#গল্পপোকা_কবিতা_লিখন_প্রতিযোগিতা
কবিতা : এপিটাফ
লেখনীতে: ফাতিমা আক্তার অদ্রি
ওহে প্রেয়সী!
মম অশ্রুসিক্ত আঁখিপল্লব আজি ব্যাকুল হইলো
চিরতরে বুজিবার লাগি, মলিন হইলো বদনখানি।
আজি বেদনাক্লিষ্ট দেহখানি শায়িত হিমশয্যায়
চারিপাশে আজি নাহি কেহ রে,
নাহি কেহ মোর আপন আলয়ে!
ওহে প্রেয়সী!
চিত্ত মোর অনুরক্ত হইলো প্রেমকাব্য রচিতে
নাহি পারিলাম রচিতে কোনো প্রেম কাব্য
সময়ের তরে, কালের বিবর্তনে রচিত হইলো বিষাদ-কাব্য!
তারই বিষাদে নীল হইলো মোর অঙ্গখানি,
আজি ফেলি দীর্ঘশ্বাস ব্যর্থতার তরে!
ওহে প্রেয়সী!
ওই তো নিভু নিভু করিছে প্রদীপের শিখা
ম্রিয়মান হইলো আলো উন্মত্ত হাওয়ার তোড়ে।
এহেন নিস্তব্ধ, নীরব তমসাচ্ছন্ন নিশিতে
মম হৃদয়ের উদাত্ত আহবান শুনিতে কি পাও?
ওহে প্রেয়সী!
রচিয়াছি প্রেমকাব্য; হইয়াছে তা বিষাদে নীল!
তারই দহনে আজ নীল হইলো মোর অঙ্গখানি!
আজি নিভু নিভু নয়নে ভাসমান জীর্ণ, শীর্ণ;
আবছা দৃশ্যমান হইলো মহাকালের বিবর্তনে প্রায় বিধ্বস্ত এপিটাফ!
ওহে মহাকাল!
মম চিত্তখানি আজি পুড়িছে জ্বলন্ত চিতায়
হৃদয় মন্দিরে প্রসারিত শ্মশান, দৃষ্টিতে দৃশ্যমান!
মোহাবিষ্টের মতোন প্রমত্ত হইলো অন্তর্দেশ
মম উন্মত্ত চিত্ত, প্রমাদ হইলো ভ্রান্তিরও ছলনে।
ওহে মহাকাল!
শুনিতে কি পাও আজি মোর উদাত্ত আহবান?
দাও মোরে একটুখানি জায়গা ধরনীর বুক চিরে।
খুঁজি শান্তির নীড়, যাহা পাইলাম না ধরণীর বুকে।
আজি ধরনীর বুক বৃদ্ধ করিয়া রচিতে চাহি মোর সমাধিখানি।
ওহে মহাকাল!
এ নহে মোর অযাচিত আহবান!
এ সময়ের তরে সময়ের লাগি যথোচিত সনির্বন্ধ মিনতি।
ওহে মহাকাল!
আজি অতল স্পর্শে নিমজ্জিত হইয়াছে মোর বদনখানি,
হৃদয়খানি বড়ো ব্যাকুল হইলো শ্রাবণের বারিধারা ছুঁইবার লাগি,
হৃদয়ের মানসপটে আজি নাহি রে,
নাহি রে তব পদচিহ্ন, মোর প্রেমালয়ে।
ওহে প্রেয়সী!
চিরতরে ছুটি লইয়া যাইতেছি অম্লান বদনে
করিতে বরণ জীর্ণ শীর্ণ প্রায় বিধ্বস্ত এপিটাফ।
আজি মম ব্যর্থতার জালে হারাইয়া গিয়াছে
বিষাদ কাব্য নামক মোর প্রেম পত্রখানি!
ওহে মহাকাল!
আজি জীবন প্রদীপ শিখা নিভু নিভু করে
দেখিতে কি পাও মহাকাল?
ধরণীর বুক বিদ্ধ করিয়াই কি তথায় ঠাঁই হইবে মোর দেহখানির?
কালের বিবর্তনে কিংবা সময়ের পরিক্রমায়,
জানি একদিন তাও হইবে প্রায় বিধ্বস্ত এপিটাফ!