#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_২৬_২৭
তা হয় না। অন্য কোনো সময় না হয় আবার এসে থাকবো।
তুই যা ভালো মনে করিস্।মনে মনে খুশি হয়ে বলেন, একদিনেই আমার মেয়েটা সংসারী হয়ে গেছে। আগে আমাদের ছাড়া কোথায়ও একদিন পর্যন্ত থাকতে পারতো না। এখন কত সুন্দর করে শ্বশুরবাড়িতে মানিয়ে নিয়েছে।আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যাতে তোকে সব- সময় এই ভাবে হাসি- খুশি রাখে।আরিয়ান যেন তোকে নিজের মন থেকে মেনে নেয়।তুই না বললে কি হবে আমি ঠিকই বুঝেছি আরিয়ান তোকে এখনো পরিপূর্ণ ভাবে মেনে নিতে পারেনি।
কোথায় হারিয়ে গেছো।এইভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে খেয়ে নাও। এমনেটেই ডিসেম্বর মাস অনেক শীত পড়েছে আর এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে পরে ঠান্ডা লেগে যাবে, তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পরো।
মা হেসে বলেন, হুমম যাচ্ছি। তুইও ঘরে গিয়ে ফ্রেস হয়ে শুয়ে পর্র।জামাই হয়তো তোর জন্য অপেক্ষা করছে তাড়াতাড়ি যা।
অদ্রিতা অন্যমনস্ক হয়ে বলে, হুমম যাচ্ছি।
আমাকে তো এখনো স্ত্রী হিসেবেই মেনে নিতে পারেনি আবার অপেক্ষা করবে এইটা তো কল্পনাই করা যায় না। আমি রুমে না ঢুকলেই হয়তো ওনী খুশি হবেন মনে মনে কথা গুলো ভাবলো কিন্তুু মুখে কিছু না বলে রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে দেখে আরিয়ান এখনো ঘুমাইনি শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপছে। সে রুমে এসে দরজা লক করে ওয়াশরুমে চলে যায়। একটু পরে ফ্রেস হয়ে এসে আয়নার সামনে এসে চুলগুলো খুলে একটু আঁচড়িয়ে পরে আরিয়ানের সামনে গিয়ে বলে,আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।আমাকে পছন্দ না হওয়ার পরেও আমার পরিবারের সবার সাথে এতভালো ব্যবহার করার জন্য। সত্যিই আপনি অনেক ভালো, তা না হলে আমাকে পছন্দ না হওয়ার সত্ত্বেও আমার পরিবারের সাথে এত ভালোভাবে কথা বলতেন না।
আরিয়ান ফোনের দিকে তাকিয়েই বলে, হুমম। তোমার কাজ শেষ হলে লাইট অফ করে দিও, আমি ঘুমাবো। আর কিছু না বলে শুয়ে পরে।
অদ্রিতা লাইট অফ করে আরিয়ানের ওই পাশে এসে ঘুমিয়ে পরে।পরের দিন সকালে নাস্তা করে তারা চলে আসে। বাড়িতে এসে কলিং বেল বাজাতেই তাদের বাড়ির কাজের লোক দরজা খুলে দেয়। পরে বলে…. বউমনি তুমি এত সকালেই চলে এসেছো।ম্যাডামকে ডাক দিচ্ছি, এই বলে তিনি আরিয়ানের মাকে ডাক দেয়।
আরিয়ানের মা এসে বলে,তোমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি তো?
অদ্রিতা হেসে বলে, না মা। আমাদের আসতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
তোমরা অনেকটা পথ যার্নি করে এসেছ রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নাও।
ঠিক আছে মা। এই বলে অদ্রিতা আর আরিয়ান রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নেয়। তারপর সে কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে সবার জন্য রান্না করে নেয়।
অন্যদিকে,,,,,,,,,,
নিলয় সকাল সকালই অফিস চলে গেছে। এমনিটে নিলয় অফিসে সকালেই আসে কিন্তু আজ প্রায় ১ ঘন্টা আগেই অফিসে চলে এসেছে। আরও দুই এক জন ছাড়া পুরো অফিসে আর কেউ নেই কারণ ৯ টা সময় কাজ শুরু হয়। সবাই ওই সময়ই আসে।আজ তার একটা কাজ আছে তাই একটু তাড়াতাড়ি এসেছে।এসেই আসিফকে ফোন দেয়। আসিফ হলো নিলয়ের অনেক ভালো বন্ধু।সে এখন পুলিশের উচ্চ পদস্থ একজন কর্মকতা। আসিফের বাবা নিলয়ের অফিসে কাজ করতো কিন্তু হঠাৎ একটা দুর্ঘটনায় তার বাবা মারা যায়। তখন তার বয়স ১০ বা ১১ বছর হবে। তখন থেকেই নিলয়ের বাবা তাদের দেখাশুনা করে আর তার জন্য সে এখন এই পর্যায়ে আসতে পেরেছে।তাই আসিফ নিলয়কে আর তার বাবাকে অনেক সম্মান করে আর নিলয়ও আসিফকে নিজের ভাইয়ের থেকে কম মনে করে।
আসিফ ফোন রিসিভ করে বলে, এতো দিন পরে ফোন করলি।আমাকে তো ভুলেই গেছোট্ মনে হয়।
মার খাবি,,,,, তোকে আমি ভুলতে পারি এইকথা কি করে বলতে পারলি?আচ্ছা বাদ দে,আমার না তোর কাছ থেকে একটা হেল্প চাই। আমাকে একজনের ইনফরমেশন এনে দিতে হবে, তুই পারবি?
তোর জন্য আমি জীবনও দিয় দিতে পারবো সামান্য ইনফরমেশন সে আর কি জিনিস। তুই শুধু বল কার ইনফরমেশন লাগবে?
নিলয় আসিফকে সব কিছু খোলে বলে।
আসিফ সব কিছু শুনে বলে, এই ব্যপার তুই কিছু চিন্তা করিস্ না। আমাকে জাস্ট একটা দিন সময় দে সব ইনফরমেশন পেয়ে যাবি।
তুই আমার অনেক উপকার করলি।মাথা থেকে অনেক বড় একটা চিন্তা নামলো।এখন শুধু এক দিনের অপেক্ষা।তবে কাল বিকালে দেখা হচ্ছে।আচ্ছা এখন রাখি,,,,,,
আচ্ছা,রাখ্।আমারও কিছু কাজ আছে।
নিলয় ফোন কেটে দিয়ে মনে মনে বলে, তুমি না বললে কি হবে সত্যিটা তো আমাকে জানতে হবে। আর শুধু একটি দিনের অপেক্ষা পরে আমি সবকিছুর সত্যি জেনে যাবো।
এদিকে অদ্রিতার রান্না শেষ হলে সবাই খেয়ে নেয়।পরে সবাই যার যার রুমে গিয়ে রেস্ট নেয়।
বিকালে অদ্রিতা তাদের বাড়ির বাগানে যায়। সেখানে অনেক প্রকার ফুলের গাছ লাগানো।এখন ডিসেম্বর মাস বিকালেই বাহিরে হাল্কা কুয়াশা পড়েছে আর হাল্কা শীতও লাগছে।বাগানের একপাশে বিভিন্ন রকমের গাধা ফুল গাছ লাগানো তাতে ফুল ফোঁটে আছে। সে গিয়ে ফুলগুলো ছোঁয়ে দেখলো পরে তার ঘ্রান নিল। অন্যদিকে বিভিন্ন রকমের গোলাপ ফুল লাগানো।সাদা,লাল আর গোলাপি রঙের গোলাপ ফুল ফোঁটে আছে। সাদা আর গোলাপি রঙের গোলাপ ফুলের গাছের কাছে যায়।ফুলগুলো দেখেই তার আগের কথা মনে পরলো!
একদিন নিলয় কলেজ কম্পাস থেকে ভিতরে যাওয়ার সময় হঠাৎই একজায়গায় দাঁড়িয়ে পরে, অদ্রিতা তার পিছনেই ছিল সে দাঁড়িয়ে পরায় সে তাকে জিজ্ঞেস করে কি হলো নিলয় ভাইয়া দাঁড়িয়ে পরলেন কেন? ক্লাসে যাবেন না?
হুমম, যাবো তো। দেখো গোলাপগুলো অনেক সুন্দর তাই না। আমার অনেক পছন্দ এই সাদা আর গোলাপি রঙের গোলাপ।আমি যত অপসেটই থাকি না কেন এই ফুলগুলো দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।
অদ্রিতা তখন আর কিছু বলেনি।
অদ্রিতা আগের কথা মনে করতে চায়নি তবুও ফুলগুলো দেখে তার আগের কথা মনে পরে গেছে।তাই সে নিজেকে সামলিয়ে অন্যদিকে চলে যায়।বাগানে কয়েকটা ফলের গাছও লাগানো আছে।অনেকদিন পরে এই খোলা আবহাওয়ার এসে তার অনেক ফ্রেস লাগছে।মন ভালো লাগছে।
এই খোলা পরিবেশে থেকে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে তার খেয়াল নেই।হঠাৎই খালার কথায় হুশ আসে,,,
বউমনি সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়।এই শীতে এতক্ষন এইভাবে থাকলে আবার আপনার ঠান্ডা লেগে যাবে। গিয়ে গরম কাপড় পরে নিন।
উহু আর পাঁচ মিনিট পরে যাচ্ছি। আপনি গিয়ে সবাইকে চা দিয়ে দেন।এখন তো সবার চা খাওয়ার সময়।
আচ্ছা বউমনি,আমি যাই।
অদ্রিতা আর কিছুক্ষন বাগানে থেকে পরে ভিতরে যায়।সবাই ডয়িং রুমে বসে আছে। অদ্রিতা গিয়ে তার শ্বাশুড়ির সাথে বসে, ওনার সাথে গল্প করে।
একটু পরে খালা চা নিয়ে আসলে,সে সবাইকে চা দেয় আর নিজের জন্যও চা নেয়।পরে আবার গল্প করতে থাকে।
.
.
.
চলবে…….
#গল্প_অপূর্ণতা
#Ritu_Bonna
#পর্ব_২৮
নিলয় অথৈকে প্রায় ৩-৪ বার ফোন দেওয়ার পরে অথৈ ফোন রিসিভ করে বলে,আসসালামু আলাইকুম। আপনি কে বলছেন?
ওয়ালাইকুম আসসালাম।আমি নিলয় বলছি।তোমার সাথে কিছু কথা ছিল?
নিলয়ের নাম শুনেই অথৈ ভয় পেয়ে যায়। ভাবতে থাকে এত বছর পরে নিলয় আবার তাকে ফোন কেন করেছে?তাছাড়া এইটা তো নতুন নাম্বার নিলয় এইটা কি করে পেলো?নিলয় আবার সব কিছু জেনে গেলো নাকি।উফফ,,, আর ভাবতে পারছি না।
অথৈ নিজেকে সামলিয়ে বলে,সরি ভাইয়া।প্রায় ২ বছর পরে ফোন দিয়েছেন তো তাই প্রথমে চিনতে পারি নি।তাছাড়া আপনি আমার ফোন নম্বর কোথায় পেলেন?আর আমার সাথে আপনার কি কথা থাকতে পারে?
নিলয় গম্ভীর স্বরে বলে, এত কিছু তোমাকে জানতে হবে না।আমি যা বলছি শুধু তাই শুনো? আমি জানতে চাই তুমি অদ্রিতাকে আমার বিষয়ে কি বলেছো? তোমাকে দুই দিনের মধ্যে ঢাকায় আসতে হবে।অদ্রিতা আমার কোনো কথা বিশ্বাস করবে না।তুমি তাকে সব সত্যি খোলে বলবে।
অথৈ না বুঝার অভিয়ন করে বলে,মানে!আমি তো আপনার সম্পর্কে নিজেই কিছু জানি না তো অদ্রিতাকে কি বলবো?আমি এখন ঢাকা আসতে পারবো না।রাখি,,,,
নিলয় রাগে কর্কশ স্বরে বলে,আমি যখন বলছি তোমাকে ঢাকায় আসতে তবে তোমাকে ঢাকায় আসতেই হবে।তোমার হাতে আর অন্য কোন অপসন নেয়।আমি তোমার সম্পর্কে সব ইনফরমেশন কালেক্ট করে নিয়েছি।তুমি ৬ মাস হলো বিয়ে করেছো। এখন চট্টগ্রামে স্বামীর সাথে থাকো।তোমার হাজবেন্ড ব্যাংকে জব করে।ওনার ফোন নম্বরও আমার কাছে আছে।আমি চাইনা তোমাদের সম্পর্কটা নষ্ট হউক,,,,,
অথৈ কিছুটা ভয় পেয়ে বলে,নষ্ট হবে মানে,কি বলতে চাইছেন আপনি?
নিলয় বাঁকা হেসে বলে,তোমাকে তো এটতা বোকা বলে আমার মনে হয় না।আমি কি বলতে চাইছি তা তুমি অনেক ভালো করেই বুঝতে পেরেছো।তবুও যদি না বুঝতে পারো তবে বলছি, তোমার স্বামী নিশ্চয়ই তোমার অতীত সম্পর্কে জানে না।আমার কাছে সব কিছুর প্রমান আছে।যদি তুমি রাজি না হও তবে সব কিছু তোমার স্বামীর কাছে পাঠাতে আমার বেশি সময় লাগবে না।এখন নিজেই ভেবে দেখো কি করবে?
নিলয়ের কথা শুনে অথৈ ভয় পেয়ে যায়। নিলয় যদি সব কিছু সত্যি সত্যি তার হাসবেন্ডকে বলে দেয় তবে তার স্বামী তাকে ভুল বুঝবে।হয়তো তার সুখের সংসার ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।সে চায় না অতীতের করা কোন ভুলের জন্য তার বর্তমান আর ভবিষ্যৎ নষ্ট হউক। তাই ভয়ে ভয়েই বলে ঠিক আছে আসবো।কোথায় আসতে হবে?
পরে ম্যাসেজ করে জানিয়ে দিব। কিন্তু তুমি যদি তোমার কথার খেলাপ করো তবে এর পরিণতি কটতা খারাপ হতে পারে তা তো নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো। আর কিছু না বলে ফোন কেটে দেয়,,,,
কেটে যায় দুই দিন_
নিলয় অনেকক্ষন ধরে একটি রেস্টুরেন্টে বসে আছে।অপেক্ষা করছে অথৈ এর জন্যে।
প্রায় একঘণ্টা ওয়েট করার পরে অথৈকে রেস্টুরেন্টে ঢুকতে দেখলো নিলয়।রেস্টুরেন্টে ঢুকে অথৈ এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে থাকলো নিলয়কে হঠাৎই নিজের সামনে নিলয়কে দেখতে পায় সে।
নিলয় অথৈকে সামনের দিকে একটি টেবিলে বসতে বলে।যদিও রেস্টুরেন্টটি শহরের ভিতরে তবুও এখানের পরিবেশটা বেশ নিরিবিলি। অথৈ আর নিলয় টেবিলে গিয়ে বসে।
নিলয় গম্ভীর স্বরে বলে,আমি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না। যা বলার সুজাসুজি বলছি।তুমি আমার নামে অদ্রিতা কি বলেছো? যার জন্য ও আমাকে ঘৃণা করে।আমি বিদেশে যাওয়ার পরে কি এমন হয়েছিল যার জন্য পরে আমার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ রাখেনি, আমিও অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু কিছুতেই তার সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারি নি। ওই দিন ওর সাথে কথা বলে যা বুঝলাম তাতে আমি সিউর তুমি সব কিছু জানো।সো এখনি সব সত্যিটা আমাকে বলবে।
নিলয়ের কথা শুনে অথৈ বুঝতে পারে অদ্রিতা নিলয়কে কিছু বলেনি। আসল সত্যি নিলয় জানে না আর সে যদি এখন মিথ্যা বলে তবে নিলয় ধরতেও পারবে না।তাই সে ভাবছে নিলয়কে এখন মিথ্যা বলবে।
অথৈ এর চুপ করা দেখে নিলয়ের রাগ উঠে যায়।তাই একটু জোরেই বলে,আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করছি।তার উত্তর দাও,আন্সার মি।ডেমিট,,,,,,নিলয়ের কথা শুনে রেস্টুরেন্টের অনেক মানুষ তাদের দিকে তাকায়।পরিস্থিতি বুঝে নিলয় নিজেকে শান্ত করে।
অথৈ খুব শান্ত স্বরে বলে,আমি সত্যিই এই বিষয়ে কিছু জানি না। অদ্রিতাকে আমি আপনার বিষয়ে কিছু বলিনি।হয়তো অদ্রিতা অন্য কাউকে পছন্দ করতো তার জন্যই হয়তো ও আর আপনার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করেনি। এখন যখন ফিরে এসেছেন সে আমাকে এই বিষয়ে ফাঁসাতে চাইছে যাতে আপনার মনে হয় সব কিছুর পিছনে আমি দায়ি।আমি আগেই বলেছিলাম এই অদ্রিতা আপনার যোগ্য না কিন্তু আপনি তখন আমার কোনো কথা শুনেন নি।এখন দেখলেন তো,,,
অথৈ আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিলয় দাঁতে দাঁত চেপে কর্কশ স্বরে বলে উঠে,shut up.I say Shut up.তোমার সাহস কি করে হয় অদ্রিতার নামে মিথ্যা বলার?আসলে ভুলটা আমারই।আমি কি করে ভাবতে পারলাম তোমার মতো মেয়ে এত সহজে আমাকে সত্যিটা বলে দিবে?just wait and see,,,, এখন আমি কি করি?এই বলে নিলয় নিজের ফোন বের করে।
অথৈ কিছুটা ভয় পেয়ে নিলয়কে জিজ্ঞেস করে, আ… আপনি কাকে ফোন করছেন?
নিলয় ফোন অথৈ এর স্বামীর ডায়াল করে অথৈকে দেখায় পরে তাকে কল করে,
নিলয়ের এই কাজে অথৈ অনেক ভয় পেয়ে যায়।তাই আমতা আমতা করে বলে,প্লিজ এমন করবেন না।আমি সব সত্যি আপনাকে বলবো তবুও প্লিজ ওনাকে কিছু বলবেন না।
নিলয় বাঁকা হেসে বলে,আগে তো ভালো করেই বলেছি কিন্তু তুমিই তো শুনো নি।এখন আমার আর কিছু করার নেই।অনেক লেট করে ফেলেছো।এখন তো তোমার স্বামী কি জানি নাম? ও মনে পরেছে,,, মি. সায়ান।ওনাকে তো সব সত্যিটা আমাকে জানাতেই হবে।নিলয় আগেই ফোন স্পিকারে রেখে দেয়, যাতে অথৈ সব শুনতে পায়।সায়ান ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলে,নিলয় কিছু বলতে যাবে তার আগেই অথৈ নিলয়ের হাত থেকে ফোন নিয়ে কেটে দেয়।তা দেখে নিলয় বাঁকা হাসি দিয়ে অথৈ এর হাত থেকে ফোন নিয়ে নেয় আর বলে একবার কেটে দিয়েছো তো কি হয়েছে?আবার দিচ্ছি।বলেই আবার সায়ানকে ফোন দিতে নেয়!
অথৈ করুন স্বরে বলে,প্লিজ এমনটা করবেন না। আমি আর কোন মিথ্যা কথা বলবো না।সব সত্যি বলবো।প্লিজ একটা চান্স দেন,,,,,,,
নিলয় অন্যদিকে ফিরে বাঁকা হাসি দেয়,পরে অথৈ এর দিকে তাকিয়ে বলে ওকে এটাই তোমার লাস্ট চান্স। এখন যদি সব সত্যি না বলো তবে এর পরিণতি কি হবে তা তুমি আমার থেকে ভালো জানো।
আমি এখন আর কোনো মিথ্যা বলবো না।পরে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু নিলয়কে খোলে বলে।অথৈ এর কথা শুনে রাগে নিলয়ের চোখ – মুখ পুরো লাল হয়ে যায়।অথৈ এর জায়গায় যদি কোনো ছেলে হতো তবে এতক্ষনে নিলয় তার হাড়গুর ভেঙে ফেলতো কিন্তু মেয়ে বলে কিছু করতেও পারছেন।সে ভাবতে পারছে না একটা মেয়ে এতটা স্বার্থপর আর নিকৃষ্ট চিন্তা কি করে হতে পারে?
নিলয়ের অবস্থা দেখে অথৈ ভয় পেয়ে যায়।নিলয়কে এতটা রাগ করতে সে আগে কখনো দেখেনি। তাই ভয়ে ভয়েই বলে,আমি যা জানতাম তার সব কিছু আপনাকে বলে দিয়েছি।আমাকে ক্ষমা করে দিন প্লিজ।আসলে তখন আমার মাথা ঠিক ছিল না।আপনি আমাকে অপমান করেছিলেন ওই অদ্রিতার জন্য, আমার ভালোবাসাকে প্রত্যাখান করেছিলেন তাই রাগের মাথায় এইসব করে ফেলেছি।প্লিজ আমাকে মাফ করে দিন,,,,,
নিলয় নিচের দিকে তাকিয়ে দুইহাত শক্ত করে মুঠ করে রাখে।আসলে ও এখন নিজের রাগ কন্টোল করছে।সে চাইছে না এই পাবলিক প্লেসে কোনো সিন ক্রিয়েক্ট করতে। তাই যথা সম্ভব নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে।তার চোখ দিয়ে যেন আগুনের ফুলকি ঝড়ছে।
নিজেকে একটু শান্ত করে নিলয় অথৈকে অদ্রিতার ফোন নম্বর দেয় আর বলে তাকে ফোন দিয়ে এখানে আসতে বলতে।আর এটাও বলে দেয় অদ্রিতা যেন এইটা না জানে যে নিলয় তাকে এখানে ডেকেছে।
অথৈ কিছুটা ভয়েই নিলয়ের হাত থেকে ফোন নম্বর নেয় আর অদ্রিতাকে ফোন দেয়!
.
.
.
চলবে……….