অনুভূতি
পর্ব ১৯
মিশু মনি
.
৩১.
বিয়ের সমস্ত প্রস্তুতি শেষ। মেঘালয় দরজায় গিয়ে মিশুকে ডাকলো।
মিশু দরজা খুলতেই দারুণ ভাবে চমকে গেলো মেঘালয়। লাল শাড়ি,ঘোমটা, আর পুরো কনের সাজে মিশুকে স্বর্গ থেকে নেমে আসা কোনো পরি মনে হচ্ছে। মিশু যে এত সুন্দর সেটা আজকের সাজে না দেখলে ও হয়ত বুঝতেই পারতো না। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো মিশুর দিকে।
মিশুও বেশ অবাক। খয়েরি রঙের পাঞ্জাবি আর কালো জিন্সে মেঘালয়ের রূপ যেন আরো ফুটে উঠেছে। কি পরিমাণ সুন্দর লাগছে সেটা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না। গোসলের পর একটা স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে আছে মেঘালয়ের মুখে। ভেজা চুলে,লাল খয়েরি রঙের পাঞ্জাবি পড়ে ওর স্নিগ্ধ চেহারা আরো স্নিগ্ধ রূপ ধারণ করেছে।
মেঘালয় ই প্রথম কথা বললো, “মিশু! এটা তুমি!”
– “কেন?”
মেঘালয় দু পা এগিয়ে আসতেই মিশু একটু পিছিয়ে গেলো। মেঘালয় একহাত ওর কোমরে রেখে একটানে ওকে বুকে টেনে নিয়ে ওর মুখটা দুহাতে ধরলো। মিশু অবাক হয়ে বললো, “কি করছেন?”
– “আমার মিষ্টি বউয়ের সাথে শুভদৃষ্টি করছি।”
মিশুও মেঘালয়ের চোখে চোখ রাখলো। এত কাছ থেকে ওর স্নিগ্ধ মুখটা দেখে বুকের ভেতরে ধুকপুকুনিটা আরো বেড়ে গেলো যেন। এত সুন্দর একটা ছেলে ওর বর হতে চলেছে! ভাগ্য করে একটা রাজকুমার কে পেয়েছে ও। সত্যিই মেঘালয় অনেক বেশি সুন্দর!
একে অপরের চোখের দিকে অনেক্ষণ চেয়ে রইলো এভাবে। মিশুর চোখের পাতা ঘনঘন কাঁপছে। এর আগে কখনো মেয়েটাকে লিপস্টিক দেয়া অবস্থায় দেখেনি ও। আজকে দেখে কেমন যেন অস্থিরতা কাজ করছে ভেতরে। একটা কিউট ভাব আছে চেহারায়। মেঘালয় চোখ বড়বড় করে চেয়ে রইলো। মিশু একটু নড়াচড়া করে বললো, “উহ ছাড়ুন তো।”
মেঘালয় ওকে ছেড়ে দিয়ে লাজুক ভঙ্গিতে মাথা চুলকালো। তারপর বললো, “আসো, বিয়ে করবো।”
মিশুর হাসি পেলেও খুব ভালো লাগলো কথাটা শুনতে। এভাবে কেউ কখনো বিয়ের কথা বলে নাকি? লজ্জা করছে তো। লজ্জায় ওর লাল মুখটা আরো লাল বর্ণ ধারণ করলো। মেঘালয় মিশুর হাত ধরে ওকে বসার ঘরে নিয়ে আসলো। বর কনেকে একসাথে দেখে ওর তিন বন্ধুই মুগ্ধ হয়ে গেলো। দুজনকে বেশ মানিয়েছে। মিশু এত সুন্দর সেটা ওরাও আগে বুঝতে পারেনি। তিনজন ই নতুন বউয়ের প্রশংসা করতে লাগলো। একা একা শাড়ি পড়ার কারণে কুচিগুলো একটু এলোমেলো হয়েছে। তবুও ভালো লাগছে, মনেহচ্ছে কুচিগুলো গোছালো হলে ভালো লাগতো না।
এরপর বিয়ে পড়ানোর কাজ শুরু হলো। বুকের ভিতর টা কেমন ঢিপঢিপ করছে মিশুর। বিয়েটা তো জীবনে একবার ই হয়,সেটা করতে চলেছে ও। অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছে। মেঘালয়ের মত একজনকে সারাজীবনের কত করে পাচ্ছে সেটা যেন স্বপ্নাতীত ব্যাপার। স্বপ্ন বাস্তবে নেমে এসেছে মনেহচ্ছে। ও একবার মনেমনে নিজের মাকে মনে করলো। আম্মুকে ফোন দিয়ে বললো, “আমার জন্য দোয়া করো আম্মু।”
আর বিশেষ কিছুই বললো না। ফোন রাখতেই কাজি ওনার কর্মকাণ্ড শুরু করে দিলেন। মেঘালয়ের খুব কাছের একজন চাচা আছেন, ওনাকে ডেকে এনেছে মেঘালয়। একজন মুরুব্বি অন্তত বিয়েতে উপস্থিত থাকুক। চাচা অনেক বিশ্বস্ত, মেঘালয়ের সব কথা উনি রাখবেন। একজন বড় ভাইকেও নিয়ে এসেছে ওরা।
সুপ্রসন্ন ভাবে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলো। মিশুর প্রথমে বুক কাঁপলেও পরে বেশ উত্তেজিত বোধ করলো। কেবলই মনে হতে লাগলো, বিয়ের মত মজার জিনিস বোধহয় আর হয়না। ওকে কবুল বলতে বলামাত্রই কবুল বলে দিলো। রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করার সময়েও মুখে প্রসন্ন হাসি ছিলো। কিন্তু কলম ধরার সময় মেঘালয়ের হাত কাঁপছিল, কারো চোখ এড়ায়নি ব্যাপার টা। মেঘালয় ছেলেটা সত্যিই অনেক ভালো।
বিয়ের কাজ শেষ হয়ে গেলে গেস্ট দুজন সহ সবাই একসাথে মিষ্টিমুখ ও খাওয়াদাওয়া করলো। তারপর গেস্টরা ও কাজি চলে গেলে পূর্ব বললো, “ওরা দুজন থাক,আমরা বরং বের হই?”
মেঘালয় বললো, “কই যাবি তোরা?”
– “আমরা থেকে কি করবো এখানে? পার্টি হবে রাতে। আমরা তিন জন এখন মিনি কক্সবাজার যাচ্ছি,সূর্যাস্ত দেখে তারপর ফিরবো। রাত্রে ফেরার সময় পার্টির জন্য যা লাগে কিনে নিয়ে আসবো।”
– “মিনি কক্সবাজার মানে? এখন তোরা মৈনট যাচ্ছিস?”
– “আজ্ঞে হা, আপনি তো বউ নিয়ে স্বর্গে যাবেন, আমরা কি ঘাস কাটবো? ঘুরে আসি।”
মেঘালয় হেসে বললো, “আচ্ছা যা। রাত্রে খাবার নিয়ে আসিস।”
সায়ান ইয়ার্কি করে বললো, “মামা তুমি আরো কি খাবার চাও? লিপস্টিক আজ থেকে তোমার প্রধান খাদ্য।”
বলেই ওরা তিনজন হেসে উঠলো। মেঘালয়ের সাথে খুনসুটি লেগে গেলো ওদের। মিশু লজ্জা পাচ্ছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। সেও মুখ টিপে হাসছে। যেন ওদের ফাজলামো দেখে মজ্জা পাচ্ছে বেশ।
ওরা ক’জন বন্ধু মিলে অনেক ফাজলামি করে বের হওয়ার জন্য দরজায় গেলো। সায়ান নব দম্পতির দিকে তাকিয়ে বললো, “মাত্র তো দুপুর দুইটা বাজে। রাত দশটা পর্যন্ত পুরা বাড়ি শুধু তোদের। ফিরে এসে যেন দেয়ালে দেয়ালে প্রেমের চিহ্ন দেখতে পাই।”
মেঘালয় হেসে বললো, “অনেক হইছে ভাই, এখন যাবি?”
– “এখন আমাদের তাড়িয়ে দিচ্ছিস? ভালোই। শোন, চিপাচাপায় কিন্তু সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। আমরা না থাকলে কি হবে? আমাদের ক্যামেরা আছে। মেঘ দেখে কেউ করিস না ভয়,আড়ালে তার ক্যামেরা আছে।”
বলেই চোখ মারলো। মেঘালয় ভ্রু কুঁচকে বললো, “সিরিয়াসলি?”
তিন বন্ধু হো হো করে হেসে উঠলো। আরাফ বললো, “ওর পুঁচকে বউ ভয় পেয়ে যাবে তো। তোরা ইয়ার্কি থামাবি এখন? তাড়াতাড়ি চল।”
– “আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছি। মেঘালয়, তোদের বাসর রাত থুক্কু বাসর দিন শুভ হোক।”
ওরা হাসাহাসি করতে করতে চলে গেলো। মেঘালয় মেইন দরজা লাগিয়ে দিয়ে এসে মিশুর দিকে তাকিয়ে বললো, “ওদের ফাজলামি দেখে কিছু মনে কোরো না। ওরা এরকম ই।”
– “সে তো প্রথম দিনেই জেনেছি। কিছু মনে করিনি।”
– “প্রথমবার রাতে রাস্তায় দেখা হইছিলো না? সায়ান তোমাকে ভাবি বলেছিলো? হা হা, শেষ অব্দি ওর ভাবি ই হয়ে গেলে তাহলে।”
মিশু হাসলো। তারপর এগিয়ে এসে মেঘালয়ের সামনে স্থির হয়ে দাঁড়ালো। মেঘালয়ের দিকে আঙুল তুলে বললো, “আমি পুঁচকে? আমি বাচ্চা? আমাকে কি বাচ্চাবাচ্চা লাগছে?”
মেঘালয় ওর আঙুল ধরে বললো, “নাহ, বিপজ্জনক লাগছে। রেড সিগন্যাল বরাবর ই বিপদজনক। ভয় পাচ্ছি।”
– “মানে!”
– “বুঝাচ্ছি।”
মেঘালয় দুম করেই মিশুকে কোলে তুলে নিলো। মিশু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো ওর দিকে। মেঘালয় ওকে কোলে নিয়ে এমন একটা রুমে চলে আসলো যার চতুর্দিকেই গ্লাস লাগানো। যেদিকে তাকাচ্ছে শুধু ওদের দুজনকেই দেখা যাচ্ছে। ফুল আর বেলুন দিয়ে সাজানো, তিনরকম আলো খেলা করছে ঘরটাতে। এসির শীতল হাওয়া আর শিউলি ফুলের ঘ্রাণ নাকে এসে লাগছে। চারিদিকের গ্লাসের সামনে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে, সেই ফুলের মাঝে ওদেরকে দেখতে পাচ্ছে মিশু। মেঘালয় ওকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কেমন যেন চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে ওর। মুগ্ধতার চেয়ে বেশি কিছু থাকলে সেটাই হলো ও। ঘরে ঢুকেই মনেহচ্ছে অন্য একটা জগতে চলে এসেছে ওরা। সম্ভবত থ্রিডি আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করেছে ঘরটাতে, নয়ত এরকম চোখ ধাঁধিয়ে যায় কেন?
মিশু দুহাতে মেঘালয়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলল, “এত সুন্দর কেন!”
– “তোমার জন্য।”
মিশুকে এনে একটা দোলনায় বসিয়ে দিলো ও। দোলনা দোল দিতেই মিশু দোলনার রশি দুহাতে চেপে ধরলো। মেঘালয়ের থেকে কয়েক হাত পিছিয়ে গেলো দোলনাটা। মিশু কিছুতেই ওর বিস্ময় চেপে রাখতে পারছে না। দোলনার রশিতেও ফুল দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যরকম সুবাস মিশে আছে সবকিছুতে। দোলনা অনেক দূর পিছিয়ে এসে আবার যখন সামনের গিয়ে এগিয়ে এলো, মেঘালয়ের সামনে আসতেই মিশু বুঝে উঠতে পারলো না কি হচ্ছে। মেঘালয় আচমকা দোলনা আটকিয়ে দিয়ে মিশুর মুখটা ধরে ওর ঠোঁটে ঠোঁট দিয়ে চাপ দিলো। এটা বুঝতে অনেক সময় লেগে গেলো মিশুর। ওর দারুণ ঘোর লেগে যাচ্ছে। এরকম অনুভূতি সত্যিই অভাবনীয়, কেবল স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছে সবকিছু!
মেঘালয় মিশুকে ছেড়ে দিয়ে জোড়ে একটা নিশ্বাস নিয়ে বললো, “উফফ রাঙা ঠোঁটদুটো দেখার পর থেকে এটা করার জন্য পাগল হয়ে গেছিলাম।”
বলেই হেসে ফেললো। মেঘালয় দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটা অনেক লম্বা। মিশু দোলনায় বসে ওর বুক অব্দি পৌছে গেছে। জাপটে ধরলো দুহাতে। মেঘালয় বললো, “এখন থেকে যখন তখন এরকম ভয়ংকর আক্রমণ হবে তোমার উপর। প্রস্তুত থেকো।”
– “আপনি একটা খুব খারাপ। খারাপের চেয়েও বেশি খারাপ।”
-“হা হা হা, সারাজীবনের কত ফ্যান্টাসি জমিয়ে রেখেছি তোমার জন্য। আস্তে আস্তে দেখবে কত সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে তোমার জন্য। এই রুমের সাজসজ্জা দেখছো না? এটাও আমার একটা ফ্যান্টাসি ছিলো। এটা তো আমার প্লান মতই সাজানো হয়েছে।”
– “অদ্ভুত রকমের সুন্দর, মনেহচ্ছে অন্য কোনো পৃথিবীতে চলে এসেছি। এত টাকা খরচ করার কি দরকার ছিলো?”
– “একবার ই তো বিয়ে করছি রে, পরেরবার ওয়েডিং প্রোগ্রামে এত মজা হবেনা। আমার আনাড়ি বউটা তখন সেয়ানা হয়ে যাবে।”
মিশু ক্ষেপে গিয়ে বললো, “আপনি এত খারাপ কেন শুনি? পাজি কোথাকার।”
মেঘালয় মিশুকে দোলনা থেকে নামিয়ে এনে মেঝেতে বসিয়ে দিলো। রুমের সমস্ত আলো নিভিয়ে দিলো। মিশু হা করে সবকিছু দেখছে। অন্ধকারে দারুণ সুগন্ধিতে ভরে গেছে ঘরটা, আর এসির হিমেল হাওয়ায় সত্যিই অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে।মনেহচ্ছে শীতের রাতে ও বাইরে ঠাণ্ডা ঘাসের উপর বসে আছে। মেঘালয় একটা মোমবাতি হাতে ঘরে প্রবেশ করলো। মিশুর বিস্ময় চরমে পৌছে গেছে। ঘরের চারিদিকেই মেঘালয়কে দেখা যাচ্ছে। ও ঘুরেঘুরে চারপাশে তাকাচ্ছে। চারদিকেই মেঘালয়ের প্রতিচ্ছবি! অন্ধকারে মোমের আলোয় শুধু মেঘালয়ের শুভ্র মুখটাই দেখা যাচ্ছে। হালকা খয়েরি পাঞ্জাবীতে ছেলেটার স্নিগ্ধ মুখটা মোমের আলোয় অন্যরকম দেখাচ্ছে। মেঘালয় এসে মেঝেতে মিশুর পাশে বসে পড়লো। মিশুর মাথাটা নিজের কাঁধে রেখে আরাম করে বসলো। মিশু মাথাটা ওর কাঁধে রাখার পর সামনে তাকিয়ে দেখে মোমের আলো আয়নায় রিফ্লেক্ট করছে, ঘরটা দারুণ আলোয় ভরে গেছে। মনেহচ্ছে ঘরে অনেক গুলো মোম জ্বলছে। আর মোমের মিষ্টি আলোয় দুজন সদ্য বিবাহিত বর বউ বসে আছে। আবছা আবছা আলোয় কত সুখী দেখাচ্ছে দুজনকে। এত সুখের মুহুর্ত যেন কখনো শেষ না হয়!
মেঘালয় একহাত মিশুর কোমড়ে রেখে আলতো চাপ দিয়ে ওকে একদম কাছে টেনে নিলো। মিশু লজ্জায় চোখ মেলতে পারছে না। ওর সবকিছু ঘোর ঘোর লাগছে। মেঘালয় মিশুকে কাতুকুতু দিয়ে নিজেই হেসে উঠলো। মিশু তিড়িং তিড়িং করে লাফিয়ে উঠে দাঁড়ালো। মেঘালয় হাসছে। মিশু ক্ষেপে বললো, “এত দুষ্টু ক্যান আপনি?”
মেঘালয় গান গেয়ে উঠলো,
“কথা হবে,দেখা হবে, প্রেমে প্রেমে মেলা হবে,
কাছে আসা আসি আর হবেনা…
চোখে চোখে কথা হবে, ঠোঁটে ঠোঁটে নাড়া দেবে,
ভালোবাসা বাসি আর হবেনা…
শত রাত জাগা হবে,থালে ভাত জমা রবে,
খাওয়া দাওয়া কিছু মজা হবেনা…
হুট করে ফিরে এসে লুট করে নিয়ে যাবে
এই মোন ভেঙে যাবে জানো না…
আমার এই বাজে স্বভাব কোনোদিন যাবেনা…”
এতটুকু গেয়েই মিশুর হাত ধরে টেনে ওকে বুকে নিলো। নিয়ে আবারো কাতুকুতু দিলো। মিশু আবারো তিড়িংবিড়িং করে লাফিয়ে উঠে পিছিয়ে গিয়ে বললো, “আসলেই বাজে স্বভাব। বাজে বাজে, চরম বাজে একটা লোক আপনি।”
মেঘালয় আবারো গাইতে আরম্ভ করলো,
“যদি তুমি ভালোবাসো, ভালো করে ভেবে এসো
খেলে ধরা কোনোখানে রবেনা,
আমি ছুঁয়ে দিলে পরে,অকালেই যাবে ঝরে
গলে যাবে যে বরফ গলেনা…
আমি গলা বেঁচে খাবো, গানের আশেপাশে রবো
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে কথা হবেনা…
কারো একদিন হবো, কারো এক রাত হবো
এরবেশি কারো রুচি হবেনা…
আমার এই বাজে স্বভাব কোনোদিন যাবেনা…”
মিশু মেঘালয়ের কাছে এসে দাঁড়ালো। ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, “গলা বেঁচে খান, গান করুন, বড় শিল্পী হোন, যাই করুন ঠোঁটে ঠোঁট রেখে কথা বলতেই হবে। আর কারো রুচি হওয়ার দরকার তো নেই, আমার রুচি থাকলেই হলো।”
মেঘালয় হেসে ফেললো। মিশুকে নিয়েই দোলনায় বসে মিশুর মাথাটা নিজের কাঁধে নিয়ে বলল, “আমার পাগলী টা।”
– “গানটা ভালো লেগেছে। আপনি সত্যিই একদিন অনেক বড় শিল্পী হবেন।”
– “বউয়ের দোয়া কি কাজে লাগে? লাগলে হয়ে যাবো। তা বউটা আমাকে কতক্ষণ আরো আপনি আপনি করে বলবে?”
মিশু হাসলো। মেঘালয়ের কাঁধে মাথা রেখে দোলনায় দোল খেতে লাগলো।
চলবে..