Your Lover পার্ট – ১৯+২০(শেষ)

0
2999

#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১৯+২০(শেষ)

“আয়ান শুনছো, আমার বাবা আমার বিয়ে ঠিক করতে যাচ্ছে আমাকে দেখতে আসবে ”
“দেখতে আসলে তো বিয়ে হয়ে যায় না ”
“হতে কতোক্ষন, তুমি দেশে আসবে কবে?”
“তোমার বিয়ে বলে কথা, বিয়েতে ভালো ভালো খাবার খেতে আসতেই হবে ”
“এখন মজা করার সময় না, সিরিয়াসলি বলছি আমার বিয়ের জন্য ছেলে দেখছে”
“তো আমি কি করবো “?
” তুমি তোমার বাবা মাকে জানাও, আমাদের বাসায় বিয়ে প্রপোজাল নিয়ে আসো”
“আরে আমি এখন বিয়ে করতে পারবো না, আমার আরও সময় দরকার ”
“তুমি এখন আমার সাথে ফাজলামি করো? বিয়েটা কি ছেলেখেলা নাকি? যাকে ইচ্ছে তাকে বিয়ে করবো। ”
“শান্ত হও। আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম, আমি স্টাবিলিস না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবো না”
“তোমার গ্রাজুয়েসন কম্পিলিট করেছো, বাবার বিজনেস জয়েন করছো তাহলে আবার কি ”
“তাও আমি এখন বিয়ে করতে পারবো না ” বলে আয়ান কল কেটে দিলো ।

ইভা ফোনটা ছুড়ে খাটের উপর মারলো। বসে বসে একা কাঁদছে তখন ইভার মা এসে বললো,

-কিরে তোকে কখন থেকে ডাকতে আছি শুনছিস না কেনো?
তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে বললো,
-কেনো ডেকেছিলে বলো?
-তোর বাবা একটা ভালো ছেলের সন্ধান পেয়ে আর তারাও তোকে দেখতে চাচ্ছে।
-আমি এখন বিয়ে টিয়ে করবো না, আব্বুকে বারন করো বিয়ের ব্যবস্হা না করতে।
-আমি বলেছিলাম তোকে আরও পরে বিয়ে দিতে কিন্তু আমার কথা শুনছে না। বললো তো ছেলে তার পরিচিত অনেক ভালো, ফ্যামিলি ভালো তাই এই পাএ হাত ছাড়া করা যাবে না।
-না না না আমি এই বিয়ে করবো না
-পাগলামি করিস না আমার তোর ভালো চাই
-আমি আমার ভালো চাই না
-তোর কি কোনো পছন্দের মানুষ আছে? আমাকে সত্যিটা বল?
ইভা ওর মায়ের সাথে অনেক কথা শেয়ার করে কিন্তু আজ আয়ানের কথা বলতে পারছে না আয়ান এখন বিয়ে করবে না তাহলে মাকে বলে কি হবে তাই ওর মাকে বললো,
-না কেউ নেই, তুমি এখন যাও তো আমার ভাল্লাগে না।
-আচ্ছা

রাতেরবেলা ইভা সানভিকে কল করে আয়ানের কথা বলেছে, “যে আয়ান বিয়ে করতে চায় না ” সানভি বলেছে আয়ানকে ভালো করে বুঝিয়ে বলবে যেনো বিয়ে করে।

রাত ১১ঃ৩০সময় ইভা আয়ানকে বেশ কয়েকবার কল করার পর রিসিভ করলো
-কি তুমি এখনও ঘুমাও নি কেনো? আর এতো রাতে কল দিছো কেনো?
-আয়ান আমি তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসি, তুমি তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে এসো
-এখন সম্ভব না, তোমাকে বিয়ে করার জন্য দেশে আসলে বাবার বিজনেসে অনেক ক্ষতি হবে আর নিজেদের ক্ষতি নিজে কিভাবে করবো।
-তাহলে কি আমি অন্যের ঘরের বৌ হবো তা তুমি দেখবে?
-কিছু করার নেই সব ভালোবাসা পূর্নতা পায় না
-তোমার একটুও কষ্ট হবে না আমার জন্য? আমাদের সব স্বপ্ন মাটি চাপা দিবে?কয়েক মাসে তোমার এতো পরিবর্তন হলো কিসের জন্য?
-এসব কথা বলে কোনো লাভ নেই, তুমি বিয়েটা করে নেও
-আমি মরে যাবো তাও তুমি ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো না। তোমার মতো আমার ভালোবাসা সস্তা না
-কোনো পাগলামি করবে না। তুমি বড় মেয়ে তোমাকে নিয়ে তোমার বাবা মায়ের অনেক স্বপ্ন আছে। তুমি নিজের ক্ষতি করার সাথে তোমার ফ্যামিলির ও ক্ষতি হবে সেটা কি তুমি সহ্য করতে পারবে? হাজার হাজার মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে পায় না তারপরও তো তারা অন্য কারো সাথে সুখি হয়
-ছিঃ তোমার এসব কথা বলতে মুখে বাজলো না, বিদেশে গিয়ে শুধু টাকা চিনেছো আর ভালোবাসা কবর দিয়ে দিলে
-তুৃমি আমাকে যা ভাবার ভাবতে পারো, ভাবতে তো টেক্স লাগে না।
-আমাকে বিয়ে করবে না এটাই শেষ কথা???
-শুনো তুমি যদি আমাকে সত্যি খুব ভালোবেসে থাকো এবং তোমার ফ্যামিলির ভালো চাও তাহলে বিয়েটা করো এটাই তোামর কাছে আমার লাস্ট রিকোয়েস্ট
-আচ্ছা আমি বিয়ে করবো। তুমি জেনে রাখো কাউকে ঠকিয়ে কোনোদিন সুখী হওয়া যায় না।
-হাহাহা আমাকে নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না। তুমি সুখী হও।
-যত্তসব

ইভা সারা রাত কেঁদে আষাঢ় মাসের বন্যা বানিয়ে। সকালে লামিসা এসে ইভাকে নাস্তা খাইয়ে দিয়েছে।অনেক বুঝিয়েছে যেন বিয়ে করে নেয় আর কোনো পাগলামি না করে।

আয়ান বারন করা সত্ত্বেও ইভা বার বার কল করেছে। চার দিন ইভা ঘর বন্দি হয়ে রয়েছে প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কথা বলে না।
কালকে ইভাকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে বাসায় সেসব নিয়ে তোরজোর চলছে। সারা দিন আয়ানকে কল করেছে কিন্তু ফোন অফ।
তুলি ইভার রুমে প্রবেশ করতে ইভা তুলিকে ছড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো।
-আমার সোনা বোন তুই এমন কান্নাকাটি করিস না, নিজের চেহারার অবস্থা কতো খারাপ করেছিস তা আয়নায় দেখ।
– – – –
-চুপ একটুও কাঁদবি না। যে চলে গেছে তার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করার কোনো মানে হয় না
-আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না৷
-এখন থেকে থাকতে হবে। আল্লাহ যা করে আমাদের ভালোর জন্য করে
-তোরা কেউ আমার কষ্ট বুঝবি না তা জানি
-সবাই বুঝতে পারছে কিন্তু কিছু করার নেই যে।
-হুহহহ্
-ফুপি খুব সুন্দর একটা শাড়ি তোর জন্য কিনে এনেছে কালের জন্য
-আমি একটুও সাজবো না জীনের সব রংঢং একজনের জন্যই ছিলো
-তোর সাজতে হবে না আমি সাজিয়ে দিবো
-তুই এখন যা তো
-রাগ করিস না এখুনি যাচ্ছি, তুই ঘুমা।
-যা
তুলি যাওয়ার পর ইভর রুমে দরজা অফ করে আয়ানের দেওয়া সব স্মৃতি বের করে দেখতে লাগলো। আয়ানের সাথে ইভার হাজারটা পিক আছে।

চলবে,,,,
#Your_Lover
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_২০_শেষপর্ব

ইভা রেড, ব্লু কম্বিনেশন কালারের শাড়ি পরেছে, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, চোখে কাজল, হাতে চুড়ি সব মিলিয়ে খুব সুন্দর লাগছে কিন্তু ওর মুখে কোনো হাসি নেই। তুলি ইভাকে সাজিয়ে দিয়েছে
-ইভা এবার একটু হাসি দে, তোকে এমন মন মরা দেখতে ভালো লাগছে না।
-আমার সব হাসি যে একজন কেড়ে নিয়েছে।
-কেউ কেড়ে নেয় নি তুই নিজে ইচ্ছে করে কেড়ে নিচ্ছিস।
ইভার মা এসে বললো,
-পাএপক্ষ চলে এসেছে, তুলি তুই ওকে নিয়ে আয়।
-হ্যাঁ আসছি কিন্তু ফুপি তুমি কি ছেলেকে দেখেছো? কেমন দেখতে।
-হ্যাঁ খুব সুন্দর তবে ছেলেটাকে কোথাও দেখেছিলাম তা মনে পরছে না।
-ওহ্, আমি গিয়ে দেখি ছেলেটা কে।
তুলি ইভাকে নিয়ে ড্রয়িং রুমে গেলো। ইভা মাথা নিচু করে বসে আছে ছেলেকে দেখার বিন্দু মাএ ইচ্ছে নেই।
একজন ভদ্র মহিলা বললো,
-ইভাকে তো আমার ছেলের বৌ হিসাবে আগে থেকে ঠিক করে রেখেছি।
ইভার মা বললো,
-আপনি ইভাকে আগে থেকে চিনতেন কিভাবে?
মহিলাটি বললো,
-সানভির বোনের বিয়েতে ওকে দেখেছিলাম।
ইভা মহিলার কথা শুনে মাথা উঁচু করে তাকালো। দেখলো আয়ান বসে আসে সাথে ওর বাবা,মা,বোন আরও কারা যেনো আছে। ইভা রাগি লুকে আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে। আয়ান তো মুচকি মুচকি হাসছে।
ইভার রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে এতোদিন ইচ্ছে করে কষ্ট দেওয়ার ফল আয়ানকে ভোগ করতে হবে।

বড়রা বিয়ে নিয়ে কথা বলছে তখন সানভি বললো,
-আপনাদের কোনো আপত্তি না থাকলে ওরা নিজেরা আলাদা গিয়ে কথা বলুক।
আয়ানের বাবা বললো,
-হ্যাঁ ওরা গিয়ে কথা বলুক আর আমরা বড়রা এখানে বিয়ে ডেট ফাইনাল করি।

তুলি, সানভি, লামিসা,আয়ান ইভার রুমে গেলো। ইভা রুমের দরজা লক করে হাতে লাঠি নিয়ে বললো,
-তোদের সব কয়টাকে মেরে হসপিটালে পাঠাবো, আমাকে এতোদিন কষ্ট দেওয়ার ফল সবগুলাকে পেতে হবে।
-বিশ্বাস কর বোন আমার আমি এসবের কিছু জানতাম না যে আয়ানের সাথে তোর বিয়ে হবে। (তুলি)
-হ্যাঁ দোস্ত আমিও কিছু জানতাম না (লামিসা)
-আচ্ছা তোদের দুজনকে ছেড়ে দিলাম কিন্তু এই যে গুনোধর ভাই আর আপনি (আয়ানের দিকে লাঠি দেখিয়ে) এদেরকে তো ছাড়া যাবে না (ইভা)
-আমি তোকে অনেক বার বলতে চেয়েছি কিন্তু আয়ান বলতে দেয় নি(সানভি)
– এই শালা তুই তো আমাকে বললি ইভাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা (আয়ান)
-আমি কি তোকে বলেছিলাম যে ইভাকে বিয়ে করবি না এই কথা বলতে? বলেছিলাম দেশে ফিরে এসে বাসায় বিয়ের প্রপোজাল দিতে (সানভি)
-না মানে আর কি একটু বেশি হয়ে গেছিলো(আয়ান)
-তোরা সবাই রুম থেকে বার হ্ (ইভা)
-না ওরা ও থাক এখনোও তো আমাদের বিয়ে হয় নি একসাথে রুমে থাকলে ব্যাপারটা কেমন যানো দেখায়(আয়ান).
-যেমন খুশি তেমন দেখাবে তোরা বার হ্(ইভা)
-ভাই সামলে, এখনই বাসর সেরে ফেলিস না বলেই সানভি দৌড়ে।

আয়ান খাটের উপর বসা ছিলো ইভা আয়ানের কাছে গিয়ে শার্টের কলাট ধরে বললো,
-তুই আমাকে এতো দিন কষ্ট দিয়েছিস তাই তোকে আমি বিয়ে করবো না।
-আহহা সোনা পাখি এমন করে না, তোমাকে আমি এতোগুলা ভালোবাসি তো।
-তোর ভালোবাসা তোর কাছে রাখ, তুই আমাকে কতো ভালোবাসিস তা দেখা হয়েছে
-মাফ করে দেও। আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম
-আমি কি তোকে বলেছিলাম সারপ্রাইজ দিতে?
-না
-তাহলে এমন কেনো করলি?
-সরি সোনা পাখি মাফ করো এই দেখো কানে ধরছি
-আচ্ছা ১০০বার কান ধরে উঠ বস কর মাফ করে দিবো
-এ্যাঁহ্ ১০০বার!!!! একটু কম হয় না?
-বেশি কথা বললে আরো বাড়বে
-আচ্ছা
আয়ান কান ধরে উঠ বস করা শুরু করলো। ইভা এক, দু, তিন, চার করে গুনতে আছে। ৫০পর্যন্ত করে আয়ান হাঁপিয়ে গেছে।
-বৌ আমার মাফ করো প্লিজ
-আচ্ছা মাফ করলাম আর যদি কোনোদিন দেখেছি ইচ্ছে করে আমাকে কষ্ট দিস তাহলে এর দশগুণ শাস্তি হবে
-আচ্ছা
-বাইরে চল সবাই ওয়েট করছে আমাদের জন্য
-তোমার মুখ তুই ডাকটা আমার কাছে বিষের মতো লাগে তাই তুমি করে বলো
-হুম।
আয়ান ইভাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“আমিও অনেক কষ্ট পেয়েছি, তোমাকে কষ্ট দেওয়ার ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু এসব কিছু হয়েছে রাইয়ানের জন্য।
-রাইয়ান আসলো কিভাবে? আমার সব গুলিয়ে যাচ্ছে।
-আমি বিদেশে যাওয়ার পর থেকে রাইয়ানের নজর আবার তোমার দিকে পরেছে। যে লোকটা তোমার বিয়ের প্রপোজাল নিয়ে এসেছিলো উনি প্রথমে রাইয়ানের কথা বলেছে আর রাইয়ানের বাবার সাথে তোমার বাবার বিজনেসর ডিল হয়েছে।
-তাহলে রাইয়ানের জায়গায় তোমার ফ্যামিলি আসলো কিভাবে?
-আমার আরও ১০দিন পরে দেশে আসার কথা ছিলো কিন্তু এই যে তোমার বিয়ে নিয়ে তোরজোর চলছে তাই আসতে হলো।
-এসবের মধ্যে আমাকে কষ্ট দিলে কেনো? আর আমাকে কিছু জানাও কি কেনো?
-তোমাকে কষ্ট দিয়েছি যাতে তুমি বাসা থেকে বের না হও। বাসা থেকে বের হলে রাইয়ান কখন কি করে বসতো তাই আর তোমাকে না জানানোর কারন হচ্ছে তুমি জানলে তোমার বাবা মায়ের কাছে রাইয়ানের কুকীর্তি বলে দিতে তারপর তোমার বাবা ওদের ওপর ক্ষেপে যেতো নানান ধরনের সমস্যা হতো তাই আমি এতো কিছু করতে বাধ্য হয়েছি।
-কিন্তু তুমি যে বললে আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এসব করেছো তা ওদের বললে কেনো?
-কি দরকার সবাইকে ঝামেলার কথা বলা? এখন ভালো করে এনগেজমেন্ট শেষ হোক এটাই চাই। আর নিলয়কে দিয়ে তোমাদের বাসায় কল করিয়েছি যে আমরা আজকে আসবো, রাইয়ানদের আগামীকাল আসার কথা।
-এখন যদি কালকে ওরা আসে তখন মুশকিল হবে তো।
-ওরা একটু পরই চলে আসবে।
-কেনো?
-ও এতোক্ষণে জেনে গেছে আমি তোমাদের বাসায় এসেছি তাই।
-এসব শুনে আমার ভয় করছে
-উইর লাভার অলওয়েজ প্রোটেক্ট উই
– হুম
– আর এতোকিছুর মধ্য দেখা হলো তুমি আমাকে কতো ভালোবাসো আর হ্যাঁ এই প্রমিজ করলাম আর কোনো দিন তোমাকে কষ্ট দিবো না।
-নেকামি করতে হবে না কষ্ট দিয়ে আসছে ঢং করতে যত্তসব, ছাড়ো আমাকে
-ঢং না ভালোবাসা
-খুব ভালোবাসি তোমাকে আর কখনও আমাকে কিছু না জানিয়ে সব কাজ নিজে একা করবা না। সুখ, দুঃখ ভাগ করে নিবো
-যথা আগ্গা মহারানী
-আমি যে তোমাকে কান ধরে উঠ বস করিয়েছি তার জন্য সরি আর তুমিও তো কম বলদ না তখন বললেই পারতে এসব কেনো হয়েছে
-বললে তো তোমার রাগি চেহারা এতো কাছ থেকে দেখতে পেতাম না
-শুনতে পাচ্ছো এতো জোরে জোরে রাইয়ানরা কথা বলছে
-হ্যাঁ চলো তো গিয়ে দেখি
ইভা, আয়ান ড্রয়িং এসে দেখে রাইয়ান আর ওর বাবা এসে তর্কাতর্কি করছে। রাইয়ান আয়ানকে দেখে বললো,
-তোর জন্য আমার সব প্ল্যান বেহেশতে গেছে।
-হ্যাঁ যাবে তো, আমি ছাড়া ইভাকে কেউ বিয়ে করতে পারবে না।
রাইয়ানের বাবা বললো,
-সাইফুল চৌধুরী আপনি জানেন এই ছেলেটা এক নাম্বারের গুন্ডা ওর সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েন না। আমার ছেলে অনেক ভালো আপনার মেয়েকে অনেক সুখে রাখবে।
ইভার বাবা বললো,
-এসব কি হচ্ছে আমি কিছু বুঝতে পারছি না।

আয়ান ইভার সম্পর্কে কথা ইভার বাসায় কেউ জানতো না তাই তাদের এসব ঘটনা না জানার কথা তাই আয়ান সবার সামনে ইভার সাথে সম্পর্কের কথা ও রাইয়ানের কুকীর্তি সব বলেছে।
সব শুনে ইভার বাবা বললো,
-আপনার সাথে বিজনেস ডিল ক্যান্সেল, স্বার্থের জন্য নিজের মেয়েকে অসুখী দেখতে পারবো না।
রাইয়ানের বাবা,
-আপনি বড় ভুল করছেন কিন্তু
-ভুল না ঠিক তা আপনার থেকে জানার ইচ্ছে নেই আপাতত আপনার ছেলেকে নিয়ে আমার বাসা থেকে বিদায় হন।
-তোদের দেখে নিবো (রাইয়ান)
-আপনারা দেখে যান, বেয়াই মশাই আপনার বিজনেসর ডিল আমার বিজনেসর সাথে হবে। আপনার ব্যবসায় কোনো ক্ষতি হবে না (আয়ানের বাবা)
কথাটা শুনে রাইয়ান আর ওর বাবা রাগে ফসফস করতে করতে চলে গেলো।

এনগেজমেন্টের রিং আয়ান ইভাকে পরিয়ে দিলো এবং ইভা আয়ানকে রিং পরিয়ে দিলো । বিয়ে ডেট ফিক্সড করলো তবে এনগেজমেন্টের দশ দিন পরে।
বিয়ে কেনাকাটা, আত্মীয় সজনের দাওয়াত দেওয়া ইত্যাদি মিলিয়ে সময় দূরুত চলে গেলো।

আজ ইভা- আয়ানের গায়ে হলুদ। ইভা লাল পাড়ের হলুদ শাড়ি পরেছে, হাতে মেহেদী দিয়েছে। আর আয়ান হলুদ পাঞ্জাবি পরেছে। হলুদের অনুষ্ঠানে শেষ করে ইভা রুমে এসে বসলো তখন আয়ান কল করলো,
-তাড়াতাড়ি ছাদে চলে আসো।
-এতোরাতে তুমি কি আমাদের বাসার ছাদে?
-না আমার বাসার ছাদে আসতে বলেছি
-আমি কিভাবে যাবো
-গাধী একটা, আমি তোমাদের বাসার ছাদে আসো।
-হুম

মোটামুটি সবাই ঘুমিয়েছে। ইভা চুপিচুপি ছাদে গেলো।
আয়ান হলুদ পাঞ্জাবি পরে দাড়িয়ে আছে। ইভাও হলুদের ড্রেস চেঞ্জ করে নি।
-এতো রাতে আাসার কি দরকার ছিলো, কালকে তো আমাদের বিয়ে
-তুমি হলদে পরী হয়েছো সেটা কাছ থেকে দেখতে ইচ্ছে হলো তাই চলে এলাম
-পাগল। দেখা হয়েছে এখন যাও
-আসার আগেই যাও যাও শুরু হলো
-দাঁড়াও তো কয়টা পিক তুলি
কতোগুলো পিক তুলে আয়ান চলে গেলো। আর আয়ানকে হেল্প করার জন্য তো সানভি আছে তাই এতো রাতে ইভাদের বাসায় আসতে পেরেছে।
পরের দিন ওদের বিয়ে। ইভা লাল কালারের গাউন পরেছে আর আয়ান লাল শেরোয়ানি পরেছে। দুজনকে এক সাথে অপূর্ব সুন্দর লাগছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে ভালো ভাবে হয়েছে। ইভা বাবার বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে শশুড় বাড়ি চলে গেলো।

বাসর ঘরে ঘোমটা বেশি করে টেনে ইভা বসে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যে আয়ানের আগমন।
-উহুম উহুম,
এতোদিন প্রেম করলেও এখন ইভা লজ্জা লাগছে তাই গুটিসুটি মেরে বসলো। আয়ান ইভার কাছে গিয়ে মাথার ঘোমটা টেনে তুললো।
-একদম আমার মনের মতো সেজেছো৷
-উঠো দাঁড়ও
-কেনো?.
-আগে দাঁড়াও তো
-আচ্ছা
আয়ান উঠে দাড়াতে ইভা আয়ানকে সালাম করে। আয়ান ইভার কপালে চুমু দিয়ে হাতে দুটো স্বর্নের চুড়ি পড়িয়ে দিলো।
-সবাই তো আংটি দেয় আমি চুড়ি দিলাম তুমি খুশি তো?
ইভা আয়ানকে জড়িয়ে ধরে বললো,
-আমি খুব খুশি
-এখন আমাকেও একটু খুশি করো বলেই ইভাকে কোলে তুলে খাটে শুয়ে দিয়ে লাইট অফ করলো।

শুরু হলো আয়ান-ইভার নতুন জীবন।

এখন ওদেরকে একা ছেড়ে দিন। ওদের মতো করে ওরা সুখ খুঁজে নিবে, আপনাদের আর কিছু জানতে হবে না তাহলে বেচারারা লজ্জা পাবে।

★সমাপ্ত ★

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে