গল্প:-দুই_বধূ_এক_স্বামী পর্ব:-(০৬)

0
2220

গল্প:-দুই_বধূ_এক_স্বামী পর্ব:-(০৬)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
সৌরভের আগের বউ নাকী ফিরে এসেছে? শুন তুই সৌরভকে বলবি ওর আগের বউকে তালাক দিতে! যদি তালাক না দেয় তাহলে তুই আর ঐ বাড়ীতে ফিরে যাবি না। কারন পুরুষ মানুষের মন বলা তো যায়না যদি আগের বউয়ের প্রতি ভালোবাসা জেগে উঠে! তাহলে কিন্তু তোর সাথে খারাপ আচরন করবে আর শুনেছি সৌরভ তার আগের বউকে অনেক ভালোবাসতো! তখন কিন্তু তুকে বাড়ী থেকে বের করে দিবে।(শ্বাশুড়ি)

তসিবা:- আম্মা তুমি সৌরভকে ভুল বুঝতেছো ও আমাকে অনেক ভালোবাসে। আর মীমকে তো এখন একদম সহ্য করতে পারেনা!

শ্বাশুড়ি:- আর শুন যত তাড়া তাড়ি পারিস একটা বাচ্চা নিয়ে নিবি। কারন বাচ্চা হয়ে গেলে আর সৌরভ তুকে ফেলতে পারবে না।

তসিবা:- কিন্তু!

শ্বাশুড়ি:- কোনো কিন্তু নেই তোর মনে নেই আমাদের পাশের বাড়ীর রেহেনার কি অবস্থা হয়েছে। তুই এক কাজ করবি তোর নিজের নামে কিছু করে নিবি সৌরভকে বলবি তুকে কিছু কিনে দিতে।

শ্বশুড়:- বিয়ের আগে তো বেয়াই সাহেব বলছে তোর নামে বাড়ী আর ব্যাংকে পাঁচ লক্ষ টাকা জমা করে দিবে। সেই গুলি কি তোর নামে দিয়েছে?

তসিবা:- না দেয়নি! তবে আমার কিছুই লাগবে না সৌরভ এমনিতেই অনেক কষ্ট পেয়েছে। ওকে নতুন করে আর কষ্ট দিতে চায়না। প্লিজ এসব কিছু তোমরা সৌরভকে কিছু বলোনা।

শ্বাশুড়ি:- দেখ তুকে তো আমরা এমন ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চায়নি কিন্তু ভাগ্য আমাদের খারাপ ছিলো তাই বিয়েটা দিয়েছি। আর শুন সবার সাথে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে সবার মন জয় করে নিবা। সবার মাঝে তোর জন্য একটা মায়া তৈরি করে নিবি।

তসিবা:- কিন্তু আম্মা সৌরভ যদি রাজি না হয় বাচ্চা নিতে?

শ্বাশুড়ি:- তুই বলবি তোর বাচ্চা দরকার আর সব সময় ওর পাশে পাশে থাকবি। আগের বউটাকে একদম কাছে ঘেশতে দিবিনা। সব সময় সৌরভকে চোখে চোখে রাখবি বলে দিলাম!

তসিবা:- আচ্ছা তাই করবো এখন রুমে যাই সৌরভ কি মনে করবে কখন ধরে ওর কাছে যায়না। তসিবা চলে আসতে চায়ছে ওর মা ওর হাত ধরে বলে।

শ্বাশুড়ি:- তসিবা আমার মাথায় হাত রেখে বল আমি যা যা বলছি তুই সব কিছু করবি!

তসিবা:- আমি চেষ্টা করবো তবে সৌরভকে কষ্ট দিতে পারবোনা। (তখনি কারেন্ট চলে এসেছে আমি রুমে চলে আসছি। রুমে বসে বসে ভাবতেছি তসিবার মায়ের আর বাবার কথা গুলি তখনি তসিবা এসেছে) আপনি রুমে ছিলেন?

আমি:- হ্যা!

তসিবা:- আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো আর সকালে তো আপনি একা চলে যায়েন বাড়ীতে।

আমি:- কেনো তুমি যাবে না?

তসিবা:- নাহ!

আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে সেইটা সকালে দেখা যাবে এখন ঘুমাও। আমি কোথায় ঘুমাবো?

তসিবা:- খাটের উপর শুয়ে পড়েন আমি আপনার পাশে শুয়ে পড়তেছি। আচ্ছা একটা কথা বলবো?

আমি:- (তুমি কি বলবে সব তো আমি যেনে গেছি মনে মনে বলেছি! তাও ওর কাছ থেকে শুনার জন্য বলছি) হ্যা বলো কি বলবে?

তসিবা:- আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন আমি জানি আপনি আমাদের সব কথা শুনেছেন! আমি দেখেছি আপনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। মা বাবার কথায় কিছু মনে করিয়েন না। সব মা বাবা তো চাই তার মেয়েটা যাতে স্বামীর সোহাগী হয়। আমি সত্যি আপনাকে ভালোবেসে ফেলছি আপনি আমাকে ছেড়ে যাবেন না তো কোনো সময়?

আমি:- কিন্তু তোমার মা যা যা বলছে তুমি কি তা তা করবে?

তসিবা:- আম্মা যা বলছে তার সব কিছু তো করতে পারবোনা! কিন্তু সব মেয়েরা বিয়ের পর স্বামীর সাথে যা করে ঠিক আমিও তাই করবো। আমি মা হবো আপনি বাবা হবেন যখন অফিসে যাবেন তখন আমাকে আদর করে যাবেন। প্রতি ঘন্টা ঘন্টা আমার সাথে ফোনে কথা বলবেন বাছ এই টুকু চাই আর কিছু দরকার নেই।

আমি:- সত্যি সত্যি মা হতে চাও?

তসিবা:- হ্যা আমি মা হতে চাই তবে দুইটা জোড়া মেয়ে হবে আমার।

আমি:- মানে তুমি কি করে যানো তোমার মেয়ে হবে নাকী ছেলে হবে? তাও আবার জমজ হবে?

তসিবা:- জানি আমার মন বলে তাই।

আমি:- কথা দিলাম তোমাকে সারা জীবন আমার ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবো। তখনি তসিবা আমার বুকের উপর মাথা রাখছে।

তসিবা:- আমিও কথা দিতেছি আপনাকে আমি অনেক ভালোবাসবো আর সব সময় সূখে রাখবো। আমার কিছু লাগবেনা শুধু একটু ভালোবাসা দিলে হবে।

আমি:- ঠিক আছে! এখন ঘুমাও তসিবা আমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে আমি ওর চুল গুলি আস্তে আস্তে টেনে দিতেছি।

তসিবা:- আপনি সত্যি অনেক ভালো বলে আমার কপালে চুমু দিয়ে দিয়েছে।

আমি:- আজকে একটু বেশি রোমান্টিক হয়ে গেছো?

তসিবা:- হ্যা বাচ্চা নিলে তো রোমান্টিক হতে হবে তাইনা?

আমি:- বলছে তোমাকে? এখন ঘুমাও দুজনে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেছি। সকালে ঘুম ভাঙ্গছে সোনালী রৌদে আমি চেয়ে দেখি তসিবা গোসল করে এসেছে ওর ভেজা চুলের পানি গুলি টপ টপ করে পড়তেছে।

তসিবা:- ঘুম শেষ হয়ছে?

আমি:- হ্যা আজকে অনেক দিন পর একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারছি।

তসিবা:- তাই? তাহলে উঠে ফ্রেশ হয়ে নেন এখন তো আমরা রওনা দিবো আপনাদের বাড়ীতে।

আমি:- হ্যা যাচ্ছি! শুয়া থেকে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম কিছুক্ষনের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে এসেছি।

তসিবা:- নাস্তা করতে ডাকছে আব্বু চলেন।

আমি:- হ্যা চলো! সবার সাথে বসে নাস্তা করে নিলাম। আমি আমার ব্যাগ গুচিয়ে নিয়েছি আর তসিবা তো আগেই গুচিয়ে রাখছে। শ্বশুড় শ্বাশুড়ি তসিবাকে বুঝিয়ে দিতেছে। আমি ওনাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আগে গাড়ীতে চলে এসেছি কিছুক্ষণ পর তসিবা এসেছে।

শ্বশুড়:- বাবা সৌরভ আমার মেয়েটাকে তুমি দেখে শুনে রেখো যদি কোনো ভুল করে তাহলে বুঝিয়ে দিও কেমন?

আমি:- ঠিক আছে! তসিবা গাড়ীতে এসে বসেছে। আমি গাড়ী চালাচ্ছি তসিবা তার মত করে বক বক করতেছে। গাড়ীটা নিয়ে সোজা উকিলের অফিসে এসেছি। তসিবা চলো?

তসিবা:- এইটা তো আমাদের বাসা না তাহলে এখানে কেনো নামবো?

আমি:- একটা ডির্ভোসের এপ্লিকেশন করতে হবে।

তসিবা:- কি ডির্ভোসের জন্য কিন্তু কেনো? আমি তো আপনাকে এখন ভালোবাসি তাহলে আবার এসব কেনো?

আমি:- তোমার আমার নয় মীমকে ডির্ভোস দিবো!

তসিবা:- একটা কথা বলবো?

আমি:- হ্যা বলো?

তসিবা:- মীমকে ডির্ভোস দেওয়ার দরকার নেই! মীমকে আমাদের বাড়ীতে রাখেন। মীম দেখুক একটা বউ কি করে সংসার করে। মীম আমাদের ভালোবাসা দেখে কষ্ট পাবে তখন নিজে থেকে চলে যাবে দরকার কি ডির্ভোস দেওয়ার।

আমি:- নাহ তা হয়না মীম যাবে না পরে তোমার আর আমার মাঝে আবার অশান্তি তৈরি করবে।

তসিবা:- পারবেনা আজ থেকে আপনি মীমের সাথে ঠিক করে কথা বলবো না! মীম কিছু বললে উত্তর দিবেন না! সব সময় মীমের সাথে রাগ দেখিয়ে কথা বলবেন। মীমকে দেখিয়ে আমার সাথে বেশি বেশি দুষ্টমি করবেন।

আমি:- তাহলে মীম চলে যাবে তুমি বলছো?

তসিবা:- পাক্কা চলে যাবে! এভাবে এক বছরের মধ্যে আমার দুইটা জমজ মেয়ে হয়ে যাবে আর তা দেখে মীম সারা জীবনের জন্য চলে যাবে।

আমি:- ঠিক আছে! পরে দেখো দাবার চাল উল্টা না হয় বলে গাড়ীটা নিয়ে চলে এসেছি বাড়ীতে। গাড়ী থেকে নেমে তসিবা ভিতরে গেছে আমি গাড়ীটা পার্কিং করে ভিতরে ঢুকে দেখি তসিবা সবার সাথে কথা বলছে।

ভাইয়া:- কিরে সৌরভ শ্বশুড় বাড়ী কেমন লাগলো?

আমি:- ভালোই! ভাই দয়া করে তুই আমাকে নিয়ে মজা করা বন্ধ কর। ভাবি তুমি ভাইকে কিছু বলবে নাকী?

ভাইয়া:- আরে আমি কি বলেছি? তখনি দেখি মীম নিচে নেমে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। আজকে মীম নেবি ব্লু লেহেঙ্গা পড়েছে আমার পছন্দের কালার এইটা।

মীম:- সৌরভ আমি একটু বের হচ্ছি।

আমি:- তুমি কোথায় যাবে না যাবে তার জন্য আমাকে বলতে হবেনা।

মীম:- বা রে ঐ দিন রাতে না বলছো এই বাড়ীতে থাকতে হলে তোমার সব কথা শুনতে হবে। তুমি যদি অনুমতি দাও তাহলে যাবো তানা হলে তোমাকে সাথে নিয়ে যাবো।

তসিবা:- আপনি এই কথা বলছেন মীম আপুকে?
(মাথাটা নেড়ে না করেছি) কি হলো মুখে বলেন?

আমি:- তখন বলেছি অন্য কারনে কিন্তু এখন তো বলিনি।

তসিবা:- আম্মু ঠিক বলছে পুরুষ মানুষের মন ঠিক থাকে না।

মীম:- তসিবা সৌরভ যেমন তোমার স্বামী ঠিক তেমনি আমার স্বামী। তুমি ওকে নিয়ে বাড়ীতে গেছো আমি তোমাকে বাধা দিয়েছি? তাহলে এখন আমি ওকে নিয়ে গেলে তুমি বাধা দিবে কেনো?

তসিবা:- আমি তো আপনার মত না! নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে আর তার পরিবারের সাথে আপনি যা যা করেছেন তারপেও আপনি কি করে এই বাড়ীতে এসেছেন? আপনার যায়গা আমি হলে নিজের মুখটা জীবনেও সৌরভের সামনে আনতাম না।

মীম:- তসিবা মুখ সামলিয়ে কথা বলবে। তোমার সাহোস হয় কি করে আমাকে এমন কথা বলার?

তসিবা:- বলবোনা তো কি করবো? আমার স্বামীর আশে পাশে আপনি আসবেন না!

মীম:- সৌরভ তোমার একার স্বামী নাকী?

তসিবা:- হ্যা আমার একার! আপনি এই বাড়ীতে একটা অতীথীর মত থাকবেন! আমার সংসারের দিকে চোখ তুলে তাকাবেন না। আর আমার স্বামীর দিকে তো একে বারে না।

মীম:- সৌরভ তোমার সামনে তসিবা আমাকে কি অপমান করছে আর তুমি তোমার বাড়ীর সবাই চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো?

আমি:- এইটা তোমার পাপ্য ছিলো। এক সময় তোমার যেই অধিকার ছিলো এখন সেইটা তসিবার আছে। তুমি যেখানে খুশি সেখানে যাও আমাকে নিয়ে টানা টানি করোনা। বরং তুমি ফেমাস হতে যাও যেখানে গেলে তোমার পরিচিতি বারবে।

মীম:- প্লিজ সৌরভ এমন ভাবে বলোনা আমার শুনতে অনেক কষ্ট হয়!

আম্মু:- শুনার মত কাজ করেছো এখন শুনতে হবে!

তসিবা:- এই আপনি চলেন আমার সাথে বলে তসিবা আমার হাত ধরেছে তখনি মীম আমার আরেকটা হাত ধরেছে কিন্তু তসিবা আমাকে টেনে নিয়ে এসেছে আর মীম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে।

আমি:- তসিবা তোমার শরীরে তো অনেক শক্তি!

তসিবা:- আমার স্বামীর জন্য সব করতে পারি! আর শুনেন বাচ্চা কিন্তু আমার চায় এই বছরের মধ্যে।

আমি:- আল্লাহকে ডাকতে থাকো বাচ্চা পেয়ে যাবে! এখন আমি অফিসে যাবো আজ কতদিন ধরে অফিসে যায়না। অনেক কাজ জমা হয়ে আছে তুমি থাকো আমি গেলাম বলে রওনা দিয়েছি তখনি তসিবা বলে!!! To be continue,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে