seeing with you part-13+14

0
1787

#seeing_with_you
Episode – 13
Writer – Zaira Insaan

২ মাস কেটে গেল এরই মধ্যে তাদের অনেকবার ঝগড়া হয়। মোমো তার থেকে দূরত্ব নিয়ে চলছে মুরাকও তেমন কোন কিছু করছে না তার সাথে।
শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে মনের সুখে বেসুরা আওয়াজ এ গান গাচ্ছিল মোমো কিন্তু বাহিরা তার ফোন আসাতে চটজলদি গায়ে তোয়াল জরিয়ে বেরিয়ে ফোন উঠায় দেখে রিতু কল করেছে খুশিতে রিসিভ করে মোমো,, হ্যালো, রিতু…। তাকে থামিয়ে হুঙ্কার ছেড়ে রিতু বলে উঠে,, “শয়তান, ফাজিল কোথাকার মেয়ে আমাকে না বলে তুই ওই লোকটার বাড়িতে আছিস।” চমকে উঠে মোমো বলে,, তুই কেমনে…?। রিতু তাচ্ছিল্য ভাবে বলে,, “তুই ভাবছিলি আমি কখনো জানব না তাই না? কিন্তু আমি জেনে গেছি রিদান ভাইয়ার মাধ্যমে হুহ”। চোখ উল্টে ঠোঁট কামড় দেয় মোমো, বিরক্তিতে বলে,, ওহহ। রিতু বলে,, “ওহহ কি ম্যাডাম? আসবি না দেখা করতে ২ মাস হলো দেখা করিনি রে”।‌ মোমো চিন্তা করে,, দেখি ৩ দিনের জন্য ছুটি নিতে পারি কিনা ওকে? রিতু খুশি হয়ে বলে,, ওকে সুইটহার্ট আসলে আমাকে বলিস এখন রাখি কাজে যেতে হবে।’ “ওকে” বলে কেটে দেয় মোমো তারপর সে চিন্তা করতে লাগল ছুটির কথা কিভাবে বলবে।
।।।।।
।।।।।
দাদিকে দেখে এসে সবার সাথে নাস্তা করতে বসলো মোমো মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট খাওয়ার মাঝেই মোমো মুচকি হেসে বলে,, স্যার। মুরাকের বাবা তার দিকে মুচকি হেসে তাকায় বলেন,, বলো কি বলবে।’ মোমো মুরাক ও সবার দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলে বলে,, স্যার আমার ৩ দিনের জন্য ছুটি লাগবে।” মুরাক খাচ্ছিল তার কথা শুনে ব্রু কুঁচকে তাকায়। মুরাকের বাবা একটু চিন্তা করে বলে,, ”আচ্ছা, কিন্তু ৩ দিনের বেশি বাড়িতে থাকতে পারবে না।” মোমো উৎফুল্ল হয়ে উঠলো তারপর বলে,, ওকে স্যার। মোমোর মুখে স্যার শুনে মুরাকের বাবা বলেন,, অনেকদিন আমাদের সাথেই আছো তারপরও আমাকে স্যার বলছো, আঙ্কেল ডাকবা কেমন?। মুরাকের মা ও বলে উঠেন,, তুমি তো আমাদের পরিবারেরই সদস্য এখন থেকে আমাকে আন্টি ডাকবা।’
মোমো খুশি হয়ে মাথা নাড়ে। এতোক্ষণ খাবার থামিয়ে সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল মুরাক। তার থেকে একবারও জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করিনি কেউ তাই সে খাবার টেবিল থেকে উঠে অফিস চলে যায়। সবাই তার দিকে তাকায় শুধু মোমো ছাড়া সে খুশি মনে খাচ্ছে আশেপাশে তার কোন ভূক্ষেপ নেই।
রুমে এসে তিন দিনের জন্য ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে মোমো। মাহিরা বাহির থেকে দরজা নক করে, মোমো মুখে চিলতে হাসি ফুটিয়ে বলে,, আরে আসো না ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? মাহিরা এসে জরিয়ে ধরে বলে,, “এই কয়দিনে তুমি আমার বোনের মত হয়ে গেলা মিস করবো অনেক তোমাকে।” মোমো বলে,, আবার তো আসবই, আব্বু আম্মুকে অনেক মিস করছি আমি তাই ছুটি নিলাম, কিন্তু ওখানে গেলে তোমাকে মিস করবো তাই কম ছুটি নিলাম। মাহিরা হেসে দেয়। মোমো রিতুকে কল করে বলে,, আসার সময় আমার সাইকেল সহ নিয়ে আসিস। রিতু অবাক হয়ে বলে,, মানে? তুই ব্যাগ নিয়ে সাইকেল করে আসবি আজব!! মোমো পাত্তা না দিয়ে বলে,, আরে যেটা বলছি সেটা কর না রে। “আচ্ছা আমি ১৫ মিনিটে আসছি দাঁড়া।” বলে ফোন কেটে দেয় রিতু। মোমো সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাহিরে চলে আসে। সবাই জোর করছিল ড্রাইবার দিয়ে আসবে কিন্তু সে মানা করে দিল। কিছুক্ষণ পর রিতু সাইকেল করে আসে সাথে তার সাইকেল টিও নিয়ে আসে। মোমো নিজের সাইকেলটি ধরে বলে,, ”কত্তদিন পর সাইকেল চালাবো সেই মজা হবে রে।” রিতু হেঁসে দেয় তারপর দুজনে মিলে সাইকেল করে মোমোর বাড়ির দিকে রওনা দেয়।
।।।।।
।।।।।
হাঁপাতে হাঁপাতে পার্কে দৌড়ে চলে আসে ইভান। সামনে বসে থাকা মেয়েটির কাছে দাঁড়িয়ে বলে,, সরি, ভুলে লেট হয়ে গেল।” মেয়েটি সামনের দিকে মুখ করে বসে ছিল ইভানকে দেখে উল্টো দিকে ফিরে বসে। ইভান নিজের হাতে থাকা গোলাপ ফুল ও চকলেট তার দিকে এগিয়ে দেয়। মেয়েটি আড়চোখে তা দেখে নেয় কিন্তু এক রাশ অভিমান নিয়ে নড়েচড়ে ফিরে বসে। ইভান হাতে থাকা জিনিসগুলো মেয়েটির কোলে রেখে তার গাল দুটো দুহাত দিয়ে আলতো করে ধরে বলে,, নিপা, সরি বললাম তো এবার তো মাফ করে দাও নেক্সট টাইম থেকে লেট করে আসব না বলে দিলাম। নিপা অভিমান নিয়ে বলে,, জানো এখানে আমি আধাঘণ্টা ধরে বসে আছি তোমার অপেক্ষায় কিন্তু তোমার আসার নাম নেই হুহহ। বলে মুখ ঘুরিয়ে নিল ইভান ফিক করে হেসে দেয় বলে,, আমার সাদা পাখি এতো রাগ করে না, একটু হাসো তো। নিপা ফিক করে হেসে দেয়। যখন নিপা রাগ করে তখন ইভান তাকে সাদা পাখি বলে রাগ ভাঙ্গায় আর নিপা সাদা পাখি নাম শুনে সব অভিমান রাগ উধাও হয়ে যায়। নিপা বলে,, বসো এখানে। হাতে ইশারা করে বলে ইভান তার পাশে বসে তার কোল থেকে এক লাল গোলাপ নিয়ে নিপার চুলে গুজে দেয়। নিপা অবাক হয়ে বলে,, কি করছো? ইভান ব্যস্ত সুরে বলে,, “Now perfect!! সাদা পাখি লাল গোলাপ কম্বিনেশন খারাপ না সুন্দরী লাগছে।” নিপা মুচকি হেসে চকলেট খেতে লাগল তারপর কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইভান মোবাইলে কল আসে ইভান তার দিকে তাকায় নিপা মুচকি হেসে ইশারায় কল রিসিভ করতে বলে। ইভান ফোনে তাকিয়ে দেখে মোমো কল করেছে রিসিভ করল সে অপাশ থেকে মোমো বলল,, ওই কোথায় তুই? ইভান না বুঝে বলে,, মানে? “মানে কি আবার? কোথায় তুই আমি বাসায় আসছি তুই তাড়াতাড়ি আয়”। ইভান চমকে খুশি হয়ে বলে,, তুই বাসায়.. দাড়া আমি আসছি বলে ফোন কেটে দেয়। নিপা তার দিকে ব্রু কুঁচকে তাকায়। ইভান তার দিকে তাকিয়ে মুখ মলিন করে নিচের দিকে তাকিয়ে বলে,, আপা আসছে ঘরে। নিপা একটু মনে কষ্ট পেলেও তা না দেখিয়ে বলে,, তো কোন দুঃখে এখানে বসে আছো যাও ঘরে”। ইভান তার দিকে তাকিয়ে বলে,, মাত্র এলাম এখানে কিন্তু…। তাকে থামিয়ে নিপা বলে,, যাও ঘরে আমার সাথে পরে দেখা করতে পারবে এখন গিয়ে মুনতাহা আপুর সাথে দেখা করে আসো। ইভান খুশি হয়ে নিপা কে জরিয়ে ধরে বলে,, আচ্ছা আমি যাচ্ছি কিন্তু তুমিও এখন বাসায় যাও এখানে বসে থাকতে হবে না। নিপা “হুমম” বলে উঠে দাঁড়ায় তারপর হাতের ইশারায় টাটা ইঙ্গিত করে বাসায় চলে যায় তারপর ইভানো ওখান থেকে বাসায় চলে আসে।
।।।।।
।।।।।
ঘরে মোমো কে সবার সাথে কথা বলতে দেখে ইভান গিয়ে মোমো কে জরিয়ে ধরে মোমো ও খুশি হয়ে জরিয়ে ধরে। তাদের এহেন কাজে রোকেয়া ও আবরার হোসেন চমকে যায় তাদের মধ্যে এতো মহাব্বত দেখে। রিতু বলে,, হয়ছে তো আর কত ভালোবাসা দিবি একে অপরকে। ছেড়ে দেয় তারা তারপর তারা হাসতে লাগলো। তারপর তারা রুমে গিয়ে খাটে বসে গল্প করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মোমো কথার মাঝখানে বলে,, ওইদিন তুই গার্ল বলে থেমে গেলি কেন? ইভান চমকে চুপ হয়ে যায়। তাকে চুপ থাকতে দেখে মোমো বলল,, আরে বল চুপ হয়ে গেলি কেন? ইভান অন্য দিকে তাকিয়ে বলে,, কিছুনা। মোমো সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বলে,, গার্লফ্রেন্ড তাই না? এটায় বলতে চেয়ে ছিলি না? ইভান ফট করে তাকায় কিছু না বলে চুল বুলাতে লাগল। মোমো এক গাল হেসে বলে,, জানি জানি তোর গার্লফ্রেন্ড আছে, নিপা না? ইভান অনেক বেশি অপ্রস্তুত হয়ে যায় বলে,, কেমনে জানিস? মোমো মুচকি হেসে বলে,, আরে জানি জানি, কিন্তু আমি কিভাবে জানছি তোকে জানাবো না। ইভান অস্বস্তি বোধ করতে লাগলো তাকে দেখে বলে,, আরে চিন্তা করিস না কাউকে জানাবো না চিল কর!! বলে উঠে চলে যায়। ইভান ঘাবড়ে গিয়ে ফোস করে এক নিঃশ্বাস ফেলে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে।
।।।।।
।।।।।
রাতে খাবার খেয়ে মোমো রুমে চলে যায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। শান্তি লাগছে তার। কিছুক্ষণ পর তার ফোনে মেসেজ আসে। মোমো চেক করতেই ঢুকে দেখে রিদান মেসেজ দিছে,, ফ্রি আছো? মোমো রিপ্লাই করে বলে,, জ্বি। সাথে সাথে মেসেজ পেয়ে রিদান কল করে মোমো রিসিভ করতেই রিদান বলে,, খেয়েছো? মোমো মুচকি হেসে বলে,, জ্বি আপনি? “হুম” বলে রিদান। “আচ্ছা” বলে চুপ হয়ে যায় মোমো কি বলবে চিন্তা করছে এরই মধ্যে রিদান বলে,, কাল দেখা করতে পারবে? মোমো চমকে যায় তার কথা শুনে জিভ ভিজিয়ে বলে,, হুমম পারবো। রিদান খুশি হয়ে বলে,, তাহলে আমি কাল তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে কল দিব তুমি রেডি হয়ে নিচে নেমে আসিও তারপর আমরা দুজনে ঘুরতে যাবো কেমন? মোমো এদিক ওদিক তাকিয়ে কোনমতে বলে,, আচ্ছা। রিদান বলে,, তাহলে রাখি এখন কাল রেডি থাকিও গুড নাইট বাই!!”” বলে ফোন কেটে দেয়। মোমো কিছুক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ঘুমোতে চলে যায়।

(চলবে…)

#seeing_with_you
Episode – 14 #little_bit_jealous
Writer – Zaira Insaan

শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে আসে মোমো টাইম জানার জন্য মোবাইল অন করতেই দেখে রিদান এর মেসেজ- “বাহিরে লাঞ্চ করবো আমরা।” এটার দেখার পর মোমো মোবাইল অফ করে নিচে নেমে আসে রান্নাঘরে ঢুকে পড়ে তার মা রোকেয়া চুলায় বেগুন ভাজা করছেন আর শুঁটকি ভর্তা করতে লাগলেন এগুলো দেখে মন খারাপ হয়ে এলো মোমোর। তার শুকনো মুখ দেখে রোকেয়া জিজ্ঞেস করেন,, কিরে মুখটাকে বাংলার পাঁচের মতো করে রাখলি কেন? মোমো মুখ বানিয়ে বলে,, ড.রিদান বলছে আমার সাথে নাকি বাহিরে লাঞ্চ করবে।’ ‘ওহহ তো কি হয়েছে যাহ তোর আব্বুকে আমি বলে দিব’ মরিচ কাটতে কাটতে বলেন রোকেয়া। মোমো টেবিলে দুহাত রেখে দুলতে দুলতে বলে,, সব আমার প্রিয় খাবার করছো কিন্তু আমি খেতেই পারবো না”। রোকেয়া হেসে দিলেন মেয়ের কথায় তারপর বলেন,, তো রেস্টুরেন্ট থেকে এসে খেতে বসবি আবার, আচ্ছা গিয়ে রেডি হয়ে আয় জলদি”। মোমো “হুমম” বলে মায়ের গালে চুমু দিয়ে রুমে চলে যায়।

মোমো হেয়ার ড্রাই মেশিন দিয়ে চুল শুকিয়ে সুন্দর করে বেধে নেয়। পরনে তার গাঢ় নীল রঙের কুর্তি, চুল গুলো এক সাইড করে বাধা, চিকন লাইনার দিয়ে চোখ গুলো সুন্দর করে সাজানো, ঠোঁটে ক্রিম কালারের লিপস্টিক। হাতে ঘড়ি পড়ে, কাধে এক সাইডের ব্যাগ ঝুলিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে লাগল। মোবাইলে মেসেজ আসাতে তার ধ্যান ভাঙল, রিদানের মেসেজ- তোমার ঘরে প্রায় কাছাকাছি চলে আসছি, রেডি আছো? রিদানের মেসেজ পড়ে মোমো রিপ্লাই দেয়- জ্বি, আমি এখনি বের হচ্ছি ওয়েট!! লিখে নিচে নেমে মায়ের সামনে হাজির হয়ে বলে,, আম্মু আমাকে কেমন লাগছে? রোকেয়া তার দিকে তাকিয়ে বলে,, ঠিক আছে যাহ। মোমো রোকেয়া কে জরিয়ে ধরে গালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে যায়। কিছু দূর হাঁটতেই দেখে রিদান গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পরনে তার কালো ‌রঙের শার্ট ও কালো প্যান্ট চুলগুলো সুন্দর করে সাজানো। মোমো তার সামনে এসে বলে,, চলেন!! রিদান তার দিকে সম্পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় তারপর কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে বসে গাড়ি স্টাট দেয়।
বড় এক নামি দামি রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামায় রিদান। গাড়ি থেকে নেমে মোমোর গাড়ির দরজা খুলে হাত বাড়িয়ে দেয় মোমো ও মুচকি হেসে হাত ধরে গাড়ি থেকে নামে দুজনে মিলে রেস্টুরেন্টে ঢুকে কথা বলতে বলতে। দুজনে চেয়ারে বসে পড়ে রিদান হাতের ইশারায় ওয়েটার কে ডাকে ওয়েটার কিছুক্ষণের মধ্যেই খাবার নিয়ে আসে মোমো অবাক হয়ে বলে,, আপনি আগের থেকে…। “হুমম খাবার আগের থেকেই অর্ডার করে রাখছিলাম” বলে মুচকি হাসে দেয়। তারপর দুজনে মিলে খাবার খাওয়া আরম্ভ করে। খাবার শেষে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে মোমো বলে,, এখন? রিদান তার দিকে তাকিয়ে বলে,, এখন শপিং এ যাবা নাকি পার্কে যাবা? মোমো ব্রু কুঁচকে বলে,, শপিং? রিদান পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলে,, হ্যা আজকে সারাটাদিন তোমার সাথে মিলে কাটাবো, এখন বলো শপিং নাকি পার্ক? মোমো একটু চিন্তা করে বলে,, পার্ক”। রিদান তারপর বলে,, ওকে চলো। বলে গাড়িতে বসার জন্য ইশারা করে। কিছুক্ষণ পরেই রিদান পার্কের সামনে এসে গাড়ি থামায়। দুজনে গাড়ি থেকে নেমে ঢুকে পড়ে কিছুক্ষণ হেঁটেই রিদান মোমোর হাত ধরে আঙুলে আঙুল ঢুকিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে হাটতে লাগল। মোমো চমকে উঠে তাকায় সে এমন করবে তার ধারণা ছিল না মোমো ইতস্তত বোধ করলেও কিছু বললো না চুপচাপ আশেপাশে তাকিয়ে হাঁটতে লাগলো। অনেক হেঁটে তারা এক বেঞ্জে গিয়ে বসলো তখন মোমো চট করে হাত ছাড়িয়ে নিল রিদান ব্রু কুঁচকে তার দিকে তাকায় মোমো মাথা নিচু করে নখ কুটাচ্ছে। রিদান মুচকি হাসি দেয় দুজনের মধ্যে নিরবতা পরিবেশ সৃষ্টি হলো কারোর মুখে কোন কথা নেই। রিদান নিরবতা ভেঙ্গে বলে,, আনইজি ফিল করছো? মোমো হকচকিয়ে গেল কারণ সে এটায় ফিল করছে সে কোনমতে বলে,, না স্যার। রিদান মুখ বানিয়ে তার দিকে তাকায় দুজনে চোখে চোখ পড়ে মোমো বলে,, কি স্যার? রিদান মুখ লটকিয়ে বলে,, আমাকে স্যার ডাকবা না। মোমো ব্রু উঁচু করে বলে,, তো কি ডাকব? রিদান সামনের দিকে তাকিয়ে বলে,, যেটা মন চাই সেটা ডাকো কিন্তু স্যার ডাকবা না। মোমো চিন্তা করতে লাগল কি ডাকবে! কিন্তু ভেবে পাচ্ছে না ভাবনার মাঝেই রিদান বলে,, রিদান ডাকবা। মোমো চমকে বলে,, নাম ধরে? “হুম” বলল রিদান। মোমো চুপ করে যায় কারণ সে নাম ধরে ডাকবেই না হাজার বললেও ডাকবে না সে এমন।
রিদান দাঁড়িয়ে বলে,, চলো শপিং এ। মোমো ও দাঁড়িয়ে যায় রিদান তার হাত ধরে গাড়িতে উঠিয়ে বসালো। মোমো ও বসে পড়ে রিদান গাড়ি স্টাট দেয়।
গাড়ি মলের সামনে এসে ব্রেক ধরে রিদান ইশারায় গাড়ি হতে বের হতে বলে মোমো বেড়িয়ে আসে দুজনে মিলে মলে ঢুকে পড়ে। রিদান মোমোর হাত ধরেই হাঁটতে লাগল মোমো একবার হাতের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার রিদানের দিকে। রিদান তার হাত ধরে কাপড়ের দোকানে ঢুকে গেল তারপর বলল,, কোন কাপড় পছন্দ আমাকে বলো।” মোমো গিয়ে কাপড় দেখতে লাগল তার একটা কাপড় পছন্দ হলো। কাপড়টি কিনতে যাবে তার আগেই রিদান তাচ্ছিল্য ভাবে বলে,, ব্যাস একটায়? মোমো মাথা নাড়ল রিদান বিরক্ত হয়ে আরও অনেক কাপড় দেখতে লাগল চারটা কাপড় রিদানের পছন্দ হয় মোমোর হাত থেকে কাপড়টা নিয়ে পাঁচটা কাপড় একসাথে করে দোকানি কে বলল,, এই কাপড়গুলো প্যাক করে দাও।” মোমো হা হয়ে গেল কারণ তার এতগুলো কাপড়ের প্রয়োজন নেই। মোমো টাকা দিতে যাবে তার আগেই রিদান কার্ডের মাধ্যমে দিয়ে দিল। মোমোর বিরক্ত লাগল তার খরচ অন্য কেউ দেয় এটা তার পছন্দ না। রিদান তার পর এক এক করে তাকে জোর করে শপিং করিয়ে খরচ গুলো দিয়ে দিল। মোমো মনে মনে বলল,, “আসার উচিত ছিল না আমার নিজেকে এখন ফকির, ভিক্ষুক লাগছে ধ্যাত নেক্সট টাইম থেকে আসবোই না।”

ঘুরা ঘুরি করতে করতে রাত ৮টা বেজে যাই রিদান বলে,, আইসক্রিম খাবে? মোমোর খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু রিদান এতো গুলো টাকা খরচ করার ফলে তার আইসক্রিম খাওয়ার ইচ্ছা মরে গেছে তাই সে না বলে দেয়। রিদান জোর করে দুটো আইসক্রিম আইসক্রিম কিনে আনে মোমো মুখ মলিন হয়ে যায় কারণ মোমোর দুহাত ভরা সে খাবে কিভাবে। রিদান বুঝতে পেরে মোমোর দুহাত থেকে ব্যাগগুলো তার নিজের একহাতে নিয়ে নেয় তারপর অন্য হাতের আইসক্রিম তার দিকে এগিয়ে দেয় মোমো নিয়ে খেতে শুরু করে হাঁটতে লাগলো সে খেয়াল করে রিদান তার পাশে নেই পিছনে ফিরতেই দেখে রিদান তার দিকেই তাকিয়ে আছে একহাতে আইসক্রিম অন্য হাতে শপিং ব্যাগ গুলোর কারণে রিদান খেতে পারছে না মোমো গিয়ে আইসক্রিম টি খুলে দেয়। রিদান তারপর খাওয়া শুরু করে দুজনে মিলে রাস্তায় গল্প করতে করতে হেঁটে হেঁটে আইসক্রিম খাচ্ছে আর জোরে জোরে হাসছে।

অফিসের মিটিং শেষ করে গাড়ি করে বাসায় ফিরছিল মুরাক সেই রাস্তা দিয়ে। হঠাৎ করে রাস্তার এক পাশে তার চোখ যায় মোমো ও রিদানকে একসাথে দেখে ব্রু কুঁচকে এলো তার। মুহূর্তের মধ্যে মাথা গরম হয়ে গেল মোমো ও রিদানকে হাসতে হাসতে হাঁটতে দেখে। মুরাক রেগে বলে,, ওহহ আচ্ছা তারমানে এইগুলো করার জন্য ম্যাডাম ছুটি নিয়েছিল, এতো হাসাহাসির কিসের? ওয়েট রিদান তো ওকে পছন্দ করে তাই এমন করছে কিন্তু আমার মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে কেন? না না না মাথা গরম হচ্ছে না জাস্ট রিল্যাক্স‌ মুরাক, না রিল্যাক্স হতে পারছি না মোমো কে তো এক শিক্ষা দিতেই হবে। কথাগুলো রেগে বলে গাড়ি স্পিড বাড়িয়ে সেখান থেকে চলে যায়…

(চলবে…)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে