#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ১১
#Tanisha Sultana (Writer)
“সিগারেট খাইলে কষ্ট কমে। কেউ চাইলে ট্রাই করতে পারে।
তুলি বলে। সায়ান আড়চোখে একবার তুলির দিকে তাকায়।
” কিন্তু দোস্ত তুই জানলি কেমনে?
“সামজ ভাইয়ের গান শুনে জানতে পারলাম। আমি তো আবার ওর ফ্যান। ও তো আমার ক্রাশ
” আর ব্রো
“উনি তো ক্রাশ নাম্বার টু
সায়ান হা করে তাকিয়ে আছে তুলির দিকে
” জিসান আমার আশেপাশের মানুষদের বলে দে আমার দিকে এভাবে যেনো না তাকায়।
“ইডিয়েট
সায়ান চোখ ফিরিয়ে নেয়
” জিসান আজ পার্টি দিমু
“কি পার্টি
” হবু সতিন তাড়ানোর পার্টি
সায়ান তুলির খুব কাছে গিয়ে বলে
“আর একটা কথা বললে গাড়ি থেকে ফেলে দেবো।
তুলি ঢোক গিলে চুপ হয়ে যায়
সায়ান বাড়িতে এসে নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
“যাহ বাবা দরজা বন্ধ করে দিলো। তাতে আমার কি? আমি তো ব্রেকআপ করিয়েই ছাড়ছি। এবার ক্রাশের বেবির মা আমিই হবো৷ ঢিংকাচিকা ঢিংকাচিকা
তুলি নাচতে নাচতে রুমের কাছে যায়। দরজায় নক করে
” বলি রুম টা কি কারোর একার না কি? আমারও তো রুম। এভাবে ধিরিং করে দরজা বন্ধ করে দিলে হবে আমি যাবো কই? যতসব
সায়ান দরজা খুলে দেয়। তুলি ভেতরে যায়। সায়ান বিছানায় উপুড় হয়ে সুয়ে পড়ে।
“খাটটা কারোর একার না এখানে আমারও অধিকার আছে
সায়ান তুলির হাত ধরে তুলিকে খাটে ফেলে দেয় তারপর তুলির গাল চেপে ধরে বলে
” আর একটা কথাও বললে সব অধিকার পূরণ করে দেবো
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সায়ান।
তুলি বুকে হাত দেয়
“দেখুন আমার বুকটা কেমন ধকধক করছে।
” কেনো?
“আপনার ছোঁয়ায় কারেন্ট আছে। সাধে কি আর এই গানটা বানাইছে না কি
” কোন গান
৷ তুমি ছুঁয়ে দিলে আমার কি যে হয়ে যায়
“ইডিয়েট
সায়ান তুলিকে ছেড়ে বেলকনিতে চলে যায়। তুলি হি হি করে হেসে ওঠে
“বাহহহ জামাই আমার সোজা হয়ে গেছে।
তুলি পেছন পেছন বেলকনিতে যায়। সায়ান সিঙ্গেল সোফায় বসে ছিলো
” সোফাটা কারো
তুলির কথা শেষ হওয়ার আগেই সায়ান তুলির হাত ধরে বসিয়ে দেয়
“হইছে
তুলি মুচকি হাসে
” আপনার পাশে বসেছি বলে ভাববেন না যে আমি আপনাকে মাপ করেছি। একদম না
“ভালো
” মাপ করতে পারি
“হুম
” যদি আপনি আমাকে
“চুম্মা দিবো না
” আপনি জানলেন কেমনে?
“গাঁধারা এর থেকে ভালো কিছু চাইতেই পারে না
” কিহহহহ
“এখন ঝগড়া করার মুড নাই। খুব কষ্টে আছি। পরে ঝগড়া করবোনি
” ওকে এখন আর জ্বালাবো না।
তুলি মনে মনে বলে।
আদর আর নিশির বিয়ের ডেট ঠিক হয়ে গেলে। এই বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদ। হাতে আর চার দিন আছে।
জিসানের কাকাতো ভাই অভি আসে। কলিং বেল বাজায়। তুলি গিয়ে দরজা খুলে দেয়
” কাকে চায়
অভি হা করে তাকিয়ে আছে। তুলি মুখের সামনে তুরি বাজায়
“হেলো মিস্টার কে আপনি
অভি মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে
” আমি অভি সায়ানের কাকাতো ভাই
“ওহহহ ভেতরে আসুন
তুলি দরজার কাছ থেকে সরে দাঁড়ায়। অভি ভেতরে ঢুকে।
” আপনি হয়ত ভাবছেন বাড়ির সবাই কোথায় গেছে? সবাই আমাদের আই মিন নিশি আপুর শশুড় বাড়ি গেছে। সায়ান রুমে আছে। আপনি যান।
“বলছিলাম আপনি
” আমি তুলি।
“ওহহহ
অভি সায়ানের রুমে চলে যায়।
তুলি দুই কাফ কফি বানিয়ে নিয়ে যায় রুমে। দেখে সায়ান আর অভি গল্প করছে। তুলি কফি দেয় অভিকে আর এক কাপ সায়ানকে দিয়ে তুলিও বসে পরে।
” তাহলে অভিদা আপনি কিন্তু আমার দেবর লাগেন। আমি কিন্তু সায়ানের বউ তাই না জামাই
“তুলি৷ সায়ান চোখ গরম করে বলে
” সায়ান আমি আর তুলি কথা বলছি তুই চুপ থাক। (অভি)
“এই না হলো আমার দেবর। জিসান কিন্তু আমার বেষ্টফ্রেন্ড। তুমি থুক্কু আপনি চাইলেও আমার বেষ্টু হতে পারেন।
” ওকে
“তারপর গার্লফ্রেন্ডের কি অবস্থা
” গফ নাই
“কও কি
” হুমম
“গুড বয়। তারপর ক্রাশ কয়ডা
” একটা
“ওয়াও। নাম কি
” পরে বলবো
“ওকে
তুলি আর অভি গল্প করছে। সায়ানের বিরক্ত লাগছে। সায়ান বেলকনিতে চলে যায়। মনা ফোন দেয়
” হেলো কে?
“সায়ান আমার কথা শুনো
” আর কখনো ফোন দিবা না
“সায়ান
” কি কমতি ছিলো আমার
“তুমিও তো বিয়ে করেছো। তুলির সাথে এক রুমে থাকছো। তারপরও আমি তোমাকে ভুল বুঝি নি। তাহলে
সায়ান ফোন কেটে ফোন বন্ধ করে দেয়। একটা সিগারেট ধরাই। যদিও সায়ান তেমন সিগারেট খায় না তারপরও আজ খেতে মন চাচ্ছে। সকালে নিয়ে এসেছিলো সিগারেটের প্যাকেটটা।
এক প্যাকেট সিগারেট শেষ সায়ান রুমে এসে দেখে তুলি আর অভি এখনো গল্প করছে। গল্প করছে বলতে তুলি বলছে অভি শুনছে৷ তাও আবার গালে হাত দিয়ে।
” গল্প করা কি শেষ হইছে
সায়ানের কন্ঠে তুলি একটু থামে
“নাহহ শেষ হয় না। আরও অনেক কথা আছে।
” তাহলে বাইরে গিয়ে করো। আমি ঘুমাবো
“অভি চলো
” তুলি পরে গল্প করবো এখন না
“ওকে
অভি চলে যায়। সায়ান বিছানায় সুয়ে পরে
” আপনার গা থেকে গন্ধ আসছে
“হুম
” মদ খাবেন
“তুমি বের হলেই খাবো
” পুরো দেবদাস
“ভালোবাসতাম তো
” ভালো। খাও মদ খেয়ে মানুষ হও। বাই
তুলি চলে যায়। সায়ান ডাটা অন করে দেখে মনার হাজার টা মেসেজ। সরি বলেছে
” এতো ভালোবাসলাম ভরসা করলাম। তারপরও আমাকে ধকালে। এটা হওয়ারই ছিলো। ভালোবাসা বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। মা বাবা ভাই বোন ছাড়া কেউ ভালোবাসে না। এটা প্রমাণ হয়ে গেলো। আমরা খুব বকা মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে যায়। তার প্রতিদান এমনি হয়। যদি পৃথিবী থেকে ভালোবাসা নামক শব্দটা উঠে যেতো কতই না ভালো হতো। কিন্তু এটা সম্ভব না।
সায়ান এসব ভাবছে। তখন সায়ানের মা আসে
“সায়ান
সায়ান মায়ের কোমর জড়িয়ে ধরে। মা মাথায় হাত বুলিয়ে বলে
” কি হয়েছে?
“কিছু না
” এমন দেখাচ্ছে কেনো?
“কি বলবে
” তুলিকে নিয়ে একটু শপিং এ যা
“আমি পারবো না
” কেনো?
“ভালো লাগছে না
” মেয়েটাকে আমি বড় মুখ করে বলেছি তুই নিয়ে যাবি এখন না করবো কি করে। তাছাড়া ও তোর বউ
“হুম
” প্লিজ বাবা যা
“ঠিক আছে। ওকে রেডি হতে বলো
মা সায়ানের কপালে চুমু দেয়।
তুলি একটা নীল শাড়ি পরে সায়ানের সাথে বের হবে বলে। তারপর আবার সায়ানের চড়ের কথা মনে পরে।
” মা মা
তুলি জোরে জোরে শাশুড়ীকে ডাকে।
“কি হয়েছে
” আমি যাবো না
“কেনো?
” ও আমারে মারছিলো
“সরি তো বলেছিলো
” ও তে হবে না
“তাহলে
” কি থাক তোমাকে বলবো না। ওকে বলো আমি যা করতে বলছি ও যেনো তা করে
“ঠিক আছে।
সায়ান ওয়াশরুম থেকে বের হয়।
” তুলি যা করতে বলছে কর
“ও কি করতে বলছে
” ও তোকে হ্মমা করে নি
“তো
” যা করলে ও হ্মমা করবো তাই কর। এটা আমার হুকুম।
তুলি শাশুড়ীকে জড়িয়ে ধরে বলে
“আমার সোনা মা। এবার তুমি যাও
শাশুড়ী চলে যায়। তুলি দরজা বন্ধ করে দেয়।
” এটা কি হলো
“শাশুড়ী কি বললো শুনেন নাই
” নাহহহ
“তাহলে আবার ডেকে আনছি
” শুনছি
“তাহলে চটপট করে ফেলুন
” কিহহহ
তুলি সায়ানের চুল টেনে দেয়
“তুই জানোস না কি😡
আমারে চর দেওয়ার সময় তো বললি না কি
সায়ান চুল ছাড়িয়ে নেয়
” সরি বলছি তো
“হবে না ওতে
” তাহলে কি লাগবে
“আবার😡😡
” হুম
“কি হুম
” চলো
“আগে
সায়ান তুলির গালে একটা পাপ্পি দিয়ে দেয়
” হেপি
“😡😡😡😡😡😡😡😡
তুলি গাল ফুলিয়ে হাটা ধরে। সায়ানও তুলির পেছন পেছন যায়।
চলবে