#আলো_আঁধার
পর্ব ঃ- ০৭
~আঁখি দেব তৃপ্তি
স্যার ১৫ মিনিট ধরে আলোর আঁকা ছবির দিকে তাকিয়ে আছেন। এতো ছোট মেয়ে ড্রয়িং শিখা ছাড়া এরকম ছবি এঁকেছে এটা তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না। ছবিগুলোর একটাই ত্রুটি তিনি খুঁজে পেয়েছেন তা হলো রংগুলো ভালোকরে মিশে নেই। অনেকটা গুড়ো গুড়ো টাইপ হয়ে কাগজে লেগে আছে। এটি সাধারণত রং পেন্সিল ভালো মানের না হলেই হয়।
“এগুলো কী সত্যিই তুমি এঁকেছো আলো? ”
“জ্বি স্যার।”
“আচ্ছা তুমি কি রং পেন্সিল স্কুলে নিয়ে এসেছো?”
“না স্যার। ”
“ও, আচ্ছা বসো আমি দেখে আসি অফিস রুমে কোনো রং পেন্সিল পাই কিনা।”
“কিন্তু কেন স্যার? আমার তো বাড়িতে আছে রং পেন্সিল। ”
“এসে বলছি কেন।”
অনেক খুঁজাখুঁজির পর আলোর স্যার একটি ছোট জল রংয়ের বক্স পেলেন। তারপর সেটা নিয়ে হাজির হলেন ক্লাসে। আলোর দিকে রংয়ের বক্স এগিয়ে দিতে দিতে বললেন-
“দেখি এখানে বসে আমাকে একটি ছবি এঁকে দেখাও তো।”
“আচ্ছা স্যার” বলে আলো অতি উৎসাহে রংয়ের বক্স খুললো। কিন্তু রং দেখে বিপত্তিতে পড়ে গেল। এগুলো দিয়ে কীভাবে আঁকতে হয় তা তো সে জানে না।
“স্যার এগুলো দিয়ে কীভাবে আঁকতে হয়?”
“ও এটা তো আবার জল রং তোমার বুঝার কথা না। দাড়াও আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি।”- বলে ক্লাসের আরেকটি ছাত্রকে স্যার একটি পাত্রে করে কিছু জল আনতে বললেন। জল আনা হয়ে গেলে কীভাবে তুলি দিয়ে আঁকতে হয় তা বুঝিয়ে দিলেন আলো কে।
খাতা রং সামনে রেখে আলো কিছুক্ষণ ভাবলো তার পর আঁকা শুরু করলো।
৩০ মিনিট পর আলোর আঁকা সমাপ্ত হলো। রং তুলির ব্যবহার প্রথম বলে ছবি অনেকটা হিজিবিজি হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় রং একটার সাথে আরেকটা লেগে গেছে কিন্তু ছবিতে কোনো গুড়ি গুড়ি ভাব নেই। রং শুকিয়ে যাবার পর ছবিটির উপরে হাত বুলাতে বেশ লাগছিল আলোর। কতো মসৃন হয়েছে এটা।
” কী ব্যাপার আলো শেষ হলো আঁকা?”
“জ্বি স্যার। ”
“নিয়ে এসো তো দেখি।”
আলো দৌড়ে ছবিটি নিয়ে গেলো স্যারের কাছে।
একজন লোক চেয়ারে বসে আছে। তার সামনে একটি বড় টেবিল। লোকটির চোখে চশমা। লোকটি তাকিয়ে আছে পাশের জানালা দিয়ে। জানালা দিয়ে যতদূর দেখা যাচ্ছে একটি পাখি বসে আছে গাছের ডালে। আরেকটি পাখি খড় জাতীয় কিছু একটা নিয়ে উড়ে আসছে গাছে বসে থাকা পাখিটির দিকে। মনে হচ্ছে এরা এক পাখি দম্পতি নতুন বাসা বাধার জোগার করছে। আর লোকটি এই দৃশ্য বেশ উপভোগ করছে। যদিও লোকটির চেহারার অবয়ব ঠিকমতো হয়নি তাও বুঝা যাচ্ছে এই ব্যক্তি তিনিই যিনি আলোকে ছবি আঁকার কাজ দিয়েছিলেন।
বেশ অবাক হলেন স্যার। অন্য বাচ্চাদের লিখতে দিয়ে একটু আগেই তিনি জানলা দিয়ে এই দৃশ্য দেখছিলেন। আলো কীভাবে এই মুহুর্তটা সুন্দর করে ফুটিয়ে তুললো! যদিও ছবিতে অনেক ত্রুটি রয়েছে তবুও আলোর বয়সের তুলনায় ছবিটি অতুলনীয়।
“এটা কীভাবে করলে আলো? ”
“কী আঁকবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না স্যার। হঠাৎ আপনার ওই পাখির দিকে তাকিয়ে থাকা দেখলাম তাই আঁকার চেষ্টা করলাম। ভালো হয়নি তাই না স্যার? রংগুলো একটার উপর আরেকটা মিশে গেছে। ”
“খুব ভালো হয়েছে আলো আমি তো পুরাই অবাক। আমাকে এই ছবিটা গিফট করব?”
“জ্বি স্যার। আপনি নিলে আমি অনেক খুশি হবো। ”
“আচ্ছা।”- বলে সবাইকে ছবিটি দেখালেন স্যার। খুব অবাক হলো সবাই আলোর এই প্রতিভা দেখে। তারপর আলো স্যারকে রং তুলির ববক্স ফিরিয়ে দিতে গেলো।
” স্যার রংগুলো। ”
” এগুলো ফেরত দিচ্ছো কেন? রেখে দাও।”
“আমার তো বাড়িতে আছে স্যার।”
“জল রং তো নেই। এটা আমার পক্ষ থেকে তোমার গিফট। তুমি ড্রয়িং চালিয়ে যাও। একদিন অনেক ভালো আঁকতে পারবে এ আমার বিশ্বাস। ”
“ধন্যবাদ স্যার।”
তনিমা আর আলোর দিনগুলো মোটামুটিভাবে কেটে যাচ্ছিল। তারপর হঠাৎ একদিন ভোর বেলা তনিমার বাবা মারা গেলেন। বাবার মৃত্যুতে খুব ভেঙে পড়লো তনিমা। এই একজন ব্যক্তিই তাদেরকে এতোদিন যতটা সম্ভব বাধা বিপত্তি থেকে রক্ষা করেছিলেন। উনার ভয়ে কেউ বেশি কিছু বলারও সাহস পেত না। এখন আরবুনি নেই। সামনে কী দিন অপেক্ষা করছে তনিমাদের জন্য উপরওয়ালাই জানেন।
তনিমা যে ভয়টা পাচ্ছিলো তাই সত্যি হলো। বাবা মারা যাওয়ার পর ভাইয়ের বউ নানান রকম খারাপ ব্যবহার করা শুরু করলো তনিমাদের সাথে। আলোকে নিজের বাচ্চাদের সাথে মিশতেও দিত না সে। খাবারের সময় আলোর ভাগে ভালো কিছুও জুটতো না। বাইরের লোকজন আগে যেখানে এক কথা বলতো আলো আর তনিমাকে নিয়ে এখন তা দশ কথায় রুপান্তর হয়েছে। ওরা সবাই তনিমাদের পেছনে এমন ভাবে লেগেছে যেন ওরা এখান থেকে চলে গেলে সবাই শান্তি পায়।
প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেই আলো আস্তে আস্তে বালিকা থেকে কিশোরী হয়ে উঠলো। চারপাশটা এখন সে অনেকটাই ভালো বুঝে। এ সমাজে কালো মেয়েদের অবস্থান কতোটা কঠিন তাও বুঝে সে। সবার নানান রকম কথা বার্তায় অনেকসময় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়লেও মায়ের দিকে তাকিয়ে নিজেকে শক্ত করে তুলে আলো।
আলো এবার ক্লাস টেনে উঠেছে। স্কুলে আলোর সাথে কেউ বন্ধুত্ত্ব করতে এগিয়ে আসতো না। শুধু একটি ছেলে বন্ধু ছিল আলোর নাম নবিন। ছেলেটি আলোদের পাশের বাড়িতে থাকে। ছোট বেলার বন্ধু ওরা দুজন। আরও অনেকে ছিল ওদের সাথে কিছু সবাই আস্তে আস্তে আলোকে কালো বলে দূরে সরে যায়। কিন্তু নবিন আজও তার ছোটবেলার খেলার সাথীকে ছাড়তে পারে নি।
একদিন বিকেল বেলা আলো দেখলো পুকুর পাড়ে একটি পাখির বাসা ভেঙে পড়ে আছে। বাসার ভিতর ছোট ছোট বাচ্চা। বাচ্চাগুলোকে দেখে খুব মায়া হলো আলোর। ভাঙা বাসাটি কিছু শুকনো পাতা দিয়ে আস্তে আস্তে একটি গাছের ডালে রাখলো। তারপর অপেক্ষা করতে লাগলো ওদের মা বাসা খুঁজে পায় কিনা তা দেখার জন্য। কিছুক্ষণ পর ওদের মাকে বাসায় আসতে দেখা গেল। কিন্তু বাসায় ঢুকে মা পাখিটি বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিল বুঝা যাচ্ছিল। কারণ হয়তো বাসাটি মজবুত ছিল না। তাই আশেপাশে খুঁজে পাখিটি খড়-খুটা সংগ্রহ করতে শুরু করলো। পাখিটির বাসা বাঁধার প্রক্রিয়া দেখার ইচ্ছে ছিল আলোর কিন্তু তা আর হলো না। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো আর আলোর ডাক পড়লো ঘরে ফিরার। কী আর করা ইচ্ছে অসম্পূর্ণ রেখেই ঘরে ফিরে গেলো আলো।
সন্ধ্যার পর রং তুলি নিয়ে আলো বসে পড়লো পাখির ছবি আঁকতে। বিকেলের সেই দৃশ্যটি ফুটিয়ে তুললো সে তার ড্রয়িং খাতায়। হঠাৎ বাইরে জোরে বাতাস বইতে শুরু করলো। মনে হচ্ছে ঝড়-তুফান আসবে। পাখিটি কী বাসা বেঁধেছিল? এই তুফানে তো ওদের বাসা উড়ে যাবে। বাচ্চাগুলো মারাও যেতে পারে। কী করবে এখন আলো? ঘর থেকেও তো বেরোতে দেখলে বকা দিবে সবাই। না যেভাবেই হোক পাখিগুলোকে বাঁচাতেই হবে।
পিছন দরজা দিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো আলো। সাথে করে নারিকেলের শক্ত খোলস নিয়ে এলো বাসাটিকে সুরক্ষা প্রধানের জন্য।
দ্রুত গতিতে পুকুর পাড়ের দিকে এগুতে গিয়ে রাস্তায় কেউ একজনের সাথে ধাক্কা খেল আলো। সে এই লোক। ভয় পেয়ে গেল আলো। জায়গাটা গাছ গাছালিতে ভরা তাই অন্ধকারে কিছুই ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।
#আলো_আঁধার
পর্ব ঃ- ০৮
~ আঁখি দেব তৃপ্তি
“কে?”- ভীত গলায় জিজ্ঞেস করলো আলো।
” আমি নবীন।”
“তুই এখন এখানে কী করছিস?”
“আমি তো মাছ ধরতে এসেছি। তুই এই অন্ধকারে বাইরে কেন বেরিয়েছিস?”
“একটা কাজ আছে।”
“রাতে আবার কী কাজ ঝড়-বৃষ্টি আসছে যা ঘরে যা।”
“না, আগে কাজটা করতে হবে।”
“কী কাজ বলবি তো?”
“আয় আমার সাথে তাহলে দেখতে পাবি।”
আলো নবিনকে নিয়ে সেই পাখির বাসাটার কাছে গেলো। পুকুরপাড় অনেকটা খোলামেলা তাই চাঁদের আলোতে দেখা যাচ্ছে আপছা আপছা। নবিনের কাছে অবশ্য লাইট ছিল কিন্তু পাছে কেউ দেখে ফেলে সেই ভয়ে জালায় নি।
পাখির বাসাটা ভেঙে যাবে যাবে এরকম অবস্থা। আলো প্রথমে খানিকটা গাছ বেয়ে উঠলো তারপর নারিকেলের ছোলা আর শক্ত খোলস দ্বারা বাসাটির চারপাশ ঢেকে দিল। তারপর একটি ছোট দড়ির সাহায্যে গাছের ডালের সাথে শক্ত করে বেধে দিল বাসাটি। আর ভেঙে পড়ার কোনো ভয় নেই। এবার সে নেমে এলো।
“কাজ হয়ে গেছে। ”
“এই তোর কাজ?”
“হুম, না আসতে পারলে হয়তো পাখির ছানাদুটি মারা যেত।”
“ভালো করেছিস। এবার তাড়াতাড়ি ঘরে যা। জোরে বাতাস বইতে শুরু করেছে।”
“আচ্ছা।”
আলো যেই ঘরের দিকে যাওয়া শুরু করলো অমনি কেউ একজন চিৎকার দিয়ে উঠলো। চমকে গেল নবীন ও আলো। সাথে সাথে সবাই ছুটে এলো পুকুর পাড়ে। টর্চ লাইটের আলোয় আলোকিত হয়ে গেল চারিপাশ।
যে মহিলা চিৎকার দিয়েছেন তিনি সম্পর্কে আলোর পাশের ঘরের মামি। উনি আর উনার ছোট ছেলে বেড়িয়েছেন তেতুল কুঁড়ানোর জন্য। পুকুর পাড়ে ওদের একটি বড় তেতুল গাছ আছে। আলো সাদার মধ্যে লাল ড্রেস পড়ে ছিল। উনি ওকে দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়েছিলেন। ছোট ছেলেটাও বেশ ভয় পেয়েছে মায়ের চিৎকারে। এখনো কাঁপছে সে। হঠাৎ এরকম ঘটনায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল আলো ও নবীন।
“আলো তুই রাতের বেলা এখানে কী করছিস।”- রাগী কন্ঠে আলোর মামা জিজ্ঞেস করলেন।
” কী করছে তা তো বুঝাই যাচ্ছে। ওই নবীন ছেলেটার সাথে ফষ্টিনষ্টি করতেই তো বেড়িয়েছে। যা গায়ের রং অন্ধকারে মানুষ দেখে পেত্নি ভেবে ভয় তো পাবেই। বেচারি নবীনের মা। কপাল পুড়লো এবার বুঝি তার।”- বাড়ির আরেক মহিলা বলে উঠলেন।
এরকম কথা শুনে আলো কী বলবে কিছুই বুঝতে পারলো না। আলোর মাও সবার সাথে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি আস্তে আস্তে আলোর সামনে গেলেন তারপর ঠাস করে একটা চড় মারলেন আলোকে।
“এই দিনটা দেখার জন্য তোকে আমি এতোদিন কষ্ট করে বড় করেছি আলো? ”
“মা বিশ্বাস করো এসব মিথ্যা কথা। আমি তো ওই পাখির বাসা বাঁচাতে এখানে এসেছিলাম।”
“এখন আরও কতো ঢং এর বাহানা সাজাবে।”- সেই মহিলা আবার বললেন।
” আপনারা কেনো বাজে কথা বলছেন আলো তো আম্র ছোট বেলার বন্ধু। আমি এখানে মাছ ধরতে এসেছিলাম। হঠাৎ আলোর সাথে দেখা হলো। আলো যা বলছে তাই সত্যি। “- নবীন।
” তুমি আর নাটক করো না বাপু ছেলে মেয়ে নাকি আবার বন্ধু। ”
“আলো ঘরে চল।”- বলে আলোর মা ওকে টেনে ঘরে নিয়ে এলেন।
” তুই রাতের বেলা বাইরে কেন বেরিয়েছিস? ”
“মা ওই পাখির বাসা.. ”
“একদম চুপ। তুই জানিস না গ্রামের পরিবেশ কেমন? আর আমাদের অবস্থান এখানে কেমন? মান সমসম্মান তো ওরা আর কিছু বাকি রাখবে না আমাদের জন্য। কী করবি এখন? হলো তো এবার শান্তি তোর?”- বলে তনিমা কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। মায়ের কান্না দেখে আলোও আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না।
পরের দিন এ বিষয় নিয়ে আলোদের বাড়ি বিচার বসলো। অনেক বাজে বাজে কথা বললো সবাই আলোকে। নবীনের মাও কিছু ছাড় দিলেন না। উনার ছেলের মাথা আলো খেয়েছে, ডাইনি একটা এই সেই কতো রকমের কথা। আলোর মামিও এ সু্যোগ হাতছাড়া করলেন না। বললেন এরকম মেয়েকে তিনি ঘরে রাখতে পারবেন না। এর জন্য নাকি তার বাচ্চারাও নষ্ট হয়ে যাবে। তনিমা আর এসব সহ্য করতে পারলো না। ঘরে গিয়ে জিনিসপত্র গুছাতে লাগলো। সে আর এখানে থাকবে না। এতো অপমান, অপবাদ মাথায় নিয়ে এখানে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো। আজ যদি তনিমার বাবা বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো তনিমাকে এই দিন দেখতে হতো না।
” মা সবকিছু গুছাচ্ছো কেন?”- কাঁদতে কাঁদতে বললো আলো।
“আমরা আর এখানে থাকবো না।”
“আমরা কোথায় যাব মা?”
“জানিনা যেদিকে দু-চোখ যায়। ”
“আমাকে মাফ করে দাও মা। আমি বুঝতে পারিনি আমার এই কাজের পরিণাম এরকম হবে।”
“তৈরি হয়ে নে আমরা এখনি বেরিয়ে পড়বো।”
“মা আমরা এভাবে কোথায় যাব? আমি সবার পায়ে ধরে মাফ চাইবো। তুমি প্লিজ এরকম করো না।”
“কারো পায়ে ধরার প্রয়োজন নেই আলো। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।”
আলো কী বলবে আর ভেবে পেলো না।