@@ sanam teri kasam @@
.
পর্ব : (১১/শেষ)
.
লেখক : Abdullah al ador mamun (কাল্পনিক লেখক)
.
–চুপ ফাজিল। (আম্মু)
.
আমাকে পাঠাচ্ছে ভালো কথা এই উটের বাচ্ছা নূরী কে
সাথে পাঠাচ্ছে কেনো।এমনিতে নূরীর জন্য শান্তি নাই
যখন তখন ধমক দেয়, মারার জন্য তাড়া করে। ওখানে তো
আমাকে একলা পাবে তখন কি করবে অাল্লাহ জানে।
নূরী কে আমার একটুও বিস্বাস হয় না যখন তখন যা খুশি
করতে পারে।
.
কি আর করা। ইচ্ছে না থাকার পরও নূরী কে নিয়ে ঢাকায়
আসতে হলো।
সবকিছু আগে থেকে ঠিক করে রাখায় কোন প্রবলেম
হলো না।
জ্যামে পড়ে নতুন বাসায় এসে পৌছাতে পৌছাতে রাত ২
টা বাজলো।
বাসায় ডুকে মাথা খারাপ হয়ে গেলো ইচ্ছে করছে নূরী
কে ঘুশি মেরে মেরে ভর্তা বানিয়ে দিই।
এত ঘন্টা ধরে জার্নি করে ক্লান্ত হয়ে গেছি, বাসায়
ডুকে একটা ঘুম দিবো তা আর হলো কোথায়।সব দোষ নূরীর
আব্বু বলছিলো সবকিছু ঠিক করে রাখবে কিন্তু নূরীর জন্য
কোন কিছুই হলো না ও যদি বারন না করতো তাহলে
ঘুমাতে পারতাম।
ক্ষিদেও লাগছে খুব, পেটের ভিতর ইঁদুর দৌড়াচ্ছে।
একটা বিছানার চাদর নিচে দিয়ে শুয়ে পড়লাম।জানি
ক্ষিদের কারনে ঘুম হবে না।এদিকে আসার পর থেকে
দেখছি নূরী অদ্ভুত ভাবে আমার দিকে তাকায়। এতদিন
হয়ে গেলো তবুও এখনো আমি নূরীর চোঁখের বাসা বুঝলাম
না।
.
–কি রে কি ভাবছিস।(নূরী)
.
–ইচ্ছে করছে তোরে পিটাই।(আমি)
.
–কেনো আমি কি করছি।(নূরী)
.
–কেনো তুই জানিস না কি করছিস।তোর জন্য আমাকে
নিচে শুতে হচ্ছে আজ।আমাকে ডিস্টার্ব করবি না আমি
ঘুমাবো।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমা আমি খেয়ে নিই।(নূরী)
.
–তুই খাবার ফেলি কোথায়। (আমি)
.
–কেনো আসার সময় তো শাশুড়ি মা দিয়েছিলো তোর
মনে নাই।(নূরী)
.
–তোরে দিছে তুই খা আমি খাবো না।(আমি)
.
–তুই না খেলে আমার কি আমি খেয়ে নিই।(নূরী)
.
জানি পাগলিটা খাবে না আমি না খেলে।দেখি না কি
হয়। ক্ষিদের কারনে ঘুম হচ্ছে না তবুও চুপ করে শুয়ে আছি।
.
–আদর খাবি না তুই।(নূরী)
.
–না খাবো না।তুই খা।(আমি)
.
–তুই জানিস না, তুই না খেলে আমি খেতে পারি না।খু্ব
ক্ষিদে পেয়েছে আর পারছি না সহ্য করতে।(নূরী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে আর কাঁদতে হবে না,আমিও খাবো।
(আমি)
.
–আমাকে খাইয়ে দিবি না।(নূরী)
.
–ঠিক আছে খাইয়ে দিবো চল,আর ছলনা করতে হবে না।
(আমি)
.
–আমি ছলনা করছি।(নূরী)
.
–আরে বাবা ভুল হয়ে গেছে এবার খেয়ে নেয় তো
পাগলি।খুব ঘুম পাচ্ছে। (আমি)
.
খাওয়া শেষ করতে করতে ৩:৩০ বাজলো।রাতও শেষ হয়ে
আসলো আর এখন যদি না ঘুমাই তাহলে কখন ঘুমাবো।
শুয়েছি মাএ সাথে সাথে নূরী এসে আমার বুকে মাথা
রেখে শুয়ে পড়লো। মনে হয় এতক্ষন নূরী এ সুযোগটার
অপেক্ষায় ছিলো।
.
৯ টার দিক ঘুম ভাঙ্গলো।তখনও নূরী ঘুমাচ্ছে। ঘুমানো
অবস্থায় যে মেয়েদের এত সুন্দর লাগে নূরী কে না
দেখলে বুঝতে পারতাম না।ইকবাল ভাইয়ের কাছে
শুনেছিলাম ঘুমানো অবস্থায় নাকি একটি মেয়ের
সৌন্দর্য ফুটে উঠে।আজ ইকবাল ভাইয়ের কথাটি সত্যি
মনে হচ্ছে।বেহায়া চোঁখ দুটো যেনো সরতে চাইছে না
নূরীর উপর থেকে।
নূরী তো আমার।নূরী কে তো আমি ভালোবাসি, হয়তো
কখনো মুখ ফুটে বলিনি এই যা।মুখে বলিনি বলে কি নূরী
কে ভালোবাসি না নাকি আমি তো পারবো না বাঁচতে
নূরী কে ছাড়া।
.
না এবার যেতে হবে প্রায় ১০ টা বাজতে চললো বাইরে
থেকে কিছু নিয়ে আসি পেটে মনে হয় ধর্মঘট করছে।
.
দুজনে নাস্তা করে ঘর গোছানোর কাজ শুরু করলাম।দুপুরের
মধ্যে কাজ শেষ করে বাইরে গিয়ে খাবার নিয়ে
আসলাম। গোসল শেষ করে এসে দেখি নূরী খাবার নিয়ে
বসে আছে।খাওয়া শেষ করে দুজনে একসাথে বাইরে বের
হলাম।কিছু জিনিসপত্র কেনাকাটা করার আছে।নূরী
আবার বাইরের খাবার খেতে পারে না।
.
কয়েকদিন বিশ্রাম নিয়ে কাজে মনোযোগ দিলাম।
অফিস শেষ করে বাসায় আসি আবার সকালে অফিসে
যাই।পাগলিটা সারাদিন অপেক্ষা করে থাকে কখন
আসবো আমি।
এতদিন হয়ে গেলো পাগলিটা কে নিয়ে কোথাও ঘুরতে
বের হইনি।পাগলিটা কে অালাদা করে কখনো সময় দিই
নাই।জানি পাগলিটার কোন অভিযোগ নেই আমার উপর
তবুও আমার কেমন যেনো অস্বস্তি হচ্ছিলো।
.
আব্বু আম্মু, বন্ধুরা সবাই আসলো। আমাদের ঘুছিয়ে নেয়া
সংসার টা দেখতে।আব্বু আম্মু আসার পর থেকে দেখছি
নূরীর সময় হয় না আমার সাথে কথা বলার। সবসময় এটা ওটা
নিয়ে ব্যস্ত থাকে। নূরী যে প্রেগন্যান্ট সেটা বুঝতে চায়
না। ওকে কতবার যে বুঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু সে
কিছুতেই বুঝতে চায়।ও বুঝতে চায় না ওর তলপেটে একটু
একটু করে বেড়ে উঠছে আমাদের সন্তান।
.
–নূরী তুই এমন কেনো।বলতো।তুই যদি এত দৌড়াদৌড়ি
করিস তাহলে আমাদের বাবুটার কি হবে।(আমি)
.
–তুই কি করে জানিস বাবু হবে। বাবুনিও হতে পারে।(নূরী)
.
–আচ্ছা যা ভুল হয়েছে, আমাদের সন্তান।(আমি)
.
–আমাদের নবাগত সন্তানের নাম কি রাখা যায় বলবো।
(নূরী)
.
–মেয়ে হলে বৃষ্টি রাখবো বলে দিলাম।(আমি)
.
–বৃষ্টি কি তোর gf ছিলো।ছেলে হলে মেঘ রাখবো বলে
দিলাম তুই তখন কোন প্রকার বাধা দিতে পারবি না।(নূরী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে, এখন থেকে তুই যদি বেশি
দৌড়াদৌড়ি করিস তাহলে আজ থেকে তোর সাথে কোন
কথা নেই।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে আর দৌড়াদৌড়ি করবো না,আমি আজ
থেকে বিছানা থেকে নামবো না। (নূরী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে নামতে হবে না তোরে আমি আছি না
তোর সেবা করতে।(আমি)
.
–তুই গিয়ে তোর অফিসের সেবা কর,আমার জন্য আমার
শাশুড়ি আছে না।(নূরী)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে,এখন ঘুমা।(আমি)
.
১০ এপ্রিল আজকে ওর ডেলিভারির তারিখ।পাগলিটার
তলপেটে বেড়ে উঠা নবজাতক আজকে পৃথিবীর মুখ
দেখবে।পৃথিবীতে আসবে আমার আর নূরীর সন্তান। এই
দিনটার জন্য ১০ মাস ১০ দিন দরে অপেক্ষা করছি।
পাগলিটা আমাদের সন্তানের নাম ঠিক করে রাখছে,
মেঘ।যদি মেয়ে হয় তাহলে বৃষ্টি।
.
অপারেশন রুমে নিয়ে যাওয়ার আগে শুধু একটি কথাই
বলছিলো পাগলিটা, “আমি যদি ফিরে না আসি তোর
বুকে তাহলে তুই আমাদের সন্তান কে দেখে রাখিস আর
প্রতিদিন আমার কবরে একটি করে গোলাপ রাখবি”।
.
সবাই অধির আগ্রহে অপেক্ষা
করছে আর আল্লাহ কে ডাকছে।আল্লাহ যেনো আমার
নূরী কে আমার কাছে ফিরিয়ে দেয়।আমার আর কিছুই চাই
না আমি আমার নূরী কে চাই।আল্লাহ তুমি আমার নূরী কে
ফিরিয়ে দাও।
.
প্রায় ৩ ঘন্টা পর ডাক্তার বের হয়ে আসলো।
সবাই ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে আছি, ডাক্তার
বললো,” আমরা অনেক চেষ্টা করছি কিন্তু মা মেয়ে
কাউকে বাঁচাতে পারিনি”।
.
আমার মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো কি করবো
আমি বুঝতেছি না।আমার সবচেয়ে কাছের মানুষটি
পৃথিবীতে আর নেই এটা যেনো আমি বিস্বাস করতে
পারছি না। দু-চোঁখ দিয়ে অবিরাম জলের ধারা বয়ে
যাচ্ছে।আমি যেনো সব শক্তি হারিয়ে ফেলছি।
.
মা মেয়ে দুজনের করবে প্রতিদিন একটা করে গোলাপ
রাখি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে।
ওরা তো চলে গিয়ে মুক্ত হয়ে গেছে। ভালো থেকে নূরী
ভালো তুমি আমাকে একা করে দিয়ে।
.
.
.
★★★সমাপ্ত ★★★