#এই_ভালো_এই_খারাপ(৭)
#Jannat_prema
Jahaan tum ho, wahin mein hoon.
Tere na hone se lagta hai, main kyun hoon (2)
Tuhi mera kal hai, tuhi mera aaj (2)
Subah ki karwato si jo hai,
Shaam ki harkaton si jo hai,
baat bhi fursaton ki jo hai,
wahi tum ho.
Jo aahat khushiyon ke jalne ki,
Jo rahat neendon se milne ki,
Jo aadat khwabon ke udne ki,
wahi tum hoo.
Tuhi mera kal hai, tuhi mera aaj (2)
Main shayad hoon, yaquin tumo hoo.
Mere chehre pe thehri, ik hasi tum ho.
Tera milna, yun rozana, lage saason ki
aadat tumko dohrana.
Tuhi mera kal hai, tuhi mera aaj (2)
Hawaei tujse jo guzri hai,
mujhe won saans banke mili hai,
zindegi ki tarah thehri hai,
dekho na tum.
Kabhi alfaaz banke mere, zara hothon pe
yun rehlena, main bolu aur sunai dena,
hamesha tum.
Tuhi mera kal hai, tuhi mera aaj (2)
ভোর স্থীর চোখে তাকিয়ে আছে আবদ্ধর দিকে৷ আবদ্ধর দৃষ্টি তখোনো ভোরের দিকে অটল। গান গাওয়ার পুরোটা সময় ভোরের চোখের দিকে চেয়ে ছিলো আবদ্ধ। গানের প্রত্যেকটা কথা যেনো ভোরকে উদ্দেশ্য করে গাওয়া। আবদ্ধ খুব করে চাইছে ভোর একটু মুচকি হাসুক তার দিকে তাকিয়ে। সে প্রাণ জুড়াবে সেই হাসি দেখে। আবদ্ধর গান গাওয়া শেষ হতেই সবাই হাত তালি দিয়ে উঠলো৷ হাত তালির আওয়াজ শুনে আবদ্ধর থেকে চোখ নামিয়ে নিলো ভোর। বুকের ভিতর এখোনো দামামা বাজিয়ে যাচ্ছে। এ গানটা গাওয়ার কোনো মানে হলো? আবার সবার সামনে কিভাবে তার দিকে অমন নজরে তাকিয়ে ছিলো। আদিল হইহই করে বললো,
” ওয়াহ ভাই! ওয়াহ ভাই! কি গান গাইলে তুমি৷ একদম রোমা__”
আবদ্ধ কপাল কুঁচকে তাকাতেই থেমে গেলো আদিল৷ ভাইয়ের থেকে চেখ সরিয়ে সবার দিকে তাকালো৷ সবাই চোখ বড় বড় করে তার দিকে চেয়ে আছে। একটু আগে কি বলতে যাচ্ছিলো সে। ভাগ্যিস পুরো কথাটা বলেনি। নাহলে সবাই তার ইজ্জত নিয়ে হাসাহাসি করতো৷ সে যে রোমান্টিক মুডে চলে গিয়েছি সেটা নিজের ভিতরেই থাক৷ সকাল মনে মনে আদিলকে গালি দিয়ে হাসি মুখে আবদ্ধকে বললো,
” আপনার গানের স্বরটা জোস ভাইয়া! খেলার প্রথমেই এতো সুন্দর একটা গান শুনে মন ভরে গেলো। ”
আবদ্ধ মুচকি হাসলো। আদিলের হাতে গিটার দিয়ে উঠে দাড়ালো৷ সবাই কৌতুহল নিয়ে তাকালো আবদ্ধর দিকে৷ আবদ্ধ সবার দিকে তাকিয়ে বললো,
” তোমরা ইঞ্জয় করো। আমার একটা জরুরি কাজ আছে৷ আমি আসছি। ”
শেষের কথাটা ভোরের দিকে তাকিয়ে বললো৷ ভোর আবদ্ধর দিকে তাকালো। আবদ্ধ মলিন হেসে প্রস্থান নিলো সেখান থেকে। ভোর আবদ্ধর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। আবদ্ধর মলিন হাসিটা দেখে ভোরের বুকের ভিতর চিনচিনে ব্যাথা করে উঠলো। আচ্ছা আবদ্ধ ওভাবে হাসলো কেনো? যেনো সে ভালো নেই।
.
” আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আংকেল। ”
বাদল সাহেব হাসলেন। আবদ্ধকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
” এখন তো বাবা বলো। এখানে ধন্যবাদ দেওয়ার মতো কিছু নেই। আমি শুধু তোমাকে দেওয়া ওয়াদাটা পূরণ করেছি৷ কিন্তু ভোরকে সব কথা খুলে বলেছো? মেয়েটা আমার খবু জেদি। জানো নিশ্চয়? ”
আবদ্ধ হাসলো। বাদল সাহেবের দুহাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আবদ্ধ বললো,
” এখনো জানাইনি। তবে খুব শীগ্রই জানাবো৷ তবে আপনি যে আমার উপর এভাবে বিশ্বাস আর ভরসা রেখেছেন এর জন্য আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। ”
” বিশ্বাস, ভরসা না রেখে উপায় ছিলো! আমার মেয়েটা যে ভাবে কান্না করতো তোমার জন্য। যাকগে সেসব কথা। চলো আজকে বাপ, বেটা মিলে একসাথে খাবো। ”
আবদ্ধ প্রশান্তির শ্বাস ফেললো। এগিয়ে গেলো ডাইনিং টেবিলের কাছে। ভোরকে নিজের করতে পেরে শান্তির নিঃশ্বাস নিলো আবদ্ধ। এখন শুধু ভোরকে সব কথা বলা বাকি৷ এবার অভিমানী ভোরের অভিমান ভেঙ্গে নিজের কাছে নিয়ে আসবে আবদ্ধ।
.
নিজের পায়ের সাথে কারো পা লাগতেই চমকে উঠলো সকাল। মুখের খাবারটা আর গিলা হলো না তার। টেবিলের নিচ থেকে কেউ তার পায়ে চিমটি কাটছে৷ সকাল সবার দিকে তাকালো৷ না সবাই খাচ্ছে। তাহলে কে তার পায়ে এমন চিমটি দিচ্ছে? সকালকে খাবার মুখে নিয়ে বসে থাকতে দেখে ভোর বললো,
” খাচ্ছিস না কেনো সকাল? খাবার গালে নিয়ে বসে আছিস কেনো? ”
সকাল পড়লো মহা ফ্যাঁসাদে। সবাই খাবার রেখে তাকালো সকালের দিকে৷ আবদ্ধ বললল,
” এ্যানিথিং রং, সকাল? ”
সকাল মাথা নাড়লো।
” তাহলে খাচ্ছো না কেনো? ”
সকাল পানি দিয়ে খাবার গিলে খেলো। মুখে জোরপূর্বক হাসি ফুটিয়ে বললো,
” ককই খাচ্ছি তো৷ ওই আআসলে খাবারটা এতো মজা লাগছে যে গিলতে ইচ্ছে করছে না। ”
সকালের এমন লজিকলেস কথা শুনে আদিল সবার মাঝে ফিক করে হেসে উঠলো। মেয়েটা কেমন বোকা বোকা কথা বলছে। শ্রাবন্তী মেয়ের উপর খানিকটা রেগে বললেন,
” পাগলের মতো কথা না বলে খাবার খা। ”
লজ্জায় মাথা নিচু করলো সকাল৷ একবার চোখ গরম করে তাকালো আদিলের দিকে। এবার বুঝেছে, এতোক্ষণ পায়ে চিমটি কাটা ব্যাক্তিটা আর কেউ নয় সেটা হলো আদিল। সকাল দাঁতে দাঁত নিষ্পেষণ করে আদিলের বরাবর নিজের পা নিয়ে দিলো এক চিমটি। আচমকা পায়ে ব্যাথা পেতে চিল্লিয়ে উঠলো আদিল,
” আআআআ! ”
আদিলের চিৎকারে সবাই হকচকিয়ে উঠলো। মিম বুকে থুথু দিয়ে চোখ বন্ধ করে শ্বাস ফেললো। রাইসা চমকে উঠলো৷ আবদ্ধ কপাল
কুঁচকে বললো,
” আর ইউ ওকে আদিল? চিৎকার দিলি কেনো?”
আদিল একবার সকালের দিকে তাকালো। সকাল দাঁত কেলিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। বাদল সাহেব কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে বললেন,
” কোনো সমস্যা বাবা। কোথাও ব্যাথা পেয়েছো? ”
আদিল মেকি হাসি দিয়ে বললো,
” না না আংকেল। ওই আসলে পায়ে মনে হয় পিঁপড়া কামড় দিয়েছে। ”
” সেকি! পিঁপড়া আসলো কোথা থেকে? ঘর তো ভালো মতন পরিষ্কার করেছি। ”
শ্রাবন্তী আক্তারের কথায় আদিল বললো,
” মশাও তো হতে পারে আন্টি। অযথা চিন্তা করবেন না। মশাটাকে পরে পেলে একদম পিষে মারবো। ”
শেষের কথাটা যে সকালকে বলেছে সেটা ঠিকই বুঝতে পেরেছে সকাল৷ সে মুখ ভেংচালো। হুট করে ভোরের দিকে চোখ যেতেই থতমত খেয়ে খাবারে মনোযোগ দিলো। ভোরের সন্দেহের চাহনি দেখে সকাল আর খাবার শেষ না করা পর্যন্ত মাথা তুললো না।
.
অনেক্ষ সবার সাথে আড্ডা দিয়ে রুমে আসলো আবদ্ধ। রুমের ভিতর দৃষ্টি বুলিয়ে বারান্দায় তাকালো৷ রুমের লাইট বন্ধ করে এগিয়ে গেলো বারান্দায়। কালো জামদানী শাড়ি পরিহিত মেয়েটি নিরবে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে৷ আকাশে আজকে অর্ধ চাঁদ উঠেছে। সাথে হালকা হিমেল হাওয়া বইছে। বাতাসের কারনে ভোরের খোলা চুলগুলো উড়ছে। আবদ্ধ সম্মোহনী দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভোরের পাশে গিয়ে দাড়ালো৷ লাইট বন্ধ থাকায় চাঁদের কিরণে বারান্দা আলোকিত হয়ে আছে৷ পাশে আবদ্ধর অস্তিত্ব টের পেলেও তাকালোনা। আবদ্ধর পারফিউমের নেশালো ঘ্রাণই বলে দেয় এটা আবদ্ধ। কারণ এই পারফিউমটার ঘ্রাণ ভোরের ভিষণ প্রিয়। আবদ্ধ এখনো এই পারফিউমটা ব্যাবহার করছে।
” এখানে কি করছিস? ”
আবদ্ধর প্রশ্নে ভোরের ত্যাড়া জবাব,
” তোকে কেনো, বলবো? ”
” তাহলে কাকে বলতে চাইছিস? ”
” সেটাও আমি তোকে বলবো না। ”
আবদ্ধ ফোঁস করে নিশ্বাস ফেললো। ভোরের কাছে এসে চট করে ওকে পাঁজাকোলে তুলে নিলো। ভোর প্রথমে হকচকালো। পরপরই লাফালাফি করতে শুরু করলো। আবদ্ধ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,
” তুই যতই লাফালাফি করিস না কেনো? আমার শক্তির সাথে পারবি না। ”
” আমাকে তুই নামাবি? ”
আবদ্ধ ভ্রূ কুঁচকে বললো,
” নামাবো বলেতো কলে নেয়নি৷ আর রইলো তোর ত্যাড়া কথার জবাব। তোর সব কিছুই যখন আমার তখন তোর কথা শুনার মানুষটাও নিশ্চয় আমি। ”
ভোর রেগে আবদ্ধর বুকে কয়েকটা কিল দিয়ে বললো,
” একদম বাড়াবাড়ি করবি না, আবদ্ধ। তোর নাটকগুলো একদম আমাকে দেখাতে আসবি না।”
আবদ্ধ ভোরকে বিছানায় শুইয়ে দিলো। ভোরের মাথার দুই পাশে নিজের দুই হাত রেখে ঝুঁকে বললো,
” তাহলে কাকে দেখাবো? ”
ভোর মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে বললো,
” সেটা আমি কিভাবে জানবো। ”
ভোরের বলা শেষ হতেই আবদ্ধ ভোরের গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। আবদ্ধর কাজে আতঁকে উঠলো ভোর। পুরো শরীর শিরশির করে উঠলো। গায়ের লোমগুলো যেনো দাড়িয়ে গেলো। ভোর চোখ খিঁচে বন্ধ করে ঢোগ গিলে তোতলানো কন্ঠে বললো,
” কিকি ককরছিস আআবদদ্ধ? ”
আবদ্ধ ভোরের গলায় আরো দুটো চুমু খেলো। লম্বা এক নিশ্বাস টেনে বললো,
” তুই আমার থেকে যত দূরে সরে যেতে চাইবি, আমি ঠিক তত তোর কাছে আসবো। তোকে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে নিবো নিজের সাথে। আমার ভালোবাসায় ভরিয়ে দিবো। ”
ভোর এখনো চোখ খিঁচে বন্ধ করে আছে। শরীরে যেনো শীতল রক্ত বইছে৷ তার হাতগুলো আবদ্ধর হাতে বন্দী। ভোর নড়াচড়া শুরু করলে আবদ্ধ আরো একটু চেপে গেলো। ভোরের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,
” তুই যত নড়াচড়া করবি আমি তত তোকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিবো৷ তাই চুপচাপ যেমন আছিস তেমন থাক৷ আমি একটু শান্তিতে ঘুমাতে চাই। সো নো ডিস্টার্ব! ”
ভোর কিছু বলার আগেই আবদ্ধ আবারো ভোরের গলায় মুখ ডুবিয়ে তলিয়ে গেলো ঘুমের দেশে৷ এদিকে ভোর হাঁসফাঁস করছে৷ অসস্তিতে গাট হয়ে আছে সে। হাত পা যেনো জমে যাচ্ছে আবদ্ধর উষ্ণ শ্বাসে। আবদ্ধর গায়ের কড়া পারফিউমের ঘ্রাণে ভোরের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। এমন হলে তো তার অভিমান, জিদের পাহাড়টা যে ধসে পড়বে খুব শীগ্রই। ভোর দীর্ঘশ্বাস ফেললো৷ এদিকে তার ঘুম হারাম করে আবদ্ধ কি সুন্দর আরামে ঘুমোচ্ছে। এক সময় দু চোখের পাতায় ক্লান্তি ভর করতেই ঘুমিয়ে গেলো ভোর।
চলবে!