প্রেয়সীর ছোঁয়া (পর্ব ৪)
লিখা: জামিয়া পারভীন তানি
আদনানের ঘনঘন নিঃশ্বাস পড়ছে আফরার গলায়। আফরা পাগল হয়ে যাচ্ছে আদনানের উপস্থিতিতে। আদনান হটাৎ করে আফরা কে কোলে তুলে নেয়। আফরা ভয়ে আদনানের গলা জড়িয়ে ধরে। আদনান আফরা কে সোফায় বসিয়ে পাশে বসে পড়ে। আফরার গালে এক হাত দিয়ে আলতো ছুঁয়ে আদনান বলে,
“ তুমি জানোনা! কতটা মিস করেছি তোমায়। তোমার শরীরের গন্ধ, ছোঁয়া সব কিছুই আমাকে পাগল করে দিয়েছিলো। কিন্তু তুমি হারিয়ে যাবার পর আমি যেনো বেঁচে থেকেও মৃত ছিলাম। ”
আফরা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে, খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলো সে। যদি ঝোকের বসে আদনান ওর সাথে কিছু করে ফেলতো তাহলে ওর কিছুই করার ছিলো না। এই দুইদিনে আদনান কে দূরে সরানোর ক্ষমতা যেনো হারিয়ে ফেলেছে। ও কিছুতেই ওর বোন কে হত্যা করতে পারেনা এটাই আফরার বিশ্বাস হতে শুরু করে। যে ছেলে একটা মেয়েকে এতো ভালোবাসে সে কিভাবে সেই মেয়েকে খুন করতে পারে! আফরাকে যেনো আদনান কোনো ভাবেই সন্দেহ না করে সেই জন্য আদনানের কপালে ভালোবাসার ছোঁয়া দেয় আফরা। মৃদু হেসে বলে,
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
“ আগে দুই ফ্যামিলি কে রাজি করাও, তবেই তোমায় বিয়ে করবো। ”
আদনানের রাগ হয়, ও ভালো করেই জানে একটা দুর্ঘটনায় দুই ভাই এখন শত্রুতে পরিনত হয়েছে৷ দুই ফ্যামিলির কেউ রাজি হবেনা। অথচ মাহিরা রাজি হচ্ছেনা! তাহলে বিয়ে কিভাবে হবে? আদনান রাগ করে আফরার রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
মেহরাব চৌধুরী আদনানকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে আফরার ঘরে চলে আসে। আফরাকে জিজ্ঞেস করেন,
“ তুমি বরাবর ই আমার অবাধ্য সন্তান। তাই আমার মেয়ের খুনীর সাহস হয়েছে এই বাড়িতে আসা যাওয়া করার! ”
আফরা হটাৎ করে রেগে যায়,
“ আমি খুব ভালো করেই জানি বাবা, আমি অবাধ্য বলেই আমাকে ত্যাজ্য করেছিলে! আমি তোমার কাছে মেয়ের দাবী নিয়ে কখনো ই আসবোনা। কিন্তু বোন হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য যদি আমার চরিত্র ও খারাপ করতে হয় তাও আমি রাজি। ”
“ তুমি কিভাবে জানলে যে মাহিরা আর নেই! ”
“ তোমার সাথে যোগাযোগ না হলেও মাহিরা তার প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড আমাকে জানাতো সেটা কি জানতে না! মাহিরা আর আমি একিই প্লাসেন্টায় জন্মেছি। ওর আর আমার আত্মার বন্ধন কেউ ছড়াতে পারবেনা । পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি ওর হাত কাটলে আমিও ব্যথা পেতাম সেটা ভালো করেই জানো তুমি। ও যেদিন মারা গেছে আমার খুব কষ্ট হয়েছিলো। দেশে আসতে দেরি ভিসার জন্য। নইলে আরোও আগে আসতাম। যাই হোক, নিজের খেয়াল রাখো! আমাকে আমার কাজ করতে দাও। ”
“ আর তোমার প্রেমিকের কি খবর ? যার জন্য তুমি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলে? ”
আফরা মুখ ঘুরিয়ে নেয়, চিৎকারে বাবাকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। মেহরাব চৌধুরী বেরিয়ে গেলে আফরা দরজা বন্ধ করে দেয়। খুব কাঁদতে থাকে আফরা। সব পুরুষ ই কি তাহলে বেইমান! যার জন্য বাবা আর বোন কে ছেড়ে গিয়েছিলো আফরা সে কিনা আফরাকে একা ছেড়ে যেতে দ্বিধা করেনি! আর বোন যাকে ভালোবাসলো সে তো তার বোন কে দুনিয়া থেকে ই সরিয়ে দিলো।
৯.
আদনান রুমে ঢুকে ই চমকে উঠে নাদিরা কে দেখে। বিষ্ময়ের দৃষ্টি নিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“ কি ব্যপার ? তুমি এখানে কি করতে এসেছো? ”
“ বাহহ রে! তুমি তো বিন্দাস ঘুরে বেড়াচ্ছো। মাহিরা যে বেঁচে আছে তা কি জানোনা! ”
“ হ্যাঁ জানি! তো কি হয়েছে! আমার হবু স্ত্রী ফিরে এসেছে এটাই আমার কাছে অনেক। ”
“ সে আমাকে হুমকি দিয়ে এসেছে, তাকে খুন করার চেষ্টা যে করেছে তাদের সে ছাড়বেনা! ও তো আমায় মেরে ফেলবে আদু। ”
“ চুপ করো, আদু ডাক শুধু মাহিরার জন্য। আর আমি কোনো অন্যায় ও করিনি। তাই কোনো ভয় ও পাইনা। তুমি যদি নির্দোষ হও তাহলে নিশ্চিন্তে ঘুমাও যাও। বিরক্ত করোনা আমাকে আর। ”
“ আদনান প্লিজ বিশ্বাস করো আমি নির্দোষ! কিন্তু মাহিরা আমায় ভুল বুঝেছে। প্লিজ কিছু বলো মাহিরা কে।”
“ একা থাকতে চাই, যাও প্লিজ এখন। ”
নাদিরা একটু বেশি ই টেনশনে আছে। একমাত্র আদনান ই ওকে বুঝতো। কিন্তু আদনান এখন নাদিরা কে সহ্যই করতে পারেনা! নাদিরার পিছনে যে গোয়েন্দা লাগিয়ে রেখেছে আফরা সেটা নাদিরা বুঝতেও পারেনি। নাদিরা যে আদনানের সাথে দেখা করতে এসেছে খবর টা দ্রুত আফরার কাছে পৌঁছে যায় । আফরার বুঝতে বাকি থাকে না যে মাহিরাকে দুজন মিলে খুন করেছে। আফরার বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হচ্ছে, “ আদনান কতটা ভালোবাসে মাহিরা কে তবুও কেনো এই কাজ করেছে। ”
১০.
নাদিরা আদনানের সাথে দেখা করায় সন্দেহের ভিত্তিতে নাদিরাকে আবারও আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। অবশ্য আফরার আদেশে ই এই কাজ করতে বাধ্য হয়। আদনান কে সময় মতো আবারও ধরিয়ে দিবে আফরা! আগে নাদিরার মুখ থেকে স্বীকারোক্তি চাই ওর।
“ আগেরবার তো সোহরাব চৌধুরীর পার্টির বদৌলতে বেঁচে গিয়েছিলি, এইবার স্বীকার কর কেন মারতে গিয়েছিলি মাহিরা কে? ”
নাদিরা কিছুই না বলে চিৎকার করতে থাকে, সে নির্দোষ একথাই বারবার বলে । আফরা বড্ড পাষাণ মেয়ে, প্লাস দিয়ে নাদিরার এক আঙ্গুলের নখ তুলে নেয়। নাদিরা ব্যথায় কোকাতে কোকাতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
আফরার এতো রাগ দেখে গোয়েন্দা পুলিশ ও ভয় পেয়ে যায়। তবুও গোয়েন্দা পুলিশ বলে,
“ ম্যাম এটা কি করলেন? নখ তুললেন কেনো? ”
“ নিজের কাজ করুন, আফরার কাজে হস্তক্ষেপ কেউ করুক সেটা আফরা চায় না।”
১১.
আফরা আদনানের ফোনে আরেকটি মেসেজ দেয়,
“ বিয়ে করতে চাই, কাজী অফিসে চলে এসো। ”
আদনান মেসেজ দেখে দ্রুত রওনা হয়ে যায়, আফরার দেওয়া ঠিকানায়। আফরা একটা কাজী অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আদনান এগিয়ে গেলে আফরা হাতের ইশারায় থামতে বলে, নিজে এগিয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠতে বলে।
আদনান আফরার কথা মতো গাড়িতে উঠে বসে। আফরা বলে,
“ আমরা বিয়ে করবো, তবে তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে। সেটা বুঝে নাও আগে। ”
“ কি সারপ্রাইজ! ”
“ বললে তো আর সারপ্রাইজ থাকেনা তাইনা!”
চলবে……
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
l like your writing…