#the_unlimited_love❤️
#part_4
#writer_nusrat
ধপাসসস,,,,আর কি পরে গেলাম নিচে৷ ঘুমের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি৷ ভালো করে চোখ ডলে তাকিয়ে দেখলাম সোফার পাশে পরে আছি৷”আশ্চর্য আমি পরলাম কি করে আর এখানেই বা কিভাবে এলাম৷ আমিতো কাল খাটে শুয়েছিলাম৷ খাটের কথা মাথায় আসতেই তারাতাড়ি খাটের দিকে তাকালাম৷ একি আমার বজ্জাত বরটা তো খাটে শুয়ে আছেন৷ কালতো উনি সোফায় ঘুমিয়েছিলেন আর এখন খাটে আসলেন কি করে৷ হুম বুঝতে পেরেছি কাল উনি তারমানে ঘুমাননি৷অভিনয় করেছিলেন৷ অপেক্ষায় ছিলেন আমি কখন ঘুমাবো আর আমায় সোফায় নিয়ে রাখবেন৷ কোনোরকমে উঠে দাঁড়ালাম৷ আচমকা পরাতে কোমরে খানিকটা ব্যাথাও পেয়েছি৷
খাটের এক কোনায় বসে আছি আর ভাবছি কি করে উনাকে শাস্তি দেওয়া যায়৷”
“এখনতো শীতকাল৷ তাই সবাই ঠান্ডা পানিকে অনেক ভয় পায় আর তাই এখন আমি আপনাকে ঠান্ডা পানি দিয়েই ঘুম ভাঙাবো৷ যদিও ইচ্ছে করছেনা আপনার এত সুন্দর ঘুমটা ভাঙানোর৷কিন্তু আমি যে নিরুপায়৷ আপনিতো আমাকে সোফায় রেখে দিয়েছিলেন আর তাই সোফা থেকে পরে গিয়ে আমি অনেক বড় ব্যাথা পাইছি৷ আপনি অনেক বড় অন্যায় করছেন আমার সাথে তাই এর জন্যে আপনাকে পানিশমেন্টও পেতে হবে৷ তারপর আস্তে আস্তে খাট থেকে উঠে গিয়ে এক মগ পানি নিয়ে আসলাম৷ অতঃপর উনার পাশে বসে উনার মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,”মিস্টার আদিল খান যদি আপনি ভেবে থাকেন আমি অন্যসব মেয়েদের মতো নরম তাহলে আমি বলবো আপনি ভুল ভাবছেন৷ আমি অতটাও ভালো নই৷ প্রথম দিন যা নয় তাই বলেছেন আপনি,আমি কিচ্ছু বলিনি শুধু মাত্র ভদ্রতার খাতিরে৷ কিন্তু এখন যে বলবো না সেটা নয়৷ তারপর উনার থেকে একটু দুরে গিয়ে ঢেলে দিলাম উনার মুখে পানি৷ উনি সাথে সাথে লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠে পরলেন৷ তারপর নিজেই ভালো করে কোনো দিকে না তাকিয়ে বলতে লাগলেন,,,
“একি ছাদ ফোটো হলো কি করে৷ আর এই শীতকালেও বৃষ্টি হচ্ছে তাইতো বৃষ্টির পানি এসে আমার মুখে পরেছে৷বাবাকে এখুনি বলতে হবে৷ ”
উনার এই ধরনের আবুল মার্কা কথা শুনে আর হাসি থামাতে পারলাম না হেহে করে হেসে দিলাম৷
উনি তীক্ষ্ণদৃষ্টি নিক্ষেপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন৷ খুব ভালো করেই বুঝতে পারছেন আমিই উনার উপরে পানি ঢেলেছি৷
উনি এবার উঠে এসে আমার সামনে দাড়ালেন৷ তারপর রাগী গলায় বললেন,,”এই মেয়ে সমস্যা কি তোমার হ্যা৷ কি শুরু করেছো তুমি৷ জানোনা এখন শীতকাল৷ তবুও কোন সাহসে আমার উপরে ঠান্ডা পানি ফেলসো৷”
আমিও পাল্টা রাগ দেখিয়ে বললাম,,”আমি কিছু শুরু করিনি৷ শুরুতো আপনি করেছেন৷ কোন সাহসে আপনি আমাকে খাট থেকে তুলে নিয়ে সোফায় রেখেছেন৷ জানেন কতো বড় ব্যাথা পেয়েছি আমি৷ কালতো হাত থেকেও ছেড়ে ফেলে দিয়েছিলেন৷ তারমধ্যে আবার সকাল সকাল একই জায়গায় ব্যাথা পাইসি৷ বিয়ের দুইদিনে দুইবার ব্যাথা পাইসি৷কষ্ট আমার ব্যাথার জন্যে হচ্ছেনা৷ আপনার জন্যে আমার কতো সুন্দর একটা স্বপ্ন ভেংগে গেছে আপনি যানেন৷ স্বপ্নেতে দেখসিলাম আমি আপনার চুল ধরে টানছি আর আপনি আমার কাছে ক্ষমা চাইসিলেন৷ আর সেই জন্যে কষ্ট হইতাসে আমার৷ আপনার জন্য আমার এত সুন্দর স্বপ্ন ভাঙবে আর আমি মেনে নিবো,উহু একদম না৷তাই আমিও আপনাকে ঘুম থেকে তুলে ফেলসি”,,,কথাগুলো বলে উনার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি বাকা হেসে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন৷ উনার এরকম এগুনো দেখে আমি ভয়ে একটা ঢুক গিললাম৷ যত সাহস দেখিয়েছিলাম সব সাহস উনার বাকা হাসি আর এগুনো দেখে জানালা দিয়ে পালিয়ে গেছে৷
আমি যতই পিছিয়ে যাচ্ছি উনি ততই এগিয়ে আসছেন আমার দিকে৷ তারপর আচমকাই আমাকে কোলে তুলে নিলেন৷ আমিতো অবাকের উপর অবাক হচ্ছি৷ উনি আমাকে কোলে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে ঠাসস করে বাথটবে ছেড়ে দিলেন৷ আমি এবার উনার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম৷ এমনিতেই অনেক ঠান্ডা লাগছিলো তারমধ্যে আবার বাথটবে ছেড়ে দিলেন৷ আমিতো সামান্য পানিই ঢেলেছিলাম উনার মুখে৷ আর উনি নাকি আমায় আস্ত পানি ভর্তি বাথটবেই ছেড়ে দিলেন৷
আমায় চুপ থাকতে দেখে উনি ফিসফিস করে বললেন,,”রিভেঞ্জ ইজ রিভেঞ্জ”
বলে চলে যেতে নিতেই আমিও উনাকে টান মেরে বাথটবে ফেলে দিলাম৷তারপর উনার দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম,,”ঠিকই বলেছেন রিভেঞ্জ ইজ রিভেঞ্জ৷”
বাথটব ছেড়ে তারাতাড়ি উঠে পরলেন উনি৷ তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,,”ইউ আর যাস্ট টু মাচ,ইডিয়েট৷ “কথাটা বলে টি-শার্টটা খুলে বাথরুমে রেখেই উনি হনহনিয়ে চলে গেলেন৷
আমার ভিষন ঠান্ডা লাগছে তাই আমিও আর লেইট না করে উঠে পরলাম৷ এখন কাপড় পরা নিয়ে হলো সমস্যা৷আমি কাপড় পাবো কই এখন৷
আস্তে আস্তে দরজার কাছে গিয়ে আদুরে গলায় ডাক
দিলাম উনাকে,,” এই যে শুনছেন আমার কাপড়টা দিননা প্লিজ৷ ”
উনি শুনেও না শুনার ভান করে বসে আছেন৷ আমি আবার ডাক দিলাম উনাকে৷ উনি বললেন,,আগে স্যরি বলো তারপর ভেবে দেখবো কাপড় দেওয়া যায় কি না৷
আমি আর কি করবো মনেমনে ব্যাটাকে এক বস্তা গালি দিয়ে স্যরি বললাম৷
একটু পর উনি এসে দরজা হাল্কা ফাক করে কাপড়টা দিয়ে দিলেন৷ আমিতো শুধু ভাবছি উনি এতো ভালো হলেন কি করে হয়তো বুঝতে পেরেছেন আমার খুব ঠান্ডা লাগছে তাই বোধহয় আর কথা না বারিয়ে কাপড়টা দিয়ে দিয়েছেন৷
অনেক্ষন যাবত রুম জুড়ে পায়ছারি করছি আর একটা কথা ভেবে চলেছি ,,”আচ্ছা আজতো আমাদের বাড়িতে যেতে হবে উনাকে আর আমাকে৷ সেখানে গেলে উনি আমার সাথে কিরকম ব্যবহার করবেন আর আমার পরিবারের মানুষের সাথেই বা কেমন ব্যবহার করবেন৷ উনি যে আমায় মানেননি সেটাতো একমাত্র আমি আর আদিল জানি৷ সেখানে গিয়ে যদি উনি সবার সামনে বলে ফেলেন যে উনি আমায় মানেননি৷ তখন কি করবো আমি৷ আর পাড়াপ্রতিবেশিরা যদি জানতে পারে তাহলেতো আমি একদিনেই সেলেব্রেটি হয়ে যাবো৷”,,,,,,,,,,
আমার এমন ভাবনা কাটলো বাথরুমের দরজা খোলার আওয়াজে৷ তাকিয়ে দেখলাম উনি শুধু মাত্র একটা তোয়ালে পরে বেরিয়ে এসেছেন৷ আমি এখনো উনার দিকে তাকিয়ে আছি৷ আমাকে উনার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন”নির্লজ্জ একটা”৷
আমিও একটা ভেংচি কেটে বললাম,”আমি আমার বরের দিকে তাকিয়েছি আপনার কি৷ আপনি যদি তোয়ালে পরে আমার আমার সামনে আসতে পারেন,তাহলে আমি কেনো তাকাতে পারবো না৷ আপনি পরলে দোষ না আর আমি তাকালেই দোষ ওয়েট ওয়েট আপনি কি ভেবেছিলেন আমি ওই সিরিয়াল নায়িকাদের মতো চোখে হাত দিয়ে বলবো,, একি আপনি এগুলো কি পরেছেন তারাতাড়ি চেঞ্জ করে আসুন৷ তাহলে আমি বলবো যে আপনি ভুল ভাবছেন আমি ওই ধরনের মেয়েদের কাতারে একদম পরিনা,”
উনিও কপাল কুচকে বললেন,,”তুমি ওদের কাতারে পরতে যাবে কেনো তুমিতো ওদের থেকেও নির্লজ্জ৷ আর তুমি এত কথাই বা বলো কিভাবে৷ কিছু বলছিনা দেখে ভেবে নিয়োনা যে আমি তোমায় মেনে নিয়েছি৷ নতুন বিয়ে হয়েছে মানুষ কি বলবে সেটা ভেবেই আমি তোমাকে সহ্য করে নিচ্ছি৷ আর একদম আমার সামনে স্ত্রীর অধিকার দেখাতে আসবে না৷ গট ইট,,,,
“আমি স্ত্রীর অধিকার দেখাবো না তো ওই সোহানি দেখাবে নাকি৷ আমি একবার কেন হাজার বার স্ত্রীর অধিকার দেখাবো৷বিয়ে করে এনেছেন আপনি আমায়৷ আমিতো আপনাকে বলিনি যে আপনি আমায় বিয়ে করুন তাহলে আমি কেন এসব টলারেট করতে যাবো আজব”
চলবে,,,,,,,
(রিচেক করিনি৷ ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)