অন্যরকম_বিয়ে তৃতীয়_অংশ
– ভাইয়া আমার একটা হেল্প লাগবে ?
•
– তুমি কি করে ভাবলে আমি তোমারে হেল্প করব।
•
– কেন ভাইয়া ? আমি কি কিছু করেছি ?
•
– সেদিনের কথা কি ভূলে গেছ ?
•
– আপনার জন্মদিন,আর আমি আপনাকে গিফ্ট দিব না।
•
– তাই বলে আমার টাকা দিয়ে আমাকেই গিফ্ট দিবা ?
•
– ভাইয়া আমি মাএ কলেজে পড়ি আমার তো কোন ইনকাম সোস নাই তাই আপনার টাকা দিয়ে আপনাকেই দিলাম।হিসেবের খাতায় লিখে রাখুন পড়ে না হয় শোধ করে দিব।
আর,আপনার টাকা দিয়ে কিনলেই কি আর আমার টাকা দিয়ে কিনলেই কি ঘুরে ফিরে তো এক কথাই।
•
– কি বললা বুঝলাম না।
•
– কিছুনা ভাইয়া।
•
– ওকে,পথ থেকে সরে দাঁড়াও আমি এখন যাবো,,,
•
– প্লিজ ভাইয়া,আপনি এই হেল্প না করলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে,,,
আজকে কলেজে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পরীক্ষা আছে। কিন্তু, কোন রিক্সা পাচ্ছি না কলেজে যাওয়ার জন্য।পরীক্ষার সময় হয়ে যাচ্ছে আর মাএ ‘দশ’ মিনিট বাকি আছে,,,
•
– ওকে,বাইকে উঠে বসো,,,
•
•
•
– ধন্যবাদ ভাইয়া।আপনার জন্য আজকে পরীক্ষাটা দিতে পারবো।
•
– ওকে, আমি তাহলে এখন যাই,,,,
এই মেয়ে’রে হেল্প করার কোন ইচ্ছাই আমার ছিল না।নেহাত পরীক্ষা বলে হেল্পটা করেছিলাম সেদিন।
এর কিছুদিন পরেই সব বন্ধুরা মিলে মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম ঠিক তখনেই কোথা থেকে এক মেয়ে আমার সামনে এসে বলল,,,
•
– কেমন আছেন দুলাভাই ?
•
এই মেয়ের কথা শুনে আমি সহ আমার বন্ধুরাও টাশকি খেল,,,
– আমি তো আপনাকে চিনি না।মনে হচ্ছে আজকেই আপনাকে প্রথম দেখলাম।তাহলে আমি আপনার দুলাভাই হলাম কেমনে ?
•
– হ্যাঁ,ভাইয়া আপনি আমাকে চিনেন না কিন্তু আমি আপনাকে চিনি।
•
– কিভাবে ?
•
– সেদিন আপনি মিলিকে নিয়ে কলেজে এসেছিলেন তখন আপনাকে দেখেছি।আপনি চলে যাওয়ার পরে মিলিকে জিগ্যেস করছিলাম এই ভাইয়া টা কে ? দেখতে খুব হ্যান্ডসাম ?
তখন মিলি বলল এটা হচ্ছে তোদের দুলাভাই।একদম নজর দিবি না এই দিকে।
•
এই মেয়ের কথা শুনে আমার বন্ধু গুলা আমারে অবিশ্বাস করতে শুরু করল।ওদের কে সত্যি টা বুঝাতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে।
থাক আজকে আর তিন নাম্বার হেল্প এর কথা বলব না।মিলির মামার বাড়িতে এসে পরেছি।ওকে নিয়ে এখনেই বাসায় যেতে হবে বাবা আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছে।
মিলিকে তার মামার বাসা থেকে বের করে সকালের কথাটা জিজ্ঞেস করতেই ও চোখে পানি এনে বলল,,,
– এটা না বললে বাবা অন্য ছেলের সাথে জোর করে আমার বিয়ে দিত তাই এমন বলেছি,,
•
– তাই বলে আমার কথায় বলতে হল,,,আর কাউকে পেলে না।
•
– তখন কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না।তাই আপনার নামটাই বলে দিছি।
•
– আচ্ছা,ঠিকাছে।এখন আমার বাবার সামনে গিয়ে সব সত্য খুলে বলবা,,,তোমার জন্য বাবা আমাকে ভূল বুঝতেছে।
•
– আচ্ছা,,,আমি বাসায় গিয়ে সব সত্য খুলে বলব।আর আপনার কোন দোষ নেই এটাও বলব।
•
– মিলির কথা শুনে একটু স্বস্তি এল।এবার আর বাবা আমাকে অবিশ্বাস করতে পারবে না।
•
•
মিলিকে আমার বাবার সামনে নিয়ে যেতেই বাবা মিলিকে জিজ্ঞেস করলো কয় মাস হয়েছ বিয়ের ?
•
– দুই মাস,,
•
– বিয়ের কাগজ আছে ?
•
– হ্যাঁ,আছে,,
•
– দেখাও তো বিয়ের কাগজ টা।
যাহ্ বাবা মেয়েটা দেখি আমাকে আবার ফাঁসিয়ে দিল,এই মেয়ে তো খুব জটিল জিনিস।
•
•
কিন্তু এইবার কোথায় যাবে।বাবাকে বিয়ের কাগজ কেমনে দেখাবে।এইবার তাকে ধরা পরতেই হবে।আমাকে ফাঁসানোর মজা এবার টের পাবে।
•
– এই নেন আঙ্কেল বিয়ের কাগজ।
•
মিলি বাবার হাতে কাগজটা দিতেই আমি বাবাকে বললাম বাবা এইসব জাল কাগজ।
আমি ওরে বিয়েই করিনি।
কিন্তু বাবা কাগজটা ভাল করে দেখে বললেন,,,
– এ দিকে আয় তুই।
•
– আমি ভয়ে ভয়ে বাবার কাছে গেলাম।
বাবা আমার হাতে কাগজটা দিয়ে বলল মেনে নিলাম কাগজটা জাল।
কিন্তু তোর করা সাইনটাও কি জাল ?
•
– আমি কাগজটা হাতে নিয়ে দেখি এটা তো আমার দেওয়া সাইন।
কিন্তু, এটা কিভাবে সম্ভব আমি তো বিয়েই করিনি।তাহলে আমার হাতের সাইনটা এখানে আসলো কিভাবে।ব্যাপারটা আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পরার মতো হয়ে গেল।
নিশ্চয়ই মেয়েটা এখানেও কিছু একটা করেছে। আমার এত্ত টা রাগ উঠলো মনে হল এই মেয়েরে মেরেই ফেলি।
কিন্তু বাবা কি বুঝল কে জানে,,
আমার দিকে তাকিয়ে শুধু বলল,,,
•
– হারামজাদা দাড়া আজকেই তোর ব্যাবস্থা করতেছি আমি,,
•
ততক্ষনাৎ বাবা কাজী ডাকলেন আমাদের বিয়ে
পড়ানোর জন্য। বাবা এসব কোর্ট ম্যারেজ এ বিশ্বাসী নন
কিন্তু আমি তো কোর্ট ম্যারেজেই করিনি।আমি অনেক চেষ্টা করেও বাবাকে বোঝাতে পারলাম
না।
এই বিয়েটা যে আমি করিনি
আর মিলির বাবার প্রতিও আমার বাবার একটা জেদ চেপে গিয়েছিল তাই উনি বিয়ে দিয়েই ছাড়লেন।
আমি পুরোপুরি হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।মিলির উপর এত রাগ উঠল,, আমার মনে হলো ওকে আমি
একলা পেলেই মেরে ফেলবো। ভেবেছিলাম এ কাজটা প্রথম রাত্রেই করবো।আমার কাছে শুতে এলেই করবো।
কিন্তু মিলি আর এলোনা।মিলি ওই রাতে আমার ছোট বোনের রুমেই রইলো।
আমি শুধু ভাবছিলাম কদিন ওই রুমে থাকবে এটাই দেখবো।ওকে মারার জন্য একটা সুযোগ এই যথেষ্ট।
কিছুতেই ঘুম আসছিল না রাতে।বার বার শুধু ঐ কাগজটার কথাই মনে হচ্ছিল।আমি মানি আমার ভূলে যাওয়ার একটা রোগ আছে তাই বলে এত বড় একটা বিষয় ভূলে যাব।না এ হতেই পারে না।
নিশ্চয়ই এখানে কিছু একটা রহস্য আছে।আর সেটা আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে।
•
•
চলবে…..