❤#আশিকি❤
#Madness_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_2
সানার ফ্যামিলি বলতে শুধু ও আর ওর আম্মুই আছে। সানাহ ঢাকাতে একটা এ্যাপার্টমেন্টের ফোর্থ ফ্লোরে থাকে ওর আম্মুর সাথে।
এখন গল্পে ফিরা যাক….
সানাহ গাড়ি এপার্টমেন্টের গ্যারেজের পার্ক করে ভিতরে ঢুকে পরলো। সিঁড়ি দিয়ে সানাহ আসাযাওয়া করে কারন লিফ্টে ওর সাফোকেশন প্রবলেম হয়।
সানাহ ফোন স্ক্রল করতে করতে উপরে উঠছে। ফোর্থ ফ্লোরে আসতেই পায়ের নিচে কিছু পিছলে অনুভব করলো ও। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সানাহ পা পিছলে পরে যায়।
সানাহঃ আআহহ,,
সানাহ ভয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলল। সানাহ নিচে পরলো না,, এমন লাগছে যেন হাওয়ায় ভাসছে ও। ও অনুভব করছে কেউ ওর কোমর জড়িয়ে ধরে আছে।
সানাহ মিটমিট করে চোখ খুলে তাকাতেই যাকে দেখলো তাকে এই মুহুর্তে ও মোটেও এখানে আশা করে নি।
আমাল বাঁকা হেসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আমাল হেঁচকা টান দিয়ে সানাহকে দাঁড় করিয়ে দেয়। আমালের হাত এখনো সানার কোমর জড়িয়ে ধরে আছে। সানাহ আমালকে দেখে নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারলো না। সকালের রাগটা এখন ওর মাথায় চেপে বসেছে। সানাহ আমালকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে নিল। তারপর ওর দিকে তাকিয়ে রেগে বলতে শুরু করল।
সানাহঃ হাও ডেয়ার ইউ মি আমাল,,, আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে টাচ করার। আর এখানে কেন এসেছেন আপনি?? হয়ত আপনি ভুলে যাচ্ছেন এটা আমার বাসা আপনার অফিস না।
আমাল সানার কথায় রেগে ওকে রেলিং এ চেপে ধরে তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলতে শুরু করলো।
আমালঃ ডেয়ার এর কি দেখেছো সান। তুমি যানো যে এই আমাল খান কি করতে পারে আর তার সাহস কতখানি।
আমাল সানাহকে ছেড়ে একটু দূরে সরে দাঁড়িয়ে পকেটে দু হাত গুঁজে নাক ছিটকে বলতে শুরু করল।
আমালঃ আর যেখানে তোমাকে টাচ করার কথা,, তোমাকে টাচ করার কোন ইন্টারেস্ট আমার নেই। ??থ্যাংকস টু মি আমি যদি না থাকতাম তাহলে তুমি নাগিনের মতো গড়াতে গড়াতে নিচে পরতে। কোথায় আমাকে তুমি থ্যাঙ্ক ইউ বলবে তা না করে আমাকে ব্লেম করছো।
আমালের কথায় সানাহ বুঝতে পারলো সত্যিই তো ও নিচে পরতে নিচ্ছিল। আমাল না থাকলে আজকে হয়তো ওর ইন্না লিল্লাহ হয়ে যেত।
সানাহকে গভীর ভাবে কিছু ভাবতে দেখে আমাল বাঁকা হাসলো। তারপর ওর মুখের সামনে তুরী বাজিয়ে বলল,,,
আমালঃ কোথায় হারিয়ে গেলেন মিস ড্রিম গার্ল।
আমালের কথায় সানার ধ্যান ভাঙলো।
আমালঃ এখন আপনি আমাকে স্যরি এন্ড থ্যাঙ্ক ইউ দুটোই বলবেন। থ্যাঙ্ক ইউ আপনাকে বাঁচানোর জন্য আর স্যরি এই মাত্র যে আমাকে ইনসাল্ট করলেন তার জন্য।
সানাহ মুখ গোমড়া করে বলল।
সানাহঃ স্যরি এন্ড থ্যা… হঠাৎ সানার খেয়াল হলো আমাল এখানে এই সময় কি করে,,,
সানাহঃ ওয়েট আগে আপনি এটা বলেন যে আপনি এখানে কি করছেন?? আপনি কি আমাকে ফলো করছেন,, ( সন্দেহের চোখে)
সানার কথা শুনে আমাল জোরে জোরে হেসে দেয়। সানাহ আমালকে হাসতে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। ও এমন কি বলল যে আমাল এভাবে হাসছে।
আমাল নিজের হাসি চাপিয়ে সানাহকে বলল।
আমালঃ সিরিয়াসলি সানাহ!! ইউ থিঙ্ক কি আমি তোমাকে ফলো করছি জোক অফ দ্যা ডে। বলে আবার হাসতে শুরু করল।
সানাহ চোখ ছোট ছোট করে আমালের দিকে তাকিয়ে বলল,,
সানাহঃ তাহলে আপনি এই সময় এখানে কি করছেন আমার বাসায়। ?
আমাল সানার কথা শুনে এটিটিউট নিয়ে বলল,,,
আমালঃ এটা একটা এপার্টমেন্ট সানাহ। এটা শুধু তোমার একার বাসা না আরো অনেক মানুষ এখানে থাকে। এন্ড ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন আমিও এখানে একটা ফ্ল্যাট কিনেছি।
আমাল সানাহদের ফ্ল্যাটের বরাবর ফ্ল্যাটের দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করল।
আমালঃ মাই ফ্ল্যাট ?,,, সম্পর্কে এখন আমি তোমার নেইবার হই আই মিন প্রতিবেশী। ?
হঠাৎ সানার চোখ গেল আমালের হাতের দিকে। শার্টের হাতায় সস লেগে আছে। সানার খেয়াল হলো যে ও কিছু একটায় পিছলে পড়ে যেতে নিয়েছিল। সানাহ সিঁড়ির দিকে তাকিতেই দেখতে পেলো সিঁড়িতে কেচাপ পরে আছে।
তার মানে আমাল জানতো যে সানাহ এখান দিয়ে আসবে আর ও ইচ্ছে করে এখানে সস ফেলেছে যেন সানাহ পরে যায় আর আমাল হিরো সেজে ওকে সেফ করে।
সানাহ এটাও বুঝতে পারছে যে আমাল ইচ্ছে করে ওদের বাসার সামনে ফ্ল্যাট নিয়েছে।আর অফিসের ব্যাপারটাও সব আমালের প্লান। সানাহ এবার রেগে আমালের কলার চেপে ধরে আমালকে বলল,,,
সানাহঃ তুমি কি ভেবেছো আমাল আমি বোকা। আই নো এসব কিছু তুমি ইচ্ছে করে করছো। তুমি ইচ্ছে করে রেডিও স্টেশনটা কিনেছো।
কারন দ্যা গ্ৰেট আমাল খান (আমালকে ছেড়ে হাত ছড়িয়ে বুঝালো) যার কিনা কোটি কোটি টাকার হোটেল বিজনেস সে কেন একটা সামান্য স্টুডিও এর মালিক হতে যাবে। যার নিজেরই হোটেলের অভাব নেই সে কিনা এই সামান্য ফ্ল্যাট কিনেছে তাও থাকার জন্য ইম্পসিবল।
কেন এসেছো আবার আমার জীবনে হ্হ?? আর কি বাকী আছে বরবাদ করার। আই হেইট ইউ আমাল আই জাস্ট হেইট ইউ।
চলে যাও আমার জীবন থেকে। আমি চাই না তোমাকে।( কান্না করতে করতে)
এতক্ষন আমাল দাঁড়িয়ে শুধু সানার কথা গুলো শুনছিল। কতটা ঘৃণা করে ওর সান ওকে ভাবতেই বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করছে ও। একসময় এই সানাহ আমাল বলতে পাগল ছিল আর আজ সেই সানাহ ওকে ঘৃণা করছে।
আমালের চোখের পানিও এবার বাধ ভেঙ্গে দিল। সানার চোখের পানি আমালের ভিতরটা দুমরে মুচরে দিচ্ছে।
আমালঃ সান আমার কথাটা একবার শুন,,
আমাল সানার দিকে এগোতেই সানাহ পিছিয়ে যায়।
সানাহঃ ডোন্ট ইউ ডেয়ার আমাল। আমি তোমাকে কক্ষনো ক্ষমা করবো। কক্ষনো নাহ,,,
সানাহ কথাটা বলেই চাবি দিয়ে দরজা খুলে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে পরলো।
আমাল ঠাই দাঁড়িয়ে আছে সানার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে।
আমালঃ তুমি আমাকে চাও না সান কিন্তু আমি যে তোমাকে পাগলের মতো চাই। এই একটা বছর তোমাকে ছাড়া কিভাবে বেঁচে ছিলাম এটা শুধু আমিই জানি। তিলে তিলে মরেছি আমি। হাজার খোঁজার পরেও যখন তোমাকে পাচ্ছিলাম না ইচ্ছে করছিল শেষ করে দেই নিজেকে। আমার একটা ভুলের জন্য তোমাকে সারাজীবনের জন্য হারাতে পারবো না আমি। জানি ভুলটা আমার ছিল আর এই ভুলটা সুধরানোর জন্যই তোমার কাছে এসেছি।
“তুমি আছো তো আমি আছি”
“তুমি নেই তো আমি নেই”
তোমার সব রাগ সব অভিমান দূর করে দেব। আবার নিজের #আশাকি তে রাঙিয়ে দিবো। কারন তুমিই তো আমার #আশিকি
সানাহ চোখ মুখ ভালো করে মুছে নিজেকে নরমাল করে নেয়। কারন ও চায় না ওর জন্য ওর আম্মু কষ্ট পাক।
সানাহ ওর আম্মুর রুমে উকি মেরে দেখে উনি বসে আছেন।
সানাহঃ আম্মিজান ??
সানাহ ওর আম্মুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
রাফিয়াঃ সেই কখন ফোন করেছিলাম সানু,,, এতো দেরি কেউ করে ( কিছুটা রেগে)
সানাহঃ স্যরি মা,,, আসলে আজকে একটু বেশি কাজ ছিল তাই ফিরতে দেরী হয়ে গেছে। এখন এসব বাদ দাও আমার অনেক ক্ষুধা লাগছে খেতে দাও। ( বাচ্চাদের মতো করে)
রাফিয়াঃ যো হুকুম মহারানী,,,
সানাহঃ আম্মু মহারানী তো তুমি আমিতো তোমার প্রিন্সেস,,,
রাফিয়াঃ হয়েছে আয় তোর জন্য আমিও না খেয়ে বসে আছি।
রাফিয়া সানাকে খাবার খাইয়ে দিতে দিতে বলে,,,
রাফিয়াঃ জানিস সানু আজকে আমাদের সামনের ফ্ল্যাটে একটা নতুন নেইবার আসছে। ছেলেটা একাই আসছে অনেক সভ্য আর ভদ্র।
সানাহঃ ওহ তো এ জন্যই আমাল খান তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বেড়িয়ে এসেছেন।যেন এখানে এসে আমার আম্মুকে পটাতে পারে। ব্যাটা চালবাজ কোথাকার। ?( মনে মনে)
সানার আম্মু আমালের প্রশংসা করতে করতে সানার কান পচিয়ে ফেলছেন। সানাহ কিছু বলতেও পারছে না আর সইতেও পারছে না।
বিরক্ত হয়ে শুধু শুনছে।
To be continued…..