ওয়াদা ২৩

0
3330

ওয়াদা ২৩
ওর মাথা ঠিক আছেতো না হলে এসবের মানে কি। আমি শুভকে ভালোবাসি ঠিকি কিন্তু আমি আমার পরিবারকেও ভালোবাসি। আমার একটা ভুল আমার পুরো পরিবারটাকে শেষ করে দিতে পারে। আমার মায়ের ভরসা বিশ্বাস আমি কিছুতেই নষ্ট হতে দিবো না। কিন্তু শুভ আমি যে শুভকেও খুব ভালোবাসি। আমি যে ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না। কি করবো আমি। কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। না শুভর সাথে আমার কথা বলতে হবে। ও এমনটা করতে পারে না। শুভকে কল দিলাম।
-বলো(শুভ)
-শুভ তুমি আমার সাথে মজা করছো তাই না?
-দেখ নাশু আমি তোমায় যা বলেছি সেটা অনেক ভেবে চিন্তে বলেছি। আমায় পেতে হলে তোমায় আমার সাথে পালাতে হবে। আর আজ রাতেই।
-কিন্তু শুভ তুমি কেন বুঝতে চাইছো না এটার সাথে আমার পুরো পরিবারের সম্মান জড়িয়ে আছে। আমার পক্ষে এটা সম্ভব না শুভ। প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো।
-আমার সত্যি কিছু করার নেই নাশু। এখন তুমি দেখ তুমি কি করবে। তোমার পরিবারের কথা ভাববে নাকি আমায় সারা জীবনের মতো হারাবে। সেটা তোমার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।(বলেই ফোন কেটে দিলো)
ও কেন আমার কোনো কথা শুনছে না। আমি বার বার কল করছি কিন্তু ধরছে না। সবতো ঠিকিই ছিলো হঠাৎ করে কি হলো আল্লাহই জানে। কিছু বলছেও না কি হয়েছে।
-কি রে আপু তোর এখনো হয়নি। ওদিকে বরযাত্রীতো এসে গেছে।
-হুম। হয়ে গেছে। তুই যা আমি আসছি।
-আপু কি হয়েছে। তোর চোখে পানি কেন?
-কিছু হয়নি। চোখে কিছু একটা পরেছিলো। জ্বালা করছে খুব তাই।
-কই দেখি কি পরেছে।
-না থাক। আমি নিজেই বের করে নিয়েছি। সমস্যা নেই তুই যা আমি আসছি।
-পাক্কা কোন সমস্যা নেই?
-হুম।
-ঠিক আছে আমি গেলাম। তুই তাড়াতাড়ি আয়।
-ওকে।
-আপু একটা কথা বলি?
-হুম বল।
-তন্নি আপুর মতো তুইও বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি চলে যাবি তাই না। শোন তোর বিয়ে কিন্তু অনেক ধুমধাম করে দিবো। খুব মজা করবো তোর বিয়েতে।
-করিস।(হালকা হাসি দিয়ে)
-আপু আমরা সবাই তোকে খুব ভালোবাসিরে।
-আমিও তোদের সবাইকে খুব ভালোবাসি।(হালকা হাসি দিয়ে বললাম)
নিশাত চলে গেলো। নাহ আমি পারবোনা এদের কষ্ট দিতে। আমার যত কষ্টই হোক না কেন আমি আমার পরিবারের বিশ্বাস ভরসা ভাঙতে পারবো না। আমায় ক্ষমা করো শুভ। আজ তোমার একটা ভুল সিন্ধান্তের জন্য আমাদের আলাদা হতে হচ্ছে। ইচ্ছা করছে চিৎকার করে কাদি। মুখেতো বলছি তোমায় ছেড়ে থাকবো কিন্তু তোমায় ছেড়ে কি করে থাকবো শুভ। কি করে থাকবো। চোখের পানি কিছুতেই থামছে না। না কেউ যদি আমায় এখানে এইভাবে দেখে ফেলে তাহলে খুব প্রবলেম হবে। তন্নির বিয়েটা ভালই ভালই মিটে যাক আগে। তাই চোখ মুখ মুছে নিচে গেলাম। সবাই খুব আনন্দ করছে। সবাই কত খুশি। একটু আগে আমিওতো কত খুশি ছিলাম কিন্তু মুহূর্তেই সব পাল্টে গেলো। বিয়েতে আমিই সব থেকে বেশি মজা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন এইসব কিছু আমার কাছে অসহ্য লাগছে। কিচ্ছু ভালো লাগছে না। বিয়ে পড়ানো হয়ে গেছে। একটু পর তন্নির বিদায়। কোনো মতে বিদায় অনুষ্ঠান শেষ করে রুমে এলাম। বসে বসে আমার আর শুভর গত দুই বছরের সব সুখের মুহূর্ত গুলো ভাবছি। আমি কি সত্যিই পারবো শুভকে ছাড়া থাকতে। এমন সময় মা এলো।
-নাশু জিনিস পত্র সব গুছিয়ে নে।(মা)
-গুছিয়ে নিবো মানে?
-আমরা আজ বাড়ি ফিরে যাবো।
-বাড়ি ফিরে যাবো মানে। মা আমাদেরতো এখনো দুটোদিন এখানে থাকার কথা। পরশু তন্নির বৌভাত। আমরা বৌভাত এ থাকবো না?
-না। আমরা থাকছি না। আমরা এক্ষনি ফিরছি।
-কিন্তু মা হঠাৎ করে কি হলো যে আমরা এখনি চলে যাবো। তন্নির বৌভাতে না গেলে ওর খুব খারাপ লাগবে। আমরা দুটোদিন পরই যায় না মা।
-নাশু আমাদের যাওয়াটা খুবই প্রয়োজন।
-কি এমন প্রয়োজন যে এখনি যেতে হবে।
-সেটা গেলেই দেখতে পারবে।
-কি হয়েছে মা। কারোর কিছু হয়েছে নাকি?
-না করোর কিছু হয়নি।
-তাহলে,,
-নাশু তুমি রেডি হয়ে নাও।
-মা আমরা এভাবে চলে গেলে অনু কাকিমারও তো খারাপ লাগবে তাইনা। যদি কোনো সমস্যা না থাকে আমরা থাকি না মা।
-তোমার অনু কাকিমারাও যাচ্ছে।
-কিহ্। কাকিমারা সবাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে?
-হুম।
-কিন্তু কেন?
-নাশু এতো প্রশ্ন না করে রেডি হয়ে নাও।
-মা বলছি তোমরা সবাই যাও আমি থাকি। প্লিজ মা প্লিজ। তাছাড়া আমার সব বন্ধুরা থাকছে। আমিও থাকি না মা প্লিজ।
-নাশু আমি আর কোনো কথা শুনতে চাই না। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও।
আমার কোনো কথা না শুনেই চলে গেলো। কি এমন হলো যে এভাবে সবাই চলে যাচ্ছে। শুভতো বলেছিলো ও রাত ৯:০০ টায় তন্নিদের বাড়ির সামনে আসবে। ওতো জানে না আমরা চলে যাচ্ছি। ওকে ফোন করে বলি। ফোনটা যে কোথায় রেখেছি। ওহ এইতো। ফোনটা হাতে নিলাম ওকে কল করবো বলে কিন্তু দেখলাম শুভ মেসেজ পাঠিয়েছে। মেসেজ টা ওপেন করলাম। তাতে লেখা
*নাশু আমি রাত ৯:০০ তন্নিদের বাড়ির সামনে এসে দাড়াবো তুমি চলে এসো। আর আমার ফোনটা বন্ধ করে রাখছি। ৯:০০ টার আগে ওপেন করবো না। কারণ আমি জানি তুমি আমায় বার বার কল করে বোঝানোর চেষ্টা করবে কিন্তু আমার বোঝার কিছু নেই নাশু। প্লিজ চলে এসো আমি তোমার জন্য ওয়েট করবো*
মেসেজটা পড়ে তাড়াতাড়ি করে ওকে কল দিলাম। কিন্তু ফোনটা সত্যি সত্যি বন্ধ করে রেখেছে। এখন ওকে কিভাবে জানাবো আমরা চলে যাচ্ছি। বার বার কল করছি কিন্তু সমানে বন্ধ দেখাচ্ছে। উফ্ কি করবো আমি। প্লিজ শুভ ফোনটা অন করো। প্লিজ।
-কিরে তুই এখনো দাড়িয়ে আছিস কেন। মা তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে নিচে যেতে বললো।(নিশাত)
-নিশাত তুই কি জানিস আমরা হঠাৎ করে এইভাবে চলে যাচ্ছি কেন। মা তোকে কি কিছু বলেছে।
-না মা আমায় কিছু বলেনি। শুধু বলেছে আমাদের যাওয়াটা খুবই দরকার। না হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আমারতো যেতেই ইচ্ছা করছে না।
-সর্বনাশ হয়ে যাবে? তারমানে ওখানে নিশ্চয় কোনো ঝামেলা হয়েছে তাই মা চলে যেতে চাইছে।
-হয়তো। তুই তাড়াতাড়ি আয়। আমরা সবাই প্রায় রেডি।
-হুম আসছি।
আমি এতো টেনশন নিতে পারছি না। একদিকে শুভ আর অন্যদিকে মা সর্বনাশের কথা বলছে। জানিনা আবার কোন ঝড় আসতে চলেছে আমার জীবনে। জানিনা কেমন অদ্ভুদ ভয় করছে। মনে হচ্ছে আমার জীবনে কিছু একটা ঘটতে চলেছে। কিন্তু কি ঘটতে চলেছে। খারাপ কিছু নয়তো। আল্লাহ তুমি দেখ প্লিজ আমাদের পরিবারে নতুন করে যেন খারাপ কিছু না হয়। জিনিস পত্র সব গুছিয়ে নিচে এসে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা রওনা দিলাম। আসার সময় রাত্রি আর মেঘ আড়ালে কথা বলছিলো। কি কথা বলছিলো জানি না। এখন এইসব নিয়ে ভাবতে ইচ্ছা করছে না। সময় যেন কাটছেই না। সময় যত যাচ্ছে আমার টেনশন ততো বাড়ছে। শুভ এখন কি করছে কে জানে। ও যখন তন্নিদের বাড়িতে এসে আমায় পাবে না তখন কি করবে কে জানে। এদিকে বাড়িতেই বা কি হয়েছে সেটাও বুঝতে পারছি না। মাথাটা খুব ব্যাথা করছে । আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না। চোখটা বন্ধ হয়ে আসছে। কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি জানি না। মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো।
-নাশু নাশু। ওঠ।
-হুম আর একটু পরে উঠছি মা।
-আর একটু পরে না এখনই ওঠ। সবাই অপেক্ষা করছে।
-সবাই অপেক্ষা করছে মানে। আমি কোথায়?
-উঠে দেখ তুই কোথায়।
আমি উঠে দেখলাম আমি আমার রুমে শুয়ে আছি। মাথাটা খুব ভারী লাগছে। অনেক ক্লান্ত লাগছে। তাও উঠে বসলাম। আমিতো গাড়িতে ছিলাম তাহলে আমি আমার রুমে কিভাবে এলাম। আচ্ছা এমনটা নয়তো যে আমি এতো সময় স্বপ্ন দেখছিলাম। তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে নিলাম শুভর কোনো মেসেজ আছে কিনা সেটা দেখার জন্য। কিন্তু না আমি স্বপ্ন দেখছিলাম না এইসব কিছু সত্যি সত্যিই হয়েছে। কিন্তু আমি এখানে কিভাবে এলাম।
-মা আমিতো গাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম তাহলে এখানে কিভাবে এলাম।
-বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থেকে নামার পর মেঘ বললো তুই নাকি ঘুমিয়ে গেছিস। তোকে অনেক ডাকাডাকির পরও যখন উঠছিলিনা তখন মেঘকে বললাম তোকে নিয়ে রুমে আসতে।
-মানে? ও আমায় কিভাবে নিয়ে আসলো।
-কিভাবে আবার কোলে করে।
-কিহ্
-হুম। এতো কথা না বলে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আয়।
-মা বাইরে এতো চেঁচামেচি কিসের।
-ফ্রেশ হয়ে আয়। আসলেই বুঝতে পারবি।(বলে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে কপালে একটা চুমু খেয়ে চলে গেলো)
কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। সবাই এমন অদ্ভুদ আচারণ করছে কেন। কি হচ্ছেটা কি আমার সাথে। ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই মা আমায় জোড় করে একাট লাল বেনারসি পরিয়ে দিলো। আমার কোনো কথায় শুনলো না। বেনারসি তো মানুষ বিয়েতে পরে। মা আমায় কেন পরাচ্ছে। আমার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না। আমায় সাজিয়ে দিয়ে মা নিজে আমায় বাইরে নিয়ে এলো। বাইরে এসে দেখি আমাদের কিছু নিকট আত্মীয় এসেছে। মা আমায় সোফায় বসিয়ে দিলো। কি হচ্ছে এখানে। মা কি করতে চাইছে আমি জানি না। ওদিকে শুভ কি করছে সেটাও জানিনা। আমায় এমন ভাবে সাজানোর মানেটা কি। আমি মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করতে যাবো তখনই মা চোখ রাঙিয়ে আমায় চুপচাপ বসে থাকতে বললো। অনু কাকিমা এসে আমায় আদর করে দিয়ে অনেক গয়না পরিয়ে দিলো। আমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না। মেঘ এক কোনায় দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। সবাই খুব হাসি খুশি। কিন্তু আমার টেনশন হচ্ছে। আমি যা ভাবছি এখানে কি সেটাই হতে চলেছে। প্লিজ আল্লাহ আমি যা ভাবছি তা যেন না হয়। একটু পর হুজুর মতো একটা লোক আসলো। ওনাকে দেখে আমার পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো। আমি যা ভাবছিলাম সেটাই। এখানে আমার বিয়ের আয়োজন করা হচ্ছে। আমি পাথরের মূর্তির মতো বসে আছি। আমার পুরো শরীর অবাস হয়ে গেছে। আমি কিছু বলতে চাইছি কিন্তু বলতে পারছি না। গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হচ্ছে না। আমি অনেক চেষ্টা করছি কিছু বলতে কিন্তু কিছুতেই বলতে পারছি না। মা আমার কাছে এসে আমায় নিয়ে একপাশে গিয়ে দাড়ালো।
-মা। তুমি আমার সাথে এমনটা করতে পারলে?
-আমি জানি নাশু তোর মনে হাজারও প্রশ্ন। কিন্তু তুই যদি তোর বাবাকে একটু ভালোবেসে থাকিস, মানুষটাকে সম্মান করে থাকিস, তার শেষ ইচ্ছাটা যে তোকে পূরণ করতেই হবে। তোর বাবা যে ওয়াদা করেছিলো তোকে সেই ওয়াদা পূরন করতে হবে। ওর বাবাকে ওয়াদা ভঙ্গকারী হতে দিস না।
-মা আমি বাবাকে খুব ভালোবাসি, সম্মান করি। বাবার জন্য সব কিছু করতে পারি। কিন্তু এই বিয়েটা আমার পক্ষে করা সম্ভব না। মা আমার তোমায় অনেক কিছু বলার আছে।
-আমি জানি তুই কি বলবি।
-তুমি জানো?
-হুম জানি। কিন্তু তুইও একটা কথা শুনে রাখ আজ যদি তুই এই বিয়েটা না করিস, আজ যদি তোর বাবার সম্মান নষ্ট হয় তাহলে তুই আমার মরা মুখ দেখবি।
-মা?
-এখন তুই ভেবে দেখ তুই কি করবি।(মা)
আল্লাহ তুমি আমায় এ কোন পাপের শাস্তি দিচ্ছো। আমি এখন কি করবো তুমি বলে দাও। একদিকে ভালোবাসা অন্য দিকে মা। আমি কোন দিকে যাবো। শুভ সবটা জানলে ও কি করবে জানি না। হুজুর বললেন
-বর কনে কে নিয়ে আসুন।(হুজুর)
মা আমার দিকে অসহায় হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি চুপচাপ সোফায় বসে পরলাম। আমায় ক্ষমা করো শুভ। ক্ষমা করো আমায়। তোমার বিশ্বাসের মূল্য আমি দিতে পারলাম না শুভ দিতে পারলাম না।
আমি মাথা নিচু করে বসে আছি। একটু পর কেউ একজন আমার পাশে এসে বসলো। আমি এখনো জানি না কার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে। জানতে ইচ্ছাও করছে না। আমার পাশে যে বসে আছে যাকে আমি চিনি না একটু পর সেই আমার সব থেকে আপন হবে। আমি কি পারবো তাকে আপন করে নিতে। না কখনই পারবো না। আমি শুভর জায়গাটা অন্য কাউকে কখনো দিতে পারবো না। এই বিয়েটা আমি বাধ্য হয়ে করছি। এই লোকটাকে আমি কখনো নিজের স্বামী হিসাবে মানতে পারবো না। কখনোই না। কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করলো। যখন বরের নাম বললো শাফিন এহসান মেঘ তখন আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম। আমি তাড়াতাড়ি মাথা উচু করে পাশে তাকিয়ে দেখলাম মেঘ মাথা নিচু করে বসে আছে।
চলবে,,,

#মেহজাবিন_নাশরাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে