সতীনের_সংসার পর্ব_৫

0
4212

#সতীনের_সংসার
Writer: তানজিন সুইটি
#পর্ব_৫

আনিকা চুপ হয়ে চলে গেলো বাসাতে।সারা রাত চিন্তা করলো শেষমেশ সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলে কি বলবে তাকে?

রাতের তারা আজ তার কাছে অনেকটা সুন্দর লাগছে সেই ভেবে বেলকনিতে একটু কাটাবে বলে বিছানা থেকে নেমে পা বাড়ালো এরই মধ্যে দরজায় নক পরলো। তার আর যাওয়া হলো না ঐ পথে। পা টা ঘুরিয়ে দরজার কাছে গেলো খোলার জন্য।দরজা খুলে অবাক হলো আনিকা।দরজার ওপারে দাড়িয়ে আছে
তার এক মাত্র দুলাভাই।মুচকি হেসে…

-ঘুমিয়ে গিয়েছিলো নাকি আমার শালিকা?

-আরে নাহ।তো এতো রাতে কি মনে করে এই অদম শালিকার রুমে?

-কেনো আসতে নেই বুঝি?কোনো সমস্যা তোমার, আমি আসাতে?

-ধ্যাত ভাইয়া কি যে বলেন না?বোনের রুমে ভাই আসবে তার আবার সমস্যা।আমার কোনো ভাই নেই,সেটা কিন্তু জানেন?যখন আপুর সাথে আপনার বিয়ে হয়েছে তখন থেকেই ভেবে নিয়েছি,আপনাকে দুলাভাই নয়,ভাইয়া বলে ডাকবো।যাতে আমার ভাইয়ের অপূর্ণতা দূর হয়ে যায়।?
এখন আসেন তো ভিতরে এতো কথা রেখে…
কথা শেষ করার আগেই পিছনে আনিয়া।

-আমি একা নয় শালিকা বেগম।তোমার বোনও সঙ্গে আছে।?দেখেছো আনিয়া তোমার বোনের মতো শালি পেয়ে অনেকটা ভাগ্যবান।আমারও বোন নেই।আর তোমার বোনেরও ভাইয়ের আশা পূর্ণ হলো।সত্যিই আনিয়া তোমাদের পেয়ে আমি ধন্য।

-হয়েছে আপনার পাম দেওয়া।কি ব্যপার দুজন এক সাথে সেটা আগে বলেন?

-কোনো ব্যপার সেপার না বোন?একটু ইচ্ছা হলো তাই তোর দুলাভাইকে বলাম আর কি?

-ডাল মে কুস তো কালা হে।তোমার মতলব তো বলছে অন্য কিছু আজ, দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

-হয়ছে হয়ছে তোর সাথে কথায় পারবো না রে।রুমে প্রবেশ করতে করতে।

দুজন এক সাথে খাটে বসলো আর আনিকাকে সামনে বসালো।

-আনিকা আজ কয়েক বছর ধরে তোকে একটা কথা বলেই যাচ্ছি আমি আর তোর দুলাভাই মিলে। বিশেষ করে দুলাভাই বলেছে বার বার তোকে।সেটা কি একবারও চিন্তা করে দেখেছিস বল না?

আনিকা কি বলবে বুঝতে পারছে না?তাই চুপ করে রয়েছে।

-দেখো আনিকা তুমি অনেক বড় হয়ে গিয়েছো।তার উপরে আমি তোমার ভাই এখন।বুঝার চেষ্টা করো।
বোন বড় হলে ভাইয়ের চিন্তা অনেক হয় সব সময়ে।
তাই বলছি কি….?

আনিকা অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে।শহরে যখন আসে তখন থেকে তার বোন ও দুলাভাই অনুরোধ করে বিয়ে করে নিতে।পাত্রর অভাব নেই যেনো আনিকার জন্য।কারণ, আনিকা HSC পড়া কালিনই অনেকের কাছে বলেছিলো তার একটা শালি আছে। দেখতে মাশাল্লাহ। কোনো কিছুর কমতি নেই তার মাঝে।তার উপরে অনেকে তো আনিকার ছবি দেখে পছন্দ করেই ফেলছে।তাই আনিকার দুলাভাই বার বার বলছে। যদি পড়াশোনা না করো তাহলে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করে দাও বোন।

আসলে আনিকার বাবা মা বেঁচে থাকলে হয় তো এমনই চিন্তা করতো। তাই তো বার বার একই কথা বলে যায় আনিকার কাছে।কিন্তু ফলস্রুতিতে সে বলে, তার এখন জীবন গড়ার সময় তাই এখন বিয়ে ঠিয়ে করতে পারবে না,ছাফ না করে দিয়েছে।

এখন তারা যেভাবে চেপে ধরেছে।আনিকার তো পালিয়ে যাওয়ার পথও খুঁজে পাচ্ছে না।তাই অনেক খন চুপ করে থেকে।তার দুলাভাইয়ের এক হাত আর বোনের এক হাত ধরে বললো..

-আমাকে কিছু দিনের সময় দিবে তোমরা চিন্তা ভাবনার
জন্য।

এমন কথায় আনিয়া আর মিরাজ খুশি হয় আর তার মাথায় হাত রেখে বলে ঠিক আছে।পরে তারা নিজ রুমে চলে যায়।

আনিকার চিন্তা তিনগুণ বেড়ে যায়।আগামীকাল কি করবে সে?এক দিকে রাজ অন্য দিকে তার পরিবার।
কিছুই ভেবে পাচ্ছে না।রাজের কথা কি বলে দিবে আনিকার তাদের কাছে। নাকি ভুল হবে তাদের মনে কষ্ট দেওয়া। না না যদি হিতে বিপরীত হয় ।

কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রায় ১টা।মনটা যে তার আজ অন্য রকম লাগছে।
ভিতরে ভয় ভয় কাজও করছে। তাহলে কি কোনো..

নাহ যা হবার কাল হবে, এমন কথা মনে মনে বলে ঘুমের রাজ্যে পারি দিলো।

আনিকা ভাবছে হয় তো তার জীবনে সুন্দর কিছু অপেক্ষা করছে ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে।কিন্তু…

পরের দিন ভোরে কল আসলো।তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।

-হ্যালো আনিকা?(অচেনা কণ্ঠ)

-জি(ঘুম ঘুম কণ্ঠে)

-একটু তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসবে……?

হাসপাতাল?এমন কথা শোনার পর………

চলবে….

(ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ সবাইকে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে