seeing with you part-23+24

0
1708

#seeing_with_you
Episode – 23 #সে_কি_মানবে
Writer – Zaira Insaan

অফিসের মিটিং শেষ করেই মোমোর ভার্সিটি পৌঁছে যায় সে। ছুটি হওয়ার অপেক্ষায় আছে আবার। মুরাক কে আবার দেখে মেয়েটি খুশি হয়ে নাচতে নাচতে চলে আসে তার সামনে মুরাক আড়চোখে তাকায় মেয়েটি বলে,, আপনি আসছেন, মোমো আজকে ভার্সিটি আসছে আমি দেখছি।’ মুরাক কিছু বলে না সেও জানে মোমো ভার্সিটি আসছে তো আবার নতুন করে জানার কি আছে পাশে মেয়েটি অপরিচিত লোক মুরাকের সাথে বকবক করতে লাগল মুরাক এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে বলে,, তুমি ক্লাস করো না? মেয়েটি চুপ হয়ে যায় কারণ মেয়েটি ক্লাস করেই না শুধু এদিক সেদিক টো টো করতে থাকে মুরাক উত্তরের অপেক্ষা না করে সরে দাঁড়ায় নাহলে মোমো দেখলে ভুল বুঝবে আবার মেয়েটি প্রশ্ন করে,, আচ্ছা মোমো আপনার কি লাগে যে এখানে এসে অপেক্ষা করেন? মুরাক তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয় মেয়েটি আবার বলে,, বোন লাগে ও আপনার? ভেবাচেকা খেয়ে যায় মুরাক গার্লফ্রেন্ড কে ডায়রেক্ট বোন বানিয়ে দিছে এ মেয়েটি। মুরাক রেগে বলে,, তোমার এতো কি, গিয়ে ক্লাস করো!’ মেয়েটি হেসে বলল,, ক্লাসের টাইম শেষ আর আমি জেনে নিব কি সম্পর্ক।” বলে মেয়েটি চলে যায় মুরাক সামনে তাকায় ক্লাস থেকে অনেক ছেলে মেয়ে হেসে গল্প করে করে বের হচ্ছে সে মাথা এদিক ওদিক করে মোমো কে খুঁজতে লাগল পেয়েও যায় মোমো ব্যাগ কাঁধে নিয়ে এক মেয়ের সাথে কথা‌ বলে বলে হাঁটছে গেটের সামনে এসে মুখ কুঁচকে ফেলে মোমো, মোমো মুরাক দুজনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে পাশে সানজিদা তাদের দেখে মোমো কে বলে,, তাহলে আমি যাচ্ছি কাল দেখা হবে বাইই!” চলে যেতে নিলে মোমো তার হাত ধরে বলে,, ওই কোথায় যাচ্ছিস আজকে তুই আর আমি একসাথে যাবো” এহেন কথায় ব্রু কুঁচকে ফেলে মুরাক পাশে সানজিদা মুরাক কে দেখিয়ে বলে,, ওনি কে? মোমো তার দিকেই তাকিয়ে বলে,, জানি না কে।’ কুঁচকানো ব্রু আরো কুঁচকে ফেলে মুরাক সানজিদা বলে,, তো কেন আসছে এখানে আর তোর দিকে তাকিয়ে আছে কেন? মোমো বলে,, মনে হয় বন জঙ্গল থেকে উঠে আসছে আর সুন্দরী মেয়ে দেখেই তাকিয়ে আছে যত্তসব আরে চলনা যায় এখান থেকে।” সানজিদা কে ধাক্কিয়ে বলে সে মুরাক তার হাত ধরে নেয় সানজিদা ও মোমো দুজনেই তাকায় সে বলে,, তোমার সাথে কথা আছে।” মোমো রেগে হাত ছাড়ানো চেষ্টা করতে করতে বলে,, কোন কথা নেই ছাড়ুন আমার হাত কি করছেন’। মুরাক সানজিদা কে ইশারায় যেতে বলে সানজিদা যেতে নিলে মোমো তার হাত ধরে বলে,, কোথায় যাচ্ছিস তুই বললাম না একসাথে যাব।” সানজিদা বলে,, ওনি যেতে দিলেই তো যেতে পারবি আমাকে ছাড় আমি বাসায় যাব নাহলে আম্মু বকবে।” মোমো রেগে বলে,, তুই গেলে আমি তোকে মারব দাঁড়া।” মুরাক রেগে সানজিদা কে ইশারায় যেতে বলে সানজিদা হাত ছাড়িয়ে বলে,, ভাই আমায় যেতে দে পড়ে কথা হবে বাই!’ বলে সে দৌড়ে চলে যায় মোমো রেগে তাকায় বলে,, কি করছেন হাত ছাড়ুন এটা আপনার ঘর না যা ইচ্ছা তাই করবেন।” মুরাক নিজেকে শান্ত রেখে বলে,, মো প্লিজ আমার কথা শোনো তোমাকে যা বলা হয়েছে সব মিথ্যা বলা হয়েছে তুমি…। মোমো তাচ্ছিল্য ভাবে বলে,, ওহহ এখন চোরের মুখ থেকে সত্য শুনতে হবে ওয়াও আপনার মত ঘাটিয়া মানুষ আমি আজ পর্যন্ত দেখে নি এখন হাত ছাড়ুন নাহলে আমি যা করবো তা আপনার জন্য মঙ্গল জনক হবে না।” মুরাক হাত ছাড়ছে না দেখে মোমো তার হাতে জোরে কামড় দেয় মুরাক ব্যথায় ‘আউচ’ করে হাত ছেড়ে দেয় মোমো এক মুহুর্ত দাঁড়িয়ে না থেকে দৌড়ে চলে আসে মুরাক কিছু বলতে পারলো না তার আগেই মোমো উধাও হাতের দিকে তাকাতেই দেখে দাঁতের স্পষ্ট ছাপ খরগোশের মতো দাঁত তার। মুরাক হাত ডলতে ডলতে বাসায় চলে আসলো।
।।।।।
।।।।।
বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে হাতের দিকে তাকায় জ্বলে যাচ্ছে তার হাত কারণ মোমো তার দাঁতের সব শক্তি দিয়ে জোরেই কামড় দিলো। মন খারাপ হয়ে যায় মুরাকের মোমো তো তার কথা শুনতেই চাচ্ছে না তাহলে সব ঠিক হবে কেমনে? মুরাকের মাথায় বুদ্ধি আসে নিজেকে বলে,, যে সব কিছু খারাপ করছে তাকেই দিয়েই সব কিছু ঠিক করাতে হবে।” ফোন হাতে নিল সে তারপর মুখ দিয়ে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে কল করে অপাশ থেকে ফোন রিসিভ হতেই বলে,, রেডিসন ব্লু হোটেলের ছাদে আমার সাথে দেখা করো এখনিই।” ফোন কেটে দেয় তারপর। গাঢ় নীল রঙের শার্ট ও কালো প্যান্ট পড়ে রেডি হয়ে রেডিসন ব্লু হোটেলে চলে যায় সে।
।।।।।
।।।।।
ছাদে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বিভিন্ন চিন্তায় মগ্ন মুরাক। পেছনে কারোর হিলের আওয়াজ শুনতে পেয়ে ফিরে তাকায় সে। পেছনে দাঁড়িয়েই তাকে দেখে লম্বা মুচকি হাসি দেয় শেফালী। সামনে এসে তার পাশে দাঁড়িয়ে বলে,, ভালো আছো? মুরাক গম্ভীর মুখেই আছে বলে,, ভালো থাকতে দিচ্ছো? অন্য দিকে তাকায় শেফালী তারপর বলে,, অনেক দিন পর দেখা আমাদের তাই না? মুরাক রাগ উঠলেও তা দমিয়ে বলে,, হুমম দূরে থেকেও অশান্তি সৃষ্টি করছো আমার লাইফে।” শেফালী কিছু বলল না। মুরাক তাকিয়ে বলে,, কেন করছো এসব? আমার লাইফে ইন্টারফেইর করার দরকার কি তোমার? হুম বানোয়াট কথা কেন বলছো ওকে?
শেফালী এখনোও চুপ করে আছে দেখে এবার মুরাক রেগে দেওয়ালে জোরে বারি দিয়ে বলে,, কি হয়েছে কথা বলছো না কেন? চমকে লাফ মেরে উঠে শেফালী আগের মতই রয়ে গেল মুরাক বদরাগি বদমেজাজি ছেলে। শেফালী এবার রেগে বলে,, আমাকে কেন কথা শুনাচ্ছো? আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই তোমার লাইফে তাকাঝারি করার আমার বাধ্য হয়ে করতে হলো এসব।”
মুরাক এবার শান্ত হয়ে না জানার ভান ধরে বলল,, বাধ্য হয়ে মানে? শেফালী এবার রেগে সব বলে ফেলল মুরাক সব চুপচাপ শুনে হা হয়ে যায়। মানে রিদান সামনের থেকে মুরাকের সাথে ভালো থেকে পিছনের থেকে মোমোর ঘরে বিয়ের প্রস্তাব দিতে যাচ্ছিল সে। মুহূর্তেই মাথা গরম হয়ে যায় তার শেফালী বলল,, ও আমার আব্বুর চিকিৎসা করাবে বলে আর করাচ্ছে না আর আমি দেশে কোন ভালো ডাক্তার কেও চিনি না বুঝছি না কি করবো আমি।” হতাশ হয়ে বলল শেফালী। মুরাকের এবার সবকিছু ভালোভাবে ক্লিয়ার হয়ে গেল। শেফালী দিকে তাকায় সে দেখে সে কাঁদছে মুরাক তাকে শান্ত করানোর চেষ্টা করে বলে,, আচ্ছা, তোমার আব্বুর চিকিৎসা করানোর দায়িত্ব আমি নিয়ে নিলাম এবার শান্ত হও।” শেফালী চোখ উঠে তাকায় খুশি হয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে মুরাক তাকে আলতো হাতে সরিয়ে দেয় বলে,, একটা কাজ করতে হবে তোমার!” শেফালী সরে গিয়ে মাথায় হাত দিয়ে হতাশ গলায় বলে,, আমার জীবন যাবে মনে হয় এই পুরুষ গুলোর কাজ করানোর তালে ধ্যাত! আচ্ছা বলো কি কাজ? মুরাক ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে বলে,, মোমো কে মানানো তে আমাকে সাহায্য করতে হবে।’ শেফালী মিনমিন গলায় বলে,, ও মানবে? মুরাক তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় শেফালী সাথে সাথে বলে,, হ্যা হ্যা ও মানবে আমি মানাবো ওকে।” শেফালী আবার বলে,, আমি যায় তাহলে প্লেন রেডি করতে হবে তো আর হ্যা প্লিজ আমার আব্বুকে…।
মুরাক বলে,, আমি ভালো ডাক্তারের ব্যবস্থা করব টেনশন নেওয়ার প্রয়োজন নেই যাও”। শেফালী মাথা নেড়ে চলে যায় তার চলে যাওয়াতে মুরাক নিজেই নিজেকে বলে,, এর উপর পুরোপুরি বিশ্বাস করা যাবে না আমার নিজের থেকেও কিছু করতে হবে।’ পিছন থেকে শেফালী চিল্লিয়ে বলে,, বিশ্বাস করে দেখতে পারো সব ঠিক করে দিব মুরাক”। মুরাক পিছনে ফিরার আগেই শেফালী চলে যায়। মুরাক আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,, প্লিজ সব কিছু ঠিক করে দিও আমার ভয় করছে সে কি মানবে???

(চলবে…)

#seeing_with_you
Episode – 24 #বৃষ্টি
Writer – Zaira Insaan

ভার্সিটি যাওয়ার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় শেফালী। তাকে দেখে বিরক্তিতে নাক মুখ কুঁচকে ফেলে মোমো। এখন আবার কি জন্য আসছে আগুনের মধ্যে কি আরো ঘি ঢালবে? মোমো সরে যেতে নিলে শেফালী তার বাহু ধরে দাঁড়িয়ে বলে,, কিছু কথা আছে সময় হবে? মোমো চোখ কুঁচকে বলে,, না, সরো কোন কথা নেই তোমার সাথে।’ আবার যেতে নিলে শেফালী আবার ধরে বলে,, ইম্পর্টেন্ট কথা প্লিজ শুনে যাও।’ একপ্রকারে জোরাজুরিতে রাজি হয় সে কিন্তু এক ঘন্টার বেশি সময় দিতে পারবে না বলে দিল। শেফালী খুশি হয়ে রাজি হয়।
দুজনেই ক্যাফে তে বসে আছে শেফালী কিছু অর্ডার করতে চাইলে সাফ মানা করে দেয় মোমো। শেফালী কপাল থেকে চুল সরিয়ে টেবিলে কনুই ভাঁজ করে বসে বলে,,
“মুরাকের সাথে আমার প্রথম দেখা হয় তারই অফিসে। তার কম্পানিতে চাকরি নিয়েছিলাম আমি, আমি কাজ ভালোভাবে করার ফলে তার সাথে বিভিন্ন মিটিং এ বসার সুযোগ টা পায় আমার ফ্রেন্ড জোনের মধ্যে সবার বয়ফ্রেন্ড ছিল শুধু আমি ছাড়া তারা তাদের বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে শো অফ করতো আমার অনেক বিরক্ত লাগত আমিও মুরাক কে পটানো শুরু করি কিন্ত সে কোনতেই দেখে না আমাকে সবসময় গোমরো মুখো ও গম্ভীর হয়ে থাকত, তারপর আমি তাকে আমার কাজের মাধ্যমে ইম্প্রেস করি পরে সে ইম্প্রেসড হয় আমার সাথে কথা বলত রিলেশন এ ঢুকি আমরা আমিও তাকে নিয়ে অনেক শো অফ করতাম ফ্রেন্ডদের সামনে সে বিরক্ত হত অনেক এভাবেই দিন যেতে লাগল আমি ফিজিক্যাল রিলেশন শুরু করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সে এগুলোতে ইন্টারেস্ট রাখে না দূরত্ব নিয়ে থাকত সবসময় পরে আমার প্রমোশন হয় তাকে নিয়ে এ খুশিতে ঘরে ছোট্ট একটা পার্টি করি শুধু সে আর আমি, পার্টির মধ্যে আমি ওকে জোর করে মদ খাওয়ায় দিয়ে ছিলাম মদ খাওয়ানোর পর সে অতিরিক্ত মাতাল হয়ে যায় তাকে আমি আমার রুমে নিয়ে যায় সে রাতে আমি তার সুযোগ টা নিয়ে ছিলাম। কিন্ত আমি জানতাম এ রাতেই পরেই সব কিছু আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে সকালে উঠে তার সব কিছু মনে পড়ে যায় এদিন তার সাথে আমার ঝগড়া হয় রাগে সে আমাকে কম্পানির থেকে বের করে দেয় সাথে তার লাইফ থেকেও কম্পানি থেকে
বরখাস্ত করে দেওয়ার পর আমি কোন জায়গায় কাজ পাচ্ছিলাম না তাই আমি সুইডেন চলে যায় তিনমাস শুধু কাজ খুঁজতে লাগলাম পরে পেয়েও যায় অনেক কষ্টে এরপর থেকে তার সাথে আমার আর দেখা হয়নি।”
খুব মনোযোগ দিয়ে সব শুনলেও একটা বিষয় সে বুঝতে পারিনি মোমো, তাই সে প্রশ্ন করে বসল,, তো এখন ওর লাইফে এসে সব কিছু বরবাদ করে আবার সবকিছু ঠিক করতে চাচ্ছো? শেফালী এতোক্ষণ মাথা নুয়ে রাখলেও মোমোর কথায় মাথা উঁচু করে তার দিকে তাকায় বলে,, ভুল করেছিলাম আমি, সেই রাগটা এখনো আছে আমার তাই আমার আগের রাগগুলো মুরাকের লাইফে ইচ্ছামত দিছি এখন ভাবছি এসব করা এখন কোন মানে হয়না সেও লাইফে মুভঅন করছে আমিও করছি পরে জানতে পারলাম তোমার আর ওর সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে আমার কারণে তাই আমি এখন সব আগের মত করার চেষ্টা করছি, মোমো তুমি ওকে ছেড়ে দিওনা সে সত্যি করে তোমাকে ভালোবাসে তার ফিলিংস গুলো বোঝার চেষ্টা করো।”
মোমো সব শুনে উঠে দাঁড়ায় তারপর কিছু না বলে বেরিয়ে আসে ভাবছে শেফালী কি সত্যি বলছে নাকি আগের মত বানোয়াট কথা বলে আমাকে ফাসাচ্ছে?
।।।।।
।।।।।
দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এলো এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে। মুরাক ও বাসায় যাচ্ছিল পথে মোমো কে দেখে গাড়ি থামায়। তার সামনে দাঁড়ায় মোমো বেখেয়ালি হয়ে হাঁটছিল একটুর জন্য তার সাথে ধাক্কা খেত সামনে থাকা মানুষটাকে দেখে হুশ ফিরে ব্রু কুঁচকে এলো তার মুরাক মোমো বলার সাথে সাথে মোমো বলে,, সরুন সামনের থেকে”। মুরাক বলে,, কথা আছে শুনো…। তাকে থামিয়ে মোমো অবাক হয়ে বলে,, ওয়াও আমি সেলিব্রেটি কবে থেকে হলাম, যে আসে সে বলে কথা আছে তোমার সাথে, লাইক সিরিয়াসলি আমি এতো সস্তা না যে যার তার সাথে কথা বলব সরো মুখের সামনের থেকে।” মুরাক আগামাথা কিছুই বুঝতে পারল না তা বাদ দিয়ে বলে,, মোমো একবার হলেও…।
।।।।।
।।।।।
আকাশে কালো মেঘ একত্রিত হয়ে গর্জে উঠে দুজনেই উপর তাকিয়ে একে অপরের দিকে তাকায় রাস্তার মানুষ ছুটে চলছে হয়ত বৃষ্টি নেমে আসবে!! মোমো তাড়াতাড়ি বলে,, প্লিজ বাসায় যান আমাকেও যেতে দেন।’ বলেই সে চলে যায় মুরাক মনে মনে বলে,, যেটায় হোক না কেন ওকে আজ সবকিছু জানাতে হবেই!
বলেই গাড়িতে উঠে বসে গাড়ি মোমোর হাঁটা গতিতে চালিয়ে গ্লাস নামিয়ে বলে,, মোমো গাড়িতে বসো বাসায় দিয়ে আসি তোমাকে।” মোমো কানে নিলো না সে হাঁটতেই লাগল কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি নেমে আসে সে তাড়াতাড়ি ব্যাগ থেকে ছাতা বের করে খুলে মাথার উপর ধরে আর এদিকে মুরাক একবার সামনে তাকিয়ে আরেকবার মোমোর দিকে তাকিয়ে ডেকে যাচ্ছে কিন্তু মোমো শুনছে না। বাসায় এসে পরে মোমো মুরাক গাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় কিছু বলার আগেই মোমো ছাতা বন্ধ করে ঘরে ঢুকে যায় মুরাকের খারাপ লাগল কারণ মোমো একটাবারের জন্য হলেও পিছে ফিরে তাকায়নি।
।।।।।
।।।।।
মোমো রুমে ঢুকে গোসল করতে চলে যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর মাথা মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসে বাহিরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে মোমো জানালার কাছে এসে পর্দা সরিয়ে বাহিরে উঁকি দেয় তার চোখ পড়ে নিচের দিকে মুরাক দাঁড়িয়ে আছে বাহিরে বৃষ্টির মধ্যে মোমো আবার পর্দা টেনে দিয়ে তোয়াক্কা করল না হয়ত সে কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যাবে। ডায়নিং রুম থেকে তার মা রোকেয়া খাবার খাওয়ার জন্য ডাক দেয় মোমো নিচে চলে যায়। খাওয়ার মাঝেই বৃষ্টির বেগ বাড়লো বাহিরা বৃষ্টির জমজম আওয়াজ ছাড়া কিছুই শুনতে পাওয়া যাচ্ছে না। মোমোর মনে পড়ে মুরাকের কথা সে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে মোমো গলায় আর খাবার ঢুকল না সে হাত ধুয়ে হুড়মুড় করে রুমে চলে যায় এদিকে রোকেয়া ও ইভান তাকে ডাকতে লাগল। রুমে এসে দরজা বন্ধ করে জানালার কাছে এসে পর্দা সরিয়ে উঁকি দেয় মুরাক মাথা নিচু করে গাড়ির সামনে বুকে দুহাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে আর একটু পরপর মোমোর বারান্দার দিকে তাকাচ্ছে। মোমো আবার পর্দা টেনে বিড়বিড় করে বলে,, পাগল হয়ে গেল নাকি! ঠান্ডা করছে না এই বৃষ্টির মধ্যে বাহিরে ২ ঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছে গরু,বলদ!!
সে অস্বস্তিতে রুমে পায়চারি করতে লাগল সে এখন কি করবে নিচে যাবে গেলে তো সবাই জেনে যাবে, এখন? সে নিচে নেমে আসে ইভান সোফায় বসে টিভি দেখছে মোমো আশেপাশে চোখ বুলালো কোথাও মাকে দেখা যাচ্ছেনা দেখে মোমো ইভানকে বলল,, আম্মু কই? ইভান টিভিতে চোখ রেখেই উত্তর দেয়,, ঘুমাতে চলে গেছে।” মোমো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে একটু রেগে বলে,, তো তুই বসে আছিস কেন যা ঘুমাতে যা!! ইভান বলে,, পড়ে যাব। মোমোর মাথা গরম হয়ে এক তো মুরাক বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে আর এদিকে ইভান এখান থেকে সরছে না মোমো রেগে এসে টিভি বন্ধ করে বলে,, যা এক্ষুনি ঘুমাতে যা নাহলে আর কখনো টিভি দেখতে দিব না।’ ইভান বিরক্ত হয় মোমো সবসময় এমন শাসন করে তাই সে সোফার থেকে মোবাইল নিয়ে রুমে চলে যায়। মোমো পুরো ঘরে লাইট অফ করে দেয় তারপর ছাতা নিয়ে বাহিরে চলে আসে। মুরাক ঠান্ডায় কাঁপছে মোমো কে ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটে উঠে মোমো এসে ছাতা দিয়ে বলে,, বৃষ্টিতে ভিজে কি বোঝাতে চাচ্ছেন? মুরাক এক হাতে ছাতা খুলে তা মোমোর মাথার উপর ধরে তারপর মোমোর এক হাত ধরে সামনে দাঁড় করায়। মোমো কেঁপে উঠে তার স্পর্শে বরফের ন্যায় ঠান্ডা হলো মুরাক ভিজছে কিন্তু মোমোর মাথার উপর ছাতা ধরে তাকে ভিজতে দিচ্ছে না। মুরাক তার হাত ছেড়ে দেয় নাহলে ঠান্ডা লেগে যাবে মোমোর মুরাক আশ্বস্ত কন্ঠে বলে,, সরি! তোমাকে আমার ব্যাপারে আগে জানাই নি কিন্তু বিশ্বাস করো শেফালী তোমাকে যা বলছে সব মিথ্যা বলছে আমি…।” তাকে থামিয়ে মোমো বলে,, হয়ছে, এখন বাড়িতে যান এভাবে আমাদের কেউ দেখলে এলাহী কান্ড ঘটে যাবে প্লিজ বাসায় যান!!
বলে সে সরে আসে মুরাক আবার তার হাত ধরে নেয় তারপর ছাতা বন্ধ করে তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে সরু চোখে তাকিয়ে বলে,, লাগবে না আমার!! তারপর সে গাড়িতে বসে চলে যায়। মোমো এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলে,, হয়ত সব সত্যি বলছে সে।
।।।।।
।।।।।
সকালে,,,,,
শেফালী কল করে ঘুম ভেঙে দেয় মুরাকের। সে প্রচন্ড বিরক্ত হয় রাতভর ঘুমোতে পারিনি সে ঠান্ডার জ্বালায় তারপর সকালে মিষ্টি ঘুমটাও ভেঙে দেয় শেফালী। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে শেফালী বলে,, বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি দরজা খোলো!! মুরাক হালকা চমকায় কারণ এতো সকাল সকাল ফ্লাটের সামনে এসে দাঁড়ায় আছে তাকে এড্রেস কে বলল? সে রাতে বাড়িতে
যায়নি তাকে ভেজা অবস্থায় দেখলে তামাশা হয়ে যেত ঘরে তাই সে ফ্লাটে এসে ঘুমিয়েছে কিন্তু শেফালী তো জানার কথা না সে জানল কিভাবে? মুরাক অনেক কষ্টে নিচে নেমে দরজা খুলল শেফালী হুড়মুড় করে ঢুকে পড়লো মুরাক তাকে প্রশ্ন করলো,, তুমি এড্রেস পেলে কোথার থেকে? শেফালী পুরো ঘর দেখতে দেখতে বলল,, আমার সব খবর থাকে।” মুরাক বিরক্ত হয়ে রুমে গিয়ে কম্বল মুড়ে শুয়ে পড়লো তাকে দেখে শেফালী চেহারা বানিয়ে বলল,, এতো গরমে তুমি কম্বল মুড়ে ঘুমাচ্ছো ছিঃ । মুরাক উত্তর দিল না শেফালী সন্দেহ করে তার কাছে গিয়ে কপালে হাত দেয় সাথে সাথে সে চমকে যায় কারণ তার জ্বর আসছে। শেফালী চোখ বড়বড় করে বলে,, জ্বর আসলো কেমনে? মুরাক লাপাত্তা ভাবে বলল,, হেঁটে হেঁটে! শেফালী ফোন হাতে নিয়ে বলল,, আমি ডাক্তারকে জানাচ্ছি ওয়েট! মুরাক কিছু বলল না সত্যিই তার ডাক্তারের প্রয়োজন হঠাৎ শেফালীর মাথায় এক বুদ্ধি এলো তখন সে আর ডাক্তারকে কল করলো না!!!

(চলবে…)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে