অতঃপর প্রেম পর্ব-২+৩

0
2155

#অতঃপর_প্রেম🍃
#পর্ব_০২ ও ০৩
#লেখনীতে_আয়ানা_আরা (ছদ্মনাম)
সকালে পাশে বাসার কাজের শব্দে ঘুম ভাঙে আমার। আমি কোনো মতে বালিশ দিয়ে কান চেপে চিৎকার করে বলি,’ওই এতো সকাল সকাল কাজ করতে হয়। আমার স্বাদের ঘুমটারে নষ্ট করে দিলি রে।’

সমস্যা এটা না সমস্যা হলো আমার রুমের পাশেই কিচেন যেটা এখন আম্মুর দখলে। আম্মু আমার চিৎকার শুনে খুন্তি নিয়ে এসে বলে,’কিরে মেহেক সাত সকালে এতো চেঁচাচ্ছিস কেনো?’

আমি আম্মুকে কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলি,’দেখো আম্মু মিস্ত্রি আংকেলরা তোমার মেয়ের স্বাদের ঘুম নষ্ট করে দিলো।’

আম্মু বিরক্তি নিয়ে বলে,’তো এতে এতো চেঁচানোর কি আছে?’

আমি বলি,’তোমার কি একটুও কষ্ট হলো না?’

আম্মু একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,’না।’

আম্মুর কথা শুনে আমি মুখ বেকিয়ে বিরবিরিয়ে বলি,’এইরকম মা যেনো আল্লাহ আমার শত্রুকেও না দেয়,,আমিন।’

আমার বিরবিরানো শুনে আম্মু বলে,’কি হয়েছে?কি বিরবিরাচ্ছিস এতো?’

আমি আম্মুর কথা শুনে জোরপূর্বক হেসে বলি,’কিছু না আম্মু।’

‘আচ্ছা শুন ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে নে।’

আমি ছোট করে ‘আচ্ছা’ বলি। আম্মু চলে যাওয়ার পর আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে গেলাম। ব্রেকফাস্ট টেবিলে ব্রোকোলি ভাজি আর রুটি দেখে আমি ন্যাকা কান্না জুড়ে চিৎকার করে বললাম,’আম্মুউউউ ব্রোকোলি আমি খাই না তাও কেনো বানিয়েছো??’

আমার চিৎকার শুনে আম্মু দৌড়ে রান্নাঘর থেকে এসে বলে,’কি হয়েছে চেঁচাচ্ছিস কেনো?’

‘তুমি আবার আজকে ব্রোকোলি বানিয়েছো কেনো?’

‘আমার বাচ্চাটা শুন ব্রোকোলি খেলে তোর এই গবর ভরা মাথায় একটু বুদ্ধি আসবে তাই চটপট এটা শেষ কর।’

আমি মুখ ফুলিয়ে বলি,’আমার মাথায় গবর আছে?’

আম্মু হেসে বলে,’হ্যা তা তো আছেই।’

আমি কিছু না বলে মুখ ফুলিয়ে রাখলাম। আম্মু আমার কাছে এসে গাল টেনে বলে,’বল কি খাবি?’

আম্মুর কথা শুনে আমার চোখ খুশিতে জ্বলজ্বল করে উঠে। আমি উৎফুল্ল হয়ে বলি,’সত্যি আমি যা বলবো তাই বানাবা?’

আম্মু হেসে বলে,’হুম।’

‘আচ্ছা ঠিকছে স্যান্ডউইচ,নুডুলস আর কিছু না।’

‘আমি শুধু স্যান্ডউইচই বানাতে পারবো আর কিছু না।’

আম্মুর কথা শুনে আমার মনটা খারাপ হয়ে যায় তাও বলি,’আচ্ছা ঠিকাছে।’

আম্মু স্যান্ডউইচ বানাতে চলে যাওয়ার পর আমি ফোন নিয়ে সোফায় বসি। ফোন অন করতেই ত্রিশটা মোমোর কলের নোটিফিকেশন আসে। আমি মোমোকে কল ব্যাক করতেই ওই পাশ থেকে চেঁচামেচির আওয়াজ আসে।

‘দোস্ত টিকে গেছি আমরা লালালালালা!!’

ওর চিৎকার শুনে আমি কান হাত দিয়ে চেপে বলি,’আমি পালিয়ে যাচ্ছি না সুন্দর করে বল।’

মোমোর ঘনঘন নিঃশ্বাসের আওয়াজ শুনতে পেলাম। ও বলল,’শুন ঢাকা মেডিক্যালে আমাদের চান্স হয়ে গেছে।’

মোমোর কথা শুনে আমি এক লাফ দিয়ে সোফা থেকে উঠে। চিৎকার করে বলে উঠলাম,’কিহহহহ’

‘হুম।’

আমার চিৎকার শুনে আম্মু এসে বলে,’আচ্ছা মেহেক এতো চিল্লাচ্ছিস কেনো আজ সকাল থেকে?’

আমি দৌড়ে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বলি,’আম্মু আমার চান্স হয়ে গেছে।’

আমার কথা শুনে আম্মু ভ্রুকুচকে বলে,’সত্যি নাকি মিথ্যা?’

আমি আম্মুকে ছেড়ে বলি,’তুমি আমাকে বিশ্বাস করো না একটুও?’

আম্মু কিছুক্ষন চিন্তা করে বলে,’ঠিক তা না তোকে আমি বিশ্বাস করি কিন্তু এইটা বিশ্বাস করতে পারছি না। তোর মতো গবরওয়ালি আবার ঢাকা মেডিক্যালে চান্স পাবে বিষয়টা খুব অদ্ভুত।’

‘কিন্তু এইটা সত্যি। তোমার বিশ্বাস না হলে মোমোকে জিজ্ঞেস করো।’

‘না লাগবে না। আমি অনেক খুশি শেষ মেষ আমার মেয়েটা ভালো কোনো কিছু করতে পারবে।’

রাতের খাবার টেবিলে-

‘বাহ কাল থেকে তাহলে যাচ্ছো?’

‘হুম আব্বু।’

‘আচ্ছা গবরওয়ালি তুই চান্স পেলি কেমনে?চিটিং ফিটিং তো করিস নি?’

আমি মেহেদী ভাইকে চিমটি দিয়ে বলি,’চুপ থাক তুই।’

‘আমি চুপ থাকবো কেনো?একশ বার কথা বলবো আমি😤’

‘তাহলে বল।’

‘আমি কথা বলবো কেনো? তুই যেটা বলবি সেটাই কি করতে হবে আমার?’

‘মেরি ভাই,,আল্লাহর দোহায় লাগে চুপ কর।’

আম্মু,আব্বু দুইজনেই হাসছে। আমি আর ভাইয়া তাদের দিকে ভ্রুকুচকে তাকাতেই তারা চুপ হয়ে খেতে থাকে। আমরা ডিনার করে যে যার রুমে চলে যাই। আমি আমার রুমে যাওয়ার সময় ভাইয়া আমাকে টেনে তার রুমে নিয়ে যেয়ে বলে,’বোনু মেয়েদের কি পছন্দ?’

আমি ভাইয়ার দিকে ভ্রুকুচকে তাকাই। ভাইয়া হাত জোর করে বলে,’প্লিজ বল না’

আমি ভ্রুনাচিয়ে বলি,’ভাবী রাগ করেছে?’

ভাইয়া আমার কথা শুনে অপ্রস্তুত হয়ে উঠে তা দেখে আমি হেসে বলি,’আমি তোদের সব কথোপকথন শুনে ফেলেছিলাম।’

‘তুই তো বড্ড পেকে গেছিস!আমার জাসুসি ও করা শুরু করলি।’

আমি ভাইয়াকে জ্বালানোর জন্য বত্রিশ দাঁত বের করে হেসে বলি,’হুম😁’

‘তবে রে!’

আমাকে আর পায় কে?এক ভোঁ দৌড় দিয়ে রুমে যেয়ে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে হাঁপাতে থাকি। মেহেদী ভাইয়া বাহির থেকে ধাক্কাতে থাকে আমি বিছানায় বসে মজা নিচ্ছিলাম। অনেক ক্লান্ত থাকার কারণে আমি ঘুমিয়ে পরি। সকালে আম্মুর চেঁচানোর শব্দে ঘুম ভাঙে। ঘুমু ঘুমু চোখে দেখি আম্মু নিজে নিজে বকবক করছে। আমি বলি,’কি হয়েছে?’

‘মেডিক্যাল যাবি না?আজ না তোর ক্লাস আছে।’

‘হুম যাবো এখন তো সময় হয়নি।’

‘কে বলল সময় হয়নি?কখন ক্লাস জানিস?’

‘৯ঃ০০ টা থেকে।’

‘এখন আটটা বাজে।’

আম্মুর কথা শুনে আমি লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে দৌড় দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যাই। কোনো মতে রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট টেবিলে যাই। আম্মু আমাকে দেখে বলে,’নাস্তা করে যা।’

‘সময় নেই তো।’

‘খালি পেটে যাবি?’

আমি আর কিছু না বলে একটা ব্রেড মুখে পুড়ে দৌড় দিলাম। আমাদের বাসা থেকে মেডিক্যাল এতো দূরে না তাই আমি রিকশা নিয়ে মেডিক্যালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মেডিক্যালে পৌছে আমি রিকশাওয়ালার ভাড়া মিটিয়ে দৌড় দিলাম। সবাই আমার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে। আশ্চর্য তো এইভাবে তাকিয়ে থাকা কি আছে,আমি সুন্দর আমি জানি তাই বলে তাকিয়ে থাকার মানে হয় না।

এক দৌড়ে ক্লাসে পৌছে হাঁপাতে থাকি। হঠাৎই কাঁধে কারো শীতল স্পর্শ পেয়ে মাথা তুলে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে ভ্রুকুচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বলি,’কে তুমি?’

মেয়েটা হেসে বলে,’আমি নিশা। তুমি?’

‘আমি মেহনাজ মেহেক।’

মেয়েটা হেসে বলে,’নাইস নেইম। তুমি এই ক্লাসে নিউ রাইট?’

‘হুম।’

‘আমিও নিউ।’

আমি কিছু না বলে মুচকি হেসে এদিক ওদিক তাকাতে থাকি তা দেখে নিশা বলল,’এনি প্রব্লেম? তুমি কি কারো জন্য ওয়েট করছো?’

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বলি,’হুম’

…..

( এটা সম্পূর্ণ কাল্পিনক গল্প তাই এটা কাল্পনিক ভাবেই নিবেন,,এটাকে বাস্তবের সাথে মিলাবেন না। ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। হ্যাপি রিডিং)

#অতঃপর_প্রেম🍃
#পর্ব_০৩
#লেখনীতে_আয়ানা_আরা (ছদ্মনাম)

কিছুক্ষন পর মোমোর ফোন আসে আমি ফোন উঠিয়ে বলি,’হ্যালো’ বলতেই মোমো বলে,’দোস্ত একটা ব্যাড নিউজ আছে।’

মোমোর কথা শুনে আমি হচকিয়ে বলি,’মানে কি বলছিস?’

মোমোর ফুঁপানোর শব্দ কানে ভেসে আসে। আমি মোমোকে বলি,’কিরে মোমো কাঁদছিস কেনো?’

মোমো ফুঁপাতে ফুঁপাতে বলে,’দোস্ত আমার চান্স হয় নাই’

‘মানে কি যা তা বলছিস তাহলে লিস্টে কার নাম ছিলো।’

‘ওইটা অন্য মোমোর নাম ছিলো।’

আমি কিছু বললাম না। কি এই বা বলবো। ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমি। মোমো আবার বলে,’আমাদের ফ্রেন্ডশিপ জার্নিটা হয়তো এতোটুকই।’

‘চুপ থাক বেশি কথা বলছিস তুই। আমরা সবসময় বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলাম আর থাকবো।’

এই কিছুক্ষন মোমোকে শান্তনা দিয়ে আমি কল কেটে দেই। নিশা আমাকে বলে,’কি হয়েছে?তোমার ফ্রেন্ড কি আসবে না?’

আমি ফোন ব্যাগে রেখে বলি,’না আসবে না।’

‘কিন্তু কেনো?’

আমি নিশাকে সব খুলে বলি। সব শুনে নিশা আফসোসের সুরে বলি,’ওহো! বেচারি মেয়েটা কতো আশাই না ছিলো ওর এক নিমিষেই সব ভেস্তে গেলো!’

আমিও সায় দিয়ে বলি,’হুম।’

‘হেই গাইস।’

হঠাৎই কোনো পুরুষালি কন্ঠ শুনে আমি আর নিশা তার দিকে তাকাই। নিশার ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে। আমি তো সামনের ব্যক্তিকে দেখে অবাকের সাত আসমান পাড় করে ফেলছি। কারণ ব্যক্তিটা আর কেউ না সাদ আনান রোদ!আমার কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে। নিশা আমাকে দেখে ভ্রুকুচকে বলে,’কি হয়েছে মেহেক?

আমি নিশার দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক হেসে বলি,’কিছু না এমনিতেই।’

‘ওহ’

রোদ স্যার পড়ানো শুরু করলেন।উনি আমাকে খেয়াল করেননি। উনি বই নিয়ে এদিক ওদিক হাঁটছেন আর পড়াচ্ছেন। আমার দিকে আসতেই আমি বই দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলি। হঠাৎই জোরে কিছুর শব্দে মাথা তুলে তাকিয়ে দেখি রোদ স্যার আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। তবে চাহনিটা খুবই স্বাভাবিক। উনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন,’মিস আপনি কি এইখানে পড়াশোনা করতে আসছেন নাকি ঘুমাতে?’

আমি এখনো উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি আমার সামনে এসে তুড়ি বাজিয়ে বলেন,’হেই!’

আমার ধ্যান ভাঙতেই আমি বলি,’জ-জ্বী আমাকে বলছেন?’

রোদ স্যার ফুস করে একটা শ্বাস ছেড়ে বলে,’ওপস সরি এইখানে তোমার মতোই আরেকটা স্টুডেন্ট আছে।’

উনার কথা শুনে আমি বোকা বনে গেলাম। লোকটা দেখি ভারী পাজি!

‘আহহ রোদ ছাড়ো না এতো বকার কি আছে?’

পাশ থেকে নিশা কথাটি বলে উঠে। রোদ নিশার দিকে বিরক্তি চাহনি দিয়ে বলে,’তোমাকে আমি কতোবার বলেছি আমার কাজে ইন্টারফেয়ার করবা না।’

‘রোদ!’

রোদ স্যার ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,’শাট আপ।’

এই বলে তিনি চলে যান। আমি ড্যাবড্যাব করে নিশার দিকে তাকিয়ে আছি। রোদ স্যার যেতেই নিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। আমি নিশাকে জিজ্ঞেস করি,’নিশা রোদ স্যারকে তুমি আগে থেকে চিনো?’

নিশা মুখ কালো করে বলে,’হুম চিনি।’

‘কে হয় তোমার?’

‘ফুপাতো ভাই আর সাথে আমার হবু বর।’

নিশার কথা শুনে আমি চমকে উঠি। ও যখন শুনতে পারবে ওর হবু বরের বিয়ে হয়ে গেছে বেচারি কতোই না কষ্ট পাবে।

আমি কথা ঘুরিয়ে বললাম,’আচ্ছা নিশা তোমার পরিবারে কে কে আছে?’

‘বাবা,বোন,মা। তোমার পরিবারে কে কে আছে?’

‘বাবা,মা,ভাই।’

‘ওহ।’

‘এইযে আপনারা এইখানে গল্প করতে এসেছেন?’

পিছন থেকে রোদ স্যার কথাটি বলে উঠলেন। আমি উনার দিকে তাকিয়ে অবুঝ বাচ্চাদের মতো বললাম,’ওহ সরি আমি খেয়াল করিনি আপনি যে আছেন।’

রোদ স্যার নিজের হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে নিলো। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,’ক্লাস শেষে তোমাকে আমার ডেস্কে চাই।’

তারপর একটা মেয়েকে ইশারা করে বলল,’সারা ওকে আমার ডেস্কে নিয়ে এসো ক্লাস শেষে।’

‘জ্বী রোদ স্যার।’

ক্লাস শেষে রোদ স্যার চলে গেলেন। নিশা আমাকে বলল,’আচ্ছা রোদ তোমাকে কেনো ডাকলো?’

‘জানি না,,গেলেই বুঝতে পারবো।’

সারা নামের মেয়েটার সাথে রোদ স্যারের ডেস্কে গেলাম। রোদ স্যার সারাকে যেতে বলে। সারা চলে যেতেই সে আমাকে বলে,’নিজেকে অনেক স্মার্ট ভাবো তাই না?’

উনার কথার আগা মাথা কিছুই বুঝি নাই আমি তাই বললাম,’মানে?’

রোদ স্যার দাঁড়িয়ে আমার হাত চেপে ধরে বলেন,’নিশাকে এই বিয়ের ব্যপারে কিছু বললে খবর আছে তোমার।’

উনি এতো জোরেই ধরেছেন যে আমার হাতের কাঁচের চুড়ি গুলো ভেঙে হাতে বিধে যায়। আমি ব্যথায় কুঁকড়ে উঠি। উনি তা দেখে ছেড়ে দেন। আমি আমার হাত ধরে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি আর চোখ টুপ টুপ পানি পরছে। রোদ স্যার ডেস্কে বারি দিয়ে বলেন,’সরি আসলে…

উনি কিছু বলার আগে আমি ওইখান থেকে দৌড়ে চলে আসি। রোদ স্যার আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। আমি ক্লাসে যেয়ে নিজের সিটে এসে বসে পরি। নিশা আমার কাছে এসে বলে,’কি হয়েছে মেহেক কাঁদছো কেনো তুমি?রোদ কিছু বলেছে?’

আমি মাথা নাড়াই অর্থাৎ না। নিশার চোখ আমার রক্তে মাখা হাতে পরতেই সে ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,’এটা কিভাবে হয়েছে??’

আমি জ্বিভ কাঁমড়ে বলি,’বারি লেগেছে তাই চুড়ি গুলো ভেঙে গিয়েছিলো।’

‘আই সি। ওয়েট আমি ফার্স্টএইড বক্স নিয়ে আসি।’

নিশা ফার্স্টএইড বক্স নিয়ে এসে আমার হাতে ব্যান্ডেইজ করে দেয়। আমি ক্লাস শেষ করে বাসায় আসার জন্য রিকশা খুজতে থাকি তখনই একটা গাড়ি আমার সামনে এসে থামে। আমি ভ্রুকুচকে তাকাই গাড়িটার দিকে। গাড়ির কাঁচ খুলে সানগ্লাস পড়া সাদ আনান রোদকে দেখতে পাই। সে একটু কেশে বলে,’চাইলে আসতে পারো।’

আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে,’নো,,থ্যাংক্স।’

রোদ স্যার কলার ঠিক করে বলেন,’সাদ আনান রোদের গাড়িতে চড়া হাজার হাজার মেয়ের স্বপ্ন আর সেইখানে তোমাকে আমি নিজে থেকে লিফট দিতে চাই আর তুমি না করছো। সত্যিই হাসালে।’

আমি বলি,’আমি বলেছি আপনাকে আমার লিফট লাগবে? আর হ্যা যে যে মেয়ে আপনার জন্য পাগল তাদের কাতারে আমাকে ফালাবেন না দয়া করে।’

‘মানুষ ঠিকই বলে কারো ভালো করতে নেই।’

উনার কথা শুনে আমি উনাকে কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলি,’আপনাকে কেউ আমার ভালো করতে বলেনি।’

‘এক্সকিউজ মি তুমি এখন আমাকে ইনসাল্ট করছো।’

‘কিছুক্ষন আগেই তো আপনি বলছিলেন এখন আবার তুমি করে কেনো বলছেন।’

‘আমি তোমার টিচার লাগি তাই তুমি বলতেই পারি।’

আমি তাকে কড়া গলায় বললাম,’আপনার সাথে কথায় পারবো না আমি। আপনি প্লিজ আমার ভালো করতে এসেন না আমি আমার ভালো নিজেই করতে পারি।’

রোদ স্যার শুধু ‘ওকে’ বলে চলে যান। আমি পুনঃরায় রিকশা খুজতে থাকি। একসময় পেয়েও যাই। রিকশায় উঠে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই আমি….

#চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে