#আমার তুমি
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ৩
,
,
,
গাড়ি থামলো ২ তালা এক বাড়ির সামনে। নওশিন গাড়ি থেকে বের হয়ে অবাক হয়ে আশে পাশের দিকে তাকায়।দুই সাইডে বাগান আর মাঝখানে রাস্তা। নওশিনের এমন একটা বাগানের খুব শখ ছিলো ছোট বেলা থেকেই কিন্তু তার চাচাতো বোনেরা তাদের বাসার বাগানে তাকে যেতে দিতোনা। সে ছুয়ে দিলে নাকি ফুল গুলো মারা যাবে।
প্রথম প্রথম এই সব বিষয় নিয়ে খুব কান্না করতো নওশিন কিন্তু বড় হওয়ার পর থেকে এই সব এর দিকে পাত্তা দিতোনা বাসা থেকে কলেজ কলেজ থেকে বাসা এই টুকুই ছিলো তার যাওয়া আসার রাস্তা। সারাদিন ঘরে বসে থাকতো।
হঠাৎ কানের কাছে স্লো ভয়েস পেয়ে কেপে উঠে নওশিন সারা শরীর তার কেমন শিউরে উঠে।
আকাশঃপছন্দ হয়েছে ম্যাম(কানের কাছে ঠোঁট নিয়ে আসে ফিসফিস কর বলে)..
নওশিন আকাশ এর থেকে কিছু টা দূরে সরে বুকে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে শুরু করে।।
আকাশ সেটা দেখে মুচকি হাসে।শপিং করা ব্যাগ গুলো নিয়ে বাসার ভিতরে হাটা ধরে।নওশিন ও নিজেকে শান্ত করে ভিতরে প্রবেশ করে। আরেকদফা চমক পায় নওশিন পুরো বাড়ি ফাকা সব ফার্নিচার আসবাবপত্র সব কিছুই নতুন।
নওশিনঃএই বাসায় কেউ থাকেনা(অবাক হয়ে)
আকাশঃনাহ
নওশিনঃআপনার বাবা মা
আকাশঃতারা বিদেশে।
নওশিনঃআপনিও বুঝি বিদেশে থাকতেন
আকাশঃউহু অফিসে থাকতাম। এখানে বাসা নিয়েছি আজকেই সব ফার্নিচার ও আজকেই নেওয়া সব কিছুই কম্পিলিট। শুধুমাত্র রান্নাঘরের কিছু নেওয়া হয়নি তুমি ফ্রেশ হয়ে সব লিস্ট বানিয়ে দিও(নওশিনের গালে হাত দিয়ে)
নওশিনঃআমার জন্য আপনার এতো কষ্ট পোহাতে হচ্ছে তাইনা(মন খারাপ করে)আমি হোস্টেলেই নাহয় থাকতাম কি দরকার ছি,,,,,,
নওশিন কে আর কিছু বলতে না দিয়েই নওশিন এর হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে আকাশ।এক হাত দিয়ে নওশিনের চুল গুলো কানের পিছনে গুজে দেয় আরেক হাত নওশিনের কোমড় পেচিয়ে রেখেছে।
আকাশঃবিয়ে করেছি বউ কে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য নাকি।এতো বছর দূরে রেখেছি।এখন শুধু রোমেন্স হবে। (ঠোঁট দিয়ে গলার সাইডে হালকা করে স্লাইড করে)
নওশিন দুই হাত দিয়ে সরানোর চেষ্টা করে কিন্তু আকাশ কে এক চুল ও নড়াতে পারেনা উলটা আকাশ এর ছোয়া গুলো আরো গাঢ় হতে থাকে।
আকাশ নওশিনের ঠোঁটের দিকে এগুতে নিলেই আকাশের ফোন বেজে উঠে।আকাশ বিরক্ত হয়ে ফোন বের করে স্ক্রীনের উপরে দেখা নামটা দেখে শয়তানী একটা হাসি দিয়ে নওশিন কে ছেড়ে দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।।
নওশিন ফ্লোরে বসে পরে।কিছুক্ষণ আগের কথা মনে পরতেই কান্না বেরিয়ে আসে।
নওশিনঃএই সব কি বলে গেলেন উনি।এতো বছর দূরে রেখেছেন মানে। তাহলে কি। কিন্তু কিভাবে।
কেনো মা কেনো ছেড়ে গেলা আমাকে। বলতে পারো তুমি চলে গেলা বাবা সে দোষ আজও আমাকে দেয় দুই দুইটা মানুষের খুনি হয়ে বসে আছি আমি মা। তুমি তো জানো আমি করি নি কিছুই তবুও সবার চোখে আজ আমি খুনি আমি ভুল আমি দোষী।হয়তো সেও একদিন ফিরে আসবে শাস্তি দিতে।
আমার সাথে এমনটা হওয়ার ছিলো।যাকে ভালোবাসলাম তার ঘৃণার পাত্রী হলাম। যার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো সে ভুল বুঝে ভেংগে চলে গেলো বিয়ে।যাকে চিনিনা সে এসে ৩ কবুল বলে তার মনোরঞ্জন এর বস্তু বানিয়ে ছেড়ে দিলো।কেউ আমার দিকটা ভেবেই দেখলোনা।(হাউমাউ করে কান্না করতে লাগলো নওশিন)
নওশিনের কান্না যেনো কারো মনে পৈশাচিক আনন্দ দিচ্ছিলো।কারো জ্বলন্ত বুকটা শান্ত করছিলো।তার এক এক টা চোখের পানির ফোটা তাকে তৃপ্তি দিচ্ছিলো।
——–
আকাশঃকি শালাবাবু। এতো তাড়াতাড়ি জেনে গেলন বাহ
(তালি দিয়ে।ফোনে কথা বলছিলো ব্লুটুথ কানে দিয়ে)
আরিয়ানঃআকাশ দেখ তুই এই সব বন্ধ কর তুই বলেছি তুই বোনুর কোন ক্ষতি করবিনা
(শাষিয়ে)
আকাশঃউম্ম হেয়ার ইজ এ কারেকশন আমি বলেছিলাম যতোদিন না তোর আদরের বোন আমার রাস্তায় আসছে ততোদিন আমি তার কিছু করবোনা
আরিয়ানঃমানে এই সব তুই ইচ্ছা করে করাস নি(অবাক হয়ে)
আকাশঃউহু একদম না আমি তো জানতাম ও না কার বিয়ে।বিয়ের আগ মুহূর্তেও আমি টের পায়নি সেই ছো,,,,,নওশিন তোর আদরের বোন।
আরিয়ানঃদেখ আকাশ সে বাচ্চা মেয়ে। ছেড়ে দে ওকে।
আকাশঃছেড়ে তো দিয়েছিলাম ১২ বছর আগে। বাট সে বা ভাগ্য চায়নি আমি তাকে ছেড়ে দি সে আমার ছিলো আমার ভাগ্যতে ছিলো
আরিয়ানঃআকাশ আমি তোকে খুন করে ফেলবো।একবার খালি আমি ঢাকায় আসি আমার বোন কে আমার সাথে নিয়ে আসবো দেখি কি করে আটকাস
আকাশঃআর তোর মনে হয় তুই আমাদের আদৌও খুজে পাবি।হ্যা খুজে পাবি অবশ্য কিন্তু তখন ই যখন আমি চাইবো।যখন তোর বোন আমার ভালোবাসায় মাতাল হবে #আমার_তুমি হবে। ততোদিন পাবিনা
আরিয়ানঃআর তোর মনে হয় সে তোকে ভালোবাসবে। তার মস্তিষ্ক জুড়ে এখনো একটাই নাম আছে আর সেটা হলো ঈ——।
আকাশঃখবরদার সে নামটাও যেনো তোর মুখে না আসে
আরিয়ানঃসে নামটা তো শুধু আমার মুখে আছে।কিন্তু যাকে নিজের সাথে নিয়ে গেছিস। সে উপর থেকেই নিচ শুধু ওর নামটাই নেই।ওর অস্তিত্বের সব টুকু জুড়েই তার নাম।
আকাশঃমিটায় দিবো।সে শুধু আমার হবে তার অস্তিত্ব বর্তমান ভবিষ্যত সব আমি হবো। নাহলে ওকেও শেষ করে দিবো আর নিজেও শেষ হয়ে যাবো।
আরিয়ানঃআকাশ তুই এমন কিছু,,,,,,,,
(আকাশ কল কেটে দেয়).
না না না অতিত পুনরায় ঘটতে পারেনা।সিট আরিয়ান সিট তুই বাঘকে ক্ষেপায় দিয়েছি না জানে সে এই রাগ বোনুর উপর না ঝাড়ে।ভেবেছিলাম বড় হলে শান্ত হবে কিন্তু নাহ তার রাগ জেদ নওশিনের প্রতি পাগলামো আরও বেরে গেছে।
————
নওশিন কান্না করতে করতে ফ্লোরেই ঘুমাই পরেছিলো।আকাশ রেগে তখন আর বাসায় আসেনি কারন রেগে গেলে তার হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে যায়। তাই সে চলে গেছিলো অফিসে।অফিস থেকে বাসায় ফিরত্র ফিরতে রাত ১০ টা বেজে যায়। আকাশ বাসায় এসে মেঝেতে ঘুমন্ত নওশিন কে দেখে বাকা হেসে তাকে পাজাকোলে তুলে নেয়।ঘুমের মাঝেই নওশিন আকাশ এর গলা জরায় ধরে৷
আকাশ নওশিনকে তাদের রুমে নিয়ে যেয়ে শুয়ায় দেয়।নওশিনের এর উপর থেকে উঠতে নিলে আকাশ এর চোখ জোড়া যায় নওশিনের ঠোঁটের দিকে। ধীরে ধীরে নওশিনের ঠোঁটের দিকে এগুতে থাকলেও যখন দুইজনের ঠোঁটের মাঝে হাফ ইঞ্চির মতো দূরত্ব তখন আকাশ নিজের মুখ উঠায় নেয়
আকাশঃউহু ছোয়ামনি এতো সহজে তো তোমাকে ছুবোনা আর যখন ছুবো তখন তোমার চেতনায় স্পর্শ করবো।একেক টা ছোয়া তোমার মনের গভিরে আটকায় রাখবো। এক সময় এই ছোয়া পাওয়ার জন্যই মরিয়া হয়ে উঠবা।তোমাকে আমার নেশায় এমন ভাবে জরাবো যাতে তোনার প্রতি টা নিশ্বাস হয় আমার। #আকাশের ছোয়া। #আমার তুমি।।
আকাশ ছোয়ার মুখের উপরে নিজের মুখ রেখেই কথা বলছিলো দেখে আকাশ এর গরম নিশ্বাস নওশিনের মুখের উপর আছড়ে পরচ্ছিলো। এতে করে নওশিনের ঘুম ভেংগে যায় আর তার কানে শুধু নওশিনের বলা শেষ কথাটা বাজতে লাগে
#আমার_তুমি। কথাটাতে আলাদা এক আসক্তি খুজে পায়। আলাদা এক ঘোর । আলাদা একটা টান।।।
————…
বারে বসে থেকে একের পরে এক ড্রিংক করেই যাচ্ছে এক যুবতী।চোখ দুইটা লাল হয়ে গেছে।দেখেই বুঝা যাচ্ছে নেশা তার হয়ে গেছে তবুও থামছেনা।যে তাকে থামাতে যাচ্ছে তাকেই প্রহার করতে পিছুপা হচ্ছেনা
,
,
,
,
চলবে!!!!!!!!!