#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০১
ওহে,
তোমাকে কি নাম হিসেবে সম্বোধন করবো তা আমি আজ অব্দি বুঝে উঠতে পারিনি। কারণ বেনামি সম্পর্কগুলোর কোনো নাম থাকে না। আমরা পারিনা সেই সম্পর্কের কোনো নাম দিতে। আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠা হয় না আর! তবে তুমি নিঃসন্দেহে আমার জীবনের প্রিয় একজন মানুষ। তার কারণ? কারণ যে একটাই!” আমার হৃদয় ও বাহিরে অন্তরে অন্তরে, আছো তুমি হৃদয় জুড়ে!” তবে কেন তোমায় প্রিয় বলে সম্বোধন করলাম না? এর উত্তর তোমার কাছে ভালো করেই আছে।
মনে আছে তো, সেই দিনের কথা! যখন তুমি ব্যস্ত ছিলে কথা ব্যক্ত করায়, আর আমি মগ্ন ছিলাম তোমার কথা শোনায়! দিনগুলো কি সুন্দর ছিলো তাই না! জানো মাঝে মাঝে অবাক হতাম যে এই মানুষটা কি করে এত সুন্দর করে কথা বলতে পারে! তোমার মাঝে আমি আমার এক নতুন আভা খুঁজে পাই। তবে আমি ছিলাম সন্ধিহান। নিজের মনের মাঝে আওড়িয়েছিলাম কত কথা! তোমায় নিয়ে আমার ভাবনা, আকাঙ্ক্ষা সব যেন হুট করে বেড়ে যাচ্ছিলো। আমি উপলব্ধি করলাম যে আমি তোমার মাঝে ডুবে গিয়েছি। আমার পাগলামিগুলো যেন বেড়েই চলছিলো দিন দিন। নতুন স্বপ্ন, নতুন আশা, নতুন পথ, আর তোমার মধ্যে কিছু ইতিবাচক ইশারা! এইসব নিয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষা জন্মে গিয়েছিলো যে এই ক্ষুদ্র হৃদমাঝারে। এভাবেই যে কবে তোমার প্রতি আমার মায়া জমে গিয়েছে আমি নিজেই আজও এর উত্তর খুঁজে পাইনি। তোমার হাত যে ধরতে চেয়েছিলাম আমি! চেয়েছিলাম সারাজীবন তোমার হাত মুঠো করে ধরে হাতে হাত রেখে চলতে। তবে আমি তো জানতাম না যে তুমি তা চাওনি। তোমার মনে যে অন্যকারো বসবাস তা তুমি আমাকে কখনোই বলোনি! জানো তোমার প্রতি আমার আছে আমার একরাশ অভিযোগ! একরাশ! যেই অভিযোগ হাজার তপস্যা করলেও যে মুছে ফেলা নয় সম্ভব। তোমাকে নিয়ে ভাবলে আমার বুক কেঁপে উঠে। তোমাকে না পাওয়ার আর্তনাদ জেগে উঠে। তোমাকে জোর করে পাওয়ার ইচ্ছে জাগে। তবে তুমি খুব ভালো করেই জানো কাউকে জোর করে পাওয়ার আগ্রহ বা ইচ্ছে আমার কোনোটাই নেই। তবে তুমি খুব গম্ভীর জানো তো! এক কথায় চাপা স্বভাবের! তাই তো টানা দেড় বছর তোমার সাথে তোমার মনের বিপক্ষে লড়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলাম আমি। কিন্তু তোমার সেই ভালোবাসার প্রাক্তনকে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা! সেই প্রতিজ্ঞার কারণে তুমি আমায় সফল হতে দিলে না। তাহলে আগে কেন বললে না বলো তো? এভাবে পুড়িয়ে মেরেছিলে কেন আমায়? এখনও মারছো! আর যেই ওয়াদার জন্য আমার হাত ধরোনি সেই ওয়াদা চিরকাল পালন করে যাবে তো? নাকি কেবল আমাকে উপেক্ষা করার বাহানা করলে শুধুমাত্র। জানো, খুব বিরক্তির কারণ হয়ে গিয়েছিলাম আমি তোমার। তোমার বিরক্তিতেও আমার যায় আসতোনা! আত্মসম্মান, অভিমান সব ছুড়ে ফেলে দিয়ে তোমাকে আমার করতে চেয়েছিলাম। ভিক্ষা চেয়েছিলাম যে আমাকে একটু ভালোবাসো! আমার প্রতি করুণা করো। তবে তুমি তাও আমার কথা রাখলে না। বেনামি সম্পর্কটাতে ঝুলিয়ে রাখলে আবারও! বারবার! বহুবার!
অবশেষে আর পারিনি এই বেনামি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে। সর্বশান্ত হয়ে পড়েছিলাম একদম। যন্ত্রণা যেন কমছিলো না। তখনও অনুরোধ করেছিলাম তোমায়। কিন্তু সব সেই আগের মতো। একদম ঘোলাটে! পরিশেষে, একরাশ তিক্ততার মধ্য দিয়ে সব শেষ করে দিয়েছিলাম সেদিন। একদম শেষ! জানি যে আমি হয়তো সেই আগের চিরচেনা মানুষটিকে আমি আর কোনোদিন ফিরে পাবো না। আমার আর তোমার একাধিকবার প্রেমে পড়া হবে না। তোমার হাসির আওয়াজ শুনে আমার প্রেমে পড়া হবে না। আর হৃদস্পন্দন কেঁপে উঠবে না তোমার সেই চিরচেনা কন্ঠস্বর শুনে। তবুও আমাদের দেখা হবে। দেখা হবে সেই দুই প্রান্তের দুই মানুষের। সেদিন একমনে তোমার দিকে চেয়ে থাকবো আমি যেমনটা তুমি আমায় বলেছিলে! তবে তোমার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। ভালোবাসার মানুষের কাছে কোনো অভিযোগ রাখতে হয় না যে!যদিও তোমার সাথে আমার হয়তো কোনো সম্পর্ক আর নেই, কখনও ছিলো না হয়তো! তবুও যে বলতে হয়,
” নয়নে তোমায় পায় না দেখিতে,রয়েছ নয়নে নয়নে। ”
ইতি
তোমার মনের অপর প্রান্তের একজন সাধারণ মানুষ