এক পূর্ণিমা সন্ধ্যায় পর্ব-০৫

0
990

#এক_পূর্ণিমা_সন্ধ্যায়
#পর্ব_৫
#নিশাত_জাহান_নিশি

অমনি খাটের তলা থেকে একটি ধবধবে শুভ্র রঙ্গের বিড়াল বেরিয়ে এলো! আক্রোশিত গলায় ডেকে উঠল,,

“ম্যাও!”

অনল টেরামি চাহনিতে ঐথির দিকে তাকাল। ঠোঁটের কোণে লেগে আছে এক ক্রুর হাসির রেখা।বুঝতে বেশি বেগ পেতে হলো না ঐথির হটকারি আচরনের জন্যই অনল হেয় হাসছে! বিদ্রুপাত্নক মনোভাব তার মুখমন্ডলে পরিলক্ষিত। কিয়ৎক্ষণের মধ্যেই অনলের থেকে লজ্জিত দৃষ্টি সরিয়ে ঐথি বিড়ালটির দিকে তেজী দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। অমনি বিড়ালটি মাথা উঁচিয়ে অতি ভয়ঙ্কর ভাবে পুনরায় ম্যাও বলে ডেকে উঠল! কোনো দিকে কালক্ষেপণ না করেই ঐথি শুকনো ঢোক গলাধঃকরণ করে এক পা পিছু হটে এলো! বিড়ালের এহেন ভয়ঙ্কর আচরণে ঐথির মনে অত্যধিক ভয়ের সঞ্চার হলো! বিড়াল প্রাণির শান্ত শিষ্ট বৈশিষ্ট্যের সাথে এহেন উগ্র আচরণ একদমই যায় না। তাই বিশেষ করে ঐথির মনে প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই ভয় ঝেঁকে বসল। অনল এখনও হাঁটু মুড়ে বসে আছে মেঝেতে। ঐথির ভয়াতুর কান্ডকীর্ত দেখে ভেতরে ভেতরে অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ছে! তবে তা প্রকাশ করার সাহস একদমই কুলাতে পারছে না। অনলের এহেন বিরূপ প্রতিক্রিয়া আড়চোখে দেখা মাত্রই ঐথি তেড়ে এলো অনলের দিকে! দাঁতে দাঁত চেঁপে অনলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“এভাবে মিচকে শয়তানের মতো দাঁত কেলিয়ে হাসছ কেন?”

ভ্রু যুগল কিঞ্চিৎ উঁচিয়ে অনল ঐথির দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“কোথায় আমি দাঁত কেলিয়ে হাসছিলাম? আমি তো শুধু চুপচাপ বসে তোমাদের নাটক দেখছিলাম!”

“নাটক মানে? আমি নাটক করছিলাম?”

“অভেয়েসলি! বিড়াল কোনো ভয় পাওয়ার প্রাণি হলো?”

রাগে ফোঁস করে উঠল ঐথি। বিড়ালটি এতক্ষণে সুযোগ বুঝে এক ছুটে কামরা থেকে প্রস্থান নিলো। বিড়ালটির যাওয়ার পথে দৃষ্টি স্থির করে ঐথি জোর গলায় চেঁচিয়ে বলল,,

“পালানো হচ্ছে না? ঐ ইস্টুপিট অনলের কাছে আমাকে হেয় করে এখন তোর পালিয়ে যাওয়া হচ্ছে?”

অনল বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। বালি ভর্তি হাত দুটি ঝেড়ে ঐথির মুখোমুখি দাঁড়াল। ঐথি খানিক হকচকিয়ে উঠে অনলের বুকের মধ্যিখানটায় স্থির দৃষ্টি স্থির করল। শার্টের উপরের অংশের বোতাম দুটো উন্মুক্ত। তাই না চাইতে ও ঐথির মোহভরা দৃষ্টি অনলের বুকের মধ্যিখানে পড়ছে। দৃষ্টি সংযত করে ঐথি বাঁ পাশে তাকাতেই অনল রূঢ় গলায় ঐথির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তো বলো? তুমি কোন ভিডিও ফুটেজটির কথা বলছিলে?”

তৎপর দৃষ্টিতে ঐথি অনলের প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিতে তাকাল। ক্ষণিকের মধ্যেই নেত্রকোটর জুড়ে তার অবাধ্য জল চিকচিক করে উঠল। কান্নাসিক্ত গলায় প্রত্যত্তুরে বলল,,

“ভিডিও ফুটেজটি আমার বোন ‘মুনের’ ছিলো!”

অনল হকচকিয়ে উঠল। প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টি জোড়া মুহূর্তের মধ্যেই সীমাহীন বিস্ময়কর এবং আচ্ছন্নতায় ছেঁয়ে গেল! অজানা, অদৃশ্য বিভিন্ন কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে অনল পাল্টা ঐথির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“মানে? ঐ ফুটেজটিতে মুনের শ্লীলতাহানি হচ্ছিল?”

ঐথি মুখ চেপে কেঁদে উঠল! অশ্রুসিক্ত গলায় বলল,,

“হ্যাঁ! তোমার মিডিয়ার লোকজনদের সাথে আমার বাবা এবং আমার দ্বিতীয় মায়ের খুব ভালো সম্পর্ক! সপ্তাহে প্রায় দু, একবার আমাদের বাড়িতে তাদের আসা-যাওয়া হয়। আর তখনই..

কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল ঐথি। এক প্রকার ডুকরে কাঁদছে সে। অনল চিন্তাগ্রস্থ হয়ে ঐথিকে দু’হাত দ্বারা ঝাঁকিয়ে জিগ্যাসু গলায় বলল,,

“এরপর কি ঐথি? কখন থেকে এসব চলছে? তারা তোমার সাথে খারাপ কিছু করে নি তো?”

ঐথি অস্পষ্ট গলায় অনর্গল বলতে আরম্ভ করল,,

“আমার সাথে খারাপ কিছুই ঘটে নি। তবে মুনের সাথে আগামী তিন বছর যাবত খুব খারাপ কিছু ঘটে আসছে! যা আমি বিগত দু’বছর আগেই টের পেয়েছিলাম। আর সেই উদ্দেশ্যেই আমার এই রাঙ্গামাটিতে আসা। দীর্ঘ দু’বছর মুনের সাথে থাকা।”

অল্প সময় অনল নীরব রইল। পরক্ষণেই তৎপর গলায় প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“মুনের সাথে কে শ্লীলতাহানি করছিল প্লিজ বলো?”

“হায়দার স্যারের বড় ছেলে মৃদুল ভাই!”

অবিশ্বাস্য গলায় অনল চেঁচিয়ে বলল,,

“মৃদুল?”

“হুম মৃদুল! মৃদুল ভাই।”

“তার মানে, এজন্যই মৃদুল কিছুদিন আগে খুব জোরাজুরি করে আমার থেকে ভিডিও ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নিয়েছিল? যেন আমি তার কুকীর্তি না দেখি?”

“হুম তাই। মৃদুল ভাই ভেবেছিলেন, তুমি হয়তো ভিডিওটির কিছু অংশ দেখে নিয়েছিলে। তাই সন্দেহ বশত তোমাকে ফাঁসানোর জন্য গুটি হিসেবে আমাকে ব্যবহার করছেন!”

“মানে? এসবের মাঝে তুমি এলে কিভাবে?”

“মৃদুল ভাই কোনো ভাবে জানতে পেরেছিলেন, আমি মুনের সৎ বোন এবং তোমার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আর সেই হিসেবেই তোমার দুর্বল জায়গা ভেবে আমাকে ব্যবহার করছে!”

অনল ফোঁস করে শ্বাস ছেড়ে দাঁতে দাঁত চেঁপে ঐথির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তার মানে গত পরশু তোমার সাথে কোনো খারাপ কিছুই ঘটে নি? পুলিশ এবং হসপিটালের দেওয়া সমস্ত স্টেটমেন্ট মিথ্যে ছিল? সব মৃদুলের ষড়যন্ত্র ছিল?”

“হুম তাই! সব ষড়যন্ত্র ছিল। তোমাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র ছিল।”

প্রখর রাগের বশবর্তী হয়ে অনল সামনের চুল গুলো টেনে অনুরক্ত গলায় ঐথিকে শুধিয়ে বলল,,

“একটা জিনিস আমি ভেবে পাচ্ছি না। তোমার মা-বাবা কখনও আঁচ করতে পারেন নি? তোমার বোনের সাথে খারাপ কিছু ঘটছে?”

“না! কারণ, তারা দুজনই অফিসিয়াল কাজে সারা দিন-রাত ব্যস্ত থাকত। আমার বোনকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় তাদের হাতে ছিল না। মা- বাবার সাথে অতোটা ফ্রি ছিল না আমার বোন। অবশেষে যখন আমি তার সাথে টুকটাক কথা বলতে থাকি। ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে থাকি। তখন সে আমায় মুখ ফুটে শুধু এতটুকুই বলেছিল- ‘মৃদুল ভাই রাতে আমায় ঘুমুতে দেয় না! ব্যথা দেয়, যন্ত্রণা দেয়!’ তখনই আমি তোমাদের সবাইকে ছেড়ে বোনের কাছে রাঙ্গামাটি ছুটে আসি। দীর্ঘ দু’বছর ঐ বাড়িতে কাটাই। তবে লাভ কিছু হয় নি। মৃদুল ভাই তখন দু’বছরের জন্য অন্য বিশেষ কোনো কাজে দেশের বাইরে চলে যায়। তোমার প্রতি জমে থাকা রাগ, ক্ষোভ থেকে আমি ইচ্ছে করেই বোনের সাথে দু’বছর ঐ বাড়িতে কাটাই৷ দু’বছরের মাথায় হুট করেই মৃদুল ভাই দেশে ফিরে আসে। এই তো সেই এক মাস আগে, দিনের বেলায় হঠাৎ মৃদুল ভাই আমাদের বাড়িতে আসে! আমাকে এবং মুনাকে বাড়িতে একা পেয়ে আমাদের সাথে অসভ্যতা করার চেষ্টা করে! পুলিশের হুমকি এবং ভয় দেখিয়ে আমি নিজেকে এবং মুনাকে ঐ লম্পটের হাত থেকে রক্ষা করি। তবে শেষ রক্ষা হয় নি! আমার হুমকির বিপরীতে মৃদুল ভাই আমাদের পাল্টা হুমকি দিয়ে বলে, ‘যদি আমরা পুলিশের কাছে, পরিবারের কাছে বা বাইরের অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে এই ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলি তবে মুনার সাথে করা শ্লীলতাহানির ভিডিও তিনি ভাইরাল করে দিবেন! আর সেই ভিডিও ক্যামেরাটিই কোনো ভাবে তোমার হাতে পড়ে যায়! তখন থেকেই মৃদুলের ভয় শুরু হয়। মৃদুল ভাবতে শুরু করে তুমি বোধ হয় এই ভিডিওটি সম্পর্কে জেনে গেছ! তাছাড়া তোমার সাথে যদি আমার বিয়েটা হয় তাহলে বিয়ের পর আমি নিশ্চয়ই মৃদুলের সব কুকীর্তি তোমার কাছে ফাঁস করে দেব! সেই ভয় থেকেই মৃদুল এই জঘন্য ফন্দি আঁটে। বিভিন্ন ভাবে আমায় ভয় দেখিয়ে তোমার নামে মিথ্যে রেপের মামলা দায়ের করতে বাধ্য করে! যেনো আমাদের বিয়েটা ভেংগে যায়।”

উদ্বিগ্ন চিত্তে অনল ধপ করে বিছানায় বসে পড়ল। ঐথির কান্নারত মুখমন্ডলে অস্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,,

“তার মানে তো, তোমার বোনও ঐ বাড়িতে নিরাপদ নেই। তাকে আমাদের ঐ বাড়ি থেকে উদ্ধার করতে হবে। তবে এর আগে তো ভিডিও ফুটেজটি আমাদের হাতে আনতে হবে।”

“কিভাবে আনব? উপায় কি অনল?”

মাথা নুঁইয়ে অনল সামনের চুল গুলো টেনে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে পড়ল। অতি মনযোগের সহিত কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভাবছে সে। ঐথি কান্না থামিয়ে অস্পষ্ট গলায় অনলকে শুধিয়ে বলল,,

“অনল? আমরা যেহেতু এই রাঙ্গামাটিতেই আছি, ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হচ্ছে সর্বপ্রথম মুনাকে আমাদের নিরাপত্তা দেওয়া প্রয়োজন। আই মিন, মুনাকে তুলে আনা প্রয়োজন!”

অনল মাথা উঁচিয়ে শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করল ঐথির দিকে। সন্দিহান গলায় বলল,,

“তোমার বাবা-মা কে প্রথমে বিষয়টা জানানোর প্রয়োজন না?”

“বাবা-মা বিশ্বাস করবেন না অনল। প্রমান ছাড়া উনারা কিছু বিশ্বাস করবেন না।”

“নিজের মেয়ের এমন সেন্সেটিভ বিষয়টাতে ও উনাদের প্রমান প্রয়োজন? মানে, মেয়ের মুখের কথা বিশ্বাস করবেন না?”

“হয়তো না! কঠোর মনের মানুষ উনারা। যেখানে জটিলতা, কুটিলতা বেশি প্রাধান্য পায়। প্রমাণ ছাড়া একজন মানুষের বিশ্বস্ত বা কাতর মুখভঙ্গি ও সেখানে প্রশ্রয় পায় না।”

গলা ধরে আসছিল ঐথির! বিষন্নতায় মাথা নুঁইয়ে নিতেই অনল বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। আগ পাছ না ভেবেই হুট করে ঐথিকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরল অনল! ধীর গলায় ঐথির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“মা কে খুব মিস করছ?”

ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল ঐথি। অনলের শার্টের কাপড় আঁকড়ে ধরে অস্পষ্ট গলায় বলল,,

“খু্ব বেশি মিস করছি!”

“মিস ঐথি কি জানে? আমার মা তার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে? শুধু বউমা নয়, নিজের মেয়ে হিসেবে ঐথিকে গ্রহণ করতে পাগল হয়ে আছে?”

এক ঝটকায় ঐথি অনলের বুকের পাঁজর থেকে সরে দাঁড়াল! ক্ষুব্ধ গলায় অনলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“তাহলে ইফা? ইফার কি হবে?”

চোয়াল শক্ত হয়ে এলো অনলের! ঐথির দিকে দু’কদম এগিয়ে এসে বিক্ষুব্ধ গলায় বলল,,

“আমাদের মাঝখানে ইফাকে টেনে আনলে কেন? তোমার কি মনে হয়? ইফার সাথে এখনও আমার যোগাযোগ আছে?”

ঐথি ভয়ে কেঁপে উঠল! অনলের রক্তচক্ষুতে দৃষ্টি মেলানো দায় হয়ে পড়েছে তার। ঐথির ভয়াতুর এবং নিস্তব্ধ মুখভঙ্গি দেখে অনল গজগজিয়ে কামরা থেকে প্রস্থান নিলো। ভয় কাটিয়ে ঐথি হম্বিতম্বি হয়ে অনলের পিছু ছুটল! পেছন থেকে জোর গলায় অনলকে ডেকে বলল,,

“প্লিজ দাঁড়াও অনল। আমাকে এই ভয়ঙ্কর কামরায় একা রেখে চলে যেও না। আজ রাতটা আমার সাথেই থেকে যাও প্লিজ!”

প্রত্যত্তুরে অনল পেছন থেকে চেঁচিয়ে বলল,,

“আমি না? মন থেকে চাই, এবার সত্যি সত্যিই তোমার কামরায় চন্দ্রমল্লিকা আসুক! তোমাকেও চন্দ্রমল্লিকা বানিয়ে সাথে করে নিয়ে যাক!”

“আমি চন্দ্রমল্লিকা হতে চাই না অনল! প্লিজ এই বারের জন্য আমায় বাঁচিয়ে দাও। মনের ভয়ে আমি মরতে চাই না। মরতে হলে যমের ভয়ে মরব।”

অনল পিছু ঘুরতে বাধ্য হলো। ঐথির করা অবাধ্য অনুনয়, বিনয়ে অনলের জেদ শিথিল হয়ে এলো। বুকের উপর দু’হাত গুজে অনল ভাবশূণ্য ভঙ্গিতে ঐথির মুখোমুখি দাঁড়াল। ভ্রু যুগল কিঞ্চিৎ উঁচিয়ে ঐথির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“আর করবে আমার সাথে খোঁচাখুঁচি? হ্যাঁ বা না, যেকোনো একটা বলবে!”

ঐথি খানিক হকচকিয়ে উঠে জিজ্ঞাসু গলায় বলল,,

“খোঁচাখুঁচি বলতে কি বুঝাতে চাইছ? ইফাকে নিয়ে খোঁচাখুঁচি?”

“হুম তাই। হ্যাঁ বা না, যেকোনো একটা বলো?”

ঐথি নিরুপায় গলায় বলল,,

“না! খোঁচাখুঁচি করব না!”

সঙ্গে সঙ্গেই অনল ঐথিকে উপেক্ষা করে শোঁ শোঁ বেগে ঐথির কামরায় প্রবেশ করল। ঐথি ও তাড়াহুড়ো করে অনলের পিছু নিলো। কামরায় প্রবেশ করেই ঐথি দরজার খিলটা ভেতর থেকে আটকে দিলো। স্বস্তির শ্বাস নির্গত করে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।

,
,

ঘড়িতে মধ্যরাত প্রায় তিনটে ছুঁইছুঁই। কম্বল মুড়ি দিয়ে ঐথি অনলের পাশ ঘেঁষে শুয়ে আছে! হাঁসফাঁস করছে অনল ঐথির গাঁ থেকে কম্বলের সামন্য একরত্তি অংশ নিজের গাঁয়ে জড়াতে! ঢিলেঢালা ভাবে হলে ও শীতের প্রকোপ নিবারণ করতে। ঐথি যেন নাছোড়বান্দা! কিছুতেই কম্বলের একটি অংশও অনলের গাঁয়ে জড়াতে দিবে না। সাপের মতো চারপাশ থেকে পেঁচিয়ে রেখেছে কম্বলকে। শীতে রীতিমতো কাঁপছে অনল। দাঁতে দাঁত সংঘর্ষিত হচ্ছে। রাগে, দুঃখে, যাতনায় প্রতি মুহুর্তে অনলের চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে। ঐথির দিকে রাগান্বিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে। ঐথি পুরো বিষয়টাকে খুব মজার দৃষ্টিতে দেখছে। মিটিমিটি হেসে মিনিট খানেক বাদে কম্বলের তলায় মুখ লুকিয়ে নিচ্ছে!

#চলবে…?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে