তৈমাত্রিক পর্ব-০৫

0
928

#তৈমাত্রিক
#লেখিকা; Tamanna Islam
#পর্বঃ ০৫

🍂
.
.
.

আমি রুমের দরজা খুলেই দেখি আমার মা। আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেই। তারপর আবার ঘরের ভেতরে চলে আসি। আম্মু রুমে ঢুকে বিছনার ওপর বসে পরে। আমি জায়নামাজ টা গুছিয়ে কাবার্ডে রাখলাম, তাকিয়ে দেখি এখনো আম্মু আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমি এবার হেসে আম্মুর দিকে তাকাই..

মেহরাম;; আম্মু কিছু বলবে?

কনিকা;; এদিকে আয়।

আমি চলে গিয়ে আম্মুর পাশে বসলাম। আম্মু আমার দিকে ঘুড়ে আমার মাথায় হাত রাখলো। এবার আমার খুব বেশি কান্না পাচ্ছে। হুট করেই কেউ মাথায় হাত রাখলে খুব কান্না পায়। আর এটা শুধু আজকে না সবসময়ই। আমি আম্মুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরি। অন্যান্য দিন আম্মুর কোলে মাথা রাখলে আম্মু কাজের বাহান দিয়ে চলে গেতো বা বলতো যে বড়ো হয়েছিস এমন বাচ্চামো কেউ করে। কিন্তু আজ তার দুটোর একটাও বললো না। সুন্দর করে মথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আমি অপলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ আম্মু আমায় জিজ্ঞেস করে বসে…

কনিকা;; মেহরু!

মেহরাম;; হুমম।

কনিকা;; মা তুই এই বিয়েতে খুশি তো?

এবার আমি ফট করে মাথা তুলে আম্মুর দিকে তাকাই। জানি না কেন খুব বিরক্তি লাগতে শুরু করলো আমার।

মেহরাম;; আচ্ছা আম্মু তোমাদের কি হয়েছে বলো তো, কাল চাচি এই একই কথাটা আমাকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছে। দিদুনও করলো। আর আজ তুমি করছো। ধুর হয়েছে কি, আমার বোনের বিয়ে আর আমি হ্যাপি হবো না। এই প্রশ্ন টা তোমরা তনু কে গিয়ে করো যে ও খুশি কিনা। আর খুশি থাকবো না মানে কি যে বলো না। আমি অনেক খুশি, তনুর বিয়ে নিয়ে আমার কতো শত প্লেন ছিলো সব হয়েছে।

আম্মু আমার কথা শুনে একগাল হেসে দেয়। আমিও দেই। তখনই হলরুম থেকে চাচির আওয়াজ আসে। গলা শুনেই টের পাই যে এটা আমার গুনধর চাচির গলা। সবাইকে ঘুম থেকে ডাকছে আর বকাবকি করছে। আমি আর আম্মু ফিক করে হেসে দেই। অতঃপর চাচি আমার রুমে আসে ভেবেছে আমি উঠি নি।

আতিয়া;; কিরে মেহরু….

মেহরাম;; উঠেছি।

আতিয়া;; এই তো লক্ষী। ভাবী তুমি এখানে কি করো, আমি তো ভেবেছি সব ঘুম।

কনিকা;; হ্যাঁ তোমায় বলেছে। আচ্ছা চলো অনেক কাজ আছে তো।

আতিয়া;; হ্যাঁ, আর মেহরু মা শোন আজ কিন্তু তনুর রেসিপশন, তৈরি থাকিস।

চাচি আর আম্মু চলে যেতে নেয় কিন্তু চাচি আবার থেমে যায়।

আতিয়া;; মেহরু আজ কি পরবি রে?

মেহরাম;; আমার আর পরা, একটা হলেই হলো।

আতিয়া;; কিসের একটা হলেই হলো। ফ্রেশ হয়ে আমার রুমে আয় জলদি।

মেহরু;; আচ্ছ আসছি তোমরা যাও।

আম্মু আর চাচি চলে যায়। আমিও ওয়াসরুমে গিয়ে চোখে ইচ্ছেমতো পানি দেই। মাথা তুলে সামনে আয়নার দিকে তাকাই। চোখ গুলো কেমন ফুলে গেছে। নাক গাঢ় লাল হয়ে গেছে। নিজের ওপর নিজেরই মায়া হচ্ছে এখন। আমি সবসময় এই ‘ভালোবাসা’ নাম জিনিস কে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছি। সবসময় দূর দূর ভগেছি। নিজেকে অনেক সাবধান করেছি যেন এই ঝামেলা তে না পরি। কিন্তু দেখে শুনে কি হলো সেই ফাদেই পা ফেলে দিলাম। আমি আমার এই পর্যন্ত লাইফে যত গুলো রিলেশন দেখেছি একটাও সাক্সেসফুল হয়নি। সেগুলো দেখে বুঝেছি যে প্রেম ভালোবাসা মানেই ফাদ। কিন্তু কখন যে আমার নিজের সাথে এমন হলো বুঝলামই না। এমন কিছু হবে কখনো ভাবিও নি। মানুষ প্রেম করে ছেকা খেয়ে বেকা হয়ে যায়। কথা টা শুনেই হাসি পেতো, আমি অবশ্য ছেকা খায়নি কিন্তু স্বইচ্ছায় অন্যকে দিয়ে দিয়েছি। চোখ দিয়ে পানি পরছে টুপটাপ করে। আমি আবার পাগলের মতো করে চোখে মুখে পানি দিচ্ছি। চোখের পানি আর টেপের পানি মিশে একাকার হয়ে গেছে। এমন ঠিক কতোক্ষন করেছি মনে নেই। রুমে এসে পরি। টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছছিলাম তখন ফোন বেজে ওঠে। ফোন টা হাতে নিতেই আমার কলিজা শুকিয়ে গেলো। এটা আয়ুশের নাম্বার, ফোনের স্ত্রিনে আয়ুশ নামটা কেমন জ্বলজ্বল করছে। আমি কাপা কাপা হাতে রিসিভ করি। কানে ধরে খুব কষ্টে বলে উঠি….

মেহরাম;; হ্যালো..

আমার হ্যালো বলার পরেই ওপর পাশ থেকে একটা চঞ্চলমুখর কন্ঠ ভেসে আসে।

তনু;; মেহরুউউউউউউ..

মেহরাম;; ততনু।

তনু;; কেমন আছিস বইন?

মেহরাম;; হ্যাঁ অনে.. অনেক ভালো। তুই?

তনু;; অনেকের থেকেও ভালো। আর শোন আমার ফোনে ব্যালেন্স নেই তাই আয়ুশের ফোন দিয়ে ফোন দিতে হয়েছে। আর জানিস এখানকার মানুষরা এত্তো বেশি ভালো যে কি আর বলবো। আমার শাশুড়ি মা আমাকে নিজের বউ না মেয়ে দেখে। শশুড় আব্বু তো মা ছাড়া কথাই বলে না।

মেহরাম;; হুমম 😊।

তনু;; আর আয়ুশ জানিস, আয়ুশ আমাকে অনেক ভালোবাসে। কাল রাতে আমরা অনেক গল্প করেছি। কিন্তু সে কোথায় জানি বারবার হারিয়ে যায়। মনে হয় এক গভীর চিন্তায় মগ্ন।

মেহরাম;; হুম।

তনু;; কিরে তোর কি হলো?

মেহরাম;; কিছুই হয় নি। (হেসে)

তনু;; তো এখন তো পুরো বাসাই তোর হয়ে গেলো, সবকিছু একা পেয়ে গেলি। কেমন লাগছে😒?

মেহরাম;; হ্যাঁ আসলেই পুরো বাসা টা আমার হয়ে গেছে। সবকিছুর মালিক এখন আমি একা। কিন্তু জানিস কি এটা এক সময় আমাদের দুজনের ঘর ছিলো, এখানে কতো শয়তানি বুদ্ধি করেছি, কতো মারামারি ঝগড়া করেছি। জানিস এই রুমের চারিপাশে তোর আওয়াজ শুনি আমি। আমার কানে বাজে। এখনো আমি বসে আছি জানালার কাছে। এই জানালার কাছে বসার জন্য কতোই না ঝগড়া করেছি কিন্তু এখন আর কেউ ঝগড়া করে না জানিস। এই তো তোর আর আমার ছবি, তুই আমাকে জড়িয়ে ধরে আছিস (ছবি হাতে নিয়ে, হেসে)

তনু;; আর বলিস না, কান্না আসছে (চোখের পানি মুছে)

মেহরাম;; আরে কাদানো তো তোকে এখনো বাকি আছে।

তনু;; মানে?

মেহরাম;; আমাদের প্লেন কি ছিলো। যে আমি তোর বিয়েতে “চান্না মেরেয়া” গাবো।

তনু;; খুন করে ফেলবো। আমি সেখানেই কান্না করতে করতে অজ্ঞান হয়ে নিচে পরে যাবো যদি তুই গান গাস।

মেহরাম;; কিন্তু..

তনু;; গান গা ঠিক আছে কিন্তু এতো ইমোশনাল কেন?

মেহরাম;; হাহাহা।

তনু;; বড়োমা আর জেঠু কে বলে তোরও বিয়ের সানাই বাজাতে হবে বুঝেছি।

মেহরাম;; হোপ মাইয়া কি কস না কস। আর এখানে কি করিস তুই এতো সকালে ফোন দিয়েছিস কেন, মানে একটু পরেই ফাংশন আর তুই।

তনু;; আরে আরে থাম, আমি জানি রেসিপশন আছে কিন্তু তাই বলে তোর সাথে কথা বলবো না।

মেহরাম;; আরে হলো তো কথা বলা এবার কল কেটে রেডি হতে যা জলদি।

তনু;; কিন্তু আমি পরবো টা কি?

মেহরাম;; এটা কোন কথা, শোন এককাজ কর তোর শাশুড়ি আম্মু কে জিজ্ঞেস কর গিয়ে, আর এটা জিজ্ঞেস করলে উনি খুশিই হবেন। জলদি যা।

তনু;; তুই কি পরছিস?

মেহরাম;; নিজেও জানি না। চাচির রুমে যাবো জাবো পছন্দ হয় তাই।

তনু;; আমি কি যাবো?

মেহরাম;; অবশ্যই।

তনু;; আল্লাহ হাফেয,, চুম্মাহ 😘।

মেহরাম;; আরে তার ছিড়া রাখ 😆।

তনুর সাথে কথা বলে আমি ফোন কেটে দেই। তখনই আবার চাচির ছোট খাটো একটা ষাড়ের মতো গলা কানে আসে। আমি চিল্লিয়ে বলি “আসছি”। তারপরই চলে যাই। চাচির রুমে গিয়েই তো আমার মাথায় হাত। তাকিয়ে দেখি শুধু আমার না প্রায় সবার মাথা তেই হাত। সারা রুম জুড়ে শুধু কাপড় আর কাপড়। আম্মু চাচি আমার আরো কয়েকজন কাজিন সবাই বসে আছে।

মেহরাম;; এগুলো কি চাচি?

আতিয়া;; এই গাধা গুলোকে বলেছিলাম যে জাপড় গুলো কাবার্ড থেকে ধীরে সুস্থে নামাতে। একসাথে নামাতে গিয়ে পরে গেছে (আমার দুই কাজিনের মাথায় গাট্টা মেরে)

মেহরাম;; ওরা ছোট ধুর তুমিও না। আমাকে বলতে আমি নামিয়ে দিতাম। আচ্ছা ছাড়ো দেখি আমাকে করতে দাও সরো সবাই।

আমি বসতেই সবাই সাইড হয়ে গেলো। আমি এক এক করে কাপড় দিতে বলছি আর তারা দিচ্ছে। যে যা পরবে তা তাদের দিয়ে বাকি গুলো গোছাচ্ছি। এখন বর্তমানে আমকে একজন কাপড় ব্যাবসায়ীর থেকে কম লাগছে না। আম্মু বাইরে চলে যায়, ধীরে ধীরে সবাই এক এক করে রুম থেকে চলে যায়। নিচে অনেক কাজ আছে। তখন চাচি আমাকে বলে ওঠে…

আতিয়া;; মেহরু এটা দেখ! (একটা পেকেট হাতে দিয়ে)

মেহরাম;; কি এটা চাচি?

আতিয়া;; আরে খুলেই দেখ না।

মেহরাম;; আচ্ছা।

আমি পেকেট টা খুলে দেখি তাতে একটা মেরুন কালারের শাড়ি। আমি একগাল হেসে দিলাম। কেননা মেরুন আমার নামের সাথে মিল। আর বরাবরই মেরুন কালার টা আমার পছন্দের। আর তা চাচি সবসময় মাথায় রাখেন। আমি হেসে চাচির দিকে তাকাই।

মেহরাম;; চাচি!

আতিয়া;; আমার মনে আছে যে এটা তোর পছন্দের। আর তুই এটাই পরিস। আমি পরিয়ে দিবো নি।

মেহরাম;; আচ্ছা চাচি।

সবাই সব কাজে চলে গেলো। আমিও জমিয়ে কাজ করছি। নিজেকে যতো টা সম্ভব ব্যাস্ত রাখার চেষ্টা করছি। একটু হলেও ভেংেছি কিন্তু সম্পূর্ণ না। পুরো বাড়িতে কাজ আছে কতো গুলো। রিসিপশন নাকি তনুর শশুড় বাড়িতেই হবে। তাই আমাদের সবাইকে সেখানেই যেতে হবে। আমি আব্বু আর চাচ্চুর সাথে সব জিনিস গুলো নিয়ে এক এক করে গাড়িতে তুলছিলাম। তখনই আম্মু ডাক দিলো। সেখানের জিনিস গুলো দেখে আমি সোজা চলে গেলাম রান্নাঘরে। সেখানে কিছু খাবার রান্না হচ্ছে তা দেখতে গিয়েছিলাম। সব ঠিক আছে। তারপর চাচির ডাক পরে আমি রুমে চলে যাই। গিয়েই দেখি সবাই রেডি হচ্ছে। চাচি তো আমাকে দেখেই বকাবকি শুরু করে দিয়েছে। আমি এখনো রেডি হয়নি তাই। চাচি আমাকে আর কোন কাজই করতে দিলো না টেনে নিয়ে গেলো। আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম আর চাচি শাড়ি পরিয়ে দিলো আমায়। আমি সাজলাম অনেক বেশি সাজলাম। প্রায় এক ঘন্টা পর আমি রেডি হয়ে গেলাম। চাচি আমাকে দেখে বললো “বিয়ে আজই নাকি দিয়ে দেই তোরও”। আমি হেসে বের হয়ে আসি। এক গাড়িতে আব্বু চাচ্চু আম্মু আর চাচি চলে গেলো। আরেক গাড়িতে আমি, আকাশ, আর কাজিনরা মিলে চলে গেলাম। প্রায় আধা ঘন্টা পর আমরা তনুর শশুড় বাড়ির সামনে নেমে পরি। আমাদের আসতে দেখেই তনুর শশুড় শাশুড়ি এক প্রকার ছুটেই আসলেন। তারা সবাই অনেক কথা বললো। তনুর শাশুড়ি এবার আমার দিকে এলো।

রুকশানা বেগন;; তুমি তনুর বোন তাই না?

মেহরাম;; জ্বি।

রুকশানা বেগম;; বিয়েতে তো তোমার সাথে তেমন কথাই বলতে পারিনি। ভারি মিষ্টি দেখতে গো তুমি।

আমি তনুর শাশুড়ির সাথে অনেক কথা বলি। তনুর শশুড় বাড়ির লোকজন সবাই অনেক ভালো। যাকে বলে একদম মাটির মানুষ। তনুর একটা ছোট্ট ননদ আছে। তার নাম কণা। সে তো আমাকে পেয়ে পাগল। আমি সারাক্ষণ প্রায় তার সাথেই ছিলাম। আমি যখন ভেতরে গেলাম তনু সবাইকে রেখে আমাকে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে। এসেই কেদে দেয়। আমি আবার হাসিয়ে দেয়। আমি গিয়ে সবার সাথে কুশল বিনিময় করি। সামনেই স্টেজের কাছে আয়ুশ আর তনু বসে আছে। এবার পুরো হলরুমের লাইট অফ হয়ে গেলো। আমরা সবাই অবাক। কিন্তু তাদের মাঝে দুই তিনজন ছেলে এলো। লাইট এখন তাদের দিকেই। আর সারা হলরুমে আবছা আলো। তারা নাকি নাচবে। কণা বললো তারা আয়ুশের বন্ধু হয়। ধুমিয়ে গান হচ্ছে আর নাচ। সবাই চিল্লাচ্ছে আর নাচ দেখছে। তনু আমকে ইশারা দিয়ে তার কাছে ডাকলো আমি মানা করে দেই। কণার সাথেই আমি বসে থাকি। হঠাৎ ফোন বাজে আমার তাকিয়ে দেখি উর্মির ফোন। অনেক দিন পর ফোন দিলো সে আমাকে। এখানে গানের জোর শব্দের কারণে কিছুই শোনা যাবে না তাই এক কানে হাত দিয়ে ফোন টা নিয়ে বাইরে এসে পরলাম। ধীরে ধীরে আমি বাড়ির পেছনে চলে এলাম। এখানে একটা সুইমিং পুল আছে, আমি তার পাশেই দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছি। উর্মি বা বাবলি কেউই আমার আর আয়ুশের সম্পর্কে কিছুই জানতো না। তবে তনুর বিয়ে সম্পর্কে জানে। আমি তাদের অনেক করে বিয়েতে আসতেও বলেছিলাম। কিন্তু তারা আসতে পারেনি কিন্তু সমস্যার কারণে। আমি উর্মির সাথে কথা বলছিলাম, প্রায় অনেকক্ষণ কথা বলি তার সাথে। কথা বলা শেষ হতেই পেছন ঘুড়ে অবাকের ওপর অবাক হয়ে যাই আমি। আমার ঠিক পেছনেই আয়ুশ দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাকে এভাবে দেখে ভেবাচেকা খেয়ে যাই। দ্রুত চোখ নামিয়ে চলে যেতে ধরি, সামনে কয়েক কদম এগোতেই আয়ুশ আমার হাত ধরে ফেলে। তারপর সামনে এসে দাঁড়ায় আমার। আমি চোখ মুখ শক্ত করে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকি। আয়ুশ এসে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়েই থাকে।

মেহরাম;; আয়ুশ হচ্ছে টা কি ছাড়ো আমার হাত।

আয়ুশ;; _____________।

মেহরাম;; আয়ুশ আমি কিছু বলছি তোমায়। হাত ছাড়ো।

এবার আয়ুশ আমাকে ঘুড়িয়ে তার দিকে করে। বাহু শক্ত করে চেপে ধরে রেগে বলে ওঠে…

আয়ুশ;; কিচ্ছু নেই তাই না, মানে কিচ্ছু নেই তোমার মাঝে। কোন ফিলিংস কিছুই নেই। একদম ফাকা, খালি। রাগ, অভিমান, ইমোশন, জেলাসি কিছুই নেই তোমার মাঝে।

মেহরাম;; _______________

আয়ুশ;; আদৌ কি ভালোবাসতে আমায়! বিয়ে হয়ে গেছে আমার। অন্য কারো হয়ে গেছি আমি। ভেবেছি একটু হলেও বিয়ে টা আটকানোর চেষ্টা করবে কিন্তু না তুমি তা করো নি।

মেহরাম;; হাসালে আয়ুশ তুমি আমায় হাসালে। আমি আটকাবো আর বিয়ে প্রশ্নই আসে না। আর ফিলিংস সব ফিলিংস -ই আছে আমার মাঝে। আমিই আমার বোনের সাথে তোমার বিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলাম, তোমাদের এক করে দেবার চেষ্টা করছিলাম আর সেই আমি কিনা বিয়ে আটকাবো। পাগল হয়েছো। আর রইলো আমার ওপর তোমার রাগ করে তনু কে বিয়ে করার কথা তো আমি তো এটাই চাইছিলাম। এখানে তোমার কোন দোষ নেই।

আয়ুশ;; হ্যাঁ আর আমি তো কাঠের পুতুল যেমন নাচালে তেমনই নাচলাম। সব তোমার ইচ্ছেমতোই হয়েছে। (আমাকে ছেড়ে দিয়ে)

মেহরাম;; এগুলো কথার এখন কোন মানেই হয় না। সম্পর্কে আপনি আমার বোনের হাসবেন্ড। আর আমি যে পরে থাকার মেয়ে না তা আপনি জানেন। আমি মুভ অন করে ফেলেছি। আর আমার কাছে আমার বোন খুশি আছে এটাই অনেক। আর তনু আপনার ওয়াইফ হিসেবে কতো টা পারফেক্ট তা আপনি আপনার পরিবারের মানুষের মুখে হাসি দেখেই টের পাবেন।

এই কথা বলে আমি আর এক মূহুর্তও দাড়াই না। সাথে সাথে চলে আসি। এসেই দেখি তনু কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো আমাকে খুজছিলো আর না পেয়ে রাগ করেছে। আমি হেসে তনুর সাথে চলে গেলাম। তখনই একটা মহিলা আমার কাছে এলো। এসেই আমাকে সোজা আপাদমস্তক দেখতে থাকলো।




🌿চলবে~~
.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে