তার চোখ ঝাঝালো রূপ তেমনি তার আচরণ, জ্ঞান-বুদ্ধি এবং ভদ্রতা। যা যীনাতকে মুগ্ধ না করে পারেনা। জাইফ হঠাৎ থেমে যায় এবং যীনাতকেও থামতে ইশারা করে। তারপর যীনাতের হাত ধরে কয়েক কদম পিছিয়ে যীনাতকে নিয়ে দেয় এক দৌড়! যীনাত অবাকের চরম পর্যায় চলে গেলো। দৌড়াতে দৌড়াতে জিজ্ঞেস করে,”হলো কি এভাবে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
– পরে বলছি।
বলেই যীনাতকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে এবং ড্রাইভিং স্টার্ট দেয়। যীনাত বলেই যাচ্ছে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? রিকেশ ভাইয়া চিন্তা করবে আরও অনেক কিছু। জাইফ প্রথমে চুপ থাকলেও পরে বলে,”ওহ কাম অন যীনাত! ওরা ফাস্ট মিট করছে সেখানে ওদের একান্তে সময় কাটানো উচিত। আমরা কেন-ই বা কাবাব মে হাড্ডি হতে যাবো বলোতো? তাই ওরা ওদের মতো টাইম স্পেন্ড করুক আমরাও আলাদা টাইম স্পেন্ড করি তোমাকে নিয়ে ঘুরি কি বলো?”(যীনাতের দিকে ফিরে)
যীনাত ভাবলো সত্যিই-ই তো। তাদের মাঝে গিয়ে বসে থাকলে নিশ্চয়ই আনুস্কা অস্বস্তিবোধ করবে। এসবই আকাশ পাতাম ভাবছিলো যীনাত। জাইফ আর কিছু বললো না। একসময় চারপাশে ইট-বালির দালান ছেড়ে সবুজে ঘেরা রাস্তায় গাড়ি চলতে লাগলো জাইফ। পরিবেশ টা বেশ শান্ত এবং মনোমুগ্ধকর। যীনাত হা হয়ে জানালা দিয়ে বাহির টা দেখছে। যীনাত খেয়াল করে দূরে দূরে কয়েক কাপল বসে আছে, আবার কিছু দূরে দেখা যায় কাপল রা হাট ধরে হাটছে। মনে হচ্ছে যেনো জায়গাটা কাপলদের জন্যই। জাইফ গাড়ি ঘুরিয়ে একটা নদীর পাড়ে এসে থামালো। যীনাত গাড়ি থেকে নেমে জায়গায় ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে নিলো। চারদিকে সবুজ আর সবুজ তার মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে এক ছোট্ট নদী। সত্যি-ই প্রকৃতির সুন্দর্য সবকিছুকে হার মানায়। জাইফ আবার যীনাতের হাত ধরে নদীর কিছুটা কাছাকাছি আসে এবং সবুজ নরম ঘাসের উপর বসে। যীনাত সুন্দর্য দেখছে এর মাঝে জাইফ যীনাতের দিকে তাকিয়ে বলে,”পছন্দ হয়েছে?”
– ভীষণ!! জায়গাটার যতো প্রশংসা করি না কেন শেষই না।
জাইফ মুচকি হেসে সামনের দিকে তাকায় তারপর বলে,”যখন ছোট ছিলাম তখন গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পথে এই জায়গা টা দেখতে পাই এবং বেশ পছন্দের জায়গাও হয়ে যায়। তখন থেকে সুখে দুঃখে এখানে এসে সময় কাটাই। জায়গা টা খুব টানে আমায় জানো কিন্তু কেন বুঝিনা।”
যীনাত মুচকি হেসে জায়গাটা চুপচাপ দেখছে। হঠাৎ পরিষ্কার আকাশ কেমন মেঘলা হয়ে চারদিকটা অন্ধকার করে ফেলে। যেনো এখনই বৃষ্টি নামবে! যীনাত বৃষ্টির আভাস বুঝতে পেরে আকাশের দিকে তাকিয়েই জাইফের কাধে হাত রেখে বলছে,”শুনুন মনে হচ্ছে বৃষ্টি হবে এখান থেকে চলে যাওয়াই ভালো হবে!”
কিন্তু সেগুড়ে বালি। জাইফ টু শব্দও করলো না। জাইফকে চুপ থাকতে দেখে যীনাত আবার একপ্রকার ঝাকিয়ে বলে,”কি হলো শুনতে পাচ্ছেন না!”
বলেই যেই জাইফের দিকে তাকালো ওমনি যীনাত চোখ দুটো রসোগোল্লার মতো করে ফেলে। কারণ জাইফ আগের মতোই নদীর দিকে মুচকি হেসে তাকিয়ে কোনোরকম নড়াচড়া নেই। যেনো একটা স্টাচু তার পাশে বসে! যীনাত কাঁপা কাঁপা হাত নিয়ে জাইফের নাকের কাছে আঙুল দিয়ে দেখলো নিশ্বাস চলছে কিনা? হ্যাঁ নিশ্বাস চলছে কিন্তু তবুও এভাবে স্টাচুর মতো কেন? যীনাত আরও ঝাকাচ্ছে জাইফকে কিন্তু জাইফ আগের মতোই আছে। এমন সময়ই দূরে খুব জোরে বজ্রপাত হলো। বজ্রপাতের শব্দ এতোটাই তীক্ষ্ণ যে যীনাত কানে হাত চেপে ধরে ভয়ে। হঠাৎ নদীর থেকে কেমন টুকটাক শব্দ হচ্ছে। যীনাত চোখ মেলে নদীর দিকে তাকায়। হঠাৎই সেই নদী থেকে ১৭ ফুট বড় ৭মাথার সাপ উঠে আসে। তাদের গায়ের রঙ অনেকটাই বিস্রী আর তাদের জিবহা টা বাদামী রঙয়ের, যেমন বিস্রী তেমনি লমহর্ষক। এদের দেখে কোনো সাধারণ মানুষ জ্ঞান নিয়ে থাকতে পারবে না। তারা যীনাতের দিকেই ফিরে আছে। যীনাত ভয়ে চিৎকার দিবে এমন সময়ই মনে পড়ে যায় তার বাবার বলা একটা কথা।
-“যীনাত মা ভয়কে জয় করা শিখ কারণ তুই যদি কোনোভাবে কিছু দেখে ভয় পাস তাহলে সে তোর ক্ষতি করবে। আর যদি সাহসীকতার সাথে সবকিছু হ্যান্ডেল করিস তাহলে সবটাই তোর জন্য সহজ হবে। মনে রাখবি ‘ভয়’ পারে শুধু ক্ষতি করতে, বাঁচাতে নয়।”
যীনাতের কথাগুলো মনে করতেই নিজের মধ্যে সাহস আনার চেষ্টা করে কিন্তু এমন লমহর্ষক প্রাণী দেখে কোন সুস্থ মানুষ চুপ করে বসে থাকতে পারে। নাহ এখানে শুধু তার একার প্রাণ নেই এখানে জাইফও আছে আর জাইফের দায়িত্ব খুবই ভরসা করে দাদু তাকে দিয়েছে। তার বিশ্বাসের খেয়ানত করতে পারবে না। যীনাত উঠে দাঁড়ায় এবং জাইফকে টেনে গাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু জাইফকে এক চুল পরিমাণও সরাতে পারে না। কি করে পারবে তার থেকেও অনেক ভারী তার উপর জিম বডি! কখনোই যীনাতের একার পক্ষে সম্ভব না জাইফকে সরানো। এবার যীনাত কি করবে? নিজেও ভয় পেতে পারছে না আবার জাইফকেও এখানে ফেলে রাখতে পারছে না। দূরে আবার জোরে বজ্রপাত হলো। হঠাৎ সাপটার একদম মাঝের মাথাটা জাইফের মাথার সামনে এসে তাদের নাক ছুঁয়ে নেয়। যীনাত তখনো জাইফকে শক্ত করে ধরে আছে আর বারবার সাপটাকে সরানোর চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু পারছে না। শেষে সাপটা আবার আগের জায়গায় চলে যায় আর খুব অদ্ভুতভাবে শব্দ করে। এতে করে সাপটার একদম মাথার উপর থেকে আকাশের মেঘগুলো গোল হয়ে সরে যেতে থাকে আর সাপটার উপর খুব সুন্দর আলোকরশ্মি পড়তে থাকে। আস্তে আস্তে সাপটার রঙ পাল্টাতে থাকে আর সাপের শরীর থেকে এতো তীব্র আলোকরশ্মি বের হতে থাকে যে যীনাত চোখ খুলে রাখতে পারেনা। যখন আলোকরশ্মি কমে গেলো তখন আস্তে আস্তে যীনাত চোখ মেললো এবং দেখে এক অপরূপ সুন্দর সাপ তাদের সামনে! সাপটার সুন্দর্য চোখে তাক লাগার মতো। সাপটার সাথে সাথে নদীর পানিটা এতোটা স্বচ্ছ হয়েছে যে পানির নিচের পাথর গুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। যীনাত তখনো ভয়ে কাঁপছে। ৭মাথা ওয়ালার মাঝের যে মাথাটা আছে সে কিছু ইশারা করতেই যীনাত জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।
———————————
চলবে!!!
(গঠনমূলক মন্তব্যের প্রত্যাশায় রইলাম।)