স্বপ্ন?পর্ব_২২/২৩/২৪

0
740

স্বপ্ন?পর্ব_২২/২৩/২৪
#অনামিকা_সিকদার_মুন
#পর্ব_২২
.
.
.
–অনু শোনো…
–হুম বলুন
নীল অনুর থেকে লুকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো । তারপর হুট করেই অনুর চিবুক আঁজলা করে ধরে বললো,
–ভালোবাসি তোমাকে…… ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে জানি না আমি । তাই সোজাসাপটা বললাম । আমি তোমাকে ভালোবাসি অনু……
শিড়দারা বেয়ে এক শীতল বাতাস বয়ে গেল অনুর । শরীরের লোমগুলো কাটা কাটা দিয়ে উঠতে লাগল । স্তব্দ হয়ে তাকিয়ে আছে ও । মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে । মস্তিষ্ক যেন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে । কেমন একটা চিনচিনে ব্যাথা অনুভব হচ্ছে বুকে । অসহ্য এক অনুভূতি । দু’চোখে জলেরা এসে হানা দিয়েছে । খুব চেষ্টা করছে অনুকে হারিয়ে ওর দু’চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়তে । থরথর করে কাঁপছে অনুর পুরো শরীর । নিজেকে শূণ্য মনে হচ্ছে । নিজের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণই রাখতে পারছে না অনু । মনে হচ্ছে এক্ষুণি ও জ্ঞান হারাবে নইতো ঢলে পড়ে যাবে । ওর কানে বার বার বেজে উঠছে, “ভালোবাসি অনু…… ভালোবাসি অনু…. ভালোবাসি অনু…..” ।
নীল এখনো অনুর মুখটা আঁজলা করে ধরে রেখে ওর মুখটার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে । এক নেনো সেকেন্ডের জন্য দৃষ্টি সরায় নি অনুর দিক থেকে । খুব গভীর মনোযোগ দিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে । এত কেনো মায়া এই মুখটার মাঝে?? কেনো? কেনো এত বেহায়া হয়ে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে এই মুখপানে? একজোড়া হরিণী চোখ তাকিয়ে আছে ওর চোখের গভীরে । সেই চোখে চিকচিক করছে জল । ধাক্কা খাচ্ছে চোখে চোখ । বড় বড় পাপড়িগুলো চোখের উপর থেকে নিচে নেমে পলক ফেললেই যেন ঐ চোখে জমে থাকা মুক্তোর দানার মতো জলগুলো টুপ করে ঝরে পড়বে গাল বেয়ে ।
অনু এখনো কাঁপছে । চোখ বন্ধ করে ফেললো অনু । আর সাথে সাথেই ওর চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো মুক্তোদানা । মুখের উপর কারো গরম নিঃশ্বাস অনুভব করলো । ও জানে সে কে । নীল….
অনুর চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তে দেখে অনুর চোখে নিজের ওষ্ঠধর চেপে ধরে নীল । অনুর চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়া জল মাটিতে পড়তে দেয় না । তুলে নেয় নিজ ওষ্ঠে । একদম শুষে নেয় যেন ।
অনু আগের মতোই চোখ বুঝে আছে । অসহ্য ভালো লাগার এক অনুভূতি । ইসস সময়টা যদি এখানেই থেমে যেত । তাহলে এই মুহুর্তটাকেও আটকে রাখা যেত । কিন্তু সেটা তো সম্ভব না ।
নীল দেখলো অনুর কোনো সারাশব্দ নেই । একদম মূর্তি হয়ে আছে মেয়েটা । নীল আলতো করে অনুকে ডাকলো,
–মিষ্টি অনু…
অনু এবারও চুপ করেই রইলো । কোনো জবাব দিল না । কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে ওর । ইচ্ছে করছে জাপটে ধরতে নীলকে । যেদিন নীলকে প্রথম দেখেছিল সেদিনই তো ওকে ভালো লেগেছিল অনুর । তারপর যখন বারংবার দেখা হতো আস্তে আস্তে ভালোলাগার পরিমাণটা বাড়তে থাকে । আবার যখন আননোন নাম্বার থেকে কথা বলতো ওর কেন যেন মনে হতো এটা নীল কিন্তু পরক্ষণেই আবার মনে মনে বলতো না উনি কেনো কল দিবে আমাকে । এই বলে নিজেকে দমিয়ে রাখতো । আর আজ যখন দেখলো ওর মন ওকে এতদিন যা বলতো সেটাই সত্যি তাতে মেয়েটা এতটাই শকড্ পায় যে সামলাতে না পেরে একেবারে জ্ঞানই হারিয়ে ফেলে । আজকে নীলকে সরাসরি এত কাছ থেকে দেখার পর ওর অনুভূতিরা ভালোলাগার মাত্রা ছাড়িয়ে আরো বেশিই চলে গিয়েছিল । ভাবতে চাইছি অনেক কিছু । ভালোবাসার পাখিটা মুক্ত হয়ে ডানা মেলে উড়তে চাইছিল । কিন্তু তাদের ধমকে শাসিয়ে রেখেছিল অনু । আর এখন!!!! নীলের নিজে থেকে ভালোবাসি বলায় খুশি, ভালোলাগা, কষ্ট, ভালোবাসা সব অনুভূতিরা একসাথে হামলা করেছে অনুকে । তাইতো নিজেকে সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে ওর।

নীলের উপর ঢলে পড়ে অনু । নিজের ভার ছেড়ে দেয় নীলের বুকের উপর । অনুকে এভাবে ঢলে পড়তে দেখে প্রথমে নীল ভাবছিল আবার কি জ্ঞান হারালো নাকি মেয়েটা । তড়িৎগতিতে অনুর মুখের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে যে না অনু জ্ঞান হারায় নি । নীল একটা বাঁকা হাসি দিল । তারপর অনুকে নিজের সাথে একদম আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল । অনুও নীলের বাহুডোরে নিজেকে আটকে নিল । দু’হাতে আকড়ে নীলকে ধরে ওর বুকে মুখ লুকায় । নীল শক্ত করে অনুকে জড়িয়ে ধরে মাথা একটা ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দিল । অনুর কাঁপুনি এখনো কমে নি । নীল অনুভব করতে পারছে অনুর কাঁপুনি ।
–অনু…..
–হু
নীল ডাকে ছোট্ট করে সারা দিল অনু ।
–উত্তর দিলে না কিন্তু….
অনু নীলের বুক থেকে মাথা উঠিয়ে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকায় নীলের দিকে । নীল বুঝতে পেরে মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
–ভালোবাসি….
নীলের কথা শুনে চোখ নামিয়ে নিল অনু । লজ্জায় লাল হয়ে যেতে লাগলো । মনে মনে বলতে লাগলো,
–” এতক্ষণ যে আপনাকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম তারপরও কি মুখে বলে উত্তর দেয়াটা খুব জরুরী?? বুঝতে পারছনে না আমার উত্তর কি?? বুঝেও কেনো লজ্জায় ফেলতে চাইছেন আমায়?? ”
কিন্তু মুখে একটা রা ও করলো না অনু । এদিকে নীল অপলক তাকিয়ে দেখেছে লজ্জায় নুইয়ে যাওয়া অনুকে চাঁদের আলোয় কি ভীষণ মায়াবী লাগছে । এভাবেই নিরবতায় আরো কিছুক্ষণ কেটে গেল । অনু নিজেকে নীলের বাহুডোর থেকে ছাড়িয়ে নেয় । তারপর হুট করে অনু নীলের ডান হাত নিজের দু’হাতের মাঝে নিল । আর নীল শুধু নিরব দর্শকের মতো চেয়ে রইলো । অনু ধীরে ধীরে নীলের হাত উঠিয়ে হাতের উল্টো পিঠে গভীরভাবে ঠোঁট ছুয়ে দিল । মাথা নিচু রেখে ফিসফিসিয়ে বললো,
–ভালোবাসি….
একথা বলেই অনু দৌড়ে চলে যেতে কিন্তু তার আগেই নীল হাত ধরে আটকে ফেলে । একটু একটু করে নীল অনুর কাছে এগিয়ে যায় । পিছন দিক থেকে অনুর কানে কাছে ফিসফিসয়ে বলে,
–এভাবে লজ্জা পেয়ো না লজ্জাবতী । তোমার ঐ লাজুক হাসি বুকে ঝড় তোলে ।
নীল কথা বলার সময় ওর ঠোঁট অনুর কানকে হালকা হালকা স্পর্শ করছিল । আর তাতে কেঁপে উঠছিল অনু । হৃদস্পন্দন যেন কয়েক হাজার গুণ দ্রুত গতিতে দৌড়াচ্ছিল । অনুর মনে হচ্ছিল ওর বুকের ধুকধুক ধুকধুক আওয়াজটা বুঝি নীলও শুনতে পারছে । নীল অনুর হাত ছেড়ে দিয়ে ওকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কপালে গভীরভাবে ঠোঁট স্পর্শ করে । তারপর বলে,
–বাসায় যাও মিষ্টি অনু । আমি পৌঁছে গিয়ে কল দিব তোমাকে ।
অনু আর দ্বিতীয় কোনো কথা বললো না । চুপচাপ বাসার ভিতরে চলে গেল । অনু বাসার ভিতরে ঢুকে পড়ার পর নীলও উল্টো ফিরে চলে যেতে পা বাড়ালো । তখন আবার গেটের ভিতর থেকে উঁকি দিয়ে তাকালো অনু । যতক্ষণ নীলকে দেখা যাবে ততক্ষণ ওকে দেখার জন্য দাড়িয়ে ছিল অনু । নীল কিছুদূর গিয়ে আবার উল্টো ফিরে তাকালো । তাকাতেই দেখে অনু গেট থেকে উঁকি দিয়ে দাড়িয়ে আছে । হুট করে নীলকে এভাবে ফিরে তাকাতে দেখে থতমত খেয়ে যায় অনু । তাড়াতাড়ি করে লুকিয়ে পড়ে গেটের আড়ালে । এটা দেখে নীল হেসে দিল। তারপর চলে গেল । নীল চলে যেতেই অনুও বাসায় ঢুকে । ওর রুমে গিয়ে ফোন আর টেডি নিয়ে বেরিয়ে ড্রয়িংরুমে এসে সোফায় বসে । টেডিটাকে জড়িয়ে ধরে মুখ গুজে একটু আগের কথা মনে করে হেসে ফেলে অনু । ভাবতে থাকে ওর রাজকুমারকে নিয়ে । আর অপেক্ষা করতে থাকে নীলের ফোনের ।
.
.
চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে নিহার । ওর হাতের ফোনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও । ফোনের স্ক্রিনের ছবিটা হলো…………
.
.
.
চলবে?
(ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)
.

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

#স্বপ্ন?
#অনামিকা_সিকদার_মুন
#পর্ব_২৩
.
.
.
চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে নিহার । ওর হাতের ফোনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও । ফোনের স্ক্রিনের ছবিটা হলো নীল আর অনুর । যেটা দেখে ওর দু’চোখ বেয়ে অঝর ধারায় গড়িয়ে পড়ছে জল । আটকাতেও পারছে না । কি করেই আটকাবে? দীর্ঘ দশ বছরের ভালোবাসার মানুষটার চোখে যখন অন্য কারো জন্য ভালোবাসা দেখা যায় তখন যে নিজেকে আটকানো যায় । সেই মানুষটাকে যখন অন্যকাউকে নিয়ে স্বপ্ন সাজাতে ব্যস্ত দেখা যায় তখন যে নিজেকে আটকানো যায় না । কষ্টে যে বুক ফেটে চৌচির হয়ে যায় । না সে কষ্ট সওয়া যায় আর না কওয়া যায় ।

নিহার এক ফ্রেন্ড আজকে নীল যখন অনুকে আড়কোল করে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাচ্ছিল তখন দেখে ফেলে । আর দেখেই ছবি তুলে নিহাকে পাঠিয়ে দেয় । ছবিটা দেখেই যেন নিহার পুরো দুনিয়া এলোমেলো হয়ে যায় । স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকে । তারপরই শুরু করে হাউমাউ করে কান্না । সেই থেকে মেয়েটা কেঁদেই যাচ্ছে । আস্তে আস্তে কান্নার আওয়াজটা কমে আসে। কিন্তু চোখ দিয়ে অনবরত জল পড়তেই থাকে ।
এর মধ্যে অনেকবার নীলকে কল দিয়ে দিল নিহা । কিন্তু নীল কল রিসিভ না করে কেটে দেয় । তাই বাধ্য হয়ে নিঝুমকে কল দিয়ে নীলের কথা জিজ্ঞেস করেছিল । তখন নিঝুম বলেছিল নীল বাসায় ফিরে নি । এতরাতে নীল কখনো বাহিরে যায় না । আর কিছুক্ষণ আগেও নীল কল দিয়েছিল ও । কিন্তু তখন কল ওয়েটিং দেখাচ্ছে । রাত দুটো বাজে কল ওয়েটিং । বোঝাই যাচ্ছে যে নীল কার সাথে কথা বলছে । গত দু’মাস ধরে নীল কেমন জানি পাল্টে গেছে । কল রিসিভ করে না । দেখা করতে চায় না । কেমন এড়িয়ে চলে । কিন্তু আগে এমন করতো না । সেদিন ফুচকা খেতে গিয়ে কোন এক মেয়ে পিছন পিছনে দৌড়ে যায় । আর সেদিন থেকেই একটু একটু করে বদলে যায় ওর নীল । মানতে খুব কষ্ট হয়…… খুব ।
.
নীল বাসায় এসে ফ্রেশ হয়েই কল দেয় অনুকে । একবার রিং বাজতেই কল রিসিভ করে অনু । একবারে কল রিসিভ করাতে নীল জিজ্ঞেস করে,
—ফোন হাতে নিয়েই বসে ছিলে নাকি??
অনু সে কথার জবাব না দিয়ে বললো,
—বাসায় পৌঁছেছেন কখন??
নীল একটু হেসে বললো,
—এতো কিছুক্ষণ আগেই । ফ্রেশ হয়েই তোমাকে ফোন দিলাম ।
—সরি….
—কেনো???
—আপুর এমন ব্যবহারের জন্য ।
—ফর্মালিটি মেইন্টেন করছো??
—মানে??
—না তেমন কিছু না আসলে আপু আজকে সত্যি বেশি খারাপ ব্যবহার করে ফেলেছে ।
নীল তকন বিরবির করে বললো,
—তাতে কি!!! আমারই তো ভাবী হবে তার উপর আবার বউয়ের বড় বোন…
—কি বললেন?? আপনার ভাবী মানে??
—না নাহ কিচ্ছু না ।
—কিচু একটা তো বললেন । কি বলেছেন বিরবির করে বলুন??
—শুনবা??
—হ্যাঁ
—বলেছি আই লাভ ইউ মিষ্টি অনু
নীলের কথা শুনে অনু আবার লজ্জা পেতে লাগলো । একদম চুপ করে রইলো । নীল বুঝতে পারে যে অনু লজ্জা পাচ্ছে । ওকে আরো লজ্জা দিতে বললো,
—লজ্জা পেলে তোমাকে খুব বেশি সুন্দর লাগে ।
—প্লিজ আর বলবেন না। থামুন প্লিজ ।
অনুর কথা শুনে নীল হেসে দেয় । এভাবে টুকটাক কথা চলতেই থাকে । এর মধ্যেই রুমের দরজায় কে যেন নক করে । নীল অনুকে “একটু পরে কল দিচ্ছি” বলে ফোন রাখে । তারপর উঠে গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে নিঝুম দাড়িয়ে । নিঝুম প্রায়ই রাতে এসে নীলের সাথে আড্ডা দেয় । তাই নীল দরজা থেকে সরে নিঝুমকে ভেতর আসতে জায়গা দেয় । নিঝুম ভেতরে এসে খাটে বসতে বসতে বলে,
—কিরে কার সাথে কথা বলছিলি এতরাতে??
—তুই কার সাথে কথা বলিস প্রতিরাতে??
নিঝুম কিটকিটিয়ে হেসে চোখ টিপে বললো,
—আমি তো তোর হবু ভাবির সাথে কথা বলি । তুইও কি তার সাথে কথা বলিস??
নীল সরু চোখে তাকায় নিঝুমের দিকে । সোফা থেকে কুশন নিয়ে ছুড়ে মার নিঝুমের দিকে। নিঝুম ক্যাচ ধরে ফেলে । নীল রাগী কন্ঠে বলে,
—আমি কার সাথে কথা বলছিলাম সেটা তুই জানিস ভাইয়া ।
নিঝুম অবাক হওয়ার ভঙ্গি করে বলে,
—তুই কার সাথে কথা বলিস আমি কি করে জানবো বল??
নীল নিঝুমের সামনে গিয়ে বসে বললো,
—ঠিকই তো । তুই কি করে জানবি!!! তোর তো জানার কথা না । আচ্ছা আমি জানিয়ে দিচ্ছি । এদিকে আয় ভাইয়া কানে কানে বলি ।
নিঝুমও দুষ্ট হাসি দিয়ে নীলের দিকে কান এগিয়ে দিল । নীল ফিসফিস করে বললো,
—আমি তোর আধি ঘারওয়ালীর মানে তোর শালিকার সাথে কথা বলি ।
নিঝুম অবাক হবার ভান করে বললো,
—কিহহহ্??
নীল চোখ টিপে বললো,
—জিহহহ্
এবার নিঝুম আর নীল একসাথে হেসে দিল । টুকটাক কথা বার্তা আর দুষ্টমি করতে করতে দু’ভাই মিলে আড্ডায় মুশগল হয়ে পড়ে । হঠাৎ নীল নিঝুমকে জিজ্ঞেস করে,
—ভাইয়া তুই কি এখনও সেই স্বপ্ন দেখিস?
—নাহ নিশির সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে আর দেখি না । কেনো বলতো?
নীল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
—কিছু নাহ্ । এমনি জানতে ইচ্ছে হলো তাই জিজ্ঞেস করলাম ।
নিঝুম নীলকে ভালো করে লক্ষ্য করে বললো,
—তুই কি অনুকে নিয়ে কিছু দেখিস?
—হুম ।
—কি দেখিস?
—অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখি আমি ।
—যেমন?
—প্রথমে দেখি অনু আমার খুব কাছে । কিন্তু হঠাৎ-ই কি জানো হয় আর অনু আমার হাত ছেড়ে দেয় । আমি অনেক চেষ্টা করি ওকে আটকাতে কিন্তু পারি না । ও দূরে চলে যায় । ওর মুখে হাসি কিন্তু চোখে থাকে জল । জানিস ভাইয়া অনুর হাসিটা খুব সুন্দর । হাসলে যেন মায়া ঝরে পড়ে । কিন্তু স্বপ্নে ওর যেই হাসিটা দেখি তাতে যেন বিষাদ মিশে থাকে । আর আস্তে আস্তে আঁধারে মিলিয়ে যায় ও ।
এতটুকু বলে থেমে যায় নীল । ওর বুকটা ভারী হয়ে আসছে । নিঝুমের কপালে চিন্তার ভাঁজ । কারণ নীল যেটা বললো তার ব্যাখ্যা একদমই ভালো কিছুর ইঙ্গিত করে না । নিঝুমও যেন টেনশনে পড়ে যায় । ভাবতে থাকে নীলের এমন স্বপ্ন দেখার কারণ কি!!! কিন্তু ওর ভাবনার সুতো কেটে দেয় নীলের কথা ।
—যাক সে কথা বাদ দে ভাইয়া । হয়তো ওকে নিয়ে বেশি ভাবি তাই এমন উল্টো পাল্টা দেখি ।
নিঝুম হাসি দিয়ে কথার প্রসঙ্গ পাল্টায় । কথায় কথায় উঠে আসে নীলের আজকে অনুকে প্রোপজ করার কথা । নীল যখন নিঝুমকে এই কথা বলে তখন নিঝুম চোখ বড় বড় করে বলে,
—কিরে তুই এত এডভান্স হলি কি করে? বড় ভাইয়ের আগে প্রোপজ করে ফেললি আর পটিয়ে হ্যাঁ ও করিয়ে নিলি ।
নীল দুষ্টু হাসি দিয়ে নিঝুমকে চোখ টিপে বললো,
—দেখবে তোমার আগে বিয়েও করে ফেলবো ।
নিঝুম চেঁচিয়ে উঠে বলে,
—আল্লাহ কত্ত বড় বদমাশ দেখ । লজ্জা নেই তোর বড় ভাইয়ের সামনে বিয়ের কথা বলছিস?? তাও তার আগে করবি বলিস? তোর বিয়েই হবে না দেখিস ।
নিঝুমের এমন কথা শুনে নীল কিটকিটিয়ে হেসে উঠে বলে,
—আহারে । থাক ভাইয়া কষ্ট পাস না । তোর কষ্টটা আমি বুঝতে পারছি ।
—তোর বিয়ের খুব শখ না? দাড়া নিহাকে বলছি । দেখবি এখনই এসে পড়বে তোকে বিয়ে করতে । আর মা-ও তো রাজিই ।
নিঝুমের কথায় এবার নীল আঁতৎকে উঠে । বললো,
—নাআআআআ । ভাইয়া তুই আমার এত বড় সর্বনাশ করতে পারিস না ।
—কেনো এখন কেনো হুম?? যা না যা বিয়ে কর গিয়ে ।
নীল কাঁদো কাঁদো ফেস বানিয়ে নিঝুমের দিকে তাকায় । নিঝুম পাত্তা না দিয়ে বলে,
—নিহা কল দিয়েছিল আমাকে ।
নিঝুমকে নিহা কল দিয়েছে শুনে ভ্রুজোড়া কুঁচকে নীল জিজ্ঞেস করলো,
—কখন? আর তোকে কেনো কল দিয়েছিল??
—এগারোটার দিকে দিয়েছিল । খালি জিজ্ঞেস করলো তুই কোথায় ।
—অহহহহ্ ।
—নিহা তোকে পছন্দ করে তাই না?
—সে তো সেই স্কুল লাইফ থেকেই করে । কিন্তু আমি ওকে ফ্রেন্ড থেকে বেশি কিছু কোনোদিন ভাবি নি । আর এখন তো আরও ভাবতে পারবো না । কারণ এখন আমার লাইফে অনু আছে ।
নিঝুম ছোট্ট করে উত্তর দিল,
—হুম ।
ফজর পর্যন্ত দু’ভাই মিলে আড্ডা দেয় । ফজরের আযান শুনে নিঝুম উঠে নিজের ঘরে যায় । নিঝুম যাওয়ার পরে নীল দরজা লাগিয়ে এসে ওযু করে ঘরেই নামায আদায় করে নেয় । তারপর বিছানায় শুয়ে পড়ে । অনুকে কল দিতে গিয়েও কি মনে করে আর দিল না । ফোনে অনুর ছবি বের করে দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়লো ।
.
.
প্রতিদিনের মতো আজও যুদ্ধ করে নিশিকে ঘুম থেকে উঠালো অনু । তবে আজকে আর অন্যান্য দিনের মতো রাগ দেখায় নি । সকাল থেকেই নিশি খেয়াল করে অনু মুচকি মুচকি হেসে যাচ্ছে । আর যাই বলছে সব কথাই শুনছে । নিশির কাছে কেমন সন্দেহ হচ্ছে । মনে মনে ভাবছে,
— ” আজ অনুর হলোটা কি!!! ”
নিশি মনে মনে অনুকে আটকে ধরে জিজ্ঞেস করার প্ল্যান করতে থাকে । অনু রান্না ঘরে কাজ করছে তখন নিশি পিছনে গিয়ে দাড়ায় । অনুকে পেচন থেকে ডাক দেয়।
—অনু…
—হুম বল আপি ।
—কি করছিস??
—দেখতেই তো পারছিস কি করচি তো আবার জিজ্ঞেস করছিস কেনো???
—না মানে….
—কিছু বলবি আপি???
—হ্যাঁ।
—বল…
নিশি যেই জিজ্ঞেস করতে যাবে তখনই কলিংবেলটা বেজে উঠে । নিশি মনে মনে প্রচুর বিরক্ত হয় ।
— ” এই অসময়ে আবার কে এলো??? ”
মনে মনে বলতে বলতে গিয়ে দরজা খুলে। দরজা খুলে যাকে দেখলো তাতে নিশির কপাল কুঁচকে তাকালো। বললো………..
.
.
.
চলবে??
(ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন । আর কেমনে হয়েছে জানাবেন ।)

#স্বপ্ন?
#অনামিকা_সিকদার_মুন
#পর্ব_২৪
.
.
— ” এই অসময়ে আবার কে এলো??? ”
মনে মনে বলতে বলতে গিয়ে দরজা খুলে নিশি । দরজা খুলে যাকে দেখলো তাতে নিশির কপাল কুঁচকে তাকালো। বললো,
—কিরে তুই হঠাৎ??
—ফইন্নি মানুষ আসলে আগে ভিতরে আসতে দিতে হয় । কই ভিতরে আসতে বলবি তা না বাহিরে দাড় করিয়ে রেখে জিগাস আমি হঠাৎ ক্যান?
নিশি কিছু বলতে যাচ্ছিল তার আগেই দরজায় দাড়ানো আযান আবার বলে উঠে,
—অবশ্য তোর থেকে এটা আশা করাও ভুল । যাই হোক । যা সর । ভিতরে ঢুকতে দে ।
নিশিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়লো আযান । নিশি আযানের দিকে তাকিয়ে থেকে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
—ঐ তুই বের হ আমার বাসা থেকে । আমার বাসায় আইসা আমারেই ধাপকি দেস তুই । সাহস তো কম না তোর । তোরে তো আমি……
আযান ভিতরে ঢুকে সোফায় বসে পড়েছিল । কিন্তু নিশির কথা শুনে আযান বসা থেকে দাড়িয়ে পড়ে । গিয়ে নিশির চুলের বেণী ধরে টান মেরে বলে,
—যামু না । তুই কই থেকে আসছিস রে ফইন্নি? এটা আমার বাসা । যা তুই বের হো ।
নিশি ক্ষেপে গিয়ে আযানের চুল টেনে ধরে । আর জোরে টানতে থাকে । বলে,
—তোরে তো আজকে আমি….. তোরে আজকে টাক বানাইয়া ফেলমু । একটা চুলও রাখমু না ।
আযানও নিশির চুল টেনে ধরে । বলতে থাকে,
—তোরে কি আমি ছাইড়া দিমু নাকি?? ভুলেও ভাবিস না । তোর চুলের এমন হাল করমু যে জীবনে আর চুলই উঠবো না ।
শুরু হয়ে যায় ওরা । দুজনে মিলে চুল ধরে টানাটানি করতে থাকে । সাথে মুখও চলছে অনবরত । মানে ঝগড়া করছে আরকি । রান্নাঘর থেকে অনু চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে দৌড়ে ড্রয়িংরুমে আসে । আর এসে যা দেখতে পায় তাতে ওর চোখ কপালে উঠে যায় । নিশি আর আযান দু’জন দু’জনের চুল ধরে টানাটানি করছে । দু’জনেই অবস্থাই বেহাল । অনু দৌড়ে গিয়ে ওদের মাঝে দাড়ায় । দু’জনকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে । কিন্তু পারছে না । শেষে আর না পেরে দুইগ্লাস পানি এনে দু’জনের মাথায় ঢেলে দেয় । এতেই কাজ হয়ে যায় । দু’জন দু’জনকে ছেড়ে দেয় । আর অনুর দিকে বোকার মতো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ।
—কি বাচ্চাদের মতো শুরু করেছিস তোরা??? একজন অন্যজনের চুল ধরে টানছিস । আবার চেঁচিয়ে ঝগড়া করছিস । তোরা ছোট বাচ্চা নাকি???
অনু রাগী চোখে তাকিয়ে রাগী গলায় ওদেরকে কথাগুলো বললো । নিশি আর আযান অনুকে এভাবে রাগতে দেখে চুপ হয়ে যায় ।
—এখন চুপ কেনো? বল ঝগড়া করছিলি কেনো বাচ্চাদের মতো??
অনুর রাগারাগিতে নিশি চুপ করে কোনো কথা না বলে সেখান থেকে সরে যায় । অনু একটু অবাক হয় কারণ নিশি কখনো তর্ক করার চান্স ছাড়ে না । আর আজকে কি না চুপচাপ সরে পড়লো । অদ্ভুত । নিশির চিন্তা বাদ দিয়ে আযানের দিকে ঘুরে দাড়ায় । উদ্দেশ্য আযানকেও কিছু বলা । অনু আযানের দিকে তাকিয়ে যেই না কিছু বলতে যাবে তখনই অনুর মাথায় আটার বর্ষণ হলো । হকচকিয়ে গেল অনু । মনে মনে ওর একটা কথাই প্রথম আসলো । সেটা হলো,
— ” এটা কি হলো!!!! ”
অনুর মাথা ঘুরিয়ে পেছন দিকে ফিরলো । তাকিয়ে দেখে নিশি । ওর হাতে আটার বয়ম । আর মুখ টিপে হাসছে নিশি । অনুর আর বুঝতে বাকি রইলো না যে এ কাজটা নিশির ।
—” তুই যে এত সহজে চুপ থাকার মানুষ না এটা আমার আগে জানা । বাট কিছুক্ষণের জন্য সেটা ভুলে যাওয়াটা আমার মস্ত বড় ভুল হয়েছে । ”
কথাগুলো অনু বিরবির করে বলে । কিন্তু আযানের কানে সেটা ঠিকই পৌঁছায় । তাই এতক্ষণের বহু কষ্টে চেপে রাখা হাসি আর রাখতে পারলো না । হো হো করে হেসে উঠে আযান । অনু বাঁকা আযানের দিকে তাকালো । কিন্তু তাতে বিশেষ কোনো কাজ হলো না ।
—অনু তোর এ অবস্থা কেনো??
হঠাৎ কারো কথা শুনে তিনজনই চমকে আওয়াজের উৎস অনুযায়ী পেছন ফিরে তাকায় । দেখে নিশি অনুর মা দাড়িয়ে । হুট করে মা-কে দেখে যেন নিশির ভয়ে কলিজা শুকিয়ে গেল । কারণ ওদের মা যে প্রচুর রাগী । এখন নির্ঘাত বকা দিবে অনুর সাথে এমন করার জন্য । সেটা ভেবেই নিশি এক ঢোক গিললো । অনুও ওর মা-কে দেখে চমকে গেছে । কারণ মা তো একটু আগেই অফিসের জন্য বেরিয়ে গিয়েছিল । হঠাৎ ফিরে এলো কেনো । এখন নিশ্চিত নিশিকে বকবে যদি জানতে পারে যে নিশি এই কাজ করেছে। আর নিশিকে অনু সবসময়ই বাঁচিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে মায়ের বকা থেকে । আজও তার ব্যাতিক্রম করবে না । তাই কথা ঘুরাতে অনু বললো,
—মা তুমি!! ফিরে এলো কেনো হঠাৎ??
—ফোনটা ফেলে গিয়েছিলাম । তাই নিতে এসেছি । কিন্তু তোর এই হাল কেনো?
নিশি গোমরা মুখ বানিয়ে মাথা নিচু করে আছে । সেটা দেখে মা বললো,
—নিশি করেছে এই কাজ তাই না?
নিশি হ্যাঁ বলে জবাব দিতে যাচ্ছিল । কিন্তু তার আগেই অনু ওর কথা কেটে নিয়ে বললো,
—না মা । আপি কিছু করে নি । কি যে বলো না । আমি কিচেনে অসাবধানতাবশত কাজ করছিলাম । তাই ভুলে মাথার উপর আটার বয়মটা উল্টে পড়েছে ।
বলে একটা হাসি দেয় অনু । নিশি আড়চোখে তাকিয়ে অনুকে দেখে নেয় । মনে মনে অনুকে কিসসি দিচ্ছে । কারণ অনু সবসময়ই ওকে বকার হাত থেকে বাঁচায় ।
—নিশি হাতে তাহলে বয়মটা কেনো?
মা সরু চোখে তাকিয়ে কথাটা বলে । অনু থতমত খেয়ে যায় একথায় । তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
—মা আপির হাতে বয়মটা আমি দিয়েছিলাম । তাকে তুলে রাখার জন্য । আর আমি কিচেন পরিষ্কার করছিলাম । তখন আযান আসে তাই এই অবস্থাতেই চলে আসি দরজা খুলতে । আমার পেছন পেছন আপুও আসে ।
এতটুকু বলে থামলো অনু । মা কিছু বললো না । কারণ উনি জানে যে অনু নিশিকে বাঁচানোর জন্য এই কথাগুলো বলেছে । যেটা অনু সবসময়ই করে থাকে । উনি আর কিছু না বলে সোজা নিজের ঘরে গিয়ে ফোনটা নিয়ে এসে নিশি অনুকে সাবধানে থাকতে বলে বেরিয়ে যান । মা যেতেই যেন নিশি হাফ ছেড়ে বাঁচলো । মা যাওয়ার পর নিশি একলাফ দিয়ে অনুকে জড়িয়ে ধরে । অনুর গালে গাল ঘসে বলে,
—ধন্যবাদ পিচ্চি ।
অনু কপাট রাগ দেখিয়ে বলে,
—হুহ ছাড় আমায় ।
হুট করে নিশি অনুকে ছেড়ে নিয়ে বলে,
—ইইইইইই ছিহহহ তোকে জড়িয়ে ধরে আমিও আটাময় হয়ে গেলাম ।
তখন আযান নিশির মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
—চুন্নি ড্রামাবাজি বন্ধ করে রেডি হো গিয়ে ।
—তুই আবার আমাকে মারলি?? তোকে তো…
আযান গিয়ে অনুর পিছনে লুকায় । অতঃপর আবার শুরু হয় টম এন্ড জেরি ঝগড়া মানে আযান আর নিশির ঝগড়া ।
.
.
সকালে একফালি কাঁচা সোনালি রোদ এসে ঝপাৎ করে পড়ে নীলের মুখে । এতে পুরোপুরি ঘুমটা ছুটে যায় ওর । চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে…….
.
.
.
চলবে??
(বিঃদ্রঃ সাইলেন্ট রিডারদের উদ্দেশ্য বলছি আচ্ছা আপনারা যখন এড হন তখন গল্প পড়বেন বলে এড হোন। কিন্তু কিছুদিন পরেই আর আপনাদের খবর থাকে না । কেনো?? এমন কেনো করেন আপনারা?? জানেন গল্পগুলো লিখতে যেমন আমাদের সময় যায় তেমন অনেক ভেবে চিন্তে এক একটা লাইন লিখতে হয় । সেই কষ্টটার কোনো মূল্যই আপনারারা দেন না । একজন লেখক কষ্ট করে লিখেও কষ্ট দূর হয়ে যায় যখন পাঠকরা রেসপন্স করে । যখন তাদের মন জয় করতে পারে । আপনারা তো বলেনই না যে কেমন হয়েছে । খারাপ হোক ভালো হোক জানাবেন তো?? নাহলে বুঝবো কি করে?? আপনাদের থেকে কি এইটুকু আশা করতে পারি না?? 🙂 🙂 এইটুকুও কি আমাদের প্রাপ্য না?? 🙂
আর যারা আমার গল্পপড়েনবলে আমি চিনি তারাও কখনো গঠনমূলক মন্তব্য করে কখনো উৎসাহিত করেন না । বড় জোর এক থেকে দুইজন আছে যারা একটু বলে যে তাদের কেমন লেগেছে গল্পটা । বাকিরা স্টিকার/ নাইস নেক্সট কমেন্ট করেন । এমন কেনো করেন আপনারা?? গঠনমূলক মন্তব্য করে কি একটু উৎসাহিত করা যায় না ???
আপনাদেরথেকেএটা আশা করি নি?
যাই হোক ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন ।
আর আগামীকাল থেকে গল্প গ্রুপে পোষ্ট করা হবে । গ্রুপের লিংক আমি গতকাল পোষ্টকরে দিয়েছি ।
হ্যাপি রিডিং?
.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে