অনুভূতি
পর্ব ৪০
মিশু মনি
.
৬৩.
“তুমি ছুলে জল আমি বৃত্ত হয়ে থাকছি,
দু মুঠো বিকেল যদি চাও ছুড়ে দিচ্ছি”
লাইন দুটো দেখে বেশ চমকালো মিশু। ভার্সিটি থেকে ফিরে রুমে ঢুকেই দেখে দেয়ালে কাগজে ঝুলছে লেখাটা। আর বিছানার উপর একটা প্যাকেট রাখা, উপরে ফুল দেয়া। মিশু বেশ অবাক হলো! এগিয়ে এসে ফুলগুলো নিয়ে গন্ধ শুকলো,তারপর প্যাকেট টা হাতে নিয়ে খুললো। খোলামাত্র আরো বেশি মুগ্ধতা ছুঁয়ে গেলো ওর চোখেমুখে। একটা নীল শাড়ি, সাথে ব্লাউজ ও আছে। ছোট্ট প্যাকেটে নীল চুড়ি, কানের দুল,টিপ। মিশুর বিস্ময়ের সীমা রইলো না। উপরে একটা ছোট্ট চিরকুটে লেখা, “অগ্নিলাকে দ্রুত দেখতে চাই”। মিশুর মনটা মুহুর্তেই উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। সমস্ত শরীরে মেঘালয়ের প্রেমের বীজ ছড়িয়ে পড়তে লাগলো।
ছুটে বাথরুমে ঢুকে শাওয়ার ছেড়ে দিলো। তাড়াতাড়ি শ্যাম্পু করে নিয়ে গোসল শেষ করে তোয়ালে গায়ে পেঁচিয়ে রুমে আসল। এসে দেখলো মেঘালয় সোফায় বসে আছে। নীল পাঞ্জাবিতে দারুণ শুভ্র দেখাচ্ছে ওকে। কপালের উপর ভেজা চুলগুলো এসে লুটিয়ে পড়েছে। মিশুর ইচ্ছে করছে গিয়ে হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে। ও একটু একটু করে এগোতে লাগলো। মেঘালয় দুইপা এগিয়ে এসে মিশুর কোমরে হাত দিয়ে ওকে বুকে টেনে নিলো। মিশু বুক ভরে ঘ্রাণ নিয়ে বলল, “নিউ বডি স্প্রে?”
– “ইয়াপ, জানো তোমাকে দারুণ আবেদনময়ী দেখাচ্ছে।”
– “আর তোমাকে বিপজ্জনক রকমের হ্যান্ডসাম লাগছে।”
– “খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে না?”
মিশু মুচকি হেসে বললো, “এত বড় সারপ্রাইজ হঠাৎ? তোমার না আরো দুদিন পর আসার কথা?”
– “ঘড়ির কাটা এগিয়ে এসেছে ৪৮ ঘন্টা।”
– “যাও, দুষ্টুটা। শাড়িটা খুব পছন্দ হয়েছে আমার।”
– “এবার সেটা পরিধান করে আমাকে ধন্য করুন মহারাণী।”
মিশু মেঘালয়ের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে শাড়ি পড়ে নিলো দ্রুত। চোখে কাজল টেনে নিলো। মেঘালয় ওর পায়ের কাছে বসে পায়ে আলতা দিয়ে দিলো। তারপর ডান পা তুলে পায়ের উপর চুমু এঁকে দিলো। মিশু আজ বারবার মুগ্ধ হচ্ছে। মেঘালয় এত সারপ্রাইজ কেন দিচ্ছে আজ!
মেঘালয় উঠে দাঁড়িয়ে বললো, “খুব স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে তোমায়।”
– “ইস! আর বলতে হবেনা।”
– “হ্যা, এবার আসো তাড়াতাড়ি খেয়ে নেই। আমার বড্ড খিদে পেয়েছে।”
মিশু মেঘালয়কে নিয়ে খাবার টেবিলে চলে এলো। খাবার খেতে খেতে দুজনাতে গল্প হলো কিছুক্ষণ। মিশু গল্প শুনাচ্ছে ভার্সিটি’র ফ্রেন্ড দের নিয়ে। অনেক ফ্রেন্ড হয়েছে ওর। তাদের গল্প বলতে বলতে খাওয়া শেষ করে নিলো। মেঘালয় গভীর ভাবে তাকিয়ে আছে মিশুর দিকে। মিশুকে আজ বড্ড বেশি অপূর্ব দেখাচ্ছে! এত মায়াবী কেন মেয়েটা?
মিশু খাওয়া শেষ করে বসে বসে বকবক করেই চলেছে। মেঘালয় ওকে নিয়ে এসে রুমে ঢুকলো। মিশুকে বিছানায় বসিয়ে রেখে মিশুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। মিশু বকবক করছে আর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মেঘালয় মুগ্ধ হয়ে শুনছে শুধু। গল্প করেই সন্ধ্যা পার করে দিলো। সন্ধ্যা পেরোবার পর মেঘালয় বললো, “মিশু, বাইরে বের হবো। চলো।”
মিশু অবাক হয়ে বললো, “এখন! পুরোটা বিকেল বাসায় কাটিয়ে এখন বাইরে? বাইরে ডিনার করার চিন্তা আছে নাকি?”
– “আহা! চলো তো তাড়াতাড়ি।”
মিশুর কাঁধে হাত রেখে ওকে নিয়ে মেঘালয় বাইরে বেড়িয়ে এলো। মিশু বললো, “রোদ আপুকে বলে যাবো না?”
– “আমরা যেখানে যাচ্ছি,রোদ সেখানে আগে থেকেই বসে আছে।”
– “ওহ আচ্ছা। যাচ্ছিটা কোথায় বলবা তো?”
– “উহু, গেলে দেখতে পাবা।”
মিশু ক্রমশই উৎফুল্ল হয়ে উঠছে। আজ মেঘালয় এত চমকে দিচ্ছে কেন! ছেলেটা মাঝেমাঝে এমন সব কান্ড করে। আজকের বিকেলটা অনন্য একটা বিকেল ছিলো। মেঘালয়ের মাথাটা কোলের উপর নিয়ে বসে বসে গল্প করার সৌভাগ্য অনেক দিন হয়নি। আজ মন খুলে কথা বলেছে ও মেঘালয়ের সাথে।
মেঘালয় মিশুর পাশেই বসলো। আজ ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে এসেছে। সেই গাড়ি ড্রাইভ করছে। মিশু বারবার তাকাচ্ছে মেঘালয়ের দিকে। ওর চোখেমুখে কৌতুহল। গাড়ি অনেক্ষণ ধরে চলছে, গন্তব্যে পৌছাচ্ছে না এখনো। মিশু উত্তেজনায় ছটফট করছে শুধু, কোথায় যে যাচ্ছে বুঝতে পারছে না কিছুই। মেঘালয় ওকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে এসে রাতের খাবার খেয়ে নিলো। মিশু বারবার জিজ্ঞেস করছে রোদ কোথায়? কিন্তু মেঘ জবাব দিলোনা।
একটা শো রুমের সামনে এসে গাড়ি থামলে মিশু অবাক হয়ে নেমে পড়লো গাড়ি থেকে। নামার পর সাইনবোর্ড দেখে বুঝতে পারলো এটা বাস স্ট্যান্ড। ও মেঘালয়ের পাঞ্জাবি খামচে ধরে বললো, “এখানে কেন?”
সামনে একটা বাস দাঁড়িয়ে আছে। মিশুকে বাসের দরজায় এনে বাসে উঠতে বললে ও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বাসে উঠে পড়লো। উঠেই ওর চোখ বড়বড় হয়ে গেলো। সামনের কয়েকটা সিটে ওর সব পরিচিত ব্যক্তিরা। সায়ান,আরাফ, পূর্ব ও রোদ, নিখিল দুপুর সবাই। ও অবাক হয়ে বললো, “কোথায় যাচ্ছো তোমরা?”
সবাই একসাথে চিৎকার করে বললো, “আমরা সাজেক যাচ্ছি।”
মিশু আনন্দে লাফিয়ে উঠলো। এত জোরে লাফালো যে বাসের সব যাত্রীরা ওর দিকে তাকালো। মিশু রীতিমত ডান্স দিতে দিতে এসে মেঘালয়ের হাত ধরে ফেললো। ও উত্তেজনায় কাঁপছে, কথাই বলতে পারছে না। দুম করেই সেই মেঘের দেশ সাজেক! উফফ মেঘ ছুঁয়ে দেখা হবে! আনন্দ আর উত্তেজনায় মিশুর পুরো শরীর কাঁপছে, চোখে পানি এসে গেছে।
মেঘালয় এর হাত ধরে নিয়ে গিয়ে সিটে বসলো। মিশু কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, “কাপড়চোপড় নিয়ে যাবো না?”
– “আমাকে অতটা অকর্মা বর ভাবো? তুমি ভার্সিটিতে থাকা অবস্থায়ই লাগেজ গুছিয়ে রোদের রুমে রেখে এসেছিলাম। ও নিয়ে এসেছে।”
মিশু আনন্দে মেঘালয়কে জড়িয়ে ধরলো। ওর চোখে পানি এসে গেছে। ঢোক গিলে বললো, “আমরা এখন সত্যিই খাগড়াছড়ি যাচ্ছি? অনেক পাহাড় দেখতে পারবো?”
– “হুম পারবা।”
– “আমরা গিয়ে থাকবো কোথায়?”
– “সব ঠিক করা হয়ে গেছে বাবুই, এত টেনশন করতে হবেনা।”
– “সাজেকে পৌছাবো কিসে করে? শুনেছি ওখানে একটা টেম্পুর মত গাড়িতে যেতে হয়?”
মেঘালয় হাসতে হাসতে বললো, “চান্দের গাড়ি। সেটাও ঠিক করা হয়ে গেছে বউসোনা।”
মিশু আনন্দে আবারো লাফানোর চেষ্টা করলো, “আচ্ছা তাহলে আমরা সত্যিই সাজেক যাচ্ছি?”
– “হ্যা রে বাবা,সত্যি যাচ্ছি।”
মিশু মেঘালয়ের বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে বললো, “তুমি খুব ভালো মেঘ, আই লাভ ইউ মেঘমনি। আই লাভ ইউ।”
মেঘালয় মিশুর চুলে একটা আলতো চুমু দিয়ে বললো, “ভালোবাসি মিশু।”
মিশুর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মেঘালয় এত সারপ্রাইজ কেন দিচ্ছে আজ? ছেলেটা খুব বেশি পাগল। কেন যে এত ভালোবাসে! মিশু শক্ত করে আঁকড়ে ধরে ফেলছে ওকে। বাস ছেড়ে দিয়েছে, লাইট নিভিয়ে দিতেই মিশুর আরো আনন্দ হতে লাগলো।
জানালা পুরোটা খুলে দিয়ে মিশু মেঘালয়ের মাথাটা কাছে টেনে নিয়ে ফিসফিস করে গল্প করতে লাগলো।
– “আচ্ছা মেঘমনি, আমি কি পাহাড়ের উপর থেকে মেঘ ছুতে পারবো?”
– “আমাদের কটেজ থেকেই ছুতে পারবা। রুম থেকে বাইরে বের হলেই ছুতে পারবা।”
মিশু মেঘালয়ের পাঞ্জাবির বুক পকেট খামচে ধরে বললো, “ইস! আমাদের ঘরের জানালা খুললে ঘরে মেঘ ঢুকে যাবেনা?”
– “উম পাগলীটা আমার, কত মেঘ ছুতে পারো তাই দেখার জন্য যাচ্ছি। তুমি ছোঁবে আর আমি দেখবো।”
– “আচ্ছা খুব মজা হবে। ইস! আমার তো সুখে মরে যেতে ইচ্ছে করছে গো।”
– “কি যে বলো। আমার মিষ্টি পাগলীটা।”
মেঘালয় মিশুর মাথাটা নিজের কাঁধে নিলো। বাস অন্ধকার, দারুণ বাতাস আসছে জানালা দিয়ে। মিশু মেঘালয়ের কানের কাছে ফিসফিস করে বললো, “রাস্তায় চান্দের গাড়ি থেকে মেঘ দেখা যাবেনা?”
– “সাজেকে গিয়ে দেখতে পারবা। রাস্তায় পাবেনা।”
– “ওহ আচ্ছা। আমাকে পিছন দিক থেকে ধরে রাখবা,আচ্ছা?”
– “তোমাকে বুকের মাঝখানে ধরে রাখবো। আর দুজনে একসাথে মেঘ গায়ে মাখবো।”
মিশু উৎফুল্ল হয়ে বললো, “আমরা মেঘ দিয়ে ভাত খাবো হ্যা?”
– “হ্যা খাবো।”
– “সাথে এক টুকরো আকাশ আর পাহাড় ও থাকবে।”
– “হুম থাকবে।”
– “আমি পাহাড়ের গন্ধ নিবো, মেঘের গন্ধ নিবো, আকাশের বিশালতা নিবো।”
মেঘালয়ের খুব ভালো লাগছে এসব শুনতে। ও আরেকটু উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য বললো, “কেমন হবে বলোতো, আমি সারারাত তোমাকে জ্বালিয়ে ভোরবেলা ঘুমুতে দিয়েছি। যদি আমি খুব ভোরে তোমার ঘুম ভাঙাই? তুমি বিরক্ত হয়ে চোখ মেলবে। চোখ মেলতেই বিছানা থেকে বাইরে চোখ চলে যাবে। চারিদিকে পাহাড়ের গায়ে, সবখানে মেঘ লেগে আছে। মেঘেরা উড়ে উড়ে আসছে, চারিদিকে শুধু মেঘ আর মেঘ। পুরো পাহাড়ের গায়ে মেঘ লেগে আছে, আর তোমার ও পুরো শরীরে মেঘ লেগে আছে।”
মিশু প্রায় কেঁদে ফেলার মত অবস্থা হয়ে গেলো। এত সুখ কেন! এত সুখ কেন! মেঘালয়ের বুকটা খামচে ধরে রইলো ও। সুখে কান্না আসছে, সুখে ভেসে যাচ্ছে ও। এত সুন্দর কেন সবকিছু? সবখানে মেঘ, পুরো পাহাড়ের গায়ে মেঘ লেগে থাকবে, মিশুর পুরো শরীরেও মেঘ লেগে থাকবে। উফফ! ভাবতেই কান্না পেয়ে যাচ্ছে।
মিশু মেঘালয়কে জোরে জোরে খামচে ধরছে। মেঘালয় গান গেয়ে উঠলো গুনগুন করে,
“তোমায় ছোঁবে বলে,আদর করবে বলে,
উড়ে উড়ে আসে এলোমেলো কিছু গান..
ডেকে যায় তোমার আঁচল ধরে..
তুমি ছুলে জল,আমি বৃত্ত হয়ে থাকছি..
দু মুঠো বিকেল যদি চাও ছুড়ে দিচ্ছি..”
মিশু মেঘালয়ের হাতে চিমটি দিতে দিতে বললো,”আজকাল গানগুলোও খুব কেমন যেন! গানেও আদর করে দিতে চায়! আর অনুপম রায়ের কণ্ঠে এই শব্দগুলা শুনলে বুকটা আরো ফাঁকা ফাঁকা লাগে।”
– “হুম। আমার শরীর জুড়ে তোমার প্রেমের বীজ, ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বলো প্লিজ এই লাইনগুলা অনুপম দার গলায় শুনলে আমার দারুণ ফিল হতো। আর ভাবতাম কবে যে একটা ভালোবাসা হবে আমার।”
মিশু হেসে বললো, “সে আমার অজানা নয়। আচ্ছা মেঘমনি, আমরা গিয়ে থাকবো কোথায়? তাবুতে নাকি রুমে?”
– “কাঠের ঘরে থাকবো বউসোনা।”
মিশু উত্তেজিত হয়ে বললো, “ইস! কাঠের ঘরের প্রতি আমার কঠিন রকম দূর্বলতা গো। দোতলায় থাকবো? মেঘ এসে আমাদের গায়ের উপর দিয়ে যাবে? আমার চোখ মুখ ঠোঁট সব ভিজিয়ে দিয়ে যাবে?”
– “তুমি চাইলে মেঘ এখনি এগুলা সব করতে পারে।”
মিশু মেঘালয়ের বুকে কিল বসিয়ে বলল, “খুব খারাপ তুমি।”
– “বারে, এতকিছুর পরও আমি খারাপ?”
মিশু হেসে ওর বুকে মাথা রেখে বললো, “তুমি তো আমার মেঘমনি। আমার কলিজার টুকরা।”
– “আমি একটা টুকরা? আর বাকি টুকরা গুলা কে কে?”
– “কিহ! তুমি খুব পাজি।”
মেঘালয় হো হো করে হাসতে লাগলো। মিশু ক্ষেপে যাচ্ছে। মেঘালয় বললো, “তোমার চুলের গন্ধে আমার ঘুম এসে যায় মিশমিশ। এত নেশা কেন তোমার চুলের গন্ধে?”
– “যাও আর বলতে হবেনা। পাজি লোকটা, দুষ্টু একটা।”
– “আমাদের বাচ্চাটা কিন্তু আমার মত পাজি হবে।”
– “না, আমার মতন ভালো হবে।”
– “তুমি তো বোকা। আমাদের বাবু কখনো বোকা হবেনা।”
মিশু ক্ষেপে বললো, “আমি বোকা?”
– “প্রমাণ চাও?”
কথাটা বলেই মেঘালয় মিশুর ঠোঁট চেপে ধরলো দুই ঠোঁট দিয়ে। ছেড়ে দিতেই মিশু ওর বুকে মাথা রেখে জাপটে ধরলো। মেঘালয় বলল, “দেখেছো তোমাকে ঘায়েল করা কত সহজ?”
মিশু জোরে জোরে দুটো কিল দিয়ে বললো, “যাও খারাপ টা।”
সামনের সিটে নিখিল ও দুপুর বসেছে। নিখিল পিছন দিকে মুখ করে না তাকিয়েই বললো, “এখনো তোমাদের প্রেম দেখি বিয়ের প্রথম দিনের মতই আছে।”
মেঘালয় বললো, “না। মেঘালয়ের মেঘালয়া পুরনো হয়ে গেছে। আমি জোর করে প্রেম চালিয়ে যাচ্ছি।”
মিশু মেঘালয়কে আবারো মাইর শুরু করে দিলো, “আমি পুরনো হয়ে গেছি? আমি পুরনো হয়ে গেছি?”
মাইর খেয়ে মেঘালয় বললো, “না না। আমার মেঘালয়া সবেমাত্র নাবালিকা থেকে কৈশোরে পদার্পণ করছে। থার্টি সিক্স টুয়েন্টি ফোর থার্টি সিক্স।”
নিখিল হেসে উঠলো। মিশু ক্ষেপে জানালা দিয়ে বাইরে মাথা বের করে দিলো। মেঘালয় টেনে এনে ওর মাথাটা নিজের কাঁধে নিয়ে বললো, “বাইরে মাথা রাখবা না।”
মিশু ওর কাঁধে মাথাটা গুঁজে দিয়ে হাত ধরলো মেঘালয়ের। মেঘালয় মিশুর আঙুলের ফাঁকে আঙুল রেখে বললো, “কতবার তোর বাড়ি গিয়ে গিয়ে ফিরে এলাম, আমার মতে তোর মতন কেউ নেই।”
– “আমার মতেও তোমার মতন কেউ নেই মেঘ।”
– “মেঘের দেশে নিয়ে যাচ্ছি তোমায়-
পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে নক্ষত্রের ছায়া, মেঘালয়ার চোখে মেঘালয়ের মায়া।”
চলবে..