আজ আমার বিয়ে পার্ট ৩৭_৩৮ একসাথে

0
2537

আজ আমার বিয়ে পার্ট ৩৭_৩৮ একসাথে
লেখা আশিকা জামান

আমি সকাল সকাল ইভানকে কল দিলাম,
ঘুমের তালে ও রিসিভ করলো,
— হ্যালোও..

— তুমি কি ঘুমুচ্ছো??
— নাহ আরতো কিছু করার নাই তাই ঘুমাই। আচ্ছা সূর্য কি পূর্বদিকে উঠছে নাকি পশ্চিমদিকে..
— এই শোন প্লিজ বাজে কথা থামাও। আমার না তোমার সাথে মিট করাটা খুব দরকার। কবে আসবে??

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


— কেন অপমান আরো বাকী আছে নাকি??
এই তুমি ভেবেছোটা কি তোমাকে ভালবেসেছিলাম বলে যা বলবে তাই মাথাপেতে নিতে হবে। আসছি না আমি। তুমি একাই থাকো।
— আচ্ছা তুমি ওই ভালবেসেছিলাম কথাটা কেন বললা?? এখন কি তবে ভালোবাসোনা??
— এই শোন ঘনঘন রঙ পাল্টাতে তোমরা মেয়েরাই পারো।
— আমি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর পাইনি।
— আমি তোমার উত্তর দেয়ার জন্য বাধ্য নই। এনিওয়ে
আমাকে অফিসে যেতে হবে, ব্রেকফাস্ট করতে হবে। আর কেউ চলে যাওয়ার আগেতো একবার ভাবেনি আমি একা একা কি করবো?? কি খাবো?? কি করে সব সামলাবো??
তাহলে আমি কেন এত ভাবতে যাবো?? তার মত হওয়ার চেষ্টা করি একটু দেখি পারি কিনা।
রাখলাম।
ইভান ফোন্টা কেটে দিলো।
ও যা যা বললো তা একবিন্দুও মিথ্যা না সব আমার জন্য।
কয়েকদিন ধরে বাসায় বিয়ের জন্য হুলস্থুল কান্ড বেধে গেছে। আত্নীয় স্বজন সবাই আসতে চলেছে। কয়েকজন্তো আমার রুমও দখল করে নিয়েছে। তাই এখন আপাতত ইমোশনটা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছি। কারণ সবাই জেনে গেলে কানাঘুষা শুরু করে দিবে। হয়তবা এখনি শুরু করে দিয়েছে। তিল থেকে তাল করার ব্যাপারে এনারা খুব এক্সপার্ট। সে যাই হোক আমি আমার মত নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চললাম। ইতিমধ্যে ইভান জেনে গেছে আমাদের সেকেন্ড বিয়ে সম্বন্ধে সে পুরা অস্বিকার করেছে এইরকম বিয়ে তার দ্বারা সম্ভব না। তাছাড়া লোক দেখানো সব কিছুতে তার এলার্জি সেটা আগে থেকেই জানতাম।
আমিও তার কাছে যতবার ক্ষমা চাচ্ছি সে ততবারি আমাকে ইগনোর করে যাচ্ছে। জাস্ট এইগুলা নিতে পারছিলাম না। আমার শ্বশুর শাশুড়ি খুবি ক্ষুব্দ ইভানের প্রতি। এদিকে আমাদের বাসায়ও ঝড় উঠলো বলে। বাবা-মাতো এখন আমাকে কথা শোনাতে পারলেই বাচে।
রাগে আমার নিজের চুল নিজে ছিড়তে ইচ্ছে হচ্ছে । এদিকে শ্বশুর শাশুড়ি প্রোগ্রামের ডেট ফিক্সড করে ফেলেছেন আর সে অনুযায়ী সবাইকে ইনভাইট ও করে ফেলেছেন। এখন ও যদি না আসে তাহলে কি হবে এটা ভেবেই আমার মাথাটা আরো ভারী হয়ে যাচ্ছে। আমি সবাইকে বলেছি যে ও আসবেনা প্লিজ আপনারা এইগুলা বন্ধ করেন।
এইটা বলাতে শাশুড়ি মা আমার উপর আরো খেপে গেল।
— এই তোমাকে এইসব নিয়ে ভাবতে হবেনা। আমরা আছিতো নাকি?? আর সেদিন একা একা কেন আসতে গেলা??
তাহলেতো আমার ছেলেটা এত রাগ করে থাকতোনা। আজ দেড়টা মাস হয়ে গেল ছেলেটা কারো সাথে ঠিক করে কথাও বলেনা। কেমন আছে কি করছে এসব আমি আর ভাবতে পারছিনা।
এখন লক্ষি মেয়ের মত যা বলছি তাই করো। দয়া করে আর অশান্তি বাড়িয়ো না।
বাবা-মা চুপচাপ শাশুড়িমায়ের কথা হজম করে নিলো কোন টু শব্দটাও করলোনা। আমি আর এদের কথার মধ্যে থাকতে চাইনা। আমি আমার রুমে এসে কাদতে লাগলাম।
কখন যেন ইভানের নাম্বার ডায়াল করে ফেললাম।
আমি কেঁদেই চলেছি আর ও হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছে।
কিছুক্ষন পর ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি ইভান অন কলে আছে,
আমি তাড়াতাড়ি ফোন কানে নিয়ে,
কাদতে কাদতে হ্যালো বললাম।
— আশ্চর্য মানুষ তুমি ফোন দিয়ে কথা বলোনা কেন??
আর অনবরত কেঁদেই চলেছো কেন??
— কি করবো আমি। তুমি একটা খাটাশ আমি আজ দেড়টা মাস যাবৎ অনবরত তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছি আর তুমি আমাকে প্রতিনিয়ত ইগনোর করে যাচ্ছো। আচ্ছা তাও মানলাম কিন্তু ফুল ফ্যামিলির সবাই আমাকে যখন তখন কথা শুনাচ্ছে..
এইগুলা আমি এখন টলারেট করতে পারছি না।
— দেখ আমি কিন্তু তোমার বিপক্ষে কোন কথা কাউকে বলি নাই। এখন সবাই তোমাকে কি বলছে?? কেন বলছে?? এইগুলাতো আমার জানার কথা না।
তাছাড়া তুমি নিজেই আমাকে চাও না এখানে আমি কি করতে পারি??
— এই প্লিজ আমি তোমাকে না চাইলে আর কাকে চাবো?? মেজাজ আজকে আমার পুরা খারাপ।
ওই আমাকে মুখ খুলিয়ো না। এই আমার চরিত্রের কোন দোষ খুজে পাইছো তুমি?? আমাকে তোমার কি মনে হয়??
হু হ..
বাচ্চা দেয়ার সময় মনে ছিলোনা??
এখন প্রেগন্যান্ট তো তাই বাহানা হচ্ছে, অন্য মেয়েদেরতো এখন ভালো লাগবেই..
আমার সব জানা আছে, সব ছেলেরা এই একি ক্যাটাগরির।
— অরিন জাস্ট সেট আপ। তুমি জীবনে শোধ্রাবে না। আর এইগুলা কি ধরনের ভাষা। আসলে কি জানোতো তুমি বদ্ধ উন্মাদ, পাগল হয়ে গেছো না। তোমার সাথে কথা বলাই বৃথা।
— হুম আমি পাগল হয়ে গেছি শুধু তোমার জন্য। তুমি আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও প্লিজ আমি আর এখানে থাকতে পারছিনা।
আমি কাদতে লাগলাম।
কথা বলতে পারছিলাম না।
— অরিন প্লিজ কান্না বন্ধ করো এখন। আমার এইসব ভালো লাগছেনা আর।
— হুম আমি আর তোমাকে ডিস্টার্ব করবোনা। শুধু লাস্টবারের মত বলো পরশুদিন প্রোগ্রামের ডেট দিছে তুমি আসবে নাকি আসবেনা??
— দেখ আমি এখন বিজি। পরে কথা বলি…
— নাহ ইয়েস অর নো। আর কিছু শোনতে চাইনা।
— দেখ অরিন পরশুদিন আমার একটা অফিসিয়াল কাজে চিটাগাং যাওয়া লাগবে আর এটা আগে থেকেই ঠিক করে। এখন এটা চেঞ্জ করা যাবেনা। তুমি সবাইকে বলে দিও…
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম হয়তবা এটা ইভানের কান পর্যন্ত পৌছায়নি…
চোখ মুছে ওকে বললাম,
— বাহ, বেশতো তুমি নিজে কেন বলছোনা।
— আমি বলেছি কিন্তু সবাই ভাবছে আমি ইচ্ছে করে বানিয়ে এমনটা বলছি। আর এই ব্যাপারে কিছু বললেই সবাই আমার উপর রাগারাগি শুরু করে দিছে। সবাই আমার কথার কোন দামই দিচ্ছে না। বাবাতো কালকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আমি যেন ঠিক সময়ে উপস্থিত হই। বুঝতে পারছোতো ব্যাপারটা কতদূর এগিয়েছে।
— হুম তাহলে আসছোনা এটাই ফাইনাল তো।
— তুমি কি বুঝতেপারছোনা অবুঝের মত কথা বলো কেন?? আমি কি চাকরীবাদ দিয়ে এইসব আউল ফাউল নাটক করতে আসবো নাকি। এখন আমার কাছে সবচেয়ে বড় হলো আমার ক্যারিয়ার বুঝেছো…
আমি ফোনটা কেটে দিলাম। ওর লাস্ট কথাগুলো আমাকে বড্ড ভাবাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা ও এইগুলা বলতে পারে তাও আবার আমাকে । উফ এতো কষ্ট কেন জীবনে..
কোনদিন কি ভেবেছিলাম।এইরকম দিনো আমাকে দেখতে হবে।
পরদিন খবর নিয়ে শুনেছি ও আসেনি। তারমানে ও যা বলেছে তাই করবে?? আমি মাকে বলেছি আবার ও আসবেনা কিন্তু মা আমার কথা বিশ্বাস করলোনা।
উলটা শাশুড়ি মায়ের মত করে আমাকে কথা শোনালো।
আমি মাকে স্পষ্ট বলে দিলাম
— ও যদি সত্যিই না আসে, আর আমাকে যদি অপমানিত হতে হয় দেখো আমি সত্যি একটা কিছু করে ফেলবো।
— এই একটা কিছু কি করে ফেলবা তুমি??
তুমিতো খুব বেড়েছো?? নিজে নিজে জেদ দেখিয়ে চলে এসে এখন আমাদের উপর জেদ দেখানো হচ্ছে।
আমি কোন উত্তর না দিয়েই আমার রুমে চলে আসলাম। এরা বেকার আমাকে দোষারোপ করবে আর কিইবা পারবে??
— এই কি হল কথা না শেষ করে কোথায় যাও??
আমি জোরে রুমে দরজা লাগিয়ে দিলাম।
চলবে।।
#আজ আমার বিয়ে
লেখা আশিকা জামান
পার্ট ৩৮
রাতের বেলা নওরিন আর সোহান আসলো। ওদের অনেক আগেই আসার কথা ছিলো কিন্তু শপিং করতে গিয়ে বোধ হয় লেট করে ফেলেছে। শপিং এ আমার শাশুড়ি মা, ইরা ওরাও গিয়েছিলো আমাকেও সাথে যেতে বলেছিলো। আমি শরীর খারাপের অজুহাত দিয়ে ঘরেই শুয়ে ছিলাম। কি করে ওদের বুঝাই যে এইগুলা আমার অসহ্য লাগছে। নওরিনটা ইদানীং বেশি কথা বলা শিখে গেছে ওকেও আমার অসহ্য লাগে। –আপুউ আপু..
আপুউ..
উফ নওরিনটা আমাকে আবার ডাকছে। আমার একা একা থাকতেই বেশি ভালোলাগে কিন্তু ওর জ্বালাই সেটাও সম্ভব না। যখনি দেখবে আমি একা একা বসে আছি ঠিক তখনি জ্বালাতে এসে পড়বে।
— এই কি হইছে ষাড়ের মত চিল্লাচ্ছিস কেন??
— ছিঃ আপি। তুই এটা বলতে পারলি। আচ্ছা যাক গে তুই আমাকে যাই বলিস না কেন আজকে আমি কিছুই গায়ে মাখবো না। আজকে আমি বিশাল মুডে আছি…
— কেন??
— ওমা কেন আবার শপিং এ গিয়েছিলাম না। শপিং এ গেলে যে আমার মুড সবসময় ভালো থাকে সেটা তোর থেকে বেটার আর কে জানে।
— ও তাই বল।
আমি চুপ করে বসে পড়লাম।
— আপি কালকে তোর রিসিপশন আর তুই এইভাবে মন মরা হয়ে বসে আছিস কেন?? আর কোন এক্সাইটমেন্টতো দেখছিনা।
— আমার ক্ষনে ক্ষনে এত এক্সাইটেমেন্ট পায়না বুঝেছিস এবার যাহ এখান থেকে।
আমি কথাগুলো বলে সামনে তাকাতেই দেখি মা দাঁড়িয়ে হাতে কিছু শপিং ব্যাগ।
ব্যাগ গুলো বিছানায় রাখতে রাখতে মা বললো,
— অরিন ওরা তোমার জন্য এইগুলা পাঠিয়েছে। কালকে এইগুলা পড়বা। দেখতো কেমন হলো..
মা শাড়ীর বক্স থেকে পিংক কালার সোনালি জরির কাজ করা একটা কাতান শাড়ী বের করে আমার গায়ে ধরলো।
নওরিন লাফিয়ে উঠে বললো,
— আপি তোকে তো বেশ মানিয়েছে শাড়ীটা। আমার আরো আল্লাহ করছিলাম কেমন না কেমন লাগবে।
তোর ননদের প্রছন্দ আছে!!
এই মেয়ের বেশি কথা না বললে ভালোই লাগেনা। মা আমি দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,
–প্রছন্দ হয়েছে??
— খারাপ না ভালোই আছে..
— এইটা কি ধরনের ভাষা। ভালো লাগছে বোল্ডলি বলো এইভাবে বললে হবে। এত বড় মেয়ে হয়েছো কথা শিখলেনা দুইদিন পর বাচ্চাদের কি এই শিক্ষাই দিবে??
— মা প্লিজ আমার এইসব ভালোলাগছে না।
কালকে যখন সবাই যেচে অপমানিত হবে তখন আমার কথা মিলিয়ে নিও।
— দেখ ইভান যথেষ্ট রেস্পন্সিবল ছেলে। ও একটু বিজি আছে কালকে ঠিক সময় করে চলে আসবে। এটা নিয়ে এত মাথা নষ্ট করার কোন দরকার আছে বলে আমি মনে করিনা।
আর বাকী গয়নাগুলো কি তুমি দেখবে নাকি আমি নিয়ে চলে যাবো??
— তোমরা দেখে থাকলে এইগুলা আমার সামনে থেকে সরাও…
মা হনহন করে সব কিছু নিয়ে চলে গেল..
আমি বসে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদতে লাগলাম। নওরিন শয়তানটা,যে ওখানে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে সেটা আমি বেমালুম ভুলেই গেলাম।
ফাজিলটা আমার পাশে ধপ করে বসে আমার কানে কানে মুখ লাগাও..
আমি রাগে ওর দিকে তাকাই..
তারপর ফিসফিসিয়ে বলে,
— আপু আর কাদিস না।দুলাভাই কালকে বেশি বেশি আদর দিয়া পোষাই দিবেরে..
আমি চোখ বড়বড় করে ওর দিকে তাকাই…
— তুই যাবি এখান থেকে??
নওরিন বসা থেকে উঠে বলে,
— যাচ্ছি, গরীবের কথা বাসি হলে ফলে…
আমি একটা চড় ওর দিকে উচিয়ে ধরলে ও দৌড়ে পালায়।
আমার রাতে খেতে ইচ্ছে করিছিলো না তাই খাইনি। মা আর নওরিন অনেক জোড়াজোড়ি করেছিলো তবুও খাইনি। সারারাত বিছানায় এপাশ ওপাশ করেছি দুচোখের পাতা আর একহতে পারেনি।
সকালবেলা খুব ইচ্ছে করছিলো ওকে একটা ফোন করতে কিন্তু সেই সাহসটা আর নেই। তাই ইচ্ছেটাকে দমিয়ে রাখলাম।
সকাল সকাল ব্রেকফাস্ট করে সবাই রেডি হতে লাগলো। নওরিনের সাথে আজকেও আমি পার্লারে গেলাম। আজকেও আমার ঠিক আগেরবারের মতন ফিলিংস হচ্ছে। আজকেও কষ্ট হচ্ছে ইভানের জন্যে..
ও কি করে এমনটা করতে পারে। আমাকে খুব সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে??
কার জন্য সাজছি আমি??
যার জন্য এই সাজ সে ছাড়া এইগুলা যে সব বৃথা..
এই মুহূর্তে ওকে ছাড়া আমার বড অসহায় লাগছে। আমি হু হু করে কেদে উঠলাম।
পার্লারের মেয়েটা হতবিহ্বলের মত আমার দিকে তাকিয়ে আছে,
— আপনি কাদছেন কেন??
— ও কিছু না। আপনি আপনার কাজ করেন। আপুর ইক্টু আবেগ বেশিতো তাই কান্না করে দিছে।
মা বারবার ফোন দিচ্ছে আমাদের আর কতদূর?? নওরিন বলেছে এইতো হয়ে গেছে। আমরা যাওয়ার পর সবাই একসাথে কমিউনিটি সেন্টারে যাবো। এতক্ষনে হয়তবা সবাই এসেও গেছে।
আমার সাজ শেষ হলে আমি নওরিনের সাথে বাসায় আসলাম। এতক্ষনে সব আত্নীয় স্বজন বাসায় এসে গেছে। অনন্ত ভাইয়াকে আজকে খুব খুশি খুশি লাগছে। পরশুদিন আবার ওর বিয়ে এজন্যই হয়তবা। নওরিন আবার ওকে খেপাতে লাগলো
— কে গো এইটা জামাই নাকি??
— চোখে দেখিস না। এই সোহান তোমার বউটা ইদানীং বেশি বাড়ছে তুমি ওকে কিছু বলোনা কেন…
— কি বলবো আপনার বোনের সাথে আমি পারলেতো..
যা দজ্জাল মাইরি..
— কিহ আমি দজ্জাল।
দাঁড়াও কেমন দজ্জাল আমি আজকেই তোমাকে দেখাবো..
নওরিন রাগে গজগজ করতে করতে ওখান থেকে চলে আসলো…
— এইরে খেপেছে যাও যাও বউ সামলাও।
— হুম সব আপনার জন্যে । আমার সংসারে আগুন লাগাই দিছেন।
সোহান নওরিনের পিছে পিছে হাটা শুরু করলো।
অনন্ত ভাইয়া পিছন থেকে হাসতে হাসতে বললো,
— এই বাড়ীর জামাইগুলা হয়েছে এক একটা বউ পাগল। অরিন তোদের কপালতো দেখি ভালোই..
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম
— তোমার বউ খুব জামাই পাগল হবে দেখে নিও।
ভাইয়া লজ্জা পেয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।
একটু পর সবাই যার যার গাড়িতে উঠে পড়লো। বাসা থেকে একটু আগালেই কমিউনিটি সেন্টার। এখানে আরেকটা বিয়ে হচ্ছে মনে হয়। অনেক অপরিচিত মানুষ দেখে মনে হলো। সবাই নামার পর আমাকে সাবধানে নামানো হল। নামানোর পর সামনে তাকাতেই দেখি ইরা, শাশুড়ি মা আর শ্বশুর।
— ওমা ভাবি তোমাকে যা সুইট লাগছে কি বলবো??
সাজটা খুব সুন্দর লাগছে।
শাশুড়ি মা ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে,
— আমার অরিন এমনিতেই সুন্দর ওকে এমনিতেই ভালো লাগে।
ইরা আর শাশুড়ি মা আমাকে বউ এর আসনে বসিয়ে দিলো। আমার পাশের আসনটা খালি এটা দেখে আমার দুচোখ ফেটে জল আসতে লাগলো।
ইরা আমার চোখের ভাষা বুঝে ফেললো,
— ভাবি তুমি এত টেনশন নিও না। ভাইয়া এই আসলো বলে। দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি ইরার হাত চেপে ধরলাম।
টেনশনে আমার শরীর হাত পা ঘামতে লাগলো। অসহ্য পেইন হচ্ছে মাথায়। ও কি সত্যিই আসবে না। এখনোতো এলো না..
চলবে
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে