#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৩০
,
,
,
,
,
(আমি ভুলে রাহির জায়গায় নীহারিকা ব্যাবহার করেছি সরি)
রামিসার কিছু মুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিলো হয়তো ঈশান এসে বসেছে তার পাশে।চোখে এক আকাশ সমান আশা নিয়ে নিজের পাশে তাকাতেই নিরাশ হলো সে ঠোঁটের কোনে ফুটা উঠা হাসিটা মিলিয়ে গেলো। রামিসা মনে করেছিলো হয়তো ঈশান এসেছে।কিন্তু নাহ তাকে ভুল প্রমান করে অচেনা একটা ছেলে তার পাশে এসে বসেছে।।রামিসা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরলো।
রামিসাঃজ্বি আপনাকে চিনলাম না(ইংলিশ এ)
রুশঃআমি রুশ আপনাকে এখানে একা বসে থাকতে দেখে ভাবলাম কম্পানি দেওয়া যাক
রামিসাঃসরি কিন্তু আমি কারো সাথ চায়না
রুশঃইউ আর টু মাচ রুড লেডি
রামিসাঃআমি জানি বলতে হবে না সেটা আমাকে(চলে যেতে নেয়)
রুশঃহেই এংগরি বার্ড আই লাইক ইউর এংগরি ফেস আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করবেন(রামিসার হাত ধরে)
এবার ঈশানের মাথায় রক্ত চড়ে বসে।কথা বলছে ভালো কথা হাত ধরবে কেনো। ঈশানে লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে যায়।রামিসা হাত ছাড়ানোর আগেই ঈশান যেয়ে রুশ এর হাত থেকে রামিসার হাত ঝটকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে নিজের বুকে নিয়ে আসে।রামিসা অবাক হয়।এই প্রথম নিজ থেকে সে রামিসাকে নিজের বুকে নিয়েছে।
ঈশানঃএকবার না বললে কথাটা মাথায় ঢুকানোর অভ্যাস করে নেন। কারন না মানে না ই হয়৷ না মানে হ্যা হয়না মাইন্ড ইট(রামিসাকে বুকের সাথে জরায় নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়)
রামিসাঃআমাকে ছাড়েন ঈশান ভাই
ঈশানঃমুখ বন্ধ আমি ছাড়ি আর তুই যায়ে ওই ছেলের সাথে ঢলাঢলি ক্ল্রে
রামিসাঃআরে আজব তো আমি কি করলাম
(ভ্রু কুচকে)
ঈশানঃতুমি কিছু করোনি যখন ওই ছেলেটা তোর হাত ধরেছিলো তখন টানে থাপ্পড় মারতে পারিসনি নাকি সব সব রাগ জেদ মারপিট আমার সাথে
রামিসাঃছাড়েন বলছি
ঈশানঃদিবো এক থাপ্পড় আমার সাথে জেদ দেখানো (হাত তুলে)
রামিসাঃএই ভাবে চিল্লাছেন কেন(কাদো কাদো হয়ে)
ঈশানঃনটাংকি(মুচকি হেসে)
ঈশানের হাসি দেখে রামিসাও হেসে দেয়।ঈশান আলতো হাতে জরায় ধরে রামিসাকে। রামিসাও নিজের অভিমান ভেংগে ঈশানের বুক পাজরে মুখ লুকায়।
___________
ঃআর কতোদিন তুই এইভাবে হাতের উপর হাত দিয়ে বসে থাকবি তুই (রেগে গজগজ করতে করতে)
আসাদুজ্জামানঃতাদের সবাইকে মারার প্ল্যান রেডি শুধু আর কিছুদিন
ঃআর কিছুদিন পরে কি
আসাদুজ্জামানঃআর কিছুদিন পরেই আহান এর জন্মদিন সেদিন সবাই আসবে আমি ওদের এই জায়গায় মারবো আমার ছেলের মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করাবো
ঃযা করবি ভেবে চিনতে করিস
আসাদুজ্জামানঃসব প্ল্যান রেডি এক দিনে পুরো পরিবারকে শেষ করে দিবো
ঃআমি সে দিনের অপেক্ষায় আছি কবে আমার চোখের কাটা গুলো দূর হবে
আসাদুজ্জামানঃহুম যা তুই বাসায়।।।
_____
দেখতে দেখতে ৩ টা মাস পেরিয়ে গেলো। আদ্রির আগের থেকে পেটটা অনেক বড় হয়ে গেছে ৮ মাস চলছে তার।চেহারায় আলাদায় লাবন্য ফুটে উঠেছে তার। আগের থেকে অনেক টাই গোলুমলু হয়েছে কিন্তু হাটতে চলতে তার এখন ভিষন কষ্ট হয় অন্য কারো সাহায্য ছাড়া উঠতে বসতে পারেনা।এই ৩মাস অনেক খেয়াল রেখেছে আকাশ নওশিনের চোখের আড়াল হতে দেয়নি কিন্তু ১ সপ্তাহ হলো প্রচুর ব্যস্ত হয়ে পরেছে সে সময় বের হচ্ছেনা তার নওশিনের জন্য।নওশিনের খুব অভিমান হয় কিন্তু দিন শেষ এ ভোরের আলোই আকাশের ক্লান্তিতে ভরা মুখ টা দেখে তার সব অভিমান দূর হয়ে যায়।রাতে আকাশের কপালে চুমু দিয়ে ঘুমাতে না পারলেও সকালে উঠে আগে আকাশের কপালে কিস করতেই হবে তার এটা যেনো তার রুটিন হয়ে দ্বারিয়েছে।
_________
নওশিন আনমনে দ্বারিয়ে চাঁদ দেখছিলো ছাদে যাওয়া হয়না তার আকাশের কড়া বারন সে যখন সাথে থাকবে শুধু তখন ছাদে যাওয়ার অনুমতি পাবে সে। ১ সপ্তাহ হলো আকাশের দেখা পায়না সেখানে ছাদে যাওয়াও হয়না। আজকে বড্ড ইচ্ছা করছে ছাদে যাওয়ার কিন্তু ভয় করে যদি পা পিছলে যায় তাহলে যদি কোন অঘটন ঘটে যায় কি করে মুখ দেখাবে সে আকাশকে এই ভেবে আর সাহস হয়ে উঠেনা তার ছাদে যাওয়ার।
নওশিন পিছনে ঘুরতে নিলেই ঘাড়ে কারো উতপ্ত নিশ্বাস টের পায়।কেপে উঠে তার সবাঙ্গ। নিজের শরীরের সমস্ত ভার ছেড়ে দেয় সে জানে তার পিছনে অবস্থিত পুরুষটি ঠিক তার বাহুতে আগলে নিবে তাকে যত্ন করে।
আকাশঃসুইটহার্ট ডিড ইউ মিস মি
নওশিনঃবিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা
আকাশ কিছু না বলে নওশিন কে কোলে তুলে নেই
নওশিনঃআরে এ কি করছেন আপনার কষ্ট হবে আমার ওয়েট কতো হয়েছে হিসাব আছে(আকাশের গলা আকড়ে ধরে)
আকাশঃআমার কষ্টের চিন্তা করছো আর যদি তুমি পরে যাও তখন
নওশিনঃআমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গায় আছি যে নিজে শেষ হয়ে যাবে তবুও আমার গায়ে এক্কটা আচড় অব্দি পরতে দিবেনা
আকাশঃপাগলীটা
আকাশ নওশিন কে নিয়ে ছাদে গেলো নওশিন মুচকি হেসে আকাশের বুকে মাথা রাখলো
আকাশঃলাভ ইউ সুইটহার্ট
নওশিনঃলাভ ইউ মাই বেবিস ডেড
আকাশ নওশিনকে সুন্দর করে সাজানো একটা দোলনায় বসায়ে কিছু দূরে যেয়ে তালি দেয় সাথে সাথে ঝাড় বাতি জ্বলে উঠে সুন্দর করে ফেরি লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে জায়গাটা
নওশিনঃএতোসব কখন করলেন
আকাশঃযখন আমার সুইটহার্ট ঘুমাচ্ছিলো
নওশিনঃআপনি অফিস যান নি
আকাশঃউহু ডেলিভারি পর্যন্ত নো অফিস নো ওয়ার্ক ওনলী ওয়াইফ। এই ১ টা সপ্তাহে সব কাজ ঠিক সামনে নিয়েছি ম্যানেজার করে বুঝিয়ে দিয়েছি ঈশান কেও তৈরি করে ফেলেছি এখন সব দ্বায়িত্ব ওদের আব্বু আর চাচ্চু তো আছেই
নওশিনঃনিহান আর রাহির বিয়ের আয়োজন কতোদূর
আকাশঃতোমার ডেলিভারির পরে বিয়ে
নওশিনঃওতোদিন
আকাশঃএটা আমার না রাহি আর নিহান এর মত
নওশিনঃদেশে যাবেন
আকাশঃনাহ
নওশিনঃকিন্তু
আকাশঃএই বিষয় নিয়ে কোন কথা না
নওশিনঃপ্লিজ আকাশ দুই দিন পরে আহান ভাইয়ার মৃত্যু বার্ষিকী মামনি মুখ ফুটে না বলুক কিন্তু সে নিজের ছেলের কবর জিয়ারত করতে চায়
আকাশঃওইখানে গেলে আসাদুজ্জামান কোন না কোন কিছু করবে আর আমি তোমাকে নিয়ে কোন প্রকার রিস্ক নিতে চায়না
নওশিনঃআসাদুজ্জামান কে
আকাশঃমিসেস নওরিন মানে তোমার সৎ মায়ের ভাই
নওশিনঃউনি আবিদ এর কে হয়
আকাশঃআবিদ এর আসল বাবা আসাদুজ্জামান। তার সব সময় চোখ ছিলো তোমার দাদুর সম্পত্তির উপরে। সেজন্য সুযোগ বুঝে যখন দেখছিলো আরিয়ান এর বাবা মায়ের ছেলে মেয়ে হচ্ছিলোনা তখন নিজের ছেলেকে অনাথ বানিয়ে ওদের সামনে প্রেজেন্ট করে
নওশিনঃতাহলে কি উনার সাথে মিসেস নওরিন ও জরিত
আকাশঃহুম হয়তো জানি না খুব ভয় করে যদি তোমাদের কিছু করে ফেলে আমি কি নিয়ে বাচবো
নওশিনঃআপনি যতোদিন আছেন আমার কিছু হবেনা এটা আমার জানা আছে।
আকাশঃএতো বিশ্বাস করোনা পারবোনা আমি এই বিশ্বাস রক্ষা কুরতে তোমাদের কিছু হয়ে গেলে নিজেকে মাফ করা সম্ভব না
নওশিনঃআপনি কিছুই হতে দিবেন না আমার সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি জামাই বাবু
আকাশঃএকটা গান শুনাবা মন টা কেমন জানি অস্থির হয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে খুব খারাপ কিছু হতে চলেছে
নওশিনঃআমার ও তো ঠিক তাই মনে হচ্ছে আকাশ কিন্তু কেন আসলেই কি কোন বড় বিপদ এর সমুক্ষিন হতে যাচ্ছি আমরা কোন নতুন ঝড় এসে কি আমাদের শান্তির জীবন টা লণ্ডভণ্ড করে দিবে(মনে মনে)
আকাশঃকি ভাবছো গান শুনাও
নওশিন মুচকি হেসে গান শুরু করে
ইচ্ছে পারি দিচ্ছেএএ
ইচ্ছে পারি দিচ্ছে,,,,এএএএএ
মন বলছে ওই আকাশ ছুতে চায়
ছিলো একলা রাত মেঘলা
ছিলো একলা রাত মেঘলা
খোলা জানালাই রোদের ছোয়া পায়
তুমি এলে তাই তুমি এলে তাই
তুমি এলে তাই তুমি এলে তাই (নওশিন আকাশ এক সাথে গেয়ে উঠে)
চলবে!