এক ফালি চাঁদ পর্ব-০৩

0
1119

#এক_ফালি_চাঁদ
#পর্ব_৩
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
___________________
বারুদের আগুনের মতো দাউ দাউ করে জ্বলছে অনুর মেজাজ। অনলকে ভর্তা বানাতে পারলে ওর শান্তি হতো। সবসময় প্যারা তো দেয়ই! এখন আবার কীসব উল্টাপাল্টা চিন্তা-ভাবনা করছে। নাম অনীতা হোক বা গণিতা তাতে ওর কী? শালা বদ! রাগে হিঁসহিঁস করতে করতে নিজের ঘরে আসে অনু। বারান্দা থেকে ফিসফিসানির শব্দ আসছে। অনু বারান্দায় গিয়ে দেখতে পায় তিনুকে। হুট করে অনু আসায় অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে তিনু।
‘তুই এখানে কী করছিস?’ ভ্রুঁ কিঞ্চিৎ বাঁকা করে প্রশ্ন করে অনু।

অনুর ঘরের বারান্দা থেকে অনিকের ঘরের বারান্দা স্পষ্ট দেখা যায়। তাই তিনু অনুর ঘরে এসেছিল। দুজন দুজনকে দেখে ফোনে কথা বলছিল। আগে অবশ্য অনু এবং তিনু এই রুমেই থাকতো। কিন্তু পশুপাখিতে ভয় পায় তিনু। সারাক্ষণই পাখি ঘরে উড়াউড়ি করে। ভয় পায় তিনু। যদি কামড়ে দেয় বা খামচে দেয়? তিনুকে চুপ থাকতে দেখে ধমক দিয়ে অনু বলে,’এখন আবার চুপ করে আছিস কেন?’
‘ইয়ে..আসলে আপু তোমার পাখিকে দেখতে আসছিলাম। খাঁচায় রাখা তো তাই ভয় পাইনি।’

অনু কেমন করে যেন একবার তাকিয়ে বলল,’ঠিকাছে। এখন নিজের ঘরে যা। তিতুসকে খাঁচা থেকে বের করব।’
‘আচ্ছা।’
কোনো রকম পালিয়ে বাঁচে তিনু। একবার যদি ধরা খেয়ে যেত তাহলে বাসায় তৃতীয় যুদ্ধ বেঁধে যেত এতক্ষণে।

রাতঃ ১০টা ২০ মিনিট।
জেসি আর শুভা অনুদের বাসায় এসেছে। প্রতি শুক্রবারে সবাই একসঙ্গে বসে ভূতের মুভি দেখে। ওরা দু’জন অনুর স্কুল এবং কলেজ ফ্রেন্ড। তাই তিনজনের পরিবারেই তিনজন বেশ সুপরিচিত। জেসি উত্তেজিত হয়ে বলে,’ইশ! দোস্ত আজকে যেই মুভিটা দেখা হবে ঐটা কিন্তু অনেক ভয়ংকর।’
‘আজকে কোন মুভি দেখা হবে?’ জিজ্ঞেস করে শুভা।
‘Evil Dead. অনল ভাইয়া বলেছে।’
‘আজকে তোরা মুভি দেখিস। আমি দেখব না।’ বলল অনু।
‘কেন? তোর আবার কী হলো?’ জিজ্ঞেস করে জেসি। রাগে ফুঁসে উঠে অনু বলে,’ঐ বজ্জাত অনলকে আমার পছন্দ না। একদম পছন্দ না। তোদের তো একটুও পঁচায় না। কিন্তু আমি একটু ভয় পেলেই হলো! পারে না শুধু তখন এলাকায় মাইকিং করতে।’
‘আরে বাদ দে তো। এসব ব্যাপার না।’
‘তোর কাছে কোনো ব্যাপার না হতে পারে। কিন্তু আমার কাছে অনেক কিছু। মান-সম্মান বলে কথা!’
‘প্লিজ! প্লিজ এমন করিস না। তুই না দেখলে আমরা কীভাবে দেখব?’ আকুতি করে বলল শুভা। শুভার সঙ্গে জেসিও অনুকে বোঝাতে লাগল। অবশেষে দুজনের অফুরান্ত অনুরোধের কারণে অনুকে রাজি হতে হয়।

১০:২৫-এই অনিক এবং অনল এসে হাজির হয়। এসে বসতে না বসতেই অনুকে ফরমায়েশ করে বলে,’অনু আমার জন্য এক গ্লাস শরবত নিয়ে আয় তো।’

‘শরবত? শীতের সময়ে কেউ শরবত খায়?’
‘আমি খাই। আর তুই বানাবি। যা।’
‘পারব না। ফ্লাক্সে চা বানিয়ে রেখেছে মা। চা খান।’
‘আন্টি বানিয়ে রেখেছে বলেই চা খাব না। তুই আমার জন্য শরবত বানাবি; গুড়ের শরবত এবং সেটা এখনই। হারি আপ!’
মেজাজ দেখিয়ে অনু রান্নাঘরে চলে আসে। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,’তোরে আমি শরবতের মধ্যে ডুবামু অসভ্য ব্যাডা!’

রাগে গিজগিজ করতে করতে কিছু্ক্ষণ রান্নাঘরে পায়চারি করে অনু। হঠাৎ করে বুদ্ধি উদয় হয় মাথায়।এক গ্লাস পানি চুলায় বসিয়ে দেয়। ১০টার মতো কাঁচামরিচ দুই টুকরা করে ঐ পানিতে ছেড়ে দেয়। পানি বলগ আসার পর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে অর্ধেক পানি গ্লাসে নেয়। তারপর ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে গ্লাসের গরম পানির সঙ্গে মিক্সড করে। এক চামচ ঝোলা গুড় আর পাঁচ চামচ লবণ মিশিয়ে তৈরি করে স্পেশাল শরবত। গ্লাস হাতে নিয়ে বাঁকা হাসি দিয়ে স্বগতোক্তি করে বলে,’এবার তোমার শরবত খাওয়ার শখ মিটবে চান্দু।’

শরবত নিয়ে ড্রয়িংরুমে যায় অনু। মুভি অলরেডি শুরু হয়েছে। গ্লাস নিয়ে অনল বলে,’এত লেট লতিফ হলে চলে?’
অনু কিছু বলল না। অপেক্ষায় রইল অনলের শরবত পান করা দেখার। আরাম করে বসে অনল শরবতে চুমুক দেয়। এক ঠোক গিলতেই প্রায় চেঁচাতে গিয়েও নিজ হাত দ্বারা মুখ বন্ধ করে রাখে। রক্তবর্ণ চক্ষু দ্বারা সে তাকিয়ে রয়েছে অনুর দিকে। ওর মুচকি হাসি যেন অনলের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। মুভি না দেখে, কাউকে কিছু না বলেই অনল বাসায় চলে যায়। অনু ভেবেছিল এখন হয়তো বকা দেবে। কিন্তু এমন কিছু হলোই না! উপস্থিত সকলেই অবাক হয় এমন কাণ্ডে। প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে অনুর দিকে তাকাতেই অনু বলে,’স্পেশাল মরিচ সেদ্ধ শরবত! আজকে আরাম করে ছবি দেখতে পারব।’

সকলে অবাক হয়। আবার এটা ভেবে মনকে সান্ত্বনা দেয় যে, এমন সব কুটনৈতিক কাজ অনুর পক্ষেই সম্ভব। অনিক হতাশ হয়ে বলে,’কবে যে তোমাদের ঝগড়াঝাঁটি মিটবে! যাই গিয়ে ভাইয়ের রাগ কমাই। তোমরা মুভি দেখো আজ।’
অনিক চলে যাওয়ার পর মন খারাপ করে বসে থাকে তিনু। আজ মুভি দেখে সে একটুও মজা পাবে না। তাই নিজের রুমে চলে গেল ঘুমাতে। জেসি বিরক্ত হয়ে বলে,’ধুর! মাত্র তিনজনে ভূতের ছবি দেখে কোনো মজা আছে? তিনুও চলে গেল! আমিও যাই ঘুমাব।’
‘আমিও যাব।’ বলল শুভা।
তারপর দুজনে মিলে চলে গেল অনুর রুমে। অনুর সোফার ওপর ভাব নিয়ে বসে বলল,’হুহ যা। আমি একাই দেখব।’

সাহস নিয়ে একা মুভি দেখার আশা করলেও সেই আশা বেশিদূর এগোলো না। ভূতের সীন আসার আগে ভয়ংকর শব্দ শুনেই অনু কুপোকাত। দ্রুত টিভি বন্ধ করে ঘরে চলে যায়। জেসি আর শুভার মাঝখানে ঘাপটি মেরে শুয়ে পড়ে। ভূতের ছবি একা দেখা অনুর কাম্য নয়!
________________

সকালের দিকে এলোপাথাড়ি ধাক্কাধাক্কিতে ঘুম ভাঙে অনুর।চোখ কচলে বিছানায় বসতেই দৃষ্টি যায় তিনুর দিকে। বিরক্তিসূচক ‘চ’ এর মতো শব্দ করে অনু বলে,’এভাবে ডাকলি কেন?’
‘আরে আগে ড্রয়িংরুমে আসো তাড়াতাড়ি।’ তিনু এক প্রকার টেনেই নিয়ে গেল অনুকে। ড্রয়িংরুমে গিয়ে চমকে যায় অনু। অনলের কোলে পিলুকে দেখে খুশিতে লাফিয়ে ওঠে। ছো মেরে অনলের কোল থেকে নিজের কোলে নিয়ে আদর করতে থাকে। আনন্দিত হয়ে অনলকে জিজ্ঞেস করে,’কোথায় পেলেন ওকে? আপনি যে বললেন কুকুর নিয়ে গেছে।’
‘ও তো পিলু নয়।’
‘তাহলে?’
‘তোর চোখের মাথা গেছে রে অনু। চোখ কচলে ভালো করে দেখ এটা খোরগোশ না। ওর মতো দেখতেই একটা ছোটো বিড়ালছানা।’
অনু এবার ভালো করে তাকিয়ে দেখল আসলেই! খোরগোশের মতোই ধবধবে সাদা বিড়ালছানাটি। একদম ছোটো বাচ্চা! কী কিউট! অনুকে চুপ থাকতে দেখে অনল বলল,
‘পিলুর মতো দেখতেই দোকান থেকে একটা বিড়াল কিনে আনলাম। যেভাবে কান্নাকাটি শুরু করেছিলি!’
‘তাতে আপনার কী? তাসিনকে বললেই তাসিন কিনে দিত।’
‘কই তাসিন আর কই আমি! আমার লগে কি তাসিনের যায়?’
‘তাসিন আমার বয়ফ্রেন্ড কিন্তু আপনি কে? আমার পড়শি শুধু।’
‘উঁহু, শুধু পড়শি না। আন্টির বেষ্টফ্রেন্ডের ছেলেও আমি ভুলে যাস না। যেই সেই লোক না আমি। আমি হলাম অনল।’
‘আপনি একটা কচুর নল।’
‘রেসপেক্ট দিয়ে কথা বল অনু। তুই জানিস তুই কার সঙ্গে কথা বলছিস?’
‘জানি। মহারাণী ভিক্টোরিয়ার জামাইয়ের বাড়ির দারোয়ানের বাড়ির কাজের লোকের সাথে।’
‘তুই আমায় অপমান করলি অনু অপমান!’
‘যার মান নাই তার আবার কীসের অপমান?’
‘একেই উপকারের ঘাড়ে লাথি। তুই হলি তার বড়ো প্রমাণ।’
‘বাজে কথা! আচ্ছা বলেন তো আসল কাহিনী কী? কালকে মরিচ শরবত খাওয়ানোর পরও আজ বিড়াল গিফ্ট করলেন। আমি তো ভেবেছিলাম নির্ঘাৎ কোনো শাস্তি অপেক্ষা করছে আমার জন্য।’

অনল মাথা দুলিয়ে হাসতে হাসতে বলে,’চোরের মন পুলিশ পুলিশ। তবে তোর ধারণা ভুল নয়। শাস্তি তো তুই পাবি-ই। কাল থেকে তোর ভার্সিটিতে ক্লাস না? আয় শুধু কলেজে। র্যাগ কাকে বলে টের পাবি।’
‘কী করবেন আপনি?’
‘সেটা কলেজে আসলেই বুঝবি। এখন তো বলব না। হাতে বেশি সময় নেই তোর সাথে প্যাঁচাল পারার। আমি এখন যাই।’

অনল চলে গেল। ল্যাম্পপোস্টের মতো নির্জীব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনু। আল্লাহ্ ভালো জানে, কাল যে কী পরিমাণ নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে ব্যাটা হতচ্ছাড়া!
চুলের মাঝে হাত বুলাতে বুলাতে বাড়ি থেকে বের হয় অনল। বেশ হ্যান্ডসাম এক ছেলেকে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে থেমে যায়। ছেলেটির দৃষ্টি লক্ষ করে তাকিয়ে দেখে, অনুর ব্যলকোনির দিকে তাকিয়ে আছে সে। অনল ছেলেটির দিকে এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করে,’ঐদিকে কী দেখো?’
ছেলেটি প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরে নিজেকে সামলে নেয়। হাসি হাসি মুখ করে বলে, ‘ইয়ে! কিছু না।পাখি দেখছিলাম।।’
‘কিছু না আবার পাখি দেখছিলে! নাম কী তোমার?’
‘জি তাসিন।’
‘তাসিন…ওহ! মনে পড়েছে। তুমিই অনুর বয়ফ্রেন্ড?’

ছেলেটি এবার ইতস্তত করতে থাকে। একটু ভয়ও লাগছে। কে না কে! উত্তরের অপেক্ষায় তাকিয়ে রয়েছে অনল। কিছু না বলে চলেও যেতে পারছে না তাসিন। অন্যদিকে অনল মনে মনে বলছে,’শালা পড়ছিস আজকে মাইন্যা চিপায়! তোর প্রেম করার শখ আমি মিটাচ্ছি। ক্যারেক্টারলেস ছেলে কখনো অনুর বয়ফ্রেন্ড হতে পারে না, পারে না, পারে না!’

‘ভাই আপনি অনুর কে হন?’ প্রশ্ন করল তাসিন। অনল তখন বলল,’আমাকেই পাল্টা প্রশ্ন করা হচ্ছে এখন? আমি যেই হই না কেন, আমি অধিকার তোমার চেয়ে অনেক বেশি। আমি খুব ভালো করেই জানি তুমি অনুর বয়ফ্রেন্ড। তোমার সব খোঁজ-খবরও আমি নিয়েছি। শুধু সামনা-সামনি দেখলামই আজ। অনু ছাড়াও যে তোমার আরও কতগুলা জিএফ আছে সেই খবর কিন্তু আমার আছে। অনুকে গাপ্পি মাছ ভেবে জালে আটকে ফেলবা আর আমি তা হতে দেবো এটা ভুলেও ভেবো না। সো, সময় থাকতে আউট হয়।’
‘আপনার পরিচয়টাই এখনো জানলাম না। আর আপনি হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন?’
‘আমার পরিচয় জানার দরকার নেই। অনুর সাথে ব্রেকাপ করার সময় জাস্ট জিজ্ঞেস করবা, অনল কে? তাহলেই তোমার উত্তর পেয়ে যাবে।’ শেষের কথাটা এক্সট্রা ভাব নিয়েই বলল অনল।

তাসিন এবার হেসে ফেলে। হাসতে হাসতে বলে,’ওহহো! আপনিই তাহলে অনল ভাই। অনু আমাকে আপনার কথা বলেছিল।’
এ কথা শুনে অনলের অবস্থা এখন আকাশে উড়ার মতো। একটু ভাবসাব নিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,’কী বলেছিল?’
‘অসভ্য, বেয়াদব,ইতর, কুত্তা হতচ্ছাড়া অনল নামে একটা ছেলে আছে। সম্পর্কে ভাই-ই ডাকি। আম্মুর বেষ্টফ্রেন্ডের ছেলে। এরকম কথাই বলেছিল। আসলে আপনার কথা যতবার বলেছে ততবার গালিগুলো ব্যবহার করেছে তাই আমারও মুখস্থ হয়ে গেছে। আপনি কিছু মনে করবেন না।’

সব ভাবসাব ধুলার সঙ্গে একদম ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। শেষমেশ অনু এইগুলো বলেছে? তাও কী-না ওর সো কোল্ড ক্যারেক্টারলেস বয়ফ্রেন্ডের কাছে! নাহ্, এই অপমান কিছুতেই সহ্য করা যায় না। একদম না। ঐ অনুকে তো একটা উচিত শিক্ষা দিতেই হবে। তার আগে এই ব্যাটাকে এখান থেকে দূর করতে হবে। অনল পকেট থেকে ফোন বের করে এনামুলকে কল করে বলে,’দোস্ত রাজীব আর চ্যালাপ্যালা পোলাপাইন যতগুলা আছে সবগুলারে নিয়ে বাড়ির সামনে আয় তো। অনুর বয়ফ্রেন্ডরে পাইছি।’

ওপাশ থেকে কী বলল তা শুনতে না পেলেও তাসিনের হার্টবিট কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। সে কোনোরকমে বলে,’ভাই বেয়াদবি মাফ করবেন। আমি চলে যাচ্ছি।’ এ বলেই তাসিন দ্রুত হাঁটা ধরে। অনল বাঁকা হাসে এই কাণ্ডে। অনুর ঘরের ব্যলকোনির দিকে তাকিয়ে দেখে তিতুসকে খাঁচায় রেখেছে। দেখে মনে হচ্ছে অনলের দিকেই পাখিটি তাকিয়ে আছে। পাখির উদ্দেশ্যেই অনল বলে,’ঐ পাখি তোর নাম যেন কী? টুসটুস না? যাই হোক, টিসটিস বা টুসটুস একটা তো হবেই। শোন টুসটুস, তোর অনুর কপালে দুঃখ আছে। কাল শুধু ভার্সিটিতে আসতে দে।’

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে