আমার তুমি পর্ব-২৯

0
1325

#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২৯
,
,
,
,
,
৩ জনার সামনে ঈশান আরিয়ান আর আকাশ দাঁড়িয়ে আছে। ৩ জনার চোখে সানগ্লাস এক্সট্রা লেভেলের ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তারা।নওশিন আরু মুখ ভেংচি নিলো কিন্তু রামিসা কোন রিয়েকশান দিলোনা সে মুখটা নিচু করে রেখেছে।নওশিন আর আরু দুইজনে উঠে আরিয়ান আকাশ কে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলো সেখান থেকে রামিসা ও মাথা নিচু করে ওদের পাশ কাটায়ে চলে গেলো

আরিয়ানঃএই আকাশ আরু আর মিষ্টি বাচ্চার রাগ টা তো বুঝলাম কিন্তু এই বাচ্চাটার কি হলো মুখটা ওরকুম করে রেখেছে কেন(আকাশ এর ঘাড়ে হাত দিয়ে রামিসাকে উদ্দেশ্য করে)

আকাশঃসেটাই তো কথা বিষয় টা কি হলো(চিন্তা করার অভিনয় করে)

দুইজন এবার তাকালো ঈশানের দিকে। সেটা দেখে ঈশান খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলো।ঈশান আমতা আমতা করতে করতে মাথা চুলকাতে শুরু করলো

ঈশানঃআমার দিকে ওই ভাবে তাকাচ্ছিস কেনো তোরা
আরিয়ানঃকি করেছিস
আকাশঃসেটাই রামি ওই ভাবে আপসেট হওয়ার মেয়ে না কারন ওর চোখ মুখে রাগ নাই
আরিয়ানঃহুম কোন কিছু পেয়েও হারানোর কষ্ট তার চেহারায় স্পষ্ট।
ঈশানঃআজকে একটু বেশি অভার রিয়েক্ট করে ফেলেছি
(ঈশান সব খুলে বললো)
আকাশঃবুঝলো ৩ মহারানীই অভিমানের পাহাড় গড়ে বসে আছে চলে এবার ওদের অভিমান ভাংগার কাজে লেগে যায়
ঈশানঃহুম (মাথা চুলকায়ে)

___

নীহারিকা আনমনেই হাটছিলো এই জায়গাটায় সে বহুবার এসেছে। কিন্তু আজকে কেন যেনো জায়গাটা তাকে অত্যাধিক টানছে।ইচ্ছা করছে এই সৌন্দর্যতে নিজেকে বিলীন করে দিতে। বুক ফেটে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে আর্তনাদ কিন্তু সেটা যে তার করা বারণ। আনমনে হাটার কারণে হঠাৎ করে পাথরের সাথে পা বেধে লেকে পরে যেতে নিলেই একটা শক্ত হাত এসে নীহারিকার কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের দিকে টান মারে।

যার কারনে মুখ থুবরে নীহারিকা যেয়ে লোকটার বাম পাশে আঘাত খায়। লোকটা শক্ত করে তাকে বুকের সাথে জরায় ধরে রেখেছে।নীহারিকার মনে হচ্ছে লোকটার বুকের বাম পাশ টা যেকোন মহূর্তে ব্লাস্ট হবে এতো দ্রুত বিট করছে।

নীহারিকা এবার নিজেকে শান্ত করে ছাড়ানোর চেষ্টা করে লোকটার ও বুঝি হুস ফিরে তাই দ্রুত ছেড়ে দেয় তাকে।নীহারিকা মাথা তুলে অবাক হয়ে যায় এতো বছর পরে এই মুখটা দেখবে সে ভাবেনি কোন দিন

নীহারিকাঃতুমি(কাপাকাপা কন্ঠে)
নিহানঃকেন আকাশ কে বুঝি এক্সপেক্ট করছিলা (তাচ্ছিল্যের সুরে)
নীহারিকাঃএখনো বুঝি আকাশের প্রতি তোমার রাগ
নিহানঃনাহ।এখানে ওর দোষ নাই কোন দোষ আমার ছিলো আমি জানা স্বর্তেও এমন মেয়ের দিকে হাত বারায়েছিলাম যে কি না আগে থেকেই অন্য কাউকে নিজের মনে বসায় রেখেছিলো
নীহারিকাঃছোট বেলা থেকে যখন ঠিক মতো বুদ্ধিও হয়নি তখন থেকে আকাশ কে চাইতাম আর আকাশ তখন থেকে আমার থেকে দূরে পালাতো বড় হতে শুরু করলাম ভালোবাসা কি বুঝতে শিক্ষলাম তখন থেকে শুধু আকাশ কে চাইতাম। পাগলের মতো কিন্তু তখন ও চাইতো না আমাকে। তার মন তো আটকে গেছিলো এক পিচ্চি অভিমানী মায়াবতীর উপরে।।। (তাদের থেকে কিছুটা দূরেই মুখ ফুলিয়ে দ্বারিয়ে আছে নওশিন)

নিহানঃজানি ভালোবাসার মানুষ টার চোখে অন্যকারো জন্য ভালোবাসা দেখাটা ঠিক কতোটা কষ্টের তাও বলবো মুভ ওন করার চেষ্টা করো কষ্ট কম হবে নাহলে অতীত আকড়ে রাখতে চাইলে ধুকে ধুকে মরতে হবে(মুচকি হেসে)

নীহারিকাঃতুমি পেরেছো মুভ ওন করতে

নিহান সামনের দিকে যাচ্ছিলো নীহারিকার হঠাৎ প্রশ্নে চমকে যায় চোখ এর কোণায় অজান্তেই অশ্রু কোনা ভির করে ঠোঁটের কোণে হাসি রেখেই সামনের দিকে এগিয়ে যায়।

_______

আরু মুখ ভার করে দাঁড়ায় ছিলো এমন সময় তার চোখের সামনে একটা ফোন আসতেই চমকে যায়।আরু মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে আরিয়ান ফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আরু মুখ ভেংচি দিয়ে অন্য দিকে যেতে নিলে আরিয়ান আরুর হাত ধরে ফেলে নিজের কাছে নিয়ে আসে

আরিয়ানঃতুই জানিস আমার পছন্দের জিনিস গুলো সবসমিয় নিজের মাঝে লুকায় রাখতে পছন্দ করি তবুও সব সময় নিজের মতো নিজের আকাশে উড়তে দিয়েছি আড়াল থেকে সব সময় সবার থেকে লুকায় রেখেছি কারন তখন তোর উপর খাটানোর মতো অধিকার আমার ছিলোনা। কিন্তু এখন আছে এখন তুই সম্পূর্ণ্য আমার আমি ছাড়া আর কারো অধিকার নাই তোকে দেখার তোকে সুন্দর বলার তোর রুপের প্রশংসা করার অধিকার আমার অন্য কারো নাই। তুই জানিস না ঠিক কতোটা তোমাকে ভালোবাসি আমি ঠিক কতোটা তুমি আমার মাঝে বিচরণ করো। হাজার হাজার রুপে নিজেকে সাজাও সমস্যা নাই কিন্তু সেসব সাজ শুধু আমিতে সীমাবদ্ধ থাকবে কারন #আমার_তুমি।

আরিয়ানের সব কথা মন দিয়ে শুনছিলো নিজেকে আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি তাই তো আরিয়ান এর গলা জরায় ধরে। আরিয়ান ও মুচকি হেসে আরুকে খানিকটা উপরে উঠায় নিয়ে শক্ত করে জরায় ধরে মাথায় চুমু খাই।।

________

আকাশঃসরি আর বকবোনা মাফ করে দেন মহারানী(কান ধরে কিউট ফেস করে)

নওশিন কিছু না বলে ব্রেঞ্চ থেকে উঠে যেতে নিলেই আকাশ নওশিনের পায়ের উপরে শুয়ে পরে। নওশিনের বেরে উঠা পেটের উপরে আলতো করে নিজের ঠোঁট ছোয়াই গভির ভাবে।কেপে উঠে নওশিন হাত টা আপনমনেই চলে আকাশের চুলে।

আকাশঃসরি প্রিন্সেস আজকে মাম্মাম কে বকেছি আমি জানি মাম্মাম কান্না করেছে তাই তুমিও কষ্ট পেয়েছো কিন্তু তুমিই বলো প্রিন্সেস তোমার মাম্মাম নিজের খেয়াল রাখেনা তখন যদি কিছু হয়ে যেতো আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম তোমরা ছাড়া আমি শেষ হয়ে যাবো আমি পারবোনা এই জন্য তখন ওইভাবে রিয়েক্ট করছিলাম। প্লিজ মাফ করে দেও তোমার বাবাই কে

নওশিন নিজের পেট টা ভিজা অনুভব করতেই চমকে উঠে তাহলে কি আকাশ কান্না করছে নওশিন কি নিজের অজান্তেই তার ড্রিমপ্রিন্স কে কষ্ট দিয়ে ফেলেছে। সে কি পারত না একটু দেখে শুনে চলতে আসলেই তো তখন যদি পরে যেতো তাহলে কি হতো এই লোকটা যে তাকে ছাড়া পাগল হয়ে যেতো

নওশিন মাথাটা হালকা ঝুকিয়ে আকাশের গালে নিজের নরম ঠোঁট জোড়া স্পর্শ করে। আকাশ কেপে উঠে এতোটা কেন ভালোলাগা মিশে থাকে প্রিয়তমার ছোয়াই যে তার রুহ অব্দি কাপিয়ে তুলে প্রতিনিয়ত।

_________

রামিসা চুপচাপ বসে ছিলো লেকের অন্যসাইডে পানিতে পা ডুবিয়ে এদিকে কেউ আসেনা কিন্তু এদিক থেকে সবকিছু সুন্দর দেখা যায়।রামিসার চোখ জোড়া নওশিন আকাশ আরু আর আরিয়ানের দিকেই ছিলো। ২ জোড়া কি সুন্দর মান অভিমানের পালা শেষ করে একে অন্যের মায়ায় জড়িয়ে পরলো পুনরায়।।রামিসা জোড়ে একটা নিশ্বাস নেয়

রামিসাঃআপনাকে বুঝতে আমি অক্ষম ঈশান। দেখেন না আপনার বিরহে আমি দগ্ধ প্রতিনিয়ত সেখানে আপনি আমায় ছাড়া দিব্বি আছেন সত্যি তো আমি মনে হয় ভুল ছিলাম আপনার বিষয়ে। জানেন যেদিন প্রথম অনুভব করেছিলাম নিজের ভালোবাসা নিজেকে পাগল পাগল লাগছিলো। খুশিতে লাফাতে ইচ্ছা করছিলো কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে সেদিন যদি নিজের অনুভূতি না বুঝতে পারতাম তাহলে কষ্ট টা হয়তো এতোটা কষ্ট লাগতোনা। কিন্তু এখন আপনার ছায়া বিহীন ও নিজেকে অসম্পূর্ন্য লাগে কিন্তু আফসোস আপনি বুঝেও বুঝলেন না আগেও আপনার জন্য আমি বিরক্ত ছিলাম এখনো আছি(নিজের চোখের পানি মুছে)

রামিসার পিছনে দাঁড়িয়ে সব কিছু শুনছিলো ঈশান।তার চোখের কোনে পানি গুলো চিকচিক করছে। সে ভাবেনি তখন কার ওই কথায় এতোটা কষ্ট পাবে তার লিটিল এঞ্জেল তাহলে যতোই কষ্ট হোক নিজের রাগ টা কন্ট্রোল করে নিতো ঈশান রামিসার কাছে যেতে নিলেই একটা ছেলে এসে বসে পরে রামিসার পাশে।

চলবে!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে