তোকে চাই❤(সিজন -২)Part:8+9+1‭‭0

0
4734

তোকে চাই❤(সিজন -২)Part:8+9+1‭‭0
#writer : নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: 8
.
.
?
.
চিত্রাকে সামনে এগিয়ে যেতে বলে চারপাশে তাকিয়ে সেই চোখে দুটোর সন্ধান করছি।কিন্ত কোথাও কেউ নেই।তবু কেনো যেনো বিশ্বাস হচ্ছে না মনে হচ্ছে কেউ একজন তো আছে যে,, গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখে চলেছে আমায়।।একহাতে শাড়ির কুঁচিগুলো ধরে ডানপাশের রাস্তাটির দিকে পা বাড়াতেই পেছন থেকে ডেকে উঠলো কেউ। পেছনে তাকিয়ে দেখি সাহেল ভাইয়া উনিও নীল রঙের পাঞ্জাবী পড়েছেন।বেশ সুন্দর লাগছে।।উনাকে দেখা হালকা হাসলাম।উনিও হালকা হেসে বলে উঠলেন…
.
কেমন আছো সানশাইন?
.
জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো,আপনি?
.
এইতো বেশ আছি।শাড়িতে তোমাকে বেশ মানিয়েছে আজ আর বাচ্চা লাগছে না তোমায়।(মুচকি হেসে)
.
উনার কথায় হাসলাম কিছু বললাম না।।আমারও জানতে ইচ্ছে করছে সেই গোপন ছেলেটা আসলে কে?? উনি??আমি উনার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আমার চোখে হাজারও প্রশ্ন থাকলেও উনার চোখে কোনো উত্তর খুঁজে পেলাম না একদম শান্ত এক জোড়া চোখ।।আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে আবারও বলে উঠলেন উনি….
.
চলো হাটঁতে হাটঁতে কথা বলি?
.
জি চলুন…
.
কথাটা বলেই হাঁটা দিলাম উনার পাশাপাশি।। এখনও সেই একই অনুভূতি!! কেউ দেখছে আমায়!!হঠাৎই উনি বলে উঠলেন…
.
শুভ্রর কথায় কিছু মনে করো না সানশাইন।ওর যে কি হয়েছে আমি নিজেও বুঝতে পারছি না।।ও আমার ছোট্ট বেলার ফ্রেন্ড,,ওকে কখনো মজা করেও মেয়েদেরকে হার্ট করতে দেখি নি।।ও খুবই ভদ্র একটা ছেলে বিশেষ করে মেয়েদের প্রতি।।তুমিই একমাত্র মেয়ে যার সাথে ও এতোটা বাজে বিহেভ করে।সেদিন যে কথাগুলো ইউজ করলো সেগুলো সে কোনো বাজে মেয়েকেও কোনোদিন বলতে পারবে না বলে আমার ধারনা ছিলো।।কিন্তু আমি হতাশ।।তোমার প্রতি ওর ব্যবহার খুবই অগোছালো।আমরা রেগিং করি বাট মেয়েদের রেসপেক্টটা রেখেই করি বাট ও….
.
এসাইনমেন্টটা কি আপনি করে দিয়েছিলেন?
.
আমার হঠাৎ এমন কথায় অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন উনি।।তারপর ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলেন…
.
এসাইনমেন্টটা সত্যি তোমায় কেউ করে দিয়েছিলো??
.
আপনি করেন নি??
.
আমি উত্তরের বদলে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম উনাকে।।উনি সাবলিলভাবেই বলে উঠলেন…
.
না।আমি কেনো করতে যাবো বলো তো?শুভ্রও আমায় সন্দেহ করছে।আমার হেল্প যতটুকু করার সবার সামনেই করার চেষ্টা করেছি।।আমি শুভ্রর মতো এতো ব্রিলিয়ান্ট নই আর তাছাড়া আমার যদি এসাইনমেন্ট দেওয়ারই হতো তাহলে সরাসরিই দিতাম এতো লুকুচুরির তো কিছু নেই।।শুভ্রর বিহেভিয়ারটা তোমার প্রতি বেশি বাজে হয়ে যাচ্ছিলো তাই ওকে কন্ট্রোল করার জন্য এমন একটা শাস্তি দিতে বলি বাট দেখো ব্যাপারটা আরো উল্টো হলো।।তোমার প্রতি ওর বিহেভ খারাপ হয়েই চলেছে দিন দিন।।
.
আমি চুপচাপ শুনে যাচ্ছি কিছু বলছি না।।কি বলবো বুঝতেও পারছি না।।বারবার হতাশ হতে হচ্ছে আমায়।।কে সে?সাহেল ভাইয়া কি মিথ্যা বলছে আমায়?মিথ্যা বলে লাভই বা কি উনার।।উফফ…চিন্তায় করতে পারছি না আর।।সাহেল ভাইয়া আবারও বলে উঠলো…
.
কিছু বলছো না যে?
.
না এমনি(মুচকি হেসে)
.
একটা জিনিস খেয়াল করেছো??কাকতালীয় ভাবে হলেও আমাদের ড্রেসের কালারটা কিন্তু বেশ ম্যাচিং হয়ে গেছে।।তোমার বান্ধবীকেও দেখলাম সেইম কালার শাড়ি পড়েছে।।
.
হুম দুজন প্ল্যানিং করেই পড়েছি।
.
আমি আর শুভ্রও প্ল্যান করে পড়েছি।।ও হ্যা আজ শুভ্রও নীল পাঞ্জাবী পড়েছে।
.
ওহ
.
শুভ্রর নামটা শোনার সাথে সাথে বিতৃষ্ণায় ভরে গেলো মন।এই একটা মানুষকে আমার অসহ্য লাগে।।আমি কাউকে ঘৃনা করতে পারি না যদি পারতাম তাহলে উনিই সেই লিস্টে প্রথম হতেন।।সাহেল ভাইয়া আমাকে বাই বলে নিজের কাজে চলে গেলেন।।সামনে বেশ ভীর। চিত্রা স্টেজের পাশে দাঁড়িয়ে আছে ওখান থেকেই হাতের ইশারায় ডেকে চলেছে আমায়।তাকে দেখে মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে আমি ওর কাছে না গেলে সে মরেও যেতে পারে।।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাড়ির কুঁচিগুলো ধরে ভীরের মধ্যেই হাঁটা দিলাম সেদিকে।।কিছুটা ভেতরের দিকে যেতেই কারো হাতের স্পর্শ পেলাম আমার পেটে সাথে আঁচড় লাগার মতো ব্যাথা।।আশেপাশে প্রচুর মানুষ,, কে এমনটা করতে পারে বুঝতে পারছি না,,তবে স্পর্শটা চেনা।।তাড়াতাড়ি ভীর থেকে বেরিয়ে এসে পেটে হাত দিয়ে দেখলাম রক্ত বেরিয়ে গেছে।।কেউ নখ দিয়ে খুব শক্ত করে আচঁড় কেটে দিয়েছে।।জায়গাটা প্রচুর জ্বলছে।।হঠাৎই একটা পিচ্চি ছেলে আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।। ছেলেটাকে আমি এর আগেও দেখেছি ভার্সিটির পাশের চায়ের দোকানটাতে।।আমি ছেলেটার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই সে আমার দিকে এগিয়ে দিলো মলম, টিস্যু আর একটা কাগজ।আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললাম এসব কে দিয়েছে তোমায়??ছেলেটা গম্ভীর মুখে উত্তর দিলো…”নীল পাঞ্জাবী পড়া ভাইজান” “নীল পাঞ্জাবী” কথাটা শুনেই সাহেল ভাইয়ার কথা মাথায় এলো।।তারপর আবার মনে হলো শুভ্র ভাইয়ার কথা।।আশেপাশে তাকিয়ে দেখি অনেক ছেলেই নীল পাঞ্জাবী পড়েছে।।কার কথা বুঝবো আমি,??তাই আবারও ছেলেটির দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম-
.
নাম কি তোমার ওই নীল পাঞ্জাবী ওয়ালা ভাইজানের?
.
নাম কইতে মানা করছে।।
.
কথাটা বলেই ওগুলো আমার হাতে দিয়ে দৌড়ে চলে গেলো সে।।আমি ওয়াশরুমে গিয়ে শাড়িটা উঁচু করে দেখলাম তিনটা নখের আচড়।।টিস্যু দিয়ে রক্তটা পরিষ্কার করে মলম লাগিয়ে দিলাম।।এই ভূতের মতো কাঁধে নেচে বেড়ানো মানুষটাকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে এই মুহূর্তে।। এর সাহস কি করে হয় আমার শরীরে হাত দাওয়ার??হাউ ডেয়ার হিম।।হাতের কাগজের দিকে নজর যাওয়ায় কাগজের ভাজটা মেলে ধরলাম।।সেখানে লেখা-
.
“” শাড়ি পড়েছো ঠিক আছে। তোমার ফর্সা পেটটা কি সবাইকে দেখিয়ে বেড়াতে হবে?শাড়ি ঠিক না রাখতে পারলে পড়ো কেন??নাকি দেখাতে চাও সবাইকে যে তুমি কতো সুন্দর?ছেলেরা কিভাবে তাকাচ্ছিলো সে খেয়াল আছে??কেনো দেখবে তোমায় অন্যকেউ??খবরদার আবার এমন হলে খুন করে ফেলবো তোমায়।।রাগ লাগছিলো খুব তাই এমনটা করেছি বেশি ব্যাথা লাগলে সরি।।তোমার মন খারাপের জন্য আমি দায়ী সেটাও আমি জানি তাই আবারও একটা সরি।। শাড়িটা ঠিক করে নিও প্লিজ “””
.
চিঠিটা পড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।।এই চিঠি পড়ার পড় ইচ্ছে হচ্ছে সম্পূর্ণ শাড়ি খুলে তারপর বাইরে বের হই।।এরা আমাকে পেয়েছেটা কি??নিজের প্রোপার্টি নাকি??সরি?হোয়াট সরি?তোর সরি দিয়ে কি আমি জুস বানিয়ে খাবো নাকি? ডাফার।।রাগ আর বিরক্তি নিয়ে বেরিয়ে এলাম ওয়াশ রুম থেকে।।অনুষ্ঠান যেদিকে হচ্ছে সেদিকে যেতেই দেখি শুভ্র ভাইয়া আর চিত্রা কথা বলছে।।।দুজনেই যেনো হেসে গড়িয়ে পড়ছে।।শুভ্রকে দেখেই রাগ উঠে গেছে মাথায়।।আর চিত্রার এমন দাঁত কেলানো দেখে ইচ্ছে হচ্ছে ওর কানের নিচে কয়েকটা লাগায়।।ডাফার কোথাকার।।আমাকে যে এতো অপমান করে তার সাথে এতো দাঁত কেলানোর কি আছে বুঝলাম না।।মনটাই খারাপ হয়ে গেলো।।এই মুহূর্তে সব কিছু বিষাক্ত লাগছে আমার কাছে।।আর কিছু না ভেবে ঘুরে দাঁড়ালাম বাসায় ফিরবো বলে।।পেছনে তাকাতেই দেখি অভ্র ভাইয়া।।আমাকে দেখে হাসি হাসি মুখ নিয়ে বলে উঠলেন…
.
বাহ,, আজ আমাদের বীরবালিকাকে তো খুব মিষ্টি লাগছে কিন্তু মুখটা পেঁচার মতো হয়ে আছে কেন?
.
এমনি।
.
ওহ্।মন খারাপ বুঝতে পেরেছি।তো কোথায় যাওয়া হচ্ছিলো??(ভ্রু নাচিয়ে)
.
বাসায় যাবো ভালো লাগছে না।।কিন্তু আপনি এখানে?
.
বাবার সাথে আসছি।বাবা তো এই ভার্সিটিরই স্টুডেন্ট ছিলেন।।দুই তিন বছর অধ্যাপনাও করেছেন।।সেই সুবাদে উনাকে ইনভাইট করা হয়েছে।।বাবা সাথে করে এসিস্ট্যান্ট হিসেবে আমাকেও নিয়ে এলেন হাহাহাহা।।।আচ্ছা,, এসব ছাড়ো অনুষ্ঠান তো শুরুই হয় নি তো এখনই বাসায় যাচ্ছো কেন?
.
ভালো লাগছে না।।চলে যাবো।দম বন্ধ লাগছে এখানে।
.
আচ্ছা তাহলে এট লিস্ট বাবার সাথে দেখা করে যাও।তোমার ভালো লাগবে।।ওই তো বাবা…
.
আমার পেছনের দিকে ইশারা করে বলে উঠলেন কথাটা।।আমি পেছন ফিরে মামুকে দেখতে পেলাম।উনি আমার থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে শুভ্রর সাথে গল্প করছেন।শুভ্রও বত্রিশ দাঁত বের করে বেশ ভদ্রভাবে কথা বলে চলেছে।।শুভ্রকে দেখে মামুর সাথে কথা বলার ইচ্ছেটাই চলে গেলো।।তাই অভ্র ভাইয়াকে কোনোরকম বুঝিয়ে চলে এলাম সেখান থেকে।।একা একা হাঁটছি রাস্তা ধরে।।পেটের কাঁটায় হালকা পুড়াচ্ছে।।চুলগুলো ছাড়া থাকায় গরমও করছে হালকা।।সেই সাথে চেপে ধরছে হাজারও বিরক্তি।।আজ মনটাকেই আমার বড্ড বিরক্তিকর লাগছে।।ইচ্ছে হচ্ছে মনটাকে বের করে ঘষে মেজে আবার বসিয়ে দিতে পারলে মন খারাপ ভাবটা একটু কমে যেতো হয়তো।।আকাশ-পাতাল কল্পনায় ভর করে আগোছালো পায়ে হেঁটে চলেছে ব্যস্ত রাস্তায়।আজ রিক্সার অভাব নেই।।চারদিকে কতো টুংটাং শব্দ!!!কিন্তু আফসোস আজ এই রিক্সার আমার কোনো প্রয়োজনই নেই….
.
.
#চলবে….

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

#তোকে চাই❤
………(সিজন -২)
#writer : নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: 9
.
.
?
.
সকাল প্রায় ৬ টা।তীক্ষ্ণ কোনো শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো আমার।শব্দটা কোথা থেকে আসছে বুঝার জন্যই মাথাটা তুলে চোখদুটো জোড় করেই মেলে ধরলাম।।কয়েকসেকেন্ড পর বুঝলাম শব্দটা বালিশের নিচ থেকে আসছে।। আমার ফোনটাই বেজে চলেছে এতোটা নিষ্ঠুর ভাবে।।ফোনটা হাতে নিয়ে আছাড় মারতে ইচ্ছে করছিলো তবু রিসিভ করে কানে নিলাম।।সাথে সাথে ওপাশ থেকে উদ্ধিগ্ন কন্ঠে গাঁধার মতো বলে উঠলো চিত্রা…
.
রোদ?এবার আর আমার নিস্তার নেই রে।
.
কেনো?খুন টুন করেছিস নাকি?(শান্ত গলায়)
.
দুপুর দুটোয় পাত্র পক্ষ আসছে। মার ছেলেটাকে বেশ পছন্দ।। মনে হচ্ছে বিয়েটা এবার হয়েই যাবে রে।এবার আমার কি হবে??আজ ভার্সিটিতে সিটি(ক্লাস টেস্ট) আমি পড়বো নাকি টেনশন করবো বল তো?
.
অবশ্যই পড়বি।।বিয়ে নিয়ে এতো টেনশন করার কি আছে বুঝলাম না।।হুট করে কবুল বলে ঠুস করে বাসর ঘরে ঢুকে যাবি৷ এখানে এতো কাঁপা-কাঁপি হাঁপাহাঁপির কিছু দেখছি না আমি।।তার পরের টা তোর বরের উপর ছেড়ে দে।।একবছর পর হসপিটালে তোর বাচ্চা নিয়ে দোলা দুলি।।খেলা-খেলি আমার উপর ছেড়ে দে,,, নো চাপ।।
.
তুই মজা করছিস??আর ইউ কিডিং উইথ মি?
.
নো আম সিরিয়াস।মজা ফজার টাইম নাই।এখন সব সিরিয়াস চলবে….মজা ফজার দিন শেষ।তুই বরং এক কাজ কর…পড়ার টেবিল থেকে উঠে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়।।
.
কেন?(অবাক হয়ে)বিছানায় শুয়ে কি হবে?
.
বিছানায় শুয়ে কি হবে আবার… দৌড়াবি।। ডাফার….বিছানায় শোয়ে মানুষ কি করে?অবশ্যই ঘুমাবি।।
.
এই টাইমে এই টেনশনের মধ্যে আমি ঘুমাবো??
.
অবশ্যই ঘুমাবি।দরকার পড়লে ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমাবি।।হুমায়ুন স্যার একটা কথা বলেছেন।এক্চুয়েলি বলেন নি লিখেছেন আমি এই ব্যাপারে তার সাথে একমত।।তুই কি শুনবি কি লিখেছেন?
.
হুম বল..(গোমড়া মুখে)
.
উনি লিখেছেন-

“””বিয়ে কোন আনন্দময় ব্যাপার না।মোটামুটি ভাবে ভয়ংকর ব্যাপার।নিজের চেনা বিছানা ফেলে একজন পুরুষ মানুষের গায়ের ঘামের গন্ধের মাঝখানে শুয়ে থাকা – ভাবতেই গা গুলায়।

… হুমায়ূন আহমেদ (রোদন ভরা এ বসন্তে)।।””
বুঝলি? ব্যাপারটা সত্যিই ভয়ংকর।তাই আমি ভাবছি তোর বিয়েতে বেশি করে পার্ফিউম আর রুমস্প্র গিফ্ট করবো।।আইডিয়াটা সুন্দর না??
.
তুই এমন সিরিয়াস টাইপ ব্যাপারে দায়সারা ভাবে কথা বলতে পারছিস রোদ?
.
পারবো না কেনো অবশ্যই পারছি।।তুই এখন এসব ভ্যানভ্যানানি আর প্যানপ্যানানি বাদ দিয়ে ভার্সিটি চলে আয়।।ক্লাস করেই মার্কেট থেকে এক্সপেন্সিভ সিসি টিভি ক্যামেরা কিনবো,,বুঝলি।।তো ফটাফট চলে আয় তো।
.
সিসি টিভি ক্যামেরা দিয়ে কি করবি?(অবাক হয়ে)
.
তোর বাসরঘরের খাটের কোনায় লাগাবো।।একদম লাইফ চলবে।।নাহ্ থাক বাদ দে তোর ওই পেট মোটা জামাই রে দেখা যাবে না।।গা ঘিনঘিন করবে আইডিয়া ক্যান্সেল।।অন্যকিছু ভাবতে হবে।।
.
রোদদদদদ….তুই..
.
আমি ফোনটা খট করে কেটে দিলাম।। এখন সে ননস্টপ আমায় গালি দিবে যা শোনার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই।।আবারও কাঁথা টেনে শুয়ে পড়লাম বাট লাভ হলো না।।ঘুমটা কেটে গেছে।।কোনোরকম ফ্রেশ হয়েই কফি হাতে দাঁড়িয়ে গেলাম ব্যালকনিতে।।সত্যি কি চিত্রার বিয়েটা হয়ে যাবে?একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কফির কাপে চুমুক দিচ্ছি আর ভাবছি….চিত্রাকে ছাড়া আমি কতোটা অসহায়।।ওর উপর বিরক্ত হয়েও শান্তি আছে।সেই শান্তিটার জন্যই আল্লাহর কাছে রোদ প্রার্থনা করি।।ও ভালো থাকুক,,হ্যাপি থাকুক আর সারাটা জীবন আমায় বিরক্ত করুক।।বিয়ে হয়ে গেলে কি ও চেঞ্জ হয়ে যাবে?হতেও পারে,,মানুষের মন বুঝা দায়!!!
.
.
?
.
.
ভার্সিটির গার্ডেনের পাশের রাস্তাটায় হেঁটে চলেছি এদিকটা খুব নীরব।।চিত্রা একটু আগেই চলে গেছে।আন্টির কড়া হুকুম ১ঃ৩০ টার আগে বাসায় ফিরবে ছেলে আসবে দেখতে।চিত্রার মুখটা শুকনো ছিলো ওর শুকনো মুখটা দেখে কেনো জানি মন খারাপ লাগছে বেশ।।তাই এই নির্জন পথে হেঁটে মন শান্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।।হঠাৎই কিছু ছেলেকে দেখতে পেলাম ভার্সিটির পেছনের দিকে দিনের বেলাও ছেলেরা নেশা করে জানা ছিলো না।।ওদের দিকে চোখ পড়তেই ফিরে হাঁটা দিলাম।।কিন্তু যা হওয়ার তাই হলো সবাই মিলে পথ আটকে দাঁড়ালো আমার।।নারী দেহের নেশা নাকি বড় নেশা!!!তারাও এখন সেই নেশায় আসক্ত।।ওরা কোনা কথা বলছে না হেলেদুলে একে অপরকে ইশারা করছে।।আমি কি করবো বুঝতে পারছি না,,কোনো ফিলিংসই কাজ করছে না।।একটা ছেলে হুট করেই আমার হাত চেপে ধরলো আমি চিৎকার দেওয়ার আগেই ছেলেটিই চাপা আর্তনাদের মতো শব্দ করে ছিটকে পড়লো।।বাকিরা এমনি এমনি সরে গলে অসম্ভব রকম ভয়ে।।আমি ওদের চোখের দৃষ্টি অনুসরণ করতেই শুভ্রকে দেখতে পেলাম।।ফরসা মুখটা লাল টগবগে হয়ে আছে।।হাত মুষ্টিবদ্ধ।। চোখদুটোতে যেনো কেউ সূর্য এঁটে দিয়েছে।উনি আমাকে না দেখার ভাব করে ওদের দিকে এগিয়ে গিয়েই কয়েকটা চড় বসিয়ে দিলো গালে….
.
তোদের সাহস কিভাবে হয় আমার ভার্সিটিতে মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকাতে??হাউ ডেয়ার অল অফ ইউ।।
তোরা বুঝতে পারছিস তোদের অবস্থা এক্চুয়েলি কি হতে পারে??(রাগী গলায়)
.
সরি ভাই।।আর হবে না।।আমরা বুঝতে পারি নাই।।
.
কি বুঝতে পারিস নাই??বল কি বুঝতে পারিস নাই??
.
কথাটা বলে আবারও মারতে গিয়েও আমার দিকে একনজর তাকিয়ে থেমে গেলো।।কাউকে ফোন করে কিছু একটা বলতেই একদল ছেলে এসে ওদের নিয়ে গেলো।।উনি উল্টো হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।আমার দিকে তাকাচ্ছেন না।।আমি বুঝতে পারছি না কি করবো।আমার কি উনাকে থ্যাংক্স বলা উচিত??নাকি এভাবেই চলে যাওয়া উচিত??অনেক ভেবে মানবতার খাতিরেই বলে উঠলাম….”থেংক্স”
উনি কথাটা শুনেই আমার দিকে তাকালেন।।রাগের উনার চোখ জ্বলছে।এই চোখে তাকানোর ক্ষমতা আমার নেই। আমি মাটির দিকে তাকিয়ে আবারও বলে উঠলাম….
.
আমাকে সেইভ করার জন্য থেংক্স ভাইয়া।
.
সাথে সাথেই দৌড়ে এসে হাত চেপে ধরলেন আমায়।।দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলেন….
.
তোমার এই সস্তা থেংক্স তোমার কাছে রাখো।।আই ডোন্ট ওয়ান্ট ইট। এখানে কেন এসেছিলে?নিজেকে বিলিয়ে দিতে?তোমার দ্বারা সবই সম্ভব।।
.
আমি কিছু বলছি না।।উনার কথা আমার কানে ঢুকছে বলে মনে হচ্ছে না।।আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি উনার হাতের দিকে যে হাতে উনি আমাকে চেপে ধরে আছেন।।ভার্সিটির প্রথম দিনের পর আজই উনি প্রথম টাচ করলেন আমায়।।কিন্তু মনে হচ্ছে!!!উনি আমার দৃষ্টি অনুসরণ করে হাতের দিকে তাকাতেই তাড়াতাড়ি হাত সরিয়ে নিলেন।।আমি উনার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলাম…..”আবার একটু ধরবেন প্লিজ??কেনো জানি মনে হচ্ছে আপনার স্প….”আর কিছু বলতে দিলেন না উনি তার আগেই ধমক দিয়ো চলে গেলেন সেখান থেকে।।আর আমার মনে রেখে গেলেন সন্দেহ…..
.
.
#চলবে…
.#তোকে চাই❤
………(সিজন -২)
#writer : নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤
#part: 10
.
.
?
.
আপু আর আমি তৈরি হচ্ছি বাইরে যাবো।আজকে আইসক্রিম,, ফুসকা,,চটপটি যা সামনে পাবো সব খেয়ে পেট ভরবো।।আপুর সাথে বের হওয়ার একটা প্লাস পয়েন্ট হলো আপু কখনো না বলে না।।দুই তিন প্লেট ফুসকা সাবাড় করে দিলেও আপু হাসিমুখে বিল পে করে দেই।।কি সুইট বোন আমার।।কালকে আপু চলে যাবে।।ভার্সিটির ছুটি শেষ তার।তাই আজকে এতো আয়োজন করে ঘুরতে যাওয়া।। নীল শাড়ি,, নীল চুরি একদম এলাহি কান্ড।।দুজনে তৈরি হয়ে বের হতেই দেখি মামু আর অভ্র ভাইয়া বসে আছে।।কাল তাদের বাসায় দাওয়াত।।আমাদের দেখেই মামু হাসি হাসি মুখে বলে উঠলেন….
.
রোদ মা কোথায় যাচ্ছিস?
.
মামু ঘুরতে যাচ্ছি।।আজ ফাটিয়ে খাবো।।আপু তো কাল চলে যাচ্ছে তাই।।তুমি আবার সাথে যেতে চেয়েও না।।তোমায় নেওয়া যাবে না।।।এখানে শুধু ইয়াংস্টারস দের কতৃত্ব।।বুড়োদের নেওয়ার নিয়ম নেই।।
.
মামু আমার কথায় হুহা করে হেসে উঠলেন।।হাসি মুখেই বলে উঠলেন…
.
আচ্ছা যাবো না।।তবে তুই কিন্তু ভুল বললি।।আমি এখনো যথেষ্ট ইয়াং ।।দেখ তো অভ্র আর আমার মধ্যে কাকে বেশি স্মার্ট লাগছে?অবশ্যই আমাকে।।
.
কথাটা বলে মামু নিজেই হেসে দিলেন সাথে আমরাও।।তারপর হঠাৎই হাসি বন্ধ করে বলে উঠলো…
.
রুহি মা?তোমার কাল না গেলে হয় না?
.
কেন মামু?
.
কাল একটু কাজ ছিলো তুমি কালকের দিনটা ম্যানেজ করে থেকে যাও।।হবে না?
.
ঠিক আছে মামু।।থাকবো। আপনি চিন্তা করবেন না।।
.
দেন গ্রেট।(মুচকি হেসে)
.
তাহলে আমরা যায় মামু।।তুমি বসে বসে চা খাও আর বয়স বাড়াও!!!
.
তবে রে…দিন দিন দুষ্টু হচ্চিস তুই রোদ।।আচ্ছা,, তোরা একা না গিয়ে অভ্র কে নিয়ে যা।
.
না আমরা একাই যাবো।
.
আরে বডিগার্ড হিসেবে নিয়ে যা।।হা হা হা হা।
.
বডিগার্ড?? আইডিয়া খারাপ না।।এইযে ভাইয়া হবেন নাকি বডিগার্ড?? ফ্রী বডিগার্ড,, নো প্যামেন্ট।(কোমরে হাত রেখে)
.
বাবা বলে সুন্দরী মেয়েদের বডিগার্ড হওয়া দোষের কিছু না বরং সৌভাগ্যের বিষয়।।এসব বিষয়ে না বলতে নেই।। ফটাফট নির্লজ্জের মতো হ্যা বলে দিতে হয়।।আমি আবার খাঁটি বাঙালী না বলতে পারি না,,আর সুন্দরী মেয়েদের তো কোনো কালেই না।।
.
অভ্র ভাইয়া কথাটা যে আপুকে উদ্দেশ্য করে বললো তা বেশ বুঝতে পারছি।।আমি আড়চোখে আপুর দিকে তাকাতেই দেখি সে লজ্জায় লাল,নীল, গোলাপী হয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত।।বাহ!!মাইয়া,দেখি লজ্জাবতী লতিকা।।অভ্র ভাইয়া আর আমি পাশাপাশি হাঁটছি,,,হাতে আইসক্রিম।। দুজনেই নানা গল্পে মুশগোল।।আপুর একটা কল আসায় সে পেছনে পড়েছে,,,আমাদের দাঁড়াতে নিষেধ করে মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সে।।তাই আমরাও আর অপেক্ষা না করে হাঁটা দিয়েছি।।হঠাৎই কোথা থেকে শুভ্র ভাইয়া এসে হাজির।।একদম আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন উনি।।আমি আর ভাইয়া দুজনেই অবাক।এভাবে সামনে দাঁড়ানোর মানে কি??ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে উঠলেন…
.
কি সমস্যা??
.
শুভ্র ভাইয়া দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো -“অনেক সমস্যা।” এটুকু বলেই ঘুরে হাঁটা দিলো।।কিছুটা গিয়ে আবারও ফিরে এসে আমার হাত থেকে আইসক্রিমটা ছু মেরে নিয়ে পাশের ড্রেনে ফেলে দিয়ে আবারও হাঁটা দিলো।।আমি তো অবাক।।অভ্র ভাইয়া আরও অবাক।।এবার আমার অভ্র ভাইয়ার প্রতি রাগ লাগছে উনি কিছু বললেন না কেন??হুয়াই??এই সাদা বিলাইটাকে কেন এভাবে ছেড়ে দিলেো?
.
ভাইয়া??উনি আমার আইসক্রিম নিয়ে চলে গেলো আর আপনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন??
.
হুট করে এভাবে নিয়ে নিবে আমি জানতাম নাকি??আধ খাওয়াটা নিয়ে কি লাভ হলো বুঝলাম না।।আমাকে বললে তো নতুন দেখেই কিনে দিতাম
.
আশ্চর্য তো উনি ডাকাতি করে নিয়ে গেলেন।।কোনো ডাকাত কি ডাকাতি করার আগে আপনাকে বলবে??স্যার আমি ডাকাত,,ডাকাতি করবো।।পারমিশন পাওয়া যাবে??ডাকাত তো হুটহাটই ডাকাতি করবে এটাই নিয়ম।।এদের উপর আমাদেরও হুটহাট কারে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।।আর এখানে আপনি??আপনাকে দেখে তো মনে হচ্ছে আমার আইসক্রিম যে নিয়ে গেলো তাতে আপনার মাথা ব্যথা নেই।।আপনি তো উনাকে আইসক্রিম কিনে দিতে পারেন নি এই দুঃখে কাতর??(রাগী গলায়)
.
আরে তা নয়।।আসলে..
.
আসলে কি??আপনি উনাকে কিছু বললেন না কেন??দুই তিনটা ঘুষিও তো দিতে পারতেন।।দিনে দুপুরে ডাকাতি করে গেলো।।হুহ।।আমি মামুকে বলবো ইউ আর আ ভেরি বেড বডিগার্ড।
.
সরি বইন।দোষ হয়ে গেছে মাফ করে দেন।।নেক্সট টাইম এমন করলে দিবো এক চড়।প্রমিস।
.
মাত্র একটা?
.
তো কয়টা??
.
দশ বারোটা।
.
আচ্ছা পাঁচটা দিবো।।(আমি তাকাতেই)মানুষকে আঘাত করা মহা পাপ তো।।আল্লাহ পাপ দেয়,, জানো না??
.
উনার কথার ভঙ্গি দেখে দুজনেই হেসে দিলাম।।
.
.
?
.
.
ভার্সিটি শেষে গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।।দাঁড়িয়ে থাকার কারণ হলো অভ্র ভাইয়া।।আজ উনাদের বাসায় যাওয়ার কথা।।সবাই সকালেই চলে গেছে।। শুধুমাত্র আমিই রয়ে গেছি ভার্সিটিতে ক্লাস ছিলো বলে।।মামু ফোন দিয়ে বলে দিয়েছেন অভ্র ভাইয়া যাবেন একা যেনো না আসি।।তাছাড়া এর আগে যেহেতু যাই নি চিনিও না।।চিত্রাও আমার পাশে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওর এক অভ্যাস মন খারাপ থাকলেই মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবে।। একটা কথাও বলবে না এমনকি হু হা ও না।।সারাদিন তাই করেছে এখনও চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।।
.
চিতা বাঘ??তোর জামাই আই মিন উডবি,,,কেমন দেখতে রে??উত্তর না দিলে তোর বিয়া তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে,, আমিন।।
.
দেখি নি।।শুধু পেট দেখেছি মুখ দেখি নি।।
.
হায় আল্লাহ কস কি??মুখের আগেই পেট?তোরা তো দেখি হেব্বি ফাস্ট।।কিন্তু দোস্ত আমি যতটুকু জানি ছেলেরা শাড়ির ফাঁকে ফুঁকে উঁকি ঝুঁকি দিয়ে মেয়েদের পেট দেখে।।কিন্তু দোস্ত তুই তোর পেট মোটা জামাইয়ের পেটে কি এমন সম্পদ খুঁজে পেলি বুঝলাম না।।কাহিনী কি?
.
কোনো কাহিনী না।।আমি লজ্জায় মাথা উঠাতে পারি না,,মাথা নিচু করে রাখায় চোখ উনার পেট পর্যন্তই পৌঁছেছে,,অবশ্যই পাঞ্জাবীতে ঢাকা পেট।। আর উনার পেট মোটা নয় স্লিম।।
.
তোর কথা শুনে তো মনে হচ্ছে তুই ব্যাটার পেট দেখেই প্রেমে পড়ে গেছিস।।
.
একদম না।।
.
ঢং কমায় মার।।আর এই তুই না বিয়ে করতে চাস না??তাহলে লজ্জাবতী লতিকা হয়ে বসে ছিলি কেন??
.
বিয়ে করতে না চাইলেই কি আমি লজ্জা পাবো না??এতোগুলো মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর আমি লজ্জা পাবো না?
.
না পাবি না।।কেনো পাবি।।তোর বাড়ি,,তোর ঘর ইভেন সোফাটাও তোর।।খাচ্ছেও তোদের খাবার।।লজ্জা তো ওদের পাওয়া উচিত তুই কেন পাবি??বিয়ের জন্য রাজি থাকলে না হয় লজ্জাটা মানাতো।।যেহেতু রাজি নস সেহেতু কেনো লজ্জা পাবি। বরং এমনভাবে তাকাবি ছেলে যেনো ভয় পেয়ে মায়ের আচঁল ধরে বলে..””মাম্মাম মাম্মাম আমি বিয়ে করবো না।।””তা না করে লজ্জায় লাল হয়ে সেজে বসেছিলি।।ছেলে যে তোকে স্টোবেরি ভেবে খেয়ে ফেলে নি এটাই তো তোর ভাগ্য।।
.
আমার লজ্জা লাগলে আমি কি করবো?(মুখ ফুলিয়ে)
.
আমি লজ্জা লাগলে আমি কি করবো??ঢং,, যা তো এখান থেকে।।দাঁড়িয়ে আছিস কেন??সে আসবে নাকি?
.
জি না।।আমার না তোর সে আসবে বলে দাঁড়িয়ে আছি।। হুহ।
.
আমার “সে ” না ভাইয়া আসবে।।যা তো ভাগ।।
.
চিত্রা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই অভ্র ভাইয়া এলো পাশে আপুও আছে।।আমাকে দেখেই হাসিমুখে গাড়িতে উঠতে বললেন উনি।।আমিও হাসি হাসি মুখে পেছনের সিটে গিয়ে বসে পড়লাম।।আমি বসার দুইমিনিট পরই আরেকজন হুরমুর করে ঢুকে গেলো গাড়িতে।।চমকে গিয়ে পাশে তাকাতেই দেখি শুভ্র ভাইয়া।।আমি তো উনাকে দেখে অবাক।।কিন্তু উনার মধ্যে কোনো রিয়েকশন হলো বলে মনে হচ্ছে না।।খুব স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে লাগলো….
.
তাড়াতাড়ি চালাও ক্ষুধা লাগছে ব্যাপক।।এই তুমি নিশ্চয় রুহি??(আপুর দিকে তাকিয়ে)
.
জি ভাইয়া।
.
কেমন আছো রুহি?
.
আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?
.
এইতো ভালো বাট আপাতত ক্ষুধায় কাতর।।এনিওয়ে তুমি তো এবার ফাইনাল ইয়ার রাইট?
.
হ্যা ভাইয়া।
.
গুড।।আমার একবছর জুনিয়র।।ভাইয়ার থেকে চারবছর জুনিয়র তুমি।।
.
আপনি মাস্টার্স করছেন??
.
হ্যা।তোমার নামটা বেশ সুন্দর।।তুমিও বেশ মিষ্টি মেয়ে।।কিন্তু একটা বিষয় বুঝতে পারছি না।
.
কি বিষয় ভাইয়া?(কৌতুহলী হয়ে)
.
এর মতো ঝগড়ুটে মেয়ে তোমার বোন কি করে হলো??স্ট্রেঞ্জ!!কুড়িয়ে পেয়েছিলে বুঝি??
.
ভাইয়া??আপনি কিছু বলছেন না কেনো??কে না কে গাড়িতে এসে বসে গেলো আর আপনি কিচ্ছু বলছেন না??আর এখন তো আমাকেও অপমান করছে।কাল আইসক্রিমও কেড়ে নিয়েছিলো।।আপনি কিছু বলবেন না আমি নেমে যাবো?
.
এই না না।।দাঁড়াও আমি ওকে বকছি।।
.
এই শুভ্র ওকে জ্বালাচ্ছিস কেন বল তো??মার দিবো একটা।
.
আমি কই জ্বালাচ্ছি ভাইয়া,, ও নিজে নিজে জ্বললে কি করতে পারি বলো তো!!
.
“ভাইয়া” কথাটা শুনেই আমি হ্যাং।।তারমানে মামু যে “ছোট মহাশয়” “ছোট মহাশয়” বলতেন ওটা ইনি??হায় আল্লাহ!! এতো দেখি সোজা বাঘের গোহায় গিয়ে পড়লাম।।কিন্তু আমায় কেউ বলে নি কেন?উনার কথা শুনেও তো বুঝা যাচ্ছে উনি আগে থেকেই জানতেন যে আমি উনার ফুপ্পির মেয়ে।।তবুও কতো বাজে বিহেভ করেছে আমার সাথে।।কি ফাজিল।।
.
#চলবে?
.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে