আমার তুমি পর্ব-১৯

0
1708

#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৯
,
,
,
,
,
আকাশ আজ অনেক দিন পরে নিজের গোডাউনে এসেছে।চোখ জোড়া তার অসম্ভব লাল হয়ে আছে। ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে একটা গার্ড এর থেকে গান নিয়ে নিলো। বন্ধুক এর ট্রিগার টাই হাত দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে।

নিহান চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে।যেনো এখানে তাকে তুলে আনা হয়নি বরং সে নিজ ইচ্ছাই এসেছে।আকাশ ভিতরে ঢুকেই আগে নিহান এর গালে একটা পাঞ্চ করে।নিহান চেয়ার সহ পরে যায়। দিয়ে হাসতে লাগে।

আকাশ নিহান এর কলার ধরে আরেকটা পাঞ্চ মারতে যাবে তার আগেই নিহান আকাশের হাত ধরে ফেলে

নিহানঃউফ আমার হ্যান্ডসাম ফেশ টার বারোটা না বাজালে তোর শান্তি হয়না(বাম হাত দিয়ে ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা রক্ত মুছে ফেলে)
আকাশঃসাট আপ। তোর আজায়রা মজা আমি জাস্ট নিতে পারছিনা চাস কি তুই হ্যা কি চায়ছিস
নিহানঃবেশি কিছুনা হালকা কষ্ট দিতে চায়েছিলাম আর তোর শত্রুদের মারার ফন্দি আটছিলাম এই আর কিছুনা। পানি দে

আকাশ ইশারা করতেই একটা গার্ড পানি নিয়ে এলো। পানি টুকু খেয়ে নিলো নিহান।

আকাশঃবল এবার এই সব নাটকের কারণ কি হ্যা(শক্ত গলায়)
নিহানঃউফফ আস্তে ওলয়েজ চিল্লাস কেন আল্লাহ জানে পুতুল তোর মাঝে কি দেখলো যে এতো ছেলে থুয়ে তোকে ভালোবাসলো
(তাচ্ছিল্যের সুরে)
আকাশঃনিহান মেন পয়েন্ট এ আই আমাকে বাচালী কেনো। আর কেনোই বা আবিদ কে নওশিনের ঠিকানা টা দিলি আর তুই কি করে জানলি যে নওশিনের মামার বাসা কথায় যেটার কথাও আমিও জানতাম না

নিহানঃএই জন্যই তো তুই সেকেন্ড ছিলি আর আমি ফার্স্ট
আকাশঃজাস্ট একবার
নিহানঃইতিহাস একবার ই ঘটে
আকাশঃফালতু কথা বাদ দিবি ওর আই উইল সুট ইউ
নিহানঃআরে আরে কুল মাই হাইপার বয় কুল(আকাশের মুখে ফু দিয়ে)

আকাশের রাগ এবার তুঙ্গে একে তো এই কিছু বলছেনা তার উপর এর ফালতু জোকস।নিহান বুঝতে পারে আকাশ যখন তখন ফাটে পরবে

নিহানঃআমার পুরো নাম কি(ভাব নিয়ে)
আকাশঃতুই তোর ফালতু কুয়েশ্চন নিয়ে থাক
নিহানঃআরে আজব আমার নাম তোর কাছে ফালতু লাগে
আকাশঃতুই তোর নাম জানিস না
নিহানঃআরে জানি তো কিন্তু তোর মুখে শুনতে আলাদাই ভালো লাগবে আর কি
আকাশঃতাসফি নিহান রহমান
নিহানঃএকদম ঠিক
আকাশঃ এবার (দাত কিরমির করে)
নিহানঃলেট মি ইন্ট্রেডিউজড মাই সেল্ফ(উঠে দাঁড়িয়ে চেয়ার টা পা দিয়ে ঠেলে দিলো পিছনে।পকেট থেকে চশমা টা পরে নিলো

হাই আমি তাসফি নিহান রহমান সান ওফ রায়হান এন্ড রাইশা রহমান। ওয়ান্ড এন্ড ওনলী ওনার ওফ রহমান গ্রুপ ওফ ইন্ডাস্ট্রি এন্ড ম্যাডিকাল (খানিকটা ঝুকে)

আকাশঃওহ এই জন্য কিন্তু তুই আবিদ কে চিনিস কি করে।
নিহানঃমনে আছে আমি হুট করে আমাদের মাঝে ঝগড়া হওয়া শুরু হয়েছিলো মনে আছে
আকাশঃহুম সে বার তুই সেকেন্ড হয়েছিলি আর আমি ফার্স্ট
নিহানঃহুম। আবিদ ও কিন্তু ওই কলেজ এই পড়তো
আকাশঃঅন্য ডিপার্টমেন্ট এ
নিহানঃইয়াপ।
আকাশঃতো
নিহানঃলুক তুই কেন পুরো কলেজ জানতো ফার্স্ট হওয়া আমার নেশা ছিলো সে বার প্রথম সেকেন্ড হওয়াই মাথায় রক্ত চরে যায়।
আকাশঃআর সেটার সুযুগ নেই আবিদ রাইট
নিহানঃইয়াহ রাইট।
আকাশঃএই জন্য আমার পিছনে লেগে থাকতি
নিহানঃতুই ও কম যেতি না
আকাশঃহা যায় হোক তো তোর মাথায় সু বুদ্ধি হয় কি করে
নিহানঃআমি একদিন ভার্সিটিতে এসেছিলাম কাজে তখন ভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেছিলো।দাড়ওয়ান কে একটু টাকা দিয়ে ঢুকে পড়েছিলাম যেয়ে ক্লাস রুমে প্রবেশ করতেই আমি অবাক আবিদ আর কিছু স্টুডেন্ট সেখানে ছিলো সাথে ছিলো কিছু স্টুডেন্ট সবার হাতেই ড্রাগস।

হুট করে কথায় কথায় ওইখানে একটা ছেলে বলে উঠে
রাকিবঃমানতে হবে তোকে ইয়ার যাতে তোকে কেউ ধরতে না পারে তোর দিকে নজর না রাখতে পারে সে জন্য তুই আকাশ আর নিহান এর মধ্যে ঝগড়া লাগায় দিলি যাতে তারা দুইজন নিজেদের মধ্যে ব্যস্ত থাকে তোর আর তোর কাজে নাক না গলায়

সাকিবঃহুম নাহলে দেখতি না আগে ওই আকাশ কি করে তোর পিছে হাত ধুয়ে পরে থাকতো

আবিদঃদুইটাই মাথা মোটা ইডিয়াটস

বর্তমানে,,,
আকাশঃআমাকে বলিশ নি কেন
নিহানঃবিকজ তার পরের দিন ভার্সিটিতে তুই আসিস নি আর যোগাযোগ করার সকল মাধ্যম থেকে আমার ব্লোক মেরে দিয়েছিলি অন্য নাম্বার দিয়ে ট্রাই করেছিলাম বাট নোট রিচেবাল
আকাশঃতখন হয়তো আমি দেশে এসেছিলাম
নিহানঃহয়তো

আকাশঃবাট তোদের ফ্রেন্ডশিপ কি করে হয়
নিহানঃতোর এক্সিডেন্ট এর সময় আমি তোকে সেভ করেছিলাম কিন্তু কি করে আবিদ যেনে যায় আমি তোকে বাচিয়েছি দেন আসে আমার কাছে কাছে একটা অফার নিয়ে এসেছিলো

_____

রামিসার মন ভালো ছিলোনা বলে আরু তাকে নিয়ে বাহিরে আসে ঘুরতে
কিন্তু তাও হাসির রানীর ঠোঁটের কোনে হাসি না দেখে আরুর মন টা খারাপ হয়
আরুঃএই পিচ্চি কি হয়েছে রে তোর
রামিসাঃআ,,,,,

রামিসা কিছু বলতে যাবে তার আগেই পিছন থেকে বিচ্ছিরি হাসি দিয়ে কেউ বলে উঠে,,,

রকিঃআমাদের মিস করছিলো বলে মন খারাপ ছিলো
রকির কথা শুনে তার সাথে থাকা সবাই হেসে ফেলে

আরু ভয়ে রামিসার হাত ধরে হাটা দিলে রকির কিছু লোক সামনে এসে দাঁড়ায়

রকিঃকই যাচ্ছো পাখি দুইটা হা রকির নজর যে মেয়েদের উপর পরে তাদের নিস্তার নেই।
আরুঃদেখুন যেতে দিন আমাদের। ভালো হবে না কিন্তু বলে দিচ্ছি

রামিসা চুপচাপ দাঁড়ায় আছে তার কোন হেলদোল নেই।হুট করে আরুর ফোন বেজে উঠে সে ফোন রিসিভ করে কানে নেওয়ার আগে রকির একটা লোক ফোন কেরে নেয়।আশেপাশের লোক দূর থেকে তামাশা দেখছে এগিয়ে আশার মতো সাহস কারো নেই। ইতিমধ্যে অনেকে ভিডিও করাও শুরু করে দিয়েছে।

রামিসার দিকে হাত বারাতে নিলেই রামিসা হাত ধরে ফেলে মেন জায়গায় কিক মেরে দেয়। লোকটা ব্যাথায় কুকড়ে উঠে।আরও দুইটা হেংলা ছেলে এগিয়ে আসলে আরু পেপার স্প্রে দিয়ে তার চোখে স্প্রে করে।

রামিসা এখনো সে ছেলেটাকে মারছে।শরীরে যতো রাগ অভিমান সব লোকটাকে মারতে মারতে শেষ করছে।।এমন সময় দুইজন এসে রামিসা আর আরুর চুলের মুঠি ধরে থাপ্পড় মারে। রামিসাকে মারা চড় টার এতোটাই জড় ছিলো রামিসা যেয়ে রাস্তায় মুখ থুবরে পরে হাত আর পায়ে প্রচন্ড রকমের ব্যাথা পায় ঠোঁট আর মাথার সাইডেও কেটে যায়। আরুর ও ঠোঁটের কোনে রক্ত জমে যায়।দুইজনে পুনরায় রামিসা আর আরুর চুলের মুঠি ধরে রকির সামনে আনে। দুইজনে ছাড়া পাওয়ার জন্য ছুটাছুটি করছে কিন্তু দুইজন শক্তি শালী জিম করা ছেলেদের সাথে পেরে উঠছে না

রকি রামিসার দিকে হাত বারাতে নিলেই কোথায় থেকে একটা বুলেট এসে রকির হাতের এপার ওপার করে চলে যায়।আরু তাকিয়ে দেখে ঈশানের হাতে বন্দুক। ঈশান আরও দুইটা গুলি করে যারা রামিসা আর আরুকে ধরে ছিলো

ঈশানঃহ্যালো হুম রোড নাম্বার***** ৫টা বডি আছে ওদের হস্পিটালে বিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা কর আর উপস্থিত ভিক্টিম গুলার থেকে প্রুভ গুলো নিয়ে নে

আরুশি ভয়ে ঈশান কে জরায় ধরে। রামিসা সেখানেই ঠাই দাঁড়ায় আছে।
ঈশানঃহুস চুপ চুপ কিছু হয়নি তুই না ব্রেভ গার্ল। তাই তো কল টা কাটিস নি আর আমি লোকেশান ট্রেস করে তোদের কাছে আসতে পেরেছি।
আরুশিঃওরা ওরা আমাদের
ঈশানঃওরা নাই ওরা চলে গেছে তোর ভাই ওদের মেরে দিয়েছে এবার চল রক্ত পরছে

ঈশান আরুকে নিয়ে যেতে নিলে দেখে রামি তখন ও থম মেরে বসে আছে।সে আরুকে এক হাতে আগলে অন্য হাত রামির দিকে বারালে রামিসা সেটা উপেক্ষা করে হাটতে শুরু করে কিন্তু পায়ে প্রচন্ড জোড়ে আঘাত পাওয়াই পা নড়াতে পারেনা আর পরে যায় নিচে।ঈশান আরুকে নিয়ে গাড়ির কাছে যায় রামিসার কান্না পাচ্ছে প্রচন্ড অসহায় লাগছে নিজেকে। এমন সে সে খেয়াল করে সে শূন্যতে ভাসছে।।।

______

আরিয়ান ওটি কাম্পিলিট করে রুমে এসে দেখে তার এসিস্ট্যান্ট সে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর আরুশি চেয়ারে বসে রাগে ফুসছে।সেটা তার চেহারা দেখেই স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।

চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে