#pyar_tho_hona_hi_tha❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ১৬
।
।
আরশি ওর বাবার মুখে ওর বাসায় যাওয়ার কথা শুনে অবাক হয়ে সবার দিকে তাকায়।
আরশিঃতোমার সাথে যাবো মানে? আমি তো আমার বাড়ি যাবো।
নিলয় গম্ভির ভাবে বললো,”ওটা তোমার বাড়িই আরশি। তুমি তোমার বাড়িতেই যাচ্ছো। আর এখন থেকে সেখানেই থাকবে।”
আরশিঃএখন থেকে ওখানেই থাকবো মানে? আমি আমার সংসার ছেড়ে কোথাও যাবো না।
নিলয়ঃওটা তোমার সংসার না। আর তুমি ও আমাকে কখনো স্বামী হিসেবে মানো নি।
আরশিঃআগে মানতাম না। বাট এখন মানি। আর আমি আমার বাড়িতেই যাবো। ওইটা আমার বাবার বাড়ি। আর বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িই সব একটা মেয়ের জন্য।
নিলয়ঃআমি বলছি তো যাবে না ওখানে। তুমি আমার কাছে সেইফ না বুঝতে পারছো না কেনো?
আরশিঃসেইফ না মানে কী? সব স্ত্রীই তার স্বামির কাছে সব থেকে বেশি সেইফ।
আরশির বাবাঃনিলয় প্লিজ আমার মেয়েটাকে এভাবে তারিয়ে দিও না। ও তোমার কাছে থাকতে চায়।
নিলয়ঃআংকেল আপনি বুঝতে পারছেন না। ও আমার কাছে থাকলে……
নিলয়ের কাকুঃনিলয় এভাবে বলছিস কেনো? ওর এক্সিডেন্ট তো তুই করাস নি। আর শুন কোনো এক্সিডেন্টই তর জন্য হয় নি। কেনো এভাবে নিজেকে দোষ দিস?
আরশিঃকাকু আমি ওই বাড়িতে যাবো। প্লিজ নিয়ে যান।
কেউ নিলয়ের কথা শুনে নি তাই নিলয় কাউকে কিছু না বলে রেগে এখান থেকে বেরিয়ে যায়।
মামনিঃআরশিকে নিয়ে ওর বাসায়ই চলো। আমি না হয় কিছুদিন ওখানে থেকে ওর যত্ন নেবো।
আরশিঃআরে মামনি চাপ নিও না। আমার কেয়ার উনাকে দিয়েই করাবো। স্বামী শুধু মুখে মুখে বললেই হবে নাকি। কাজে করে দেখাতে হবে না।
আরশির বাবাঃতাহলে চল তকে বাসা পর্যন্ত দিয়ে আসি।
মামনি আরশির বাম হাত ধরে নিয়ে যান। ডান হাতে প্লাস্টার লাগানো। নিলয় গাড়ি নিয়ে কোথায় যেনো চলে গেছে। নিলি ও এখানে নেই। তাই আরশির বাবা মামনি আর কাকুই ওকে বাসায় নিয়ে যান।
ঘাসের উপর নিলির কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে তীব্র। কখন দেকে নিলি জিজ্ঞেস করছে কিছু হয়েছে কিনা কিছুই বলছে না। নিলির খুব রাগ উঠতেছে। কিছু না বললে এভাবে নিয়ে আসলো কেনো?
নিলি এবার একটু রেগে আর জোরে বললো,”কিছু বলবেন? না আমি চলে যাবো?”
তীব্র চোখ খুলে নিলির দিকে তাকিয়ে বললো,”এভাবে থাকতে আমার ভালো লাগছে।”
নিলিঃদেখুন হসপিটালে ভাইয়া মা বাবা আমাকে খুজতে পারে। খুজে না পেলে টেনশন করবে। আর আপনি এখানে চুপচাপ বসে আছেন কিছুই বলছেন ও না।
তীব্রঃআই নোউ এখন আমার এসব বলাটা ঠিক হবে না। বাট বলতে হচ্ছে। বিয়ে করবে আমায়?
নিলি চমকে উঠে তীব্রর দিকে তাকালো। নিলি অবাক হয়ে বললো,”মানে? এখন?”
তীব্রঃহুম। এখন মানে আজই না। আমার মাকে তো তুমি চেনো না। খুব জেদি। যা বলেন তাই করেন। বাবা আমার যেকোনো ডিসিশন মেনে নিলে ও মা কখনো মেনে নেন না। উনার কাছে ঠিক হলেই মানেন। এখন উনার কাছে নেহা ঠিক তাই তুমি যতই ভালো হউ মানবে না তোমাকে।
নিলিঃআপনি তো বলেছিলেন সব সামলে নেবেন?
তীব্রঃনেবো তো। জোর করে কি আমাকে বিয়ে দিতে পারবে? বাট আমাদের বিয়ে হয়ে গেলে মায়ের কাছে আর কোনো ওয়ে থাকতো না।
নিলিঃআমি ভাইয়া বাবার ইচ্ছা ছাড়া কিছুই করতে পারবো না।
তীব্রঃআমি জানি। আমি তো ভেবেছিলাম ঢাকা এসে ডিরেক্ট গিয়ে তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলবো। বাট এখন তো…….
নিলিঃআমি নিজ থেকে বাসায় কাউকে কিছু বলতে পারবো না। আগেই বলে দিচ্ছি এত সাহস আমার নেই। আর আমরা রিলেশনে গেছিই ২দিন হলো। এখনি……
তীব্র অবাক হয়ে বললো,”তোমার প্রেম করার এত ইচ্ছে?”
নিলিঃআরে না। আমার তো ইচ্ছে বিয়ের পর প্রেম করার। বিয়ের আগে না। এটা তো এমনি বললাম।
তীব্রঃহুম বুঝেছি। এখন একমাত্র বাবাই পারবে কিছু করতে। আর এখন যাই করি মাকে লুকিয়ে করতে হবে। পরে জানলে কিছু করতে পারবে না।
নিলিঃআমি আন্টির আশির্বাদ না নিয়ে কিছু করবো না।
তীব্রঃতাহলে আমাকে বিয়ে করার কথা ভুলে যাও।
নিলি প্রথমে অবাক হয়ে তীব্রর দিকে তাকালো। তারপর চোখ সরিয়ে বললো,”ওকে।”
তীব্রঃকোথায় জোর কাটিয়ে বলবে। ভুলবো কেনো? আমাকেই বিয়ে করতে হবে তোমায়। তোমাকে আমি আর ছারবো না। তা না করে বলো ওকে? তোমাকে এত সহজে আমি ছাড়ছি না সুইটহার্ট।
নিলিঃ😐
তীব্রঃব্রেকফাস্ট করেছো?
নিলিঃনা।
তীব্রঃআমি ও করিনি। চলো কিছু খেয়ে নেই। খিদে পেয়েছে।
আরশি বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে আছে। ডান হাত বালিশের উপর পরে আছে। নিলয় এখনো আসে নি বাসায়। আরশি ফোন দিয়েছিলো ধরে নি। এক হাত দিয়ে মেসেজ ও লিখতে পারছে না। মামনি আরশির জন্য সূপ বানাতে গেছেন। আরশির বাবা আর কাকু ড্রয়িংরুমে কথা বলছেন। মামনি সুপ নিয়ে এসে আরশিকে খাইয়ে দেন। আরশি নিলয়ের কথা বলতে চেয়ে ও বলতে পারছে না। লজ্জা পাচ্ছে।
মামনি দরজার কাছে গিয়ে বললেন,”নিলয় একটা কাজে আটকে গেছে। চলে আসবে কিছুক্ষণ এর মধ্যে। তুমি চিন্তা করো না।”
মামনি চলে যেথেই আরশি মনে মনে ভাবে,”আমাকে এটা একবার বললে কি হতো।”
তীব্র রেষ্টুরেন্ট এ কিছু খেয়ে নিলিকে নিয়ে সোজা ওর বাবার অফিসে চলে যায়। নিলির তো ভয়ে হাত পা কাপছে। হঠাৎ এভাবে নিয়ে চলে আসবে ভাবে নি নিলি।
নিলিঃশুনুন না।
তীব্রঃকি?
নিলিঃআমি ভেতরে ডুকবো না। মা বাবা টেনশন করছে। আমাকে বাসায় যেথে হবে।
তীব্রঃহুম যাবে। ৫মি।
তীব্র নিলির হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যায়। আর সোজা চলে যায় ওর বাবার কেবিনে। উনি রুমেই ছিলেন। তীব্রর সাথে একটা মেয়েকে দেখে অবাক হয়ে উনি উঠে দারান।
তীব্রঃবাবা তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।
তীব্রর বাবাঃকি? আর ও কে?
তীব্রঃওর নাম নিলি। বাবা আমি নেহাকে না ওকে বিয়ে করতে চাই। আমরা ২জন ২জনকে ভালোবাসি। ও নিলয় চৌধুরির ছোট বোন। তুমি তো উনাকে চিনোই।
তীব্রর বাবা অবাক হয়ে তীব্রর পেছনে তাকালেন। কারন নিলয় এখানেই বসে ছিলো। নিলি তো মাথা নিচু করে আছে তাই দেখে নি। আর তীব্ররও ওর বাবার দিকে নজর ছিলো।
নিলয় দারিয়ে বললো,”রিয়েলি?”
নিলি চমকে উঠে পেছনে তাকায়। নিলয়কে দেখে গলা শুকিয়ে গেছে। আজ প্রথম ওর নিলয়কে ভয় করছে। তীব্র ও একটু একটু ভয় পাচ্ছে।
নিলয় গম্ভির গলায় বললো,”নিলি তুই তো আমাকে এসব একবারো বললি না।”
নিলিঃভাইয়া আমি…..
নিলয়ঃআমি তর কাছ থেকে এটা একদম এক্সপেক্ট করি নি।
তীব্রঃভাইয়া ওর কোনো……
তীব্রর বাবাঃতীব্র তোমার বিয়ে কিছুদিন পর। আর তুমি এখন বলছো…..
তীব্রঃবাবা আমার কথাটা তো শুনো।
তীব্রর বাবাঃবলো।
তীব্রঃনিলিকে আমি অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি। প্রপোজ ও করি। বাট ও আমার প্রপোজাল রিজেক্ট করে দেয়। আমিও ওকে জোর করিনি। আমি শুধু চেয়েছি ও মন থেকে আমাকে নিজ ইচ্ছেতে এক্সেপ্ট করুক। নাউ সি লাভস মি। বাট মা নেহার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে দেয়। আমি মাকে বলেছিও বিয়ে করতে চাই না আর এত জলদি তো নয়ই। নিলির কথা বলিনি। তুমি তো মাকে চিনোই। আমি না বললেও মা কখনো শুনেন না মায়ের কাছে যা ঠিক মনে হয় তাই করেন। আমি এত জলদি নিলিকেও বিয়ে করতে চাই না। বাট যখনই বিয়ে করি ওকেই করতে চাই। খুব ভালোবাসি। আর ভাইয়া আমি জানি আপনি নিলিকে খুব ভালোবাসেন। আপনার মতো ভালো না বাসলেও আপনার মতো ওকে আগলে রাখার চেষ্টা করবো। প্লীজ ওর থেকে আমাকে আলাদা করবেন না। আর নেহাকে আমি কোনোভাবেই বিয়ে করবো না।
তীব্রর বাবাঃতীব্র তুমি বুঝতে পারছো না। তোমার মা এটা কখনোই মানবে না। তুমি তো জানো তোমার মা আমার কথাও একদম শুনে না।
তীব্রঃবাবা তোমরা কি চাও? আমি যাকে ভালোবাসি না তাকে বিয়ে করে নিজের লাইফ আর সাথে নেহার লাইফটা ও নষ্ট করতে। আর নেহার লাইফ নষ্ট হবে কেনো বলছি ও তো সব জেনেই এসব করছে।
নিলয়ঃতুমি এসব আমাদের আগে বলো নি কেনো?
তীব্রঃআমি চেয়েছিলাম যখন নিলি আমার প্রপোজাল এক্সেপ্ট করবে তখনি আপনাকে জানাবো। বাবার সাথে কথা বলার পর আপনার কাছেই যেতাম ভাইয়া।
নিলয়ঃনিলি তুই তীব্রকে ভালোবাসিস?
নিলি মুখে কিছু বললো না। শুধু মাথা নাড়ালো।
নিলয়ঃমুখে বল।
নিলিঃভালোবাসি ভাইয়া।
তীব্র খুশি হয়ে নিলির দিকে তাকালো। এভাবে সবার সামনে ভালোবাসি বলবে ভাবে নি তীব্র।
তীব্রর বাবাঃনিলিকে আমার ভালোই লেগেছে খুব মিষ্টি মেয়ে। বাট তোমার মাকে নিয়েই সব প্রবলেম। নিলয় এবার তুমি বলো কি করবো?
নিলয়ঃওরা আমাদের সামনে ভয় না পেয়ে সাহস নিয়ে বলছে ভালোবাসে। তার মানে ওরা সত্যিই একে অপরকে ভালোবাসে। আপনি আন্টির সাথে এটা নিয়ে একবার কথা বলে দেখুন আংকেল। আর আন্টি তো আমাকে চিনেন। আমি টাইম পেলে আপনার বাসায় গিয়ে আন্টির সাথে কথা বলবো। ওরা এখনো অনেক ছোট। আমরা রাজি না হলে উল্টো পাল্টা কিছু করে ফেলতে পারে।
তীব্রর বাবাঃএকদম ঠিক বলেছো। আমি বাসায় গিয়েই কথা বলবো। দেখি বুঝাতে পারি কিনা।
নিলয়ঃআর ওরা কোনো কিছু না লুকিয়ে ডিরেক্ট আমাদের কাছে এসেছে জানাতে………
তীব্রঃভাইয়া আমি চাই নি আমাদের জন্য ফিউচারে আমাদের ফ্যামিলি কোনো ধরনের প্রবলেম ফেইস করুক।
নিলয়ঃআই লাইক ইউর আইডিয়া। এখন তুই চল আমার সাথে বাসায়। পরে এসব দেখবো।
নিলয় নিলিকে নিয়ে চলে যায়। তীব্র ওর বাবার দিকে তাকায়। তীব্রর বাবা তীব্রর কাছে এসে তীব্রর কাধে হাত রেখে বলেন,”ডোন্ড ওরি মাই সন।”
তীব্রঃহুম।
নিলয় নিজের রুমে ডুকে দেখে আরশি বিছানায় হেলান দিয়েই শুয়ে আছে। নিলয় গিয়ে আরশির পাশে বসলো। মুখটা নিচু করে ডান হাতে একটা চুমু খেলো। আর মনে মনে বললো,”তোমার যেই ক্ষতি করতে চাইবে তাকেই কঠিন শাস্ত্রি পেতে হবে। চারবো না কাউকে।”
আরশি ঘুমায় নি শুধু চোখ বন্ধ করে ছিলো। নিলয় যে ওর হাতে চুমু খেয়েছে ওটা ও বুঝতে পারে। একটু পর চোখ খুলে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,”কোথায় ছিলেন এতক্ষণ?”
নিলয়ঃকিছু কাজ ছিলো। তুমি কেনো এই বাসায় এলে। বলেছিলাম চলে যেথে?
আরশিঃআমি আমার হাজবেন্ড এর বাড়িতে এসেছি। বারণ করার আপনি কে? হুহ? আপনাকে এত সহজে ছারছি না মি.হাজভেন্ড।
নিলয়ঃ😐খেয়েছো?
আরশিঃউম…মামনি সুপ খাইয়ে গেছিলেন। আমি ঝাল কিছু খাবো। নিয়ে আসুন তো।
নিলয়ঃওকে।
নিলয় মামনি কাকু সবাইকে বাসায় পাটিয়ে দিয়েছিলো। আর নিলিকে ওর বাসায় ড্রপ করে দিয়ে এসেছে। বাসায় রান্নার লোকও নেই। আরশিই সব রান্না করতো। তাই রান্নার লোকের ছুটি। নিলয় কিচেনে এসে ভাবছে এবার কি করবে। ও একা হলে তো হোটেল থেকে খাবার নিয়ে আসতো। বাট আরশি অসুস্থ। হোটেলের খাবার খাওয়ানোটা ঠিক হবে না। নিলয় ফোন বের করে রান্নার মাসিকে আসতে বললো। উনার আসতে রাত হবে। এখন আরশিকে ওরই কিছু করে খাওয়াতে হবে। নিলয় নুডলস বের করলো। আর ইউটুব দেখে পুরো দেড় ঘন্টা লাগিয়ে নুডলস রান্না করে আরশির জন্য নিয়ে গেলো।
আরশি নিলয়কে দেখে ভ্রুকুচকে ওর দিকে তাকিয়ে বললো,”কখন আপনাকে খাবার নিয়ে আসার জন্য বলেছিলাম?”
নিলয়ঃআমি তো রান্না করতে পারি না প্রথম ট্রাই করেছি। তাই লেইট হয়ে গেছে।
আরশিঃ😳আপনি রান্না করছেন?
নিলয়ঃহুম।
আরশিঃওহ মাই গড। রিয়েলি। জলদি নিয়ে আসুন। কি সৌভাগ্য আমার।
নিলয় বিরবির করে বললো,”টেস্ট করে নিয়ে আসা উচিৎ ছিলো যদি ভালো না হয়। ওহ গড দেখো তুমি।”
আরশিঃখাইয়ে দিন।
নিলয়ঃকিইই?
আরশিঃশুনতে পান নি। আমি এই ভাঙ্গা হাত নিয়ে খাবো কীভাবে?
নিলয় একটু আরশির মুখে দিলো। আরশি নুডলস মুখে নিয়ে চুপচাপ কিছুক্ষণ নিলয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলো।
নিলয়ঃসরি। একচুয়েলি প্রথম তো তাই। আমি এক্ষনি হোটেল থেকে খাবার নিয়ে আসছি তোমার জন্য।
আরশিঃআরে কোথায় যাচ্ছেন। খাবার দারুন হয়েছে। একটু টেস্ট করে দেখুন। শুধু ঝাল একটু বেশি হয়েছে। আমি ঝাল বেশিই খাই।
নিলয় সেইম চামচ দিয়ে নিজে একটু খেলো আসলেই খারাপ হয় নি। শুধু ঝালটা একটু বেশি হয়েছে। আর নিলয় ঝাল কম খায়।
আরশিঃআমার বরটা তো খুব কাজের। এরকম বরই তো চেয়েছিলাম। এবার থেকে আপনিও মাঝে মাঝে রান্না করবেন।
আরশির কথা শুনে নিলয়ের কাশি শুরু হয়ে গেলো। সামান্য নুডলস করতেই ওর যা অবস্থা হয়েছিলো। প্রতিদিন করলে তো……..
আরশিঃকি হলো? জল খান।
নিলয় টেবিল থেকে গ্লাস তুলে একটু জল খেয়ে নিলো। তারপর আরশিকে পুরোটা খাইয়ে দিলো। নিলয় দরজার কাছে গিয়ে বললো,”রিহান কে?”
আরশি অবাক হয়ে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,”কেনো?”
নিলয়ঃযা বলেছি তার উত্তর দাও। এত প্রশ্ন করো কেনো?
আরশিঃআমরা একি ক্লাসে একি ডিপার্টমেন্টে পরি। বাট ও আমার ফ্রেন্ড না।
নিলয়ঃডিস্টার্ব করে? কাল কিছু হয়েছিলো ভার্সিটিতে?
আরশি কালকের সবকিছুই নিলয়কে বললো। সব শুনে নিলয় এখান থেকে চলে গেলো। এবার সব ক্লিয়ার ওর কাছে। থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে ধাক্কা দিয়েছিলো। নিলয় খোজ নিয়ে একজনকে পায় যে আরশিকে ধাক্কা দিতে দেখেছে। বাট ছেলেটার মুখ দেখেনি। বাইকের নাম্বার নোট করে রেখেছিলো। নাম্বারের মাধ্যমেই নিলয় রিহানকে পায়। রিহান এখন নিলয়ের লোকের কাছে আছে। মার খাচ্ছে।
নিলয় প্লেট রেখে রুমে আসে। আর ল্যাপটপ নিয়ে সোফায় বসে কাজ করে। আরশিকে এই অবস্থায় রেখে আর অফিসে যাওয়া পসিবল না। আরশি নিলয়ের দিকে একনজরে তাকিয়ে আছে। নিলয় বুঝতে পারছে বাট ও চোখ তুলে দেখছে ও না।
সন্ধ্যার দিকে রান্নার মহিলাটা বাসায় আসে। কিচেনে গিয়েই উনার চোখ কপালে। উনি চোখ বড় বড় করে নিলয়ের দিকে তাকান। নিলয় আস্তে করে বললো,”সরি।”
উনি মুচকি হেসে বললেন,”তুমি রান্না করছিলে?”
নিলয়ঃহুম। বাসায় কেউ নেই। আরশি কিছু খেতে চেয়েছিলো তাই……
মহিলাঃআচ্ছা। আমি রান্না ঘড় পরিষ্কার করে রাতের রান্না তৈরি করছি।
নিলয় উপরে চলে যায়। রুমে গিয়ে দেখে আরশি ওর বাম হাত দিয়ে ডান হাত তুলার চেষ্টা করছে বাট পারছে না।
নিলয়ঃকি হয়েছে? উঠার চেষ্টা করছো কেনো?
আরশিঃওয়াশরুমে যাবো।
নিলয় আরশিকে ধরে নিয়ে গেলো। তারপর আবার নিয়ে আসলো। এনে বিছানায় শুয়ালো।
রাতে নিলয় নিজের হাতেই আরশিকে খাইয়ে দিলো। হাতে মাসাজ করে দিলো। তারপর আরশির পাশে শুয়ে পরলো। আরশির ইচ্ছে করছিলো নিলয়কে বলতে”আপনার বুকে একটু জায়গা দেবেন?” এই কথাটা গলায় এসেই আটকে গেলো মুখ দিয়ে আর বলতে পারলো না।
।
।
চলবে?