#আমার_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ৯
,
,
,
,
আকাশ এর হাতের মুষ্টি শক্ত হয়ে আসে।চোখ দুইটা লাল আরয়ান বসে পরে।তার চোখের সামনে ভাসছে ৬বছর আগের ঘটনা।সে যেবো স্তব্ধ হয়ে গেছে।এক বার এই ট্রমা থেকে তার বোন কে বাচাতে যেয়ে পুরো পরিবার ভেংগে গেছে একটা ছেলের জান চলে সে খুনি সাবস্ত হয়েছে।
নওশিন কে স্টেজে দার করে রাখা হয়েছে আর তাক সামনে অনেক গুলো লোক দাম দাড় করছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে এখানে কিসের দাম দাড় চলছে।নওশিন কে ভুল পাওয়ারের ড্রাগস দেওয়ায় সে খাড়া অব্দি হতে পারছেনা।আদিল নামক ছেলেটা তার বাহু ধরে আছে।
হঠাৎ সেখানে পুলিশের সাইরোন শুনা গেলো।ক্রেতারা যারা কিনতে এসেছিলো তারা নিজেদের জান বাচায়ে পালাতে লাগলো কিন্তু তার আগেই কিছু গার্ডস এসে তাদের ধরে নিয়ে গেলো।আদিল আর তার গ্যাং পালাতে নিলেই আকাশ আর আরিয়ান দুই দিন দিয়ে ভিতরে ঢুকে দরজা লাগায় দেয়।।
আদিলঃহেই ব্রো হোয়াট আর ইউ ডুয়িং। আমাদের পালাতে হবে বাহিরে পুলিশ তোমরাও পালাও। (আকাশ কে সাইড করে)
কিন্তু আদিল আকাশ কে এক চুল ও নড়াতে পারেনা।গ্যাংস্টার বা মাফিয়া না হক বাট সেও ফাইটিং আর বডির দিক দিয়ে অস্থির৷ এরই মধ্যে আরিয়ান দুইটাকে ধরে আচ্ছা মতো মারতো লাগলো।আরিয়ান বর্তমানে এতোটাই রেগে আছে যে তার হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হয়ে আছে।কোন ভাই ই নিজের আদরের বোন কে এই জায়গায় দেখতে পারবেনা।আরিয়ান এর সাথেও ভিন্ন কিছুটা হয়নি।আকাশ আদিল কে মারলেও আদিলের গায়ে বিন্দু মাত্র শক্তি ছিলোনা সে আকাশ কে উলটা মারবে ড্রাগসের কারনে তার শারা শরীর যেনো অকেজ হয়ে গেছে।
আকাশ ওদের আধমরার মতো করে দিয়ে আরিয়ান এর কাছে আসে।
আরিয়ানঃতোদের মতো মানুষের জন্য আজ আমার বোন এখানে। আমার বোনের এই পরিস্থিতি। আমার হাসিখুশি উল্লাসে মেতে থাকা বোন টা ডিপ্রেশন এ চলে গেছিলো।প্রতি রাতে তার আত্নচিৎকার গুলো এতোটাই ভয়ংকর হতো যে রুহ পর্যন্ত কেপে উঠত।
(ছেলে টাকে সজরে লাত্থি দিয়ে).
আকাশঃআরিয়ান ছেলে টা মরে গেছে চল নওশিনের অবস্থা ভালোনা তাকে হস্পিটালে নিয়ে যেতে হবে আর্জেন্ট।
আকাশের কথায় টনক নড়ে আরিয়ান এর ছুটে যায় স্টেজের দিকে যেয়ে নওশিন এর কপালে চুমু দিয়ে তাকে কোলে তুলে নেয়। আকাশ আরিয়ান এর পিছন পিছন আসে।
আকাশঃআরিয়ান তখন কিসের কথা বলছিলো ৬ বছর আগে কি তেমন টা হয়নি যেমনটা আমরা মনে করেছিলাম। তাহলে কিছু আড়ালে আছে। যেটা সবার চোখের সামনে থেকেও আবছা।আমি কি তাহলে ভুল সিদ্ধান্ত নিলাম।
((নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে)
———–
ডাক্তারঃপেশেন্ট এর গার্ডিয়ান কে(বাহিরে এসে)
আকাশ কিছু বলার আগেই আরিয়ান এগিয়ে এসে বলে আমি।সেটা দেখে আর আকাশ আগে যায়না সে পিছনে দেওয়ালের সাথে মাথা ঠেকিয়ে দ্বারায়।
ডাক্তারঃপেশেন্ট এর অবস্থা বর্তমানে ভালো ড্রাগস তার খুব একটা ক্ষতি করতে পারেনি।কিন্তু হ্যা একটা এই ড্রাগসের কারনে ৬ বছর আগে যে এক্সিডেন্ট হয়েছিলো যার কারণে তার কিছু স্নায়ু কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলো আর তার সমস্ত সৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলো।সে সৃতি তার ব্যাক আসেছে বাট
আরিয়ানঃকিন্তু কি ডাক্তার(ভ্রু কুচকে)
ডাক্তারঃতার পুরানো সৃতি ব্যাক করলেও বর্তমানে তার কতোটুকু মনে আছে আদৌ বর্তমান তার মনে আছে কি না জ্ঞান না ফিরা অব্দি বলা সম্ভব না
ডাক্তার চলে যেতেই আরিয়ান চলে যায় মসজিদের উদ্দেশ্য। আল্লাহ কে ধন্যবাদ দিতে।
এতোক্ষন ডাক্তার আর আরিয়ান এর সমস্ত কথোপকথন শুনছিলো আকাশ চুপ চাপ দাঁড়িয়ে। তার বুকের বা পাশ টা ফাকা ফাকা লাগছে।অসহ্য এক যন্ত্রণাই তাকে ঘিরে ধরেছে
আকাশঃতাহলে কি সে আমাকে ভুলে যাবে। কেন ভুলে যাবে। নাহ সে আমাকে ভুলতে পারেনা।আমি তাকে দিবোনা আমাকে ভুলতে। সে আমাকে ভুলে গেলে আমি নিশ্বাস নিতে পারবোনা। আমি আমি(আকাশ হতদম্ভ হয়ে নওশিনের কেবিনে প্রবেশ করে)..
একজন নার্স নওশিনের স্যালাইন ঠিক করছিলো আকাশ কে দেখে তাকে বেরিয়ে যেতে বলে।আকাশ রাগী চোখে তার দিকে তাকায়।মেয়েটা দমে যায়
নার্সঃকিন্তু স্যার কারো পার্মিশান নাই ম্যম এর সাথে দেখা করার
(ভয়ে ভয়ে)
আকাশঃআমার ওয়াইফ এর সাথে দেখা করার জন্য আমার কার পার্মিশান নিতে হবে(হুংকার দিয়ে)
নার্স পারে না কেদে দিতে। আকাশঃআউট
আকাশের আউট বলতে দেরি হলেও নার্স এর বেরুতে দেরি হয়না
আকাশ যেয়ে নওশিনের মাথার কাছে বসে টুল নিয়ে।
আকাশঃসুইটহার্ট(নওশিনের চুলে বিলি কেটে দিয়ে) তাড়াতাড়ি উঠে যাওনা। দেখোনা তারা বলছে তুমি নাকি আমাকে ভুলে যাবা। তুমি উঠে এদের বলে দেওনা যে সেটা তাদের ভুল ধারণা।আমি জানিএই ৩ মাসে তুমিও আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো।আমি দেখেছি তোমার চোখে আমাকে পাওয়ার নেশা তবুও কেন এই লুকোচুরি বলো
একটা বার চোখ মেলে তাকাও সুইটহার্ট আই প্রমিজ বুকের বা পাশে আগলে রাখবো শক্ত করে।আর কোন দিন ও দূরে সরাবোনা।ছোট ছিলা তখন যা হয়েছে ভুল করে আর সেটা ধরে রাখবোনা কারন তোমাকে ছাড়া যে আমার চলবে না আমি বুঝে গেছি(নওশিনের হাতের উপর মাথা ঠেকিয়ে বলতে থাকে)শুনতে পারছো সুইটহার্ট তুমি আমার। #আমার_তুমি একান্তই #আমার_তুমি।
আরিয়ান দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে সব শুনছিলো।
আরিয়ানঃহঠাৎ করে একজন খুনির প্রতি এতোটা ভালোবাসা বাহ(তাচ্ছিল্য হেসে)
আকাশঃদেখ
আরিয়ানঃকি দেখবো আমি বল কি দেখবো ৪ টা মাস ৪ টা মাস তোর কাছে ছিলো সে।এই ৪ টা মাসে কি দিয়েছিস তাকে
কষ্ট কান্না এটাই সে তো বেচারী যানেও না কিসের এই কষ্ট এই ঘৃণা সে এতোদিন পায়ে আসেছে।আর আজ হঠাৎ জ্ঞানহীন অবস্থায় তার প্রতি তোর ভালোবাসা বেড়ে গেলো বাহ(দুই হাত দিয়ে তালি দিয়ে)
আকাশঃআরিয়ান একটা বার আমার পরিস্থিতি বুঝ
আরিয়ানঃতোর পরিস্থিতি বুঝবো তোরা বুঝেছিলি আমার বোনের পরিস্থিতি সেদিন আমার বোনের সাথে কি হয়েছিলো
আকাশঃতো কি করতাম তখন নিজের আদরের ছোট ভাইকে নিজের চোখের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেছিলাম আর নওশিনের হাতে ছুড়ি
(নিচু কন্ঠে)
আরিয়ানঃআর মেনে নিলি সে খুনি।তোর সাথে তো সেখানে আমিও ছিলাম কই আমার তো মনে হয়নি নাকি এটা বলবি যে আহান আমার ভাই ছিলোনা দেখে আমার তার প্রতি কোন মায়া হয়নি কোনটা বল
আকাশঃহ্যা জানি আমি ভুল ছিলাম আমাকে একটা বার খোজ নেওয়া উচিৎ ছিলো কিন্তু একদিকে নিজের ভাই মরে ছিলো চাকু টা আবার অন্য কারো হাতে না বরং যাকে(বলতে যেয়ে গলা টা কেপে উঠলো)
আরিয়ানঃভালোবাসতি এই টুকু কথা বলতেও তোর বুক কাপছে বাহ।
আকাশঃহাহ।নিজের স্বপ্ন কন্যার হাতে নিজের ভাইয়ের খুন তারউপরে বাবার হার্টস্টোক। আম্মুর পাগলামী একপ্রকার দিশে হারা হয়ে গেছিলাম
আরিয়ানঃওহ আর সে দিশেহারা হয়ে ১২ বছরের বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে দিয়েছিলি জেলে
আকাশঃজেলে মানে(অবাক হয়ে)
আরিয়ান কিছু বলতে যাবে তার আগেই নওশিনের নিশ্বাস টা ভারি হয়ে আসতে শুরু করে।জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগে।আরিয়ান দৌড়ে যেয়ে ডাক্তার কে ডাকতে যায়।
আকাশঃসুইটহার্ট সুইটহার্ট শান্ত হও শান্ত হও। দেখো তোমার আকাশ এখানেই আছে।লুক।এইতো আমি শান্ত হও। (নওশিনের হাত নিজের হাত দিয়ে আকড়ে ধরে)
নওশিন চোখের পাতা মেলে নিশ্বাসের গতিটা অনেক টাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।আকাশের চেহারা দেখে ঠোঁটের কোনের হাসিটা চওরা হয়। হাতের বাধন টা শক্ত করে নেয়।আকাশ নওশিনের কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিতেই চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেলে।
চলব।