অন্যরকম_বিয়ে শেষ_অংশ

1
4500

অন্যরকম_বিয়ে শেষ_অংশ

এই মেয়ে রাতে আমার ঘরে কি করতে এসেছে,,,

– তুমি এখানে কেন ?

– কেন আবার ? সারাজীবন তোমার বোনের ঘরে থাকব নাকি,,, ??

আমি ওর কথা বাদ দিয়ে নিজের কাজ করতে লাগলাম।মিলিকে কিছু বলে লাভ নাই।বাবা মা সবাই এখন ওর পক্ষে চলে গেছে।

আমি কিছু বললেই বলে,

– বউ হয়না তোর,,

কেউ আমাকে একটুও বোঝার চেষ্টা করেনা।

কিছুক্ষন যেতেই মিলি সাজতে বসে গেল,, আমি তাই দেখে বললাম,,,

– ঘুমানোর আগে সেজে কি করো ?

মিলি ঠোঁটে লিপস্টিক দিতে দিতে বলল,,,

– পরে বুঝবা,,

ওর সাজগোজ শেষ হলে ও আমার কাছে এসে বলল,,,

– কেমন লাগছে আমাকে ?

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,

– এমনিতেই তুমি এত সুন্দর তাও সাজো কেন ?

– তোমার জন্যই সাজলাম,,

কি করো তুমি ?

এত সুন্দর বউ থাকতে কষ্ট করে গল্প লিখে মেয়ে ইম্প্রেস করে কি করবা,,,,

– আমি মোটেও মেয়েদের ইম্প্রেস করার জন্য লিখিনা,,,

– জানি তুমি কেমন,,,জলদি শুতে আসো,,,
লাইট জালানো থাকলে ঘুম আসেনা।।।

মিলি গিয়ে শুয়ে পরলো।মিলির কথা শুনে মনে হলো ও আমার বউ হয়ে গেছে,,পুরোপুরী সিরিয়াস রকমের বউ।

ও শুয়ে পড়ার পর আমি এখনো বিছানার দিকে যাইনি।তবে আমার এখান থেকে ওর সুন্দর মুখ টা ঠিকই দেখা যাচ্ছে।

এই মেয়ের সাথে আজ রাতে থাকলে আমি নির্ঘাত এই মেয়ের প্রেমে পরে যাবো।

ঘরের বাইরে থাকাও যাবেনা,,বাবা দেখলে আরেক প্রবলেম।

এক প্রকার বাধ্য হয়ে বিছানার দিকে গেলাম।
মিলিকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে কি সুন্দরই না লাগছে।

ভাবলাম ওর কপালে একটা চুমু খাব কিনা।
অনেক কষ্টে নিজেকে সংযত করে ঘুমিয়ে পরলাম।

সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি পাশে মিলি নেই।মাকে গিয়ে মিলির কথা জিগ্যেস করতেই মা বলল,,,

– মিলি বাসায় নেই।

– বাসায় নেই মানে কোথায় গেছে।

– মিলি একটু ওর বাবার বাসায় গেছে।

– কিন্তু ও তো আমাকে কিছু বলে যায়নি।

– তুই ঘুমিয়ে ছিলি তাই আর তোকে ডাকে নি।আর ও তো একটু পরে এসেই পরবে।

– বাসায় মিলি নেই বাসাটাই কেমন যানি খালি খালি লাগছে,,,তাই সকালের নাস্তা না করেই বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।


রাতে বাসায় এসে দেখি মিলি চুলে তেল দিচ্ছে।আমাকে দেখেই বলল,,,

– আমাকে নাকি সকালে খুঁজছ ?

– হম,যাওয়ার আগে আমাকে বলে গেলেই পারতা।

– তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তাই আর ডাক দেই নি।

– এর পর থেকে যেখানে যাবে আমাকে বলে যাবে।

– আচ্ছা,,,

মাঝ রাতে যখন ঘুম ভাংলো তখন দেখি মিলি আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে। অনেক চেষ্টা করেও ওর হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারলাম না।

কি আর করা ওই ভাবেই কিছুক্ষন শুয়ে রইলাম আর মাঝে মাঝে মিলিকে দেখছিলাম।আর মনে মনে ভাবছিলাম মেয়েটা এত সুন্দর কেন,,,

ও আমার এত কাছে ছিল যে, ওর নিশ্বাস আমার মুখের উপর পরছিল।আমার রুম দোতলায় হওয়ায় ঘরের জানালা দিয়ে ভালই
বাতাস আসে। বাতাসে ওর মাথার চুল গুলো উড়ছিল।কিছু চুল এসে ওর কপালের উপর পরেছিলো, আর ওগুলা আমার মুখেও লাগছিল। তাই আমি হাত দিয়ে ওগুলো সরিয়ে
দিতে লাগলাম।চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে মিলির দিকে তাকাতেই দেখি,,মিলির চোখ খোলা।

আমাকে দেখে মিলি হাসতে হাসতে বলল,,,

– কি করো ?

– না কিছুনা,,,,

– আচ্ছা,,, ঘুমাও তাহলে,,,

– তোমার থেকে একটা কথা জানার খুব ইচ্ছা,,,

– কি কথা বলো,,,

– আমি কি সত্যিই আগে কখনো তোমাকে বিয়ে করেছিলাম।

– হঠাত্ এই কথা কেন।

– সেদিন বাবাকে যে বিয়ের কাগজ দেখালে সেটাতে আমার সাইন ছিল।কিন্তু আমার যতদূর মনে পরে আমি তো তোমাকে বিয়ে করিনি।তাহলে এই সাইনটা কাগজে কেমনে আসলো,,,

– আমাকে তৃতীয় বার যে হেল্প করছিলা সেটা তোমার মনে আছে ?

– হম, খুব মনে আছে।সেই হেল্প করে পুলিশের দৌড়ানি পযন্ত খেয়েছি।

আমার মনে পরে গেল সেদিনের কথা,,,,

সেদিন সকালে ঘুমাচ্ছিলাম ঠিক তখনেই মিলির নাম্বার থেকে কল আসলো কিন্তু রিসিভ করিনি।কারন এই কল রিসিভ করলেই আবার হয়তো কোন বিপদে পরব।অনেক বার কল আসলো তাও আমি রিসিভ করলাম না।

অবশেষে একটা টেক্সট আসলো,,,,

“আমি খুব বিপদে পরেছি ••••••• এই ঠিকানাই আপনি এখনেই চলে আসুন প্লিজ”

এই টেক্সট দেখে আর ঠিক থাকতে পারলাম না।চলে গেলাম মিলির দেওয়া ঠিকানায়।গিয়ে দেখি এটা একটা কাজী অফিস।

আমাকে দেখেই মিলি বলল,,,

– আপনি এসেছেন,,,

– কি সমস্যা বলো।

– আমার বান্ধবীর বিয়ে এই শুক্রবারে।কিন্তু সে একটা ছেলে কে খুব ভালবাসে।আর ছেলেটাও তাকে খুব ভালবাসে।ছেলে আর মেয়ে দুজনেই বাসা থেকে পালিয়ে এসেছে।

– এখন আমি কি করব ?

– একটু পরেই ওদের বিয়ে হবে।আর এই বিয়েতে আপনাকে সাক্ষী হতে হবে।

সেদিন আমি ঐ বিয়ের সাক্ষী হতে চাইনি।কিন্তু বাধ্য হয়ে সাক্ষী হতে হল আমাকে।

বিয়ে শেষে জানতে পারলাম মেয়েটার বাবা নাকি পুলিশ।তার পর তো বুঝতেই পারছেন অবস্থা কি রকম হতে পারে,,,,

হম আমার সব মনে আছে,,,

– সেদিন তুমি কয়টা কাগজে সাইন দিয়েছিলে ?

– দুইটা কাগজে।

– সেই দুইটা কাগজের মধ্যে একটা হল তোমার বাবাকে যেটা দেখিয়েছি ওটা।এই সব কিছুই আমি আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম।

– মিলির কথা শুনে খাট ভেঙে নিচে পরে যাওয়ার মত অবস্থা হল আমার।এই মেয়ে বলে কি,,,,

যাই হোক এমনটা না করলেও পারতে।

– এটা তো কিছুই না।তোমাকে নিজের করে পাওয়ার জন্য এর থেকেও বেশি কিছু আমি করতে পারি।

– এতো ভালবাসো আমায় ?

– হম,অনেক ভালবাসি তোমায়।

এবার তাহলে কাছে এসো,,,,,

– আমি মেয়েটার কাছে না গিয়ে পারলাম না,, কিসের এত আকর্ষণ বুঝলাম না।

অবশেষে মেয়েটার বুদ্ধি এবং ভালোবাসা দুটোর কাছেই আমি পরাজিত হলাম।

#সমাপ্ত

(আজকে গল্পটা শেষ করে দিলাম।গল্পটা কেমন হয়েছে সবাই জানাবেন। )

লেখা ||Tuhin Ahamed

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে