#আমার ক্রাশ
#পর্বঃ৭
#Tanisha Sultana (Writer)
সায়ান তুলির নাক পর্যন্ত গিয়ে থেমে যায়। ছিটকে দুরে সরে যায়। তুলি হো হো করে হেসে ওঠে
“তুমি হাসছো কেনো?🤔
তুলি টান দিয়ে সায়ানকে কাছে এনে কানে ফিসফিস করে বলে
” এতো ভয় পেলে চলে বস
“ভয় কেনো পাবো
” তাহলে থামলেন কেনো?
সায়ান এবার উওর দিতে পারছে না। কেনো এগিয়ে গেলো আর কেনোই বা থামলো তা সায়ান নিজেও জানে না তুলিকে কি বলবে
“আপনার ঠোঁটটা যেমন লাল টুকটুকে আমি ভাবছিলাম খুব মিষ্টি হবে হয়ত
” হয়ত কেনো?🙄
“মিষ্টি না তো পানছে। ইয়াক
তুলি নাক মুখ কুচকে বলে। সায়ানের খুব রাগ হয় আমার ঠোঁটকে পানছে বললো অথচ সেদিন জোর করে কিছ করতে গেছিলো।
তুলি সায়ানের ঠোঁটে আঙুল রাখে
“আপনার গালে এতো দাঁড়ি কেনো গো। আমি কিছ করতে গেলে সুরসুরি লাগে। একেতে পানছে ঠোঁট তারপর দাঁড়ি। কিছ করার ইন্টারেস্ট টাই চলে যায়।
” তোমার ঠোঁট ও পানছে
“আপনি বুঝলেন কি করে? আমি ঘুমিয়ে গেলে কখনো টেস্ট করেছেন না কি
তুলি ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে। সায়ান বোকা বনে যায়।
” ইডিয়েট একটা।
“এই একটা ওয়ার্ড আর কতোদিন শুনবো
” যতদিন না মানুষ হবে
সায়ান তুলি দুজনই ভিজে কাক হয়ে গেছে। তুলির পরনে টিশার্ট আর স্কার্টটা ভিজে শরীরের সাথে লেপ্টে গেছে। দেয়ালে ভর দিয়ে তুলি সায়ানের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সায়ান একটু দুরে দাঁড়িয়ে আছে। সায়ান তুলির দিকে তাকাতে চাইছে না তবুও চোখ জোড়া তুলিতেই বারবার আটকে যাচ্ছে।
“ভালোবাসি আপনাকে
সায়ান তুলির কাছে যায়। তুলির মুখের ওপর পড়ে থাকা চুল গুলো কানের পিঠে গুজে দেয়। হাত দিয়ে তুলির ভেজা ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়
” আআপনি
সায়ান তুলির ঠোঁটে হাত দেয়। একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায় সায়ান।
“আর কতোখন এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবো?
সায়ান ভ্রু কুচকে প্রশ্ন করে তুলিকে। তুলি সায়ানের দিকে তাকিয়েই উওর দেয়
” যতখন আমি আছি তুমি আছো ততক্ষণ।
সায়ানের বিরক্ত লাগছে। সায়ান বেরিয়ে তুলির জন্য জামাকাপড় নিয়ে যায়।
“ধরো চেঞ্জ করে নাও
” তুমি করিয়ে দাও
“হোয়াট
” না দিলে এভাবেই এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো
তুলি ফ্লোরে বসে বলে। সায়ান পরেছে মহা মুশকিলে। মদ খেলে মানুষ মাতাল হয়। তুলি মাতাল হয়েছে ঠিক আছে কিন্তু তাল ঠিক আছে। মানুষ বলে না জাতে মাতাল তালে ঠিক।
‘”ওই জামাই ঠান্ডা লাগছে তো
সায়ান তুলির দিকে তাকিয়ে দেখে কাঁপছে ঠান্ডায়।
“ওওঠো
সায়ান তুলির দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। তুলি উঠে সায়ান চোখ বন্ধ করে তুলিকে চেন্জ করাচ্ছে। তুলি সায়ানের দিকে তাকাচ্ছে আর মিটমিটিয়ে হাসছে।
” হয়ে গেছে।
“হুমমম
সায়ান চলে যেতে নেয় তুলি হাত ধরে
” কি
তুলি সায়ানের দুগালে হাত দিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। সায়ান হয়ত এটারই অপেক্ষায় ছিলো। সায়ান তুলিকে ছাড়ানোর চেষ্টা না করে দু-হাতে আগলে নেয়।
রাত দশটা। মনা হনহনিয়ে সায়ানের রুমে যায়।
“আসবো
সায়ান সবে তুলিকে শুয়িয়ে দিয়ে সবে চেঞ্জ করে এসে বসেছে।
” আরে মনা ভেতরে এসো
মনা ভেতরে আসে
“এতোখন রুমে কি করছো?
” মানে কি?
“আমি এই মেয়ের সাথে তোমাকে একদম সয্য করতে পারছি না।
সায়ান মনার কাঁধে হাত দিয়ে বলে
” বুঝতে পারছি। দেশে ফিরি তারপর ডিভোর্স দিয়ে দেবো। দেন আমরা বিয়ে করে নেবো
মনা বিজয়ীর হাসি দিয়ে বলে
“লাভ ইউ সো মাচ
” লাভ ইউ টু
মনা সায়ানকে জড়িয়ে ধরে। সায়ান ধরতে গিয়েও থেমে যায়।
“চলো ডিনার করবো
” কিন্তু ও
“বাদ দাও তো ওর কথা
মনা সায়ানকে নিয়ে চলে যায়।
মাঝরাতে তুলির ঘুম ভেঙে যায়। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সায়ান নেই
” গেলো কোথায়?
বেলকানির দিক থেকে সিগারেটের ধোঁয়া আসছে। তুলি বেলকনিতে চলে যায়।
“না ঘুমিয়ে আপনি সিগারেট খাচ্ছেন?
সায়ান তুলির দিকে তাকিয়ে বলে
” তুমি
“তো কি মনা থাকবে
“তুমি না মদ গিলেছিলে তাহলে এতো তারাতাড়ি
” আমি মদ খেয়েছি 🙄
“হুমম বমি করলে তারপর
” তারপর
সায়ান গলা ঝেড়ে স্বাভাবিক হয়ে বলে
“বলো
” আমি তো কোককোলা খেয়েছিলাম
“কিহহহহহ😱
” হুমমম
“তাহলে তোমার সব
” মনে আছে। আরে আমি তো ইচ্ছে করেই করেছি
“ইউ😡😡😡😡😡
” তোমার বউ😘😘😘
আজ কিন্তু আপনার ঠোঁটটা ভীষণ মিষ্টি ছিলো
“ইডিয়েট
” আপনারই তো বউ
“হুরররর😡
সায়ান মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তুলি সায়ানের সামনে গিয়ে বসে
” আমি আপনাকে ভালোবাসি প্রায় চার বছর যাবৎ। আমি দেখতে কিন্তু ভালোই সুন্দর। আমার পেছনে অনেক ছেলে ঘুরে। আপনি আমাকে পাত্তা দেন নি। ইভেন এখনো অবহেলা করেন। আমি কিন্তু কখনো ভাবি নি ইনফেক্ট এখনো ভাবি না যদি বাই চান্স আপনার থেকে আলাদা হয়ে যায়।
সায়ান মন দিয়ে শুনছে। তুলি একটু হেসে বলে
“ছেলেরা মনে হয় এমনি হয়।
” কেমন
“এই যে সারাক্ষণ মনা মনা বলেন অথচ
তুলি থেমে যায়।
“অথচ কিছু না। আমি কিচ্ছু করি নি। আমি মনাকেই ভালোবাসি।
তুলি নরেচরে বসে
” ভালো
“🥱🥱🥱
“গুড নাইট
” তুলি
“হুম
” সরি
“কেনো?
” আমার তোমাকে থামানো উচিত ছিলো
“হুমমম
” তুমি বলছিলো চার বছর বাট আমি তো তোমাকে বিয়ের কয়েকদিন আগে থেকে চিনি
“আপনি চিনবেন কি করে? আপনি তো ভালোবাসতেন না
তুলি একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে বলে
” আই প্রমিজ আমি আপনার থেকে মনাকে আলাদা করে দেবো এন্ড আমার এক ডজন বাবুর বাবা বানাবো
সায়ান তুলির নাক টেনে দেয়
“এসব বাদ দিয়ে লেখাপড়ায় মন দাও
আজ একটু দেরি করে ঘুম ভাঙে সায়ানের। হয়ত অনেক রাতে ঘুমানোর জন্য। তুলি বেলকনিতে চলে যায়। মনা দরজায় নক করে। তুলি দরজা খুলে
” খালাম্মা তুমি এখানে
“সায়ানের কাছে এসেছি
মনা ভেতরে ঢুকতে যায়
” আমার বর ঘুমচ্ছে।
“একদম আমার বর আমার বর বলবে না
” তো কি খালাম্মার বর বলবো
“আমার সাথে লাগতে এসো না। ফল ভালো হবে না
তুলি একটু হেসে বলে
” সেটাই
মনা হনহনিয়ে ভেতরে ঢুকে যায়।
“সায়ান বেবি ওঠো
সায়ান ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে
” গুড মর্নিং জান
তুলির মাথায় ধপ করে আগুন জ্বলে ওঠে।
“যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। একসাথে বেরবো
সায়ান ফ্রেশ হতে হয়ে বেরিয়ে যায়। তুলি নামক কেউ আছে সেটা ওর মাথায় নেই।
” আমাকে ইগনোর করলো। এই তুলিকে ইগনোর করা।
তুলি ছোট একটা ড্রেস উচু জুতো ভারি মেকাপ পরে বের হয়। নায়েকাদের মতো হেলেদুলে হাঁটছে। সবার নজর তুলির দিকে। দারুণ লাগছে তুলিকে।
জিসান একটা মেয়ের সাথে কথা বলছিলো তখন তুলির দিকে চোখ যায়
“এতো কিউট মেয়ে। কিন্তু কেমন চেনাচেনা লাগছে। কোথায় যেনো দেখছি একে?
” জিসান বেবি
তুলি কিউট করে বলে। জিসান ধপ করে পরে যায়। তুলি গিয়ে ধরে
“বেবি পরলে কি করে?
” আআআমমমি
“কিহ
” আপনি কে বোইন
তুলি জিসানের মাথায় গাট্টা মেরে বলে
“তুলি
” তুই
“😎😎😎😎
” আমার ব্রো আজ পাগল হয়ে যাবে
“কোথায় তিনি
জিসান তুলিকে নিয়ে যায়। সায়ান মনার সাথে কথা বলছিলো। আশেপাশে সবাই তুলির দিকে তাকিয়ে আছে।
” সায়ান জান
সায়ান তুলির দিকে তাকিয়ে হেচকি উঠে যায়।
চলবে