#seeing_with_you
Episode – 19 #তারপরেও_সে_আমার
Writer – Zaira Insaan
বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ি করে মোমোর বাসায় রওনা দিল কিন্তু মাঝ রাস্তায় সে মোমো কে পার্কে দেখতে পায় কষে ব্রেক ধরে তারপর ভালো করে দেখতে লাগল সে মোমো কি না। হ্যা সে মোমোই পার্কে বসে কারোর জন্য অপেক্ষা করছে মুরাক বসে দেখতে লাগল কিছুক্ষণ পরেই রিদান আসছে পার্কে মুরাক তাকে দেখেই গাড়ি থেকে নেমে এলো রিদান মোমো কে কিছু বলার আগে মুরাক গম্ভীর স্বরে মোমো কে বলে,, তুমি এখানে কি করছো? রিদান ঘাড় বেঁকে তাকায় মুরাক তার পিছনেই দাঁড়িয়ে ছিল মোমো দাঁড়িয়ে যায় মুরাক এসে বলে,, আন্টি তোমাকে খুঁজছিল, বাসায় যাও এখন।” রিদান তার দিকেই তাকিয়ে বলে,, ওকে আমিই ডাকছি আর আন্টি সেটা জানে সো ঝামেলা না করে এখান থেকে যা। মোমো ভালো করে লক্ষ্য করে দেখল মুরাকের ঠোঁট ও কপাল কেটে রক্ত জমাট বেঁধে আছে মোমো ওকে এভাবে দেখে প্রশ্ন করল,, মি.মুরাক আপনার এই অবস্থা কেন? মুরাক ও রিদান তার দিকে তাকিয়ে আবার রাগি দৃষ্টিতে একে অপরের দিকে তাকায় মুরাক দৃষ্টি সরিয়ে মোমো কে বলে,, কিছু না, তুমি এখন গাড়ি বসো যাও। মোমো রিদানের দিকে তাকিয়ে বলে,, আপনি যা বলবেন তা ফোনে বলিয়েন। তারপর সে ওখান থেকে চলে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে মুরাক ও চলে যেতে নিলে রিদান পেছন থেকে বলে,, কতদিন লুকিয়ে রাখবি, ওকে তো আমি জানিয়ে দিবই।’ মুরাক তার দিকে ফিরে বলে,, তারপরেও সে আমারেই থাকবে, Now Get lost!! সে ওখান থেকে চলে আসে গাড়িতে বসে গাড়ি স্টাট দেয় রিদান তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। মুরাক গম্ভীর মুখে গাড়ি চালাচ্ছে মোমো হাত কচলাতে কচলাতে বলে,, কি হয়েছে কার সাথে মারপিট করে আসছেন? মুরাক তার উত্তর না দিয়ে উল্টো প্রশ্ন করে বসে,, এত বার কল করছি রিসিভ করো নি কেন? মোমো ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,, চার্জিং এ ছিল তাই। মুরাক কষে ব্রেক ধরে মোমো হালকা ঝুঁকে যায় মুরাক রাগি কন্ঠে বলে,, আমাকে না বলে রিদানের সাথে দেখা করতে গেছিলা কেন? মোমো ব্রু কুঁচকে বলে,, আজব মানুষ দেখি আপনি, আপনাকে বলে যাব কেন? মুরাক রেগে ব্রু কুঁচকে বলে,, নেক্সট টাইম থেকে যদি আমাকে না বলে যাও তাহলে তোমাকে ভর্তা বানিয়ে ফেলব।” ব্রু কুঁচকে গিয়ে তার কপাল থেকে রক্ত বেরিয়ে আসে মোমো তাড়াতাড়ি সেখানে হাত দিয়ে বলে,, রক্ত বের হচ্ছে ওয়েট!! তারপর সে ব্যাগে থেকে ব্যান্ডেজ বের করে কপালে লাগিয়ে দেয় মুরাক তার দিকে তাকিয়ে আছে তারপর হঠাৎ তার কি মনে হলো কে জানে সে মোমো কে জরিয়ে ধরে মোমো হকচকিয়ে যায় বলে,, মি.মুরাক। মুরাক হতাশ চোখে তাকিয়ে বলে,, ৩মাস ধরে মি.মুরাক, মি.মুরাক হি ডেকে আসছো এখন থেকে শুধু মুরাক ডাকবা। বলে আবার জরিয়ে ধরে মোমো আস্তে করে বলে,, বুটুল ডাকি? মুরাক ছেড়ে দিয়ে তাকায় তারপর আবার গাড়ি চালানো শুরু করে মোমো মুচকি হাসে। মোমো কে বাড়িতে পৌঁছে দেয় গাড়ি থেকে নামার মোমো বলে,, মুরাক ১ মাসের ছুটির প্রয়োজন, এই এক মাস আম্মুর সাথে থাকতে চাই প্লিজ।’ মুরাক তার দিকে তাকিয়ে একটু চিন্তা করে তারপর বলে,, আচ্ছা, তাহলে কালকে এসে তোমার জিনিস গুলো নিয়ে যায়িও। মোমো মাথা নেড়ে নেমে বাসায় চলে যায়। মুরাক গাড়িতে বসে চিন্তা করে বলে,, শেফালী এখন কোথায় থাকে সেটা বের করতে হবে নাহলে রিদান প্যাচ লাগিয়ে মোমো কে আমার কাছ থেকে সরিয়ে নিবে।” মুরাক ফোন বের করে কাউকে কল দিয়ে বলে,, শেফালী মান্নান এখন কোথায় থাকে কি করে এই সব ডিটেলশ আমাকে ১ ঘন্টার মধ্যে দাও ফাস্ট। বলে কেটে দেয় তারপর এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে মোমোর ঘরের দিকে একবার তাকিয়ে গাড়ি স্টাট দেয় তার পর নিজ বাড়ি চলে যায়।
।।।।।
।।।।।
মুরাক বাড়িতে না গিয়ে ফ্লাটের মধ্যেই থাকছে তাকে এ অবস্থায় দেখলে ঘরে সবাই চিন্তা করবে কিছুক্ষণ পরেই কলিং বেল বেজে উঠলো মুরাক দরজা খুলে লোকটা ঘরে এসে বলে,, শেফালী মান্নান এর সব ডিটেলশ স্যার। ফাইল এগিয়ে দিয়ে বলল মুরাক ফাইল হাতে নিয়ে “হুম” বলল তারপর লোকটি চলে যায় ফাইল খুলতেই দেখে সে বর্তমানে সুইডেন এ থাকে আর সেখানে চাকরি করে। লোকটি আবার এসে বললো,, স্যার একটা কথা বলতে ভুলে গেছি শেফালী ম্যাম এক মাসের জন্য দেশে ফিরছে ওনার আব্বা অসুস্থ এই জন্য।” মুরাক অবাক হয় তার এখন বিরক্ত ও লাগছে শেফালী আসবে বলে, ততক্ষণে লোকটি দরজা বন্ধ করে চলে যায় মুরাক ফাইল ছুড়ে মেরে বলল,, ড্যাম ইট ওই শাকচুন্নী টা আবার দেশে আসছে ধ্যাত! এর আগেই আমার থেকে মোমো কে সব সত্য বলতে হবে নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।” মুরাকের সব কিছুতে বিরক্ত লাগছে সে রুমে গিয়ে ঠাসস করে দরজা বন্ধ করে দেয়।
।।।।।
।।।।।
এদিকে রিদান মুচকি মুচকি হাসছে তার খুশি লাগছে কারণ সে জানে শেফালী আসবে এক মাসের জন্য। আর রিদান পুরোপুরি প্লেন করে রাখলো শেফালী আসলেই তার কি করতে হবে…।
৭দিন পর,,,,
দেশে ফিরে শেফালী তাকে পিক আপ করতে রিদান নিজেই যায় তার আগেই রিদান অনলাইনে ভালোভাবে বন্ধুত্ব করে নিল তার সাথে। শেফালী অপেক্ষা করছে কিছুক্ষণ পর রিদানকে দেখে এমন হাসি দিল যেন কোন হিরা মতি পেয়ে গেল রিদান নিজেও একটু ভেবাচেকা খেয়ে গেল তার হাসি দেখে শেফালী এসে জরিয়ে ধরে বলে,, ওহহ তুমি আসছো আমি তো ভাবছিলাম তুমি আসবাই না সত্যি।’ ঢং করে বলে সে রিদানের নিজেও বিরক্ত লাগল তার ল্যাগেজ নিয়ে গাড়িতে ওঠে বসে। এ পর্যন্ত শেফালী গাড়িতে বকবক করলেও রিদান টু শব্দও করলো না তার মাথায় অন্য কিছু চলছে। রিদান তাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে উঠে শেফালী নিজেও ঢলে ঢলে চলে যায় তার বাড়িতে অথচ দেশে তার নিজ বাড়ি আছে। শেফালী কে দেখে কিছুটা আঁতকে উঠে রিদানের পরিবার হুট করে যে নিয়ে আসলো কাউকে না বলে। রিদানের মা শেফালী কে দেখে বলে,, এ কে? রিদান মুচকি হেসে বলে,, আমার ফ্রেন্ড শেফালী মান্নান দেশে ফিরছে তো তাই এখানে নিয়ে আসছি।” শেফালী ঢং করে সবাইকে সালাম দেয় পরিবারে কেউই তাকে পছন্দ করিনি। রিদানের ছোট ভাই শেফালী কে আড়চোখে দেখে বলে,, ও তোর কোন জমানার ফ্রেন্ড? শেফালী বলে উঠে,, কলেজের। সবাই রিদানের দিকে তাকায় রিদান ঘাবড়ে যায় কারণ সে বোয়েজ কলেজে পড়ছে আর শেফালী কি না বলে। রিদান আর কারো প্রশ্নের অপেক্ষা না করে শেফালী কে নিয়ে গেস্ট রুমে চলে যায়। সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। রুমে এসে রিদান ইচ্ছামত উদ্ধার করে শেফালী কে। শেফালী ন্যাকা কান্না শুরু করে দেয় তাকে কাঁদতে দেখে রিদান বিরক্ত হয় আর মনে মনে বলে,, বুঝছি কেন মুরাক একে ছেড়ে দিছে এক নাম্বারের বিরক্তিকর মেয়ে।” রিদান কোনমতে তার কান্না থামিয়ে বলে,, শুনো শেফালী….।
(চলবে…)
#seeing_with_you
Episode – 20 #বিচ্ছেদ
Writer – Zaira Insaan
– Ohh please stop it, তোমার এই ন্যাকা কান্না বন্ধ করো।
– What, তোমার এটা ন্যাকা কান্না লাগে? ওকে ফাইন তাহলে আমাকে বাসায় যেতে দাও।
রিদান কিছুটা ঘাবড়ে যায় তারপর কিছুটা শান্ত হয়ে বলে,, আরে শেফালী আমি ওটা বুঝাতে চাইনি তোমার এই সুন্দর চোখে কান্না মানাই না তাই বললাম।’
শেফালী এবার হেসে দেয় তারপর বলে,, ওহহ আচ্ছা,তুমি জানো আমার কান্নার উপর কত ছেলে ক্রাস খায়ছে।’ রিদান আড়চোখে তাকায় অতিরিক্ত ভাব দেখাচ্ছে এই শেফালী তার বিরক্ত লাগলেও কিছু করার নেই। শেফালী প্রশ্ন করে,, তুমি আমাকে বাড়ি যেতে দিচ্ছো না কেন?” রিদান মুচকি হেসে বলে,, এতো তাড়া কিসের যাবা আরকি কিছুদিন পর।’ শেফালী মন খারাপ করে বসে পড়ে রিদান ব্রু কুঁচকে তাকায় বলে,, কি হয়েছে তোমার?’ শেফালী নিচে তাকিয়ে বলে,, আমার আব্বু অসুস্থ আর বাংলাদেশে ও এমন কোন ভালো ডাক্তার নেই যে আমার আব্বুর চিকিৎসা করবে।” রিদান বলে,, তো তুমিতো সুইডেন থাকো ওখানে নিয়ে চিকিৎসা করাবা।’ শেফালী রিদানের দিকে তাকিয়ে বলে,, ” ১ বছর হচ্ছে সুইডেনে আছি আর ওখানে ৭ মাস ধরে চাকরি করছি নতুন চাকরিতে জোয়েন করছি বলে বস আমাকে ছুটি দিতে চাইনি অনেক কষ্টে ছুটি নিয়েছি আমার চাকরি রিক্স এ আছে ১ মাসের মধ্যে না গেলে আমার চাকরি নিয়ে আমাকে একবারের জন্য দেশে পাঠিয়ে দিবে তারা আর আব্বুকে ওখানে নিয়ে যাওয়ার মতো কোন ব্যবস্থা করিনি আমি, ভয় করছে আব্বু ও চাকরির জন্য কি হবে কে জানে?” দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে শেফালী, রিদান এসব শোনার পর এক বাঁকা হাসি দেয় তারপর মুখো ভাব স্বাভাবিক করে শেফালীর কাঁধে হাত রেখে বলে,, তোমার আব্বুর চিকিৎসা আমি করাবো?’ শেফালী চোখে মুখে হাসি ফুটে উঠল ঝপ করে রিদানকে জরিয়ে ধরে বলে,, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ।” রিদান তাকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে নেয় তারপর বলে,, একটা কাজ করে দিতে হবে তোমার।” শেফালী মুখে হাসি টেনে বলে,, আরে চিন্তা করতে হবে না যত টাকা লাগে দিব শুধু বলো কত নিবে।” রিদান বলে,, টাকা ব্যাপারে না, অন্য কাজ করে দিতে হবে তোমার।” শেফালী বলে,, আচ্ছা, বলো কি কাজ? “মুরাক তোমার এক্স বয়ফ্রেন্ড না?” রিদান বলে। শেফালী মুখে হাসি নেই গম্ভীর মুখে বলে,, হুম, কেন? রিদান বলে,, তার কোন প্রমান আছে তোমার যে মুরাকিই তোমার এক্স বয়ফ্রেন্ড? শেফালী অন্য দিকে তাকিয়ে বলে,, আছে, কেন? আর মুরাক কে তুমি কেমনে চিনো?’ রিদান তাচ্ছিল্য ভাবে বলে,, আমার বেষ্টফ্রেন্ড, ছিলো তখন।’ শেফালী একটু মনে করে বলে উঠলো,, ওহ হ্যা হ্যা একবার মুরাক আমাকে বলে ছিল যে তুমি ওর বেষ্টফ্রেন্ড ১৫ বছরের ফ্রেন্ডশিপ তোমাদের।” রিদান বলে,, তোমাকে ওর লাইফে যেতে হবে।’ শেফালী একটু দূরে গিয়ে বলে,, না, ওর লাইফে আমি যেতে চাই না আর ওকে আমার লাইফে আনতেও চাই না।” রিদান বলে,, না ওইরকম না যেমন তুমি ভাবছো তোমার থেকে ওর লাইফে ভেজাল সৃষ্টি করতে হবে।’ শেফালী ব্রু কুঁচকে বলে,, ভেজাল? তুমি না ওর বেষ্টফ্রেন্ড তো এমন বলছো কেন?” রিদান রেগে বলে,, বালের বেষ্টফ্রেন্ড, বেষ্টফ্রেন্ড হলে আমার ভালোবাসা মানুষকে নিয়ে নিত না।” শেফালী না বুঝে বলে,, মানে?
তারপর রিদান ওকে পুরো ঘটনা বলা শুরু করলো। পুরো ঘটনা শুনে শেফালী বলল,, ওহহ আচ্ছা তারমানে মোমো ওর নিউ গার্লফ্রেন্ড গ্ৰেইট!!” তার মুখে এমন শুনে রিদান বলে,, গ্ৰেইট বলে কি বুঝাতে চাচ্ছো? শেফালী কথা উল্টিয়ে বলে,, না না কিছু না, তুমি বলো আমি করণীয় কি?
রিদান বাঁকা হেঁসে বলে,, ওর সাথে কোন ছবি বা ভিডিও আছে তোমার?’
শেফালী একটু মনে করে বলে,, আছে”
রিদান মুচকি হেসে বলে,, গ্ৰেইট, রুম ডেট যে করছিলা সেটার প্রমান আছে?
শেফালী মুখ শক্ত করে বলে,, তারমানে মুরাক তোমাকে এইগুলাও বললো? বজ্জাত ছেলে এসব মানুষ বলে কাউকে?
রিদান বলে,, আছে কিনা বলো?
শেফালী মাথা নেড়ে হ্যা বললো। রিদান বলল,, ব্যাস হয়ে গেল তোমার থেকে মোমো কে এসব দেখিয়ে আর এমন ভাবে কথা বলে ওকে বিশ্বাস করিয়ে মুরাক আর মোমোর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে।”
শেফালী একটু চিন্তা করলো তারপর আচ্ছা বলে দিল। রিদান শয়তানি হাসি দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। বাহির থেকে রাহাত সব শুনে নিল রিদানের প্লেন সেও এতো তোয়াক্কা না করে চলে যায়।
।।।।।
।।।।।
সন্ধ্যা ৬টা,,,,,,
ঘরের জন্য খাঁচা বাজার করে বাসায় ফিরছিল মোমো। যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল সে রাস্তা ধীরে ধীরে নির্জন হয়ে গেল। দূরে গাড়ি থামায় রিদান গাড়ি অন্য জায়গায় পার্ক করে শেফালী কে নিয়ে এক জায়গায় দাঁড়ায় মোমোর দিকে ইশারা করে বললো,, এ সেই মোমো, তোমার মনে আছে তো কি করতে হবে? শেফালী চুল উড়িয়ে বলল,, আমার সবকিছুই মনে থাকে বলতে হবে না শুধু দেখে যাও ড.রিদান।” বলেই টুস টুস করে হেঁটে চলে গেল রিদান একলা দাঁড়িয়ে বলে,, না জানে মেয়েটা প্লেন অনুসারে করে কিনা যে ঢং দেখায় বিরক্তিকর।”
শেফালী মোমোর সামনে এসে দাড়িয়ে যায় মোমো ওর দিকে সম্পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় বলে,, কিছু বলবেন? শেফালী জিজ্ঞেস করে,, তুমি মুনতাহা তাসরিন মোমো না? মোমো চমকে উঠে বলে,, হ্যা আমিই আর আপনি আমার নাম কেমনে জানেন? শেফালী বলে,, মুরাক মেহরাবের গার্লফ্রেন্ড তাই না? মোমো একটু চিন্তা করে তাকায় তার দিকে তারপর বলে,, হ্যা কেন?
শেফালী এবার তাচ্ছিল্য চেহারা করে বলে,, কাকে বয়ফ্রেন্ড বানাইছো ওর সম্পর্কে কিছু জানো নাকি সুন্দর চেহারা দেখে বানিয়ে ফেললা? মোমো কিছু বুঝতে পারছে না হুট করে এসে কি আবোল তাবোল বলতে লাগল মেয়েটি পাগলের মত মোমো এবার বলে,, কি বলতে চাচ্ছেন আপনার কথা কোন আগামাথা নেই ক্লিয়ারলি বলেন!!” শেফালী এবার বলতে লাগল,, আমার এক্স বয়ফ্রেন্ড মুরাক।’ মোমো স্বাভাবিক ভাবেই বলল,, তো, কি করব এখন?
শেফালী এবার একটু চমকে উঠে তারপর স্বাভাবিক কন্ঠে বলল,, তোমার আনইজি ফিল হচ্ছে না যে তোমার বয়ফ্রেন্ডের আগে এক্স গার্লফ্রেন্ড ছিল? মোমো লা পাত্তা ভাবে বলল,, আমাকে আগে বলছিল সে, আর আপনি হুট করে এসে কি প্রাক্তনের লাইফে ঢুকতে চাচ্ছেন? তা মোটেও হবে না ওকে ভালবাসি আমি আর ওর লাইফে আমি ছাড়া কাউকে ঢুকতে দিব না সো ভেজাল করে লাভ নেই সরেন সামনের থেকে।” চলে যেতে নিলে শেফালী বলে উঠলো,, আমাদের ফিজিক্যাল রিলেশন ছিল এটাও মনে হয় তোমাকে বলছে সে!!” থেমে দাঁড়ালো মোমো কথাটি শুনে। মুরাক কাল রাতেই সব বলেছিল মোমো কে কিন্তু ফিজিক্যাল রিলেশন এর কথা টি বলে নাই। পিছনে ঘুরে তাকালো সে শেফালী তার দিকে মোবাইল এগিয়ে দিয়ে বলল,, দেখতে পারো এখানে সবই আছে।’ মোমো মোবাইলটা হাতে নিল সেখানে মুরাক ও শেফালীর একসাথে কিছু ছবি দেখতে পেল সাথে সাথে বুক কেঁপে উঠলো তার। মোবাইল টা দিয়ে সাথে সাথে সেখান থেকে চলে আসলো। শেফালী ও রিদান হাসতে লাগলো কারণ ছবি গুলো সব এডিট করা।
ঘরে এসে রুমে ঢুকে সব জায়গা থেকে মুরাক কে ব্লক করে দিল সে। তারপর বসে কাঁদতে লাগলো আর মুরাক কে ইচ্ছামত গালি দিতে লাগল। বাথরুমে গিয়ে হাত, গলা, ঘাড়, ঠোঁট ইচ্ছামত ঘষতে লাগলো যেখানে মুরাক তার অধর দিয়ে স্পর্শ করেছিল। ঘষতে ঘষতে এক পর্যায়ে তার শরীর লাল বর্ণ ধারণ করল। কাঁদতে কাঁদতে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলল। বাহির থেকে খাবার খাওয়ার জন্য ডাকলে সে মানা করে কাঁদতে লাগলো।ঘরে কেউই জানেনা রুমে কি হচ্ছে কারণ মোমো মুখে বালিশ দিয়ে কাঁদতে লাগলো।
শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে মোমো কে ফোন করল মুরাক কিন্তু ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। বিরক্ত হলো সে বারবার মেয়েটা ফোন বন্ধ করে দেয় কেন?
মেসেজ করতে গেলেই দেখতে পাই মোমো ব্লক করছে তাকে কিছুটা চিন্তিত হলো সে। ঝগড়া হয়নি তাদের মধ্যে তো ব্লক করলো কেন? মুরাক সব জায়গায় চেক করতেই দেখে সবখান থেকেই ব্লক করা। মুরাকের বুঝতে বাকি রইল না যে কি ঘটল তাহলে কি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি হলো????
(চলবে…)