তুমিময় পর্ব : ১
গল্পবিলাসী – Nishe
রুবার কান্না কিছুতেই থামাতে পারছেনা
রুহি। সেই একটা কথাই বাজিয়ে যাচ্ছে
রায়হান আমাকে ভূল বুঝেছে। আমি কিছু
করিনি।প্লিজ তুই বুঝা ওকে। সেই সকাল
থেকে ক্যাফেটেরিয়া তে বসে
আছে অনেক ভাবে বুঝিয়েছি কিন্তু
কিছুতেই কাজ হচ্ছেনা রায়হান ভাইয়ার
সাথেও কোনোভাবে
যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। আর
করবোই বা কিভাবে ওনার সাথে তো
আমার কথাও হয়নি। শুধু রুবার মুখে গল্প
শুনেছি।খুব ভালোবাসে খুব কেয়ার
করে আমিতো কখনো দেখিইনি
ওনাকে। খুব ভালোবাসে রুবা তাকে।
কিছুতেই যখন থামাতে পারছিলোনা
রেগে বলে উঠলো
রুহি : এভাবে কান্না করলে কি রায়হান
চলে আসবে? কোনো
সলুয়েশন হবে? ঠান্ডা মাথায় ভাববি তা না
করে ওনি মরা কান্না জুড়ে বসেছে।
প্লিজ বইন আমার দোহাই লাগে
আমাকে বল কি হইছে। দেখি কিছু
করতে পারি কিনা। কিন্তু রুবা কিছুতেই
# কান্না থামাতে পারছেনা
রুহি : ওকে তোকে কিছু বলতে
হবেনা ভাইয়ার কন্ট্রাক্ট নাম্বার দে আমি
কথা বলছি।
রুবা : নাম্বার সুইচড অফ।
রুহি : ওনার অফিসিয়াল কোনো
কন্ট্রাক্ট নাম্বার?
রুবা : জানিনা।
রুহি : ওহ গড কি জানিস তুই? ওকে।
এটলিষ্ট এইটা তো জানিস এখন কোথায়
পাবো ভাইয়াকে? নাকি তাও জানিস না?
রুবা : এখন অফিস আওয়ার শেষের
দিকে এখন অফিস থেকে বের
হবে। রুহি : ওকে চল।
রুবা : কোথায়?
রুহি : ভাইয়ার অফিসে
রুবা : আর ইউ ম্যাড? তুই কি চাস আমি
আসলেই মরে যাই
রুহি : মানে কি রুবা? এগুলো কিসব
ধরনের কথা? আমি ওনার সাথে যদি
দেখাই না করি তাহলে প্রবলেম সলভ
কি করে হবে? আর তাছাড়া তুই
বললেও তো ভাইয়ার সাথে কথা
বলেই সলভ করতে হবে নাকি তুই
এমনিই পারবি? আর তোর দ্বারা যদি এমনি
পসিবল হয় তাহলে কর আমি গেলাম
বলেই চলে যাচ্ছিলাম রুবা হাত ধরে
আবারো কেঁদে দিলো
রুবা : প্লিজ এমন করিস না রায়হান কে
ছেড়ে থাকা আমার # পক্ষে পসিবল না।
রুহি : ওহ গড ওকে তাহলে চল।
রুবা : ওকে চল
রুহি : ওয়েট ওয়েট এইভাবেই যাবি নাকি?
চোখ মুখ ফুলে কি হাল হয়ে আছে
আমি পার্কিং প্লট এ আছি তুই ফ্রেশ
হয়ে আয়।
রুবা : ওকে বলেই ওয়াশরুমে চলে
গেলো।
রুহি : আমি মেহজাবিন রুহি। এইচএসসি
পরিক্ষা সবে মাত্রই শেষ হলো
কোচিং এ ভর্তি হবার আগেই ফুপ্পি
বললো একবার এসে দুই দিন থেকে
যেতে তাই আজ ভোরের দিকে
ঢাকাতে আসা। আসার পর বাসায়
সবাইকেই খুঁজে পেলাম পেলামনা রুবা
কে। রুবা হলো আমার ফুপাতো
বোন। আমার সেইম ইয়ার। অনেক
সময় বাসার সবার সাথে কথা বললাম কিন্তু
সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে এলো কিন্তু
কিছুতেই বাসায় ফিরছেনা। কল দিয়েই
যাচ্ছি। কিন্তু রিসিভ হচ্ছেনা। তাই ফুপ্পির
মোবাইল থেকে দিলাম রিসিভ হতেই
ওর কান্নাময়ী কন্ঠটা ভেসে এলো
যদিও রুবা যথেষ্ট স্বাভাবিক ভাবেই কথা
বলার চেষ্টা করছিলো কিন্তু আমার
কাছে জয়ী হয়ে ওঠতে পারেনি
তখন কোথায় আছে তা জেনেই
ছুটে গিয়েছিলাম তারপর তো বুঝতেই
পারছেন।
রুবা : চল রিক্সা নিয়ে দুজনে বেড়িয়ে
পড়লাম গন্তব্যস্থান ভাইয়ার অফিস।
ইতিমধ্যে তিনটা বেজে পঁয়তাল্লিশ
মিনিট। জ্যামের ও শেষ নেই। যাক
চারটা বেজে পাঁচ এর মধ্যে পৌঁছে
গেলাম। ওয়ার্কার রা বেড়িয়ে যাচ্ছে
কিন্তু যার জন্য অপেক্ষারত তার খবর
নেই দাঁড়িয়েই অপেক্ষা করছি।
রুবা : রুহি ওইযে ব্লু শার্ট।
রুবার দৃষ্টিপথে তাকাতেই বুকের পাঁজর
ভাঙার সংকেত পেলাম। সে যে আর
কেউ না মেঘ। তারমানে মেঘই
রাহয়ান? চোখ গুলো কিছু সময়ের
মধ্যেই ঝাপসা হয়ে এলো বুকের
ভেতরকার অনুভূতি টা ঠিক কি বুঝতে
পারছিলাম না। কথা বলার শক্তিটুকু ও পাচ্ছিলাম
না শুধুই কান্না আসছে আমার মেঘ
আমাকে এভাবে ঠকাতে পারলো।
কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিলোনা। তাকিয়ে
থাকতে থাকতেই মেঘ গাড়ি নিয়ে
বেড়িয়ে গেলো।
রুহি : রুবা তুই শিয়র ওইটাই ভাইয়া? রুবা : হ্যা
চলে গেলো তুই কিছুই বললি না যে?
রুহি : দেখলিনা ওনার পাশে ওনার অনেক
কলিগ ছিলো
কিভাবে কথা বলবো? ভাবিস না সব ঠিক
হয়ে যাবে এখন বাসায় চল ফুপ্পি
টেনশনে আছে।
রুবা : কি করে ঠিক হবে কিছুই ঠিক
হবেনা বলে আবারো কান্না জুড়ে
দিলো।
রুহি : বাসায় চল সব ঠিক হয়ে যাবে।
বলেই রিক্সা ডেকে উঠে পড়লো
দুজনেই কাঁদছে দুজনকে হারানোর
ভয়ে।
রুহি : কি করে পারলে মেঘ আমাকে
ঠকাতে? তুমি যেভাবে যা বলেছো
সব মেনে নিয়েছিলাম তার বিনিময়ে
এইসব ই কি প্রাপ্য ছিলো আমার?
ভাবতেই ভিতর থেকে কান্না গুলো
দলা পাকিয়ে বের হয়ে আসতে
চাইছে তারমানে মেঘ সেদিন সত্যিই
বলেছিলো আমাকে আর আমি কিনা
দুষ্টুমি ভেবে বসে আছি। সারাজীবন
থাকার পরিকল্পনা করে যাচ্ছি। প্রতিটা
রাতের স্বপ্নজালে আবদ্ধকরণ করে
মেঘময় জীবনপথ পাড়ি স্বপ্নবুনছি।
কতটা বোকা হলে এমন হয়। ভাবনার
বিভোর কাটলো ড্রাইভারের কথায়
রিক্সাচালক : আপা চইলা আইছি
রুহি : ড্রাইভারের ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে
বাসায় চলে এলাম। বাসায় এসেই
ওয়াশরুমে ঢুকতেই কান্নাগুলো
বেড়িয়ে এলো। কি করে থাকবো
তোমাকে ছাড়া? কি করে পারলে এমন
করতে মেঘ? কি দোষ ছিলো
আমার? খুব ভালোবাসি তোমায় আর
সেই তুমিই কিনা আমাকে এভাবে
ঠকালে? আমিযে কিছুতেই পারছিনা
বিশ্বাস করতে বলেই কান্না করছে।
অনেক সময় নিয়ে গোসল করে
বেড়িয়ে এলো। মাথাটা ভারি হয়ে
আছে। চুলগুলো না মুছেই শুয়ে
পড়লাম। মানতেই পারছিনা মেঘ আমার
সাথে এইটা করতে পারবে। এদিকে
রুবাও কান্না করে একাকার । কি করবে রুহি
ভেবে পাচ্ছেনা রুবার ভালোবাসা
সফল করবে না নিজের ভালোবাসা
নিজের সংসার? কেনো জানি
কনফিউজড হয়ে আছে রুবার কোথাও
না কোথাও ভূল হচ্ছে তাই আবারো
রুবার পাশে গেলো
রুহি :রুবা আমার কেনো জানি
মনেহচ্ছে তোর কোথাও ভূল
হচ্ছে।
রুবা : ফাজলামো হচ্ছে আমার সাথে?
মজা করছিস? তিন বছরের রিলেশনে
আমি রায়হানকে চিনতে ভূল করছি? রুহি :
দেখ মানুষ মাত্রই ভূল হতেও পারে
রুবা : প্লিজ পারলে হেল্প কর
নয়তো লিভ মি এলং। রুহি : মেঘতো
বলেছিলো আজ ভোরে রাজশাহী
যাবে তাহলে এখানে কি করছে
তারমানে আমাকে মিথ্যা বলছে।না জানি
আরো কতো মিথ্যার স্বীকার সে
হয়ে আছে।শুয়ে আছি হঠাৎ করেই
গতকাল বিকেলবেলার প্রতিটা মূহুর্ত
চোখে ভেসে উঠলো কি সুন্দর
একটা বিকাল ছিলো
মেঘ হঠাৎ করেই সকাল থেকে কল
রিসিভ করছিলোনা মেসেজের রিপ্লাই
দিচ্ছিলোনা টেনশনে একাকার হয়ে
আছে সকাল থেকে বিকাল অবধি কম
করে হলেও পাঁচশো কল দিয়েছে
আর মেসেজ তো হিসেবই নেই।
বিকেলবেলা আর কোনো উপায় না
পেয়ে আম্মুকে মায়ার বাসার কথা
বলে বেড়িয়ে পড়লাম। খুব দ্রুত বাসায়
গিয়ে কলিং বাজাচ্ছি খুলছেই না কেমন
জানি ভয় লাগছিলো নিজের কাছে থাকা
চাবি দিয়েই খুলে ভেতরে গেলাম।
পুরো রুম অন্ধকার হয়ে আছে
তারমানে মেঘ বাসায় নেই মোবাইল
বের করে কল দিতে যাবো হঠাৎ
করেই কোমড়ে কারো স্পর্শ পাই।
মেঘ : জানেমান আমিতো জানতাম
তুমি আসবে তাইতো কল রিসিভ করিনি।
কোনো টেক্সট ও রিপ্লাই দেইনি।
রুহি হঠাৎ করেই খুব রেগে গিয়ে গলা
চেপে ধরে খুব মজা হচ্ছিলো
তাইনা? টেনশন দিতে ভাললাগে না?
আমি কাঁদলেই খুশিতো? আজ
থেকে তুই আর আমার কাছেও আসবিনা
তুই থাক তোর ফাজলামো নিয়ে
বলেই গলা ছেড়ে ধাক্কা দিয়ে
বেড়িয়ে যেতে নিলেই মেঘ
জড়িয়ে ধরে রুহি তার দুই হাত দিয়ে
এলোপাথাড়ি বুকের মধ্যে আঘাত
করতে শুরু করলো ।
রুহি :ছাড় আমাকে একদম স্পর্শ করবিনা
আমাকে
খুব বেশি রেগে গেলেই রুহির
রিয়েক্টটা অন্যপ্রকার ভাবে বেড়িয়ে
আসে
মেঘ : আম সরি জান আমি আর
কখনো এমন করবোনা আমি খুব সরি
জড়িয়ে রেখেই বলতে লাগলো।
কিছুসময় পর রুহিও শান্ত হলে রুহির
চোখের পানি গুলো ঠোটের
মাধ্যমে শুষে নেয়। এখনো কান্না
করে যাচ্ছে
রুহি : তুমি জানো আমি কতো ভয়
পেয়েছিলাম কোনো রেসপন্স না
পেয়ে বাসায় এসেছি বাসা অন্ধকার
দেখেতো আরো বেশি ভয়
পেয়ে গিয়েছিলাম রুহির কান্না
যেনো আরো বেড়েই
যাচ্ছিলো।
চলবে
ভালো না লাগলে এড়িয়ে চলুন
কিন্তু কোনো বাজে মন্তব্য
করবেন না।
( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।) Facebook Id link ??? https://www.facebook.com/nishe.ratri.9809