অন্যরকম_বিয়ে দ্বিতীয়_অংশ
– এ দিকে আয় তুই,,,
.
আমি বাবার ঘরে ঠিকমত না ঢুকতেই বাবা বিছানা থেকে উঠে এসে এক থাপ্পর মেরে আমার কান তব্দা করে ফেলছে,,,
বাবা আমাকে আরো একটা থাপ্পর দিবে ঠিক সেই মুহূর্তে মা এসে বাবাকে থামিয়ে দিয়ে বলল।
•
-এত বড় ছেলেকে কেউ মারে নাকি ?
•
আমি শুধু জিজ্ঞেস করলাম,
– কি হয়েছে ‘মা’? বাবা আমাকে এভাবে মারল কেন ?
•
বাবা বিছানায় গিয়ে বসে শান্ত হয়ে বলল,,,,
– জীবনে আমাকে কেউ এত অপমান করেনি আজ তোর জন্য এত অপমানিত হতে হলো,,,
•
– মানে কি? কে করছে অপমান ?
•
মা পাশ থেকে বলল,
– কে আবার,,,তোর শশুর করেছে।
•
– আমার শুশুর কে ?
•
– মিলির বাবা।
এমন ভাব করতেছিস মনে হয় কিচ্ছু জানিস না তুই,,,তুই এইটা কেমনে করলি,,,আমাদের কে একবার জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না।
•
– আমি সত্যি কিছু জানিনা মা,,,,
•
ঠিক তখনেই বাবা জিজ্ঞেস করল,,,
-কত দিন হয়েছে করছিস ?
•
-কি ?
•
– আবার জিগ্যেস করস কি ?
•
– না বুঝলে জিগ্যেস করব না ?
•
– বিয়ের কথা বলছি,,,
•
বাবার মুখে বিয়ের কথা শুনে আমি অবাক হলাম,মনে হল এই মাএ আকাশ থেকে পরলাম।
– কিসের বিয়ে ? কার বিয়ে ? কোথায় বিয়ে ?
•
– তুই নাকি আমার বন্ধুর মেয়ে রে বিয়ে করেছিস,,,
•
– এত বড় মিথ্যে কথা কে বলল তোমারে ?
•
– মিলির বাবা বলেছে তুই নাকি ফোন করে ওনারে বলেছিস তুই মিলিকে বিয়ে করেছিস। আর দুপুরে মিলির বান্ধবীরাও বাসায় এসে বলেছে ওরা নাকি তোদের বিয়ের সাক্ষী।
.
এবার আমার মাথায় সব কিছু ঢুকল। এত বড় একটা ব্যাপার ঘটিয়ে ফেলেছে মেয়েটা আর আমি কিছুই বুঝলাম না।
এরকম একটা কাজ কেন করলো মেয়েটা,,,
আমি বাবার কাছে গিয়ে বললাম,,,,
– বাবা আমার মনে হয় কোথাও একটা মিসটেক হইছে,,
•
– কোথাও কোন মিসটেক হয়নাই,,,, মিলি এখন কোথায় ?
•
– ওর মামার বাড়িতে রেখে আসছি,,,
•
– বিয়েই যদি না করে থাকিস তাহলে ওরে মামার বাড়িতে রেখে আসলি কেন ?
•
– প্রব্লেমটা তো এখানেই বাবা,,,
•
– যা এক্ষুনি নিয়ে আয়,,
•
– কিন্তু বাবা আমার কথাটা তো আগে শুনবে।
•
– কিচ্ছু শুনবো না,,, আগে ওকে নিয়ে আয় যা শুনার ওর মুখ থেকেই শুনব।
•
আমি মিলিকে আনতে বাসা থেকে বের হলাম।
সকালের কথা মনে করে নিজের প্রতি খুব রাগ হল।কেন যে এই মেয়ে রে আমি হেল্প করতে গেলাম।এই মেয়ে কে হেল্প করা মানেই বিপদ কাঁদে নিয়ে ঘুরা।
ওরে প্রথম বার হেল্প করে বিপদে পেরেছিলাম প্রায় ছয় মাস আগে।আর তখন থেকেই বিপদে পরা শুরু।সেদিন রাতে মিলি ফোন দিয়ে বলল,,,
– ভাইয়া একটা হেল্প করবেন ?
•
– আগে বলো কি হেল্প সম্ভব হলে অবশ্যই করবো,,,
•
– কাল আমার এক কাজিনের জন্মদিন ওর জন্য আমি কিছু শপিং করতে চাই,,,
•
– কত টাকা ধার দিতে হবে ?
•
– ভাই টাকা ধার দিতে হবে না।
•
– তাহলে,,,,
•
– ছেলেদের পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে আমার কোন ধারনা নাই।আপনি সাথে গেলে সহজেই কেনাকাটা করতে পারতাম।
•
– ওকে,,,কখন যেতে হবে বল,,,
•
– ভাইয়া কালকে সকালে।
•
– ওকে।
•
সকালে গেলাম মিলির সাথে শপিং করতে।মিলি আমার পছন্দে দুইটা শার্ট একটা পাঞ্জাবি নিল,,,
সেদিন আবার আমারও জন্মদিন ছিল।মনে মনে কল্পনা করলাম আজ যদি মিলির মতো আমার একটা কাজিন থাকতো তাহলে আমাকেও এইভাবে জন্মদিনে উপহার দিত।
কেনাকাটা শেষ করে আমি আর মিলি কাউন্টারে গেলাম প্রেমেন্ট করতে,ঠিক তখনেই মিলি বলল,,,
– ভাইয়া আপনি একটু দারান,আমি ওয়াশ রুম থেকে আসতেছি,,,
•
– ওকে যাও,,,
মিলি চলে যেতেই আমি কাউন্টারে জিগ্যেস করলাম কত প্রেমেন্ট করতে হবে ?
– ‘স্যার’ 4500 টাকা।
•
– আমি মিলির জন্য অপেক্ষা করতে ছিলাম কিন্তু ও এখনো আসতেছে না।আর টাকা টাও ওর কাছে ও প্রেমেন্ট করবে।
আধ ঘন্টা হয়ে গেল কিন্তু মিলির কোন দেখা নেই।
হটাৎ ফোনে একটা মেসেজ আসলো।মেসেজটা দেখি মিলির নাম্বার থেকে এসেছে,,,
“ভাইয়া শপিং আপনার জন্যই করেছি।টাকা টা প্রেমেন্ট করে শপিং গুলি নিয়ে বাসায় চলে যান।আর হ্যাঁ,এই গুলি হচ্ছে আপনার জন্মদিনের উপহার”
শুভ জন্মদিন ভাইয়া,,,,
•
– মেসেজটা পরে আমি পুরা বেক্কেল হয়ে গেলাম।এই মেয়েটা আমার সাথে এমন একটা গেইম খেলল আর আমি কিনা বুঝতেই পারলাম না।
যাই হোক পকেটে টাকা ছিল বিধায় সেদিন মান সম্মান নিয়ে ফিরতে পারছিলাম।
সেদিন সেখানে দারিয়ে কান ধরে বলেছিলাম এই মেয়ের সামনে আর কখনো পরব না।
কিন্তু তা আর হল কই,,,,
সেই ঘটনার কয়েক দিন পরেই মেয়েটার সাথে আমার আবার দেখা হয়ে গেল।একদিন সকালে নাস্তা করে বাইক নিয়ে বের হতেই রাস্তায় দেখা হয়ে গেল,,,,
কি ব্যাপার এইভাবে রাস্তা আটকে দাঁড়ালে কেন ?
•
– ভাইয়া আমার একটা হেল্প লাগবে ??
চলবে….