#the_unlimited_love❤️
#part_5
#writer_nusrat
রেডি হয়ে নিচে গেলাম আমি৷গিয়ে দেখলাম আমার বর আদিল খান রেডি হয়ে আসাম করে বসে আছেন সোফায়৷ রুবাকে অনেকবার বলেছিলাম আমার সঙ্গে যাওয়ার জন্য৷ তার এক্সাম সামনে তাই যাবেনা৷ অতঃপর মা বাবা আর রুবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম আমার নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে৷
যতই সামনে এগোচ্ছি ততই বেরে চলছে আমার মনের ভয়৷ একটা কথাই মাথায় বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে উনি সবার সামনে আমার সাথে কেমন ব্যবহার করবেন৷ অবশেষে চলে আসলাম নিজের বাড়িতে৷বিয়ের প্রথম প্রথম মেয়েরা নিজের বাপের বাড়িতে আসলে কতই না খুশি থাকে৷ অথচ আমার যেন কোনো অনুভুতিই নেই৷
সবার সাথে কোশলবিনিময় করে রুমে চলে আসলাম৷ কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িংরুমে গেলাম৷গিয়ে যা দেখলাম তাতে আমি অবাক না হয়ে পারলাম না,,আদিল আমার ভয়কে মিথ্যা প্রমাণিত করে সবার সাথে বসে হেসে হেসে গল্প করছেন”
আমাকে দেখেই একটা হাসি দিয়ে বললেন,” আরে আরুহি যে কোথায় ছিলে তুমি৷ আমরা সবাই তুমাকে কত মিস করছিলাম৷তারপর আমার আব্বুর দিকে তাকিয়ে বললেন,,তাই না আব্বু”
আব্বুও হেসে মাথা নাড়ালেন৷তারপর বললেন,,”হ্যা আরুহি আমরা তোমাকে মিস করছিলাম ভিষন৷”
আমি বিশ্বাস করতেই পারছিনা উনি আমার সাথে এমন ব্যবহার করছেন,হেসে হেসে কথা বলছেন৷ উনি আমায় মিস করছিলেন৷ জানি এটা মিথ্যা বলেছেন তারপরও আম্মু আব্বুর সামনে যে নরমাল ব্যবহার করছেন সেটাই অনেক৷
আমাকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে উনি আবারো বলে উঠলেন,, “একি আরুহি তুমি এখনো দাড়িয়ে আছো কেনো আসো এখানে”৷
আমিও গিয়ে উনার পাশে বসে পরলাম৷ উনি একবার আমার দিকে আড়চোখে তাকালেন৷
ডিনারে বসেছি আর উনাকে দেখছি,,উনি খাবার বেরে আমার পাতে দিচ্ছেন৷ আমিতো এসব দেখে রীতিমতো আটলান্টিক মহাসাগরে ভাসছি৷ কেউ এসে আমাকে বাচাও নাহলে যে আমি ভাসতে ভাসতে হারিয়ে যাবো৷ উনি আমার এতো কেয়ার করছেন বাহ বাহ৷
আব্বু আম্মুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনারা মিটিমিটি হাসছেন৷
ডিনার শেষে সোফায় বসে আছি আমি৷ আদিল অনেক আগেই ডিনার করে চলে গেছেন৷ আম্মু আমার কাছে এসে বললেন,,”শুনরে মা ছেলেটা সত্যিই তোকে ভালোবাসে৷ তুইও ওকে ভালোবেসে আগলে রাখিস৷ কথাটা বলে আম্মু চলে গেলেন”৷
উনি আমাকে ভালোবাসেন,কচু বাসেন৷ আম্মু তুমিতো জানোনা ওই বজ্জাত লোকটা তুমার কিউট ইনোসেন্ট মেয়ের উপর কতো অত্যাচার করে৷ যদি জানতে তাহলে এসব বলতে না৷
রুমে ঢুকতেই দেখলাম উনি পা ঝুলিয়ে খাটে বসে আছেন৷ আমিও কোমড়ে দুইহাত গুজে হেলেদুলে উনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম৷উনি আমাকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বললেন,,”কি সমস্যা”৷
“সমস্যাতো আপনি৷ আমি জানি আপনি আমার আব্বু আম্মুর সামনে আমার সাথে যে নরমালি বিহেভ করেছেন সব একটা অভিনয় ছিলো৷ তাই এখন সোজা সাপ্টা বলে ফেলুন কেন এমন করেছেন৷ আমিতো জাস্ট ভাবতেই পারছিনা৷”
“হ্যা তুমি যা ভেবেছো সেটা একদম ঠিক৷ তুমি কি ভেবেছিলে আমি সবার সামনে সিন ক্রিয়েট করবো৷ উহু একদম না৷ নতুন বিয়ে হয়েছে আমাদের৷ তাছাড়াও তুমি আর আমিতো জানি আমাদের মধ্যে কীরকম সম্পর্ক৷ তাই মানুষের সামনে একটু স্বাভাবিক ব্যবহার করলে কিচ্ছু হবেনা৷ বায় দ্যা ওয়ে,,,তোমার মা বাবা কিন্তু অনেক ভালো একটু উনাদের মতো হওয়ার চেষ্টা করো প্লিজ”৷
“তারমানে আপনি বুঝাতে চাইসেন আমি ভালো নই তাইনা৷ আপনার সোহানি বুঝি খুব ভালো”৷
“এই তুমি কথায় কথায় আমার সোহানিকে টেনে আনো কেনো হ্যা৷ আর আমিই বা কখন বললাম যে তুমি ভালো না৷ বলেছি উনাদের মতো হওয়ার চেষ্টা করতে”৷
“কি বললেন আপনি,,আপনার সোহানি৷ আবার বইলা দেখেন মাথা ফাটিয়ে ফেলবো আপনার৷ এখন শুধু মাত্র আমিই আপনার আর কেউনা৷ আর ভুলেও ওই ফকিন্নির নাম আমার সামনে উচ্চারন করবেননা”৷
“তুমি সোহানিকে ফকিন্নি বলছো তুমি জানো ও কতটা স্মার্ট৷ আর কি বলেছিলে আমার মাথা ফাটিয়ে দেবে৷ এসব যদি সোহানি শুনে না তাহলে ও তোমার মাথা ফাটিয়ে দেবে৷ বুঝবে তখন৷ হুহ!”!!!
আমি দুইহাত বাজ করে বললাম,,,”ওহ তাই নাকি৷ আপনার সোহানির হাত আছে আর আমার নাই বুঝি৷ ও আমার মাথা ফাটিয়ে চলে যাবে আর আমি বসে বসে দেখবো নাকি৷ ও আমার মাথা ফাটানোর জন্য আসলে আমিই আগে ওর মাথা ফাটিয়ে দিবো তারপর আপনার”৷
“আমার এই কথা শুনে ভ্রু কুচকে তাকালেন উনি”৷
“চিন্তা করবেননা হসপিটালেও এডমিট করিয়ে দেবো ৷এক কেবিনেই রাখবো দুজনকে৷ তারপর দুজনে মাথা ফাটা নিয়েই চুটিয়ে প্রেম করবেন না হয়৷ আর সাহস থাকলে ওই ফকিন্নিকে আমার সাথে দেখা করাইয়েন”৷
“এই তোমাকে না বললাম ওকে একদম ফকিন্নি বলবা না৷”
“বলবো একশো বার বলবো হাজার বার বলবো৷ এত দরদ কেন ওর জন্য৷ এখন আপনি আমার খাট থেকে উঠে পরেন আমি ঘুমাবো”
উনিও উঠে পরলেন৷ তারপর গাল ফুলিয়ে কী যেনো খুজতে লাগলেন৷
“আমার রুমে সোফা নেই৷ কেউ চাইলে এসে আমার পাশে ঘুমাতে পারে৷ আমি কিছু মনে করবোনা৷”
আরে তারপরও উনি আসছেন না কেনো৷ তাকিয়ে দেখলাম ফ্লোরে বসে আছেন৷ আর আমার দিকে গাল ফুলিয়ে তাকিয়ে আছেন৷
“আরে বাবা বললামতো খাটে আসতে৷ নাকি আমার সাথে ঘুমালে আপনার এলার্জি হয়ে যাবে৷ আসেন খাটে৷ তারপর আমার পাশ থেকে একটা কোল বালিশ এনে মাঝখানে রাখলাম৷নেন বাংলাদেশ আর ইন্ডিয়ার বর্ডার দিয়ে দিলাম৷ এখন ঘুমিয়ে আমাকে উদ্ধার করুন৷ ”
উনি আস্তে আস্তে খাটে এসে শুলেন৷কম্বল একটাই ছিল যার জন্যে এক কম্বলের ভিতরেই দুজনকে শুতে হয়েছে৷
“একি কী সমস্যা আপনার,এভাবে কম্বল টানছেন কেনো”৷
“তুমি আমায় কম্বল দাওনা কেনো আমার ঠান্ডা লাগছিলো তাই টান দিসি৷”
“আপনিতো বারি মিথ্যাবাদি এতো কম্বল নিজের কাছে রেখেও আমার কাছ থেকে টানছেন কেনো৷” 😡😡
চলবে,,,,,,,,,