#the_unlimited_love❤️
#part_7
#writer_nusrat
অনেক্ষন ধরে রুমে বসে আছি আর ভাবছি কি করা যায়৷ উনাকে তো কিছুতেই জিজ্ঞেস করা যাবেনা সোহানি কেন এসেছিল৷ নাহলে আবার আমায় সন্দেহ করবেন৷এসব ভাবনা ফেলে রেখে রুবার রুমে গেলাম৷
“গিয়ে দেখলাম রুবা টিভি দেখছে৷ টিভিতে তখন নাগিন সিরিয়াল চলছে৷ রুবা আমায় দেখে টিভি অফ করে দিলো”
“ভাবি কিছু বলবে”??
আমি হেলেদুলে রুবার সামনে গিয়ে দাড়ালাম,,তারপর বললাম,,,
“আচ্ছা রুবা একটা সত্যি কথা বলোতো৷ আমি বেশি সুন্দর নাকি ঐ সোহানি”??
“না না ভাবি সোহানি আপুর চাইতে তুমি শত গুন সুন্দর৷ওয়েট তোমায় সোহানি আপুর পিক দেখাইতাসি”
রুবা ফোনে সোহানির পিক বের করে আমার সামনে ধরলো,,,
“এমা এটাতো দেখছি সাদা বান্দরনি৷ না আছে নাকের ডক না আছে মুখের ডক৷ আচ্ছা রুবা তোমার ভাই একে কেমনে পছন্দ করলো”???
“আমিও জানিনা ভাবি৷ ভাইয়া এতো মেয়ে রেখে কেন একেই ভালোবাসলো৷ তাছাড়া এখনতো বাড়িতে একটা সুন্দরী বউও আছে৷ তারপরও কেন এই মেয়ের পেছনে আছে সেটাই বুঝিনা৷”
আমি আর কিছুনা বলে চলে আসলাম নিজের রুমে৷ কিই বা বলবো ওকে৷
“রুমে আসতেই দেখলাম উনি সোফায় বসে আছেন৷”
“একি আপনি কখন এলেন৷ আর ক্লাইন্টে কি বললো”??
উনিও আমতা আমতা করে বললেন,”ওই ডিলের ব্যাপারেই ডিসকাস করতে আসছিলেন৷ আর তুমিই বা এত জিজ্ঞেস করছো কেন”??
উনার এমন মিথ্যা কথা শুনে কিছু বললাম না৷ মুখ ঘুরিয়ে নিলাম৷
ডিনারে বসেছি৷ হঠাৎই বাবাকে বলে উঠলাম,,”বাবা আজ একজন ক্লাইন্ট এসেছিলেন আমাদের বাড়িতে৷ মেইবি আদিলের সাথে দেখা করতে৷”
কথাটা শুনে আদিলের কাশি উঠে গেসে৷ কোনোরকমে পানি খেয়ে কাশিটা বন্ধ করলেন৷
“কী বলছো মামনী৷ ক্লাইন্ট এসেছিলো মানে৷ আজতো কোনো ক্লাইন্ট আসার কথা না৷ আর অফিসে না এসে বাড়িতে আসবে কেনো৷ আর আসলেও আমার সাথে দেখা না করে চলে গেলো কেনো”???
“সেটাতো জানিনা বাবা৷ এসবতো আদিল জানে৷ যেহেতো আদিল উনার সাথে মিট করেছেন”৷
আদিলের দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে৷
“আদিল কোন ক্লাইন্ট এসে ছিলো”???
আদিল কিছু বলছেনা মাথা নিচু করে আছে৷
“একি আদিল আমি তোমায় কিছু জিজ্ঞেস করছি বলছোনা কেন???(হাল্কা ধমক দিয়ে)”
আদিল তবু্ও কিছু বলছেনা দেখে রুবাই বলে উঠলো,, “আসলে বাবা আজ কোনো ক্লাইন্ট আসেনি৷ সোহানি আপু এসেছিলো আজ৷”
সোহানি আপুর কথা শুনে বাবা রেগে গেলেন৷ তারপর বললেন,,,
“তোমাকে একদিন নয়৷ অনেকদিন বলেছিলাম যেন এই সোহানি মেয়ের সাথে কোনো সম্পর্ক না থাকে৷ তবুও কেনো??আর এখন তোমার বিয়ে হয়েছে বউ আছে৷ তাকে রেখে তুমি অন্য মেয়ের সাথে ছি ছি ছি৷”
মাও বললেন,,,,’শুনো আদিল নারীরা সবকিছু সহ্য করতে পারলেও নিজের স্বামীকে অন্য মেয়ের সাথে দেখলে কিছুতেই সহ্য করতে পারেনা৷”
আদিল খাবার রেখেই রেগে উঠে পরলেন৷ তারপর হনহনিয়ে রুমে চলে গেলেন৷
“আমি বেশ ভালো বুঝতে পারছি আজ আমার কপালে শনি,রবি, সোম,মঙ্গল সব আছে৷”
ডিনার করে ধিরে ধিরে রুমে ঢুকলাম৷ ঢুকার সাথে সাথে উনি আমাকে টান মেরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলেন৷ যেন আমারই অপেক্ষায় ছিলেন৷
“তুমি বাবার সামনে এসব বলতে গেলে কেনো হ্যা??(দাতে দাত চেপে)”
“আমি কি জানি নাকি আপনার সোহানি এসেছিলো৷ যদি আগে বলতেন তাহলে তো আমি আর বলতাম নাকি বাবাকে৷”
“আমি আর কিছু শুনতে চাইনা৷ আমার সামন থেকে চলে যাও তুমি৷(চিৎকার করে)”
“আমি কেন যাবো?আপনি আপানার কুকর্মের জন্য বকা খাইসেন এতে আমার দোষ কোথায়৷ সত্যিইতো আপনি আপনার বিয়ে করা বউ রেখে অন্য এক মেয়ের পিছনে ঘুরেন ছিহ”,,,
“ওহ জাস্ট সেটআপ৷ আগেও বলেছি আর এখনও বলছি আমার যা ইচ্ছে হবে তাই করবো৷ আর স্ত্রীর অধিকার একদম আমার সামনে দেখাতে আসবেনা৷ আমি একটা কেনো হাজারটা প্রেম করবো৷” অসহ্য,,,
উনার এসব কথা শুনে আমার চোখ থেকে অটোমেটিক পানি ঝরছে৷কোনো মেয়েরই নিজের স্বামীর মুখে এসব শুনতে ভালো লাগবেনা৷ আমি চোখের পানি মুছে খাটে গিয়ে শুয়ে পরলাম৷
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম উনি রুমে নেই নিশ্চয় গেস্ট রুমে গিয়ে শুয়েছেন৷
আমি আর দেড়ি না করে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম৷ কিচেনে গিয়ে দেখলাম মা কত্তো রকমের রান্না করছেন৷ কিছুই বুঝতে পারলাম না হঠাৎ এতো রান্না হচ্ছে কেনো তাও মা নিজে রান্না করছেন৷ তাই আর কৌতুহল না দমিয়ে বলেই ফেললাম,,,
“এতো রান্না কেন হচ্ছে গো মা৷ কেউ আসছে নাকি”?
“হুম আসছেতো বটেই৷”
“কে আসছে”???
“আসলে দেখে নিস৷ তার আগে ব্রেকফাস্ট করে নে”৷
আমিও বাধ্য মেয়ের মতো ব্রেকফাস্টটা করে নিলাম৷
সোফায় বসে আছি আর টিভি দেখছি
“হ্যালো এভরি ওয়ান”,,,
হঠাৎ খুব পরিচিত কন্ঠ শুনে চমকে উঠলাম আমি৷ তারপর সামনে যাকে দেখলাম তাকে দেখে ৪৪০ ভোল্টের শক খেলাম৷ আমার সামনে স্বয়ং আহিল দাঁড়িয়ে আছে৷প্রায় দুবছর পর দেখলাম৷ তাই ওকে দেখে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি৷ আর আহিলও আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷ হয়তো ভাবতে পারেনি আমি এখানে৷ আর আহিলই বা এখানে কেনো??
আহিল আমায় দেখে দৌড়ে ব্যাগ পত্র সোফায় রেখে এসে জড়িয়ে ধরলো৷ তারপর জিজ্ঞেস করলো,,
“একি রাহি তুই এখানে??হুয়াট এ সারপ্রাইজ”!!
আমিও আহিলকে ছাড়িয়ে বললাম,,
“সেম প্রশ্ন আমারও৷ তুই এখানে কি করছিস???আর এটাতো আমার শশুড় বাড়ি”৷
“এটা তোর শশুড় বাড়ি লাইক সিরিয়াসলি৷ আমি তো তোকে বিয়ে করিনি তাহলে এটা তোর শশুড় বাড়ি হলো কেমনে”???
“তোর ফাজলামি এখনো গেলোনা৷ তাছাড়াও আমি আদিলের বউ তুই বিয়ে করতে যাবি কেন??আচ্ছা এখন বল তুই এখানে কেন আর কেমনে কী”???
“আরে বাবা এটা আমার নিজের বাড়ি৷ আর মিস্টার আদিল খান যদি আপনার বর হয় তো আমি আপনার একমাত্র দেবরজী৷ বুঝলেন ভাবি৷”
“কিহ!!! তুই আদিলের ভাই৷ আমিতো জানতামই না৷ শুধু জানতাম উনার এক ভাই আছে তাও দেশের বাইরে থাকে৷৷ ”
“জী,,এখনতো বুঝলেন ভাবি৷”
“এই তুই এতোক্ষন ধরে আমায় ভাবি ভাবি আর আপনি আপনি করছিস কেনো”???৷
“এমা ভাবিকে কেউ নাম ধরে আর তুইতোকারি করে বলে নাকি৷ পাপ হয় পাপ”৷
“আচ্ছা তাই,,কথাটা বলে কয়েকটা কিল ঘুষি বসিয়ে দিলাম আহিলের পিঠে৷ আর আহিল খিলখিল করে হাসছে৷”
মাকে দারিয়ে তাকতে দেখে আহিলকে ছেড়ে দিলাম৷ মা এগিয়ে এসে বললেন,,,
“একি তোরা এমন মারামারি করছিলি কেনো৷ আর আহিল তুমিই বা কখন এলে৷আর দেখে মনে হচ্ছে অনেক আগের পরিচয় তোদের৷”
আহিল গলা ঝেরে বললো,,
” হ্যা মা আমি এখনি এসেছি৷ রাতের ফ্লাইট ছিলো তাই তারাতাড়ি চলে আসলাম৷আর হ্যা আমরা অনেক আগে থেকেই পরিচিত৷এক সাথে একই স্কুলে পরতাম,কলেজে পরতাম৷ বেষ্ট ফ্রেন্ড ছিলাম দুজন”
মাও খুশি হয়ে বললেন,,,
“যাক এটলাস্ট আমার রুহির একজন ফ্রেন্ড আসলো যার সাথে রুহি এখন মন খুলে কথা শেয়ার করতে পারবে৷ আহিল তুই এখন ফ্রেশ হয়ে নে৷আর রুহি মা আদিলকে গিয়ে বলতো ব্রেকফাস্ট করতে৷ আহিলের সাথে ব্রেকফাস্ট করবে বলে এখনো খায়নি৷ ”
“হ্যা মা ভাইয়া আর রুবাকে দেখছিনা তো??”
“ওরা উপরেই আছে৷ হয়তো এখনও জানেনি তুই এসে পরেছিস”
মায়ের কথা শুনে সিড়ির দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি রাগী দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন আর নিচে নামছেন৷
“এই লোকটা একটা দিনও আমার দিকে সুন্দর ভাবে তাকায় নাই,,হুহ!!!!
চলবে,,,,,
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)