pyar_tho_hona_hi_tha Part-1+2

0
4422

pyar_tho_hona_hi_tha♥️
লেখা- পূজা
পর্ব-১

আজ আরশির বাসর রাত। ফুলে ভরা বিছানায় বসে আছে আরশি। কিন্তু ওর এগুলা একদম সহ্য হচ্ছে না। এই ফুলগুলোর দিকে তাকালে ওর গা জ্বলে যাচ্ছে। কাটা মনে হচ্ছে এই ফুলগুলোকে।
কারন ওকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওর মা নেই। বাবাই ওকে মানুষ করেছে। ও ছিল ওর বাবার প্রিন্সেস। ওর সুখের জন্য ওর বাবা বিয়ে করেননি। কিন্তু ওর বাবার হঠাৎ কি হল আরশি জানে না। জোর করে বিয়ে দিয়ে দিলো। ও তো নিরব নামের একটা ছেলেকে ভালোবাসত। প্রথমে ওর বাবা নিরব এর সাথে বিয়ে দিতে রাজী ও হয়েছিলেন। নিরব এর সাথে দেখা করাতে বলেছিলেন উনি। দেখা করার পর আর নিরব এর খোজ পায় নি আরশি। তারপরই জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন ঐই লোকটির সাথে।। ও বাড়ি থেকে পালাতে ও চেয়েছিল কিন্তু ব্যর্ত হয়।।
হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ পায় আরশি। ও বুঝে যায় ওই লোকটি আসছে। যার সাথে ওকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।।
আস্তে আস্তে লোকটি এগিয়ে যায় আরশির দিকে।। যখনই ছুতে যাবে।।
.
আরশি– একদম আমাকে টাচ্ করার চেষ্টা করবেন না। নয়ত আমি নিজেকে শেষ করে দিব।
নিলয়– মানে??
.
আরশি– আমার কাছে আসার একদম চেষ্টা করবেন না। আমি এই বিয়ে মানি না। আমাকে জোর করে এই বিয়ে দেওয়া হয়েছে।।
.
নিলয়– হুম। আমি জানি তুমি অন্য একটা ছেলেকে ভালোবাসতে।
.
আরশি– ভালোবাসতাম না। এখন ও বাসি আর সব সময় বাসব। আর আপনি সব কিছু জেনে আমার জীবনটা এইভাবে নষ্ট করলেন।।
.
নিলয়– ওই ছেলেটা তোমার যোগ্য না।।
.
আরশি— জাস্ট সাট আপ। কে যোগ্য আর কে যোগ্য না তা আমি খুব ভালো করে জানি। নিরব এর বেপারে একটাও কথা আমি আপনার মুখ থেকে শুনতে চাই না।
.
নিলয়– ওকে। যাও এখন ফ্রেস হয়ে এসো।
.
আরশি– আমি আপনার সাথে এক বিছানায় থাকতে পারবো না।
.
নিলয়– এতক্ষন আমি শান্ত ভাবে কথা বলছি বলে এটা ভেবো না। আমার খুব ভালো ছেলে।
.
আরশি– মা,,,নে।।
.
নিলয়– মানে,, আমার রাগ প্রচুর। কেউ আমার মুখের উপর কথা বলুক তা আমি একদম পছন্দ করি না। এখন চুপচাপ ফ্রেস হয়ে এসো।
তুমি আমার বিবাহিত স্ত্রী তোমার উপর আমার সম্পূর্ন অধিকার আছে।। বাট আমি তোমার সাথে জোর করব না। যেদিন তুমি নিজ থেকে আমার কাছে আসবে তখনই আমি তোমায় আপন করে নেব।
.
আরশি– ওই দিন কখন আসবে না।।
.
নিলয়– আসবে।। এখন যাও ফ্রেস হয়ে এসো।
.
(আরশি আর কথা বারালো না। চুপচাপ ওয়াশরুমে চলে গেলো। ও অনেক ভয়ে ছিল। যদি লোকটা জোর করার চেষ্টা করত। তখন ও কি করত। ছেলেদের শক্তির কাছে তো মেয়েরা কিছুই না।। কিন্তু ও যা ভেবেছিল তার কিছুই হয়নি। তাই ওয়াশরুমে গিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল।। ফ্রেস হয়ে রুমে এসে দেখে নিলয় সোফায় শুয়ে আছে। ও গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো)

এবার নিলয় এর পরিচয় টা দিয়ে দেই।
.
( নিলয় চৌধুরি NC গ্রুপ আব ইন্ড্রাসটিজ এর MD বাবা মা ছোট বেলায়ই কার এক্সিডেন্ট এ মারা যায়। ছোট কাকুর কাছেই মানুষ হয়েছে। উনি নিলয়কে নিজের ছেলের মতো দেখেন ভালোবাসেন। উনার স্ত্রী ও নিলয়কে নিজের ছেলে ভাবেন। উনার একটা মেয়ে আছে। উনার মেয়ে নিলি তো নিলয় এর চোখের মনি। ওকে খুব ভালোবাসে। ছোট বোন বলে কথা। এরাই নিলয় এর ফ্যামিলি। তবে তারা নিলয় এর সাথে থাকে না। উনারা আলাদা থাকেন)

সকালে,,
নিলয় এর রুমের দরজা দাক্কাচ্ছে নিলি।।
.
নিলি– এই ভাইয়া বউমনি। আর কতো ঘুমাবে। অনেক বেলা হয়েছে দরজাটা খোলো।
.
নিলির ডাক শুনে নিলয় আরশি ২জনই জেগে যায়।
.
নিলয়– আমি দরজা খুলছি। তুমি বিছানাটা ঘুছাও। কেউ জেনো জানতে না পারে এসব।
.
আরশি– ওকে।।
.
নিলয়– (দরজা খুলে) কি হয়ছে?? এভাবে ষাঢ় এর মতো চেচাচ্ছিস কেনো?
.
নিলি– কিইইই আমি ষাঢ়।
.
নিলয়– তা নয়তো কি।।
.
নিলি– তুই ষাঢ়। আর এখন সামনে থেকে সর। তর সাথে কথা বলার বা ঝগরা করার সময় আমার কাছে নেই। মা বউমনিকে জলদি নিচে নিয়ে যেথে বলেছে।।
.
নিলয়– আমারও তর সাথে বলার সময় নেই।।
.
নিলি–😏 বউমনি তুমি তারাতারি ফ্রেস হয়ে এসো। তুমাকে নিচে নিয়ে যেথে হবে।।
.
আরশি– ওকে।
.
নিলয়– না আগে আমি ফ্রেস হব। আমার কাজ আছে।।
.
( নিলয় যেথে গেলেই নিলি নিলয় এর হাত ধরে ফেলে)
নিলি– বউমনি তারাতারি যাও।

আরশিও এক দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

নিলয়– এটা কি হল।

নিলি– তুই অন্য ওয়াশরুমে যা।
নিলয়– হুহ😕😕।( নিলি চুলে টান দিয়েই এক দৌরে বাইরে চলে গেল নিলয়।।)

নিলি– ভাইয়াআআআ।
.
আরশি– কি হয়েছে?(নিলির চিৎকারে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে)

নন্দিনী– কিছু না।। এবার চলো তোমাকে একটু সাজিয়ে দেই।।

আরশি– আমি সাজতে পছন্দ করি না।

নন্দিনী– একটু হালকা সাজাবো। এসো
.
আরশি– ওকে।।

আরশিকে রেডি করে নিচে নিয়ে গেলো নিলি।।
নিলয় তো হা করে তাকিয়ে আছে।
.
নিলি– ভাইয়া মুখ বন্ধ কর নয়ত মশা ডুকে যাবে।
.
সবাই–😂😂😂😂
.
নিলয়–😡তকে আমি পরে দেখবো।
.
নন্দিনী– কেনো এখন দেখতে পাচ্ছিস না।
.
নিলির মা– আহহহ নিলু একটু চুপ থাকতে পারিস না।
.
নিলয়– দেখেছো মামনি তোমার মেয়ে অনেক বেরেগেছে তারাতারি ওকে বিদায় করার ব্যবস্থা করো।
.
নিলি– ভাইয়াআআআ।
.
নিলির বাবা– মেয়েটাকে দার করিয়ে তরা ঝগরা করা শুরু করেদিয়েছিস। সুমা (নিলির মায়ের নাম) যাও বউমাকে নিয়ে রান্না ঘড়ে যাও।
.
মামনি– আসো তুমাকে সব বুঝিয়ে দেই। আমি তো এখানে থাকবো না। ২দিন পর চলে যাব। তখন তোমাকেই সব সামলাতে হবে।
.
আরশি– (আমি তো এখানে থাকবো না। একবার নিরব এর খোজ পাই তারপরই চলে যাব। আমি চাই না এই সংসার।)
.
উনি আরশিকে সব বুঝিয়ে দিলেন। ও রান্না জানে না তাই রান্না ও শিখিয়ে দিলেন।।

সারাদিন আরশি নিলির সাথে গল্প করে কাটিয়ে দিলো। নিলয় এর বিষয়ে অনেক কিছুই জানলো। ওর মা বাবার বিষয়েও। ওর অনেক খারাপ লাগলো। একটা ছেলে এত কষ্ট সহ্য করেছে। মা বাবার লাশ দেখা যে কতটা যন্ত্রনার তা শুধু সেই বুঝবে যার সাথে এমনটা হয়েছে। ছোট বেলায় মা বাবাকে হারিয়েই একা হয়ে গেছে নিলয়। কারো সাথেই থাকে না। একা এই বাসায় থাকে। আরশি ও ওর মায়ের মৃত্যু দেখেছে। ও বুঝে মা বাবা হারানোর কষ্ট। এখন তো ওর বাবা থেকে ও নেই। ওই বাড়ি থেকে আসার আগেই ওর বাবার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিয়ে এসেছে।।
অন্যদিকে নিলয়,, কাল রিসেপশন তাই ও সব দেখছে। সব এরেইন্জমেন্ট করছে।। সারাদিনে আর একবার ও। নিলয়ের আরশির সাথে দেখা হয় নি।।

চলবে????🙄🙄

#pyar_tho_hona_hi_tha❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ২

রাতে,
সবাই ডিনার করে যে যার রুমে গিয়ে শুয়ে পরলো। আরশি নিলির সাথে ওর রুমে চলে গেলো।

নিলি:একি বউমনি তুমি এই রুমে কেনো।

আরশি:আমি আজ তোমার সাথে ঘুমাবো।

নিলি:কেনো?

আরশি:এমনি, কেনো? তোমার কোনো প্রবলেম হবে।

নিলি:প্রবলেম হতে যাবে কেনো। আমি তো ভাইয়ার জন্য বললাম। বিয়ের পর কেউ কি বউ ছাড়া ঘুমাতে চায়।

আরশি:খুব পাকা পাকা কথা শিখে গেছো তাইনা। এখন চুপচাপ ঘুমাও।

নিলি:ওকে গুড নাইট।

আরশি:গুড নাইট।

নিলয় রুমে এসে দেখে আরশি রুমে নেই। ও ভেবেছে হয়তো কিছুক্ষন এর মধ্যে চলে আসবে তাই বসে আরশির জন্য ওয়েট করতে থাকে। ১ঘন্টা ওয়েট করার পরো যখন আরশি এলো না। নিলয় বেরিয়ে গেলো আরশিকে খোজতে। সব জায়গা খোজে নিলির রুমে পেলো। ঘুমিয়ে গেছে। নিলয় কিছুক্ষন আরশির ঘুমন্ত চেহারা দেখে নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।

সকালে,
নিলয় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে যায় গিয়ে দেখে আরশি ব্রেকফাস্ট রেডি করছে। আর নিলয়ের মামনি সব দেখিয়ে দিচ্ছে। ওর ছোট কাকু বাইরের দিকটা দেখছেন। বাড়িতে অনেক গেস্ট। তাদের খাবারের আলাদা ব্যবস্তা করা হয়েছে। নিলয় গিয়ে ডাইনিং টেবিলে বসে।

নিলয়:মামনি নিলি উঠে নি।

মামনি: না। ওর জন্য কি এখন ও সকাল হয়েছে। ১১টার আগে কখনো উঠেছে।

নিলয়:আমি নিয়ে আসছি।

মামনি:দেখ তুলতে পারিস কিনা।

নিলয় নিলির রুমে যায়। গিয়ে অনেক বার ডাক দেয় কিন্তু কোনো সারা শব্দ নেই। ও তো ঘুমুচ্ছে😴
নিলয়:দারা তর ঘুম আমি বার করছি।

নিলয় ওয়াশরুম থেকে এক মগ পানি নিয়ে আসে। আর নিলির উপর ডেলে দেয়।

নিলির:ওওও মাআআ গোওওওও ছাদ ভেঙ্গে গেছে ভুমিকম্প এসে গেছে বৃষ্টি পরছে ছাদ ফেটে আমাকেএএএ কেউ বাচাওওওওও।

নিলির চিৎকার শুনে সবাই ওর রুমে চলে আসে। আর নিলয় ওর কথা শুনে পেটে হাত দিয়ে হাসছে। হাসতে হাসতে নিচে বসে গেছে।

মামনি:কি হয়েছে নিলয় ও এভাবে চিৎকার করছে কেন? আর তুই এভাবে হাসছিস কেনো?

নিলয় আরো জোরে হেসে দিলো😂। নিলয় এর হাসির শব্দে নিলির চোখ খোলে তাকিয়ে দেখে সবাই ওর রুমের বাইরে দারিয়ে ওর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আর নিলয় হাসছে। আর ও হ্যাবলার মতো তাকিয়ে চারদিক দেখছে।

নিলি:এসব কি হচ্ছে তোমরা সবাই আমার রুমের বাইরে কেনো। আর ভাইয়া তুই এভাবে পাগল এর মতো হাসছিস কেনো?

মামনি:তুই হঠাৎ চিৎকার দিলি তাই আমরা সবাই তকে দেখতে এলাম।

আরশি:এভাবে চিৎকার দিলে কেনো?

হঠাৎ নিলি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে পুরো শরির বিজা।

নিলি:আমার উপর পানি কে দিয়েছে😡

নিলয়:😁আমি। পানি দেওয়ার পর চিৎকার করে যা বললি তা শুনেই তো আমি হাসছিলাম।

নিলি:তুই আমার উপর পানি দিলি কেনো?

নিলয়:এতো বেলা করে ঘুমাচ্ছিলি কেনো।

নিলি:আমি আরো ঘুমাবো তাতে তর কি😡। দেখেছো মা তোমার ছেলে কি করেছে😭(ন্যাকা কান্না)

মামনি:হয়েছে। এবার ফ্রেস হয়ে নিচে আয়। তদের ভাইবোনের এই দুষ্টুমি প্রতিদিনি লেগে থাকে।

সবাই চলে গেলো নিচে। আরশি নিলয় আর নিলি রয়ে গেছে।

নিলি:বউমনি তোমার বরকে সামলাও। নাহলে একদিন ও আমার হাতে মরবে😡

নিলয়:😁আয় মার।

আরশি:তোমরা মারামারি করো আমি যাই।

নিলি:আরে তুমি কোথায় যাচ্ছ।
যাহ চলে গেলো। ওই তূই ও যা। আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।

নিলয়:তারাতারি আয় তকে ছাড়া ভালো লাগে না।

নিলি:আমায় এত্তো ভালোবাসিস।

নিলয়:ভালোবাসি কখন বললাম। তর সাথে না লাগলে ভালো লাগে না😁।

নিলি:কিইই? দারা তকে দেখাচ্ছি মজা।

নিলয় এক দৌরে নিচে চলে গেলো। আর নিলি ফ্রেস হতে। ও ফ্রেস হয়ে নিচে এসে ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসলো। নিলয় এর সোজা।

নিলি:বউমনি তুমি ও বসে পড় আজ একসাথে ব্রেকফাস্ট করবো।

আরশি:না। আমার খিদে নেই। তোমরা খাও।

এটা বলে আরশি উপরে চলে গেলো। নিলয় এসব কানে না তুলে খাচ্ছে আর নিলিকে জালাচ্ছে।

নিলি:যাহ! বউমনি চলে গেলো না খেয়ে। তুই আটকালি না কেনো?

নিলয়:ওর ইচ্ছা হয়েছে। ও গেছে। তুই এত চিল্লাচ্ছিস কেনো। চুপচাপ খা।

নিলি:😐ওই তুই আমার পায়ে সুরসুরি দিচ্ছিস কেনো।

নিলয়:আমি? কখন দিলাম।

নিলি:একদম ন্যাকা সাজবি না। চুপচাপ ব্রেকফাস্ট কর অনেক কাজ পরে আছে। কাজে ফাকি দেওয়ার ধান্ধা।

নিলয়:তর মতো পেয়েছিস।

আরশি রূমে গিয়ে বার বার নিরব এর ফোনে ট্রাই করছে। কিন্তু একি কথা বলছে বন্ধ।

আরশি:তুমি কোথায় নিরব। ফোন বন্ধ করে রেখেছো কেনো? তুমি বুঝতে পারছো না আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি টেনশনে। তোমায় কোথায় খোজবো। আমাকে ফেলে কোথায় চলে গেলে। তোমাকে ছাড়া বাচবো কি করে। প্লিজ ফিরে এসো। আমাকে নিয়ে যাও এখান থেকে। খুব ভালোবাসি তোমায়। এভাবে কি করে উদাও হয়ে যেথে পারো😭

নিলয় ব্রেকফাস্ট করে রুমে এসে দেখে আরশি কাদছে। বাট নিলয় এসবে নজর দিলো না। ও ওর ফোন নিয়ে নিচে চলে গেলো। আরশি মুখ তুলে একবার নিলয়কে দেখলো। আর ভাবলো,”লোকটা এমন কেনো? নিজের ফ্যামিলির লোকের সাথে কত ভালো হাসিখুশি থাকে। আর আমার সামনে এমন ভাব করে যেনো আমাকে কেয়ারই করে না। সব সময় গম্ভিরভাবে থাকে। আমি যে ব্রেকফাস্ট করলাম না। একবারো বললো না। খেয়ে নাও।”

কিছুক্ষণ পর নিলি ব্রেকফাস্ট নিয়ে আরশির রুমে আসে। নিলয় পাটিয়েছে। কিন্তু এটা আরশিকে বলতে বারন করে দিয়েছে।

নিলি:বউমনি তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট নিয়ে এসেছি খেয়ে নাও।

আরশি: আমার খিদে নেই খাবো না।

নিলি:আমি তোমার জন্য খাবার রুমে নিয়ে এলাম। আর তুমি আমায় ফিরিয়ে দেবে।

আরশি:আচ্ছা দাও। আমি খাচ্ছি।

আরশি ব্রেকফাস্ট করে নিলো। তারপর নিলির সাথে অনেকক্ষণ গল্প করলো।
আর নিলয় বাইরে কাজ করেছে। সারাদিনে আর রুমে আসে নি। বিকেলে পার্লার থেকে লোক আছে আরশিকে সাজানোর জন্য। নিলি ও হেল্প করে। আরশিকে রেডি করিয়ে নিলি সেলফি তুলছিলো। তখনি নিলয় রুমে ডুকে। আরশিকে দেখে নিলয় হা হয়ে তাকিয়ে থাকে আরশির দিকে। ওর কাছে মনে হচ্ছে গোল্ডেন পরি দেখছে। নিলির ধাক্কায় নিলয় এর হুশ আসে। আরশি বিরক্তি নিয়ে দারিয়ে আছে।

নিলি:বউমনিকে নজর দিচ্ছিস কেনো।

নিলয়:কি আজে বাজে কথা বলছিস। আমি আমার ড্রেস নিতে এসেছি।

নিলি:নিয়ে যা।

নিলয় ওয়াড্রপ থেকে ওর ড্রেস নিয়ে চলে যায় নিলির রুমে।

সন্ধ্যার পর গেস্টরা আসা শুরু করে। নিলয় তাদের দেখছে। আরশির বাবা ও আসেন। আরশির বাবা নিলয় এর কাকুর সাথে কথা বলছেন। এর মধ্যে নিলি আরশিকে নিয়ে নিচে আসে। আরশিকে নিচে আসতে দেখে আরশির বাবা ওর কাছে এগিয়ে যান। উনাকে আসতে দেখে আরশি বলে,”নিলি প্লিজ আমাকে একান থেকে নিয়ে চলো।”

নিলি:কি বলছো বউমনি। তোমার বাবা এসেছেন তোমার সাথে কথা বলতে।

আরশি:আমার বাবা ২দিন আগেই মারা গেছেন। আর মা ছোট বেলায়। এখন আমার কেউ নেই।

আরশির বাবা:আরু!

আরশি:মি.অনিল চৌধুরি এই নামে শুধু আমার আপনজনরা আমাকে ডাকে। আপনি আমাকে আরশি বলেই ডাকবেন।

আরশির বাবা:প্লিজ মা আমায় মাপ করে দে। এভাবে বাপিকে ভুল বুঝিস না। তর ভালোর জন্যই এটা করেছি।

আরশি:আমার ভালো চাইলে জোর…….

আরশি তাকিয়ে দেখে নিলি হা করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। আর সামনে তাকিয়ে দেখে নিলয় রাগি লুকে তাকিয়ে আছে। নিলয় বলেছিলো কেউ যেনো ওদের সত্যি জানতে না পারে। আরশি চুপ হয়ে যায়। আরশির বাবা কাদছেন। নিজের মেয়ের মুখে এরকম কথা কোন বাবা সহ্য করতে পারবেন। নিলয় আরশির বাবার কাছে আসলো।

নিলয়:আংকেল প্লিজ কাদবেন না। সব ঠিক হয়ে যাবে দেখবেন।

আরশির বাবা:হুম।

নিলয়:নিলি ওকে নিয়ে রুমে যা।

নিলি:কিন্তু….

নিলয়:যা বলছি তাই কর😡। ওর আর এখানে কোনো কাজ নেই।

আরশি আর এক মুহূর্ত এখানে দারালো না। কাদতে কাদতে উপরে চলে গেলো। নিলি ও আরশির পিছু পিছু গেলো।

নিলয়:আংকেল আই এম সরি। আমি বুঝতে পারি নি ও এই ভাবে আপনার সাথে কথা বলবে।

আরশির বাবা:না বাবা তুমি কেনো সরি বলছো। সরি তো আমার বলা উচিৎ। সব জেনেও আমার জন্য তুমি ওকে বিয়ে করতে রাজি হলে। আমার তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ।

নিলয়:এটা কি বলছেন আংকেল? আমি নিজে থেকেই ওকে বিয়ে করেছি। আপনি এসব ভুলে যান। দেখবেন একদিন ঠিক আরশি আপনার কাছে ফিরে আসবে।

আরশির বাবা: সেই দিনের অপেক্ষায়ই থাকবো। আমি জানি তুমি আমার মেয়েটাকে ঠিক করতে পারবে। ওই ছেলেটাকে ওর মন থেকে মুচতে পারবে।

নিলয়:হুম।

নিলয় আরশির বাবাকে নিয়ে বসালো। সবাই আরশিকে খুজছে। নতুন বউ দেখবে।

নিলয়ের কাকু:নিলয় আরশি কোথায়। সবাই নতুন বউ দেখতে এসেছে আর ওই নেই।

নিলয়:সরি কাকু। ওর আসবে পেটে ব্যাথা করছিলো। তাই নদি ওকে উপরে নিয়ে গেছে। প্লিজ তুমি একটু ওদের সামলে নাও।

নিলয়ের কাকু:কি ও অসুস্থ। আমাদের আগে বলিস নি কেনো? আচ্চা ওকে রুমেই রেস্ট নিতে দে। আমি এদিকটা সামলাচ্ছি।

নিলয়ের কাকু এখান থেকে যেথেই আরশির বাবা নিলয়ের হাত ধরে বলেন,”আজ আমার জন্য তোমাকে মিথ্যে বলতে হচ্ছে। আমি সত্যিই খুব লজ্জিত।

নিলয়:আংকেল আপনি আমার বাবার মতো। আপনার অপমান কিভাবে সহ্য করবো। এসব আমি আমার জন্যই করেছি। আপনি প্লিজ এসব নিয়ে ভাববেন না। আমি আছি তো সব ঠিক করে দেবো।

সব গেস্টদের নিলয় এর কাকু সামলে নেন। নতুনবউ না দেখেই গিফট দিয়ে খাওয়া দাওয়া করে তারা চলে যান। নিলয় সব গেস্টদের বিদায় দিয়ে সব কাজ শেষ করে নিজের রুমে আসতে ১২টা বেজে যায়।

আরশি রুমে আসার পর নিলি অনেক বার জিজ্ঞেস করে কেনো ও ওর বাবার সাথে এমন রুড বিহেভ করলো। বাট আরশি কিছু বলে না শুধু কেদেছে। কিছুক্ষণ নিলি আরশির কাছে থেকে নিজের রুমে চলে যায়।

নিলয় রুমে এসে দেখে আরশি এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছে। শাড়ি ও চেন্জ করে নি। নিলয় আরশিকে এভাবে দেখে ওর রাগ উঠে গেলো। বাড়িতে এত গেস্ট। আর ও এলোমেলো হয়ে শুয়ে আছে। নিলয় পাশে থাকা গ্লাস হাতে নিয়ে আরশির মুখে সব পানি ডেলে দেয়। আরশি লাফ দিয়ে উঠে। দেখে নিলয় ওর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।

আরশি:কি করেছি আমি?

নিলয়:শাড়ি চেন্জ না করে শুয়ে আছো কেনো? যাও চেন্জ করে এসো।

আরশি:ভালোভাবে ডাকলেই পারতেন। পানি ডাললেন কেনো?

নিলয়:আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই। যাও শাড়ি চেন্জ করে এসো।(ধমক দিয়ে)

আরশি বিছানা থেকে নেমে লাগেজ থেকে একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। নিলয় রুমেই ড্রেস চেন্জ করে নেয়। একটু পর আরশি ওয়াশরুম থেকে আসলো।

নিলয়:টেবিলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নাও।

নিলয়ের কথা বলতে দেরি হয়েছে বাট আরশির খাবার হাতে নিতে দেরি হয় নি। নিলয় আরশির কান্ড দেখে অবাক। খুব খিদে পেয়েছিলো আরশির তাই একবার বলতেই খেয়ে নেয়। আরশির খাওয়ার স্টাইল দেখে নিলয়ের খুব হাসি পাচ্ছে। বাট হাসিটা চাপিয়ে রেখে সোফায় গিয়ে শুয়ে পরলো।

নিলয়:খেয়ে লাইটস অফ করে শুয়ে পরো।

আরশি:ওকে।

নিলয় ঘুমিয়ে পরে। আর আরশি খেয়ে প্লেট সাইডে রেখে নিলয়কে একবার দেখে লাইটস অফ করে ঘুমিয়ে পরে।

চলবে?🙄

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে