#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_৪১
ডক্টর নার্সকে বলে,”আপনি ওনার সাথে থাকুন, যদি রোগীর কোন পবলেম হয় তবে অবশ্যই আমাকে ডাক দিবেন।এই বলে ডক্টর বাহিরে বের হয়ে আসে।
ডক্টর বাহিরে বের হতেই অদ্রিতা ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করে,”ডক্টর ওনী এখন কেমন আছে,ওনার জ্ঞান ফিরেছে?”
ডাক্তার শান্ত স্বরে বলে,” রোগী এখন আউট অফ ডেঞ্জার।কালই ওনাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন।হাতের আর পায়ের ব্যান্ডিজ কালই খোলে দিবো। মাথার আঘাতটা একটু বেশি ড্রিপ তাই ১ সপ্তাহ সময় লাগবে শুকাতে।ওনার এখন একটু বেশি টেক কেয়ারের প্রয়োজন,এই বলে ডক্টর চলে যায়।
অদ্রিতা ভিতরে ঢুকেই আরিয়ানের বুকে মাথা রেখে তাকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
অদ্রিতা হঠাৎই আরিয়ানকে জরিয়ে ধরায় আরিয়ান ব্যাথ্যায় আহ করে শব্দ করে,সাথে সাথে অদ্রিতা তাকে ছেড়ে দেয়।
আরিয়ান শান্ত স্বরে বলে,” কান্না থামাও,আমি এখন ঠিক আছি।বাবা-মা কোথায়?”
অদ্রিতা করুন স্বরে বলে,” আপনার এক্সিডেন্টের খবর শুনে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল।এখন ঠিক আছেন,বাবা বাহিরে এখনই আসবে।পরে সবাই আরিয়ানকে দেখে বাড়িতে চলে যায় কিন্তু তার ছোট ভাই রোহিত তার সাথে থেকে যায়।অদ্রিতাই তাদের চলে যেতে বলে।
পরের দিন বিকালে হাতের ও পায়ের ব্যান্ডিজ খুলে দেয়।অদ্রিতা আর রোহিত তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।”
কলিং বেল বাজাতেই অদ্রিতার শ্বশুড়ি দরজা খোলে দেয়।আরিয়ানকে দেখে ওনী তাকে জরিয়ে ধরে বলে,”এখন কেমন লাগছে আর এত রাতে কোথায় ছিলি?এক্সিডেন্ট কি করে হলো?আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেই তার শ্বাশুর তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন,”ওরা মাত্র এলো। আগে ফ্রেস হয়ে রেস্ট নিক পরে কথা বলো।বউমা ওকে নিয়ে রুমে যাও।দুইদিন ধরে তুমি হসপিটালে আসো ফ্রেস হয়ে রেস্ট নাও।”
অদ্রিতা ছোট করে বলে,” জি বাবা।”পরে অদ্রিতা আরিয়ানকে রুমে নিয়ে যায়।আরিয়ানকে ব্রেডে শুয়িয়ে দিয়ে তাকে তার ফোন দেয় পরে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেস হতে।
অদ্রিতা ওয়াশরুমে যেতেই আরিয়ান ফোন ওন করে।ফোন করতেই দেখে রাইশার অনেক গুলো ম্যাসেজ।সে রাইশাকে ফোন দিতেই রাইশা ফোন রিসিভ করে।
রাইশা চিন্তিত স্বরে বলে,”এই তোমার কি হয়েছিল,ফোন ওফ ছিল কেন এই দুই দিন?জানো আমার কত টেনশন হচ্ছিল তোমাকে নিয়ে। তুমি ঠিক আছো তো?”
আরে বাবা একসাথে এত প্রশ্ন করলে আমি কোনটার উওর দিবো।আমার এক্সিডেন্ট হয়েছিল।দুই দিন হসপিটালে ছিলাম, মাত্রই বাড়িতে আসছি।
রাইশা মন খারাপ করে বলে,”ওহ, তবে আগে কেন বলোনি? আমি হসপিটালে চলে আসতাম।আচ্ছা আমি এখন তোমার বাড়িতে আসছি।আর তুমি এখন কেমন আছো?”
আমি এখন ঠিক আছি,তোমাকে আসতে হবে না।
রাইশা ছোট করে বলে,”আচ্ছা,এখন তুমি রেস্ট নাও। বেশি কথা বললে আবার অসুস্থ হয়ে পরবে রাখি।”
আচ্ছা।
অদ্রিতা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আরিয়ানের শরীর মুছে দেয়।পরে তাকে খবার খায়িয়ে ঔষধ খায়িয়ে দেয়।
~~~এক সপ্তাহ পরে,,,,,,,,,,
এই এক সপ্তাহে অদ্রিতা আরিয়ানের যত্নের কোন কমতি রাখিনি।আরিয়ান এখন অনেকটাই সুস্থ।আরিয়ান এত তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়েছে শুধু অদ্রিতার যত্নের কারণে।এই সাতদিন অদ্রিতা ছায়ার মতো আরিয়ানের পাশে ছিল।তাকে ঠিক মতো খায়িয়ে ঔষধ খয়িয়েছে। অবশ্য রাইশাও মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে আরিয়ানের খবর নিয়েছে। আজকে তার মাথার ব্যান্ডিজ খোলা হবে।তাই অদ্রিতা তাকে রেডি করিয়ে নিচে নেমে তার শ্বাশুড়িকে ডাক দেয়। মা আপনি রেডি তো।
হুমম,আরিয়ানের বাবা এখনই এসে পরবে।পরে আমরা হসপিটালে চলে যাবো।
আরিয়ান আস্তে করে বলে,”আমি তো এখন সুস্থই, নিজেই ড্রাইব করে যেতে পারবো।”
আরিয়ানের মা রেগে বলে,”একদম চুপ,নিজে ড্রাইব করেই তো এক্সিডেন্ট করলি।এখন কোন কথা নয়।
আরিয়ান আর কিছু বলে না,তার বাবা নিচে নেমে এলে তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়।গিয়ে তার ড্রেসিং রুমে বসে।কিছুক্ষন পরে ডক্টর চলে আসে,ডক্টর এসে তার মাথার ব্যান্ডিজ খোলে দেয়।
আরিয়ানের বাবা শান্ত স্বরে বলে,” রোগী অবস্থা এখন কেমন,ঠিক আছে তো?”
ডক্টর ভরসা দিয়ে বলে,” He is now completely alright.চিন্তার কোন কারণ নেই।আমি তো অবাক হচ্ছি এত তাড়াতাড়ি কি করে সুস্থ হলেন তা ভেবে?”
আরিয়ানের মা মুচকি হেসে বলে,”এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে শুধু বউমার জন্য।ওই তো রাতদিন এক করে ওর সেবা- যত্ন করেছে।”
ডাক্তারঃওহ,সত্যিই আপনি অনেক ভাগ্যবান নয়তো এখনকার যুগে এমন বউ পাওয়া যায় না।আর এই ঔষধ গুলো ১ সপ্তাহ খেলেই দুর্বলতা কেটে যাবে।এখন আপনারা আসতে পারেন।
ডক্টরের কথা শুনে আরিয়ান অদ্রিতার দিকে তাকায়। পরে কি মনে করে নিজেই মুচকি হাসে।
আরিয়ানের বাবা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলে,”ওকে ডক্টর।”এই বলে তারা বাড়িতে চলে আসে।অদ্রিতা আরিয়ানকে নিয়ে রুমে ডুকে পরে বলে,”আপনি শুয়ে রেস্ট নিন,আমি ফ্রেস হয়ে এসে আপনার শরীর মুছে দিচ্ছি।”
আরিয়ান শান্ত স্বরে বলে,”এত ব্যস্ত হতে হবে না।আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।ডক্টর তো বললেন।তুমি ফ্রেস হয়ে নাও পরে আমি ফ্রেস হয়ে নিচ্ছি।তোমাকে অনেক ধন্যবাদ এই কয়দিন আমার যত্ন নেওয়া জন্য।”
আরিয়ানের কথা শুনে তার খারাপ লাগলো তবুও বললো,”ধন্যবাদ কিসের,এইটা তোমার দায়িক্ত।আপনি আমার স্বামী, আপনার সেবা করবো না তো কার সেবা করবো।”এই বলে অদ্রিতা ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেস হতে।
অদ্রিতা ফ্রেস হয়ে এসে আবার আরিয়ানকে জিজ্ঞেস,আপনি কি একা একা ফ্রেস হতে পারবেন?
আরিয়ান ছোট করে বলে,”হুমম, পারবো।”
আচ্ছা তবে আপনি ফ্রেস হন, আমি নিচে গিয়ে আপনার জন্য স্যুপ নিয়ে আসি।
আরিয়ান মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক সম্মতি করে।অদ্রিতা নিচে চলে যায় আরিয়ানের জন্য স্যুপ বানাতে,তাছাড়া দুপুরে খাবারও তো তৈরি করতে হবে।আর আরিয়ানও ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে বেডে শুয়ে থাকে আর অদ্রিতার কথা ভাবতে থাকে।সে অদ্রিতাকে যত দেখছে ততোই অবাক হচ্ছে।এতটা নিস্বার্থ ভাবে কেউ কাউকে ভালোবাসতে পারে তা অদ্রিতাকে না দেখলে সে হয়তো জানতেই পারতো না।কিন্তু কথায় আছে না দাঁত থাকতে মানুষ দাঁতের মর্যাদা বুঝে না,আরিয়ানের ক্ষেএে তাই হচ্ছে।সে রাইশার রুপের মোহে পরে অদ্রিতার ভালোবাসা, কেয়ার কিছুই বুঝছে না।আরিয়ান অদ্রিতার কথা ভেবে যাচ্ছে।তার এত অবহেলা, অপমান করার পরেও মেয়েটা তাকে সুস্থ করার জন্য সব কিছু করলো।সারা রাত তার পাশে বসে থেকে তার সেবা করেছে,তার কখন কি লাগবে সব কিছুর খেয়াল রেখেছে।তার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো এততা যত্ন তাকে করতো না।অদ্রিতা সত্যিই অনেক ভালো।তবে আমি কি তার সাথে অন্যায় করছি? তাকে ঠকাচ্ছি? আরও কিছু ভাবার আগেই রাইশার কল আসে,,,,,,,
.
..
…
চলবে,,,,,,
#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_৪২
আরিয়ান অদ্রিতার কথা ভেবে যাচ্ছে বেশি কিছু ভাবার আগেই রাইশার কল আসে।
আরিয়ান ফোন রিসিভ করতেই রাইশা বলে,”কেমন আছো,ডক্টর আজ কি বলেছেন?”
এখন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ, অদ্রিতার জন্য জন্যই আমি এত তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পেরেছি।
ডক্টরও কিছুটা অবাক হয়ে যায়,এত তাড়াতাড়ি আমি সুস্থ হয়ে যাবো তা ভাবেনি।আর এই সবই সম্ভব হয়েছে শুধু ওর সেবা আর কেয়ারে।আসলে অদ্রিতার মতো মেয়েই হয় না।
রাইশা আরিয়ানকে থামিয়ে দিয়ে বলে,”বাহ্! বউয়ের সেবায় তো দেখছি সুস্থ হয়ে গেছো।আর মুখেও তো দেখছি বউয়ের নাম ছাড়া অন্য কিছু নাই।ভালোই তো হলো এখন তো ওর সেবায় কথা ভেবে ওকে মেনে নিবে।মনে হচ্ছে যেন ওকে চোখে হারাচ্ছো,তবে আমি রাখছি।এখন তো আবার বউকে নিয়েই থাকবে,আমি আর ডিসর্টাব করবোনা।বাই”
আরিয়ান গম্ভির স্বরে বলে,”আরে না,তুমি তো জানোই ওকে আমি এখনো মেনে নিতে পারিনি।আর ওকে আমি চোখে হারাচ্ছি মানে শুধু ও আমার জন্য যা করেছে তা বলছি।”
রাইশা খুশি হয়ে বলে,” হুমমম,আর ওকে তোমার মানতেও হবে না।আচ্ছা এইসব কথা বাদ দাও কালকে কি অফিসে আসবে।”
হুমম,আসবো।
তবে এখন রাখি,কাল অফিসে দেখা হচ্ছে।তোমার সাথে কিছু কথা আছে।এখন তবে মেডিসিন খেয়ে রেস্ট নাও।
আচ্ছা,কাল দেখা হচ্ছে।অনেক দিন পরে আবার তোমাকে দেখবো ভাবতেই অনেক ভালো লাগছে।
এদিকে অদ্রিতা এখন একটাই চিন্তা,কি করে আরিয়ানকে সুস্থ করা,তার ভালো করে যত্ন করা।সে এখন আরিয়ানের জন্য স্যুপ বানাতে রান্নাঘরে এসেছে কিন্তু এদিকে যে সে কিছু খায়নি তার খেয়াল নেই।আরিয়ানের যত্ন করতে গিয়ে সে তার নিজের কথাই ভুলে গেছে।ইদানিং তার শরীরটাও ভালো না।মাথা ঘুরায়,ভালো করে খেতেও পারে না।কিন্তু কাউকে কিছু বলছে না।ভাবছে টেনশন একটু বেশি করছে তাই এমন লাগছে আর ঠিক মতো খাওয়াও তো হয় না।আরিয়ান ওকে সব- সময় অবহেলা করেছে, তার গায়ে হাত তুলেছে,তাকে অপমান করেছে তবুও সে তার দায়িত্ব থেকে সরে আসেনি।তাদের সম্পর্কটা তো পবিত্র।কবুল বলে তারা স্বামী- স্ত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।সে আরিয়ান অনেক ভালোবেসে ফেলেছে।সে সবকিছু করছে শুধু আরিয়ানের একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য। কিন্তু আরিয়ানের অদ্রিতার এই ভালোবাসা কেয়ার কিছুই চোখে পড়ছে না রাইশার মোহে পরে।মানুষ সত্যিই অনেক স্বার্থপর হয়।যে আপনার ভালো চায়,যে সবসময় আপনার পাশে থাকে তাকেই সবচেয়ে বেশি অবহেলা করা হয়।তাকে সে তার প্রাপ্য মূল্য দিতে পারে না।আরিয়ান তার পুরোনো ভালোবাসার মানুষকে পেয়ে সব ভুলে গেছে।সে যে আগে তাকে ছেড়ে চলে গেছে এখন তা তার মনে নেই।যে মেয়ে তার কেরিয়ারের জন্য তাকে ছেড়ে চলে গেছে,সে দ্বিতীয়বার তার কাছে এসেছে তার নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে।সে এইসব কিছু বুঝছে না।সে তার রুপের মোহে পরে আছে।শুধু আসক্ত হয়ে আছে তার বাহিরের চাকচিক্যে,স্মার্টনেস আর সো কল্ড আধুনিকতার নামে বেহায়াপনার নিকট।এইসব কিছু তার কাছে এতোটাই ইমপোর্টেন্ট যে সে এতদিনের অদ্রিতার অক্লান্ত পরিশ্রম, সেবা,ভালোবাসা আর বিশ্বাসকে অবহেলা করছে।এই সবকিছুই ভুলে গেছে। অদ্রিতার সরলতাকে সে তার দুর্বলতা ভাবছে।নিজেই অনিশ্চিত করে তুলছে তাদের ভবিষ্যৎকে।
.
.
অদ্রিতা স্যুপ নিয়ে রুমে চলে আসে।সে একটি টেবিলে স্যুপের বাটি রেখে পরে বলে,”আপনি ওঠে বসুন, আমি আপনাকে স্যুপটা খায়িয়ে দিচ্ছি।”
আরিয়ান শান্ত স্বরে বলে,” লাগবে না। আমি নিজেই খেতে পারবো।তুমি স্যুপের বাটিটা আমাকে দাও।”
আপনি অসুস্থ,পারবেন না।আমি খায়িয়ে দিচ্ছি।
আরিয়ান বিরক্ত হয়ে বলে,”আজব তো,আমি বলছি তো খেতে পারবো।ডক্টর তো বললো এখন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ।তোমার এত আধিক্ষেতা করতে হবে না।যত্তসব,,, একটু জোরেই বললো কথাগুলো।
আরিয়ানের ব্যবহারে সে নিস্তব্ধ হয়ে যায়।কথা বলার ভাষাই হারিয়ে ফেলেছে সে।কিছু না বলে স্যুপের বাটিটা তার হাতে দিয়ে সে চলে যায়।এটাই হয়তো দুনিয়ায় নিয়ম। আপনি যাকে বেশি ভালোবাসবেন সেই আপনাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিবে।পৃথিবীতে সত্যিকারের ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই,,,,,,
~~~পরের দিন সকালে,,,,,,,,
আরিয়ান রেডি হয়ে খাবার টেবিলে আসে।তার বাবা দেখে সে রেডি হয়ে আছে তাই জিজ্ঞেস করে,”তুই কি আজ অফিসে যাবি নাকি?তুই তো এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হসনি।”
হুমম,আর আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ তুমি কোন চিন্তা করো না।অনেক দিন ধরে অফিসে যাওয়া হয়না। আজ একটা ইমপোর্টেন্ট কাজ আছে তাই যেতে হবে।
তার বাবা আর কিছু বলে না,সবার খাওয়া শেষ হলে যার যার কাজে চলে যায়।আরিয়ানের খাওয়া শেষ হতেই সে অফিসে জন্য বের হতে নেয় কিন্তু পিছন থেকে অদ্রিতা তাকে ডাক দেয়।
আরিয়ান পিছনে ফিরতেই সে বলে,”আজ কি অফিসে না গেলে হয় না।আপনার শরীর তো এখনো দুর্বল তাই বলছি।”
আরিয়ান গম্ভীর স্বরে বলে,”আমি এখন ঠিক আছি। তোমাকে এত আমার চিন্তা করতে হবে না। আজ কিছু কাজ আছে তাই যেতে হবে।”
অদ্রিতা বিষন্ন স্বরে বলে,” ওহ আচ্ছা।আপনি কি এখনো আমাকে মেনে নেন? এখনো কি আপনার মনে আমার জন্য একটু ভালোবাসা জন্ম নেয় নি,এখনো কি আগের মতো আপনি আমাকে সহ্য করতে পারেন না?”
আরিয়ান কন্ঠে গম্ভীর্যতা রেখেই বলে,”আমার মনে তোমার জন্য এখনো বিন্দু পরিমাণ ভালোবাসা জন্ম নেয়নি।আমি মেনে নিতে পারছি না তোমাকে আর কখনো পারবো কিনা তা জানি না।”
এই বলে সে চলে যায়।অদ্রিতার তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,”আল্লাহ যদি চায় তবে একদিন আপনি আমাকে ঠিক মেনে নিবেন আর এই আমাকেই ভালোবাসবেন।কিন্তু সেইদিন আপনি হয়তো আমাকে পাবেন না।সেদিন হয়তো আমি আপনার থেকে অনেক দূরে চলে যাবো।শত চাইলেও তখন আপনি এই আমিটাকে আর পাবেন না।”
আরিয়ান অফিসে এসেই ফাইল খোলে বসে।অনেক দিন ধরে অফিসে আসে না অনেক কাজ পেন্ডিং হয়ে আছে।সে অনেক মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে এমন সময় রাইশা ভিতরে ঢুকে বলে,”বিরক্ত করলাম নাকি।তুমি তো দেখছি খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করছো।”
আরে না,চেয়ারে বসো।তুমি না বলছিলে আমার সাথে তোমার কিছু কথা আছে,কি কথা শুনি?
তুমি তো জানোই নিউইয়র্ক থেকে আমি এখানে একটি সো এর জন্য এসেছিলাম।গত কাল সেই সো শেষ হয়েছে আর আমি সো এ জিটেছি।
আরিয়ান হাসি মুখে বলে,” Congratulations, তা পার্টি কবে দিচ্ছো?”
কালই দিচ্ছি আর পার্টিটে রাত ১০ টার মধ্যে উপস্থিত থাকবে।তোমাকে ছাড়া কিন্তু পার্টি শুরু করবো না আর পার্টির পরেই তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।নিশ্চয়ই তোমার তা ভালো লাগবে।
আরিয়ান অবাক হয়ে বলে,” কি সারপ্রাইজ বলো না?”
রাইশা মুচকি হেসে বলে,” বলে দিলে কি আর তা সারপ্রাইজ থাকবে!ওয়েট করো কালই জানতে পারবে”
আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,” আচ্ছা।”
.
..
…
চলবে,,,,,,,