pyar_tho_hona_hi_tha Part-13

0
2161

#pyar_tho_hona_hi_tha❤
লেখা- পূজা
পর্ব-১৩


আরশির বাবা নিলয়ের সাথে অনেকক্ষণ কথা বললেন আরশি ও পাশে বসেছিলো। আরশি তো শুধু নিলয়ের দিকে তাকিয়েই থাকে। নিলয়ের দিকে তাকালে ও নিরবকে ফিল করে। মনে করে এটা নিরবই। এতদিন বুঝেনি কারন এতদিন তো ও নিলয়ের দিকে তেমনভাবে তাকায়ই নি। এত গভিরে গিয়ে ভাবে নি। নিরব থেকে নিলয় একটু আলাদা। নিরব তো সবসময় আড্ডা মজা অন্যকে খুশি করা এসব করতো। নিরব মানুষকে হাসাতে খুব ভালোবাসতো খুব চঞ্চল ছিলো। বাট নিলয় একটু শান্ত। একটু কম কথা বলে।

আরশির বাবাঃআরু মা।

আরশিঃবলো।

আরশির বাবাঃআজ কি তরা এখানে থাকবি?

আরশি নিলয়ের দিকে তাকালো। নিলয় মাথা নিচু করে বসে আছে। আরশি বললো,”উনি যদি বলেন?”

নিলয়ঃতুমি থেকে যাও। আমি চলে যাবো। কিছু ইম্পর্টেন্ট কাজ আছে আমার।

আরশিঃনা। তাহলে আমি ও যাবো।

নিলয়ঃকেনো? এতদিন পর এসেছো। থেকে যাও।

আরশির বাবাঃনা ঠিক আছে। অন্যদিন না হয় এসে থেকে যেও। বাট লাঞ্চ না করে চারবো না।

আরশিঃতাহলে আমি কিচেনে গিয়ে রান্না করা শুরু করি।

আরশির বাবা অবাক হয়ে বললেন,”তুই রান্না করতে পারিস?”

আরশি একটু ভাব নিয়ে বললো,”তোমার মেয়ে সংসারি হয়ে গেছে বাপি। রান্না তো একটা সাধারন বিষয়। আমি সব করতে পারি।”

নিলয়ঃ🤯

আরশির বাবাঃতাই নাকি। বাহ! আমার মেয়ে এত বড় হয়ে গেছে। আমি তো বুঝতেই পারি নি।

আরশিঃবাপি আমি আবার পড়াশুনাটা স্টার্ট করতে চাই।

আরশির বাবাঃতুই চাইলে আমি প্রিন্সিপাল এর সাথে কথা বলবো।

আরশিঃওকে বাপি। আমি যাচ্ছি রান্না করতে।

আরশি চলে যায় কিচেনে। আরশির বাবা নিলয়কে বললেন,”আমি বুঝতেও পারি নি আমার মেয়েটা এত বড় হয়ে গেছে। নিজেকে খুব সুন্দর সামলে নিচ্ছে। আমার সেই ছোট্ট আরু আর ছোট নেই। আমার মেয়েটাকে একটু দেখে রেখো বাবা। কখনো ওকে কষ্টকে ছুতে দেই নি। সেই মেয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করছে।”

নিলয়ঃআংকেল আপনার আমার উপর বিশ্বাস নেই?

আরশির বাবাঃনিজের থেকেও বেশি আছে।

নিলয়ঃতাহলে এসব নিয়ে আর ভাববেন না। আরশিকে হাসিখুশি রাখার দায়িত্ব আমার। ও আমার স্ত্রী। স্বামী হিসেবে সব দায়িত্ব পালন করবো আমি।

আরশির বাবাঃআমি জানি তুমি আমার মেয়েকে সুখে রাখবে তাই তো এতদিন এত নিশ্চিন্তে ছিলাম। এসব নিয়ে কখনো ভাবি নি।

আরশির বাবা কিছুক্ষণ পর উনার রুমে চলে গেলেন একটু কাজ আছে বলে। নিলয় একা একা ড্রয়িংরুমে বসে আছে। বোর হচ্ছে তাই নিলয় কিচেনের দিকে চলে গেলো আরশি কি করছে দেখার জন্য। নিলয় গিয়ে দরজার কাছে দারালো। আরশি শাড়ির আঁচল কমড়ে গুজে রান্না করছে। বাড়ির গিন্নি লাগছে। আরশি আর নিলয়ের রিলেশন আর ৪\৫টা স্বামী স্ত্রীর রিলেশন এর মতো হলে এখন নিলয় গিয়ে পেছন থেকে আরশিকে জরিয়ে ধরতো।

আরশি পিছনে তাকিয়ে নিলয়কে দেখে বললো,”এইভাবে দারিয়ে আছেন কেনো? আমাকে হেল্প করুন। স্বামীর দায়িত্ব পালন করুন। ফ্রিজ থেকে মাংস আর কাচা মরিচ এনে দিন।”

নিলয় আরশির কথায় ফ্রিজ থেকে মাংস আর মরিচ এনে দিলো। আবার আরশি বললো,”পেয়াজ কাটতে পারেন।”

নিলয়ঃনা!

আরশিঃআমি বলে দিচ্ছি। আপনি কাটেন। প্রথমে এটার খুসা চারাবেন তারপর কুচিকুচি করে কাটবেন।

নিলয় আমতা আমতা করে বললো,”শুনেছি পেয়াজ কাটলে নাকি চোখ খুব জ্বলে। আমি……”

আরশি মুচকি হেসে বললো,”আমি জানালা খুলে দিচ্ছি। বাতাস থাকলে চোখ জ্বলে না।”

নিলয় পেয়াছ কাটছে আরশি মাংশ। এভাবে ২জন মিলে রান্নাটা করে নিলো। দুপুর ১:৩০এ ওদের রান্না শেষ হলো।

আরশিঃআপনি শাওয়ারটা নিয়ে নিন। ভালো লাগবে।

নিলয়ঃড্রেস তো আনি নি।

আরশিঃবাপির একটা শার্ট পরতে পারবেন। আপনি আসুন। আমি দিচ্ছি।

আজ প্রথম নিলয় আরশির রুমে ডুকেছে। রুমে নিরব আর আরশির একটা ছবিও আছে। নিলয় ছবিটার কাছে গেলো। আর আরশি গেলো নিলয়ের জন্য কাপড় আনতে।

আরশি ওর বাবার একটা শার্ট আর পেন্ট এনে নিলয়কে দিলো। নিলয় এগুলো নিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে গেলো। আরশি বেডশিট পালটিয়ে নিলো। রুম থেকে বেরবে তখনি নিলয়ের ফোন বেজে উঠলো। আরশি নিলয়ের ফোন হাতে নিলো। ওর ফ্রেন্ড পিয়া ফোন দিয়েছে। আরশি ভাবলো পিয়াকে তো ও চিনেই রিসিভ করলে প্রবলেম হবে না। তাই ফোন রিসিভ করে নিলো।

আরশি হ্যালো বলার আগেই পিয়া বললো,”হ্যালো নিলয়। আজ আমার সাথে একটু দেখা করবি। কাল চলে যাবো এখান থেকে তর থেকে অনেক দুরে। আর কখনো আসবো না। আমি জানি আমার এখানে থাকা না থাকায় তর কিছু আসে যায় না। তবুও বললাম। তকে আমি কোনো কিছুর জন্য দোষ দিচ্ছি না। আর দেবো ও না কখনো। শুধু তকে শেষ বারের মতো একটু কাছ থেকে দেখতে চাই। প্লিজ দেখা করবি প্লিজ। বেশি টাইম লাগবে না একটু।”

পিয়ার কোনো কথাই আরশি বুঝতে পারছে না। এসব কি বলছে ও। নিলয়কে এভাবে কেনো বলছে দেখা করার জন্য।

পিয়া আবার বললো,”হেই নিলয় কথা বলছিস না কেনো?”

আরশি কিছু না বলে ফোন রেখে দিলো। কিছুক্ষণ পর নিলয় ওয়াশরুম থেকে বেরলো। আরশির হাতে ওর ফোন দেখে ভ্রুকুচকে আরশির দিকে তাকালো। আর বললো,”কেউ ফোন দিয়েছিলো?”

আরশিঃহুম।

নিলয়ঃকে?

আরশিঃপিয়াআপু।

নিলয়ঃওহ! কি বলেছে?

আরশিঃকাল উনি চলে যাবেন। শেষ বারের মতো আজ একবার দেখা করতে বলেছেন।

নিলয়ঃওহ। ওকে।

আরশিঃপিয়াআপুর সাথে আপনার কিসের রিলেশন?

নিলয়ঃমানে?

আরশিঃউনি যেভাবে দেখা করার কথা বলেছেন মনে হলো উনি আপনার শুধু ফ্রেন্ড না। ফ্রেন্ড থেকে ও বেশি কিছু। উনি জানেন না ফোনটা আমি ধরেছি। উনি আপনি মনে করে কথা বলেছেন।

নিলয় কিছুক্ষণ চুপ থাকলো। আরশি নিলয়ের দিকে উত্তর পাওয়ার আশায় তাকিয়ে আছে। নিলয় চুলটা ভালো করে মুচে টাওয়ালটা আরশির হাতে দিলো। তারপর বিছানায় বসে বললো,”ও আমাকে ভালোবাসে। আর ওর সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো।”

আরশিঃকিইইই?

নিলয়ঃআমি কখনো ওকে ভালোবাসি নি। শুধু বেষ্টফ্রেন্ড ভেবে এসেছি। বাট ও নাকি আমাকে প্রথম থেকেই ভালোবাসতো। ওর জন্যই আমি বিয়েতে রাজি হতে বাধ্য হই। সব ফ্রেন্ডরা অনেক রিকুয়েস্ট করে। নিরব আর তোমার বিয়ের সাথেই আমাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। বাট…….তারপর ওদের না জানিয়েই আমাদের বিয়েটা হয়ে যায়। পরে যখন ও জানে খুব রাগারাগি করে। আর তোমার সাথে দেখা করতে চায়। বাট আমি বারণ করে দেই। আমি ভেবেছিলাম ও তোমার সাথে দেখা করে উল্টো পাল্টা কিছু করবে। ও আমাকে প্রমিস করেছিলো। কিছুই করবে না। শুধু আমার ফ্রেন্ড হয়ে দেখা করবে। তাই সেদিন ওদের আসতে বলেছিলাম।

আরশিঃউনাকে বিয়ে করবেন কথা দিয়ে ও করেন নি। কেনো? এটা আপনি একদম ঠিক করেন নি?

নিলয়ঃআমি ওকে কোনো কথা দেই নি। ওকে! বাধ্য হয়েছিলাম। আর এখন তুমি আমার স্ত্রী। ওসব নিয়ে আর আমি ভাবি না। আর তুমি ও ভাববে না।

আরশিঃআমাদের বিয়েটা তো আর ৫টা বিয়ের মতো না।

নিলয়ঃতোমার কাছে না হতে পারে। বাট আমার কাছে বাকি বিয়েগুলোর মতোই। হাজবেন্ড হওয়ার সব দায়িত্ব পালন করবো।

আরশি কিছু বললো না। মাথা নিচু করে দারিয়ে থাকলো।

নিলয়ঃডোন্ট ওরি। স্বামীর অধিকার চাইবো না।

আরশি মাথা তুলে নিলয়ের দিকে তাকালো। নিলয়কে কিছুক্ষণ দেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। নিলয় ফোন হাতে নিয়ে পিয়াকে কল দিলো।

সারাদিন ঘুরে বিকেল ৪টায় তারা পিকনিক স্পটে আসলো। বিকেলের খাবারটা সবাই একসাথে ঘাসের উপর বসে খাবে। বিরিয়ানি রান্না হয়ে গেছে। এতক্ষণ নিলির হাত ধরেই ছিলো তীব্র। নিলি শুধু অবাক হয়ে তীব্রকে দেখছে। ও চেয়েছিলো ওর বর ওর ভাইদের মতো হবে। ওর সবসময় কেয়ার করবে। আগলে রাগবে। তীব্র ও ঠিক সেটাই করেছে এই ২দিন। কাল গাড়িতে আর রাতে। আর আজ এখানে। ছোট ছোট জিনিস ও খুব ভালোভাবে খেয়াল রাখছে। তীব্রর এই কেয়ারিং টা নিলির খুব ভালো লাগছে। তারপরেই ভাবছে কালকের পর তো তীব্র আর ওর ফেইস ওকে দেখাবে না। ওর সামনে আসবে না। এটা ভাবতেই নিলির মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কি করবে বুঝতেছে না ও।

সবাই গুল হয়ে মাঠের মাঝখানে বসেছে। সবার সামনেই বিরিয়ানির প্লেট। সবাই খাওয়া শুরু করবে তখনি আকাশ মিনিমাইক দিয়ে চিৎকার করে বললো,”গাইজ এইভাবে চুপচাপ কি খাওয়া যায়। তাও পিকনিকে এ এসে। এর মধ্যে গান হলে কেমন হয়?”

সবাই চিৎকার করে বললো,”খুব ভালো হয় ভাইয়া।”

তানভীর গিটার নিয়ে এসে একটা চেয়ারে বসে বাজানো শুরু করলো। আর তীব্রকে বললো,”শুরু কর।”

তীব্রঃ😐নো। এইবার আমি একা গান গাইতে পারবো না। সবাই জয়েন করতে হবে।

আকাশঃআরে ইয়ার শুরু তো কর। আমরা ভাঙ্গা রেডিও রেডি আছি। কাকের মতো কা কা করতে পারবো।

আকাশের কথা শুনে সবাই হেসে দিলো। আকাশ আবার বললো,”তীব্র তর সেই ফান্নি গানটা গা।(বুকে হাত দিয়ে)”ওই দিলে জান””

তীব্র হাসতে হাসতে বললো,”এই গান সবার মাথার উপর দিয়ে যাবে।”

তানভীরঃগানটা আমি এতবার শুনলাম এখনো আমার মাথায় ডুকেনি😐। বাট গানটা দারুন।

আকাশঃতানভীর গিটার বাজা।

তীব্র একটা চেয়ার এনে তানভীরের সামনে বসলো। তারপর শুরু করলো। সবাই তীব্রর সাথে জয়েন করলো। বাট না বুঝে🙄

“”বদাইন কাতি মলয় বিয়া হবি,, মলয় বিয়ান নহলতন করতি হবি মুহি””(২)

“”ওই মই মুরি জান ওই দিলে জান,, দুগনেপালে মুইবাপেকে হসাইমুরি জাম””(২)

“”ওই জাম পুলাই জাম,, ওই দিলে জাম,, দুরক্ পেলে বিয়ানি দিলে পলু অইলো জাম””

“”হুয়াকইচু পাত কা পুড়ানি দইচু ময়,, হুমরু পয় দহবায় তই সুহরহায় বিয়াকুলি পাতি মুলিময়য়য়””

“”ওই দিলে জান মই মরি জাম,, দুগনেপালে মইবাপেকে হুসাইমুরি জাম””

“”ওই জাম পুলাই জাম,, ওই দিলে জাম,, দুরবাপেলে বিয়ানি দিলে পলু অইলো জাম””

“”ওহো বাদাইন কাতি মলয় বিয়া হবি,, মলয় বিয়ান নহলতন করতি হবি মুহি””(২)

“”ওওও তগল মুড়া পুড়ে ওই দিলে জান,, মুরে মুরে প্রেমর কথা বেরি বেরি হুদে””(২)

“”খুরাখুরি হতে,, ওই দিলে জান বিয়ার কথা কইদে মুর দুগুর দুগুর লাগে””

(এই গানটার মানে আমি ও জানি না। আমার ও মাথার উপর দিয়ে গেছে 🙄। সব ওয়ার্ড রাইটও না হয়ত। প্লিজ কেউ এই গানটার লিরিকস পেলে দিয়েন। গানটা আমার খুব ভালো লাগে।)

গানটা শুনে হাসতে হাসতে সবাই গড়াগড়ি খাচ্ছে। বাট গানটা সুন্দর করেই গেয়েছে। গান শেষে না খেয়েই বাসে উঠে পরে তীব্র। হঠাৎ ওর মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। বাসটা মাঠের সাইডেই। সবাই খাওয়া স্টার্ট করে। তীব্রকে না খেয়ে চলে যেথে দেখে নিলি ওর প্লেটটা নিয়ে উঠে পরে।

তৃনাঃকোথায় যাবি।

নিলিঃআমি বাসে বসে খাবো। তুই থাক এখানে।

তৃনাঃকিন্তু…..

নিলিঃওহো। এত কথা বলিস কেনো? চুপচাপ খা।

আর কিছু না শুনে নিলি চলে যায় বাসের ওদিকে। বাসে উঠে দেখে তীব্র সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। নিলি গিয়ে সাইডের সিটে বসলো। কারো প্রেসেন্স টের পেয়ে তীব্র চোখ খুলে তাকায়।

তীব্রঃতুমি?

নিলিঃআপনি না খেয়ে চলে এলেন কেনো?

তীব্রঃএমনি ভালো লাগছিলো না।

নিলিঃখেয়ে নিন ভালো লাগবে।

তীব্র অবাক হয়ে নিলির দিকে তাকালো। আর বললো,”হঠাৎ এত কেয়ারিং।”

নিলিঃকাল আপনি আমাকে খাইয়ে দিছেন। আজ আমি দিলাম। সুধবুধ।

তীব্র মন খারাপ করে বললো,”ওহ।” পরক্ষণেই আবার দুষ্টু হাসি হেসে বললো,”কাল তো আমি খাইয়ে দিয়েছিলাম নিজ হাতে। তারমানে এখন তোমাকেও আমাকে খাইয়ে দিতে হবে।”

নিলিঃউয়াট? ইমপসিবল।

তীব্রঃসেটা আমি জানি না। তুমি বলেছো এবার খাওয়াতেই হবে।

নিলিঃতখন তো আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। আর আপনি এখন জেগে।

তীব্র চোখ বন্ধ করে বললো,”এই দেখো ঘুমিয়ে পরেছি। খাইয়ে দাও। খুব মাথা ব্যাথা করছে।”

নিলি কি করবে বুঝতেছে না। নিজের জালে নিজেই ফাসছে। নিলি কাপা কাপা হাতে এক লুকমা তীব্রর মুখের কাছে নিলো। তীব্র নিলির হাত ধরে টেনে মুখে ভরে ফেললো। নিলির এখন হাত আরো বেশি কাপছে।

তীব্রঃএত দুর থেকে কেউ খাওয়ায়। তীব্র জানালার পাশের সিটে বসলো। আর নিলিকে টেনে ওর পাশের সিটে বসিয়ে দিলো।

তীব্রঃএবার ঠিক আছে।

নিলি আরেক লুকমা দিলো। তীব্র নিলির আঙ্গুল সব খাচ্ছে। আর নিলির সুরসুরি লাগছে।

নিলিঃএসব কি করছেন?

তীব্রঃখাচ্ছি তো।

তীব্র অর্ধেক খেয়ে নিলো। তারপর নিলিকে বললো,”এবার বাকিটুকু তুমি খাও।”

নিলি চোখ বড় বড় করে তীব্রর দিকে তাকায়। তীব্র আর কিছু না বলে নিজেই নিলির মুখে ভরে দেয়। বাকি খাবার তীব্র খাইয়ে দেয়। নিলির চোখে পানি চলে আসে। এত যত্ন করে ওকে খাওয়ার আরো কেউ আছে জানতো না।

তীব্র নিলির চোখে জল দেখে অবাক হয়ে যায়। আর বলে,”একি কাদছো কেনো? কি হয়েছে? আমি কি কোনো ভুল করেছি? সরি নিলি আর খাইয়ে দেবো না। প্র…..”

নিলিঃআমি এই কারনে কাদছি না। এত যত্ন করে ভাইয়া ছাড়া আর কেউ কখনো খাইয়ে দেয় নি।

তীব্র মুচকি হেসে বললো,”তোমার ভাইয়াদের মতো ভালো না বাসলে ও আমি কিন্তু কম ভালোবাসি নি। শুধু তুমিই বুঝলে না। এনিওয়ে, চলো বাইরে গিয়ে হাত ধুয়ে আসি।”

তীব্র আর নিলি বাস থেকে নিচে নামতেই আকাশ আর অনিককে দেখে সামনে। ২জন একসাথে ভ্রুকুচকে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,”কি হচ্ছিলো একসাথে ভেতরে।”

তীব্রঃরোমান্স করছিলাম। তদের কোনো প্রবলেম?

অনিকঃনা না একদম না। করো করো। সময় তো এখন তোমাদেরই।

তীব্রঃওহ তাই। তর তো সময় আসে না। বেশি কথা বললে এখনই সব ফাস করে দেবো।

অনিকঃ😐

আকাশঃ😂একেই বলে বাশ।

তীব্রঃতুই চুপ থাক।

নিলি মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে। সব কটা অসভ্য। মুখে কিছুই আটকায় না। তীব্র নিলির হাত ধরে সাইডে নিয়ে যায়। তারপর হাত ধুইয়ে দেয়।

সন্ধ্যা হয়ে আসছে এবার সবাই রিসোর্টে ফিরে যাবে। তাই গাড়িতে উঠলো।

এদিকে নিলয় আর আরশি লাঞ্চ করে কিছুক্ষণ পর বাসায় চলে আসে। তারপর নিলয় আরশিকে বাসায় রেখে বাইরে চলে যায়। বলেছে কিছুক্ষণ এর মধ্যে চলে আসবে। কিন্তু দেড়ঘন্টা হয়ে গেছে নিলয় এখনো আসছে না।

আরশিঃআই এম সিউর উনি পিয়াআপুর সাথে দেখা করতে গেছেন। কিন্তু আমার এত খারাপ লাগছে কেনো? হুহ! খারাপ লাগবেই তো আমার। যতই হোক জামাই তো আমারই। আমার বিয়ে না মানায় তো এটা মিথ্যে হয়ে যাবে না। আর বাঙ্গালি কোনো মেয়েই তার বরকে অন্য কোনো মেয়ের সাথে সহ্য করতে পারে না। সে ছেলেটাকে বর হিসেবে মানোক বা না মানোক জেলাস হবেই।

আরশি রুমে পায়চারি করছে। ফোন দিয়েছে নিলয়কে অনেকবার। বাট নিলয় ফোন রিসিভ করেনি। আরশির এই অপেক্ষাটা সহ্য হচ্ছে না। সন্ধ্যা হয়ে আসছে।

সন্ধ্যা ৭টায় নিলয় বাসায় ডুকে। ৪টায় বেরিয়েছিলো। রুমে ডুকতেই আরশি রাগি লুকে নিলয়ের দিকে তাকায় আর বলে,”এই আপনার কিছুক্ষণ?”

নিলয়ঃসরি! একটু আটকে গেছিলাম।

আরশির চোখ যায় নিলয়ের শার্টের দিকে। সাদা শার্ট এ স্পষ্ট লাল লিপষ্টিক এর দাগ দেখা যাচ্ছে। আরশি দৌড়িয়ে নিলয়ের কাছে এসে নিলয়ের শার্টের সেই লিপষ্টিক এর দাগে হাত দেয়। নিলয় অবাক হয়ে যায় আরশির এই কাজে। আরশি আবার চোখ গরম করে নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,”আপনার শার্ট এ লিপষ্টিক এর দাগ কেনো?”

আরশির কথায় নিলয় ওর দিকে তাকায়। আর মনে পরে যায় পিয়া জোর করে ওকে জরিয়ে ধরেছিলো। তখনি হয়ত লেগে গেছে।

নিলয়ঃভুল করে……

আরশিঃ😡ভুল করে লিপষ্টিক এর দাগ শার্ট এ লাগে?

নিলয়ঃএকচুয়েলি……

আরশিঃপিয়াআপু আপনাকে কিস করেছে?

নিলয়ঃআরে না। এসব কি বলছো? ও জোর করে জরিয়ে ধরেছিলো। তখনি হয়ত লেগে গেছিলো। বাট আমি ওকে ছারিয়ে নিয়েছিলাম।

আরশি কিছু বললো না। রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। নিলয় আরশির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলো। আরশির এই বিহেভ এ নিলয় বেশ অবাক হয়েছে। নিলয় ড্রেস চেন্জ করে নিচে গেলো। আরশিকে পেলো না। তারপর উপরে খুজলো। শেষে নিরবের রুমে পেলো। নিরবের ছবির সামনি দারিয়ে আছে আর কিছু বলছে। নিলয় গিয়ে আরশির পিছনে দারালো। আরশি দেখে নি নিলয়কে।

আরশিঃনিরব আমি কিন্তু তোমাকে খুব ভালোবাসি। সে তুমি আমার সাথে থাকো বা না থাকো। আর আমি ও জানি তুমি ও আমাকে সবসময় ভালোবাসবে। জানো তোমার ভাই কাছে থাকলে মনে হয় তুমি আমার কাছে আছো। তোমাকে আমি উনার মধ্যেই ফিল করি। ২ভাইয়ের মধ্যেও অনেক মিল। তোমরা ২জনই অন্যের খুশিটা আগে দেখো। তবে তোমার মতো উনি এত চঞ্চল না। খুব শান্ত। আচ্ছা আমি যে উনার পাশে কোনো মেয়েকে দেখলে এত জেলাস হই(বাচ্ছাদের মতো ঠোট উল্টিয়ে)এই এখন ও হয়েছি উনার শার্টে লিপষ্টিক এর দাগ দেখে। তুমি কি রাগ করো?

নিলয় অবাক হয়ে আরশির কথা শুনছে। একবার আরশির দিকে তাকাচ্ছে তো একবার নিরবের ছবির দিকে। “আরশি জেলাস” ভাবছে নিলয়।


চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে