ধর্ষক_থেকে_বর_পর্ব__১৯

0
4255

ধর্ষক_থেকে_বর_পর্ব__১৯
.
লামিয়ার মতো এমন মায়াবী একটা বউকে রেখে অন্য মেয়ের দিকে তাকানো কি আমার ঠিক হচ্ছে।মেয়েটা আমাকে অনেক ভালবাসে।আমার কতো কেয়ার করে।আজ পর্যন্ত কোনদিন আমাকে না খাইয়ে ও একটা দানাও মুখে তোলে নি।।ওর মতো একটা লক্ষী মেয়েকে রেখে অন্য মেয়ের সাথে সময় কাটানো আমার একদম ই ঠিক হয় না।আমি আর বৃষ্টির কথা ভাববো না।ওর সাথে কোন যোগাযোগও রাখবো না।এসব কথা ভাবতে ভাবতে ডাইনিং রুমে চলে আসলাম। ডাইনিং রুমে এসে লামিয়া আমার পাশের চেয়ারটাতে বসলো।মেঘলা আমাদের জন্য প্লেটে খাবার বেড়ে দিল।খাবার খাওয়ার এক পর্যায়ে হঠাৎ করেই আমি বিশম খেলাম।লামিয়া গ্লাসে পানি নিয়ে আমার মুখের সামনে ধরলো।আমি একবার গ্লাসের দিকে তাকিয়ে আবার লামিয়ার মুখের দিকে তাকালাম।লামিয়ার ওই মায়াবী মুখটার দিকে তাকাতেই আমি স্বাবাভিক হয়ে গেলাম।সত্যি অন্য রকম একটা মায়া আছে লামিয়ার মুখে।রাতে বাসার ছাদে বসে আছি আর দূরের ওই মেঘাছন্ন আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছি।দক্ষিণ দিকের ঠান্ডা হাওয়া মেঘাছন্ন অকাশ একটু পর পর বিদুৎ চমকে চারদিকে আলো ছড়ানো সব মিলিয়ে ভালোই লাগছিল।এমন সময় কারো কথায় পিছনে ফিরে তাকালাম।পিছনে তাকিয়ে দেখি লামিয়া দাড়িয়ে আছে।হাতে লাল চুরি পায়ে আলতা ঠোঁঠে লিপস্টিক সব মিলিয়ে বেশ সুন্দর লাগছে লামিয়াকে।
.
— এখানে এভাবে দাড়িয়ে আছো
কেন?(লামিয়া)
— রুমে বসে ভাল লাগছিল না।
তাই একটু ছাদে আসলাম।
— ছাদে দাড়িয়ে কি করছো?
— এই মেঘাছন্ন আকাশটাকে
দেখছিলাম।
— রুমে চলো আর একটু পর
বৃষ্টি নেমে পড়বে।
.
কথাটা বলার সাথে সাথে জোরে একটা বিদুৎ চমকালো।লামিয়া ভয় পেয়ে আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।মেয়েদের হার্ড দূরবল তাই এমনটা হয়ে থাকে।কোন উচ্চ শব্দ পেলেই মেয়েরা চমকে উঠে লামিয়ার বেলাও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।দেখেতে দেখতে আকাশের বুক থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি নামতে শুরু করলো।এদিকে লামিয়া এখনো আমাকে জরিয়ে ধরে আছে।
.
— লামিয়া চলো রুমে যাই।আর একটু পর
মুসুল ধারে বৃষ্টি নামতে শুরু করবে।
— আমি তোমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজবো।
চলো না দুজন বৃষ্টিতে ভিজি।
— পাগলামী করো না।বৃষ্টিতে ভিজলে
তোমার জ্বর আসবে।
— আসুক তাতে কি?আমি বৃষ্টিতে
ভিজবো ব্যাস।
— ঠিক আছে তুমি ভেজো।
আমি চললাম।
.
কথাটা বলেই আমি ছাদ থেকে নিচে নেমে আসলাম।লামিয়াও আমার পিছন পিছন নিচে চলে আসলো।আমি জানতাম আমি না ভিজলে লামিয়াও ভিজবে না।আর তাছাড়া এখন ভিজলে জ্বর তো নিশ্চিতভাবে আসবে।রুমে এসে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।কিছু সময় পর লামিয়াও এসে আমার পাশে শুয়ে পড়লো।আকাশের বুক চিরে মুসুল ধারে বৃষ্টি নামতে শুরু করলো। বাহিরের বৃষ্টির ঠান্ডা হাওয়ায় দু চোখে ঘুম চলে আসছে।হঠাৎ করে আবার বিদুৎ চমকালো লামিয়া ওর বুকের সাথে আমার বুক লাগিয়ে আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি লামিয়া আমার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।আমি লামিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আর ওর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।লামিয়াকে যত দেখছি ততই ওর মায়ায় জরিয়ে যাচ্ছি।কেন জানি না লামিয়ার প্রতি আমার ভাল লাগা কাজ করতে শুরু করেছে।ওর মতো একজন নিষ্পাপ মেয়েকে আমি নর পশুর মতো একসময় ধর্ষন করেছিলাম।এইটা ভাবতে নিজের উপর নিজেরই রাগ হচ্ছে।এমন সময় কারো কথায় ঘোর কাটলো আমার।এদিকে লামিয়াও ঘুম থেকে উঠে পড়লো।
.
— দুলাভাই আসতে পারি?(মেঘলা)
— আরে মেঘলা আসো।
— আপনাদের জন্য চা নিয়ে এসেছি।
— টেবিলে রেখে যাও।
— আচ্ছা।
— দুলাভাই একটা কথা বলি?
— বলো।
— আপনাদের রোমান্সটা দরজা আটকে
করলে ভালো হয় না।
— তুই গেলি এখান থেকে।(লামিয়া)
.
কথাটা বলতেই মেঘলা চায়ের কাপ টেবিলে রেখে মিষ্টি মিষ্টি হাসতে হাসতে দৌড়ে চলে গেল।এদিকে লামিয়া লজ্জায় বিছানার পাশ থেকে ওড়নাটা নিয়ে শরীরের উপর দিয়ে ওয়াস রুমে চলে গেল।সেই কখন থেকে ডাইরিং রুমে সকলে বসে আছি।লামিয়ার বাবা মানে আমার শশুর মসাইয়ের জন্য।এদিকে আমার ক্ষুধায় পেট জ্বলে যাচ্ছে এখন পর্যন্ত তার আসার কোন নাম গন্ধই নেই।ওই তো ওনি চলে এসেছে।লামিয়ার বাবা এসে আমার সামনের চেয়ারটাতে বসলো।
.
— কিরে জামাইকে এখন পর্যন্ত খাবার
দিস নি কেন?(লামিয়ার বাবা)
— আব্বু দুলাভাই বলছিল আপনার
সাথে খাবে।(মেঘলা)
— তাই বলে এতো সময় বসিয়ে রাখবি।
— না বাবা ঠিক আছে।(আমি)
— জামাইকে খেতে দে।
— দিচ্ছি আব্বু।
.
মেঘলা সকলের জন্য খাবার বেড়ে দিল।যে যার মতো করে খাবার খেতে শুরু করলো।খাওয়া দাওয়ার এক পর্যায়ে আমার শশুড় বাবা বললো:
.
— মেঘলা শোন।(লামিয়ার বাবা)
— জ্বি আব্বু বলো?(মেঘলা)
— বিকালে লামিয়া এবং জামাইকে
নিয়ে আমাদের গ্রামের বাড়িতে
বেড়াতে যাবি।
— কেন আব্বু?
— এই সময় সেখানে বসন্তের মেলা বসে।
লামিয়া এবং জামাইকে বসন্তের মেলাটা
ঘুরিয়ে দেখাবি।
— ওয়াও।আব্বুু তাহলে তো ভালই হয়।এই
সুযোগে দাদি ফুপি এবং চাচা চাচীর সাথে
কয়েকটা দিন কাটানোও যাবে।(লামিয়া)
— কিন্তুু আব্বু সে তো অনেক দূর।(মেঘলা)
— তাতে কি হয়েছে।গাড়ি আছে
গাড়ি নিয়ে যাবি।
— জামাই এই নাও গাড়ির চাবি।
— এইটা আমাকে দিচ্ছেন কেন বাবা?
— গাড়িটা তুমি ড্রাইভ করে নিয়ে
যাবে।
.
বসন্ত মেলা।বসন্তের শুরুতেই এই মেলাটা হয়ে থাকে।এখানে নানা রংয়ের নানা পেশার মানুষ বেড়াতে আসে।বসন্ত মেলায় বিভিন্ন রকমের ফুল শীতের পিঠা সহ আরো অনেক কিছু পাওয়া যায়।সাধারণত বসন্তের সৌন্দয্যকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এই মেলা উৎযাপিত হয়।সেই কখন থেকে গাড়ির ভিতর বসে আছি এখন পর্যন্ত ওদের আসার কোন চিহ্ন মাত্র দেখছি না।মেয়ে মানুষ এই রকমই একবার সাজতে বসলে আর উঠতেই চায় না।জানি না আর কতো সময় এভাবে বসে থাকতে হবে।বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করার পর লামিয়া এবং মেঘলা চলে আসলো।দুজনকেই দেখতে যা লাগছে না।দেখে মনে হচ্ছে যেন দুটো ডানা কাটা পরী আকাশ থেকে মাটিতে নেমে এসেছে।ওদেরকে দেখে প্রসংসা না করে পারলাম না।গাড়ির কাছে এসে মেঘলা বললো:
.
— এই যে দুলাভাই এমন করে
কি দেখছেন?(মেঘলা)
— তোমাকে।
— আমাকে আবার দেখার
কি হলো।
— শাড়িতে তোমাকে বেশ
লাগছে কিন্তুু।
— তাই নাকি দুলাভাই।
— হু।তাই তো দেখছি।
— আমার দিকে চোখটা না দিয়ে
আপনার বউয়ের দিকে দেন।
— তুমি তো আমার 2nd বউ।
— কি বলছেন?
— হু তাই তো।বউয়ের ছোট বোন মানে
শালিকা তো বউয়ের মতোই তাই না।
— হয়েছে আর মজা করতে হবে না।এবার
চলো।(পাশ থেকে লামিয়া বলে উঠলো)
— হু চলো।
.
তারপর গাড়িটা স্টাট করলাম।গাড়ি তার নিজ গতিতে চলছে।নানা রংয়ের মানুষের নানা জায়গার ছুটে চলার পথ একটাই।এখানে বিভিন্নি গাড়ি বিভিন্ন গতিতে ছুটে চলেছে।প্রায় ৩ ঘন্টা অপেক্ষার পর হাইওয়ে পেরিয়ে গ্রামের লোকাল রাস্তায় ঢুকলাম।গ্রামের রাস্তায় পথ চলার মজাটাই অন্য রকম।চারিদিকে মনোমুগ্ধ কর প্রাকৃতির সৌন্দর্য।কৃষক ফসলি জমিতে ফসল ফলাচ্ছে।গাছে গাছে বসম্তের ফুল ফুঁটে রয়েছে।পাখিরা কিচির মিচির করে ডাকছে।সব মিলিয়ে ভালই লাগছিল।হঠাৎ করে একটা……………….






#______চলবে_______

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে