কে কোথায় যায়? পর্ব ২০

0
622

কে কোথায় যায়? পর্ব ২০
রাত তখন ২টা বেজে ৩৪ মিনিট!
সাগরে ভাটা পরে গেছে। সেইন্ট মার্টিনের প্রবাল গুলোও পর্যায়ক্রমে দৃশ্যমান হচ্ছে। যেহেতু তারা হাঁটতে হাঁটতে হোটেল থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে তাই আবার হোটেলের দিকে ফিরে আসার সিদ্বান্ত নিলো। সাগরের পার ধরে হাঁটছিলো দু’জনে। তামিম পেছনে হাঁটছিল আর সামনে শুভা।
শুভা সমুদ্রের পানিতে পা ভিজালো!ঠান্ডা পানিতে পা দিয়ে সে হাসলো স্লানভাবে!
তামিমের হাত ধরে সে বলল,
——–‘আহা!বেস্ট রাত রে দোস্ত,ঠিক তোর মতো!’
তামিম খানিকটা চেপে ধরলো শুভাকে!নির্বিকার গলায় বলল,
——-‘এতই যদি বেস্ট তবে তোর মনে জায়গা পাচ্ছি না ক্যান?’
শুভা হতচকিত!হতচকানো কন্ঠে সে বলল,
——-‘তোর জন্য ঢের জায়গা আছে দোস্ত!’
হাত দুটো লম্বা করে শুভা আবারও বলল,
——-‘এই যে দেখ,এত্তটুকু জায়গা তোর জন্য!’
তামিম হাসলো।পরক্ষণে’ই মুখের ভাব পাল্টে সে বলল,
——-‘দোস্ত,তুই সেইরাম দেখতে!বেশ সিমসাম বর পাবি!’
শুভার মুখের ভঙ্গি পাল্টে গেলো।সরু গলায় বলল,
——-‘তোর মতো বর পাবো না?’
তামিম মিষ্টি হাসির রেখা টেনে বলল,
——–‘আমি কি সুন্দর নাকি?খুউউউব সুন্দর বর পাবি,দেখিস!’
শুভার চোখে জল লক্ষ করা গেল।তবে অন্ধকারের কারণে তামিম দেখেনি!আনমনে দু’জন হাটতে লাগলো।
হঠাৎ লক্ষ্য করলো, যেখানে দু’জন পা ফেলছে সেখানে নীল রঙের কিছু একটা জ্বলে উঠছে!
শুভা আতকে উঠে তামিমকে বলল,
——‘এইই,দেখ তো ওইখানে কিসব জ্বলতেছে!’
ব্যাপারটা ভালোমতো দেখার জন্য তামিম এগোলো। কিন্তু ততক্ষণে আলোগুলো নিভে গেছে। এবার তামিম ইচ্ছে করে বেশ খানিকটা জায়গায় পাড়াতে থাকলো।
আশ্চর্যজনকভাবে ওর খুচানোটা বেশিরভাগ জায়গা থেকে জোনাকির মতো নীল আলো জ্বলে উঠলো। কোথা থেকে এই আলো জ্বলে উঠলো তাদের জানা নেই কারণ এই ধরনের দৃশ্যের সম্মুখীন ওরা আগে কখনো হয়নি। এবার দু’জন সাগরের কোলঘেঁষে দৌঁড়াতে শুরু করল । প্রতিটা পায়ের ছাপ নীল আলোয় ভরে উঠছিলো।
কি অসাধারণ দৃশ্য!। অনেকক্ষণ দৌঁড়ানোর পর দুজন মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে এই নীল রঙের উৎস খুঁজতে নামলো। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ওরা একটা বস্তু খুঁজে পেলাম। সাইজে উঁকুনের চেয়েও ছোটো আর দেখতে অনেকটা স্বচ্ছ জেলির মতো। হা-পা, মাথা কিছুই নেই। বীচে দাঁড়িয়েই অনলাইনে এই প্রাণীটি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলো শুভা।
তামিমকে বলল,
——-‘দাড়া,সার্চ মারি ইন্টারনেটে!’
এই প্রাণীটি সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য না পেলেও এতটুকু ক্লিয়ার হলো যে এটি একটি বায়োলুমিনিসেন্ট জীব। বায়োলুমিনিসেন্ট নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়ার কারণে সাগরের অনেক প্রাণীই নিজের দেহে আলোর সঞ্চার করতে পারে। এই তালিকায় জেলি ফিশ ,স্কুইড, জোনাকি পোকাসহ আরো অনেক ধরণের সামুদ্রিক প্রাণী অন্তর্ভুক্ত। এই ক্ষুদ্র প্রাণীটাই আজকের রাতটাকে তাদের কাছে স্পেশাল করে রাখলো। এর আগে টেলিভিশনে বহুবার পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এই ধরণের দৃশ্য ঘটতে দেখলেও সামনাসামনি এটাই প্রথম!
শুভা তামিমকে তাড়া দিয়ে বলল,
——-‘চল,হোটেলে চল!অনেক রাত,সবাই চিন্তা করতেছে!’
দু’জন পাড় ঘেষে হাটছে!স্পাউক করা তামিমের চুলগুলো বাতাসে দুল খাচ্ছে,চোখে চশমা,মুখে মায়াবী হাসি,জিন্স প্যান্ট,কালো র্শাটে সাথে কালো কোট!শুভার পড়নে কালো টপস ও জিন্স প্যান্ট,হাতে ব্রেসলেট!
তামিম আর শুভা হোটেলে ফিরলো।বন্ধুমহলের সবাি ওদের দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে আছে।তামিম তাদের গোল মিটিংয়ে বসে বলল,
——-‘আসলাম অনেকটা পথ ঘুইরা!তোরা তো গেলি না,মিস করলি!’
নীহারিকা জ্বলে উঠে বলল,
——-‘নিলি কখন?তাছাড়া কখন বইলা গেলি?তোদের খুজতে খুজতে চোখে ব্যাথা!’
রাফি আয়েশ করতে করতে বলল,
——-‘হয়তো প্রেম ট্রেম করতেছে!ওসব বাদ দে তো!’
চলবে….
(ছোট হয়ে গেছে,এজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেছি)
©ইভা আহমেদ চৌধুরী
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে