#ঋতুর_স্মৃতি
#সিজন_২
#পর্ব_০৫
#Jechi_Jahan
আমি পিছনে ফিরে দেখি রনি আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।রনির এই দৃষ্টিতে আমি যেনো স্পষ্ট দেখতে পারছি যে ও রানির জন্মদিনে যেতে চায়।কিন্তু আমিও আজ শক্ত হয়ে গেছি যেনো।তাই রনি কিছু বলার আগে আমি।
আমি-রবিন কেও যদি রানির জন্মদিনে যাওয়ার আশা করে তাহলে তাকে বলে দাও।ও যেনো ওই আশাটা বাদ দিয়ে দেয়।কারণ আমি ওকে রানির জন্মদিনে যেতে দিবোনা।(শক্ত হয়ে)
রনি-আমি জানতাম তুমি দিবেনা কারণ তুমি খুব বদলে গেছো।তুমি আমাকে আর আগের মতো ভালোইবাসোনা।(কান্না করে)
আমি-রনি কি বলো এগুলা তুমি?(অবাক হয়)
রনি-হুম আমি ঠিকই বলছি তুমি খুব বদলে গেছ।
আমার বন্ধুর জন্মদিনে যেতে দিচ্ছোনা তুমি।তুমি খুব পঁচা হয়ে গেছো।(বলে দৌড়ে চলে গেলো)
রবিন-রনি বাবা দাঁড়াও।(রনির পিছে গিয়ে)
আমি-রবিন দাঁড়াও।
রবিন-কিন্তু ঋতু।
আমি-বাদ দাও।বাবার রক্ত তো তাই এমন করছে।
বাবা-ঋতু।(ধমক দিয়ে)
আমি-ভুল কি বললাম আমি।এরা বাবা – ছেলে দুজনেই আমাকে জ্বালাচ্ছে।এর বুঝ হওয়ার বয়স থেকে এ আমাকে জ্বালাচ্ছে।তাও কিভাবে জানো বার বার এর বাবার সামনে পাঠিয়ে।
রবিন-তাই বলে এভাবে বলবে।
আমি-হ্যাঁ বললাম।(কান্না করে)
বাবা-ঋতু একটা কথা শুনে রাখ।রনি কখনে ওর বাবার মতো এমন কোনো কাজ করবেনা।
আমি-হুম.(কান্না থামিয়ে)
—দুপুরে—
রানি-বাবা রনি আসবে তো।(কোলে উঠে)
রাহাত-নিশ্চই আসবে কেনো আসবেনা।আমার প্রিন্সেস এর জন্মদিন বলে কথা তাইনা।(আসলে কি রনি আসবে নাকি ঋতু আসতে দিবে না)
রাহাতের আব্বু-কি ভাবছিস?
রাহাত-কিছুনা।(রানিকে কোল থেকে নামিয়ে)
রাহাতের আব্বু-রানি মামুণি যাও খেলতে যাও।
রাহাত-ওকে কেনো পাঠিয়ে দিলে।
রাহাতের আব্বু-ঋতুর স্বামীকে দেখেছো?
রাহাত-হুম দেখেছি।
রাহাতের আব্বু-কেমন লাগলো?
রাহাত-আছে ভালো(মাথা নিচু করে)
রাহাতের আব্বু-সহ্য করতে পারিসনি তাইনা।
রাহাত-(করুণ চোখে বাবার দিকে তাকালো)
রাহাতের আব্বু-ঋতুও সহ্য করতে পারেনি তোকে আর রিহাকে একসাথে দেখে।এবার বুঝতে পেরেছিস মেয়েটাকে তোরা কত কষ্ট দিয়েছিস।
রাহাত-(মাথা নিচু করে আছে)
রাহাতের আব্বু-রাহাত হিরে হারিয়েছিস তোরা।
***ঋতুর বাড়ীতে***
রবিন-ঋতু!!!রনিকে ডাকলাম কিন্তু ও বলেছে নীচেও আসবেনা আর খাবারও খাবেনা।
আমি-ঠিক আছে ওকে ওভাবেই থাকতে দাও।
রবিন-কিন্তু ঋতু।
আমি-কোনো কিন্তু নয় রবিন।ওকে যদি আমরা সুযোগ দিই তাহলে ও আরো জেদী হতে থাকবে।
রবিন-ঠিক আছে ঋতু।
আমি-আসো তোমরা খেতে বসো।
বাবা-ঋতু!!রনি তো খিদে সহ্য করতে পারেনা রে।
আমি-না বাবা আজ সহ্য করতে দাও।
বাবা-দেখ ঋতু এই রনিকে জন্ম দিতে গিয়েই তুই মারা যাওয়ার অবস্থায় ছিলি।আর আজ কিনা তুই সেই রনিকেই অবহেলা করছিস।
আমি-তুমি কি বলতে চাও বাবা।
বাবা-রনি যখন চাইছে ওকে যেতে দে।
আমি-কি????
বাবা-আরে শুন তোকে যেতে হবেনা বুঝেছিস।শুধু রবিন আর রনি যাবে তাহলেই হলো।
আমি-এর মানে কি।
বাবা-মানে সাপও মরলো আর লাঠিও ভাঙ্গলোনা।
রবিন-ওয়াও আমি বুঝতে পেরেছি।
আমি-ঠিক আছে আমি রনিকে বলছি।
আমি ওখান থেকে গিয়ে রনির রুমে গেলাম।দেখলাম ও বিছানায় উল্টো হয়ে শুয়ে আছে।
আমি-রনি।
রনি-…..
আমি-রনি তুমি রানির জন্মদিনে যাবে তো?
রনি-হ্যাঁ আম্মু(উঠে বসে)
আমি-ওকে আজ সন্ধ্যায় যেয়ো।
রনি-সত্যি আম্মু।(ঋতুকে জরিয়ে ধরে)
আমি-হুম চলো এখন খাবে চলো।
আমি রনিকে নিয়ে খাবার টেবিলে আসলাম।
রনি-জানো নানা আমি জন্মদিনে যাবো।
বাবা-হুম যাবে তো।এখন খেয়ে নাও।
***সন্ধ্যায়***
রনি-আম্মু চলোনা।(কান্না করে)
আমি-আমি যাবো বাবা।
রনি-প্লিজ আম্মু চলো না।(কান্না করে)
আমি-উফফ রনি বিরক্ত করো না তো।
এবার ও একেবারে হাত-পা ছড়িয়ে কান্না করছে।
রবিন-রনি তোমাকে যেতে দিয়েছে বলে এমন করছো?বলছেনা মা যাবেনা।
রনি-বাবা প্লিজ মাকে বলোনা।(কান্না করে)
রবিন-ঋতু তুমি ওকে যেতে দিওনা।
রনি-আআআআ(কান্না করছে)
বাবা-ঋতু দেখছিস তো।
আমি-আচ্ছা।
রবিন-সিরিআসলি?
আমি-একটা গাঁদা পালছি আমি।(রেগে)
রবিন-ওকে কোন শাড়ীটা পরবে বলো।
আমি-তুমি একটা দাও।
রবিন-আমি আর রনি পরেছি নীল রংয়ের পানজাবি তো তুমি নীল রংয়ের শাড়ী পরো।
আমি-ওওও তাই।(ভঙ্গিমা করে)
রবিন-আমি যেটা এনেছি সেটাই পরো।
আমি-ওকে দাও।
আমি একটা নীল শাড়ী পরে রেডি হলাম।আর রবিন আর রনিকে নিয়ে রানির জন্মদিনে গেলাম।
রাহাত-তোমরা এসেছো।(রবিনকে জরিয়ে ধরে)
রবিন-তুমি বলেছো আর আমরা আসবোনা।
রাহাত-হুম।
ওখানে সবাই অনেক আনন্দ করছে।কিন্তু আমার এখানে ভালো লাগছেনা।এটা রাহাতের নতুন বাড়ী।আগের বাড়ীটা হলে হয়তো থাকতেই পারতাম না।আমি আর রবিন একপাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম।হঠাৎ আমি বাড়ীর বাইরে কাল কে রেস্টুরেন্টে দেখা মেয়েটাকে দেখলাম।আমি আর দেরি না করে মেয়েটার পেছনে গিয়ে দাড়া লাম আর মেয়টার কাঁধে হাত রাখলাম।আমি চমকে উঠে আমার দিকে ফিরে বলে উঠলো।
মেয়েটা-ঋতু।(অবাক হয়ে)
-চলবে