নিস্তব্ধ শহর পর্বঃ ০৪

0
1887

নিস্তব্ধ শহর পর্বঃ ০৪
লেখকঃ আবির খান

– “তোমাকে খুব মিস করছি। আবার কবে দেখা হবে?”

জান্নাত ঠাস করে ফোনটা আগের জায়গায় রেখে বিছানায় বসে পড়ে। কে এই ম্যাসেজ দিলো আবিরকে? কে?

আবির ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে জান্নাত জানালার গ্রিল ধরে বাইরে তাকিয়ে আছে। আবির আস্তে আস্তে নিঃশব্দে হেঁটে হেঁটে জান্নাতের পিছনে গিয়ে ওকে হঠাৎ করে জড়িয়ে ধরে। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো জান্নাত কোন রিয়েকশন দেয় নি। আবির জান্নাতকে চমকিত করতে গিয়ে নিজেই আশ্চর্য হয়। আবিরকে কিছু বলতে না দিয়েই জান্নাত ওকে ছাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। আবির স্তব্ধ হয়ে যায় জান্নাতের আচরণ দেখে। ও ভেবে পাচ্ছে না হঠাৎ ওর কি হলো। একটুপর জান্নাত বেড়িয়ে আসে। আবির দেখে ওর মুখটা অনেক মলিন। ও ভাবে হয়তো বাবা-মার কথা মনে পড়ছে তাই। আবির জান্নাতের কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর হাতটা ধরে ওকে একটানে ওর বুকের সাথে মিশিয়ে জড়িয়ে ধরে। জান্নাতের মুখ এখনো মলিন। ও আবিরকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। আবিরের দিকে পর্যন্ত তাকাচ্ছে না। আবির বুঝতে পারছে না জান্নাতের কি হলো হঠাৎ! আবির বলে উঠে,

– আজ তো অসম্ভব ভালো রান্না করে খাওয়ালে তার জন্য কিছু নিবে…

~ আমার ঘুম আসছে আমি ঘুমাবো।

আবির জান্নাতকে একটু ছাড়তেই ও নিজেকে আবিরের বাহুদ্বয় থেকে ছাড়িয়ে সোজা বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে। আবির পুরো স্তব্ধ হয়ে যায়। একি হলো! যে মেয়ে একটু ভালবাসার স্পর্শ পাওয়ার জন্য পাগল সে কোন সাড়া না দিয়ে বরং ওকে অবহেলা করে চলে গেল! আবির কিছুই বুঝতে পারছে না। ও আর কি করবে ভেবে না পেয়ে ফোনটা খুঁজছে। কারণ কোন গুরুত্বপূর্ণ কল বা ম্যাসেজ আসছে কিনা তা না দেখে ও রাতে কখনো ঘুমায় না। আবির এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে ফোনটা ড্রেসিং টেবিলের ওপর। সেখানে গিয়ে ও ফোনটা হাতে নিয়ে খুলেই স্ক্রিনে তাকাতেই ওর চোখছানাবড়া হয়ে যায়৷ আবির ফোন হাতে নিয়েই রীতিমতো বিছানায় ঝাপ দেয়। জান্নাতের কাছে গিয়ে ওর দিকে মুখ ফিরাতেই দেখে জান্নাত কাঁদছে। মায়াবী মুখখানা অশ্রুতে মাখামাখি হয়ে আছে। চোখগুলো জলে ভরে আছে। আবির অস্থির হয়ে বলে,

– জান্নাত প্লিজ আমাকে ভুল বুঝো না। জাস্ট একবার একটা সুযোগ দেও। কে এই ম্যাসেজ দিয়েছে তা এখনই প্রমাণ হয়ে যাবে। জাস্ট একটা সুযোগ দেও৷

আবির জান্নাতকে ধরে বসায়। আর বলে,

– আমি তোমার সামনে এই নাম্বারে কল দিচ্ছি যেটা থেকে ম্যাসেজ আসছে। এখনই প্রমাণ হবে এটা কার কাজ।

আবির কল দেয়। দুটো রিং হতেই ফোন রিসিভ হয়। একটা ছেলের হাসতে হাসতে বলে,

– কিরে বন্ধু আমার কথা মনে পড়লো তাইলে। বেটা কত্তো মিস করছিলাম তোকে একটা কলও দেস না।

আবির জান্নাতের দিকে তাকিয়ে আছে। জান্নাত হাসবে না কাঁদবে কিছুই বুঝতে পারছে না। আবির এবার নেহালকে বলে,

– বেটা তুই আর ভালো হবিনা না? তোর জন্য আমার বউ চোখের জল ফেলছে। এরকম ম্যাসেজ দিতে তোকে না করছিনা?

নেহাল হাসি বন্ধ করে অসহায় স্বরে বলে,

– ইসস! সরি সরি ভাই আমিতো বুঝতেই পারিনি যে ভাবি দেখবে। একটু মজা করলাম। কই ভাবিকে দে আমি বলে দিচ্ছি।

– লাউডস্পিকারেই আছি বল তুই।

– ভাবি ভাবি সরিইই। আসলে আমি মাঝে মাঝে ওকে এভাবে ম্যাসেজ দিয়ে মজা করি। নাহলে শালা ফোনই দেয়না। এত্তো ব্যস্ত থাকে। তাই একটু মজা করলাম। সরিই ভাবি।

– হুম হইছে রাখ এখন পরে কথা হবে।

– সরি ভাই।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

আবির কল কেটে জান্নাতের দিকে ভ্রুকুচকে তাকায়। জান্নাত আবিরকে এভাবে দেখে অসহায় ভাবে বলে,

~ আরে আমি কি বুঝেছি নাকি যে এটা আপনার ফ্রেন্ড। এরকম ম্যাসেজ যে কোন ছেলে দিতে পারে আমি কল্পনাও করি নি। সরিইই।

– আমাকে একবার প্রশ্ন করা উচিৎ ছিল তোমার। তুমি তা না করে আমাকে অবহেলা করলে। যেটা আমি সবচেয়ে অপছন্দ করি।

~ আমি সর….

আবির বিছানা ছেড়ে উঠে যেতে নিলে জান্নাত আবিরকে ধরে আটকায়। আবির বিছানার শেষে পা ঝুলিয়ে বসে আছে অভিমান করে। জান্নাত উঠে এসে আবিরের সামনে ফ্লোরে হাটুতে ভর দিয়ে বসে আবির হাত দুটো ধরে বলে,

~ আমি সত্যি সরিইই বুঝতে পারিনি এরকম কিছু হবে। আমাকে প্লিজ মাফ করে দিন। আমি না জেনেই আপনাকে ভুল বুঝে ফেলেছি। আমি খুব লজ্জিত। প্লিজ মাফ করে দিন।

আবির জান্নাতের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর এই অসহায় মুখখানা দেখে আবিরের মনে ওর জন্য মায়া অনেক গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। আবিরতো সেই কবে জান্নাতকে মাফ করে দিয়েছে। তবে ও দেখতে চাচ্ছে জান্নাত কতটা করতে পারে ওর অভিমান ভাঙার জন্য। তাই আবির মুখটা শক্ত করে ওকে রেখে উঠে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। জান্নাতও উঠে আবিরের কাছে যায়। গিয়ে ওর হাত ধরে অসহায় ভাবে আবার বলে,

~ দয়া করুন আপনি এভাবে রাগ করে থাকবেন না। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। প্লিজ মাফ করে দিন। (জান্নাত কেঁদে দেয়)

আবিরের বুকে ছেত করে উঠে জান্নাতের কান্না দেখে। আবির কিছু বলার আগেই জান্নাত ওকে কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরে বলে,

~ আপনাকে খুব খুব ভালবাসি। আপনি দয়া করে আমার সাথে রাগ করবেন না। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।

জান্নাতের আবেগ ভরা অশ্রুতে সিক্ত অনুরোধ শুনে আবিরের চোখের কোণা ভরে আসে। ও বুঝে গেছে জান্নাত ওকে কতটা ভালবাসে। আবির জান্নাতকে একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে অন্যহাত ওর মাথার পিছনে রেখে বলে,

– আমাকে কখনো ভুল বুঝবে নাতো?

~ কখনো না। শুধু আমার সাথে রাগ কইরেন না প্লিজ।

– আচ্ছা করবো না। কান্না থামাও। দেখি আমার মায়াবতীর কান্নাসিক্ত মুখখানাটা।

জান্নাত চোখ নামিয়ে আছে। গাল বেয়ে অমূল্য অশ্রুগুলো টপটপ করে পড়ছে। আবির ওর দু’হাত জান্নাতের গালে রেখে চোখের পানি গুলো সব মুছে দেয়। কিছুক্ষণ ওকে এভাবে দেখে আবির ওর কপালে একটা ভালবাসার পরশ বুলিয়ে দেয়। জান্নাতের মিষ্টি ঠোঁটের কোণায় ধীরে ধীরে হাসির রেখা ফুটে উঠে। আবির মুগ্ধ হয়ে তা দেখছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে জান্নাতকে এখন। আবির জান্নাতের থুতনিতে হাত দিয়ে ওর দিকে মুখ তুলে দেয়। জান্নাতের মুক্তার মতো চোখগুলোর দিকে আবির মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। আর জান্নাতও আবিরের নেশাকাতর চোখের মাঝে বারবার হারিয়ে যাচ্ছে। দুজন দুজনকে প্রাণ ভরে দেখছে৷ জান্নাত খেয়াল করে আবির ওর ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে। জান্নাতের কেমন জানি লাগছে। ও মনে মনে বলে,”আজ উনাকে সবটা দিয়ে দিব। উনি নিঃসন্দেহে একজন মনের মানুষ। এতো ভালবাসা দেওয়ার পরও ওনাকে আলিঙ্গন না করলে সেটা ওনার প্রতি জুলুম হবে। তাই আমি আর উনাকে থামাবো না। আমিও হারিয়ে যেতে চাই ওনার মাঝে।”

আবির ধীরে ধীরে জান্নাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জান্নাতের চোখগুলো অজানা অনুভবে বন্ধ হয়ে আসে। এরপর ধীরে ধীরে আবির জান্নাতের স্পর্শে চলে আসে। দুজন হারিয়ে যায় অতল ভালবাসার অনুভূতিতে। আজকের রাতটা ওদের ঘুমহীন ভাবেই কেটে যায়। আবির খুব কাছ থেকে জান্নাতকে দেখেছে। জান্নাতও আবিরকে একদম ওর মাঝে মিশিয়ে নিয়েছে। দুজনের এই সুখ ভাগাভাগিতে নিস্তব্ধ রাতটা শেষ হয়।

পরদিন সকালে,

আজও জান্নাতের ঘুমটা আগে ভেঙে যায়। তবে গতকালকের সকালের চেয়ে আজকের সকালটা খুব ভিন্ন লাগছে জান্নাতের। কেমন এক তৃপ্তি অনুভূতি হচ্ছে। নিজেকে খুব অন্যরকম লাগছে। শরীরটা একদম ঝরঝরে মনটা ফুরফুরে। জান্নাতের হাসি পাচ্ছে খুব। মুচকি মুচকি হাসছে মেয়েটা গতরাতের সে মধুর স্মৃতিগুলো স্মরণ করে। আবার খুব লজ্জাও লাগছে। আবার খুব ভালবাসাও অনুভব হচ্ছে আবিরের উপর। জান্নাত আবিরের বুকের মধ্যেই ছিল। এটা যেন ওর কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে শান্তির জায়গায়। আবিরের স্পর্শ, আবিরের ঘ্রাণ, আবিরের অনুভব। সবকিছু ওকে পাগল করে দিচ্ছে৷ আবিরের বুকের ভিতর থেকে মাথা বের করে জান্নাত ওর প্রিয় লেখক আবির হাসানকে দেখছে। ও ভাবছে,

~ এই মানুষটাকে পাওয়ার জন্য কত মেয়ে স্বপ্ন দেখেছে। আজ সে শুধু আমার। আমার সবচেয়ে আপনজন। আমার সবচেয়ে বড় শক্ত আজ সে। শুধুই সে। আমার ভালো থাকা আর খারাপ থাকার একমাত্র কারণ শুধু সে। খুব ভালবাসি আপনাকে বুঝলেন লেখক সাহেব খুব ভালবাসি৷

হঠাৎ আবির ঘুমের মধ্যেই বলে উঠে,

– তোমার চেয়ে হাজার গুণ বেশি ভালবাসি তোমাকে। যতটা আর কেউ তোমাকে ভালবাসবে না।

জান্নাত স্তব্ধ হয়ে যায়। এটা কি বাস্তব! আবির ওর মনের কথা সব বুঝে ফেললো? কিন্তু কীভাবে? আবির আবার বলে,

– স্বামী স্ত্রীর বন্ধন যদি শক্ত হয় তাহলে তারা একে অপরের মনের কথা বুঝতে পারে শুনতে পারে। যেমনটা আমি পারি।

জান্নাত মনের খুশীতে আবিরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। সত্যিই এরকম একজন স্বামী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। যে ভাগ্যটা জান্নাতের আছে৷ আর জান্নাতের মতো স্ত্রী পাওয়াও একটা ভাগ্যের ব্যাপার আবিরের কাছে।

জান্নাত উঠতে নিলে আবির ওকে আঁটকে দিয়ে বলে,

– কি হলো কই যাও? এদিকে আসো।

~ উহুম। মা খারাপ ভাববে। নাস্তা বানাবো। এখন উঠতে হবে৷

– মাত্র সাতটা বাজে। পরে যাও। আগে একটু আদর করি এদিকে আসো।

~ ইসস! লজ্জা লাগে ছাড়ুন।…. সুর সুরি লাগছে।

– লাগুক।

এরপর ওদের আদর সোহাগের ভাগাভাগি হলে দুজন সাওয়ার নিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে। জান্নাতের কপালে একটা চুমু এঁকে দেয় আবির। আর বলে,

– আমাকে এককাপ কফি দিও। তোমার হাতের কফি খেয়ে কাজে বসবো।

~ আচ্ছা আমি এখনই নিয়ে আসছি।

এরপর জান্নাত অজস্র ভালবাসা দিয়ে ওর আবিরের জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আসে। কফি খেয়ে আবিরতো বেজায় খুশী। মানে জান্নাতের হাতে যেন যাদু আছে। আবির জান্নাতকে টান দিয়ে ওর কোলে বসিয়ে নিজ হাতে জান্নাতকেও ওর কফির ভাগ দেয়। জান্নাত লজ্জায় লজ্জায় এক চুমুক খায়। আবার আবির এক চুমুক। আবার জান্নাত এক চুমুক। এভাবে কফি শেষ হলে জান্নাত দ্রুত নাস্তা বানাতে আসে। আবিরতো ওকে ছাড়তেই চায় না।

এরপর নাস্তা পানি খাওয়া দাওয়া শেষ হলে জান্নাত ওর রুমে এসে চুল আঁচড়াচ্ছে। আবির একটু পর এসে জান্নাতকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। ওর ঘন কালো লম্বা চুলে নিজের নাকটা ডুবিয়ে দিয়ে মনের সুখে সুবাস নিচ্ছে। আবির যেন মাতাল হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে জান্নাত দুষ্ট বলে উঠে,

~ মা কিন্তু যেকোনো সময় ডাকতে পারে বুঝলেন।

– হুম ম্যাডাম বুঝেছি। আচ্ছা চলো হানিমুনে কদিন তোমাদের চিটাগং থেকে ঘুরে আসি। ওখানে তো অনেক জায়গা আছে। অনেক মজা হবে।

~ আপনার বাবা-মা?

– তারা এখানে থাকবে। তাদের বয়স হইছে না এত দূর জার্নি করতে পারবে না।

~ তাহলে থাক। বাবা-মাকে এখানে একা রেখে যাবো না। তাদের খাওয়া দাওয়া ঔষধ সব কিছুতে সমস্যা হবে। আমার অনেক চিন্তা হবে৷ তার চেয়ে ঢাকায়ই ঘুরবো নে। বাবা-মাকে ছেড়ে ঘুরতে যাওয়াটা ঠিক হবে না।

আবির জান্নাতকে ওর দিকে ঘুরায়। দুহাত দিয়ে ওর তুলার মতো নরম গালটা ধরে। ওর দিকে এক দৃষ্টিতে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। জান্নাত কিছুই বুঝতে পারছে না। জান্নাত ইশারায় বলে, “কি?” আবির মুচকি হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে “কিছু না” বলে। জান্নাতও মুচকি হাসি দেয়। খুব মিষ্টি ওর হাসিটা৷ আবির জান্নাতকে দেখলেই ওর হার্টবিট কেন জানি বেড়ে যায়। এত্তো মিষ্টি ও যে শুধু দেখতেই ইচ্ছা করে অবিরাম। জান্নাতকে হঠাৎ আবির জড়িয়ে ধরে ওর বুকের মাঝে৷ অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখে। জান্নাত কিছুই বুঝতে পারছে না।

আসলে আবিরের বাবা-মার প্রতি জান্নাতের এই সম্মান আর ভালবাসা দেখে আবির মুগ্ধ হয়েছে জান্নাতের প্রতি। একজন স্বামী চায় তার স্ত্রী তার বাবা-মাকে অনেক ভালবাসুক। তাহলেই তাদের সংসার সুখের হয়। স্ত্রীর প্রতি সম্মান অনেক গুণ বেড়ে যায় স্বামীর কাছে। তবে আজকাল বউরা স্বামীর বাবা-মাকে পছন্দ করে না। যদি তারা একটু বয়স্ক হয় তাহলেতো কথাই নেই। সারাদিন স্বামীর কান ভরে দিন শেষে ছেলেটা তার এত বছরের বাবা-মাকে বন জঙ্গলে ফেলে আসে। অথচ তারা(স্বামী-স্ত্রী) জানে না যে তারাও একদিন এভাবে বৃদ্ধ হবে৷ তাদেরও ছেলে মেয়ে হবে। এরকম যারা করে তারা জীবনে কখনো সুখী হতে পারে না। তাই আমাদের মেয়েদের উচিত জান্নাতের মতো হওয়া। জান্নাতের মতো চিন্তা করা। এতে করে স্বামীর ভালবাসা, সংসারে সুখ আর গুরুজনদের দোয়া পাওয়া যাবে।

বিকেল ৪ টা,

আবিরের কাছে একটা কল আসে। এরপর,

– জান্নাত আমি একটু অফিসে যাচ্ছি। একটা আর্টিকেল নিয়ে কথা বলতে হবে। জরুরি তলব পড়েছে। আমি ৭ টার মধ্যে চলে আসবো। তুমি মায়ের সাথে ততক্ষণ গল্প করো কেমন?

~ খুব জরুরি? যেতেই হবে? (অসহায় ভাবে)

আবির জান্নাতের গাল দুটো ধরে বলে,

– হ্যাঁ সোনা। আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো। তুমি চিন্তা করোনা।

~ আচ্ছা তাড়াতাড়ি আইসেন।

– ওকে।

এরপর আবির বেড়িয়ে পড়ে অফিসের উদ্দেশ্য। বিকেল পেড়িয়ে সন্ধ্যা নামে৷ সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত ৭.১২ মিনিট। কিন্তু আবিরের কোন খোঁজ নেই৷ জান্নাতের মন কেমন কেমন জানি করছে। খুব অস্থির লাগছে ওকে। উল্টো পাল্টো চিন্তা ভাবনা আসছে মাথায়। জান্নাত আর না পেরে আবিরকে কল দেয়। কিন্তু ফোনের ওপাশ থেকে বলছে,

– “আপনি যে নাম্বারে কল দিয়েছেন তা এই মুহূর্তে বন্ধ আছে। অনুগ্রহ করে আবার কল দিন৷”

জান্নাত কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে, গলাটা কেমন শুকিয়ে আসছে, খুব অস্থির হয়ে পরে ও৷ ওর মাথায় শুধু এখন একটাই কথা,

~ আবির ঠিক আছে তো?

চলবে..?

সবার ভালো সাড়া চাই। কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। সাথে থাকবেন সবসময়।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে