Your Lover পার্ট- ৭+৮

0
2771

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৭+৮

ইভার জ্ঞান ফিরে দেখে ওর আশেপাশে অনেক লোক আর ও আয়ানের কোলে মাথা রেখে আছে৷
-ইভা তুমি ঠিক আছো?( আয়ান)
-এখন ঠিক আছি (ইভা)
-তুমি সাঁতার জানো না তাহলে কেনো পানিতে নেমেছো?(আয়ান)
-তুই ২মিনিটের মধ্যে কিভাবে ডুবে গেলি? আমার সাথে তো পিক তুলতে ছিলি ? (লামিসা)
-একটু সামনে এগিয়ে দেখি খুব সুন্দর একটা ঝিনুক সেটা তুলতে গিয়ে কে জানো পিছন থেকে আমাকে ধাক্কা দিলো আমি পরে গেলাম। (এতোটুকু বলে কান্না করে দিলো ইভা)
-থাক আর বলতে হবে না , তোমরা ওকে রুমে নিয়ে যাও (আয়ান)

আয়ান ও সানভি খুব ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছে কাজটা কে করেছে। ইভা আর ওর ফ্রেন্ডরা রুমে চলে যাওয়াতে সানভি বলে,
-আমাদের পরশু দিন ঢাকা ফিরে যাওয়া কথা থাকলেও আমরা কালকে ফিরে যাবো।
-না যে দিন যাওয়ার কথা সে দিন যাবো।
-বেশি জেদ করিস না, একটু আগে বড় বিপদ ঘটতে যাচ্ছিলো আল্লাহ এবারের জন্য বাঁচিয়েছে।
-যেখানে যার মৃত্যু আছে সেখানে তার মৃত্যু হবে এটা মানিস তো তাহলে যা হচ্ছে হতে দে।
-দেখ ইভার কিছু হয়ে গেলে আমার পরিবার, ফুপি, ফুফা এদের আমি কি জবাব দিবো বল।
-আমি আছি তো কিছু হবে না, চল ফ্রেস হয়ে আসি।
-হুম

সকাল থেকে রাইয়ানের দেখে মেলে নি। দুপুরে খাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট নিয়ে সবাই ঘুরতে যাওয়ার কথা থাকলেও ইভাকে কেউ নিয়ে যাবে না। রুমে থাকতে বলা হয়েছে কিন্তু সানভি এসে বললো,
-ইভা তুই রেডি হয়ে নে, তোকে ছাড়া আমি ঘুরতে যাবো না
-কিন্তু ভাইয়া ওরা আমাকে নিবে না
-যেই ভাইকে পেলি অমনি আমাদের নামে নালিশ দিচ্ছিস (লামিসা)
-ননদকে টর্চার করলে তো ভাইয়ের কাছে নালিশ দিবেই (সানভি)
-এখানে ভাবি কে? কোনো একটা প্রেম রহস্য সুগন্ধি পাচ্ছি (রাহি)
ঈশিতা লামিসাকে একটু ধাক্কা দিয়ে বলে,
-জল অনেক দূর গরিয়ে গেছে
-ধুর তোরা কি শুরু করছিস হ্যাঁ, চল রেডি হয়ে নেই (লামিসা)
-আমার সাথে ঘুরতে যাওয়ার এতো ইচ্ছে তা জানতাম না (সানভি)
-আমি একবার ও বলছি আপনার সাথে ঘুরতে যাবো? (লামিসা)
-মুখ দেখে তো বোঝা যাচ্ছে (সানভি)
-বেশি বোঝা ভালো না (লামিসা)
-আরে ভাইয়া কি করছিস, প্রেম শুরু হওয়ার আগে ঝগড়া করলে প্রেম এখানে শেষ হয়ে যাবে (ইভা সানভিকে আস্তে করে বললো)
-তাও ঠিক। এই যে লামিসা ম্যাডাম আপনাকে লাল কালার ড্রেসে খুব সুন্দর লাগছে (সানভি)
লামিসা লজ্জা পেয়ে আর কিছু বললো না। পাশ থেকে রাহি বললো,
-ভাইয়া আপনারা কি ঘুরতে যাবেন নাকি এখানে প্রেম করবেন
-কি যে বলো তোমরা এখানে প্রেম করলে ম্যাডাম রাগ করবে (সানভি)
বের হতে লেট হচ্ছে বলে আয়ান এসে বললো,
-এই শালা তোকে আমি এখানে পাঠিয়ে ছিলাম কেনো? আর তুই কি করছিস?
-আমার লাইনটাও একটু ক্লিয়ার করতে দে(সানভি)
– ছেলেরা তোমরা এখন যাও বাকি কথা পরে হবে (ঈশিতা)

সবাই ঘুরতে বের হলো। সন্ধ্যার মধ্যে হোটেলে ফিরে আসলো। রাতে কাপাল ডান্স, গান, অভিনয়ের আসর জমিয়ে দিয়েছে।
কক্সবাজার তিন দিনের ট্যুর ভালো ভাবে কাটিয়ে সবাই বাড়ি ফিরেছে।

আয়ান ইভাকে বলে দিছে কলেজে আয়ানের সাথে বেশি কথা না বলতে। আর ওদের সম্পর্কের কথা সবাইকে যেন না বলে৷
আয়ান সব সময় ইভাকে নজরে রাখে। সানভির সাথে লামিসার রিলেশন শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো ভাবে আছে৷

নাজমিন বেগম ইভাকে ডাকতে আছে কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছে না কিছুটা ভয়ও করছে সেই সকালে এসে রুমের দরজা লাগিয়েছে এখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। শুধু বলেছে মাথা ব্যাথা করে শরীর ভালো লাগে না কেউ যে ডিসর্টাব না করে।
রাইসা ড্রয়িং রুমে টিভি দেখতেছে, তখন সানভির আগমন।
-রাই
-হুম, তুমি আজকে হঠাৎ আমাদের বাসায় কি মনে করে?
-কেউ বাসায় আসলে ভিতরে আসতে না বলে, পুলিশের মতো জেরা করছিস। তোদের বাসায় আর আসবো না।
– তুমি তো বাইরে দাড়িয়ে থাকো নি । তাহলে তোমাকে ভিতরে আসতে বলবো কিভাবে?
-খুব বেশি কথা বলা শিখে গেছিস
-ভুল কিছু বলি নি।
-হুহ, যা তো ঠান্ডা পানি নিয়ে আয়
-আসতে না আসতেই খাটানো শুরু।
-কাজ না করলে শরীরে মরীচিকা পরবে।
-তুমি বুজি কতো কাজ করো তা আমার জানা আছে।
-কেমনে জানো আজকাল আমাকে নিউজে দেখায়।
-ধুর, পানি খাও।
-হুম দে। ফুপি, ইভা কোথায়?
-উপরে আছে। আপু সেই কলেজ থেকে এসে রুমে শুয়ে আছে।
-কেনো কি হয়েছে?
-তা জানি না।
-আচ্ছা আমি গিয়ে দেখি।

সানভি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে দেখে নাজমিন বেগম ইভাকে ডাকতে আছে,
-ফুপি কি হয়েছে?
-আর বলিস না কি যে হয়েছে বুঝতে পারছি না।
-আচ্ছা আমি দেখছি।
-ইভা বোন আমার দরজা খোল, তোর জন্য একটা ভালো খবর নিয়ে এসেছি। প্লিজ দরজা খোল।

কয়েকবার ডাকতে ইভা দরজা খুলে দিলো।
-মা তোর কি হয়েছে আমাকে বল (নাজমিন বেগম)
-অনেক মাথা ব্যাথা করেছে তোমাকে বললাম তো(ইভা)
-তাই বলে না খেয়ে সারাদিন শুয়ে থাকতে হবে (নাজমিন বেগম)
-কি তুই সারাদিন খাস নি? ফুপি যাও খাবার রেডি করো আমিও দুপুরে খাই নি (সানভি)
-আচ্ছা তোরা নিচে আয়(নাজমিন বেগম চলে গেলো)

-ইভা তুই এমন পাগলামি করলে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে।
-আমি কি পাগলামি করছি বল? আয়ান যে আমাকে কষ্ট দিলো তা তোর চোখে পড়লো না
-তোকে আয়ান বারন করেছিলো কলেজে ওর সাথে কথা না বলতে তাহলে তুই কেনো গিয়েছিল ওর কাছে?
-ও তৃষার সাথে ঢলাঢলি করে কথা বলেছে তাই
-এটা তুই মেসেজ দিয়ে বলতি।
-হ্যাঁ এখন সব দোষ আমার হবে
-হ্যাঁ তোর।
-যা তুই। আমার সাথে আর কথা বলতে আসবি না
-তুই এখন আমাদের বাসায় যাবি
-না যাবো না
-তোর জন্য আয়ান অপেক্ষা করে আছে।
-ওর সাথে আমার কোনো কথা নেই তুই ওকে জানিয়ে দিস আমি সম্পর্ক রাখবো না
-এখন আমি তোকে থাপ্পড় দিবো

-চল খেয়ে রেডি হয়ে নে৷ আমি ফুপির সাথে কথা বলে আসি।
-ও আমাকে ভুল বুঝছে আমার মুখ দেখতে চায় না তাহলে আমি কোন মুখ নিয়ে ওর সামনে যাবো।
-তুই আমার সাথে গেলে বুঝতে পারবি। তোকে ও আর অপমান করবে না
-আচ্ছা শুধু তোর কথার জন্য যাচ্ছি

নাজমিন বেগমের থেকে পারমিশন নিয়ে ইভা সানভিদের বাসায় গেলো।
ড্রয়িং রুমে আয়ান বসে আছে সাথে সানভির মা, দাদুও আছে। ইভা আয়ানকে দেখে চোখ রাঙিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
-কি রে দোস্ত কখন এলি। (সানভি)
-এইতো কিছুক্ষন হলো (আয়ান)
-ইভা কেমন আছিস? (সানভির মা)
-ভালো আছি মামি, তুমি?(ইভা)
-ভালো। তোরা বসে কথা বল আমি চা নিয়ে আসি (সানভির মা)
-তোরা বুড়ীর কথা ভুলে গেছিলি, কতদিন পর আজকে আয়ান, ইভা বাসায় এলি (দাদু)
-নানু তোমাকে আমি ভুলে থাকতে পারি নাকি, প্রতিদিন ফোন করি, গল্প করি তাও বলো ভুলে গেছি (ইভা)
-দেখা করতে আসিস না তো আর এই আয়ান চুপ করে বসো আছো কেনো গালফ্রেন্ডের কথা ভাবো (দাদু)
-গালফ্রেন্ড থাকলে তো তার কথা ভাববো। তোমার খোঁজে কোনো সুন্দরী মেয়ে আছে নাকি দাদু(আয়ান)

(কিহ্ সুন্দরী মেয়ে লাগবে, এখন আমাকে কালো লাগে। দাঁড়া আয়ান তোর ব্যবস্থা করতে আছি। ইভা মনে মনে বলতে আছে আর আয়ানে দিকে তাকিয়ে আছে)
-আমার নাতনীরা খুব সুন্দরী আছে, পটাতে পারো কি না দেখো (দাদু হাসতে হাসতে কথাটা বললো)
-তার মানে কি দাদু তোমার আয়ানকে পছন্দ হয়? তোমার কোনো নাতনী সাথে বিয়ে দিবে? (সানভি)
-হ্যাঁ দিবো, যাকে বলবে তার সাথে দিবো (দাদু)
-আয়ান বলে ফেল কাকে পছন্দ করিস (সানভি)
-এখনও বলার সময়,আসে নি (আয়ান)
-তোকে বাড়িতে ডাকছি একটা প্রোজেক্ট প্ল্যানিং করেছি তা দেখার জন্য আমার রুমে চল আর ইভা তুইও আয় তুলি উপরে আছে৷(সানভি)
সানভি নিজে চা নিয়ে উপরে গেলো যাতে আর কেউ উপরে না যায়।

তুলি সানভির বোন। ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পরে৷ ইভার সাথে খুব ক্লোজ। ওদের সম্পর্কের কথা জানে৷

চলবে,

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_৮

ছাদের কিনারায় ইভা দাঁড়িয়ে আছে। আয়ান ইভার কাঁধে হাতে রাখতেই ইভা ঘুরে তাকায়।
-আমার উপর রাগ করে থেকো না প্লিজ
-চুপ
-সরি সোনা পাখি
-সবার সামনে অপমান করে খুব ভালো লাগেছে তো?
-সবার সামনে অপমান করতে চাই নি আর অনেক গুলো কারন ছিলো সেটা বলবো বলে তোমাকে এখানে এনেছি।
-কি এমন কারন থাকতে পারে যে যাকে ভালোবাসো তার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে বাজে নি???
-আচ্ছা সব বলছি,
তুমি কি এটা জানো যে তৃষা কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে?
-না জানি না, তৃষা প্রিন্সিপালারে মেয়ে নাকি লাটসাহেবের মেয়ে তাতে তোমার কি? আমার থেকে বেশি বড় লোক নাকি? (উত্তেজিত হয়ে বললো)
সানভি, তুলি ওদের কাছে দৌড়ে এসে বললো,
-ইভা তুই চিৎকার করছিস কেনো? বাসায় সবাই আছে। (তুলি)
-তুই একটু মাথা ঠান্ডা রেখে ওর সব কথা শোন তারপর যদি মনে করিস ও ভুল করেছে তাহলে তুই রিলেশন রাখিস না (সানভি)
ইভা চুপ করে দাড়িয়ে আছে।
-তোরা দরজার কাছে গিয়ে দাড়া আমি ভালো ভাবে বুঝাচ্ছি (আয়ান)
-হুম (তুলি)
-ইভা প্লিজ আমার কথাটা ভালো করে শুনো,
তৃষার আমাকে অনেক আগে থেকে পছন্দ করে কিন্তু আমি ওকে সব সময় এড়িয়ে চলি। ও এই দু মাস বিদেশে ছিলো কালকে কলেজে এসেছে তখন দেখা হওয়ার সূত্রে কথা বলছি। ওর সামনে আমাকে নিলয় একটা খাম দিয়েছে তারপর খামটা খুলে দেখি তোমার আর রাইয়ানের ছবি আর তৃষা দেখে ফেলছে। আমাদের রিলেশন সম্পর্কে ও কিছু জানে না। জানতে পারলে ওর উদ্দেশ্য থাকবে সবসময় তোমার খারাপ করার। ও অনেক রিলেশন করছে কিন্তু একটাও টিকে নি, অহংকার জেদের কাছে ভালোবাসা তুচ্ছ করে। আমি জেনে শুনে তোমার খারাপ করতে পারি নি।
– আচ্ছা তাহলে তুমি ওর সাথে কথা বলবে না
-আমি ওর সাথে তেমন কোনো কথা বলি না, প্রয়োজনের খাতিরে যতোটুকু দরকার ততোটুকু কথা বলি।
-হুহ, আমাকে থাপ্পড় মেরেছো কেনো?
-তোমার নামে তৃষা অনেক বাজে কথা বলেছে যার কারনে আমার মাথা গরম হয়ে গেছে
-তুমি আমাকে একটুও বিশ্বাস করো না, ভালোবাসো না। (কান্না করে দিলো)
-উফফফ্ রে, এতো চোখের পানি কোথায় রাখো। শান্তি মতো কথাও বলা যায় না। প্লিজ কেঁদো না।
-হ্যাঁ আমি এখন কান্না করলেও দোষ হয়।
-আচ্ছা কান্না করা শেষ হোক তারপর বাকি কথা বলবো। কাঁদো।
ভ্যা ভ্যা ভ্যা কান্নার স্পিড আরো বেড়ে গেলো তাই আয়ান ইভাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বললো,
-তুমি ঈশিতার বার্থডে পার্টিতে গিয়েছিলে মনে আছে?
-হুম
-সেখানে রাইয়ান ছিলো?
-হুম
-তোমাকে আমি ঈশিতার বার্থডে পার্টিতে নিয়ে গিয়েছিলে আবার আমি তো বাসায় পৌঁছে দিয়েছিলাম। আর ওখানে সিসিটিভি আছে তাহলে কেউ যদি কিছু করে থাকে সব দেখা যাবে।
-তুমি চেক করে দেখো আমি কিছু করি নি।
-মাথা মোটা একটা, আমি চেক না করে ডিটেইলস তোমাকে বললাম কিভাবে?.
-হ্যাঁ তাই তো।
-সে দিন ও তোমার কিছু ছবি তুলেছে সেগুলো দিয়ে তোমার সাথে ওর নোংরামো ছবি বানিয়েছে।
-তুমি জানলে কিভাবে?
-যেখান থেকে ছবি গুলো বানিয়েছে তার নাম ছবির নিচে দেওয়া আছে আমি সেখানে থেকে তার খোঁজ নিয়ে জেনেছি।
-এতো কিছু একদিনের মধ্যে জানা সম্ভব হয় কিভাবে আমার সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
– মাথার উপর দিয়ে যাবে মাথা মোটা বলি কি সাধে
-আবার বললে কান্না করবো কিন্তু
-না না আরও কাহিনী আছে শুনো, কক্সবাজার ট্যুরে তোমাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে রাইয়ান ফেলে দিয়েছিলো।
সেটা জেনেছি আমি সিওর ছিলাম তোমাকে রাইয়ান ফেলে দিয়েছে তাই আমি সব সময় ওর দিকে খেয়াল রেখেছি। ও কাকে যেনো ফোনে বলে ছিলো, তোমাকে কিডন্যাপ করার কথা কিন্তু যদি ঝামেলায় পরে যায় তাই মেরে ফেলে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছে আর ওর এই সব কথা আমি শুনে রেকর্ড করে রেখেছি।
-আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। আমাদের সম্পর্ক ভুল বুঝাবুঝি তৈরি করতে চেয়েছে আমি ওকে ছাড়বো না। আমি ওকে মেরে ফেলবো। আর তুমি এসব জেনে কিছু না করে বসে বসে তামাশা দেখছো।
-হাহাহাহা কে বলেছে আমি কিছু করি নি। আমি আমার লোক,,,,,, থাক কালকে সকালে তোমাকে নিয়ে যাবো
-না এখন বলো।
-নাহ্ কালকে দেখতে পাবে। তবে ক্লাস ফাঁকি দিতে পারবে না ক্লাস শেষ করে আমাকে মেসেজ দিও আমি এসে নিয়ে যাবো।
-আচ্ছা
-তুমি এতো বোকা কেনো হ্যাঁ
-আমি আবার কি করলাম?
-ছবিগুলো তোমার গায়ে ছুড়ে মেরেছি তখন রাইয়ানকে কয়েকটা থাপ্পড় দিতো পারো নি। কোথা থেকে এসব করেছে জানতে চাইতে পারো নি। আমি কেনো তোমার এসব করতে যাবো?
-আমি তোমার দেওয়া কষ্ট সহ্য করতে পারি নি, ভাবছি তুমি এইগুলো সত্যি মনে করে আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছো।
-পাগলী একটা। ভালোবাসা, বিশ্বাস এতো সস্তা না যে কেউ এসে যা বলবে তা বিশ্বাস করতে হবে নাকি। ভালোবাসার প্রতি অটুট বিশ্বাস রাখতে হয়।
-হুম বুঝলাম
-আমি যা করবো তোমার ভালোর জন্য করবো এটা মনে রেখো।
-আমার এতো ঝামেলা ভালো লাগে না
-আমার তো বেশ ভালো লাগে, লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করতে পারি, তোমাকে বকা দিতে পারি।
-আমাকে বকা দিতে ভালো লাগে তাই না এই বলে (আয়ানের পিঠে তাল পরা শুরু হলো)
-ব্যাথা পাচ্ছি তো। তোমার একটুও মায়া হয় না আমার জন্য
-না কোনো মায়া হয় না। সকলে আমাকে মেরেছিলে তখন তোমার মায়া হয় নি
-এতোটা জোরে মারি নি যে ব্যাথায় জ্বর আসবে।
-তাও আমার নরম তুলতুলে গালে মারার আগে কয়েকবার ভেবে মারবে
আয়ান ইভার গাল টেনে বললো,
-নরম গালে কিছু করতে হলে ভাবার সময় থাকে না, যেমন মিষ্টি সামনে নিয়ে বসে থেকে ভেবে খাওয়া যায় না মিষ্টি দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে।
-কি সব বলছো, ভাইয়া-আপু আছে
-এখন ভাইয়া-আপুর দোহাই দিচ্ছো, তাদের সামনে প্রেম করো তাতে লজ্জা লাগে না
-না, তুমি এখন যাও
-হুম যাবো, তুমি সাবধানে থেকো। তোমাকে কষ্ট দেওয়া জন্য সরি আর লাভ উই সোনা পাখি
-লাভ উই টু
-ওই তোদের বলছি,
সানভি এবং তুলি তোদের দুজনকে অনেক ধন্যবাদ দিবো না কারন তোরা আমার অপন জন তাই আমাদের রিলেশনশিপ উপলক্ষে ট্রিট দিবো।
-কালকেই হয়ে যাক (তুলি)
-হ্যাঁ একটা ভালো কাজের পর খাওয়া-দাওয়া না করলে ব্যাপারটা ভালো দেখায় না (সানভি)
-আচ্ছা দোস্ত আমি এখন আসি আর কালকের কথা মনে রাখিস(আয়ান).
-রাতে খেয়ে তারপর যাবে (তুলি)
-না ছোট আপু অন্য কোনো দিন খেয়ে যাবো আর জামাই আদর এখনও পরে আছে (আয়ান)
-হাহাহাহাহ্ জামাই আদর পরে থাকলেও শালিদের আবদার এখন থেকে পূরন করতে হবে (তুলি).
-আর কথা বারিও না এখন বাসায় যাও রাত ৯টা বাজে খেয়াল আছে (ইভা)
-বাহ্ এখন এতো প্রেম, একটু আগে বলছিলি কি যেনো ওর সাথে কথা বলবো না ওর সাথে থাকবো না সেগুলো এখন কই? (সানভি)
-আহ্ ভাইয়া আমি তো ওগুলো রাগ করে বলেছি(ইভা)
-তুই রাগ করেই কেনো বা এসব বলবি? তুই জানিস না যে আপনজনদের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হয়। এক্ষুনি সরি বল (তুলি)
-আচ্ছা সরি আমার ভুল হয়ে গেছে (ইভা)
-ইট’স ওকে বেবি (আয়ান)
-বাসায় গিয়ে মেসেজ দিও, সাবধানে যেও (ইভা)
-এখানে আমরা আছি তোর বড় ভাই বোন (সানভি)
-আহারে বড় ভাই বোন আমার, ছোট বোনকে বন্ধুর সাথে প্রেম করতে হেল্প করো তখন বড় থাকে কোথায়(ইভা)
-পাকা পাকা কথা না বলে খেতে চল (তুলি)

ড্রয়িং রুমে মামা, মামি, নানু সবার সাথে কিছুক্ষন গল্প করে খেতে যাবো তখন আয়ান মেসেজ দিলো,
“” বাসায় আসছি। এখন তুমি খেয়ে নেও আমিও খাবো। বেশি রাত জাগবে না। ভালোবাসি “”

রাতে খেতে ভাই বোনেরা আড্ডা দিয়ে ঘুমালো। সকালে সানভিদের বাসা থেকে ইভা কলেজে গেলো।
তিনটা ক্লাস করে আয়ানকে ফোন করলে আয়ান সানভিকে পাঠায় ইভাকে নেওয়ার জন্য সাথে লামিসাও যায়।
পুরনো ভাঙ্গা বাড়ির সামনে গাড়ি থামে৷
-ইভা তুই ভিতরে যা (সানভি)
-কেনো? তোরা যাবি না(ইভা)
-আমরা এখনে আছি একটু প্রেম করি তুই যা(সানভি)

রাফসান ইভাকে ভিতরে নিয়ে গেলো। দেখলো রাইয়ানকে একটা চেয়ারের সাথে হাত পা বেধে রেখেছে।ইভাকে দেখেতে আয়ান বললো,
-রাইয়ান তোর গালফ্রেন্ড ইভা চৌধুরী এসেছে।
-ইভা তুমি আয়ানকে বলো আমাকে ছেড়ে দিতে।
-তোর সাথে ইভার শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত গরিয়ে গেছে তা আমি জানতে পারলাম না ।
-হ্যাঁ আমাদের সম্পর্ক হয়েছে তাতে তোর কি? ইভাও আমাকে ভালোবাসে

হাহাহাহা ইভা জোরে হাসি দিয়ে রাইয়ানের গালে ঠাসসস্ ঠাসসস্ থাপ্পড় দিয়ে বললো,
-বাহ্ বাহ্ তোর সাথে আমার সম্পর্ক হয়েছে তাও আবার শারীরিক সম্পর্কও। তোর এসব মিথ্যা কথা আয়ান বিশ্বাস করে আমাকে ছেড়ে দিবে তা ভাবিস না। আমাদের ভালোবাসা এতোটা সস্তা না।
আমাকে তুই মারতে চেয়েছিলি কিন্তু দেখ উপরে একজন আছে সে সব দেখতে পায়।

আয়ান রাতে ওয়াটসএ্যাপে রাইয়ানের কুকীর্তি ইভাকে সেন্ড করেছিলো

আবার ইভা বললো,

-ঈশিতার বার্থডে পার্টিতে সিসিটিভি ছিলো, ওখানে তোর সাথে আমি কিছু করে থাকলে তা দেখা যেতো বাট কিছু দেখা যায় নি কেনো?. তুই কি মিথ্যা বলবি বল দেখি তোর মিথ্যার জোর কতোক্ষন টিকে থাকতে পারে৷
-আমি তোমাকে ভালোবেসে করেছি।
-তোর ভালোবাসা আমি বের করছি দাঁড়া।

পাশে বাঁশ রাখা ছিলো সেটা দিয়ে রাইয়ানকে ইভা মারতে থাকে ।

বেশ কিছুক্ষন মেরে ছেড়ে দেয়।
রাইয়ানের হাত পায়ের বাধন আয়ান খুলে দিয়ে বলে,
-তোকে যেনো কোনো দিন ইভার ধারে কাছে না দেখি আর ইভা তুমি সবসময় মনে রেখো ইউর লাভার তোমাকে ছেড়ে কোনো দিন যাবে না। চলো আমরা যাই।

চলবে,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে